Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    শার্লক হোমস সমগ্র ১ – অনুবাদ : অদ্রীশ বর্ধন

    লেখক এক পাতা গল্প813 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ১১. ভ্যালি অফ ফিয়ার

    পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙার সঙ্গেসঙ্গে ম্যাকমুর্দোর মনে পড়ল, হ্যাঁ, গতকাল তার লজ-অন্তভুক্তির দীক্ষাই হয়েছে বটে। হাড়ে হাড়ে তা টের পাওয়া যাচ্ছে। মদ্যপানের ফলে মাথা দপদপ করছে, এবং বাহুর যে অংশে ছ্যাকা দেওয়া হয়েছে, সেখানটা ফুলে ঢোল হয়ে দারুণ টাটিয়েছে। যেহেতু তার রোজগারের উৎস একটু অদ্ভুত, তাই কাজে বেরোনোর মধ্যে কোনো বাঁধা নিয়ম ছিল না। সুতরাং ব্রেকফাস্ট খেল বেলা করে, বাড়িতেই কাটাল সকালটা এবং একটা দীর্ঘ পত্র লিখল এক বন্ধুকে। তারপর পড়ল ডেইলি হেরাল্ড পত্রিকা। শেষ মুহূর্তেও একটা বিশেষ স্তম্ভে ছাপা হয়েছে খবরটা :–হের্যান্ড অফিসে হামলা। সম্পাদক গুরুতরভাবে আহত। এরপর যে-ঘটনার বিবরণ ছাপা হয়েছে, তার খবর ম্যাকমুর্দোই বেশি রাখে সংবাদদাতার চেয়ে। খবরের শেষে লেখা হয়েছে এই ক-টি লাইন :

    বিষয়টি এখন পুলিশের হাতে, কিন্তু অতীতের মতো এ-অত্যাচারেরও কোনো সুরাহা তাদের কাছে আশা করা যায় না। আততায়ীদের কয়েকজনকে চেনা গিয়েছে, আশা করা যায় এদের সাজাও হবে। হামলার উৎস কিন্তু সেই কুখ্যাত সমিতি–দীর্ঘকাল যাবৎ যারা এ-তল্লাটে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছে এবং যাদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি লেখা শুরু করেছিল হেরাল্ড কোনোরকম চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে রাজি হয় নি। মি. স্ট্যানজারের বন্ধুবর্গ শুনে সুখী হবেন যে মারাত্মকভাবে বহুস্থানে জখম হওয়া সত্ত্বেও এবং করোটির বেশ কয়েকস্থানে চোট লাগা সত্ত্বেও তার প্রাণের শঙ্কা আর নেই।

    এর নীচে বেরিয়েছে আর একটা খবর। কোল অ্যান্ড আয়রন পুলিশের একজন প্রহরী উইনচেস্টার রাইফেল নিয়ে যাতে অফিস পাহারা দেয়, সেই ব্যবস্থা চলছে।

    কাগজ নামিয়ে রাখে ম্যাকমুর্দো। গত রাতের বাড়াবাড়ির দরুন হাত কাঁপছে তখনও। কাঁপা হাতেই ধরিয়ে নেয় তামাকের পাইপ। এমন সময়ে টোকা পড়ল দরজায়। গৃহকত্রী একটা চিঠি নিয়ে এল ভেতরে। এইমাত্র একটা ছেলে দিয়ে গেল চিঠিটা। চিঠিতে কারো সই নেই। বয়ানটা এই :

    আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই, কিন্তু আপনার বাড়িতে নয়। মিলার হিলে। যেখানে পতাকা উড়ছে, তার পাশে আমাকে পাবেন। যদি আসতে পারেন তাহলে এমন কিছু বলব যা আপনার আমার দু-জনের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ।

    অত্যন্ত অবাক হয়ে দু-দুবার চিঠিটা পড়ল ম্যাকমুর্দো, কিছুতেই বুঝতে পারল না চিঠি কে লিখেছে, মানেটাই-বা কী, মেয়েলি হাতের লেখা হলে না হয় ধরে নিত অতীত জীবনের মতোই আর একটা অ্যাডভেঞ্চার শুরু হতে চলেছে বর্তমান জীবনেও। কিন্তু এ-লেখা পুরুষের এবং বেশ শিক্ষিত পুরুষের। শেষকালে বেশ কিছুটা দ্বিধার পর ঠিক করলে দেখাই করবে অজ্ঞাত পত্ৰলেখকের সঙ্গে।

    শহরের ঠিক কেন্দ্রে অত্যন্ত অযত্নে রক্ষিত পাবলিক পার্কের নাম মিলার হিল। গ্রীষ্মকালে লোকজনের ভিড় হয়, কিন্তু শীতকালে খাঁ-খাঁ করে। মিলার হিলের মাথা থেকে পঙ্কিল, নোংরা, বিক্ষিপ্ত শহরটাকেই কেবল আগাগোড়া দেখা যায় না, তারও ওদিকে বহুদূরবিস্তৃত এঁকাবেঁকা পেঁচালো উপত্যকা, উপত্যকার দু-পাশে সাদা বরফের গায়ে কালো কলঙ্কের মতো ইতস্তত বিক্ষিপ্ত কয়লা খনি আর লোহার কারখানা, এবং সব কিছু ঘিরে তুষারকিরীট শোভিত জঙ্গলাকীর্ণ খাড়া পাহাড়ের পর পাহাড়। পার্কের ঠিক মাঝে একটা রেস্তোরাঁ আছে। গ্রীষ্মকালে সেখানে হই চই হয়–এখন পরিত্যক্ত। চিরসবুজ আগাছায় ঢাকা এঁকাবেঁকা একটা পথ বেয়ে সকালে পেীছোলো ম্যাকমুর্দো। পাশেই একটা পতাকাবাহী দণ্ড–পতাকা এখন নেই। তলায় দাঁড়িয়ে একজন পুরুষ, টুপি টেনে নামানো এবং ওভারকোটের কলার ঠেলে তোলা। মুখ ঘোরাতেই চিনতে পারল ম্যাকমুদো। ব্রাদার মরিস গতরাতে বডিমাস্টারকে রাগিয়ে দিয়েছিল যে। লজের প্রতীকচিহ্ন বিনিময়ের পর শুরু হল কথাবার্তা।

    ব্রাদার মরিস কিন্তু কথা আরম্ভ করে বেশ দ্বিধার সঙ্গে যেন বক্তব্য বিষয় অতিশয় ভঙ্গুর–ভরসা পাচ্ছে না। বললে, মিস্টার ম্যাকমুর্দো, আপনাকে একটা কথা বলতে চাই। দয়া করে এসেছেন বলে ধন্যবাদ জানবেন।

    চিঠিতে নিজের নাম লেখেননি কেন?

    মিস্টার, সাবধানের মার নেই। দিনকাল এখন এমন যে ছোটোখাটো ব্যাপারও কীভাবে ঘুরে আসবে নিজের কাছে কেউ তা বলতে পারে না। কাকে বিশ্বাস করা উচিত, কাকে করা উচিত নয়–তাও কেউ জানে না।

    লজের ব্রাদারদের বিশ্বাস করা কি যায় না?

    আরে না। সবসময়ে নয়। তেড়েফুঁড়ে বললে মরিস। যাই বলি না কেন, এমনকী মনে মনেও যদি কিছু ভাবি, খবরটা যেন হাওয়ায় পৌঁছে যায় এই ম্যাকগিন্টি লোকটার কাছে।

    কঠিন কণ্ঠে বললে ম্যাকমুর্দো, দেখুন, গতকাল রাত্রে শপথ নিয়েছি বডিমাস্টারের সামনে। আপনি কি সেই শপথ ভাঙতে বলছেন?

    বিষণ্ণভাবে মরিস বললে, আপনি যদি ওইভাবে নেন, তাহলে আপনাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য দুঃখিত। পরিস্থিতি এখন সত্যিই খুব সঙিন। দু-জন স্বাধীন নাগরিকও মনের কথা পরস্পরের কাছে বলতে পারে না।

    অত্যন্ত সংকীর্ণ চোখে সঙ্গীকে নিরীক্ষণ করছিল ম্যাকমুর্দো। এই কথার পর একটু সহজ হল।

    বললে, আমি তো শুধু আমার কথাই বললাম। নতুন এসেছি, সব কিছুই অদ্ভুত লাগছে। কাজেই, আমার পক্ষে মুখ খোলা সমীচীন হবে না, মি. মরিস। তবে আপনি যদি কিছু বলতে চান তো শুনতে পারি।

    তারপর গিয়ে বলবেন বস ম্যাকগিন্টিকে? তিক্তস্বরে বলে মরিস।

    অবিচার করলেন। লজের প্রতি আমি বিশ্বস্ত ঠিকই, কিন্তু কেউ যদি বিশ্বাস করে কোনো কথা বলে, সে-কথা পেটে রাখতে পারব না–এমন বান্দা আমি নই। যা বলবেন তা আমি ছাড়া কেউ জানবে না কথা দিলাম কিন্তু আমার দিক দিয়ে কোনো সাহায্য বা সহানুভূতিও যে পাবেন না, তাও বলে রাখলাম।

    মরিস বললে, দুটোর কোনোটারই প্রত্যাশা আর করি না কারো কাছে ভিক্ষাও আর চাই। আমার কথা বলবার পর জানবেন কিন্তু আমার জীবনটাও আপনার হাতের মুঠোয় চলে যাবে। কিন্তু আপনি যত খারাপই হোন না কেন–কাল রাতে তো দেখলাম ওদের মতো জঘন্য হওয়ার ঝোঁক আপনার মধ্যে রয়েছে–তাহলেও এসব ব্যাপারে আপনি এখনও নতুন, ওদের মতো বিবেক বস্তুটা এখনও শক্ত হয়নি। তাই ভাবলাম আপনার সঙ্গে কথা বলব।

    বলুন কী বলবেন?

    যদি বিশ্বাসঘাতকতা করেন, নরকেও জায়গা হবে না বলে দিলাম।

    বললাম তো করব না।

    তাহলে একটা কথা জিজ্ঞেস করা যাক শিকাগোয় যখন ফ্রিম্যানদের সোসাইটিতে নাম লিখিয়ে দানধ্যান আর আনুগত্যর শপথ নিয়েছিলেন, তখন কি ঘুণাক্ষরেও ভেবেছিলেন যে পাপের পথে নামতে যাচ্ছেন? অপরাধ করতে চলেছেন?

    এর নাম কি অপরাধ?

    অপরাধ নয়! আবেগে গলা কেঁপে গেল মরিসের। কতটুকু-বা আর দেখেছেন আপনি, তাই ও-কথা বলতে পারলেন। গতকাল রাত্রে যা ঘটল সেটা কি অপরাধ নয়? আপনার বাবার বয়সি এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে রক্ত বার করে দেওয়াটা যদি অপরাধ না হয়, তবে আর কাকে অপরাধ বলে শুনি?

    ম্যাকমুর্দো বললে, অনেকে কিন্তু এর নাম দিয়েছে যুদ্ধ। দুই শ্রেণির মধ্যে লড়াই। যে যত জোরে মারতে পারবে, সেই জিতবে।

    শিকাগোয় ফ্রিম্যানদের সোসাইটিতে নাম লেখানোর সময়ে এ-জিনিস কি ভেবেছিলেন? তা অবশ্য ভাবিনি।

    আমিও ভাবিনি ফিলাডেলফিয়ার সোসাইটির মেম্বার হওয়ার সময়ে। সেটা ছিল পাঁচজনের উপকার করার ক্লাব, মেম্বারদের আড্ডা মারার জায়গা। তারপর এই জায়গার নামটা শুনলাম–শুনেছিলাম খুবই অশুভ লগ্নে, অভিশপ্ত মুহূর্তে। চলে এলাম ভবিষ্যৎটা ভালো করার জন্যে, নিজের আরও মঙ্গলের জন্যে। কী মঙ্গল হয়েছে দেখতেই পাচ্ছেন! সঙ্গে এল বউ আর ছেলে-মেয়ে। মার্কেট স্কোয়ারে দোকান দিলাম–শুকনো জিনিসপত্রের দোকান–কপাল ফিরতে লাগল একটু করে। খবর ছড়িয়ে গেল আমি ফ্রিম্যান, গতরাতে যেভাবে জোর করে মেম্বার করা হল আপনাকে ঠিক সেইভাবে গায়ের জোরে আমাকেও টেনে আনা হল স্থানীয় লজে। আমার বাহুতেও ছ্যাকা দিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে সেই চিহ্ন–যে-চিহ্ন কাউকে দেখানো যায় না–লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যায়–এ ছাড়াও আরও জঘন্য চিহ্ন আঁকা হয়ে গেছে আমার এই বুকের মধ্যে। দু-দিনেই টের পেলাম একটা পিশাচের হুকুমে আমাকে ওঠ-বস করতে হচ্ছে, জড়িয়ে পড়েছি অপরাধের জালে। নিরুপায় হয়ে পড়লাম। করবার কিছুই আর ছিল না। আমার প্রত্যেকটা ভালো কথাকে যে বিশ্বাসঘাতকতার বুলি হিসেবে ধরা হয়েছে, গতরাত্রে দেখলেন। পালানোর পথও বন্ধ–আমার সর্বস্ব ওই দোকানে। সোসাইটির সদস্যপদ ত্যাগ করা মানেই কিন্তু খুন হয়ে যাওয়া ছেলে-মেয়ে বউয়ের কী হাল হবে ভগবান জানেন। উঃ, কী ভয়ংকর! কী ভয়ংকর! বলতে বলতে দু-হাতে মুখ ঢেকে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে মরিস কান্নার দমকে ফুলে ফুলে উঠতে থাকে সারাদেহ।

    দু-কাঁধ ঝাঁকায় ম্যাকমুর্দো।

    বলে, আপনি তো দেখছি বড্ড তুলতুলে–এসব কাজের উপর্যুক্ত মোটেই নন।

    আমার বিবেক ছিল, ধর্ম ছিল, কিন্তু ওরা আমাকে ওদের মতোই অপরাধী বানিয়ে নিয়েছে। যদি পেছোই, কপালে কী দুর্গতি আছে তা আমি জানি। হয়তো আমি ভীতু। হয়তো বউ আর ছেলে-মেয়েদের কথা ভেবেই এমনি হয়ে গিয়েছি। তাই যাওয়া ছাড়া আর পথ ছিল না। সারা জীবনটা হয়তো সেই চিন্তা নিশায় দুঃস্বপ্নের মতো তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াবে আমাকে। বাড়িটা নিরিবিলি, এখান থেকে বিশ মাইল দূরে। দরজা আগলানোর ভার পড়েছিল আমার ওপর–ঠিক যেভাবে আপনি কাল রাতে দরজা পাহারা দিয়েছিলেন। খুনটুনের ব্যাপারে আমাকে বিশ্বাস করতে পারেনি ওরা। তাই বাকি সবাই গেল ভেতরে। বেরিয়ে এলে পর। দেখলাম কবজি পর্যন্ত লাল হয়ে গেছে রক্তে। চলে আসার সময়ে শুনলাম আর্ত চিৎকার করতে করতে একটা বাচ্চা ছেলে ছুটে বেরিয়ে এল বাড়ির বাইরে। ছেলেটার বয়স মোটে পাঁচ বছর, বাবার খুন হয়ে যাওয়া দেখেছে নিজের চোখে। দৃশ্যটা দেখে প্রায় অজ্ঞান হতে বসেছিলাম। তবুও মুখে হাসি টেনে বেপরোয়া থাকতে হয়েছে। কেননা তা না-করলে পরের দিনই হয়তো আমার বাড়ি থেকেই কবজি পর্যন্ত রক্তে ড়ুবিয়ে বেরিয়ে আসত এরা মাটিতে মুখ খুঁজড়ে বাবার জন্যে কেঁদে ভাসাত আমারই ছোটো ছেলে ফ্রেড। এইভাবেই কিন্তু অপরাধীদের একজন হয়ে গেলাম আমি। খুনিদের সাহায্য করলাম, এ-সংসারে খুনি এখন আমিও। আমি ক্যাথলিক। যত খাঁটিই হোক না আমার ধর্ম বিশ্বাস, আমি স্কোরারস, এ-কথা শোনবার পর কোনো ধর্মযাজক আর আমার সঙ্গে কথা বলবে না, আমার একটা কথাও বিশ্বাস করবে না। এইভাবে দিন কাটছে আমার। আপনিও নেমে চলেছেন সেই পথে, শেষটা কোথায় জানেন? ঠান্ডা মাথায় যারা মানুষ খুন করে বেড়ায়, আপনি কি তাই হতে চান? নাকি সবাই মিলে চেষ্টা করে এসব বন্ধ করে দেব?

    কী করতে চান? সহসা শুধোয় ম্যাকমুর্দো। পুলিশকে খবর দেবেন?

    আঁতকে ওঠে মরিস, বলেন কী! ও-কথা ভাবলেও যে আমার প্রাণ যাবে।

    তাহলে তো মিটেই গেল। আপনি দুর্বল, তিলকে তাল করেন আপনার সম্বন্ধে এর বেশি আর বলার নেই আমার।

    তিলকে তাল করি! দু-দিনেই বুঝবেন খন। তাকিয়ে দেখুন উপত্যকার দিকে। শ-খানেক চিমনি থেকে ধোঁয়া উঠে আকাশ কীরকম কালো হয়ে গেছে দেখুন। ধোঁয়ার ওই মেঘের চাইতেও কিন্তু অনেক নীচে প্রত্যেকের মাথার ওপর ঝুলছে খুনের মেঘ। এ হল ভ্যালি অফ ফিয়ার–ভ্যালি অফ ডেথ, আতঙ্ক-উপত্যকা। মৃত্যু উপত্যকা। সন্ধে থেকে সকাল পর্যন্ত আতঙ্ক বিরাজ করে এখানকার মানুষের অন্তরে। ইয়ংম্যান, দু-দিন যাক আপনিও টের পাবেন।

    বেপরোয়া ভঙ্গিমায় ম্যাকমুর্দো বললে, সে-রকম কিছু টের পেলে আপনাকে না হয় জানিয়ে দেব। আসল কথাটা কী জানেন, এ-জায়গায় থাকার উপর্যুক্ত আপনি নন। জলের দরেও যদি কারবার বেচতে হয়, তবে তাই করুন। আমাকে যা বললেন তা কাকপক্ষী জানবে না। কিন্তু যদি আপনি ইনফরমার হন, খবর চালাচালির কারবার করেন, তাহলে কিন্তু—করুণ কণ্ঠে চেঁচিয়ে ওঠে মরিস, না, না, না।

    তাহলে তো মিটেই গেল। যা বললেন, তা মনে রাখব। যদি কখনো সে-রকম ঘটনা ঘটে, আপনার কথা নতুন করে ভাবব। এবার বাড়ি ফেরা যাক।

    যাওয়ার আগে আর একটা কথা, বললে মরিস। দু-জনকে একসঙ্গে যদি কেউ দেখে থাকে, প্রশ্ন উঠতে পারে কী কথা বলছিলাম।

    আরে হ্যাঁ, বলে ভালো করলেন তো!

    বলবেন, আপনাকে আমার দোকানে কেরানির কাজ করতে বলছিলাম। এবং আপনি তাতে রাজি হননি। কেমন? ঠিক আছে, এবার চলি। ভবিষ্যৎ আপনার ভালোভাবে কাটুক, এই ইচ্ছেই জানিয়ে যাই যাবার সময়ে।

    সেইদিনই বিকেলে বসবার ঘরে আগুনের চুল্লির পাশে চিন্তামগ্নভাবে বসে রয়েছে ম্যাকমুর্দো, এমন সময়ে দড়াম করে দরজা খুলে গেল দেখা গেল চৌকাঠ জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে বস ম্যাকগিন্টির সুবিপুল মুর্তি। চিহ্ন বিনিময়ের পর বসল যুবাপুরুষের বিপরীত চেয়ারে, চেয়ে রইল নিস্পলক চোখে–একইভাবে পলকহীন চোখে চেয়ে রইল ম্যাকমুদোও।

    অবশেষে মুখ খোলে ম্যাকগিন্টি, ব্রাদার ম্যাকমুর্দো, সচরাচর কারো বাড়ি আমি যাইনি। বাড়ি বয়ে যারা আসে দেখা করতে ব্যস্ত থাকি তাদেরই নিয়ে। কিন্তু একটা ব্যাপার পরিষ্কার করে নেওয়ার জন্যে ভাবলাম তোমার বাড়ি আমার আসা দরকার।

    আলমারি থেকে হুইস্কির বোতল বার করতে করতে আন্তরিকভাবে বললে ম্যামুর্দো, আমার পরম সৌভাগ্য, কাউন্সিলর। এত সম্মান আমি আশা করিনি।

    হাত কীরকম আছে?

    মুখভঙ্গি করে ম্যাকমুর্দো, হাতের ব্যথা কি ভোলা যায়। তবে যা পেলাম, তার তুলনায় ব্যথাটা কিছু নয়।

    তা ঠিক, যারা অনুগত; এ-ব্যথা তারা সয়, লজের অনেক কাজও করে দেয়। আজ সকালে মিলার হিলে ব্রাদার মরিসের সঙ্গে কী কথা হচ্ছিল।

    প্রশ্নটা আচমকা–ভাগ্যিস বুদ্ধি করে জবাবটা আগে থেকে ভেবে রেখেছিল ম্যাকমুর্দো, নইলে বিপদে পড়ত! হেসে উঠল হো হো করে। প্রাণখোলা অট্টহাসি।

    বললে, মরিস জানে না আমি এই ঘরে বসেই দু-হাতে টাকা রোজগার করতে পারি। জানতেও পারবে না। কেননা আমার সম্বন্ধে ধারণা ওর খুবই ভালো। লোকটার মনটা কিন্তু ভালল। ওর ধারণা আমার নাকি খাঁকতির দশা চলছে–তাই ইচ্ছে করলে ওর দোকানে চাকরি করতে পারি।

    ও, এই ব্যাপার?

    হ্যাঁ।

    তুমি রাজি হওনি?

    তা আর বলতে। মাত্র চার ঘণ্টা খেটে দশগুণ রোজগার তো এই ঘরে বসেই করতে পারি।

    তা বটে। তবে মরিসের সঙ্গে বেশি মেলামেশা না-করাই ভালো।

    কেন বলুন তো?

    সেটা না বলাই ভালো। এ-অঞ্চলের বেশির ভাগ লোক কিন্তু এইটুকু শুনলেই যথেষ্ট মনে করবে।

    বেশির ভাগ লোকের পক্ষে যা যথেষ্ট, আমার কাছে তা নয়। জোর গলায় বলে ম্যাকমুর্দো। এতেই যদি মানুষ চেনার ক্ষমতা থাকে তো আমাকে চেনা আপনার উচিত ছিল।

    জ্বলন্ত চোখে তাকিয়ে নোমশ দুই হাত মুঠি পাকিয়ে ঝুঁকে পড়ল দানব দেহ–এই বুঝি ঘুসি মেরে বসে সহচরের মাথায়। পরক্ষণেই ফেটে পড়ে কপট অট্টহাসিতে। বললে, তুমি তো দেখছি আচ্ছা সৃষ্টিছাড়া জীব। ঠিক আছি, কারণ জানতে চাও তো, বলছি কারণটা লজের পিণ্ডি চটকে কোনো কথা বলছে মরিস?

    না।

    আমার শ্রাদ্ধ করেনি?

    না।

    তোমাকে বিশ্বাস করতে পারেনি বলেই বলেনি। ভেতরে ভেতরে ও কিন্তু বিশ্বস্ত ব্রাদার মোটেই নয়। সে-খবর আমরা রাখি বলেই ওকে চোখে চোখে রেখেছি–সুযোগমতো সরিয়ে দেব। সেদিনের আর বেশি দেরি নেই বলেই মনে হচ্ছে। মামড়ি-পড়া ভেড়াদের ঠাঁই নেই আমাদের খোঁয়াড়ে। বিদ্রোহী ব্রাদারের সঙ্গে বেশি মেলামেশা করলে তোমাকেও কিন্তু বিদ্রোহী বলতে বাধ্য হব। বুঝছ?

    মেলামেশার সম্ভাবনাই নেই–লোকটাকে দু-চক্ষে দেখতে পারি না আমি, বললে ম্যাকমুর্দো। আপনি ছাড়া আর কেউ আমাকে বিদ্রোহী বললে কিন্তু মুখনাড়া বন্ধ করে দিতাম।

    গেলাসে শেষ চুমুক দিয়ে বললে ম্যাকগিন্টি, ওতেই হবে। সময় থাকতে হুঁশিয়ার করব বলে এসেছিলাম।

    মরিসের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে আপনি জানলেন কী করে?

    হেসে উঠল ম্যকগিন্টি।

    বললে, এ-শহরের কোথায় কী হচ্ছে সব নখদর্পণে রাখাটাই আমার কাজ। আমি যা বলব তা ধ্রুব সত্য বলেই জানবে। যাই হোক, সময় হয়েছে, এবার আমি–

    কিন্তু বিদায় নেওয়াটা আটকে গেল মাঝপথে–অপ্রত্যাশিতভাবে। আচমকা দড়াম করে সবুট পদঘাতে খুলে গেল পাল্লা এবং টুপি মাথায় তিনজন পুলিশের লোককে জ্বলন্ত চোখে, ভ্রূকুটি কুটিল ললাটে তাকিয়ে থাকতে দেখা গেল দরজার কাছে। তড়াক করে লাফিয়ে উঠেই রিভলবার টেনে বার করতে গেল ম্যাকমুর্দো–কিন্তু আধখানা টেনেই থেমে যেতে হল তিন তিনটে উইনচেস্টার রাইফেলের নল মাথার দিকে তাক করে রয়েছে দেখে। ছ-ঘড়া রিভলবার হাতে ইউনিফর্মধারী এক ব্যক্তি ঢুকল ঘরে। শিকাগোর সেই ক্যাপ্টেন মার্ভিন–এখন কোল অ্যান্ড আয়রন কন্সট্যাবুলারির অফিসার। ফিক করে হেসে ম্যাকমুর্দোর পানে চেয়ে মাথা নাড়ল ক্যাপ্টেন।

    বললে, শিকাগোর মি. মহাবদমাশ ম্যাকমুর্দো, কপালে তোমার অনেক দুর্গতি আছে দেখছি। বদমাইশি না-করলে বুঝি ঘুম হয় না? টুপি নিয়ে চলে এসো।

    গর্জে উঠল ম্যাকগিন্টি, ক্যাপ্টেন মার্ভিন, এর ফল কিন্তু আপনাকে ভুগতে হবে বলে দিলাম। সজ্জন আইনভক্ত নাগরিকের বাড়িতে এভাবে হামলা করতে এসেছেন কেন?

    কাউন্সিলর ম্যাকগিন্টি, কর্তব্যে বাধা দিচ্ছেন মনে রাখবেন। আমরা এসেছি ম্যাকমুর্দোকে গ্রেপ্তার করতে আপনার উচিত আমাদের সাহায্য করা কর্তব্যে বাধা দেওয়া নয়।

    ম্যাকমুর্দো আমার বন্ধু সে যদি কিছু করে থাকে আমাকে জিজ্ঞেস করুন–আমি জবাব দিচ্ছি, বললে বস।

    মি. ম্যাকগিন্টি, আপনার নিজের কীর্তিকলাপের জবাব আপনাকেই একদিন দিতে হতে পারে। এ-লোকটা এককালে চূড়ান্ত বদমাইশ ছিল, এখনও রয়েছে। পেট্রলম্যান, রাইফেল তুলে রাখো পকেট থেকে রিভলবারটা সরিয়ে নিন।

    শাক্তস্বরে বললে ম্যাকমুর্দো, এই নিন পিস্তল। ক্যাপ্টেন মাভিন, আপনি যদি একা আসতেন, আর আমি যদি একা থাকতাম, এত সহজে নিয়ে যেতে পারতেন না আমাকে।

    ম্যাকগিন্টি বলে, ওয়ারেন্ট কোথায় আপনার? কী আশ্চর্য! রাশিয়ায় থাকা আর ভারমিসায় থাকা দেখছি একই ব্যাপার হয়ে দাঁড়াল পুলিশের ভয়ে জুজু হয়ে থাকতে হবে।

    এ-অত্যাচারের ফল আপনাকে ভুগতে হবে, বলে দিলাম।

    কাউন্সিলর, আপনার কাজ আপনি করুন ভালোভাবেই করুন। আমাদের কাজ আমরা করব।

    আমার অপরাধটা কী? শুধোয় ম্যাকমুর্দো। হেরাল্ড অফিসে চড়াও হয়ে বৃদ্ধ সম্পাদক স্ট্যানজারকে ধরে পিটোনো। খুনের চার্জ নিয়ে আসতে হয়নি, এই যথেষ্ট দোষটা অবশ্য তোমার নয়।

    হেসে উঠল ম্যাকগিন্টি, এইটেই যদি ওর একমাত্র অপরাধ বলে মনে করে থাকেন, তাহলে আর কষ্ট করতে হবে না। কাল রাত বারোটা পর্যন্ত আমার সঙ্গে সেলুনে পোকার খেলেছে ম্যাকমুর্দো–ডজনখানেক সাক্ষী হাজির করব তা প্রমাণ করার জন্যে।

    ওটা আপনার ব্যাপার, আপনি করুন। কালকে কোর্টে গিয়ে বরং সাক্ষী হাজির করুন। চলে এসো ম্যাকমুর্দো, সুবোধ ছেলের মতো না-এলে বন্দুকের বাঁট দিয়ে মারব মাথায়। সরে দাঁড়ান মি. ম্যাকগিন্টি, ডিউটিতে যতক্ষণ আছি, কোনো বাধাই বাধা বলে মানব না জানবেন।

    ক্যাপ্টেনের সংকল্প দৃঢ় মুখচ্ছবি দেখে ট্যা-ফেঁা করার সাহস পেল না ম্যাকগিন্টি আর ম্যাকমুর্দো। যাওয়ার আগে খাটো গলায় অবশ্য কথা হয়ে গেল দুই মূর্তিমানের মধ্যে।

    বুড়ো আঙুলটা ওপরে উঁচিয়ে টাকা জালের যন্ত্রটাকে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে শুধোল ম্যাকগিন্টি, ওটার কি

    ওসব ঠিক আছে, বসকে আশ্বস্ত করে ম্যাকমুর্দো। মেঝের তলায় চোরা খুপরির মধ্যে যন্ত্রটা লুকিয়ে রাখার ব্যবস্থা সে করেছিল।

    করমর্দন করে বস বলে, তাহলে বিদায়। আইনবিদ রিলির সঙ্গে এখুনি দেখা করে তোমাকে ছাড়িয়ে আনার ব্যবস্থা করছি। জেনে রেখো, তোমাকে আটকে রাখার ক্ষমতা ওদের নেই।

    ও-ব্যাপারে আর বাজি ধরব না। কয়েদিকে সামলে রাখবে তোমরা দু-জনে–বেচাল দেখলেই গুলি করবে। যাওয়ার আগে বাড়িটা তল্লাশ করব আমি।

    তন্নতন্ন করে খুঁজেও কিন্তু টাকা জালের যন্ত্র পেল না মার্ভিন। নীচে নেমে পাহারাদারদের সঙ্গে ম্যাকমুর্দোকে নিয়ে গেল সদরদপ্তরে। অন্ধকার গাঢ় হয়েছে, ছুরির মতো ধারালো তুষার ঝড়ে চোখ-মুখ যেন ফালাফালা হয়ে যাচ্ছে, রাস্তা তাই প্রায় জনহীন–দু-একজন নিষ্কর্মা ছাড়া। পেছন পেছন এল এরা অন্ধকার আর তুষার ঝড়ের আড়ালে নিজেদের অদৃশ্য রেখে সাহসে বুক বেঁধে মুণ্ডুপাত করতে লাগল কয়েদির।

    জ্যান্ত ছাল ছাড়িয়ে নিন শয়তান স্কোরারস-এর! পুলিশ ফাঁড়িতে ম্যাকমুর্দোকে ঠেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার পর হাতে হাতে নানারকম টিটকিরি বর্ষণ করে চলল নিষ্কর্মার দল। ভারপ্রাপ্ত ইনস্পেকটর রুটিনমাফিক জিজ্ঞাসাবাদ করে তাকে পুরে দিল গারদঘরে। বলড়ুইন এবং আরও তিনজন অপরাধী রয়েছে সেলে–গ্রেপ্তার হয়েছে গত রাতে, বিচার হবে আগামী সকালে!

    আরক্ষাবাহিনীর সুদৃঢ় এই দুর্গেও দেখা গেল ফ্রি-ম্যানদের কারচুপি পৌঁছেছে। গভীর রাতে বিছানার জন্যে এক বান্ডিল খড় নিয়ে এল একদল কারারক্ষক। বান্ডিলের ভেতর থেকে বেরোল দু-বোতল হুইস্কি, খানকয়েক গেলাস এবং এক প্যাকেট তাস। দারুণ ফুর্তিতে কাটল সারারাত পরের দিনের অগ্নিপরীক্ষা নিয়ে তিলমাত্র দুশ্চিন্তা রইল না কারুর মনে।

    দুশ্চিন্তার কারণও ছিল না। যথাসময়ে তা বোঝা গেল। উচ্চতর আদালতে মামলা সুপারিশ করার মতো সাক্ষ্যপ্রমাণ পেলেন না ম্যাজিস্ট্রেট। কম্পােজিটর আর প্রেসের লোকরা বললে, হানাদারদের মধ্যে কয়েদিরা ছিল বলেই তাদের বিশ্বাস কিন্তু শপথ নিয়ে শনাক্তকরণ সম্ভব নয় দুটি কারণে। প্রথমত কম আলোয় হানাদারদের স্পষ্ট দেখা যায়নি, দ্বিতীয়ত প্রত্যেকেই ভীষণ বিচলিত হয়ে পড়েছিল। ম্যাকগিন্টি একজন তুখোড় আইনবিদকে লাগিয়েছিল কেস লড়বার জন্যে। সে-ভদ্রলোক চোখা চোখা জেরা আরম্ভ করতেই প্রেসের লোক আর কম্পােজিটরদের সব কথাই আরও ভাসা ভাসা হয়ে এল। আহত ব্যক্তি এসেই বলেছিলেন, অতর্কিতে আক্রান্ত হওয়ার দরুন কাউকেই তিনি চিনে রাখবার মতো সময় পাননি–একজনের গোঁফ আছে, এইটুকুই শুধু মনে আছে। প্রথমে লাঠি মেরেছে সে! আরও বললে, হানাদাররা নিঃসন্দেহে স্কোরারস-দের দল। এরা ছাড়া সমাজে আর তার শত্রু নেই। অনেকদিন ধরেই সম্পাদকীয়তে খোলাখুলি এদের আক্রমণ করেছিলেন তিনি। এই গেল একদিনের ব্যাপার। আর একদিনে উচ্চপদস্থ কর্মচারী কাউন্সিলর ম্যাকগিন্টি স্বয়ং এবং ছ-জন নাগরিক একবাক্যে এবং সুকৌশলে বলে গেল, ঘটনাটি যখন ঘটে তারও কিছুক্ষণ পর পর্যন্ত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের প্রত্যেকে ইউনিয়ন হাউসে তাস খেলায় মত্ত ছিল। ফলে, হয়রানির জন্যে ক্ষমা চেয়ে মুক্তি দেওয়া হল আসামিদের এবং ভৎসনা করা হল ক্যাপ্টেন মার্ভিন এবং পুলিশকে তাদের পুলিশি আক্রোশের জন্যে।

    রায় শুনে উল্লাস আর হাততালিতে আদালত কক্ষ যেন ফেটে গেল ভিড়ের মধ্যে অনেক চেনা মুখ চোখে পড়ল ম্যাকমুর্দোর। লজের ব্রাদাররা হাসছে, হাত নেড়ে স্বাগত জানাচ্ছে। কাঠগড়া থেকে সারবেঁধে নেমে আসার সময়ে আসামিদের চোখে পড়ল আরও কয়েকটি মুখ ঠোঁট তাদের দৃঢ়সংবদ্ধ, চোখে কুটি। ওদের মধ্যে একজন খর্বকায়, মুখভরতি কালো দাড়ি, চোহারাটিও গোঁয়ার টাইপের। বেকসুর খালাস কয়েদিরা পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে সঙ্গীদের এবং নিজের কথা স্পষ্ট বলেই ফেলল।

    বলল, শয়তান খুনি কোথাকার! তোদের আমি শেষ করবই করব!

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleশার্লক হোমস সমগ্র ২ – অনুবাদ : অদ্রীশ বর্ধন
    Next Article When the World Screamed – Arthur Conan Doyle

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }