Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    রহস্য সমগ্র – অজেয় রায়

    লেখক এক পাতা গল্প543 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    মুর্তি চুরি

    দু’চারটে কথার পরেই বঙ্গবার্তা’র রিপাের্টার দীপক রায় উৎসাহিত কণ্ঠে বলল, ‘একটা নতুন আইডিয়া এসেছে। বীরভূম জেলার গ্রামে গ্রামে ঘুরে মন্দিরগুলাে নিয়ে স্টোরি করব কাগজে।’

    ‘সে তাে গাদা মন্দির। কত লিখবে?’ বঙ্গবার্তার সম্পাদক শ্রীকুঞ্জবিহারী মাইতির ভুরু কুঁচকোয়।

    ‘না না, সব নয়। যেগুলাের হিস্ট্রি বেশ ইন্টারেস্টিং, শুধু সেগুলাে নিয়ে।’  জানায় দীপক।

    ‘তা মন্দ নয়। করাে।’   সম্মতি দেন সম্পাদক।

    এই সূত্রেই বীরভূমের তিন-চারটে গ্রামে ঘােরার পরই একটা রহস্যের হদিশ পেয়ে যায় দীপক। পলাশপুর গ্রামে গিয়েছিল দীপক এই উদ্দেশ্যেই। ওখানে বলাই দাস তার পরিচিত। বছর চল্লিশ বয়সি বলাইবাবুর সঙ্গে সরকারবাড়ির মন্দির দেখতে যাচ্ছে দীপক, উল্টোদিক থেকে একজন বয়স্ক লােক এল। মুখােমুখি হতেই লােকটা থতমত খেয়ে চোরা চাউনিতে দীপককে দেখতে দেখতে পথের ধারে সরে গিয়ে মুখটা পাশ ফিরিয়ে নিল। শুধু তাই নয়, যেন ইচ্ছে করেই মুখ আড়াল করতে বাঁ হাতে কপাল চুলকোতে চুলকোতে পেরিয়ে গেল তাদের।

    লােকটার ভাবভঙ্গি দেখে কেমন খটকা লাগল দীপকের। আর অদ্ভুত ব্যাপার, লােকটার সঙ্গে বলাই দাসের কোনাে কথা হল না। কিন্তু সাধারণত একই গায়ের মানুষরা সামনাসামনি হলেই পরস্পরকে সম্ভাষণ করে। এই লােকটাকে আগে কোথাও দেখেছি যেন? শেষে কৌতুহল চাপতে না পেরে দীপক প্রশ্ন করে বলাইবাবুকে, ‘এইমাত্র যিনি গেলেন উনি কি এই গ্রামে থাকেন?”

    ‘না। উনি আমাদের পাড়ার জগবন্ধুর আত্মীয়। বেড়াতে এসেছেন দিন দুই হল।’   জানান  বলাই দাস।

    ‘কোথায় থাকেন?’ জিজ্ঞেস করে দীপক।

    ‘শুনেছি বর্ধমান শহরে।’

    ‘নাম জানেন?’

    বলাই দাস বললেন, ‘তারকবাবু। পদবি জানি না।’

    দীপকের মন খচখচ করে। ওই মুখ, ওই নাম কি একটা ব্যাপারে জড়িয়ে আছে! তখন। আর এই নিয়ে বেশি ভাবার সুযােগ মেলে না। সরকারবাড়িতে পৌছে যায় তারা।

    গ্রামের মাঝামাঝি সরকারদের বাড়িটা বেশ বড়। দোতলা পাকাবাড়ি। বসত-বাড়ি ঘিরে হাত পাঁচেক উচু পাঁচিল। মন্দিরটা পাঁচিলের ঠিক বাইরে। শিবমন্দির। বিশেষ বড় নয়। নেহাতই সাদামাটা ছােট একটা মন্দির। তবে বেশ পুরনাে।

    মন্দিরের ভিতর ঢোকে দীপক। অন্যান্য শিবমন্দিরের মতােই চেহারা। বিগ্রহ বলতে একটা বড়সড় হাতখানেক শিবলিঙ্গ বা লম্বাটে মসৃণ কালাে পাথর মেঝেতে বসানাে। তার গায়ে চন্দনের ছােপ, পায়ের কাছে ফুল,পাতা। মন্দিরে জানলা নেই। কয়েকটা ঘুলঘুলি রয়েছে মাত্র।

    ভিতরটা একটু আবছায়া। মন্দিরের ভিতর এক কোণে আর একটি মূর্তি দীপকের নজরে পড়ে। মনে হল বিষ্ণুমূর্তি।

    ফুটখানেক উচু। কালচেরঙা পাথরে তৈরি, গভন ভারি সুন্দর! পাথরের বেদির ওপর বসানাে মূতিটা। তাঁর পায়ের কাছে ফুল তুলসী পাতা দেখে মনে হল যে তিনিও পূজা পান।

    মন্দিরটা সম্বন্ধে কিছু জানতে দীপক গেল মেজকর্তা হেমেন সরকারের কাছে। হেমেনবাবু হাসিখুশি মানুষ। তিনি বলাই দাসের বয়সি এবং বন্ধু। এই গ্রামে সরকারদের বাস একশাে পঁচিশ বছর। এখানে আসার কিছুদিনের মধ্যেই এই মন্দির স্থাপন করেন তারা। শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা হয়। কথায় কথায় দীপক জানতে চাইল, ‘আর একটা মূর্তি দেখলাম মন্দিরে?’

    হেমেনবাবু বললেন, ‘হ্যা ওটা বিষ্ণুমূর্তি। নারায়ণ। ইন্টারেস্টিং হিস্ট্রি আছে ওর। আমাদের একটা দিঘি আছে গ্রামের ধারে। বছর পঞ্চাশ আগে আমার বাবা দিঘিটা সংস্কার করাচ্ছিলেন। সেই সময় কাদার নিচ থেকে ওই মূর্তিটা মেলে। গােড়ায় মূর্তিটা বাড়িতেই রাখা ছিল। কিন্তু এরপরেই আমাদের হঠাৎ কিছু ধনসম্পত্তি লাভ হয়। বাবার বিশ্বাস জন্মায় যে ওই বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধারের ফলেই এই সৌভাগ্য। তখন তিনি শিবমন্দিরেই মূর্তিটাকে স্থান দেন।’

    ‘মূর্তিটা দেখে মনে হল বেশ পুরনাে’, দীপক মন্তব্য করে।

    ‘হ্যা, খুবই প্রাচীন। পুরাতত্ত্ব বিভাগ থেকে একবার কয়েকজন এসেছিলেন আমাদের। গ্রামের মন্দির দেখতে। তারা বলে গিয়েছেন, ‘ওই বিষ্ণুমূর্তি অন্তত হাজার বছরের পুরনাে। এই গ্রামের গায়েই একটা বর্ধিষ্ণু গ্রাম ছিল বহু আগে। এখন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। পুরাতত্ত্ব বিভাগের ধারণা, বিধর্মীদের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে ওই গ্রামের কোনাে মন্দিরের বিগ্রহ ওই বিষ্ণুমূর্তিকে দিঘির জলে লুকিয়ে রাখা হয়। তারপর আর তুলে নিয়ে যেতে পারেনি।’

    দীপকের মাথায় খেলে, ওই বিষ্ণুমূর্তি নিয়েই কাগজে একটা স্টোরি লেখা যাবে খাসা।

    সরকারবাড়ি থেকে ফেরার পথে ঝা করে দীপকের মনে পড়ে গেল সেই লােকটার নাম ও পরিচয়—বিষ্ণুমূর্তি নিয়ে ভাবতে ভাবতেই।

    আরে ওই লােকটার নাম তাে তারকচন্দ্র পাল। পুরাতত্ত্ব বিভাগে কাজ করে। প্রাচীন মূর্তি চুরির কেসে একবার ওকে ধরেছিল পুলিশ।

    সাত বছর আগের ব্যাপার। বর্ধমান জেলায় অজয় নদীর তীরে পুরাতত্ত্ব বিভাগ এক লুপ্ত জনপদের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কারের জন্য খোঁড়াখুড়ি করছিল। দীপক গিয়েছিল দেখতে। তখন সামান্য আলাপ হয় তারক পালের সঙ্গে। আর্কিওলজি ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে তারক পাল ওখানে ক্যাম্পে ছিল।

    দীপক সেখানে যাওয়ার মাস দুই বাদে খবর বেরােয় কয়েকটি নামকরা সংবাদপত্রে— বর্ধমানে অনুসন্ধান করে পাওয়া কয়েকটি প্রাচীন দুষ্প্রাপ্য মুদ্রা এবং একটা প্রাচীন মূর্তি উধাও হয়েছে। জিনিসগুলি কলকাতায় নিয়ে আসার পরেই, মিউজিয়াম থেকে। প্রাচীন প্রত্নদ্বব্য চোরাচালাকারীদের কাজ সন্দেহ নেই। এই সূত্রেই তারক পালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কারণ সন্দেহ করা হয় যে তারই যােগসাজসে চুরিটা হয়েছে। এই নিয়ে কেস চলে। ফল কি হয় জানা নেই দীপকের।

    দীপকের আরও মনে পড়ে যে ওই তারক পালকে সে দেখেছে মাস ছয় আগে বীরভূমেরই অন্য গ্রামে। সেবার অবশ্য দীপক মন্দির দেখতে যায়নি। তার পাল একটা মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়েছিল। তবে তাকে লক্ষ করেছিল কিনা সেটা খেয়াল করেনি। ওর আগের পরিচয়ও সেবার দীপকের মনে জাগেনি।

    দীপক বলাইবাবুকে জিজ্ঞেস করে, ‘আচ্ছা ওই তারকবাবু কি এখানে মন্দির দেখে বেড়াচ্ছেন?’

    ‘হ্যা।’   জানান বলাইবাবু, ‘মানুষটা ভক্ত প্রকৃতির। কাল সরকারদের শিবমন্দিরে বসেছিলেন অনেকক্ষণ।’

    ‘এর আগে এসেছেন এই গাঁয়ে?’

    ‘এসেছেন। অনেক বছর আগে।’

    দীপক সন্দিগ্ধ হয়ে ওঠে। ঠিক করে যে তারক পাল সম্বন্ধে আর একটু খোজ নিতে হবে কলকাতায় ডক্টর বােসের কাছে।

    ডক্টর প্রতুল বােস পুরাতত্ত্ব বিভাগে ছিলেন উচু পদে। সম্প্রতি অবসর নিয়েছেন। তারক পালের প্রসঙ্গে রেগে বললেন দীপককে, ‘লােকটা আস্ত শয়তান। নির্ঘাৎ কোনো প্রত্নদ্রব্য চোরাচালানকারী দলের সঙ্গে ওর যােগ আছে। বর্ধমানের কেসে প্রমাণের অভাবে জেল-খাটা থেকে রেহাই পেয়েছিল বটে, তবে কর্তব্যে অবহেলার কারণে ওর চাকরি যায়। জান উত্তরবঙ্গে পরপর কয়েকটা মন্দির থেকে প্রাচীন বিগ্বহমূর্তি চুরি যায় বছর দুয়েক আগে। আর তার কিছুদিন আগে তারককে ওইসব জায়গায় দেখা গিয়েছিল ব্যবসার নামে ঘুরতে। সেবারও সন্দেহ করে পুলিশ ওকে ধরে কিন্তু প্রমাণের অভাবে ছেড়ে দেয়। পলাশপুর আমি গিয়েছি। সরকারদের শিবমন্দিরে বিষ্ণুমূর্তি আমি দেখেছি। ওটা সত্যি প্রায় হাজার বছরের পুরনাে। চমৎকার মূর্তি। প্রত্নবস্তু হিসাবে অতি মূল্যবান। সরকারদের সাবধানে রাখা উচিত।’

    ‘তারক পাল কি নিজে চুরি করে?’ জানতে চায় দীপক।

    ডক্টর বােস বললেন, ‘তা মনে হয় না। ও ইনফর্মেশান জোগায়। আর্কিওলজি ডিপার্টমেন্টের কিছু স্টাফ এই দুষ্কর্মটি করে। প্রাচীন মূলবান মূর্তির খবর জানিয়ে দেয় স্মাগলারদের। মানে টাকার লােভে। আর্কিওলজি ডিপার্টমেন্টের বেশির ভাগ কর্মী দীর্ঘদিন কাজ করতে করতে মােটামুটি জেনে যায় কোনাে মূর্তি বা শিল্পবস্তু

    কত প্রাচীন এবং দামি। এদের কাজে লাগায় স্মাগলাররা। তবে চুরিটা করে অন্যেরা। মানে অন্যদের নিয়ে করায়। তারপর কয়েক ধাপ হাত বদলে আসল লােকের কাছে পৌছায়। খুব হুশিয়ার এরা।’

    দীপক প্রশ্ন করে, ‘এত কাণ্ড করে, এত খরচ করে, এসব চালান করে খুব দাম পায় নিশ্চয়?’

    ‘পায় বইকি। লক্ষ কোটি টাকা দামে বিক্রি হয় এসব প্রত্নদ্রব্য।’ উত্তেজিতভাবে জানান ডক্টর বােস।

    ‘কেনে কারা?’

    ডক্টর বােস জানান, ‘ইউরােপ আমেরিকায় অনেক ধনীর প্রাইভেট মিউজিয়াম আছে। তারা বিশাল দামে এমনি দুষ্প্রাপ্য প্রাচীন শিল্পকর্ম কিনে নিজেদের সংগ্রহশালার প্রেস্টিজ বাড়ায়। আবার বিদেশে কিছু সরকারি আধা-সরকারি মিউজিয়ামও কেনে এমনি মূর্তি, ছবি ও প্রাচীন শিল্পবস্তু। জিনিসটা চোরাপথে এসেছে বুঝেও। শুধু ইন্ডিয়া থেকে নয়, পৃথিবীর অন্য দেশ থেকেও সমানে পুরনাে মূর্তি আর শিল্পদ্রব্য চুরি হয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে এই কারণে। কিছু ইন্টারন্যাশনাল গ্যাং এই ব্যবসা করে। ভীষণ ধূর্ত তারা। তেমনি টাকার জোর।’

    দীপক জিজ্ঞেস করল, ‘পলাশপুরে আর কোনাে প্রাচীন মূল্যবান মূর্তি আছে কি?’

    ডঃ বােস বললেন, ‘না। তেমন কিছু নেই আর।’

    কলকাতা থেকে ফিরে দীপক সােজা গেল পলাশপুর। হেমেন সরকারকে একান্তে ডােকে জিজ্ঞেস করল, ‘আপনাদের শিবমন্দিরের দরজার চাবি থাকে কার কাছে?’

    হেমেনবাবু জানালেন, ‘পুরােহিতমশাইয়ের কাছে। উনিই মন্দির খােলেন। বন্ধ করেন।’

    ‘উনি বিশ্বাসী?’

    ‘নিশ্চয়। বহুকাল আছেন। এ কথা কেন?’ হেমেনবাবু রীতিমতাে অবাক হন।

    দীপক এবার সংক্ষেপে বিষ্ণুমূর্তি চুরি যাওয়ার সম্ভাবনার কথা বলে। শুনে গুম হয়ে যান হেমেন্দ্র সরকার। তারপর বলেন, ‘তবে তাে মূর্তিটা ওখান থেকে বাড়ির ভেতর সেফ জায়গায় এনে রাখা উচিত।’

    দীপক বাধা দেয়, ‘না। আমার একটা অন্য প্ল্যান আছে। বলছি সেটা। আগে বলুন ওই মন্দিরের চাবি হাতে পাওয়ার সুযােগ কাদের আছে? মানে ছাপ নিয়ে নকল চাবি তৈরি করার সুযােগ?’

    হেমেনবাবু একটু ভেবে বললেন, ‘পুরােহিত ভট্টাচার্যিমশাই কোনাে কারণে না এলে ওঁর ভাইপাে যদুগােপাল পুজো করে। মাঝেমাঝে আমাদের কাজের লােক কেষ্ট চাবি নিয়ে মন্দির খুলে ঢুকে সাফসুফ করে। আমাদের পরিবারের লোকেও প্রয়ােজনে চাবি নিয়ে খুলে মন্দিরে ঢােকে। মােটামুটি এই ক’জনারই চাবি হাতে পাওয়ার সুবিধা আছে।’

    ‘যদুগােপাল বিশ্বাসী?’

    ‘তা বলতে পারি না ঠিক। স্কুল ফাইনাল পাশ, বেকার যুবক। আপনারই বয়সি। চাষবাস আর টুকটাক ব্যবসা করে। আবার পুজাআচ্ছা করেও কিছু রােজগার করে। একটু শৌখিন বটে। তবে তেমন কোনাে বদনাম শুনিনি।’

    ‘আর কেষ্ট?’

    ‘ও বছর পাঁচেক আছে এ বাড়িতে। কিঞ্চিৎ হাতটান আছে জানি। পারলে দু’-চার পয়সা সরায়। তবে বড় চুরি ধরা পড়েনি। খুব খাটিয়ে। তাই ওই দোষটুকু আমরা উপেক্ষাই করি।’

    দীপক ব্যগ্রভাবে বলে, ‘সরকারমশাই, আমার একটা প্ল্যান আছে চোর ধরার। ফাঁদ পেতে। আপনারা যদি রাজি থাকেন?’

    ‘কী রকম?’ হেমেন সরকার কৌতূহলী। দীপক তার পরিকল্পনাটা বােঝাল হেমেনবাবুকে।

    সব শুনে হেমেনবাবু খানিক চুপ করে ভাবলেন। তার মুখ দেখে মালুম হল যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব খেলছে মনে। আবার মুখে উত্তেজনার আভাস। দীপক ঠিকই আঁচ করেছিল। হেমেন সরকার মানুষটি অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়। তিনি চাপা উত্তেজিত কণ্ঠে বললেন, ‘আমি রাজি। তবে দাদা রাজি হবেন কিনা সন্দেহ। দাদা একটু নার্ভাস প্রকৃতির।’

    দীপক বলে, ‘ব্যস, ব্যস, আপনি রাজি হলেই হবে। দাদাকে এখন জানানাের দরকারটা কী? দিন সাতেক মন্দিরটা গার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারবেন না? দিনে রাতে কোনাে ক্রমেই যেন বিষ্ণুমূর্তিটা চুরি না যায়। রাতেই রিস্ক বেশি। দিনে পুরােহিতমশাই যেন মন্দির খােলা রেখে মােটেই দূরে না যান। আমি ফিরে না আসা অবধি উনি যেন কখনও মন্দিরের চাবি আর কারও হাতে না দেন, বাড়িতেও আলগা ফেলে না রাখেন।

    তালা দিয়ে বাক্সে রাখেন। মূর্তি চুরির সম্ভাবনাটা ওকে বলতেও পারেন। তবে একথা যেন উনি ঘুণাক্ষরেও আর কাউকে ফাঁস না করেন। রাতে বিশ্বাসী কাউকে দিয়ে মন্দির পাহারার ব্যবস্থা করবেন। ঢাকঢোল পিটিয়ে নয়। গােপনে গার্ড দেবে। চুরি হতে দেখলে। চোরকে আটকাবে। যদ্দিন না আমি ফিরি। পারবেন না ব্যবস্থা করতে?’

    হেমেনবাবু চকচকে চোখে বললেন, ‘ঠিক আছে, করব ব্যবস্থা। দেখুন আপনার প্ল্যানটা যদি খাটে!’

    বােলপুরে ফিরে দীপক সম্পাদক কুঞ্জবিহারীকে জানাল, ‘দিন সাতেক ছুটি চাই। ওড়িশা যাব।’

    ‘কেন?’   সম্পাদক অপ্রসন্ন, ‘এই তাে গেলে কলকাতা।’

    ‘সে পরে বলব। ভীষণ জরুরি দরকার। তবে জেনে রাখুন খানিকটা বঙ্গবার্তার স্বাথেই।’

    ‘ বটে।’   কুঞ্জবিহারী গোঁফ ফুলিয়ে গম্ভীর গলায় বলেন, ছুটি চাইছ নাও, মিছে কথা বলার দরকার কী? পুরী-টুরি বেড়াবে বুঝছি না? তা একা না দলবলে?’

    দীপক একটু রেগে বলল, ‘লাক ফেভার করলে শিগগিরি দারুণ একটা স্টোরি ছাড়হি কাগজে, তখন দেখবেন।’

    ‘কী নিয়ে?’ সম্পাদক উৎসুক।

    ‘চুরি।’   মন্তব্য করে দীপক, ‘তবে ছিচকে কেস নয়। জব্বর ব্যাপার।’

    পরদিনই ক্যামেরা নিয়ে গিয়ে দীপক পলাশপুরে কিছু ফোটো তুলল। দু’দিন বাদেই সে রওনা দিল ওড়িশা।

    ছয় দিনের মাথায় বােলপুরে ফিরে দীপক সােজা চলে গেল পলাশপুরে। ইতিমধ্যে কোনাে অঘটন ঘটেনি। বিষ্ণুমূর্তি যথাস্থানেই আছে। হেমেনবাবুর সঙ্গে সব কাজ সেরে সে বােলপুরে ফিরল সন্ধ্যায়।

    দীপক বাসায় আসতেই তাকে চেপে ধরল তার পেয়ারের ভাইপাে ক্লাস টেনের ছাত্র ছােটন। ‘কাকু, ফিরে এসে পুরীর গপ্পে করলে না? কোথায় গিয়েছিলে?’

    দীপক বলল, ‘পলাশপুর। একটা জরুরি কাজে।’

    ছােটন অবাক হয়ে বলল, ‘তুমি নগেনদের গায়ে বারবার যাচ্ছ কেন?’

    ‘কে নগেন?’

    ‘নগা আমার সঙ্গে পড়ে। ওর বাবার নাম যােগেন সরকার। ওখান থেকে বাসে আসে।’

    ‘আঁ, যােগেন সরকার। হেমেন সরকারের দাদা! আরে ওদের বাড়িতেই তাে যাচ্ছি কাজে। তা নগেন কেমন ছেলে?’

    ‘দারুণ। আমার খুব বন্ধু। দারুণ ফুটবল খেলে। ছােটন উচ্ছ্বসিত।

    ‘সাহস আছে?’   জিজ্ঞেস করে দীপক।

    ‘নেই আবার! ভীষণ ডানপিটে। আবার ক্যারাটে শিখছে।’

    ‘বাঃ।’ এইরকম একজন ছেলেই চাইছিল দীপক। সরকারবাড়ির হতে হবে এবং ডাকাবুকে। বাইরের কাউকে দিয়ে ঠিক ভরসা হচ্ছিল না। আবার এ কাজের ভার বয়স্ক হেমেনবাবুকে দিতেও বাধাে বাধাে ঠেকছিল। তা নার্ভাস যােগেনবাবুর ছেলে যে এমন ডেয়ার-ডেভিল কে জানত? দীপক ছােটনকে বলল, ‘নগনকে একবার আমার কাছে নিয়ে আসতে পারবি?’

    সেদিনই ছোটন বিকেলে নগেনকে হাজির করল। দীপক দেখল গাট্টাগােট্টা শ্যামলা ছেলেটির সুশ্রী কাটা-কাটা মুখ। দুষ্টমি চিকচিক করছে যেন চোখে। দীপক সংক্ষেপে তাকে বুঝিয়ে দিল যে ওদের মন্দিরের বিষ্ণুমূর্তি উধাও হওয়ার ভয় আছে এবং চোর ধরতে নগেনের সাহায্য চাই।

    উত্তেজনায় নগেন প্রায় লাফিয়ে উঠে বলে, ‘আঁ, তাই নাকি? বইয়ে পড়েছি এমনি সব ব্যাপারস্যাপার হয়। তবে আমাদের বাড়িতেও যে তেমন কিছু ঘটতে পারে কোনাে দিন ভাবিনি। ধরব চোর। বলুন কী করতে হবে কাকু?’

    দীপক বােঝাল, ‘শুধু মন্দির থেকে যে চুরি করবে তাকে ধরলেই চলবে না। আরও এগুতে হবে। গােড়া ধরে টান দিতে চাই। এসব কাজ এক চোরের কীর্তি নয়। অনেকের হাত থাকে। তােমায় পাহারা দিতে হবে লুকিয়ে। তুমি এর মধ্যে আছে আর কেউ যেন না জানে। শুধু তােমার কাকা হেমেনবাবু জানবেন। মনে রেখাে এসব কেসে প্রথম চুরিটা সাধারণত গ্রামেরই কাউকে দিয়ে করানাে হয়। তারপর পাচার হয়ে বাইরে যায় মূর্তি। জানাজানি হয়ে গেলে সাবধান হয়ে যাবে চোর।

    তক্ষুণি নগেন সায় দেয়, ‘সে আমি কাউকে বলব না।’

    দীপক নগেনকে বলল, ‘কয়েক দিন রাতে গোপনে মন্দিরের ওপর নজর রাখতে পারবে কেউ ঢুকছে কিনা?’

    নগেন বলল, ‘তা পারব। আমি দোতলায় শুই। একা একটা ঘরে। এই ঘরের জানলা থেকে মন্দিরের দরজার কাছ অবধি দেখা যায়। জানলা একটু ফাঁক করে রাত জেগে নজর রাখব।’

    দীপক তাকে থামায়, ‘উহু, একা রাতের পর রাত জাগা সম্ভব নয়। একটা ওয়ার্নিং বেলের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে রাতে মন্দিরের দরজা খােলামাত্র শব্দ শুনে জেগে উঠতে পার। কিন্তু মন্দিরে তাে ইলেকট্রিসিটি নেই। তােমাদের বাড়িতে আছে বটে। উপায় একটা ভেবেছি। তােমার ঘরে বেলটা ফিট করে নেবে।’

    ‘কী রকম?’   নগেন টানটান অ্যাডভেঞ্চারের গন্ধে।

    দীপক বােঝাল, ‘মন্দিরের দরজায় ভেতর দিক থেকে একটা শক্ত অথচ সরু দড়ি লাগানাে থাকবে রাতে। দড়িটা দেওয়ালের গায়ে গায়ে উঠে ঘুলঘুলি দিয়ে বেরিয়ে সােজা চলে যাবে তােমার ঘরে। তােমার ঘরের ঘুলঘুলি দিয়ে গলে নামবে। তার শেষ মাথায় বাধা থাকবে একটা ভারী লােহা। ঝুলবে লােহাটা। একটু নিচে থাকবে একটা টিন বা লােহার পাত। মন্দিরের দরজা খুললেই দড়িটা আলগা হবে এবং তােমার ঘরে লােহার টুকরােটা নিচে নেমে ঠং করে ঘা দেবে পাতে। পাশে শুয়ে থাকলে তুমি অমনি জেগে উঠবে আওয়াজে। অবশ্য তােমার কেমন ঘুম জানি না। আওয়াজে উঠবে তাে?’

    ‘হু, সে ঠিক উঠে পড়ব। বেলটা দারুণ আবিষ্কার করেছেন।’ জানায় নগেন।

    দীপক বলল, ‘আমার আবিষ্কার নয়। এ ধরনের ওয়ার্নিং বেলের চলন আছে যেখানে ইলেকট্রিসিটি নেই। দিনের বেলা দরজা থেকে দড়িটা খুলে নিয়ে গুটিয়ে কোনাে কুলুঙ্গিতে লুকিয়ে রাখবেন পুরােহিতমশাই -হ্যা, উনি জানেন ব্যাপারটা। রাতে দোর বন্ধ করে বেরুবার সময় দড়িটা আটকে দিয়ে যাবেন দরজার গায়ে হুকে। দড়িটা দেখতে না পেলে বাইরের কেউ কিছু সন্দেহ করবে না। মন্দিরের গায়ে একটা গাছ আছে। দড়িটা গাছের ডালপালার ফাঁক দিয়ে যাবে যাতে চট করে নজরে না পড়ে বাইরে থেকে।’

    নগেন বলল, ‘কারও নজরে পড়লেও ক্ষতি নেই। ওটা হনুমান তাড়াবার কল বলে চালিয়ে দেব। মাঝে মাঝে আমাদের দোতলায় হনুমান লাফিয়ে আসে, উৎপাত করে।’

    ‘বাঃ! তাহলে তাে নিশ্চিন্দি।’ দীপক খুশি।

    নগেন হঠাৎ বলল, ‘আমার সঙ্গে বঙ্কাকে চাই।’

    ‘কে বঙ্কা?’   জানতে চায় দীপক।

    ‘আমার খুব বন্ধু। ওই গায়েই থাকে। বেলের আওয়াজে বাই চান্স যদি ঘুম না ভাঙে? বঙ্কা আর আমি দু’জনেই শােব আমার ঘরে। ও প্রায়ই এসে থাকে আমার কাছে। আমারই ক্লাসে পড়ে তবে অন্য স্কুলে। ও কাউকে বলবে না, কথা দিচ্ছি। দু%জনে পালা করে জাগব। বেল বাজার রিস্ক নেব না।

    ‘অলরাইট। তাই করাে।’   দীপক সম্মতি জানায়, ‘আর তােমার কাকা হেমেনবাবুকে বলবে কাল দুপুরে এখানে আমার সঙ্গে একবার দেখা করতে। আমি পলাশপুরে বারবার গেলে লােকে সন্দেহ করতে পারে। মানে ফিউচার চোরেরা।’

    পরদিন হেমেনবাবু আসতে দীপক তাকে বুদ্ধি দিল, ‘গ্রামে চাউর করে দিন যে মন্দিরা সারাবার কথা ভাবছেন। শিবলিঙ্গ বাদে অন্য মূর্তিগুলাে সরিয়ে ফেলে মেঝেও সারাবেন। সপ্তাহখানেক বাদে কাজ শুরু করতে চান। জনে জনে বলার দরকার নেই। এমন কাউকে বলবেন যাতে খবরটা রটে যায় চটপট। আছে তেমন কেউ?’

    ‘আছে বইকি। সব গায়েই থাকে।’   জানান হেমেনবাবু, হরি মুদিকে গল্পচ্ছলে কথাগুলি পেশ করলেই কাম ফতে। একদিনেই গােটা গা জেনে যাবে। কিন্তু বাড়ির লােক জানলে?’

    ‘বাড়ির লোককে বলবেন, প্ল্যান একটা আছে মন্দির সারাবার। তবে ওই সাত-আট দিনটা নেহাত কথার কথা। হরি জিজ্ঞেস করছিল, বলে দিলুম।’

    ‘কিন্তু এই রটনা কেন?’ হেমেনবাবু বিস্মিত।

    ‘কারণ মন্দির সারাই হলে বিষ্ণুমূর্তি সরানাে হতে পারে এই ভয়ে হয়তাে চোর এই ক’দিনের মধ্যেই কাজ হাসিলের চেষ্টা করবে। আমাদেরও বেশিদিন টেনশনে ভুগতে হবেনা।

    পাঁচ দিন বাদে সকাল আটটা নাগাদ ভবানী প্রেসের এক কোণে বঙ্গবার্তার জন্য নিউজ লিখছিল দীপক। এমন সময় এই প্রেস এবং বঙ্গবার্তার মালিক ও সম্পাদক কুঞ্জবিহারীর আগমন ঘটল সশব্দে। দুমদাম করে রাস্তা থেকে প্রেস-ঘরে ঢুকেই দীপককে দেখে তিনি হুংকার ছাড়লেন, ‘আরে দীপক, এখানে কী কচ্চো? ওদিকে কি কাণ্ড হয়েছে জান? পলাশপুর গ্রাচ্ছে সরকারদের মন্দিরে চুরি হয়ে গিয়েছে কাল রাতে। বিষ্ণুমূর্তি উধাও হয়েছে। পুলিশ গিয়েছে। ওই গাঁয়ের মধু বলে গেল হাটে যাওয়ার পথে। যাও এক্ষুণি পলাশপুর, রিপাের্ট নিতে।’

    ‘বাঃ! তাহলে গিয়েছে।’   দীপক উল্লসিত।

    ‘কী ব্যাপার হে? মনে হচ্ছে তুমি যেন আশায় বসেছিলে। বেশ খুশি খুশি দেখাচ্ছে!’ কুঞ্জবাবুর লােমশ ভুরু জট পাকায়।

    ‘সব বলবখন পরে। চলি।’ দীপক দ্রুত বেরিয়ে যায়।

    সরকারদের শিবমন্দিরের গায়ে ঠাসা ভিড়। দুই সরকার কর্তা চিন্তিত মুখে বােলপুর থানার ছােট দারােগার সঙ্গে কথা বলছেন। দীপক উঁকি মেরে দেখল যে মন্দিরের তালা খােলা। কড়া কাটা নয়। নকল চাবি দিয়ে খুলেছে কি? মন্দির থেকে কত সােনাদানা গিয়েছে তাই নিয়ে প্রচণ্ড গুজব চলছে চাপা কঠে। দীপকের কানে এল ইতিমধ্যেই চুরি-যাওয়া ঠাকুরের গয়না ইত্যাদির মূল্য লক্ষ টাকায় পৌঁছেছে। হয়তাে আরও বাড়বে যত সময় যাবে। দীপক নজর করে, সরকারবাড়ি থেকে নগেন তাকে ইশারায় ডাকছে। ঘুরতে ঘুরতে দীপক একটু একা হতেই নগেন টুক করে তার পাশে এসে ফিসফিসিয়ে বলল, ‘কে চোর, কোথায় চোরাই মাল লুকনাে আছে সব জানি। স্কুলে যাচ্ছি। যাব আপনার কাছে টিফিনে।’   বলেই সে স্যাঁৎ করে সরে গেল।

    ‘কী খােয়া গিয়েছে।’   দীপকের প্রশ্নের জবাবে দারােগা জানালেন, ‘একটা বিষ্ণুমূর্তি।’

    ‘সােনাদানা দামি কিছু?’   জানতে চায় দীপক।

    ‘নাঃ। দামি কিছু নাকি রাখা হত না মন্দিরে। দারােগা জানান।

    ‘কাকে সন্দেহ করছেন?’

    ‘এক্ষুণি বলা যাচ্ছে না। মূর্তিটা নাকি খুব প্রাচীন। পুরনাে মূর্তি চুরি স্মাগলারদের কাজ।’

    ‘তালা খুলল কীভাবে?’   দীপকের প্রশ্ন।

    ছােট দারােগা বললেন, ‘বলা যাচ্ছে না ঠিক। নিয়ে যাচ্ছি পরীক্ষা করতে।’

    ‘মূতিটা কি উদ্ধারের আশা আছে?’

    ‘চেষ্টা করব যথাসাধ্য। দারােগার দায়সারা জবাব।’

    দুপুরে দীপকের বাড়ি হাজির হল নগেন। সে উত্তেজনায় ঘামছে। তড়বড় করে বলে গেল, রাত দশটা নাগাদ ঠং করে বেল বাজে। অবশ্য তখন জানলায় বঙ্কা ডিউটি দিচ্ছিল জেগে। শব্দে আমার ঘুমটা সবে ভেঙেছে, বঙ্কা ঠেলা মেরে বলল, ‘একটু আগে একটা লােক গিয়েছে মন্দিরের দরজার দিকে। চেনা যায়নি অন্ধকারে। দু’জনে তখুনি নিচে নেমে খিড়কি দরজা খুলে নিঃশব্দে বেরিয়ে পাঁচিল টপকে মন্দিরের কাছে গেলাম। গাছের আড়াল থেকে নজর রাখলাম। মন্দিরের দরজা বন্ধ কিন্তু তালাটা খেলা। খানিক বাদে দরজা একটু ফাঁক হল। একজন মুখ বাড়িয়ে এদিক-ওদিক দেখে নিয়ে টুক করে বেরিয়ে পথ চলতে লাগল। বেরিয়ে সে দরজাটা ভেজিয়ে দিয়েছিল। বাইরে হালকা চাঁদের আলাে ছিল। লােকটা পথের ধার ঘেঁষে বাড়িগুলাের ছায়ায় গা ঢাকা দিয়ে চলল। তার বগলের নিচে কিছু একটা ছিল। গামছা দিয়ে সেটা ঢেকে নিয়েছিল। গ্রাম তখন শুনশান। দু’একজন মাত্র পথে যাচ্ছে।’

    ‘লোকটাকে চিনতে পেরেছিলে?’ দীপক প্রশ্ন তােলে।

    ‘হ্যা।’   ঘড় নাড়ে নগেন, ‘মতি কামারের ছেলে ষষ্ঠীপদ। ও তালা-চাবির কাজ জানে। চাবি হারালে চাবি বানিয়ে দেয়। সরু শিক ঢুকিয়ে বন্ধ তালা খুলতে পারে।’

    ‘কত বয়স?’

    ‘এই বাইশ-চব্বিশ।’

    ‘গ্রামেই থাকে?’

    ‘হ্যাঁ। তবে মাঝে মাঝে বােলপুরে গ্রিলের কারখানায় কাজ নেয়। তখন বাহিরে থাকে। মহা চালিয়াৎ।’   নগেন রেগে ওঠে।

    ‘হ্যা, তারপর কী হল?’ দীপক তাড়া দেয়।

    নগেন বলে চলে, ‘লুকিয়ে যাবে কোথা? ও মােড় বাঁকতেই আমরা দৌড়ে গিয়ে মােড় থেকে উঁকি মেরে নজর রাখলাম। এমনি দুটো মােড় বেঁকে ষষ্ঠীদা নিজের বাড়ির সামনে গেল। কিন্তু ঢুকল না বাড়িতে। পাশ কাটিয়ে চলে গেল ও পাড়ায় একটা পুকুর আছে সেই দিকে। ঝােপঝাড়ের ভিতর দিয়ে সরু পথে।

    আমরাও লক্ষ রাখলাম পুকুরপাড় থেকে। যষ্ঠীদা জলে নেমে ঘাটের পাশে কিছু একটা ডুবিয়ে রাখল। তারপর উঠে গিয়ে নিজের বাড়িতে ঢুকল।

    দীপক গভীর উদ্বেগে বলে, তুমি এখানে এলে, এতক্ষণে ষষ্ঠী নির্ঘাৎ ওটা পাচার করে দিয়েছে।”

    নগেন মিচকে হেসে জানাল, ‘মােটেই না। সারারাত আমরা পুকুরপাড়ে গার্ড দিয়েছি। সকাল থেকে পালা করে নজর রাখছি। জলের ভেতর বিষ্ণুমূর্তি ঠিক আছে।’

    ‘অ্যাঁ। বিষ্ণুমূর্তি রেখেছে জানলে কী করে?’   দীপক তাজ্জব।

    নগেন বলল, ‘আজ সকালে ষষ্ঠীদা দেখলাম বাড়ি থেকে বেরলাে। ওকে ফলাে কুরলাম। ষষ্ঠীদা বাসে চেপে বােলপুরের দিকে গেল। তক্ষুণি গিয়ে পুরে নেমে ডুবে খুজে দেখলাম, এক থলির মধ্যে বিষ্ণুমূর্তি দিব্যি রয়েছেন।’

    ‘একসেলেন্ট। দারুণ কাজ করেছ।’   দীপক উচ্ছ্বসিত, ‘আচ্ছা পুকুরটায় ভাের থেকে বাসন মাজা, চান করা হয় কি?’

    নগেন জানায়, ‘তা হয়। খুব ভাের থেকেই। ওটাই যে ও পাড়ার একমাত্র পুকুর।’

    ‘তাহলে দিনে নয়, রাতেই তুলবে মূর্তিটা। তারপর পাচার করবে। সাইকেলে যাবে, না বাসে?’ দীপক উত্তর খোঁজে।

    নগেন বলল, ‘যষ্ঠীদার সাইকেল নেই। মতি জ্যাঠার আছে। সেটা লজুঝরে। সাত-আট মাইল যাওয়া যাবে না।’

    ‘হুঁ, তাহলে বাসেই যাবে।’ দীপকের সিদ্ধান্ত, ‘আচ্ছা মতি কামার লােক কেমন? এই ষড়যন্ত্রে আছে মনে হয়?’

    নগেন বলল, ‘মতি জ্যাঠা খুব সৎ মানুষ। এসব করবে না।’

    দীপক বলল, ‘তাহলে যষ্ঠী মূর্তিটা রাতে তুলে ভােরেই পাচার করবে বাসে চড়ে। বাড়িতে বেশিক্ষণ রাখতে সাহস পাবে না। গ্রাম থেকে বাস রাস্তায় পৌঁছনাের তাে একটাই পথ?’

    ‘হ্যাঁ।’ ঘাড় নাড়ে নগেন।

    ‘কিন্তু ষষ্ঠীকে ওয়াচ করার উপায়? মানে থলি বা ব্যাগে মূর্তি পুরে যখন বাসে উঠবে! আজ নিশ্চয় জানতে গিয়েছে, মূর্তিটা কখন হাত বদল করবে। দু’-একদিনের ভিতরেই ও মূর্তি নিয়ে যাবে আসল ঘাটিতে। ও কোথায় গিয়ে মূর্তিটা দেয় সেটা জানা খুব দরকার।’

    ‘সে ব্যবস্থা করে ফেলব।’ নগেন জোরের সঙ্গে জানায়।

    ‘কী করে?’

    নগেন বলে, ‘মতি কামারের ঠিক সামনের বাড়িতে থাকে পাঁচু। আমার বন্ধু। পাঁচু ষষ্ঠীদার ওপর হাড়ে চটা। মাস খানেক আগে ষষ্ঠীদা পাঁচুকে চড় মেরেছিল নেহাতই তুচ্ছ কারণ। পাঁচুকে বলব ওয়াচ রাখতে। যষ্ঠীদা যেই না বাগ-ট্যাগ হাতে বেরুবে সেজেগুজে অমনি যেন আমাদের কাউকে খবর দেয়। খুব ভাের থেকে নজর রাখবে।’

    ‘কিন্তু কারণটা যদি জানতে চায় পাঁচু?”

    ‘সে যা হােক বলে দেব। তবে মূর্তির কথা ভাঙব না। বলব, পরে বলব সব। বলে দেব, যষ্ঠীদাকে একটু প্যাচে ফেলতে চাই সেই কারণেই।

    ‘কিন্তু পাঁচু যখন স্কুলে যাবে?’

    নগেন বিষন্ন সুরে বলে, ‘পাঁচু আর ইস্কুলে যায় না। ক্লাস এইট অবধি পড়ে ছেড়ে দিয়েছে। ওর বাবার কাজে সাহায্য করে। ওর বাবা দর্জি। খুব অভাব ওদের। পাঁচুর কথা বলতে বলতে নগেন কেমন মিইয়ে পড়ে। কিন্তু সে ক্ষণমাত্র। তারপরই ডবল উৎসাহে চেঁচিয়ে ওঠে, ‘আরও একটা ওয়াচ রাখব।’

    ‘আবার কে?’   জিজ্ঞেস করে দীপক।

    নগেন বলে, ‘বাস স্টপেজ চায়ের দোকানটা বঙ্কার দাদার। দোকান খােলে ফাস্ট বাস যাওয়ার আগেই। ওই দোকানে হারু নামে একটা ছেলে কাজ করে, খুব চালাক-চতুর। বঙ্কা ওকে বলে রাখবে, ষষ্ঠীদা হাতে ব্যাগট্যাগ নিয়ে বাস ধরতে এলেই যেন আমাকে বঙ্কাকে কিংবা পাঁচুকে খবর দেয়। আমরা যে পারি ষষ্ঠীদাকে ফলাে করব।’

    ‘অলইট। খেয়াল রাখ।’   মুখে বললেও দীপক নগেনের কথায় খুব একটা ভরসা পায় না। কিন্তু এছাড়া উপায় কী? ষষ্ঠীকে হাতেনাতে ধরতে হবে মূর্তি সমেত। তারপর পুলিশ জেরা করে জানবে কার কাছে মূর্তি যাচ্ছিল। পুলিশকে অবশ্য এক্ষুনি খবর দেওয়া যায়। থানা থেকে টিকটিকি লাগাবে ষষ্ঠীর পিছনে। তারপর ধরবে হাতেনাতে। কিন্তু থানায় তার পুরােপুরি বিশ্বাস নেই। এত আগে খবর দিলে যদি লিক হয়ে যায় খবর! ষষ্ঠী সাবধান হয়ে যাবে। আর এই মূর্তির কাছে ঘেঁষবে না। দীপক জানে থানাতেও এসব গ্যাংয়ের চর থাকে। একেবারে লাস্ট মােমেন্টে জানাবে থানায়। যাতে বড় বা ছােট দারােগা স্বয়ং গিয়ে বামাল সমেত ধরতে পারে যষ্ঠীকে। দীপক ভাবছে এইসব। ছোটন হঠাৎ ফস করে বলে বসল, ‘কাকু, আমি আজ নগেনের সঙ্গে পলাশপুর যাই না? ও কতবার থাকতে বলে ওদের বাড়িতে। যাওয়া হয়নি। বঙ্কার সঙ্গে আমার চেনা আছে। দু’দিন থাকব ওদের বাড়ি। কাল শনিবার ইস্কুলে ছুটি দিয়েছে। সােমবার ওখান থেকে সােজা স্কুলে চলে আসব। তুমি একটু বলে দাও মা-কে।’

    অমনি নগেন যােগ দেয়, ‘হ্যাঁ, ও দুদিন থাকবে আমার কাছে। দিন না যেতে।’

    ‘বুঝেচি’, হেসে বলে দীপক, ওখানে নরক গুলজার করবে তিনজনে। তবে বাপু বেশি উৎসাহে বাড়াবাড়ি করাে না। ষষ্ঠী সতর্ক হয়ে যাবে। ঠিক আছে ছােটন, তাের যাওয়ার পারমিশন করে দেব।’

    ছােটনের ছােট বোন ঝুমা আড়াল থেকে সব শুনেহে। নগেন ছােটন স্কুলে চলে যেতেই সে এসে আবদার জুড়ল, ‘কাকু, আমার বুঝি পলাশপুর যেতে ইচ্ছে করে না? নগেনদার বােনের সঙ্গে ভাব করতে কদ্দিনের হচ্ছে।’

    দীপক দাবড়ে নেয় তাকে, ‘মােটেই না। এখন ওসব আহ্লাদ ছাড়। দু’দুটো বাইরের ছেলে-মেয়ে বাড়ির কাছে ঘুরঘুর করছে দেখলে যষ্ঠীপদ মূর্তির ধারকাছ মাড়াবে না। পরে যেও।

    অভিমানে ঝুমা ঠোট ফুলিয়ে চলে যায়।

    বেশি ভােগাল না যষ্ঠীপদ।

    রবিবার সকালে ঝড়ের মতাে হাজির হয়ে ছােটন দীপককে ডাকল, ‘কাকু, কুইক। ষষ্ঠীপদ এসে গেছে মাল নিয়ে। চৌরাস্তায় বাস থেকে নেমে ও রিকশা চড়ে গিয়েছে। নগেন বঙ্কা ওকে ফলাে করেছে। যষ্ঠীপদর হাতে একটা কিটব্যাগ ছিল। পাঁচু বলেছে, ও নাকি কাল রাতে যষ্ঠীপদকে পুকুরে নামতে দেখেছে। তাই বুঝছ তাে—’

    দীপক চটপট তৈরি হতে হতে জেনে নেয় নগেন ছােটন শনি রবি দু’দিনই সকাল থেকে রেডি হয়েছিল। আর বঙ্কা ভাের থেকে ওর দাদার দোকানে গিয়ে জুটত। আজ পাঁচু খবর দেওয়ামাত্র বেরিয়ে পড়েছে। দীপককে চৌরাস্তায় অপেক্ষা করতে বলেছে নগেন।

    দীপক সাইকেল চড়ে বেরুল। পেছনে ক্যারিয়ারে ছােটন।

    মিনিট পনেরাে বাদেই দেখা গেল নগেন হাঁপাতে হাঁপাতে আসছে। সে খবর দিল যে ষষ্ঠীপদ একটা বড় লাল বাড়িতে ঢুকেছে। ও বাড়ি ওমপ্রকাশের। বিসনেসম্যান। বঙ্কা গার্ড দিচ্ছে।

    নগেন আর ছােটনকে পাহারায় পাঠিয়ে দীপক সাইকেলে ছুটল থানায়।

    দারোগাবাবুদের আভাস দিয়ে রেখেছিল দীপক যাতে ঠিক সময় হেল্প পাওয়া যায়। তবে কেসটা কী ভেঙে বলেনি। সব শুনে বড় দারােগা বললেন, ‘আপনার ইনফর্মেশন কারেক্ট তাে? ওমপ্রকাশ সােজা লােক নয়। ঝামেলা পাকাতে পারে।’

    ‘হান্ড্রেড পারসেন্ট কারেক্ট’, জোর দিয়ে বলে দীপক, এখন তাে যাবেন যষ্ঠীপদর খোঁজে। মূর্তি পাওয়া গেলে তখন যদি ওমপ্রকাশ জড়িয়ে যায় তাকেও ধরতে অসুবিধা নেই।

    আচমকা পুলিশের হানায় ষষ্ঠীপদ পালাবার সুযােগ পেল না। তার কিটব্যাগ খালি। কিন্তু বৈঠকখানায় যেখানে সে ছিল, সেই ঘরেই খুঁজে পাওয়া গেল বিষ্ণুমূর্তি, এক গাদা তাকিয়ার নিচে। ওমপ্রকাশও উপস্থিত ছিল সেই ঘরে। ফলে ওমপ্রকাশকেও গ্রেফতার করল পুলিশ। ওমপ্রকাশের বাড়ি সার্চ করা হল। একটা গুদামে অনেকগুলাে খুঁটের বস্তা ছিল। একটা বস্তার ওপরে খুঁটে, তলায় মিলল হরেকরকম পুরনাে শিল্পদ্রব্য। নানা ধরনের পাথর ও পােড়া মাটির মূর্তি আর কিছু রুপাের বাসন। সব কটিই অপূর্ব কারুকার্য করা। আবার একটা বস্তার ভিতর পাওয়া গেল পিতলের তৈরি ফুট দেড়েক উচু প্রাচীন রাধাকৃষ্ণ মূর্তি।

    দারােগাসাহেব দেখেই চিনলেন ওই মূর্তিটা এবং রুপপার বাসনগুলি চুরি যাওয়া দ্রব্য হিসাবে ইতিমধ্যে ডায়েরি করা আছে থানায়। বাকি জিনিসের মালিকরা হয়তাে এখনও টেরই পায়নি যে তাদের জিনিস খােয়া গিয়েছে। অথবা কোনাে দূর এলাকা থেকে এখানে আনা হয়েছে জিনিসগুলি। রাধাকৃষ্ণের মূর্তিটা এবং ওই পুরনাে শৌখিন জিনিসগুলি এখানে এল কেমন করে? ওমপ্রকাশ তার সদুত্তর দিতে পারে না।

    পলাশপুরের বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধারের পর পুলিশি তদন্ত চলছে। যাতে চোরদের গােটা গ্যাং ধরা পড়ে। ষষ্ঠীপদ আর ওমপ্রকাশ দুজনেই আপাতত হাজতে।

    দীপক সম্পাদকের কামরায় ঢুকতেই টেবিলে বঙ্গবার্তার জন্য দীপকের স্টোরি ‘মূর্তি চুরি রহস্য’ লেখাটি দেখিয়ে গমগমিয়ে ওঠে সম্পাদকের কণ্ঠ, “ওয়েল ডান।” তারপরেই তিনি ধমকে উঠলেন, ‘কিন্তু বড় রিস্ক নিয়েছিলে হে। উচিত হয়নি।’

    ‘কেন? কীসের রিস্ক? দীপক বেশ অবাক।

    কুঞ্জবিহারী কড়া সুরে বললেন, ‘ওই বাচ্চা ছেলেগুলাের চোখ এড়িয়ে যষ্ঠীপদ যদি সরে পড়ত? যদি ওমপ্রকাশের বাড়িতে পুলিশ পৌছানাের আগেই পাচার হয়ে যেত বিষ্ণুমূর্তি? আর উদ্ধার না হত?’

    দীপক সামনের চেয়ারে বসতে বসতে নির্বিকার স্বরে বলল, ‘তাহলে ষষ্ঠীপদই বিপদে পড়ত। ধরা পড়ে ও বেঁচে গিয়েছে।’

    ‘মানে?’   গর্জে ওঠেন সম্পাদক।

    ‘মানে নকল মূর্তি গছিয়ে মােটা দাও মারার অপরাধে ষষ্ঠীকে ছাড়ত না ওই গ্যাং। খুন হয়ে যেত ষষ্ঠী।’   একই ভঙ্গিতে জানায় দীপক।

    ‘মানে?’   কুঞ্জবিহারীর গলা আর একপর্দা চড়ে।

    দীপক বলল, ‘স্টোরিতে যা লিখিনি তা হচ্ছে, ষষ্ঠী যেটা চুরি করেছিল সেটা নকল। সেই যে ওড়িশায় গিয়েছিলাম। ওখানে পাথরের মূর্তি বানানাের ওস্তাদ সব কারিগর আছে। কয়েকজনকে আমি চিনি। সরকারদের বিষ্ণুমূর্তির ফোটো দেখে ওরা প্রায় অবিকল অমনি একটা মূর্তি বানিয়ে দেয় আমায়। আমি ফিরলে, নকলটাই রাখা হয় মন্দিরে আর আসলটা চলে যায় হেমেন সরকারের বেডরুমে। এই গােপন ব্যাপারটা শুধু জানতাম আমি, হেমেনবাবু আর পুরােহিতমশাই। মূর্তি বানানাের খরচাটা হেমেন সরকারই দিয়েছিলেন।

    হতভম্ব সম্পাদককে মিঁচকে হাসি দিয়ে দীপক মন্তব্য করে, ‘আমি কি অতই কাঁচা?’

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleথানা থেকে আসছি – অজিত গঙ্গোপাধ্যায়
    Next Article গল্পসংগ্রহ – অজেয় রায়

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }