Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025

    আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    September 22, 2025

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    September 22, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    লৌকিক এবং অলৌকিক গল্প – প্রফুল্ল রায়

    প্রফুল্ল রায় এক পাতা গল্প238 Mins Read0

    গা ছমছম একটা বিকেল

    গা ছমছম একটা বিকেল

    চুয়ান্ন বছর আগে সেই উনিশ শো ঊনষাটে আমি দণ্ডকারণ্যে গিয়েছিলাম। কেন গিয়েছিলাম, তার সঙ্গে এই গল্পের সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক যেটুকু তা হল মহেশের সঙ্গে পরিচয় হওয়া।

    মহেশ চাপেকার মারাঠি। সে ছিল বম্বের ইংরেজি খবরের কাগজ ‘ডেইলি নিউজ’—এর রোভিং রিপোর্টার। তার কাজ ছিল সারা দেশ ঘুরে চমকে দেওয়ার মতো খবর জোগাড় করা। সেই সব খবর পাঠকরা গোগ্রাসে গিলত।

    মহেশ আমার চেয়ে বছর দুয়েকের বড়। খুবই হাসিখুশি, সারাক্ষণ যেন টগবগ করে ফুটছে। মানুষকে আপন করে নেওয়ার মতো আশ্চর্য জাদু ছিল তার মধ্যে। আলাপ হল ‘আপনি—টাপনি’ দিয়ে। একঘণ্টার ভেতর ‘তুমি’, তার ঘণ্টা চারেক পর একেবারে ‘তুই’তে নেমে গেলাম আমরা। যেন কতকালের বন্ধু। দু—হাজার পাঁচ সালে তার মৃত্যু পর্যন্ত সেই বন্ধুত্ব অটুট ছিল। আমি আছি কলকাতায়, সে থাকত সেই আমলের বম্বে, পরে মুম্বাইতে। দু—তিন দিন পরপর আমাকে ফোন না করলে তার ঘুম হত না। এতটাই ছিল আমার ওপর তার টান। এসব অনেক পরের কথা।

    দণ্ডকারণ্যের কাজ শেষ করে আমরা রায়পুর এলাম। এখান থেকে সে যাবে দেশের পশ্চিম প্রান্তের আরব সাগরের পাড়ের শহরে, আমি ঠিক উলটোদিকে, হুগলি নদীর পাড়ে দেশের পূর্ব প্রান্তের শহরে। কিন্তু মহেশ আমাকে ছাড়ল না, টেনে হেঁচড়ে নিয়ে গেল বম্বেতে। আমাকে এতটাই ভালো লেগে গিয়েছিল যে তার ইচ্ছা আমি বম্বেতেই চাকরি বাকরি জুটিয়ে তার কাছাকাছি থেকে যাই। পাকাপাকিভাবে থাকাটা অবশ্য সম্ভব হয়নি। তবে সেই যে গিয়েছিলাম, একটানা দশটি মাস কাটিয়ে এসেছি। একটা সময় এমন হয়েছিল যে প্রায় প্রতি মাসেই আমাকে সেখানে যেতে হয়েছে। কলকাতা থেকে বম্বে, বম্বে থেকে কলকাতা—এটা বেশ কিছুকাল আমার মাসিক রুটিনে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল।

    যাক, প্রথম যাত্রার কথা বলা যাক। আমরা রায়পুর থেকে বম্বে মেলে চড়ে ভোরবেলা বম্বের দাদার স্টেশনে পৌঁছে গেলাম। সেখান থেকে খুব কাছে শিবাজি পার্কের গায়েই মহেশদের বাড়ি। সে আমাকে ওদের বাড়ি নিয়ে যেতে চাইল। আমি ঘাড় বেঁকিয়ে রইলাম। অন্যের বাড়িতে থাকাটা আমার একেবারেই পছন্দ নয়। কেমন আড়ষ্ট—আড়ষ্ট লাগে। অনেক জোরাজুরি করল মহেশ। তাকে বললাম, ‘তোর সব কথা শুনেছি, এটা পারব না। আমাকে একটা মোটামুটি ভদ্র টাইপের হোটেল ঠিক করে দে।’

    হাল ছেড়ে দিয়ে বেজার মুখে খার—এ (শহরতলির একটা জায়গা) তার জানাশোনা পাপাজি মানে সর্দারজিদের একটা হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করে দিল। আমার বম্বের প্রথম আস্তানাটা বেশ নিরিবিলি। চারদিক ফাঁকা ফাঁকা। গাছপালা প্রচুর, পাখি অজস্র। তেতলা লম্বা ধরনের হোটেল বিল্ডিং—এর দোতলার কোণের দিকের একটা ছোট ঘরে ঘাঁটি গাড়লাম। সাবার্বন ট্রেনে এখান থেকে শিবাজি পার্ক পৌঁছুতে হলে মাতুঙ্গা কি দাদারে নেমে বাস ধরলে মিনিট দশ—বারো লাগে।

    কলকাতায় যাঁদের সঙ্গে পরিচয় এবং ঘনিষ্ঠতা ছিল এমন অনেক কৃতী বাঙালি তখন বম্বেতে চলে গেছেন। বড় বড় কোম্পানিতে উঁচু পোস্টে কাজ করছেন। অনেকে হিন্দি ফিল্মের সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন। বিখ্যাত শিল্পী আশু বন্দ্যোপাধ্যায় তখন বিরাট একটা অ্যাডভারটাইজিং কোম্পানির আর্ট ডিরেক্টর। তিনি আমার প্রথম উপন্যাস ‘পূর্বপার্বতী’র মলাটের চমৎকার ছবি এঁকে দিয়েছিলেন। এঁদের সঙ্গে দেখা করলাম। কলকাতা থেকে একজন লেখক এসেছে। বাঙালির দলটা ভারী হবে। এজন্য ওঁরা সবাই খুশি। আমাকে ধরে রাখার জন্য উঠে পড়ে লাগলেন।

    আশুবাবু বিজ্ঞাপনের ইংরেজি কপি দিয়ে চটকদার বাংলায় তর্জমা করার কাজ দিলেন। সিনেমাতেও কিছু ‘সিন’ লেখার বরাতও জুটে গেল। সবাই ভরসা দিলেন, বম্বেতে টাকা উড়ছে, আমার পাকা একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে।

    আমার সেদিকে মন নেই; যে ক’দিন থাকব খরচ চলে গেলেই হল। যা ভেবেছিলাম, তার চেয়ে অনেক বেশিই আসতে লাগল। মাঝে—মাঝে মনে হত, কলকাতায় গিয়ে কী হবে, এখানেই থেকে যাই।

    মহেশ তার ডিউটির ফাঁকে ফাঁকে প্রায় রোজই আমার হোটেলে আসত। আমিও ওদের বাড়ি যেতাম। ওর মা—বাবা ভাইবোনেরা চমৎকার মানুষ। সপ্তাহে একদিন অন্তত ওদের বাড়ি না গেলে ক্ষুব্ধ হতেন। দিনগুলো মোটামুটি ভালোই কাটতে লাগল।

    এবার আসল গল্পে আসা যাক। মহেশ ছিল দারুণ ঈশ্বরভক্ত ছেলে। গণপতি থেকে মা দুর্গা, মা কালী, লক্ষ্মী, সরস্বতী—তেত্রিশ কোটি দেবদেবীর নাম শুনলেই হাতজোড় করত। রাস্তায় অশ্বত্থগাছের তলায় তেল—সিঁদুর মাখানো পাথর দেখলে মাথা ঝুঁকিয়ে দিত। তা ছাড়া সাধু—সন্ন্যাসী ফকির দরবেশ তান্ত্রিক, কারও খবর পেলেই তাদের কাছে দৌড়ত। ভূত—প্রেত সমস্ত কিছু বিশ্বাস করত। জ্যোতিষীদের ওপর ছিল অসীম ভরসা। এদের পেছনে কত টাকা যে খরচ করেছে, তার হিসেব নেই। আমি এসবের কিছুটা বিশ্বাস করতাম, অনেকটাই করতাম না।

    মহেশের এক প্রিয় বন্ধু ছিল সুরেন্দ্র দানি। তারা গুজরাটি। তার সঙ্গে আমার আলাপ করিয়ে দিয়েছিল মহেশ।

    গুজরাটিরা এমনিতেই খুব শান্ত, ভদ্র, বিনয়ী হয়। কখনও উঁচু গলায় চেঁচিয়ে—মেচিয়ে কথা বলে না। তারা ধর্মভীরু এবং ঈশ্বরবিশ্বাসী। আমি অন্তত যেসব গুজরাটিকে দেখেছি তাদের কথা বলছি। কিন্তু সুরেন্দ্র একেবারে সৃষ্টিছাড়া। সারাক্ষণ হইচই করছে। প্রচণ্ড নাস্তিক—ঈশ্বর—টিশ্বর মানে না। সাধু—সন্ন্যাসীদের ওপর এতটুকু ভক্তি নেই।

    তাদের নাম করলে ভুরু কুঁচকে তাচ্ছিল্যের সুরে বলত, ‘ওগুলো ভণ্ড, বজ্জাত। ওদের ধরে এনে রাস্তার পাথর ভাঙা কি কাঁধে জোয়াল চাপিয়ে জমিতে চাষ করানো দরকার। তাতে দেশের উপকার হবে।’

    জ্যোতিষীদের কথা উঠলে খেপে যেত।—’ওরা জোচ্চেচার। মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের ঠকায়। হাত বা জন্মপত্রিকা মানে কোষ্ঠী—টোষ্ঠী দেখে বলে সামনে তোমার মহাবিপদ, কিংবা ছেলের লেখাপড়ায় মন নেই, বা মেয়ের বিয়েতে বাধা পড়বে, কাজেই হিরে পরো, চুনি পরো, মেয়েকে নীলা পরাও, ছেলেকে পোকরাজ পরাও—এইভাবে দামি দামি রত্ন গছিয়ে প্রচুর টাকা কামায়। এরা সমাজের প্যারাসাইট! মানে পরগাছা।’

    সুরেন্দ্র নিরামিষের ধার ধারে না। হোটেল রেস্তোরাঁয় গিয়ে মটন—চিকেন খায়। তবে মনটা ভীষণ ভালো। গরিব ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করতে পারছে না, সে তাদের স্কুলের খরচ চালায়, বই—টই কিনে দেয়। কেউ মেয়ের বিয়ে দিতে পারছে না, জানতে পারলে সব ব্যবস্থা করে দেয়। কেউ চিকিৎসা করাতে পারছে না, খবরটা কানে গেলেই দৌড়ে গিয়ে টাকা দিয়ে আসবে।

    সুরেন্দ্রদের বিরাট গারমেন্টের ব্যবসা। প্যারেলে মস্ত কারখানা, সেখানে শ’তিনেক দর্জি তিন শিফটে শার্ট—প্যান্ট বানায়। সেসব পোশাকের আশি ভাগ বিদেশে এক্সপোর্ট করে। ওদের কোটি—কোটি টাকা। শিবাজি পার্কের পাশে মহেশদের বাড়ির কাছেই ওদের মস্ত চোখধাঁধানো বাড়ি। বিরাট বড়লোক। কিন্তু নাক—উঁচু ভাব নেই। বাড়িতে আট—দশটা নতুন নতুন মডেলের গাড়ি আছে কিন্তু কোথাও যেতে হলে আমাদের মতো ট্রেনে—বাসেই যায়। সুরেন্দ্রর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হয়ে গেল।

    এক রবিবার সকালে মহেশ আমার হোটেলে ফোন করল। দারুণ উত্তেজিত ভাবে বলল, ‘জানিস, এক সিদ্ধপুরুষের খবর পেয়েছি। বিরাট তান্ত্রিক। আন্ধেরি ইস্ট ছাড়িয়ে খানিকটা গেলে তাঁর আশ্রম। কীভাবে সেখানে যেতে হবে, সব জেনে নিয়েছি। তিনি নাকি মুখ দেখে মানুষের ভূত—ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারেন। আজ বিকেল তিনটেয় রেডি থাকিস; আমি ওই আশ্রমে যাচ্ছি, তোকেও নিয়ে যেতে চাই। যাবি তো?’

    সাধু—সন্ন্যাসীর ব্যাপারে আমার আগ্রহ আছে। বললাম, ‘নিশ্চয়ই যাব।’ তখন আমি এখানে—সেখানে ভেসে বেড়াতে—বেড়াতে বম্বেতে এসে ঠেকেছি। আমার ভবিষ্যৎ যদি জেনে নেওয়া যায়, সেইমতো ছক তৈরি করে এগুনো যাবে।

    মহেশ বলল, ‘কিন্তু একটা প্রবলেম দেখা দিয়েছে।’

    ‘কীসের প্রবলেম?’

    ‘সুরেন্দ্রটা কীভাবে টের পেয়ে আমাদের সঙ্গেই ভিড়তে চাইছে। একবার যখন গোঁ ধরেছে, ওকেও সঙ্গে নিতে হবে। নানাভাবে ওকে কাটিয়ে দিতে চেয়েছি, কিন্তু কোনও কথা শুনছে না। জানিসই তো সুরেন্দ্র কীরকম ছেলে। আশ্রমে গিয়ে সাধুকে উলটোপালটা কিছু বলে যদি চটিয়ে দেয় আমাদের বারোটা বেজে যাবে।’

    বললাম, ‘ছাড়বে না যখন, তখন ওকে নিতেই হবে। ভালো করে বোঝা, যেন আশ্রমে গিয়ে শান্তশিষ্ট থাকে। কোনও রকম গোলমাল না পাকায়।’

    ‘দেখি—।’

    ঠিক তিনটেয় মহেশ আর সুরেন্দ্র এসে হাজির। আমরা তিনজন বেরিয়ে পড়লাম। খার থেকে সাবার্বন ট্রেনে আন্ধেরি। মিনিট পনেরো। সেখান থেকে বাস ধরতে হবে।

    তখন আন্ধেরির ওই দিকটা ভীষণ ফাঁকা—ফাঁকা। এখানে একটা বাড়ি, তো দেড়শো গজ দূরে আরেকটা। স্টেশনে নেমে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হল। তারপর বি ই এস টি—র লাল টকটকে বাস এল। আমরা উঠে বসলাম।

    বাস চলতে শুরু করেছে। এক সময় বিখ্যাত চিত্র পরিচালক বিমল রায় যিনি ‘দো বিঘা জমিন’, হিন্দি ‘দেবদাস’, ‘পরিণীতা’, ‘সুজাতা’—এই সব ছবি তৈরি করেছেন, তাঁর ‘মোহন স্টুডিয়ো’ পেরিয়ে কতদূর চলে এসেছি, খেয়াল নেই। এখানে শুধু চারপাশে পাহাড় আর জঙ্গল।

    মহেশের কথামতো কন্ডাক্টর এক জায়গায় আমাদের নামিয়ে দিয়ে একটা পাহাড়ের আড়ালে অদৃশ্য হয়ে গেল।

    কারওকে জিজ্ঞেস করে আশ্রমটা ঠিক কোথায় যে জেনে নেওয়া যাবে, তার উপায় নেই। কেন না, আশেপাশে বা দূরে একটি মানুষও চোখে পড়ছে না।

    সুরেন্দ্র জিজ্ঞেস করল, ‘আশ্রমের রাস্তাটা চিনিস তো? যে খবর দিয়েছে তার কাছে ঠিকমতো বুঝে নিয়েছিস?’

    ‘মহেশকে বেশ চিন্তিত দেখাল। সে বলল, ‘বাসস্টপে নেমে একটু এগিয়ে বাঁ—দিকে বাজ—পড়া বড় পিপুল গাছ আছে, তার পাশ দিয়ে সরু পথ দিয়ে খানিকটা গেলেই আশ্রম।’

    অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাজ—পড়া পিপুলগাছটি পাওয়া গেল। ততক্ষণে আমরা ঘেমে নেয়ে গেছি। কারণ এখানকার রাস্তা উঁচু—নীচু, পাহাড়—কাটা। এত ওঠানামায় হাড়গোড় থেঁতো হওয়ার জোগাড়।

    মহেশ কিন্তু বিপুল উৎসাহে চেঁচিয়ে উঠল—’এইবার আশ্রমটা বের করা যাবে। আয়—!’

    বাস রাস্তা থেকে বাঁ—দিকের একটা সরু কাঁচা রাস্তায় ঢুকে পড়লাম। দুপাশ থেকে ঝাঁকড়া—ঝাঁকড়া প্রকাণ্ড গাছগুলোর ডালপালা রাস্তার ওপর চাঁদোয়া তৈরি করে দাঁড়িয়ে আছে। মহেশ আমাদের টিম লিডার। সে আমাদের নিয়ে চলছে তো চলছেই।

    চারদিক নিস্তব্ধ। এই দিনের বেলাতেও ঝোপঝাড় থেকে একটানা ঝিঁঝির ডাক উঠে আসছে। মাঝে মাঝে গাছের মাথায় পাখিদের ডানা ঝাপটানোর আওয়াজ। অনেক দূরে দূরে পাহাড়ের মাথায় দু—একটা ঝাপসা পাহাড়ি গ্রাম। সেখানে ছোট—ছোট পুতুলের আকারের দু—চারটে ঘাটিকে (পাহাড়ি) দেখা যাচ্ছে। মনে হয়, ব্যস্ত শহরের তুমুল কোলাহলময় জীবন থেকে আচমকা যেন একটা অচেনা, আদিম জগতে চলে এসেছি।

    সুরেন্দ্র বলল, ‘আর পারছি না মহেশ। হাঁটুর হাড় আলগা হয়ে আসছে। আর কতদূরে তোর আশ্রম?’

    আমার হালও একই রকম। কোনওরকমে এবড়ো—খেবড়ো পথে ছোট—ছোট চড়াই—উতরাই ভেঙে এলোমেলো পা ফেলে একরকম খুঁড়িয়ে—খুঁড়িয়ে হাঁটছি।

    মহেশও খানিকটা ধসে পড়েছো। কিন্তু সিদ্ধপুরুষের গন্ধ যখন পেয়ে গেছে, এত সহজে হাল ছাড়ার পাত্র নয়। বলল, ‘আর খানিকটা চল।’

    সুরেন্দ্র প্রায় ককিয়ে উঠল। ‘আর খানিকটা, আর খানিকটা করে ঘণ্টাখানেক হাঁটালি! তোর মতলবটা কী? আমাদের কি নর্থ পোলে নিয়ে যাবি?’

    আমি বললাম ‘ইমপসিবল! মহেশ, এবার ফিরে চল—।’

    মহেশ কাকুতিমিনতি করতে লাগল, ‘প্লিজ, প্লিজ, প্লিজ। ফিরে যাওয়ার কথা বলিস না। আর দশ মিনিট চল। তখনও যদি আশ্রমটা না পাওয়া যায়—’

    তার কথা শেষ হতে না—হতেই তিনরকম গলায় বিকট গর্জন আমাদের দিকে ধেয়ে এল।’

    ‘রুখ যা, রুখ যা, রুখ যা!’

    সারা শরীর কেঁপে উঠল। আমাদের তিন জোড়া পা আপনা থেকেই থমকে গেছে। চমকে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখি প্রায় একশো গজ দূরে তিনজন সন্ন্যাসী দাঁড়িয়ে আছে। মাঝখানের সন্ন্যাসীর বয়স পঁয়ষট্টি—ছেষট্টি। মাথায় ধবধবে চুলের গোটাকয়েক জটা। মুখে সাদা দাড়ির জঙ্গল। হাইট ছ’ফুটের কাছাকাছি। এই বয়সেও জবরদস্ত চেহারা খালি গা, রোমশ বুক। কোমর থেকে পায়ের পাতা অবধি লাল লুঙ্গির মতো ঢোলা পোশাক; যাঁকে বলে রক্তাম্বর। কপালে মস্ত বড় গোলা সিঁদুরের টিপ।

    দুপাশের দুজনের বয়স পঁয়ত্রিশ—ছত্রিশের বেশি হবে না। এদের হাইট আরও বেশি। চেহারা যেন পাথর দিয়ে তৈরি। বুকের পাটা কম করে পঞ্চাশ ইঞ্চি। এদেরও একই রকম ইউনিফর্ম। মাথায় জটা, কপালে সিঁদুরের বড় গোলাকার টিপ, বুকে লোমের ঝোপঝাড়। দুটো বুনো বাইসনকে রক্তাম্বর পরালে যেমন দেখায়, অনেকটা সেইরকম। আন্দাজ করে নিলাম, এরা তান্ত্রিক। বয়স্ক সন্ন্যাসীটি গুরুদেব, দু’পাশের দুজন তার শাগরেদ।

    তিন তান্ত্রিকের চোখ যেন জ্বলছে। এই নির্জন জঙ্গল, আর মাঝখানে উৎপাতের মতো আমরা যে হাজির হয়েছি, সেটা তাদের পছন্দ হচ্ছে না। তিনজনই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে।

    গুরুদেব হুঙ্কার দিল, ‘ভাগো—! ভাগো—!

    মাছি তাড়াবার ভঙ্গিতে হাত নাড়তে নাড়তে একই কথা অনবরত বলতে লাগল।

    দুই শাগরেদও কোরাসে হুঙ্কার ছাড়তে লাগল।

    ‘ভাগো হিঁয়াসে, ভাগো, আভভি—!’

    এমন একটা ভাব, আমরা না চলে গেলে একেবারে ছিঁড়ে খাবে।

    সুরেন্দ্র আর আমি রীতিমতো ভয় পেয়ে গেছি। শুকনো গলায় বললাম, ‘এখানে থাকাটা আর নিরাপদ হবে না, চল, পালাই—।’

    সাধু—সন্ন্যাসী ফকির দরবেশ ঘেঁটে ঘেঁটে মহেশ বেশ পরিপক্ব হয়ে উঠেছে। ওদের মনস্তত্ত্বটি ভালোই বুঝতে পারে। বলল, ‘ঘাবড়াস না। দেখ না শেষ পর্যন্ত কী হয়।’

    মিনিট দশেক হুমকি দেওয়ার পর গালাগালি দিতে শুরু করল দুই শাগরেদ; আমাদের চোদ্দো পুরুষ উদ্ধার করে মিনিটে পাঁচশোটা করে নোংরা—নোংরা শব্দ উগরে দিতে লাগল।

    মহেশকে ওরা টলাতে পারল না। বলল, ‘চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক। ওরা আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছে।’

    গালাগালির পরে দুই শাগরেদ এবার পাথর ছুড়তে শুরু করল, ‘আমাদের মাথার ওপর দিয়ে, পাশ দিয়ে সেগুলো মিসাইলের মতো উড়ে যাচ্ছে। একটা যদি গায়ে লাগে, বেঁচে আর ফিরতে হবে না, এখানেই ভবলীলা সাঙ্গ হবে।’

    মহেশের সেই অভয়বাণী,—’ভয় পাস না। এখনও ওদের পরীক্ষা নেওয়া শেষ হয়নি। একটু পিছিয়ে চল—।’

    পঁচিশ গজের মতো পেছন দিকে সরে গেলাম। এবার আর পাথরের টুকরোগুলো গায়ে লাগার সম্ভাবনা নেই। সেগুলো একটু দূরে—দূরে এসে পড়ছে।

    একসময় গুরুদেব হাত তুলে দুই শাগরেদকে থামতে ইশারা করলেন। গোলাবর্ষণ বন্ধ হল।

    লক্ষ করলাম, গুরুদেবের চোখেমুখে কিছুক্ষণ আগের মতো আগুনের হলকা নেই; অনেকটা নরম মনে হচ্ছে তাকে। হাতছানি দিয়ে আমাদের ডাকল, ‘আ যা আ যা—।’

    মহেশ চাপা গলায় আমাদের বলল, ‘পরীক্ষায় আমরা পাশ করেছি; আর ভয় নেই। চল—।’

    গুরুদেবের কাছে যেতেই হিন্দিতে বলল, ‘আমার সঙ্গে চল—।’

    শাগরেদরা কিছু বলল না। হিংস্র দৃষ্টিতে আমাদের দিকে তাকাতে—তাকাতে সঙ্গ নিল। গুরুদেব যে তিন অচেনা ছোকরাকে করুণা করেছে, সেজন্য তারা খুশি হতে পারেনি। কিন্তু কিছু করার নেই। গুরুদেবের ওপর কথা বলবে, তেমন স্পর্ধা বা সাহস ওদের নেই।

    একটু দূরেই আশ্রম। একটা বিশাল বটগাছের গুঁড়ির পনেরো ফিটের মতো হাইটে অনেকখানি জায়গা জুড়ে টিনের চালা। মাথায় একটা বাঁশের ডগায় লাল কাপড় বাতাসে উড়ছে। কয়েকটা ইটের দেওয়ালে ঘেরা ঘরও রয়েছে। বটগাছের গুঁড়িটার তলায় বসার জন্য তিন—চারটে শতরঞ্চি পাতা। তার ঠিক সামনেই উঁচু বেদির মতো জায়গা। সেখানে পুরু পশমের আসন পাতা। আমাদের শতরঞ্চিতে বসতে বলে গুরুদেব বেদির ওপর বসল।

    লক্ষ করলাম, টিনের চালার তলায় বটগাছের দু—চারটে সরু ডাল রয়েছে, বাকি ডালগুলো চালের ওপর। নীচের ডালে অনেক সাধু—সন্ন্যাসীর বাঁধানো ফোটো দড়ি দিয়ে বাঁধা; সেগুলো ঝুলছে। এদের মধ্যে বামাক্ষ্যাপা, রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব, বাবা লোকনাথকে চিনতে পারলাম। বাকি সবাই আমার অচেনা।

    আরও চোখে পড়ল, আমাদের শতরঞ্চিগুলোর কাছাকাছি আট—দশটা গর্ত। সেগুলো থেকে হঠাৎ ক’টা সাপ বেরিয়ে এল। আমরা তিন বন্ধু আতঙ্কে একেবারে সিঁটিয়ে গেলাম। এরা কেউ নিরীহ ঢোঁড়া সাপ নয়। যদি ছোবল মারে, আর দেখতে হবে না; পলকে মৃত্যু।

    গুরুদেব হেসে হেসে পরম স্নেহে সাপগুলোকে বলল, ‘বাচ্চালোক, যা—যা। ইয়ে তিন ছোকরা ডরতা হ্যায়।’

    কী আশ্চর্য, মারাত্মক বিষধর সাপ ক’টা নিঃশব্দে সুড়সুড় করে গর্তে ঢুকে গেল। এবার গুরুদেব গম্ভীর মুখে আমাদের দিকে তাকালেন। জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী জানতে চাস বল—।’

    মহেশ আর আমি সাষ্টাঙ্গে গুরুদেবের পা ছুঁয়ে প্রণাম করে উঠে বসলাম। সুরেন্দ্র চুপচাপ বসে রইল। সাধু—টাধুদের পায়ে হাত ঠেকাবার পাত্রই সে নয়। গুরুদেব চোখের কোণ দিয়ে সেটা লক্ষ করেছে। কিন্তু কিছু বলেনি।

    মহেশ হাতজোড় করে বলল, ‘বাবা তুমি তো অন্তর্যামী। আমাদের দেখে সব কিছু বুঝতে পেরেছ। তুমিই বলো।’

    গুরুদেব নরম গলায় বলল, ‘তুই তো পত্রকার (সাংবাদিক) আখবরে (খবরের কাগজে) কাজ করিস।’

    আমরা অবাক। গুরুদেব আগে কখনও আমাদের দেখেনি। তবু কী করে জানতে পারল, মহেশ সাংবাদিক! সত্যি লোকটার অলৌকিক ক্ষমতা আছে। মহেশ ঘাড় কাত করল, ‘হ্যাঁ বাবা।’

    গুরুদেব বলল, ‘তোর এই কাগজে কাজ করতে আর ভালো লাগছে না। আরও বড় কাগজে নৌকরি (চাকরি) করতে চাস, তাই তো?’

    মহেশ অভিভূত, ‘হ্যাঁ বাবা।’

    ‘দু’বছর পর তোর মনোকামনা পূরণ হবে। তার এক সাল বাদে শাদি হবে। বহু (বউ) আচ্ছা হবে, সে—ও নৌকরি করবে; খুব খুবসুরত (সুন্দরী) হবে।’

    এরপর তার দৃষ্টি এসে পড়ল আমার ওপর, ‘তুই বংগালী (বাঙালি)?

    আমি হাতজোড় করেই ছিলাম। বললাম, ‘হ্যাঁ।’

    ‘ভাবছিস তো বোম্বাইতে থেকে যাবি?’

    ‘হ্যাঁ বাবা।’

    ‘তোর এখানে পাকাপাকি থাকা হবে না। তবে বারবার এখানে আসবি। কলকাতায় তোর নামকাম হবে। আর একটা কথা, তুই সহ্য করতে পারবি?’

    ‘বলো বাবা। পারব।’

    ‘দো সাল বাদ (দু—বছর পর) তোর ছোটা ভাইয়ের মৌত (মৃত্যু) হবে। তার নসিবে এটাই আছে। এই মৌত (মৃত্যু) ঠেকানো যাবে না। ভগোয়ানের তাই ইচ্ছা—।’

    বুকের ভেতরটা ধড়াস করে উঠল। গুরুদেব আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বিড়বিড় করে কী যেন বলল। হয়তো ভবিষ্যতের মহাশোকের জন্য আগাম সান্ত্বনা দিয়ে রাখল।

    এবার, তার নজর গিয়ে পড়ল সুরেন্দ্রর ওপর। মুহূর্তে গুরুদেবের চেহারাটাই বদলে গেল। মুখটা এখন গনগন করছে; চোখ থেকে আগুনের ফুলকি ছুটছে। কর্কশ গলায় বলল, ‘হারামজাদা, তুই আমাকে পরীকষা (পরীক্ষা) করতে এসেছিস? ভগোয়ান সাধুসন্ত কারওকে মানিস না! যা, অভভি বাড়ি চলে যা। তোর বড়ে ভাইয়ের অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে। যা, ভাগ—!’

    বাইসনের মতো গুরুদেবের দুই শাগরেদ একধারে দাঁড়িয়ে ছিল। হেঁড়ে গলায় তারাও বলল, ‘যা—যা, ভাগ—’

    সুরেন্দ্রর মুখটা কেমন যেন নীলবর্ণ হয়ে গিয়েছিল। যে সাধু দরবেশ দেখলে নাক সিঁটকোয়, বিদ্রুপ করে, তাকে আর চেনা যাচ্ছিল না। চাপা আতঙ্কের সুরে সে বলল, ‘গুরুদেব, বড়ে ভাই কি বাঁচবে না?’

    ‘বাঁচবে। তবে বাকি জিন্দেগি লাঠিতে ভর করে হাঁটতে হবে। তার একটা আঁখ নষ্ট হয়ে যাবে।’

    বলেই কী ভেবে আমার দিকে তাকাল, ‘বেটা, তোর সঙ্গে আমার আর দেখা হবে না।’

    ফিরে গিয়ে দেখা গেল গুরুদেবের কথাগুলো অক্ষরে অক্ষরে সত্য। সুরেন্দ্রর দাদা বীরেন্দ্র দাদার টিটির (ট্রাম টারমিনাস। তখন বম্বেতে দোতলা ট্রাম চলত) কাছে ট্রাক চাপা পড়েছে। তার বুকের পাঁজরা ভেঙে গেছে। একটা চোখে কাচ ঢুকে ঠেলে বেরিয়ে এসেছিল, বাঁ—পায়ের মালাইচাকি চুরমার। তাকে নার্সিং হোমে ভরতি করা হয়েছে।

    গুরুদেব মহেশকে আর আমাকে যা বলেছিল, তাও ফলে গেছে। আমি সেই উনিশশো ঊনষাটে প্রথম বম্বে যাওয়ার পর আরও বহু, বহুবার ওই মহানগরে গেছি। কিন্তু প্রচণ্ড ব্যস্ততার কারণে সেই গুরুদেব আর তার আশ্রমে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। আসলে তাদের কথা মনেই পড়েনি।

    তারপর দু—হাজার নয় সালে যখন মুম্বাই (তখন আর বম্বে নয়, নাম পালটে গেছে) যাই, স্থিরই করেছিলাম, সেই আশ্রমে যাবই যাব।

    আন্ধেরি ইস্টে বিমল রায়দের মোহন স্টুডিয়ো তখন উঠে গিয়ে কী একটা মস্ত কারখানা হয়েছে। সেটা পেরিয়ে অনেক দূরে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়লাম। আগের সেই জঙ্গল, নির্জনতা কিছুই নেই। যেদিকে তাকানো যাক, অসংখ্য হাইরাইজ আর কলকারখানা। রাস্তাগুলো অনেক চওড়া হয়ে গেছে। প্রচুর মানুষ। সারাক্ষণ স্রোতের মতো গাড়ি ছুটছে।

    তিন—চার ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পরও সেই আশ্রম, গুরুদেব আর তার বিপুল আকারের দুই শাগরেদের হদিশ পাইনি। এখন আমার মনে হয়, সত্যিই কি মুম্বাই শহর থেকে খানিকটা দূরে ঘন জঙ্গল আর পাহাড়ের মাঝখানে সেই আশ্রমে কখনও গিয়েছিলাম? নাকি সেটা আমার কল্পনা?

    __

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপাগল মামার চার ছেলে – প্রফুল্ল রায়
    Next Article সিন্ধুপারের পাখি – প্রফুল্ল রায়

    Related Articles

    প্রফুল্ল রায়

    আলোর ময়ুর – উপন্যাস – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    কেয়াপাতার নৌকো – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    শতধারায় বয়ে যায় – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    উত্তাল সময়ের ইতিকথা – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    গহনগোপন – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    নিজেই নায়ক – প্রফুল্ল রায়ভ

    September 20, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025
    Our Picks

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025

    আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    September 22, 2025

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    September 22, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }