Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    শার্লক হোমস সমগ্র ১ – অনুবাদ : অদ্রীশ বর্ধন

    লেখক এক পাতা গল্প813 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ১২. নীরন্ধ্রতম অন্ধকার মুহূর্ত

    সঙ্গীদের মধ্যে জ্যাক ম্যাকমুর্দো আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠল গ্রেপ্তার আর খালাস হওয়ার পর। সোসাইটিতে নাম লেখানোর সঙ্গেসঙ্গে সেই রাত্রেই ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করানোর মতো কুকর্ম সে করেছে, সমিতির ইতিহাসে কিন্তু এ-নজির আর নেই। জমাটি সঙ্গী, ফুর্তিবাজ মদ্যপ এবং চড়া মেজাজের দরুন এর মধ্যেই বেশ সুনাম হয়েছিল তার মেজাজ তার এমনই যে স্বয়ং বসের মতো সর্বশক্তিমানও তাকে অপমান করলে আর রক্ষে নেই–রুখে সে দাঁড়াবেই। কিন্তু এসব ছাড়াও কমরেডদের চোখে সে আরও একটা ব্যাপারে মার্কামারা হয়ে উঠেছিল, রক্ত ঝরানো যেকোনো চক্রান্ত সৃষ্টি করাই শুধু নয়, সেই চক্রান্ত অনুযায়ী কাজ হাসিল করার মতো ক্ষমতা যে তার ব্রেনে আছে এবং সেই ব্রেনের মতো আর একটি ব্রেনও সংগঠনে আর দ্বিতীয় নেই–তা স্পষ্ট হয়ে গেছিল। প্রবীণরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করত, ছোকরা কাজ করে খুব পরিষ্কার। এমন লোককে নিজের কাজে লাগানোর সুযোগ খুঁজত প্রত্যেকেই। কাজের যন্ত্রর অভাব ছিল না ম্যাকগিন্টির, কিন্তু এখন দেখলে সব যন্ত্রর সেরা যন্ত্র এই ম্যাকমুর্দো–তার ধারেকাছেও আসতে পারে না কেউ। ম্যাকমুর্দো যেন মানুষ নয়, রক্তখেকো ভয়ংকর একটা ব্লাডহাউন্ড কুত্তা–অতি কষ্টে ম্যাকগিন্টি যেন তাকে গলায় চেন বেঁধে টেনে রেখেছে। ছোটোখাটো কাজের জন্যে খেকি কুকুরই যথেষ্ট, কিন্তু সে-রকম শিকার পেলে লেলিয়ে দেওয়া যাবেখন একে। টেড বলড়ুইন এবং আরও কয়েকজন লজসদস্য নবাগতের এইভাবে চড়চড়িয়ে উঠে যাওয়া ভালো চোখে দেখল না–ঈর্ষায় জ্বলে পুড়ে গেলেও কিন্তু ঘাঁটাতে কখনো গেল না–কেননা ম্যাকমুর্দো হাসতে যেমন তৈরি, লড়তেও তেমনি একপায়ে খাড়া।

    বন্ধুবান্ধবদের চোখের মণি হয়ে ওঠা ছাড়াও ম্যাকমুর্দোর জীবনে আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ছিল যেখানে সে তখন হাবুড়ুবু খেয়ে মরেছে। বন্ধুদের কাছে খাতির জমানোর ব্যাপারে সে-তুলনায় কিছুই নয়। এট্টি শ্যাফটারের বাবা ম্যাকমুদোর সঙ্গে আর খাতির বজায় রাখতে রাজি নন এমনকী বাড়িতে ঢুকতে দিতেও নারাজ। ম্যাকমুর্দোকে অন্তর দিয়ে ভালোবাসলেও এটি নিজেও বুঝেছিল ক্রিমিন্যাল বলে পরিচিত কাউকে বিয়ে করার পরিণতি কী হতে পারে। তাই সারারাত না-ঘুমিয়ে একদিন সকালে উঠে মন ঠিক করে ফেলল এট্টি। ম্যাকমুর্দোর সঙ্গে দেখা করে কুসঙ্গীদের খপ্পর থেকে তাকে ফিরিয়ে আনার শেষ চেষ্টা সে করবে। এদের জন্যেই তো পাপের পথে ক্রমশ নেমে চলেছে সে–শেষ চেষ্টা সে করবে কুপ্রভাব থেকে তাকে সরিয়ে আনার এবং হয়তো এই দেখাই হবে শেষ দেখা। ম্যাকমুর্দো আগে অনেকবার কাকুতি মিনতি করে এটিকে তার বাড়ি নিয়ে যেতে চেয়েছিল। এতদিন এট্টি যায়নি, কিন্তু সেদিন গেল! সোজা উঠে গেল বসবার ঘরে। এট্টির দিকে পিঠ ফিরিয়ে টেবিলে বসে একটা চিঠি লিখছিল ম্যাকমুদো। এট্টি বয়স তখন মোটে উনিশ বলেই হঠাৎ একটা মেয়েলি দুষ্টমিতে পেয়ে বসল তাকে। দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকেছে এট্টি, কিন্তু তন্ময় থাকায় শুনতে পায়নি ম্যাকমুর্দো! পা টিপে টিপে পেছনে এসে আলগোছে হাত রাখল ঝুঁকে নেমে থাকা দু-কাঁধের ওপর।

    ম্যাকমুর্দোকে চমকে দেওয়ার জন্যেই এই দুষ্টুমি। এবং তাতে কাজও হল। কিন্তু এট্টিকেও চমকে উঠতে হল। বাঘের মতো লাফে নিমেষের মধ্যে এট্টির দিকে ঠিকরে গেল ম্যাকমুর্দো এবং ডান হাত বাড়িয়ে ধরল গলার দিকে। একইসঙ্গে বাঁ-হাতে দলা পাকিয়ে ফেলল সামনে রাখা কাগজটা। মুহূর্তের জন্যে চেয়ে রইল গনগনে চোখে। তারপর আনন্দ আর বিস্ময় এসে মুখ থেকে বিদেয় করল প্রচণ্ড জিঘাংসা। আত্যন্তিক প্রকোপে মুখের প্রতিটি পেশি বিকৃত হয়েছিল এতক্ষণ এবং যে জিঘাংসার ভয়ংকর চেহারা দেখে আতঙ্কে পাণ্ড হয়ে ছিটকে পেছনে সরে গিয়েছিল এট্টি বেচারা। নরম ধাঁচের মেয়ে সে জীবনে এমন বন্য বিকট রূপ সে দেখেনি।

    কপাল মুছে নিয়ে বলল ম্যাকমুর্দো, আরে তুমি! কী কাণ্ড দেখো তো! আমার প্রাণের দেবী এসেছে আমারই ঘরে, আর আমি কিনা যাচ্ছি তার টুটি টিপে ধরে শেষ করে দিতে। এসো প্রাণেশ্বরী, এসো–দু-বাহু বাড়িয়ে দেয় ম্যাকমুর্দো–দেখো আবার কেমন সুন্দর করে তুলি নিজেকে তোমার কাছে।

    কিন্তু প্রিয়তমের মুখে এইমাত্র ক্ষণের জন্যে অপরাধের যে-ভয়ার্ত ছবি সে দেখেছে, এখনও সে কাটিয়ে উঠতে পারেনি সেই ধাক্কা। মেয়ে মানুষের সহজাত অনুভূতি দিয়ে সে নিমেষের মধ্যে বুঝে নিয়েছে, চমকে ওঠাটা নিছক ভয়ের জন্যে নয়। ভেতরে চাপা আছে বলেই ভয়টা ফুটে বেরিয়েছে এইভাবে।

    জ্যাক, কী হয়েছে তোমার অমন চমকে উঠলে কেন আমাকে দেখে? বিবেক পরিষ্কার থাকলে তো ওভাবে তাকাতে পারতে না।

    আরে, পাঁচরকম চিন্তা নিয়ে মশগুল হয়ে রয়েছি, এমন সময়ে পরির মতো হালকা পা ফেলে এমনভাবে ঘরে ঢুকলে—

    না, জ্যাক না, চমকেছ অন্য কারণে, বলতে বলতে হঠাৎ সন্দেহ নিবিড় হয় এট্টির চোখে, দেখি কী লিখছিলে।

    এট্টি, সেটি পারব না।

    সন্দেহ আর সন্দেহ রইল না–ধ্রুব বিশ্বাস হয়ে গেল।

    বটে! অন্য মেয়েকে চিঠি লেখা হচ্ছে! ঠিক ধরেছি, নইলে দেখাচ্ছ না কেন? কাকে লিখছ? স্ত্রীকে? কী করে জানব তোমার বিয়ে হয়নি? ঘরে বউ আছে? এ-অঞ্চলে কেউ তোমায় চেনে না কোনো খবরও রাখে না।

    এট্টি, ঈশ্বরের নামে বলছি, আমার বিয়ে হয়নি। তুমি ছাড়া আমার জীবনে দ্বিতীয় নারী আর নেই।

    বলতে বলতে আতীব্র আবেগে নীরক্ত হয়ে এল ম্যাকমুর্দোর মুখের চেহারা–সাদা পাঁশুটে সেই মুখ দেখে আর অবিশ্বাস করতে পারল না এট্টি।

    তাহলে দেখাচ্ছ না কেন?

    সখী, সত্যি কথাটা তাহলে বলি। শপথ করেছি এ-চিঠি কাউকে দেখাব না–যাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছি, তাদের কাছে যাতে আমার মুখ থাকে, তাই এ নিয়ে কোনো কথা তোমাকেও বলব না। শুধু জেনে রাখো, চিঠিটা আমাদের লজ সংক্রান্ত কোনো একটা ব্যাপারে। বোঝো না কেন, আচমকা পিঠে হাত পড়া মানেই তাই ভেবে নিয়েছিলাম নিশ্চয় গোয়েন্দা এসে দাঁড়িয়েছে পেছনে।

    এট্টি বুঝল ম্যাকমুর্দো সত্যি কথাই বলছে। দু-হাত বাড়িয়ে তাকে বুকের ওপর টেনে নেয় ম্যাকমুর্দো। মুখচুম্বন করে ধুয়ে মুছে উড়িয়ে দেয় সব সন্দেহ, সব ভয়কে।

    বোসসা এখানে। তোমার মতো রানির পক্ষে খুবই অদ্ভুত সিংহাসন, কিন্তু এর চাইতে ভালো আসন তত তোমার প্রিয়তম বেচারা দিতে পারবে না। এখন না-পারলেও একদিন কিন্তু দেবে–নিশ্চিন্ত থেকো। মনটা এখন আবার ঠিক হয়ে গেছে তো?

    কী করে ঠিক হবে বলতে পারো? তুমি ক্রিমিন্যাল এবং কবে যে খুনের দায়ে কাঠগড়ায় উঠবে ঈশ্বর জানেন–এর পর মন কখনো ঠিক থাকতে পারে জ্যাক? সেদিন একজন বোর্ডার বলছিল, ম্যাকমুর্দো আর স্কোরারস–কথাটা ছুরির মতো বিধে গেল আমার বুকে।

    তাতে কী, যত রূঢ়ই হোক না কেন, হাড়গোড় তো ভেঙে দেয় না। গায়ে ফোঁসকা পড়ে না।

    কিন্তু কথাটা তো সত্যি।

    যতটা খারাপ ভাবছ, ততটা নয়। আমরা গরিব, অধিকার ফিরিয়ে আনার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।

    দু-বাহু দিয়ে প্রিয়তমের কণ্ঠ বেষ্টন করে এট্টি।

    এ-লড়াই ছাড়ো জ্যাক, ছেড়ে দাও। এই কথা বলব বলেই আজ আমি এসেছি তোমার কাছে। হাঁটু গেড়ে ভিক্ষে চাইছি, জ্যাক! তোমার পা ধরে বলছি, মিনতি করছি–এ-কাজ ছেড়ে দাও।

    এটিকে তুলে ধরে ম্যাকমুর্দো। মাথাটা টেনে নিয়ে রাখে বুকে। আলতো করে হাত বুলিয়ে দেয় মাথায় মুখে।

    ডার্লিং কী বলছ বুঝতে পারছ না। শপথ ভঙ্গ করে, কমরেডদের ত্যাগ করে চলে আসা কি সম্ভব? আমার অবস্থাটা জানলে এ-অনুরোধ কখনো করতে না। তা ছাড়া, আমি চাইলেও তো আসা সম্ভব নয়। ওরা ছাড়বে কেন? লজের গুপ্ত রহস্য একবার যে জানে, লজ থেকে আর তাকে বেরোতে দেওয়া হয় না।

    তাও ভেবেছি, জ্যাক। প্ল্যানও করেছি। বাবা কিছু টাকা জমিয়েছে। এ-জায়গা বাবার আর ভালো লাগছে না। সবসময়ে ভয়ে ভয়ে আধখানা হয়ে থাকতে হয় এখানে। তাই বাবা যাওয়ার জন্যে এক পায়ে খাড়া। ফিলাডেলফিয়া বা নিউইয়র্কে যদি পালিয়ে যাই, এরা আর তোমার নাগাল পাবে না।

    হেসে ফেলে ম্যাকমুর্দো। লজের নাগাল কদ্দূর পৌঁছোয় তোমার জানা নেই এট্টি। ফিলাডেলফিয়া বা নিউইয়র্কে পৌঁছোবে না ভেবো না।

    তাহলে চলো যাই পশ্চিমে, নয় তো ইংলন্ডে, অথবা সুইডেনে বাবার দেশে। ভ্যালি অফ ফিয়ার থেকে পালিয়ে পৃথিবীর যেকোনো জায়গায়।

    প্রবীণ ব্রাদার মরিসের কথা মনে পড়ল ম্যাকমুর্দোর।

    বললে, ভ্যালি অফ ফিয়ার নামটা এই নিয়ে দ্বিতীয়বার শুনলাম। সত্যিই এ-উপত্যকার কিছু লোক ভয়ে কুঁকড়ে আছে আতঙ্ক ছায়ার তলায়। তুমি তাদের একজন।

    প্রতি মুহূর্তে এই ছায়ার কালো হয়ে আসছে আমাদের জীবন। টেড বলড়ুইন কি তোমাকে মন থেকে ক্ষমা করেছে মনে কর? শুধু তোমাকে যমের মতো ভয় করে বলে–নইলে আমাদের কপালে কী ঘটত ভাবতে পারো? আমার দিকে যখন তাকায় তখন ওর কালো চোখের খিদেটা দেখোনি?

    আমার চোখে পড়লে মেয়েদের দিকে তাকাতে হয় কী করে শিখিয়ে ছাড়বখন। কিন্তু আমি যে এ-জায়গা ছেড়ে যেতে পারছি না, সখী। একেবারেই নয়–এই আমার শেষ কথা। তবে হ্যাঁ, তুমি যদি ব্যাপারটা আমার ওপর ছেড়ে দাও–সম্মানের সঙ্গে কীভাবে এর মধ্যে থেকে বেরিয়ে যাওয়া যায়; সে-চেষ্টা আমি করব।

    এ ধরনের কাজে সম্মান আবার কীসের?

    ]যা খুশি বলতে পারো। কিন্তু যদি ছ-মাস সময় দাও আমাকে এমনভাবে কেটে বেরিয়ে যাব যে পরে লজ্জায় মাথা হেঁট হবে না–কেউ ধিক্কার দিতেও পারবে না।

    আনন্দে হেসে ওঠে এট্টি।

    ছ-মাস তো? কথা দিচ্ছ?

    ছ-মাস, হয়তো সাত আট হয়ে যেতে পারে। বড়োজোর এক বছর হতে পারে তার মধ্যেই জানবে উপত্যকা ছেড়ে চলে যাব আমরা সবাই।

    এর বেশি কথা আদায় করতে পারল না এট্টি, কিন্তু যা পেল তা নেহাত কম নয়। তমিস্রাময় ভবিষ্যতে আশার আলো নিয়ে পিতৃগৃহে ফিরল সে। জ্যাক ম্যাকমুর্দো তার জীবনে আবির্ভূত হওয়ার পর থেকে এত খুশি সে কখনো হয়নি।

    ম্যাকমুর্দো ভেবেছিল, লজের সদস্য হিসেবে সব কথা তাকে বলা হবে। কিন্তু দু-দিনেই দেখলে সংগঠনটা মামুলি লজের মতো সাদাসিদে নয়–অনেক বেশি ব্যাপক এবং জটিল। এমনকী বস ম্যাকগিন্টিও বহু ব্যাপারে অজ্ঞ। জেলা প্রতিনিধি নামে একজন উচ্চপদস্থ কর্মচারী থাকে হবসন্স প্যাঁচ-এ–বেশ কয়েকটা লজের ওপর শক্তি খাটায় লোকটা এবং সেটা ঘটে আচম্বিতে আর খেয়ালখুশি মতো। লোকটাকে একবারই দেখেছিল ম্যাকমুদো। মাথার চুল তার সাদা, শঠতায় ভরপুর, চলাফেরা চোরের মতো চুপিসারে, আড়ে আড়ে তাকানোর ধরন–বিদ্বেষবিষে জর্জরিত–ঠিক যেন একটা ধেড়ে ইঁদুর। নাম তার ইভান্স পট। বস ম্যাকগিন্টির মতো ডাকাবুকো মানুষও লোকটাকে দেখলে বিতৃষ্ণায় সিটিয়ে উঠত, ভয়ে শিউরে উঠত–পুঁচকে কিন্তু বিপজ্জনক রোম্পায়াকে দানবাকার ড্যান্টন যেমন ভয় পায়, অনেকটা সেইরকম।

    একদিন স্ক্যানল্যান একটা চিঠি পেল ম্যাকগিন্টির কাছ থেকে সেইসঙ্গে ইভান্স পটেরও চিঠি রয়েছে একটা। ম্যাকমুর্দোর সঙ্গে একই ডেরায় থাকত স্ক্যানল্যান। ইভান্স পট লিখেছে, দু-জন কাজের লোক পাঠাচ্ছে সে। ললার আর অ্যানড্রজ এদের নাম। এদিকে আসছে কিছু কাজ সারবার জন্যে। কী কাজ সেটা বলা সংগত হবে না। কাজের লগ্ন না-আসা পর্যন্ত ওদের থাকা খাওয়ার বন্দোবস্ত কি বডিমাস্টার করে দেবেন? ম্যাকগিন্টি লিখেছে, ইউনিয়ন হাউসে থেকে গোপনীয়তা রক্ষা করা অসম্ভব। কাজেই ম্যাকমুর্দো আর স্ক্যানল্যান দিন কয়েকের জন্যে তাদের বোর্ডিং হাউসে আগন্তুকদের ব্যবস্থা করে দিলে সে বাধিত হবে।

    সেইদিনই সন্ধেবেলা এসে হাজির হল দু-জনে–প্রত্যেকের হাতে ঝুলিয়ে নেওয়া ব্যাগ। ললারের বয়স হয়েছে, অতিশয় সেয়ানা, কথা বিশেষ বলে , সংযত। গায়ে পুরোনো কালো ফ্রক-কোট, মাথায় নরম ফেল্ট হ্যাট আর গালে কর্কশ, ধূসর দাড়ি থাকার ফলে দেখে মনে হয় যেন ভ্রাম্যমাণ পুরুতঠাকুর বাণী দেওয়াই একমাত্র কাজ। সহচর অ্যানড্রজের সবে গোঁফ উঠেছে, খোলামেলা, ফুর্তিবাজ ছেলে। হইচই আর উল্লাস দেখে মনে হয় যেন ছুটি কাটাতে এসেছে এবং উপভোগ করে যাবে প্রতিটি মুহূর্ত। দু-জনের কেউই মদ ছোঁয় না। ব্যবহার অত্যন্ত ভালো–সমিতির অন্যান্য সদস্যের কাছে দৃষ্টান্তস্থানীয়–শুধু যা দু-জনেই দক্ষ গুপ্তঘাতক। মানুষ খুনের এই সমিতিতে নরহত্যার যন্ত্র হিসাবে দু-জনেই বারংবার প্রমাণ দিয়েছে নিজেদের নিখুঁত যোগ্যতার। এর মধ্যেই চোদ্দোটা খুনের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছে, ললার আর অ্যানড্রজ করেছে তিনটের।

    ম্যাকমুর্দো দেখলে, অতীত কীর্তিকলাপ নিয়ে জমিয়ে গল্প করতে দু-জনেই উন্মুখ। লজ্জাশরমের বালাই খুব একটা নেই–ভাবখানা যেন সমাজের মহা উপকার করছে–খুন করে বুক তাই দশ হাত। কী কাজ নিয়ে আগমন, সে-ব্যাপারে দু-জনেই কিন্তু টু শব্দটি করতে রাজি নয়।

    ললার বললে, আমি আর ওই ছোকরা দু-জনেই মদ খাই না–তাই এ-কাজের জন্যে বেছে নেওয়া হয়েছে আমাদের। আমরা মুখ খুলি, এটা তারা চায় না। ভুল বুঝে না। জেলা-প্রতিনিধির হুকুম আমাদের তামিল করতেই হবে।

    চারজনে খেতে বসে কথা হচ্ছিল। জবাব দিল ম্যাকমুদোর দোস্ত স্ক্যানল্যান, কিন্তু আমরা তো সবাই এক।

    তা ঠিক। আগে যেসব খুন করেছি, যেমন চার্লি উইলিয়ামসের ব্যাপার বা সাইমন বার্ডের কাণ্ড নিয়ে সন্ধে পর্যন্ত গল্প চালিয়ে যেতে পারি। কিন্তু হাতের কাজ শেষ হওয়ার আগে এ-ব্যাপারে একটি কথাও নয়।

    খিস্তি করে ম্যাকমুর্দো বললে, এ-অঞ্চলের জনাবাঝোর লাশ আমি নিজে ফেলতে চাই। কার পিছু নিয়েছ বলো দিকি? জ্যাক নক্স, না, আয়রন হিল?

    আরে না, ওদের কেউ নয়।

    তবে কি হারম্যান স্ট্রস?

    না, সে-ও নয়।

    না যদি বলতে চাও, তাহলে আর বলাই কী করে বল। কিন্তু জানলে খুশি হতাম।

    ললার একটু হাসল কেবল। মাথা নাড়ল সামান্য। টলানো গেল না।

    অতিথিরা মুখ টিপে থাকলেও, ম্যাকমুর্দো, স্ক্যানল্যান দু-জনেই ঠিক করেছিল, মজাটা যখন হবে, তখন সেখানে হাজির থাকবেই থাকবে। একদিন ভোররাতে পায়ের আওয়াজ সিঁড়ি বেয়ে নেমে যেতে শুনেই স্ক্যানল্যানকে ঘুম থেকে টেনে তুলল ম্যাকমুর্দো। ঝটপট জামাকাপড় পরে নিলে দু-জনে। নেমে এসে দেখলে দরজা খোলা রেখেই দুই অতিথি বেরিয়ে পড়েছে নৈশ অভিযানে। ভোর তখনও হয়নি। বেশ কিছু দুরে রাস্তায় হাঁটছে দুই মূর্তিমান। পিছু নিল এরা দু-জন, পুরু বরফে পা ড়ুবে যাওয়ায় শব্দ হল না একদম।

    বোর্ডিং হাউসটা টাউনের একদম শেষের দিকে। দেখতে দেখতে ওরা শহর ছাড়িয়ে বেরিয়ে এল বাইরে। রাস্তার ক্রসিংয়ে আসতেই দেখা গেল তিনজন লোক দাঁড়িয়ে সেখানে। ললার আর আ্যানড়ুজ সংক্ষেপে কথা সেরে নিলে তিনজনের সঙ্গে। কথাবার্তা সংক্ষিপ্ত হলেও আগ্রহপূর্ণ। তারপর এগিয়ে চলল পাঁচজনে। নিশ্চয় কাজটা বড়ো ধরনের দল ভারী করতে হয়েছে সেই কারণে। এক জায়গায় এসে অনেকগুলো পায়ে-চলা-পথ চলে গিয়েছে নানান খনির দিকে। যে-রাস্তাটা ক্রো হিলের দিকে গিয়েছে, আগন্তুকরা পা বাড়াল সেইদিকে। ক্রো হিলের কারবার খুব বড়ো। নিউ ইংল্যান্ডের প্রাণবন্ত নির্ভীক ম্যানেজার জোসিয়া এইচ ডান-এর জন্যে এহেন অরাজক অঞ্চলেও এই খনিতে উজ্জ্বলতা ঢুকতে পারেনি। কারবারের পরিচালনা শক্ত হাতে থাকার দরুন তা সম্ভব হয়েছে।

    ভোরের আলো দেখা দিয়েছে। শ্রমিকরা সারি দিয়ে কাজে চলেছে। কখনো একলা, কখনো দল বেঁধে হাঁটছে কালো পথের ওপরে।

    এদের সঙ্গে মিশে গেল ম্যাকমুর্দো আর স্ক্যানল্যান। সামনের পাঁচমূর্তিকে চোখে চোখে রাখল প্রতি মুহূর্তে। ঘন কুয়াশা চেপে বসছে চারিদিকে। কুয়াশা ছুঁড়ে হঠাৎ শোনা গেল স্টিম হুইসলের কানফাটা আর্তনাদ। খনিগর্ভে খাঁচা নেমে যাওয়ার দশ মিনিট আগের সংকেতধ্বনি দশ মিনিট পরেই শুরু হবে দিনের কাজ।

    খোলা চত্বরে পৌঁছে দেখা গেল শ-খানেক খনি-শ্রমিক জড়ো হয়ে ঠান্ডায় হি-হি করে কাঁপছে। মাটিতে পা ঠুকছে, মুখের সামনে আঙুল জড়ো করে ফুঁ দিচ্ছে। অপেক্ষারত প্রত্যেকেই। ইঞ্জিন-হাউসের ছায়ায় দাঁড়িয়ে গেল পাঁচজনের ছোট্ট দলটা। গাদের টিলায় উঠে গেল ম্যাকমুর্দো আর স্ক্যানল্যান–চারিদিক স্পষ্ট দেখা যায় এখান থেকে। দেখল, ইঞ্জিন-হাউস থেকে বেরিয়ে আসছে খনি-ইঞ্জিনীয়ার মেনজিস। স্কটল্যান্ডের মানুষ, বিশাল চেহারা, গালে দাড়ির জঙ্গল। বাইরে এসেই ফুঁ দিল বাঁশিতে অর্থাৎ খনিগর্ভে খাঁচা এবার নামবে। সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে গেল একজন ঢ্যাঙা ছোকরা, ঢিলে-ঢালা হাত-পা, দাড়ি-গোঁফ পরিষ্কার কামানো। সাগ্ৰহমুখে সে এগোল খনির মুখের দিকে। আসার পথে চোখ পড়ল পাঁচজনের দলটির ওপর। ইঞ্জিন-হাউসের ছায়ায় নীরবে নিস্পন্দ দেহে দাঁড়িয়ে পাঁচটি লোক। প্রত্যেকের কপালের ওপর টেনে নামানো মাথার টুপি এবং কোটের কলার উলটে মুখ পর্যন্ত ঢাকা। দৃশ্যটা দেখেই ছাঁৎ করে ওঠে ম্যানেজারের নির্ভীক বুক–মৃত্যুর করাল ছায়া চকিতের জন্যে শিহরিত করে অন্তর। পরক্ষণেই মন থেকে ঝেড়ে ফেলে অকারণ ভয়, কর্তব্যের তাড়নায় এগিয়ে যায় অনাহূত আগন্তুকদের দিকে।

    যেতে যেতেই শুধোয়, কে আপনারা? এখানে দাঁড়িয়ে কেন?

    কেউ জবাব দিল না, অ্যানড্রজ ছোকরা কেবল এক এগিয়ে এসে ম্যানেজারের পেটে গুলি করল। সম্মোহিতের মতো এক-শো খনিশ্রমিক দাঁড়িয়ে দেখল সেই দৃশ্য নিথর নিস্পন্দ দেহ দেখে মনে হল যেন পক্ষাঘাতে অবশ হয়ে গেছে প্রত্যেকে। দু-হাতে ক্ষতমুখ চেপে ধরে ঝুঁকে পড়ল ম্যানেজার। পরক্ষণেই টলতে টলতে যেই এক পা ফেলেছে, অমনি পাঁচ গুপ্তঘাতকের আর একজন গুলি করল বুকে পাশের দিকে ছিটকে গিয়ে ইট-ছাই-জঞ্জালের ওপর পড়ল ম্যানেজার পা ছুঁড়তে ছুঁড়তে খামচে ধরল আবর্জনা স্তৃপ। এই দেখেই বাঘের মতো গর্জন করে একটা লোহার স্প্যানার যন্ত্র তুলে নিয়ে তেড়ে এল মেনজিস–কিন্তু দু-দুটো গুলি ছুটে গিয়ে মুখে বিধতেই ছিটকে এসে মুখ থুবড়ে পড়ল পাঁচ ঘাতকের পদতলে। রাগে চেঁচাতে চেঁচাতে খনিশ্রমিকরা সামনের দিকে বন্যার জলের মতো ধেয়ে আসতেই ছ-ঘরা রিভলবার থেকে পরপর ছ-বার তাদের মাথার ওপর দিয়ে গুলিবর্ষণ করল একজন ঘাতক। সঙ্গেসঙ্গে ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল শ্রমিকরা। যে যেদিকে পারলে দৌড়াতে শুরু করে দিলে, কেউ কেউ পাগলের মতো দৌড়ে পৌঁছে গেল ভারমিসায় নিজেদের বাড়িতে। শেষকালে কিছু সাহসী শ্রমিক পলায়মান কুলিদের ঠেলেঠুলে একজায়গায় জড়ো করে খনিতে ফিরে এল বটে, কিন্তু ততক্ষণে গুপ্তঘাতকরা যেন কুয়াশায় মিলিয়ে গেছে। এক-শো সাক্ষীর চোখের সামনেই ডবল খুন করেও তারা রয়ে গেল ধরা ছোঁয়ার বাইরে–কেউ তাদের মুখ দেখেনি–শনাক্তকরণও সম্ভব নয়।

    বাড়ি রওনা হল স্ক্যানল্যান আর ম্যাকমর্দো। ঝিমিয়ে পড়েছে স্ক্যানল্যান–খুন জিনিসটা এই প্রথম সে দেখল। আগে ভেবেছিল না-জানি কী মজা, এখন আর তা ভাবতে পারছে না। নিহত ম্যানেজারের স্ত্রীর বুকফাটা হাহাকার ওদের তাড়িয়ে নিয়ে গেল শহর পর্যন্ত। ম্যাকমুর্দো আত্মনিমগ্ন, নীরব। কিন্তু বিন্দুমাত্র সমবেদনা নেই সহচরের দুর্বলতার প্রতি।

    বার বার বলছে একটাই কথা, আরে, এ তো যুদ্ধ। ওদের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ। সুযোগ পেলেই মারব–সমস্ত শক্তি দিয়ে মারব।

    দারুণ উৎসব হয়ে গেল সেই রাতে ইউনিয়ন হাউসের লজ রুমে–মদ্যপানের উৎসব। এক ঢিলে দু-পাখি মারা হয়েছে। ক্রোহিল খনির ম্যানেজার আর ইঞ্জিনীয়ার বধ তো হয়েছেই, এ-তল্লাটের অন্যান্য হ্রাসকম্পিত কোম্পানির লাইনেও এতদিনে আনা গেল এই কোম্পানিটিকেও প্রত্যেককে ব্ল্যাকমেল করা হয়েছে, এবার একেও করা হবে। এ ছাড়াও লজের সুদূরপ্রসারী বিজয় গৌরবও নেহাত কম নয়। জেলা প্রতিনিধি বাইরে থেকে যেমন পাঁচজনকে এনে ভারমিসায় রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছে, তেমনি ভারমিসা লজেরও তিনজনকে তলব করা হয়েছিল স্টেকরয়ালে উইলিয়াম হে-কে নিধনের জন্যে। লোকটা গিলমারটন জেলার নামকরা এবং অত্যন্ত জনপ্রিয় খনি-মালিক। অজাতশত্ৰু পুরুষ–কারণ অন্নদাতা হিসেবে অতুলনীয়। একটা অপরাধ তিনি করেছেন। কাজে নৈপুণ্যর ওপর চাপ দিয়েছেন। গাফিলতির দায়ে কয়েকজনকে ছাঁটাই করেছেন। ঘরের দরজায় কফিন নোটিশ ঝুলিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও যখন আক্কেল হয়নি তখন সুসভ্য, স্বাধীন এই সমাজে তার মরা ছাড়া আর পথ ছিল না। রায় বেরিয়েছিল প্রাণদণ্ডের।

    জল্লাদ গিয়ে দিয়ে এসেছে সেই প্রাণদণ্ড। দলের নেতা হয়ে গিয়েছিল টেড বড়ইন–এখন সে-সম্মানে বসে আছে বডিমাস্টারের পাশে। মুখ টকটকে লাল, চোখ রাঙা–সারারাত না-ঘুমিয়ে মদ খাওয়ার লক্ষণ। দুই সঙ্গীকে নিয়ে সে সারারাত কাটিয়েছে পাহাড়ে পাহাড়ে। চুল উশকোখুশকো, পোশাক অবিন্যস্ত, খোলা প্রকৃতির দৌরাত্মের ছাপ ফেলেছে সর্বাঙ্গে। কিন্তু যুদ্ধ জয় করে এসে এমন অভ্যর্থনা আর কোনো কমরেড পায়নি। একই কাহিনি বার বার শুনেও তৃপ্তি হচ্ছে না কারুর, হাসি উল্লাসে ফেটে পড়ছে প্রত্যেকেই। ঘাতক দল দাঁড়িয়েছিল একটা খাড়া পাহাড়ের চূড়ায়। রাত হতেই প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত ব্যক্তি ঘোড়ায় চড়ে বাড়ি ফিরছিল সেই পথে। ঠান্ডায় এমন জমে গিয়েছিল বেচারা যে পিস্তলে হাত পর্যন্ত দিতে পারেনি। এরা তাকে টেনে নামিয়ে পর-পর গরম গুলি ঢুকিয়েছে বুকের মধ্যে।

    তিনজনের কেউই তাকে চেনে না। কিন্তু নরহত্যার মধ্যে যে অন্তহীন নাটক আছে, সেই নাটকীয়তা দিয়ে গিলমারটন স্কোরারস-দের বুঝিয়ে দেওয়া গেল ভারমিসাতেও কাজের লোক আছে। খুন-খারাপির ব্যাপারে তাদের ওপরেও ভরসা রাখা যায়। এই সময়ে একটা অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে। মনের সুখে নিস্পন্দ দেহের মধ্যে রিভালবারের সবক-টা গুলি ঢুকিয়ে দিতে যখন ওরা মশগুল, ঠিক সেই সময়ে একটা লোক তার বউকে নিয়ে এসে পড়ে সেখানে। তৎক্ষণাৎ তাদেরও গুলি করার কথা উঠেছিল। কিন্তু যেহেতু তারা খনির সঙ্গে যুক্ত নয়, নিরীহ মানুষ তাই স্রেফ হুমকি দিয়ে পথ দেখতে বলা হয় দু-জনকে চেঁচামেচি করলে ফলটা ভালো হবে না। তারপর এরা গা ঢাকা দেয় পাহাড়ে। ফার্নের আর গাদ স্কুপের কিনারা থেকেই শুরু হয়েছে বন্য প্রকৃতি। সেখানকার উদ্দামতায় হারিয়ে যায় প্রতিহিংসা পাগল মহান তিন নরঘাতক পাথর কঠিন অন্নদাতাদের হৃদয় কাঁপানোর জন্যে রক্তাক্ত লাশটা পড়ে থাকে শুধু পাহাড়ের গায়ে।

    তাই বিজয়োৎসবে মত্ত হয়েছে স্কোরারস-রা। দিনটা স্মরণীয় তাদের কাছে। আগের চাইতেও মরণের ছায়া আরও গাঢ় হয়েছে সারাউপত্যকায়–কুটিল হয়েছে আতঙ্কমেঘ। কিন্তু সেনাপতিরা ঝোপ বুঝে কোপ মারে মনের মতো মুহূর্ত পেলে আক্রমণ দ্বিগুণবেগে চালিয়ে যায়–শত্রু যাতে সামলে নেওয়ার ফুরসত না-পায়। বস ম্যাকগিন্টিও পাকা সেনাপতি। রণক্ষেত্রের দৃশ্যটা মনের চোখে দেখে নিয়ে পথের কাঁটাদের ওপর নতুন আঘাত হানবার পরিকল্পনা ঠিক করে নিল তখুনি। তার চিন্তাকুটিল বিদ্বেষ-বিষে আচ্ছন্ন ভয়ংকর চাহনি যার ওপর পড়ে তার আর রক্ষে নেই। সেই রাতেই প্রায় মাতাল স্যাঙাতরা বিদেয় নিলে পর ম্যাকমুর্দোর বাহু স্পর্শ করে ডেকে নিয়ে গেল ভেতরের ঘরে–এই ঘরেই প্রথম সাক্ষাৎ ঘটেছিল দু-জনের।

    বললে, ছোকরা, তোমার উপর্যুক্ত একটা কাজ পাওয়া গেছে। কাজটা তোমাকে নিজের হাতে করতে হবে।

    এ তো গর্বের কথা, জবাব দিলে ম্যাকমুর্দো।

    ম্যানডাস আর রিলি–এই দু-জনকে সঙ্গে নেবে তুমি। চাকরিতে এদের ধমকানো হয়েছে–চাকরি যেতে পারে এমনি হুমকি দেওয়া হয়েছে। চেস্টার উইলকক্সের লাশ না-ফেলা পর্যন্ত এ-তল্লাটে কাজের কাজ কিছুই করা হচ্ছে না–কয়লাখনি অঞ্চলের প্রত্যেকটা লজ তোমাকে বাহাদুর বলবে এ-কাজ যদি করতে পারো।

    আমার সাধ্যমতো আমি করব। লোকটাকে কোথায় গেলে পাওয়া যাবে?

    দাঁতের ফাঁক থেকে আধপোড়া, আধচোষা অষ্টপ্রহরের সঙ্গী চুরুটটা সরিয়ে নিয়ে নোট বইয়ের ছেড়া পাতায় নকশা আঁকতে লাগল ম্যাকগিন্টি।

    চেস্টার উইলকক্স হল আয়রন ডাইক কোম্পানির চিফ ফোরম্যান। একের নম্বরের উঁদে, লোহাপেটা শরীর, আগে যুদ্ধে ছিল, সারাগায়ে কাটার দাগ। লোকটাকে দু-বার খতম করতে গিয়ে দু-বারই ব্যর্থ হয়েছি–জিম কারনাওয়েকে জান দিতে হয়েছে এইজন্যে। এবার তোমার পালা। ম্যাপ খুলে আয়রন ডাইক ক্রসরোডের মুখে এই যে বাড়িটা দেখছ, এইখানে ও থাকে। নিরালা বাড়ি। ধারেকাছে কেউ থাকে না। দিনের বেলা সুবিধে করতে পারবে না। কাছে পিস্তল রাখে, ভীষণ তাড়াতাড়ি সোজাসুজি গুলি চালায় জিজ্ঞেস পর্যন্ত করে না। কিন্তু রাত্রে তোমার পোয়াবারো। বউ, তিন ছেলে-মেয়ে আর একজন ঠিকে মেয়েছেলে ছাড়া বাড়িতে কেউ থাকে না। বাছবিচার করলে চলবে না। হয় সবাইকে ঘায়েল করতে হবেনয় সবাইকে ছেড়ে দিতে হবে। সদর দরজায় বোমার বারুদ রেখে পলতেতে আগুন ধরিয়ে দিলে—

    তার অপরাধ?

    বললাম না জিম কার্নাওয়েকে গুলি করেছে।

    গুলি করল কেন?

    আরে গেল যা! নিয়ে তোমার দরকার কী? রাতে বাড়িতে ঢুকেছিল কানাওয়ে–গুলি খেয়েছে সঙ্গেসঙ্গে। এর বেশি কিছু তোমার আমার জানার দরকার নেই। বদলা তোমাকে নিতে হবে।

    মেয়েছেলে দু-জন আর বাচ্চা তিনটের ওপরেও?

    নইলে ওকে তো ঘায়েল করতে পারবে না!

    কিন্তু ওরা কী দোষ করেছে? অবিচার হয়ে যাচ্ছে না?

    এ আবার কী কথা? রাজি নও মনে হচ্ছে?

    আস্তে, কাউন্সিলর, আস্তে। কী এমন বলেছি যা থেকে ধরে নিলেন বডিমাস্টারের হুকুম মানতে রাজি নই আমি? ন্যায়-অন্যায় বিচার করবেন আপনি।

    তাহলে যাচ্ছ?

    আলবত।

    কবে?

    দু-একটা রাত সময় দিন। বাড়িটা নিজের চোখে দেখে প্ল্যান করতে হবে তো। তারপর–

    ঠিক আছে, ম্যাকমুর্দোর সঙ্গে করমর্দন করে বলে ম্যাকগিন্টি। সব ভার তোমার ওপর ছেড়ে দিলাম। খবরটা আসার পর জানবে বিরাট উৎসব হবে তোমাকে নিয়ে। এইটাই হবে এ-অঞ্চলে আমাদের চরম আঘাত এরপর প্রত্যেকেই দেখবে পা জড়িয়ে ধরবে আমাদের।

    হঠাৎ-পাওয়া গুরুদায়িত্ব নিয়ে দীর্ঘক্ষণ গভীরভাবে চিন্তা করল ম্যাকমুর্দো। লাগোয়া একটা উপত্যকায় মাইল পাঁচেক দূরে নিরালা বাড়িতে থাকে চেস্টর উইকলক্স। সেই রাতে একলাই বেরিয়ে পড়ল তোড়জোড় করতে। ফিরে এল দিনের আলো মিলিয়ে যাওয়ার আগেই। পরের দিন কথা বললে দুই স্যাঙাতের সঙ্গে।

    ম্যানডার্স আর রিলি দু-জনেই উচ্চুঙ্খল ছোকরা যেন হরিণ শিকারে যাচ্ছে এমনি উকট উল্লাস দেখা গেল দু-জনেরই কথাবার্তায়। দু-রাত পরে শহরের বাইরে একত্র হল তিনজনে–সশস্ত্র প্রত্যেকেই একজনের হাতে একটা থলি ভরতি বোমা আর বারুদ। নিরালা বাড়িটায় পোঁছোল রাত দুটোয়। জোর হাওয়া বইছে, শুক্লপক্ষের চঁাদের ওপর দিয়ে ভেঁড়া মেঘ দ্রুত ভেসে যাচ্ছে। ব্লাডহাউন্ড কুত্তা থাকতে পারে আগেই জানা ছিল বলে পিস্তলের ঘোড়া তুলে এগোচ্ছে তিনজনে পা টিপে টিপে। কিন্তু ঘোড়া হাওয়ায় গোঁ-গোঁ শব্দ আর মাথার ওপর দুলন্ত ডালের শব্দ ছাড়া কোনো আওয়াজ নেই। সদর দরজায় পৌঁছে কান খাড়া করেও কোনো আওয়াজ পেল না ম্যাকমুর্দো। ভেতরে সব চুপচাপ। বারুদের থলি দরজায় ঠেস দিয়ে রেখে ছুরি দিয়ে ফুটো করল থলির গায়ে ঢুকিয়ে দিল পলতে। আগুন লাগিয়ে তিনজনে ছুটতে ছুটতে চলে এল বেশ খানিকটা তফাতে একটা নালির মধ্যে। তারপরেই ঘটল বিস্ফোরণ। কানের পর্দা যেন ফেটে চৌচির হয়ে গেল, গুর গুর দুমদাম শব্দে ভেঙে পড়তে লাগল গোটাবাড়িটা। আওয়াজ শুনেই বোঝা গেল কাজ হাসিল হয়েছে। সমিতির রক্ত-কলঙ্কিত ইতিহাসে এর চাইতে পরিচ্ছন্ন কাজের নজির আর নেই। কিন্তু হায়রে! এমন একটা সুপরিকল্পিত আর সুসংগঠিত অভিযানের শেষটার কিন্তু পাওয়া গেল একটি অশ্বডিম্ব! অন্যান্য হত্যাকাণ্ড দেখে হুঁশিয়ার হয়েছিল চেস্টার উইলকক্স, জানত তাকেও একদিন খতম করবে ঘাতকরা, তাই এমনই কপাল যে ঠিক আগের দিন সপরিবারে পালিয়েছে নিরাপদ অঞ্চলে রয়েছে পুলিশ পাহারায়। বোমার বারুদে গুঁড়িয়েছে শূন্য ভবন। যুদ্ধফেরত পুঁদে অফিসার আয়রন ডাইক খনিশ্রমিকদের নিয়মানুবর্তিতা শিখিয়ে চলেছে আগের মতোই।

    ম্যাকমুর্দো বলেছিল, ওকে আমার ওপর ছেড়ে দিন। যা করবার আমি করব। বছর ঘুরে গেলেও জানবেন ওর নিস্তার নেই।

    লজের প্রত্যেকে ভোটের মাধ্যমে প্রস্তাব অনুমোদন করেছিল এবং ম্যাকমুর্দোর প্রতি পূর্ণ আস্থা জ্ঞাপন করেছিল। কাজেই তখনকার মতো ব্যাপারটা ধামাচাপা পড়েছিল সেইখানে। কয়েক সপ্তাহ পরেই খবরের কাগজে একটা খবর বেরুল। ওত পেতে বসে ছিল গুপ্তঘাতক। উইলকক্সকে অতর্কিতে গুলি মেরেছে সে। এ-খবর যখন বেরুল, তখন কিন্তু সবাই জানত অর্ধসমাপ্ত কাজ শেষ করবার জন্যে হন্যে হয়ে ঘুরছে ম্যাকমুর্দো।

    ফ্রিম্যান-সমিতির কাজকারবারই এইরকম। কাজ সারবার পদ্ধতিও অদ্ভুত। এইভাবেই স্কোরারসরা সুদীর্ঘকাল ধরে আতঙ্ক বিস্তার করে চলেছে বিশাল এই উপত্যকায়। প্রতিটি মানুষকে শিহরিত রেখেছে তাদের ভয়াবহ অস্তিত্বর রক্ত-হিম-করা বিজ্ঞপ্তি মারফত। এদের রুধিররঞ্জিত কাহিনি দিয়ে আরও কয়েক পৃষ্ঠা কলঙ্কিত করার আর দরকার আছে কি? এদের কর্মকাণ্ড আর কুকর্মের নায়কদের সম্বন্ধে যথেষ্ট বলা কি হয়নি? ইতিহাসে লেখা হয়ে গেছে কীর্তিকলাপ। কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ সমন্বিত বহু নথিপত্র পাওয়া যাবে যদি খোঁজা যায়। এই নথি পড়লেই জানা যাবে পুলিশম্যান হান্ট আর ইভান্সকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে মারার মর্মন্তুদ কাহিনি। ঘটনাটা ঘটেছিল ভারমিসায়–প্ল্যান করেছিল লজের নরমেধ যজ্ঞের সেনানীরা। সোসাইটির দু-জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করছিল পুলিশ দু-জন। তাই সম্পূর্ণ অসহায় নিরস্ত্র অবস্থায় ডবল নরহত্যা করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে লজের নরপিশাচরা! এই নথিপত্রেই পাওয়া যাবে মিসেস লারবিকে গুলি করে মারার লোমহর্ষক কাহিনি। ভদ্রমহিলা তখন শুশ্রুষা করছিলেন অসুস্থ স্বামীকে। বস ম্যাকগিন্টির হুকুমে প্রায় পিটিয়ে হত্যা করা হয় স্বামী ভদ্রলোককে। সেই শীতেই পর-পর আরও কয়েকটি নরহত্যায় শিউরে ওঠে সমস্ত উপত্যকা। প্রবীণ জেনকিন্সকে খতম করার পরেই শেষ করা হয় তার ভাইকে, মেরে হাড়গোড় ভেঙে লাশ বিকৃত করে ফেলা হয় জেমস মুরডকের, বোমা বিস্ফোরণে শেষ করে দেওয়া হয় গোটা স্ট্যাপহাউস পরিবারকে, নৃশংসভাবে খুন করা হয় স্টেনড্যালসকে। আতঙ্কের কালোছায়া আরও গাঢ়ভাবে চেপে বসে ভ্যালি অফ ফিয়ারে; শীত গেল, এল বসন্ত। ফলে ফুলে ভরে উঠল গাছ, ঝিরঝির ধারায় বয়ে চলল নিঝরিণী। লোহার থাবার মধ্যে থেকেও আশার বাণী নিয়ে জাগ্রত হল প্রকৃতি কিন্তু তিলমাত্র আশার অনুরণন জাগল না আতঙ্ক ছায়ায় ম্রিয়মাণ নরনারীর অন্তরে। ১৮৭৫ সালের গ্রীষ্মের শেষে মাথার ওপরে ঝুলন্ত মেঘ যে নৈরাশ্য আর তমিস্র বয়ে এনেছিল তেমনটি আর কখনো দেখা যায়নি অভিশপ্ত সেই উপত্যকার।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleশার্লক হোমস সমগ্র ২ – অনুবাদ : অদ্রীশ বর্ধন
    Next Article When the World Screamed – Arthur Conan Doyle

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }