Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    শার্লক হোমস সমগ্র ১ – অনুবাদ : অদ্রীশ বর্ধন

    লেখক এক পাতা গল্প813 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ১০. ডক্টর ওয়াটসনের ডায়ারি থেকে উদ্ধৃতি

    শার্লক হোমসকে প্রথম দিকে যেসব রিপোর্ট পাঠিয়েছিলাম, সেই থেকেই উদ্ধৃত করে এসেছি এই পর্যন্ত। বিবরণের এমন এক জায়গায় এখন পৌঁছেছি যে এই পদ্ধতি বর্জন করা ছাড়া উপায় নেই। এখন থেকে ফের স্মৃতির ওপর নির্ভর করব, ডায়ারির সাহায্যও নেব। রোজ দিনপঞ্জি লিখতাম তখন। কয়েকটা পৃষ্ঠা হুবহু তুলে দিচ্ছি নীচে। স্মৃতিপটে চিরতরে মুদ্রিত হয়ে গেছে যেসব দৃশ্য, ডায়ারিতে লেখা বিস্তারিত বর্ণনার মাধ্যমে ফিরে যাওয়া যাক তার মধ্যে। কয়েদির পেছনে নিষ্ফল ছুটোছুটি এবং জলার বুকে অন্যান্য বিচিত্র অভিজ্ঞতার পরের সকাল থেকে শুরু করা যাক দিনপঞ্জির বর্ণনা।

    অক্টোবর ১৬।–কুয়াশাচ্ছন্ন, অনুজ্জ্বল দিবস। বৃষ্টি পড়ছে ঝিরঝির করে। ঝোড়ো হাওয়ায় কুণ্ডলী পাকিয়ে ছুটছে রাশি রাশি মেঘ, ঢেকে ফেলেছে বাস্কারভিল। মাঝে মাঝে মেঘ সরে যাচ্ছে, জলার ধু-ধু দৃশ্য দেখা যাচ্ছে, পাহাড়ের ধারে ধারে। শীর্ণ রুপোলি শিখা চোখে পড়ছে, বহু দূরের গোলাকার প্রস্তরখণ্ডের জলে-ভেজা দিকগুলোয় আলো পড়ায় চকচক করছে। বিষণ্ণতা বাইরে এবং ভিতরে। কাল রাতের উত্তেজনার পর মুষড়ে পড়েছেন ব্যারনেট। আমারও বুকের মধ্যে যেন একটা পাথর চেপে রয়েছে মনে হচ্ছে; একটা সদাজাগ্রত মহা বিপদ যে আসন্ন এইরকম একটা অবর্ণনীয় অনুভূতি সত্তার সঙ্গে মিশে রয়েছে–বিপদটা যে কী, তা জানি না। সেইজন্যেই অনুভূতিটা এত ভয়ংকর।

    এ-রকম অনুভূতিতে আচ্ছন্ন হওয়ার মতো কারণও কি ঘটেনি? একটার পর একটা ঘটনা ঘটে চলেছে। প্রত্যেকটা ঘটনার মধ্যে অমঙ্গলের সংকেত টের পাচ্ছি। ফ্যামিলি কিংবদন্তিতে। যা-যা বলা হয়েছে, ঠিক সেইভাবেই মারা গেলেন বাস্কারভিল হলের পূর্বতন বাসিন্দা। চাষিদের মুখে ঘন ঘন শোনা যাচ্ছে একটা রিপোর্ট জলার বুকে অদ্ভুত একটা প্রাণীকে নাকি দেখা যাচ্ছে নতুন করে। দু-বার আমি নিজের কানে হাউন্ডের ঘেউ-ঘেউ ডাকের মতো আওয়াজ শুনেছি। অথচ তা অবিশ্বাস এবং অসম্ভব। কেননা এ-ব্যাপার প্রকৃতির সাধারণ নিয়ম বহির্ভূত। পায়ের ছাপ ফেলে যায় এবং দীর্ঘ বিলাপ-ধ্বনি দিয়ে আকাশ বাতাস ভরিয়ে তোলে, এমন প্রেত-কুকুরের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। স্টেপলটন বিশ্বাস করতে পারেন কুসংস্কার, মটিমারও করতে পারেন; কিন্তু আমার ভেতরে কাণ্ডজ্ঞান বলে একটা বস্তু আছে। এসব ব্যাপার বিশ্বাস করার পাত্র আমি নই। করতে হলে চাষিদের পর্যায়ে নেমে আসতে হয়। এরা শুধু পিচাশ কুকুরের অস্তিত্বই বিশ্বাস করে না–আরও একধাপ এগিয়েছে–নরক হাউন্ডের মুখ আর চোখ থেকে নরকাগ্নি বিচ্ছুরিত হতেও দেখেছে। এসব গালগল্প হোমস কান পেতেও শুনবে না। আমি তারই প্রতিনিধি। কিন্তু ঘটনাকেই-বা অস্বীকার করি কী করে। নিজের কানে জলার বুকে কুকুরটার ডাক আমি শুনেছি। এমনও হতে পারে সত্যিই হয়ত একটা বিশাল হাউন্ড ছাড়া আছে জলায়। সেক্ষেত্রে অনেক কিছুরই সংগত ব্যাখ্যা সম্ভব। কিন্তু হাউন্ডটা লুকিয়ে থাকে কোথায়? খাবার পায় কোত্থেকে? কোথা থেকে তার আবির্ভাব? দিনের বেলাই-বা তাকে কেউ দেখেনি কেন? অস্বাভাবিক ব্যাখ্যার মতো স্বাভাবিক ব্যাখ্যার মধ্যেও দেখা যাচ্ছে বিস্তর অসংগতি থেকে যাচ্ছে। হাউন্ডের ব্যাপার ছাড়াও আরও কতকগুলো ঘটনা কিন্তু অহরহ জেগে রয়েছে মনের মধ্যে; যেমন, লন্ডনে মানুষ চোরের আবির্ভাব, ছ্যাকড়াগাড়ির মধ্যে সেই লোকটা, জলা সম্পর্কে স্যার হেনরিকে হুঁশিয়ার-পত্র। এগুলো তো বাস্তব ঘটনা এবং হয়তো কোনো হিতৈষী বন্ধুর কীর্তি শত্রুর কীর্তিও হতে পারে। সেই সুহৃদ অথবা শত্ৰুটি এখন কোথায়? লন্ডনেই আছে, না আমাদের পেছন পেছন এখানেও জুটেছে? জলার পাহাড়চুড়োয় যে-আগন্তুককে আমি দেখেছি–এই কি সেই লোক?

    লোকটাকে পলকের জন্য দেখেছি ঠিকই, কিন্তু কতকগুলো বৈশিষ্ট্য হলফ করে বলতে পারি। এখানে যাদের দেখেছি, যেসব প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে তাদের কারোর মতোই একে দেখতে নয়। বিচিত্র সেই মূর্তি স্টেপলটনের চেয়ে অনেক ঢ্যাঙা, ফ্রাঙ্কল্যান্ডের চেয়ে অনেক কৃশ। ব্যারিমুর হলেও হতে পারত, কিন্তু তাকে তো আমরা পেছনে ফেলে এসেছিলাম। সে যে আমার পেছন নেয়নি, সে-বিষয়ে আমি নিশ্চিত। লন্ডনে যে অজ্ঞাত ব্যক্তিটি ফেউয়ের মতো লেগেছিল পেছনে, এখানেও সে ঘুরছে পেছন পেছন। মুহূর্তের জন্যেও তার নজরবন্দির বাইরে আমরা যেতে পারিনি। লোকটাকে ধরতে পারলে কিন্তু সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। সর্বশক্তি দিয়ে এখন আমি সেই চেষ্টাই করব।

    প্রথমেই ভাবলাম, স্যার হেনরিকে বলি আমার পরিকল্পনার বৃত্তান্ত। তারপর ভেবে দেখলাম ওঁকে কিছু না-বলাই ভালো। নিজেই যা পারি করব। ঝিম মেরে রয়েছেন ভদ্রলোক। সদা অন্যমনস্ক। জলার বুকে অপার্থিব সেই চিৎকারে অদ্ভুতভাবে নাড়া খেয়েছে স্নায়ু। ওঁর উদবেগ আর বাড়াব না। নিজেই যা পারি করব।

    আজ সকালে ব্রেকফাস্ট খাওয়ার পর ছোট্ট একটা নাটক হয়ে গেল। স্যার হেনরির সঙ্গে নিরিবিলিতে কথা বলতে চাইল ব্যারিমুর। পড়ার ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করলেন দু-জনে। বেশ কিছুক্ষণ একলা বসে রইলাম বিলিয়ার্ড-রুমে। চড়া গলায় কথা কাটাকাটি শুনলাম কয়েকবার। বেশ বুঝলাম কোন খাতে বইছে আলোচনা। কিছুক্ষণ পর দরজা খুলে ধরে আমাকে ডাকলেন ব্যারনেট।

    বললেন, ব্যারিমুরের ধারণা ওকে আঘাত দেওয়া হয়েছে। স্ব-ইচ্ছায় গুপ্ত কথা ফাঁস করার পর শ্যালককে তাড়া করাটা আমাদের ঠিক হয়নি।

    অত্যন্ত ফ্যাকাশে, কিন্তু অত্যন্ত সংযতভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম বাটলারকে।

    বললে, কথাটা হয়তো একটু গরমভাবেই বলেছি। তার জন্যে ক্ষমা করবেন, স্যার। কিন্তু আজ সকালে যখন শুনলাম সারারাত সেলডেনকে তাড়া করে বাড়ি ফিরেছেন, খুব অবাক হয়ে গেলাম। এমনিতেই অনেক দুর্ভোগ তাকে পোহাতে হচ্ছে আমাদের দ্বারা সে-দুর্ভোগ বাড়ুক, এটা আমি চাইনি।

    ব্যারনেট বললেন, স্ব-ইচ্ছায় যদি বলতে, তাহলে কিন্তু ব্যাপারটা অন্যরকম দাঁড়াত। কিন্তু কথাটা আমাদের টেনে বার করতে হয়েছে–এমন পরিস্থিতিতে ফেলেছিলাম যে তুমি, মানে, তোমার স্ত্রী না-বলে পারেনি।

    আমি ভাবতেও পারিনি সেই সুযোগ আপনি নেবেন–স্যার হেনরি, সত্যিই আমি ভাবিনি?

    লোকটা সমাজ-শত্রু। সাধারণের কাছে বিপজ্জনক। বহু বাড়ি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে জলার নির্জন জায়গায়। এ-লোকের পক্ষে অসাধ্য কিছুই নেই। মুখখানা দেখলেই তা বোঝা যায়। যেমন ধরো, মি. স্টেপলটনের বাড়ি। রুখে দাঁড়ানোর মতো উনি ছাড়া সেখানে কেউ নেই। এ-লোককে তালাচাবি দিয়ে না-রাখা পর্যন্ত এ-তল্লাটের কেউ নিরাপদ নয়।

    স্যার, কারো বাড়িতে ও ঢুকবে না। আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি। এদেশের আর কারো অনিষ্ট ওর দ্বারা হবে না। স্যার হেনরি, বিশ্বাস করুন, আর ক-দিনের মধ্যে সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে ও দক্ষিণ আমেরিকা রওনা হবে। ভগবানের দোহাই স্যার, সেলডেন এখনও যে জলায় আছে, পুলিশকে জানাবেন না। হয়রান হয়ে জলার দিকে যাওয়া ওরা বন্ধ করেছে। জাহাজ না-আসা পর্যন্ত নিশ্চিন্ত মনে ওখানে এই কটা দিন ও থাকতে পারবে। পুলিশকে এ-খবর দেওয়া মানে আমাকে আর আমার স্ত্রীকেও ঝামেলায় ফেলা। স্যার, আমার বিশেষ অনুরোধ, পুলিশকে কিছু জানাবেন না।

    ওয়াটসন কী বলে?

    কাঁধ ঝাঁকি দিয়ে বললাম, দেশছাড়াই যদি হয়, করদাতাদের ঘাড় থেকে একটা বোঝ নেমে যাবে।

    যাওয়ার আগে যদি কারো ওপর চড়াও হয়?

    স্যার, ও-ধরনের পাগলামির ধার দিয়ে ও এখন যাবেন না। ও যা চায়, সব দিয়েছি। এখন নতুন অপরাধ করা মানেই লুকিয়ে থাকার জায়গার খবর পুলিশকে জানিয়ে দেওয়া।

    তা সত্যি, বললেন স্যার হেনরি। ঠিক আছে, ব্যারিমুর।

    ভগবান আপনার ভালো করবেন, স্যার, অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেলডেন ফের ধরা পড়লে আমার স্ত্রী সে-ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারবে না।

    আমার যেন মনে হচ্ছে গুরুতর অপরাধে প্ররোচনা জোগাচ্ছিল, অসৎ কাজে সাহায্য করছি, তাই না ওয়াটসন? কিন্তু সব কথা শোনার পর ওকে ধরিয়ে দিতেও ইচ্ছে করছে না। ব্যাপারটা তাহলে এইখানেই চুকে গেল, ব্যারিমুর। ঠিক আছে, এখন আসতে পারো।

    ভাঙা ভাঙা দু-চারটে কৃতজ্ঞতার কথা শুনিয়ে ঘুরে দাঁড়াল ব্যারিমুর, কিন্তু গেল না। দ্বিধায় পড়ল যেন। তারপর ফিরে এল।

    স্যার, অনেক দয়া করলেন আপনি। প্রতিদানে আমার কিছু করা উচিত। একটা ব্যাপার আমি জানি। আগেই হয়তো বলা উচিত ছিল, কিন্তু জেনেছি তদন্ত শেষ হয়ে যাবার অনেক পরে। মরজগতের কোনো নশ্বর মানুষকে এ-কথা আজও বলিনি। ব্যাপারটা ভাগ্যহীন স্যার চার্লসের মৃত্যুর ব্যাপারে।

    তড়াক করে একই সাথে লাফিয়ে দাঁড়িয়ে উঠলাম আমি এবং ব্যারনেট। তুমি জানো কীভাবে মারা গেছেন উনি?

    না, স্যার; তা জানি না। তাহলে?

    ওইরকম একটা সময়ে গেটে দাঁড়িয়েছিলেন কেন, তা জানি। একজন মহিলার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন।

    মহিলার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন! উনি?

    আজ্ঞে হ্যাঁ।

    মহিলাটির নাম?

    নামটা বলতে পারব না, তবে নামের আদ্যক্ষর বলতে পারব। এল এল (L. L.)–এই তাঁর নামের প্রথম দুটো অক্ষর।

    ব্যারিমুর, কী করে জানলে তুমি?

    স্যার হেনরি, সকালবেলা আপনার কাকা একটা চিঠি পেয়েছিলেন। রোজই অনেক চিঠি আসত ওঁর নামে। পাঁচজনের দুঃখদুর্দশায় বুক দিয়ে পড়তেন বলে, কেউ বিপদে পড়লেই ছুটে আসত। দিলখোলা দরাজ ছিলেন বলে সবাই শ্রদ্ধাভক্তি করত। সেদিন সকালে কিন্তু ঘটনাক্রমে এসেছিল একটাই চিঠি। তাই আমার নজরে এসেছিল খামটা। ঠিকানা লিখেছে একজন মহিলা, পাঠিয়েছে কুমবে ট্রেসি থেকে।

    তারপর?

    এ নিয়ে আর ভাবিনি। ভাবতামও না। কিন্তু ভাবতে হল স্ত্রীর জন্যে। স্যার চার্লসের মৃত্যুর পর থেকে ওঁর পড়ার ঘর একদম সাফ করা হয়নি। হপ্তাকয়েক আগে আমার স্ত্রী গিয়েছিল পরিষ্কার করতে। আগুনের চুল্লির পেছন দিকে দেখতে পায় একটা পোড়া চিঠির ছাই পড়ে আছে। চিঠির বেশির ভাগই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, কিন্তু একটা কোণে শেষ পর্যন্ত আগুন পৌঁছোয়নি। কালো হয়ে গেলেও ধূসর লেখাটা কোনোমতে পড়া যায়। একটা চিঠির পুনশ্চ বলেই মনে হল। লেখাটা এই : আপনি প্রকৃত ভদ্রলোক বলেই মিনতি করছি দয়া করে এই চিঠি পুড়িয়ে ফেলবেন এবং ঠিক দশটার সময়ে গেটে হাজির থাকবেন। তলায় সই করা হয়েছে নামের আদ্যক্ষর দিয়ে এল. এল (L. L.)।

    চিঠির কোণটা কাছে আছে?

    আজ্ঞে না। পড়বার পরেই গুঁড়িয়ে গেছে।

    একই হাতের লেখায় লেখা কোনো চিঠি আগে পেয়েছিলেন স্যার চার্লস?

    আমি তো স্যার চিঠিটা তেমনভাবে দেখে রাখিনি। একখানা চিঠি এসেছিল বলেই চোখে পড়েছিল।

    এল. এল. (L. L.) বলতে কাকে বোঝায় বলতে পারো?

    আজ্ঞে, না। ও-ব্যাপারে আপনার মতো আমিও অজ্ঞ। তবে আমার বিশ্বাস মহিলাটিকে যদি পাওয়া যায়, স্যার চার্লস মারা গেছেন কীভাবে, তাও জানা যাবে।

    ব্যারিমুর, এ-রকম গুরুত্বপূর্ণ একটা তথ্য তুমি এতদিন চেপে রেখেছিলে কেন বুঝতে পারছি না।

    স্যার, এর ঠিক পরেই শুরু হল আমাদের নিজেদের দুর্দৈব। তা ছাড়াও ধরুন, স্যার চার্লসকে আমরা দুজনে আন্তরিক ভালোবাসতাম আমাদের জন্যে কম করেননি উনি ব্যাপারটা খুঁচিয়ে তুললে ওঁর মঙ্গল কি কিছু হবে? তা ছাড়া একজন মহিলা জড়িয়ে রয়েছে এর মধ্যে। যতই ভলো হই না কেন আমরা—

    ওঁর সুনাম ক্ষুণ্ণ হত, এই তো?

    আজ্ঞে হ্যাঁ। লাভ কিছুই হত না। কিন্তু আপনারা আজ অশেষ দয়া দেখিয়েছেন। তাই ভাবলাম ব্যাপারটা আপনাদের না-বললে অন্যায় হবে।

    বেশ করেছ ব্যারিমুর, এবার এসো।

    বাটলার বিদেয় হতেই আমার দিকে ফিরলেন স্যার হেনরি।

    ওয়াটসন, অন্ধকারে নতুন আলো দেখা যাচ্ছে। কীরকম বুঝেছেন?

    অন্ধকার ফর্সা না হয়ে আরও ঘন হল মনে হচ্ছে।

    আমারও তাই মনে হচ্ছে। কিন্তু এই এল. এল. (L. L.) নামধারী মহিলাটিকে খুঁজে বার করতে পারলে অন্ধকার বেশ খানিকটা পরিষ্কার হত। এইটুকুই লাভ। জানা গেল, অনেক ঘটনাই জেনে বসে আছে একজন তাকে এখন পেলে হয়। কী করা উচিত বলুন তো?

    এক্ষুনি হোমসকে সব জানানো উচিত। ও যে-সূত্র খুঁজছে, হয়তো এর মধ্যেই তা রয়েছে। এ-খবর পেলে হয়তো চলেও আসতে পারে।

    তৎক্ষণাৎ ঘরে গেলাম। সকালের কথাবার্তা লিখে হোমসের জন্যে রিপোর্ট তৈরি করলাম। নিশ্চয় ইদানীং খুব ব্যস্ত রয়েছে সে। কেননা বেকার স্ট্রিট থেকে ওর যে চিরকুট পাচ্ছি, তা

    অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। আমার রিপোর্ট নিয়ে কোনো মন্তব্য নেই, এমনকী যে দৌত্যকার্য নিয়ে হেথায় আগমন–সে-ব্যাপারেও কোনো উল্লেখ নেই। নিশ্চয় সেই ব্ল্যাকমেলিং কেস নিয়ে নাওয়া-খাওয়া ভুলেছে। কিন্তু সর্বশেষ এই সংবাদ অবশ্যই তার মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং নতুন করে এ-কেসে আগ্রহ সৃষ্টি করবে। এ সময়ে ওকে এখানে পেলে বাঁচতাম।

    অক্টোবর ১৭। —আজ সারাদিন ধরেই ঝুপ ঝুপ করে বৃষ্টি পড়ছে। খসখস আওয়াজ উঠছে আইভিলতায়, ছর ছর করে জল পড়ছে ঘরের ছাদ বেয়ে। ভাবছিলাম বিষাদমাখা জলার কনকনে ঠান্ডায় কীভাবে মাথা গুঁজে আছে কয়েদি বেচারা। ছাউনি বলতে কিছুই তো নেই ওখানে। সত্যিই বেচারা অপরাধ যাই করুক না কেন, প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ ভোগান্তিও কম হচ্ছে না। তারপর অজ্ঞাত সেই ব্যক্তির কথা মনে পড়ল–লন্ডনের ছ্যাকড়াগাড়ির জানলায় যার মুখ দেখেছি, জলার পাহাড়ের চুড়োয় চাঁদের পটভূমিকায় যার মূর্তি দেখেছি। এও কি পলাতকের সন্ধানে হন্যে হয়ে ঘুরছে জলায়? অন্ধকারের মানব সেজে অতন্দ্র প্রহরা চালিয়ে যাচ্ছে নিজেকে অদৃশ্য রেখে? সন্ধে হলে গায়ে বর্ষাতি চাপিয়ে বেরিয়ে পড়লাম কাদা প্যাঁচপেচে জলার বুকে। অজস্র কালো কল্পনা উঁকি দিতে লাগল মনে। বুক চাপড়ানো শব্দে হাহাকার তুলে শিস দিয়ে কানের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যেতে লাগল দামাল বাতাস, ঝমাঝম শব্দে বৃষ্টি আছড়ে পড়তে লাগল মুখে। সুবিশাল গ্রিমপেন পঙ্কে এখন যে যাবে, স্বয়ং বিধাতা ছাড়া তাকে আর কেউ বাঁচাতে পারবে না–কেননা উঁচু উঁচু চাষের জমি পর্যন্ত এখন বাদা হয়ে গিয়েছে। কৃষ্ণকালো যে পাহাড়-চুড়োয় সন্ধানী প্রহরীকে একাকী দেখেছিলাম, গিয়ে উঠলাম সেই পাহাড়ে–কর্কশ দংষ্ট্রার শীর্ষদেশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টি সঞ্চালন করলাম বিষাদ-ছাওয়া ধু-ধু প্রান্তরের ওপর। বাদার অমসৃণ উত্তাল বুকের ওপর মুহুর্মুহু আছড়ে পড়ছে দুরন্ত বৃষ্টি এবং অত্যাশ্চর্য পাহাড়শ্রেণির আড়াল থেকে সার দিয়ে প্রকাণ্ড পুষ্পমালার মতো বেরিয়ে আসছে স্লেটরঙা মেঘের পর মেঘ–আপন ভারে যেন ঝুলে পড়েছে তরঙ্গায়িত নিসর্গদৃশ্যের মাথার ওপর। অনেক দূরে বাঁ-দিকে কুয়াশার মধ্যে দিয়ে দেখা যাচ্ছে বাস্কারভিল হলের যমজ টাওয়ার সরু সরু হয়ে উঠে রয়েছে গাছপালার মাথায়। পাহাড়ের গায়ে প্রাগৈতিহাসিক কুটিরগুলো ছাড়া মানুষের চিহ্ন বলতে কেবল ওই যমজ টাওয়ার। দু-রাত আগে এ-জায়গায় নিঃসঙ্গ যে-মানুষটিকে দেখেছি, কোথাও তার টিকি পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না।

    ফেরার পথে দেখা হয়ে গেল ডক্টর মর্টিমারের সাথে। উনি আসছেন ওঁর এক ঘোড়ার হালকা গাড়ি করে ফিরছেন ফাউল মায়ারের একটা চাষিবাড়ি থেকে। নিত্য আমাদের খোঁজখবর নেন উনি, একদিনও বাদ যায় না। গাড়িতে টেনে তুললেন আমাকে এগিয়ে দিলেন বাড়ির দিকে। ভদ্রলোক খুব বিচলিত রয়েছেন দেখলাম। ওঁর খুদে স্প্যানিয়েল কুকুরটা নিখোঁজ হয়েছে। বাদায় গিয়েছিল, আর ফেরেনি। যথাসম্ভব সান্ত্বনা দিলাম বটে, কিন্তু চোখের সামনে ভাসতে লাগল গ্রিমপেন পঙ্কের সেই দৃশ্য–তলিয়ে যাচ্ছে আস্ত একটা ঘোড়া। বেশ বুঝলাম, পুঁচকে কুকুরকে ইহজীবনে আর দেখতে পাবেন না ডক্টর মর্টিমার।

    এবড়োখেবড়ো রাস্তার ওপর দিয়ে লাফাতে লাফাতে গাড়ি ছুটছে। আমি বললাম, ভালো কথা, মর্টিমার, গাড়ি হাঁকিয়ে অনেক জায়গাতেই তো যেতে হয় আপনাকে। যেখানে যেখানে যান, সেখানকার সবাইকে চেনেন?

    প্রায়।

    নামের আদ্যক্ষর এল. এল. (L…L.)–এমনি কোনো মহিলাকে জানেন?

    মিনিট কয়েক ভাবলেন মর্টিমার। বললেন, না। জিপসি আর কুলিকামিনদের খবর আমি দিতে পারব না। তবে চাষি আর ভদ্র গেরস্তদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার নামের আদ্যক্ষর এল. এল. (L. L.)। আচ্ছা, দাঁড়ান তো দেখি, বলে একটু ভেবে নিলেন। লরা লায়ন্সের নামের আদ্যক্ষর এল. এল. (L. L.) কিন্তু সে তত থাকে কুমবে ট্রেসিতে।

    কে সে?

    ফ্র্যাঙ্কল্যান্ডের মেয়ে।

    সে কী? ছিটিয়াল ফ্র্যাঙ্কল্যান্ড?

    হ্যাঁ। বাদায় স্কেচ করতে আসত একজন আর্টিস্ট। নাম, লায়ন্স। তাকেই বিয়ে করে মেয়েটি। শেষকালে দেখা গেল লোকটা অত্যন্ত অসাধু এবং বড়ো গালাগাল দেয় বউকে ফেলে পালায় একদিন। যদূর শুনেছি দোষটা তার একার নয়। অমতে বিয়ে করার দরুন এবং আরও দু-একটা কারণে মেয়ের ওপর খঙ্গহস্ত হয়ে ওঠে বাবা কোনো সম্পর্কই রাখতে চায়নি। বাপ আর স্বামী দুই-ই সমান–মাঝখান থেকে কপাল পুড়ল মেয়েটির।

    আছে কীভাবে?

    মনে হয় নামমাত্র একটা ভাতা দেয় বুড়ো ফ্র্যাঙ্কল্যান্ড। টাকার পরিমাণটা খুব বেশি নয়, কেননা, নিজের খরচ তত কম নয়। অপরাধ যাই করে থাকুক না কেন, এভাবে মেয়েটা কষ্ট পাক কেউ চায় না। খবরটা ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই তাই স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছিল। সভাবে যাতে দু-পয়সা রোজগার করতে পারে, তার একটা ব্যবস্থা পাঁচজনে করে দেয়। এই পাঁচজনের মধ্যে স্টেপলটন আছেন, স্যার চার্লস ছিলেন, আমি নিজেও যা পেরেছি দিয়েছি। টাইপরাইটিং কারবারে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে মেয়েটিকে।

    এত প্রশ্নের কারণ জানতে চাইলেন ডাক্টার, কিন্তু আমি অন্য কথায় কৌতূহল চরিতার্থ করলাম–আসল কথা ভাঙলাম না। গোপন কথা পাঁচকান করে লাভ নেই। কাল সকালেই আমি কুমবে-ট্রেসি কোথায় খুঁজে বার করব। যদি দেখি মিসেস লরা লায়ন্স ভদ্রমহিলা সন্দেহজনক চরিত্রের, রহস্য শৃঙ্খলের একটা ব্যাপার অন্তত ভালোভাবেই পরিষ্কার করা যাবে। পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে আমায় বিব্রত করে তুলতেই খুব সহজভাবে শুধু জিজ্ঞেস করেছিলাম, ফ্র্যাঙ্কল্যান্ডের করোটি কোন শ্রেণির। ব্যস, বাকি রাস্তাটা করোটি-বিজ্ঞান ছাড়া আর কোনো কথাই শুনলাম না। শার্লক হোমসের সঙ্গে বৃথাই এতদিন কাটাইনি।

    বাত্যবিক্ষুব্ধ এবং বিষণ্ণ এই দিনটিতে আর একটি ঘটনা ঘটেছে। এইমাত্র ব্যারিমুরের সঙ্গে আমার কিছু কথা হল। হাতে আর একটা জোরালো তাস পেলাম, ঝোপ বুঝে কোপ মারব।

    ডিনার খেয়ে গেলেন ডক্টর মর্টিমার। খাওয়ার পর স্যার হেনরির সঙ্গে তাস নিয়ে একহাত একাটে খেললেন। লাইব্রেরিতে আমার কফি নিয়ে এল বাটলার। সেই সুযোগে কয়েকটা কথা জিজ্ঞেস করলাম।

    বললাম, ওহে তোমার সম্বন্ধী রত্নটি বিদায় নিয়েছে, না এখনও বাদায় ওত পেতে আছে?

    জানি না, স্যার। ভগবান করুন যেন এবার বিদেয় হয়–যত রাজ্যের ঝামেলা ল্যাজে বেঁধে এনেছে! তিন দিন আগে খাবার রেখে এসেছিলাম, তারপর থেকে আর খবর পাইনি।

    দেখা হয়নি?

    আজ্ঞে না। তারপর ওদিকে গিয়ে দেখেছি খাবার নেই।

    তাহলে নিশ্চয় এখানেই এখনও আছে?

    সেইরকম মনে হবে স্যার, যদি না অন্য লোকটা নিয়ে গিয়ে থাকে।

    ঠোঁটের কাছে এসে থমকে গেল হাতের কফি-কাপ, বিস্ফারিত চোখে চেয়ে রইলাম ব্যারিমুরের দিকে।

    তুমি জানো এখানে অন্য একটা লোক আছে?

    আজ্ঞে, হ্যাঁ; বাদায় আরেকটা লোক আছে।

    দেখেছ তাকে?

    আজ্ঞে , না।

    তাহলে জানলে কী করে?

    দিনসাতেক কি তারও আগে সেলডেন বলছিল। এ-লোকটাও লুকিয়ে আছে কিন্তু সে কয়েদি নয়, আমার যদূর মনে হয়। এসব আমার মোটেই ভালো লাগছে না, ডক্টর ওয়াটসন একদম ভালো লাগছে না। আচমকা আতীব্র আবেগে যেন ফেটে পড়ে বাটলার।

    ব্যারিমুর কথা শোনো আমার! এ-ব্যাপারে তোমার মনিবের স্বার্থ দেখা ছাড়া আমার কোনো গরজ নেই। এসেছি শুধু তাকে সাহায্য করতে কোনো উদ্দেশ্য নেই। খুলে বললা—

    কী তোমার ভালো লাগছে না।

    দ্বিধায় পড়ল ব্যারিমুর। আবেগ চেপে রাখতে না-পারার জন্যে পস্তাচ্ছে মনে হল, অথবা হয়তো মনোভাব ব্যক্ত করার ভাষাই খুঁজে পাচ্ছে না।

    অবশেষে বাদার দিকের বৃষ্টি-বিধৌত জানলার পানে হাত তুলে বললে উত্তেজিত কণ্ঠে নোংরা একটা ষড়যন্ত্র চলছে কোথাও, শয়তানের কারসাজি চলছে তলায় তলায় হলপ করে বলছি স্যার! স্যার হেনরি ফের লন্ডনে গিয়ে থাকলে সত্যিই খুব খুশি হতাম!

    কিন্তু ভয়টা কীসের?

    স্যার চার্লস কীভাবে মরেছেন দেখুন! করোনার যাই বলুক না, জিনিসটা খুবই খারাপ! বাদার বুকে গভীর রাতে কীরকম আওয়াজ হয় নিশ্চয় শুনেছেন। টাকা দিয়েও সন্ধের পর ওখানে কাউকে পাঠাতে পারবেন না। তারপর ধরুন অদ্ভুত সেই লোকটা কেউ তাকে চেনে না, কিন্তু ঘাপটি মেরে আছে বাদায়, নজর রাখছে সবদিকে। ওত পেতে আছে দিনের পর দিন! কীসের জন্যে ওত পেতে আছে বলতে পারেন? জানেন এর কী মানে? মানে একটাই বাস্কারভিল নামধারী কারুর রক্ষে নেই! তাই বলছিলাম, স্যার হেনরির নতুন চাকরবাকর এলে বাঁচি। যেদিন আসবে, সেদিনই এ-বাড়ি ছেড়ে পালাব।

    আমি বললাম, অদ্ভুত সেই লোকটা সম্বন্ধে আর কিছু বলতে পারবে? সেলডেনের মুখে কিছু শুনেছ? ও দেখেছে কী করে লোকটা? থাকে কোথায়?

    দু-একবার দেখেছে তাকে কিন্তু সে বড়ো গভীর জলের মাছ, ধরা ছোঁওয়ার মধ্যে নেই। প্রথমে ভেবেছিল পুলিশের লোক, তারপর দেখল নিজেই লুকিয়ে বেড়াচ্ছে। যদ্র বুঝেছে, লোকটা ভদ্দরলোক। কিন্তু লুকিয়ে লুকিয়ে কী যে করে, ধরতে পারেনি।

    কোথায় লুকিয়ে আছে?

    পাহাড়ের গায়ে ওই যে পাথরের কুটিরগুলো, যেখানে সেকালে লোক থাকত ওইখানে!

    খাবার পায় কোত্থেকে?

    সেলডেন নিজের চোখে দেখেছে লোকটার ফাইফরমাশ খাটে একটা ছোকরা। জিনিসপত্র এনে দেয়। কুমবে ট্রেসিতেই যায় নিশ্চয় দরকার মতো জিনিস আনতে।

    ঠিক আছে, ব্যারিমুর! এ নিয়ে পরে আরও কথা বলা যাবেখন।

    বিদেয় হল বাটলার। অন্ধকার জানলার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম আমি। ঝাঁপসা কাচের মধ্যে দিয়ে তাকালাম দূরের ঝড়ে-নুয়ে-পড়া গাছপালা আর ছুটন্ত মেঘমালার পানে। ঘরের ভেতর থেকেই রাতের চেহারা যদি এমনি দুর্দান্ত হয়, বাদার মধ্যে খোলা আকাশের তলায় প্রস্তর-কুটিরের হাল এখন কী? প্রবৃত্তির তাড়না কতখানি প্রচণ্ড হলে মানুষ প্রকৃতির এই রুদ্রলীলাকেও উপেক্ষা করে অমন জায়গায় ঘাপটি মেরে থাকতে পারে? কী সেই প্রবৃত্তি? কী উদ্দেশ্যে দিনের পর দিন রাতের পর রাত এই অগ্নিপরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছে রহস্যময় আগন্তুক? এমনকী সেই গোপন অভীপ্সা যার জন্যে এত কষ্ট সহ্য করে যাচ্ছে বিরামহীনভাবে? যে-হেঁয়ালি আমার অণুতে পরমাণুতে মিশে গিয়ে নিরন্তর ছটফটিয়ে মারছে আমাকে, তার কেন্দ্রবিন্দু রয়েছে কিন্তু বাদার ওই প্রস্তর কুটিরে। পণ করছি, রহস্য-জালের কেন্দ্রে পৌঁছাব আর ঠিক চব্বিশঘণ্টার মধ্যে!

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleশার্লক হোমস সমগ্র ২ – অনুবাদ : অদ্রীশ বর্ধন
    Next Article When the World Screamed – Arthur Conan Doyle

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }