Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মৃত্যু উপত্যকা – কাজী মায়মুর হোসেন

    কাজী মায়মুর হোসেন এক পাতা গল্প184 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    মৃত্যু উপত্যকা – ৮

    আট

    ঢাল বেয়ে ঘোড়া নামাতে শুরু করল জিম, সবচেয়ে কাছের বাছুরটার দিকে চলেছে। শর্টি কী যেন বলতে চেষ্টা করল, কিন্তু জিমের মন ব্যস্ত থাকায় সেদিকে মনোযোগ দিল না ও। বাছুরটা নাগালের মধ্যে আসতেই স্যাডল হর্ন থেকে ল্যারিয়ট খুলে নিল জিম, দক্ষ হাতে ছুঁড়ে দিয়ে বাছুরটাকে আটকে ফেলল। দড়ির টান পড়তেই পটকান খেল বাছুর। মাটিতে পড়ে ব্যা ব্যা করতে লাগল। এবার ঘোড়া থেকে নামল জিম।

    ‘এক মিনিটের জন্যে বাছুরটাকে ব্যস্ত রাখো,’ বলল শর্টির উদ্দেশে।

    এক পাশে কাত হয়ে পড়ে আছে বাছুর। ওটার পেছনের বাম উরুতে কেলটনের ব্র্যাণ্ড স্পষ্ট। পকেট থেকে ক্ষুরধার ছুরি বের করে বাছুরের পেটের কাছে নির্দিষ্ট জায়গা থেকে খানিকটা চামড়া কেটে নিল জিম। ভেতরে পাওয়া গেল একটা দশ সেন্টের মুদ্রা। ওটা শর্টিকে দেখাল ও। ‘এটা কি দেখেছ?’

    ‘পয়সা।’

    ‘হ্যাঁ, পয়সা। গত ছ’মাস ধরে বাছুর জন্মালেই চামড়া কেটে ভেতরে দশ সেণ্ট করে ভরে রাখছি আমরা। কয়েকদিনের মধ্যেই ক্ষতটা শুকিয়ে যায়, ভেতরে ঢাকা পড়ে যায় পয়সা। এই প্রথম চুরি হওয়া বাছুর খুঁজে পেলাম আমি। আমাদের ব্র্যাণ্ড থাকে চামড়ার তলায় আর ওপরে থাকে কেলটনের ব্র্যাণ্ড। শর্টি, কেলটনকে এবার হাতের মুঠোয় পেয়েছি আমরা। নির্ঘাত ফাঁসি হবে ওর।’

    বিরাট কান চুলকাল শর্টি, নীল চোখ পিটপিট করে তাকাল। ‘পাগলের কারবার। আমি দেখেছি বাচ্চারা মাটির ব্যাঙ্কে পয়সা রাখে। কিন্তু পুরুষ লোক বাছুরের চামড়ার তলায় পয়সা রাখে এটা এই প্রথম দেখলাম।’

    গম্ভীর চেহারায় বন্ধুকে দেখল জিম। ‘এবার সংগঠিত হয়ে এখানে ফিরে আসব আমরা, কেলটনের মোকাবিলা করব।’

    ‘একটা কথা তোমাকে বলতে চাইছি অনেকক্ষণ ধরে। তুমি বাগড়া দেয়ায় বলে উঠতে পারছি না। কেলটন আজকেই এখান থেকে গরু সরিয়ে নেবে।’

    ‘সরাক। ওগুলোকে যেখানে নেবে সেখানেই হানা দেব আমরা। দরকার হলে এক বছর লাগুক, হাল ছাড়ব না।’

    ‘অন্য পালটা সরাতে হলে এদিক দিয়ে যেতে হবে ওদের।

    ‘আসুক ওরা। চলো, আমরা নিচে যাব। লোক যোগাড় করতে হবে।’

    ‘আমি তো এব্যাপারেই কথা বলতে চাইছি,’ বলল শর্টি। ‘লোক যোগাড় করার তুলনায় অনেক বেশি দেরি হয়ে গেছে।’ দূরে আঙুল তাক করল সে। ‘ওই যে দেখো, কেলটনের দল আসছে। ওরা কিন্তু আমাদের দেখে ফেলেছে।’

    ঘুরে তাকাল জিম। দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসছে একদল সশস্ত্র অশ্বারোহী। এখনও চারশো গজ দূরে আছে লোকগুলো। ইতিমধ্যেই স্যাডল বুট’ থেকে রাইফেল বের করতে শুরু করেছে। প্রায় আঁৎকে উঠল জিম। ‘ওরা আসছে একথা এতক্ষণ বলোনি কেন?’

    ভ্রূ কুঁচকাল শর্টি। ‘এক ঘণ্টা ধরেই তো বলতে চাইছি। শুনতেই তো চাইছ না তুমি। খালি বাগড়া দিচ্ছ।’

    লাফ দিয়ে ঘোড়ায় চাপল জিম। ওর মাথার ওপর দিয়ে শিস কেটে বেরিয়ে গেল একটা বুলেট। পরক্ষণেই ভেসে এল রাইফেলের গর্জন। স্পার দাবিয়ে লেজে আগুন লাগা চিতার মত ছুটছে শর্টি, জিমকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। কাঁধের ওপর দিয়ে চেঁচাল।

    ‘আমার পেছনে এসো। টিলার ওখানে ঝর্নার দিকে।’

    বিপদ বুঝে উড়ে চলেছে ওদের ঘোড়াদুটো। এখন গর্জন ছাড়ছে বেশ কয়েকটা রাইফেল। আশপাশ দিয়ে যাচ্ছে গুলি। যেকোন সময় লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে। ঘাড়ের ওপর দিয়ে পেছনে তাকাল জিম। কেলটনের দলবল যত দ্রুত সম্ভব তাড়া করে আসছে।

    সিকি মাইল সামনে শুকনো লেকের পাড়। বড় বেশি খাড়া। পাথুরে। এখানে ওখানে পড়ে আছে বড় বড় বোল্ডার। বামদিকে মোড় নিল শর্টি, জিম ওর পঞ্চাশ ফুট পেছনে। একটানা গুলি করছে কেলটনের রাইফেলধারীরা। নিজেদের ঘোড়ার খুরের শব্দে কানে তালা ধরে যাচ্ছে জিমের।

    হঠাৎ করেই দৌড়ের ওপর লাফিয়ে উঠল শর্টির ঘোড়াটা। পরক্ষণে সামনের দু’পা ভাঁজ হয়ে গেল। একবার টলে উঠেই কাত হয়ে পড়ে গেল জন্তুটা। আচমকা সমারসল্ট করে আকাশে উড়াল দিল শর্টির হালকা দেহ। ঘোড়াটার ঘাড়ের ওপর দিয়ে গিয়ে জমিতে মুখ থুবড়ে পড়ল সে। ঘোড়াটা প্রচণ্ড জোরে পা ছুঁড়ল, তারপর বড় একটা নিঃশ্বাস ফেলে কেঁপে উঠল থরথর করে। শেষ বারের মত একবার কাতরে উঠে চিরতরে স্থির হয়ে গেল। রাইফেলের গুলি ওটার হৃৎপিণ্ড ফুটো করে দিয়েছে।

    শর্টির কাছে পৌছে স্কিড করে ঘোড়া থামাল জিম। উঠে দাঁড়িয়েছে শর্টি, পিস্তল বের করার জন্যে হোলস্টার হাতড়াল।

    ‘ওই যে ওখানে!’ চেঁচাল জিম, আঙুল তুলে সও-ঘাসের একটা গুচ্ছ দেখাল। পতনের ধাক্কায় খাপমুক্ত হয়ে ওখানে গিয়ে পড়েছে পিস্তলটা।

    এক দৌড়ে ঘাসের কাছে চলে গেল শর্টি, পিস্তলটা সংগ্রহ করে দ্রুত ফিরে এল জিমের ঘোড়ার কাছে। হাত বাড়িয়ে তাকে ঘোড়ায় উঠতে সাহায্য করল জিম। ওর পেছনে আয়েস করে বসল শার্টি।

    স্পারের স্পর্শে ঘোড়াটাকে ছোটাল জিম। চারপাশে এসে গাঁথছে বুলেট, পাথরে লেগে বিইইইং বিইইইং আওয়াজ করে পিছলে ছিটকে যাচ্ছে।

    ‘ওই কেলটু ব্যাটা চায় না আমি ঘোড়ায় চড়ি,’ অভিযোগের সুরে বলল শর্টি। আঙুল তুলে সামনে দেখাল। ‘ওদিকে চলো। ওদিকে হরিণের একটা ট্রেইল আছে। ওখান দিয়েই এসেছি আমরা।’

    পিঠের ওপর দু’জন আরোহী থাকায় গতি কমে গেছে জিমের ঘোড়ার। পাথুরে ঢাল বেয়ে ধীর গতিতে উঠতে শুরু করল ওটা। স্যাডলে কাত হয়ে পেছনে একটা গুলি করল শর্টি।

    ‘গুলি কোরো না,’ বলল জিম। ‘ঘোড়ার পিঠে এভাবে বসে কারও গায়ে গুলি লাগাতে পারবে না তুমি। খামোকা গুলি নষ্ট হবে।’

    ‘ওই কেলটনটা ঠিকই আমার ঘোড়া ফুটো করতে পেরেছে,’ অভিযোগের সুরে বলল শর্টি।

    ‘ওটা দুর্ঘটনা। গুলি নষ্ট কোরো না, পরে কাজে আসবে। বাঁচতে হলে আমাদের আরও বহুদূর সরে যেতে হবে। তা ওরা হতে দিতে চাইবে না। লড়তে হবে।’

    বামদিকে ঘোড়া ফেরাল জিম, হরিণের পায়ে-চলা সরু আঁকাবাঁকা পথটা ধরে ওপরে উঠতে শুরু করল। চারদিকে বোল্ডার ভরা। পেছন থেকে ওদের স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে ধাওয়াকারীরা। তাদের গুলি এসে লাগছে কাছের সব বোল্ডারে। জিম আর শর্টিকে ধরার জন্যে কেলটন এতই ব্যস্ত হয়ে আছে যে নিজের লোকদের নির্দেশ দেয়নি থেমে ভাল করে তাক ঠিক করে গুলি করতে। আর সেকারণেই এখনও বেঁচে বর্তে আছে ওরা।

    টিলার ওপরে উঠে এল জিমের ঘোড়া। একটা বোল্ডারের পেছনে আশ্রয় পেল ওরা। এখন আর ওদের দেখতে পাচ্ছে না কেলটনের লোকরা। লাফ দিয়ে ঘোড়ার পিঠ থেকে নামল শর্টি, সিক্সগানটা বের করল।

    ‘জিম, ঝর্না পার হলে বেশ কয়েকটা বোল্ডার পাবে। ওগুলোর মাঝখানে নিরাপদে রাখা যাবে ঘোড়াটাকে। তুমি যাও, আমি কেলটনের এগোনোর গতি কমিয়ে দিচ্ছি।’

    জিম ঘোড়াটাকে রাখতে গেল। এদিকে বোল্ডারের পেছন থেকে উঁকি দিল শর্টি। আসছে কেলটনের লোকরা। শর্টির পাশে এসে দাঁড়াল জিম।

    ‘এখনও পিস্তলের রেঞ্জে আসেনি ওরা,’ মন্তব্য করল ও।

    ‘গুলি বাঁচাচ্ছে,’ যোগ করল শর্টি।

    কেলটনের লোকদের ভাব দেখে মনে হলো তারা মনে করেছে জান হাতে করে পালাচ্ছে জিমরা। এমন ভাবার পেছনে কারণও আছে। সামনে গেলে পড়বে বনভূমি। ওখানে লুকানো সহজ। আলোচনা না করেও দু’বন্ধু সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে তাড়া খেয়ে লেজ গুটিয়ে পালাবে না। ওরা দু’জনই জানে, ঘোড়াটা দু’জনের’ ওজন নিয়ে পেছনের লোকগুলোকে খসাতে পারবে না, ধরা পড়তে হবে একটু পরেই।

    দুটো বোল্ডারের মাঝখানে অবস্থান নিল জিম। ওর পাশে আরেকটা বড় বোল্ডারের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে শর্টি I

    ‘কেলটনুকে আমি চাই,’ চাপা স্বরে বলল জিম। ‘ওর কাছে একটা ব্যক্তিগত পাওনা আছে আমার।’

    ‘ওই যে ওর পাশে হলুদ শার্ট পরা লোকটা,’ বলল শর্টি, ‘ওই লোক কেলটনের ছোট ভাই।’

    ‘সবই এক,’ শুকনো গলায় বলল জিম। ‘কেলটন মরার পর কাকে গুলি করব সেটা আর বাছাবাছি করতে যাব না।’

    রিজের ওপরের দিকটা শুধুই পাথুরে, কোন গাছপালা বা ঝোপঝাড় জন্মেনি। সূর্যের তাপে দগ্ধ হচ্ছে প্রকৃতি। ভাপ ছড়াচ্ছে সকালের কুয়াশা মাখা পাথরগুলো। অগ্রসরমান লোকগুলোর ওপর থেকে চোখ সরাচ্ছে না জিম। ওর দুটো গানবেল্টই গুলিতে ভরা, তারপরও পকেট থেকে এক বাক্স শেল বের করল ও।

    ‘অ্যামুনিশন কেমন আছে তোমার?’ জিজ্ঞেস করল জিম। শর্টির কাছে মাত্র একটা পিস্তলই দেখা যাচ্ছে। ওর গানবেল্টও প্রায় খালি।

    ‘গুলির অভাব নেই,’ এক গাল হাসল শর্টি। ‘নিচে আমার স্যাডলব্যাগে আছে। এক দৌড়ে গিয়ে নিয়ে এসো দেখি। বেশিদূর হাঁটতে হবে না।’

    ‘চমৎকার!’ শুকনো গলায় বলল জিম। ‘একটা চিৎকার ছাড়ো। কেলটনকে বলো নিয়ে আসতে। ও যখন আসছে তখন আমি আর কষ্ট করতে যাই কেন!’

    শেলের বাক্সটা শর্টির দিকে বাড়িয়ে ধরল ও। ‘এগুলো রাখো। তোমার ঘোড়াটা বড় বেশি দূরে। তাছাড়া আমার পায়ে ফোস্কা পড়েছে।’

    বাক্সটা খুলে বুলেটগুলো উল্টো করে পাথরের ওপর রাখা হ্যাটে ঢালল শর্টি, চোখ কুঁচকে একবার সূর্যটাকে দেখল।

    ‘সূর্য ডুবতে এখনও অন্তত চার ঘণ্টা।’

    ‘ততক্ষণ ওদের আমরা আটকে রাখতে পারব,’ নিশ্চিত শোনাল জিমের কণ্ঠ। ‘ওরা কিছুতেই আমরা যেখানে আছি সে উচ্চতায় উঠে আসতে পারবে না। তাছাড়া চারদিক থেকে আড়ালও পাচ্ছি। মনে করতে পারো আরাম করে বিছানায় শুয়ে আছো।’

    ‘হ্যাঁ,’ ঠোঁট বাঁকাল শর্টি, ‘শুয়ে আছি সঙ্গে করে একটা ক্ষুধার্ত কুগার নিয়ে।’

    হরিণের তৈরি ট্রেইলটা কেলটন চেনে। লোকদের পেছনে আসতে নির্দেশ দিয়ে ট্রেইলের দিকে রওনা হলো সে। ঘোড়াগুলোর খুরের আওয়াজ এখন শুনতে পাচ্ছে জিম আর শর্টি। উঠে আসতে শুরু করেছে লোকগুলো। প্রত্যেকে স্যাডল হর্নের ওপর আড়াআড়ি রেখেছে তাদের রাইফেল।

    নাক দিয়ে ঘোঁৎ করে একটা আওয়াজ করল শর্টি। ‘কেলটন বিরাট ভুল করছে আমরা অপেক্ষা করতে পারি সেটা না ভেবে।’ সিক্সগানটা ওপরে তুলল সে। ‘আমার ধারণা ওদের যথেষ্ট কাছে আসতে দেয়া হয়েছে। এবার ওদের অভিনন্দন জানানো যাক।’

    পাথরের ওপর সিক্সগানটা রেখে ভ্রূ কুঁচকে গুলি করল শর্টি।

    কেলটনের পাশে পাশে আসা হলুদ কাপড় পরা লোকটা স্যাডল থেকে ছিটকে শূন্যে উঠে গেল। মনে হলো পাখা গজিয়েছে তার। একটা চোখা পাথরের ওপর পড়ল মুখ থুবড়ে। গড়িয়ে পাথরটার পেছনে চলে গেল, আর দেখা গেল না তাকে। ঘোড়াটা থমকে দাঁড়াল, তারপর ঘুরেই ঢাল বেয়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটল যেদিক থেকে এসেছিল।‘

    জিম ওর অস্ত্র তাক করল কেলটনের দিকে। তবে ট্রিগার স্পর্শ করার ঠিক আগের মুহূর্তে কী কারণে যেন আচমকা ঘোড়া থামাল কেলটন, হঠাৎ গতি হ্রাস হওয়ায় পেছনের দু’পায়ে দাঁড়িয়ে গেল ঘোড়াটা। জিমের বুলেট কেলটনের মাথার বদলে বিধল ঘোড়ার বুকে। পিছলে মৃতপ্রায় ঘোড়ার পিঠ থেকে পেছনে নামল কেলটন, এক লাফে চলে গেল একটা বোল্ডারের পেছনে। পরিষ্কার বোঝা গেল সে আহত হয়নি।

    অন্যরা তাদের ঘোড়া থামিয়ে ফেলেছে। চোখের নিমেষে স্যাডল ছাড়ল তারা। দেখে মনে হলো শয়তানের তাড়া খেয়েছে। মোট বারোজন। মুহূর্তের নোটিশে পেছনের বোল্ডারগুলোর আড়ালে চলে গেল। পাথরের ওপর দিয়ে উঁকি দিল তাদের রাইফেলের নল। চট করে মাথা তুলে তাক ঠিক করেই গুলি করতে শুরু করল লোকগুলো। রাইফেলের গর্জন টিলার গায়ে ধাক্কা খেয়ে ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। পাথরের পেছন থেকে ছিটকে উঠছে কালো ধোঁয়া, বাতাসে ভেসে অলস ভঙ্গিতে ছড়িয়ে পড়ছে ধীরে ধীরে। জিম আর শর্টির আশপাশে আঘাত হানছে বুলেট।

    ‘কাজটা যখন নিই তখন ভুল করে ফেলেছি,’ বিড়বিড় করল শর্টি। ‘ডবল বেতন চাওয়া উচিত ছিল। আগেই তো বলেছি পায়ে হেঁটে কোন কাজ করতে পারব না।’

    ‘পাথরের দিকে চোখ রাখো,’ উপদেশ দিল জিম। ‘বসে কাজ করতে পছন্দ করো তুমি। এখন তাই করছ।’

    কেলটনের দলের ঘোড়াগুলো আরোহী না থাকায় বোল্ডারগুলো পাশ কাটিয়ে ঢাল বেয়ে নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। সমতলে গিয়ে জড়ো হলো ওগুলো।

    ‘ওগুলোর একটা পেলে ভাল হত,’ হতাশ গলায় বলল শর্টি। পরমুহূর্তে গুলি করল পাথরের পেছন থেকে একজন মাথা তোলায়।

    ‘আর্মির রিমাউন্ট সার্ভিসও তোমাকে ঘোড়া যোগান দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারবে না,’ মন্তব্য করল জিম। ‘বুড়ো একটা শেয়াল হিসেবে তোমার জানা উচিত যে নিজের ঘোড়া রক্ষা করার দায়িত্ব যার যার নিজের। যে তা পারে না তার উচিত হাঁটার জন্যে মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকা।’

    ‘আচ্ছা!’ চোখ বিস্ফারিত হলো শর্টির। ‘কাউবয় হতে হলে বুঝি এই বিদ্যা দরকার হয়?’

    একটা বুলেট শর্টির মুখে পাথরের কুচি ছিটিয়ে রাগী একটা ভোমরার মত গুঞ্জন তুলে ছিটকে বেরিয়ে গেল।

    ‘মর, শালা!’ গাল দিয়ে বোল্ডারের পেছনে বসে থাকা একজনের উঁচু করা মাথা লক্ষ্য করে গুলি করল শর্টি।

    গুলি লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে। লোকটা কয়েক পা পিছিয়ে উঠে দাঁড়াল। হাত দুটো ছড়িয়ে দিল দু’দিকে, তারপর রাইফেলটা পড়ে গেল তার হাত থেকে। চিৎ হয়ে ঢলে পড়ল লোকটা। একটা সমতল পাথরের ওপর পড়েছে। আর নড়ল না। দেহটা পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে জিম আর শর্টি।

    নতুন টার্গেটের খোঁজে সামনে তাকাল শর্টি, চেহারায় বিরক্তির ছাপ ফুটে উঠল। বলল, ‘সন্ধ্যার আগে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলে বিরক্তিতে মারা যাব।’ তাকাল জিমের দিকে। ‘তোমার কাছে চেকার আছে? থাকলে এসো হয়ে যাক পাঁচটা গেম। আমি তিনটেয় জিতবই জিতব। যদি না জিতি তা হলে আমি নিজে যাব স্যাডলটা নিচ থেকে নিয়ে আসতে। আর হারলে তুমি যাবে।’

    টিলার দিকে তাকাল জিম, তারপর দেখল বোল্ডার ভরা ঢালটা। শর্টির দিকে না তাকিয়েই বলল, ‘ভুল বললে তুমি। কেলটন যতক্ষণ ওপরে উঠে আসার মতলব করছে ততক্ষণ কিছুতেই বিরক্ত হতে পারবে না। লোকটা নতুন ফন্দি আঁটছে।’

    চারজন লোক বোল্ডারের আড়াল নিয়ে ঢাল বেয়ে নিচে নেমে গেছে, ইতিমধ্যেই চলে গেছে জিম আর শর্টির পিস্তলের রেঞ্জের বাইরে। নিশ্চিন্তে উঠে দাঁড়িয়ে ঘাসজমিতে চরতে থাকা ঘোড়াগুলোর কাছে দৌড়ে গেল তারা। গাল দিয়ে উঠে গুলি করল শর্টি। অনেক দূর দিয়ে গেল ওর বুলেট।

    ‘ভয় পেয়ে চারটে গেল,’ বলল শর্টি। ‘বাকি রইল আরও সাত-আটজন।’

    দ্বিমত পোষণ করল জিম। ‘ভয় পেয়ে গেল না চারটে। আমাদের মোকাবিলা করার জন্যে কেলটন নতুন কোন চাল চেলেছে।’

    ‘যেমন?’

    ‘উঁম্…ওই দেখো! আরও দু’জন গেল!’

    পাথরের পেছন থেকে ওদের দেখতে হলো যে ছয়জন অশ্বারোহী পুব দিকে চলে যাচ্ছে।

    ‘বুঝতে পেরেছি,’ বলল শর্টি। ‘ওরা আমাদের পেছনে আসতে চাইছে।’

    ‘আমাদের চেয়ে এদিকের ট্রেইল ভাল চেনে কেলটন। ও এমন ব্যবস্থা করছে যাতে সন্ধ্যার পর আমরা বনের দিকে যেতে না পারি। এখন মনে হচ্ছে আমরা যেখানে আছি সেটা পুরোপুরি নিরাপদ নয়।’

    ‘কেন?’

    ‘সরে পড়তে হবে, নইলে পাছায় থ্রি নট থ্রির গুলি লাগবে।’

    জিম এবার এমন একটা ব্যাপার দেখল যার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারল না। কেলটন নিজে বোল্ডারের আড়াল নিয়ে ঢাল বেয়ে নিচে নেমে গেছে। স্যাডল চড়ানো একটা ঘোড়ায় উঠল সে, কিন্তু কোথাও রওনা হবার কোন লক্ষণ দেখা গেল না। টিলার গোড়ায় অপেক্ষা করছে সে।

    কীসের জন্যে?

    ‘একটা রাইফেলের বদলে এখন যেকোন কিছু দিতে রাজি আছি আমি,’ সখেদে মন্তব্য করল শর্টি। ‘ওখানে দূরে দাঁড়িয়ে আমাদের বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে কেলটু।’

    ‘খামোকা এরকম উদ্দেশ্যবিহীন কিছু করার লোক নয় কেলটন,’ চিন্তিত স্বরে বলল জিম। ‘কিছু একটা করছে সে, যেটা আমরা বুঝতেও পারছি না।’

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleখুনে ক্যানিয়ন – কাজী মায়মুর হোসেন
    Next Article ধাওয়া – কাজী মায়মুর হোসেন

    Related Articles

    কাজী মায়মুর হোসেন

    অদৃশ্য ঘাতক – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৬৮ – স্বর্ণলিপ্সা

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    ধাওয়া – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    খুনে ক্যানিয়ন – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৪৮ – মৃত্যুঘণ্টা

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৮ – মহাপ্লাবন

    July 25, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }