Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    শার্লক হোমস সমগ্র ২ – অনুবাদ : অদ্রীশ বর্ধন

    লেখক এক পাতা গল্প1414 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    পান্না-মুকুটের আশ্চর্য অ্যাডভেঞ্চার

    হোমস, জানলা দিয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে বললাম, একটা বদ্ধ পাগল আসছে!

    ড্রেসিং গাউনের পকেটে হাত পুরে কুঁড়ের বাদশার মতো উঠে এল শার্লক হোমস। ফেব্রুয়ারি মাস। সবে সকাল হয়েছে। রাস্তায় গত রাতের বরফ রোদুরে ঝকঝক করছে। বেকার স্ট্রিট অবশ্য অনেকটা সাফ হয়ে এসেছে। লোকজন কেউ নেই–পিচ্ছিল ফুটপাথের বিচিত্র ব্যক্তিটি ছাড়া।

    লোকটার চেহারা এবং জামাকাপড়ে বনেদিয়ানার ছাপ। কিন্তু কখনো হাত ছুড়ছেন, কখনো ছুটছেন, কখনো হোঁচট খাচ্ছেন, কখনো মাথা নাড়ছেন, কখনো মুখভঙ্গি করছেন। পাগল আর কাকে বলে।

    বাড়ির নম্বর দেখতে দেখতে আসছেন দেখছি, বললাম আমি।

    আমার কাছেই আসছেন, সোৎসাহে হাত ঘষে বললে হোমস।ওই শোনো ঘণ্টা বাজছে।

    মুখের কথা ফুরোল না। বাড়ি কেঁপে উঠল সদর দরজার প্রচণ্ড ঘণ্টাধ্বনিতে। ক্ষণপরেই হাঁপাতে হাঁপাতে সিঁড়ি বেয়ে উঠে এসে ঢুকলেন ভদ্রলোক। ঢুকেই এমনভাবে মাথার চুল ছিড়তে লাগলেন, দেওয়ালে মাথা কুটতে লাগলেন যে আমরা ধরে না-ফেললে একটা রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে যেত।

    চেয়ারে জোর করে বসিয়ে হোমস বললে, সুস্থির হোন। খুব বিপদে পড়ে এসেছেন বুঝতে পারছি।

    বিপদ বলে বিপদ! মি. হোমস, আমাকে পাগল ঠাউরেছেন নিশ্চয়। কিন্তু আমার মাথা কাটা যেতে বসেছে। কলঙ্কের যে আর শেষ থাকবে না। অত্যন্ত সম্রান্ত একটি মানুষকেও বড়ো ভয়ংকরভাবে ভুগতে হবে এইজন্যে।

    দয়া করে আপনার পরিচয়টা দিন।

    আমি আলেকজান্ডার হোল্ডার, থ্রেডনীডল স্ট্রিটের হোল্ডার অ্যান্ড স্টিভেনশন ব্যাঙ্কের সিনিয়র পার্টনার।

    নামটা পরিচিত। লন্ডন শহরের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাইভেট ব্যাঙ্কের অংশীদারের নাম জানে না, এমন লোক এ-শহরে খুব কমই আছে। কিন্তু এমন কী কাণ্ড ঘটেছে যে মাথার চুল ছিঁড়ছেন এহেন বিশিষ্ট নাগরিক?

    উন্মুখ হয়ে রইলাম ব্যাঙ্কারের দুর্দৈব শোনবার জন্যে।

    উনি বললেন, ব্যাপারটা এত জরুরি যে পুলিশের কাছে আপনার নাম শুনেই পাতাল রেলে চলে এসেছি। স্টেশন থেকে গাড়িতে না-এসে হেঁটে আসছি হড়হড়ে রাস্তায়, পাছে গাড়ি আস্তে চলে–এই ভয়ে। তাই হয়তো হাঁপিয়ে গেছি।

    আপনারা তো জানেন ব্যাঙ্কের লাভ বাড়াতে হলে টাকা খাটাতে হয়। দামি দামি জিনিস বাঁধা রেখে অনেক খানদানি মানুষই আমাদের কাছ থেকে টাকা ধার নেন।

    গতকাল সকালে আমার কাছে এলেন এমন এক ব্যক্তি যিনি শুধু ইংলন্ডেই প্রাতঃস্মরণীয় নন, সারাপৃথিবী তাকে চেনে! নামটা নাই-বা বললাম।

    উনি এসেই আমার কাছে পঞ্চাশ হাজার পাউন্ড° ধার চাইলেন। বললেন, দেখুন, এ-টাকা আমি বন্ধুবান্ধবের কাছে চাইলেও পেতে পারি কিন্তু তাতে আমার মানসম্মান আর থাকবে না।

    আমি বললাম, কিন্তু আমার নিজের তত টাকা নেই। ব্যাঙ্ক থেকে দিতে হলে যে কিছু একটা বাঁধা রাখতে হবে।

    উনি তখন কালো মরক্কো চামড়ার একটা বাক্স দেখিয়ে বললেন, পান্না মুকুটের নাম নিশ্চয় শুনেছেন?

    নিশ্চয়! ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সম্পদ এই পান্না মুকুট।

    বাক্সটা খুলে মূল্যবান সেই মুকুট বার করে উনি বললেন, এতে উনচল্লিশটা মস্ত আকারের পান্না আছে। এ ছাড়া সোনা কতখানি আছে, দেখতেই পাচ্ছেন। সব মিলিয়ে এর যা দাম, তার অর্ধেক ধার চাইছি আপনার কাছে। সুদসমেত টাকা ফিরিয়ে দেব চারদিন পরে সামনের সোমবার। ওইদিন কিছু টাকা হাতে আসবে আমার। এই বন্ধকিতে চলবে?

    কী যে বলেন!

    মিস্টার হোল্ডার, মনে রাখবেন, এ-মুকুট জাতীয় সম্পত্তি। একটা পান্নাও যদি খোয়া যায়, দুনিয়া ছুঁড়ে এলেও ঠিক ওই জিনিসটি আর পাওয়া যাবে না। কাজেই কথাটা যেন এ-ঘরের বাইরে আর না-যায়। সোমবার সকালে আমি নিজেই আসব।

    ক্যাশিয়ারকে ডেকে হাজার পাউন্ডের পঞ্চাশটা নোট নিতে হুকুম দিলাম। উনি যাওয়ার পর মুকুটটা আমার প্রাইভেট ভল্টে বন্ধ করে রাখলাম। একটু ভয়ও হল। অমূল্য এই সম্পদের দায়িত্ব

    -নিলেই ভালো হত।

    সন্ধে হল। বাড়ি ফেরার সময়ে মুকুটটা সঙ্গে করে নিয়ে এলাম। ব্যাঙ্ক ডাকাতি আকছার হচ্ছে। তাই দিনকয়েকের জন্যে এহেন বস্তুকে আমার কাছে রাখব মনস্থ করলাম।

    আমার বাড়িতে চাকরবাকরদের মধ্যে তিনজন ঝি আছে। এদের মধ্যে লুসি পার বলে যে-মেয়েটি, তাকে নিয়েই আমার যত দুশ্চিন্তা। মেয়েটির কাজকর্ম ভালো আবার দেখতেও ভালো। ফলে, জনকয়েক নাগর দিনরাত ঘুর ঘুর করে গাড়ির আনাচেকানাচে। চাকরবাকর সবাই কিন্তু শোয় বাড়ির বাইরে।

    আমি বিপত্নীক। একমাত্র ছেলে আর্থার বখে গেছে। লোকে বলে, আশকারা দিয়ে আমিই তাকে একটা বাঁদর তৈরি করেছি। গোঁয়ার, উড়নচণ্ডী, রেস খেলা, জুয়ো খেলা–সব গুণই তার আছে। বদ সঙ্গী তার অনেক–এদের মধ্যে স্যার জর্জ বার্নওয়েল লোকটি ওর প্রাণের বন্ধু যদিও তিনি বয়সে বড়ো! এঁর খপ্পর থেকে আর্থার বেরোতে পারছে না। এইসব কারণেই আমার কারবারে ওকে আমি বিশ্বাস করতে পারি না।

    আর্থারকে সিধে করে দিতে পারত আমার ভাইঝি মেরি। ভাই মারা যাওয়ার পর থেকে সে আমার বাড়িতেই মানুষ হয়েছে আমারই মেয়ের মতো। বড়ো ভালো মেয়ে। রূপে লক্ষ্মী, গুণে সরস্বতী। আর্থার তাকে দু-বার বিয়ে করতে চেয়েছে–দু-বারই সে নারাজ হয়েছে। অথচ বিয়েটা হয়ে গেলে আর্থারকে সৎপথে টেনে আনতে পারত মেরি। এই একটি ব্যাপারে মেরি আমার মনে দাগা দিয়েছে। এখন অবশ্য জল এতদূর গড়িয়েছে যে আর কিছুই করার নেই।

    মুকুটটা বাড়িতে আসবার পর এই নিয়েই কথা হচ্ছিল খাওয়ার টেবিলে। লুসি পার কথা শুরুর আগেই চলে গিয়েছিল ঘর ছেড়ে দরজা বন্ধ করেছিল কি না খেয়াল করিনি।

    মুকুট আমার কাছে, এইটুকুই কেবল বলেছিলাম আর্থার আর মেরিকে বাঁধা রেখে গেছেন যিনি, তার নামটা বলিনি।

    শুনেই লাফিয়ে উঠল আর্থার আর মেরি দুজনেই। দেখবার জন্যে আবদার ধরল। আমি রাজি হলাম না।

    আর্থার তখন জিজ্ঞেস করল, রেখেছ কোথায় মুকুটটা?

    আমার আলমারিতে।

    ও বললে, চুরি না হয়ে যায়।

    আমি বললাম, চাবি দেওয়া আছে।

    ও বলল, গুদোম ঘরের চাবি দিয়ে ছেলেবেলায় আমি নিজেই ও-আলমারি কতবার খুলেছি। পুরোনো আলমারি তো একটা-না-একটা চাবি ঠিক লেগে যায়।

    আর্থারের কথাবার্তাই এইরকম।

    রাত্রে মুখখানা কালো করে আমার কাছে এল আর্থার। দু-শো পাউন্ড ধার চাইল। না-দিলে নাকি ক্লাবে মাথা কাটা যাবে! ভীষণ রেগে হাঁকিয়ে দিলাম তক্ষুনি। এক মাসে তিনবার এইভাবে টাকা নিয়ে গেছে–আর একটি পয়সাও নয়।

    মুখ অন্ধকার করে ও বলে গেল, কিন্তু বাবা, টাকাটা আমাকে জোগাড় করতেই হবে–যে করেই হোক।

    আলমারি খুলে দেখে নিলাম পান্না-মুকুট ঠিক জায়গায় আছে কি না। তারপর নিজেই বেরোলাম বাড়ির সব দরজা জানলা বন্ধ হয়েছে কি না দেখবার জন্যে। কাজটা মেরির–কিন্তু কাল রাতে আমি নিশ্চিন্ত হতে পারছিলাম না।

    হল ঘরে এসে দেখি জানলা খুলে কী দেখছে মেরি। আমি যেতেই জানলা বন্ধ করে দিয়ে বললে, কাকা, লুসিকে কি বাইরে যেতে বলেছিলে?

    না তো।

    কিন্তু এইমাত্র খিড়কি দরজা দিয়ে বাড়ি ঢুকল লুসি। নিশ্চয় কারো সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। খুব খারাপ। অভ্যেসটা বন্ধ করা দরকার!

    কালকে তুমি কড়কে দিয়ে। দরজা জানলা সব বন্ধ হয়েছে?

    হ্যাঁ বাবা।

    ঘরে চলে এলাম। ঘুমিয়ে পড়লাম।

    ঘুম আমার এমনিতেই পাতলা, তার ওপর মন উচাটন হওয়ায় ঘুম গাঢ় হয়নি মোটেই। আচমকা তাই কোথায় যেন একটা আওয়াজ শুনে ঘুম ছুটে গেল আমার। রাত তখন দুটো। পুরো ঘুম ভাঙার আগেই থেমে গেল শব্দটা কোথায় যেন একটা জানলা বন্ধ হওয়ার আওয়াজ সেটা। কান খাড়া করে রইলাম। পাশের ঘরে শুনলাম পা টিপে টিপে চলার আওয়াজ।

    বুকটা ধড়াস করে উঠল তৎক্ষণাৎ। খাট থেকে নেমে দৌড়ে গেলাম পাশের ঘরে। দেখলাম গ্যাসের আলোয় মুকুট হাতে নিয়ে গায়ের জোরে বেঁকানোর চেষ্টা করছে আর্থার। পরনে শার্ট আর প্যান্ট।

    দেখেই বিকট চেঁচিয়ে উঠেছিলাম। চমকে উঠল আর্থার। হাত ফসকে মুকুট পড়ে গেল মেঝেতে। তুলে নিয়ে দেখলাম তিনটে পান্নাসমেত একটা কোণ উধাও।

    চিৎকার করে বলেছিলাম, রাসকেল কোথাকার! আমার মাথা হেঁট করে ছাড়লি শেষকালে! ভাঙলি এমন জিনিসকে ! চোর! কোথায় গেল পান্না তিনটে?

    আমি চোর? গলাবাজি করে বললে আর্থার।

    আলবাত তুই চোর, কুলাঙ্গার কোথাকার!

    না, না, না। কিছু চুরি যায়নি।

    আবার মুখের ওপর কথা! তিনটে পান্না ভেঙে নিয়েছিস, আরও ভাঙতে যাচ্ছিলিস–নিজের চোখে দেখেছি।

    বাবা, যা মুখে আসছে বলে যাচ্ছ। কিন্তু আর নয়। কালই এ-বাড়ি ছেড়ে আমি চলে যাব।

    বাড়ি ছেড়ে যাবি? তার আগে তোকে পুলিশে দোব!

    দিতে পার। কিন্তু আমার পেট থেকে একটা কথাও বার করতে পারবে না। দেখি পুলিশ চুরির কিনারা করতে পারে কি না। কথাগুলো আর্থার বলল বেশ আবেগের সঙ্গে যা তার ধাতে নেই।

    চেঁচামেচি শুনে মেরি দৌড়োতে দৌড়োতে ঢুকল আমার ঘরে। পান্না মুকুট আর আর্থারকে দেখেই বুকফাটা চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল মেঝেতে। চাকরবাকরও দৌড়ে এল তৎক্ষণাৎ। পুলিশ ডাকিয়ে আনলাম ওদের দিয়ে। ইনস্পেকটর আসতেই আর্থার বললে, সত্যিই কি আমি তাকে পুলিশের হাতে দোব? আমি বললাম–নিশ্চয়। পান্না মুকুট দেশের সম্পত্তি প্রকাশ্যভাবেই চুরির তদন্ত হোক।

    আর্থার তখন মিনতি করে বললে, পাঁচ মিনিটের জন্যে বেরোতে দেবে? তাতে তোমার ভালোই হবে জানবে।

    না। হয় পালাবি, নয় চোরাই মাল লুকিয়ে ফেলবি। তার চেয়ে বরং বল কোথায় রেখেছিস। আমার মুখে চুনকালি পড়বে, দেশ জুড়ে হইচই পড়বে, আমার চাইতে অনেক উঁচু মহলের এক ভদ্রলোকের মানসম্মান ধুলোয় লুটোবে। আর্থার, এখনও বল কোথায় রেখেছিস কেলেঙ্কারি বাড়াসনি।

    মুখ ফিরিয়ে নিল আর্থার। বুঝলাম সোজা আঙুলে ঘি উঠবে না। সঙ্গদোষে ও এখন পাকা বদমাশ। পুলিশকে বললাম তাদের যথাকৰ্তব্য করতে। সারাবাড়ি তন্নতন্ন করে খোঁজা হল। ওর ঘর তল্লাশ করা হল, দেহ সার্চ করা হল–কিন্তু পান্না তিনটে আর পাওয়া গেল না। ভয় দেখিয়েও আর্থারের পেট থেকে কিছু বের করা গেল না! ওকে হাজতে পাঠিয়ে দৌড়োতে দৌড়োতে আসছি আপনার কাছে। মি. হোমস, আপনি আমাকে বাঁচান। এক হাজার পাউন্ড পুরস্কার ঘোষণা করেছি রত্ন উদ্ধারের জন্যে। এ ছাড়াও আপনার পারিশ্রমিক আমি দোব। আমাকে বাঁচান! মাথা চেপে ধরে গোঙাতে লাগলেন ব্যাঙ্কার ভদ্রলোক।

    ভুরু কুঁচকে আগুনের দিকে তাকিয়ে রইল শার্লক হোমস।

    তারপর বললে, বাড়িতে বাইরের লোক কীরকম আসে?

    আমার পার্টনারের ফ্যামিলি আর আর্থারের বন্ধু স্যার জর্জ বার্নওয়েল ছাড়া কেউ আসে না। বাওয়েল ইদানীং ঘনঘন আসছেন।

    সামাজিকতা রাখেন কীরকম? পাঁচজনের সঙ্গে মেলামেশা?

    ওটা আর্থার করে। আমি আর মেরি বাড়িতেই থাকি।

    কমবয়েসি মেয়ের পক্ষে অভ্যেসটা একটু অস্বাভাবিক।

    মেরি খুব শান্ত স্বভাবের মেয়ে, বয়সও খুব কম নয়। এই তো চব্বিশে পড়েছে।

    আপনার কথা শুনে মনে হল, ঘটনাটায় প্রচণ্ড শক পেয়েছে মেরি।

    ভীষণ আঘাত পেয়েছে। আমার চেয়েও বেশি।

    আপনাদের দুজনেরই বিশ্বাস আর্থারই দোষী?

    নিজের চোখে দেখেছি তাকে পান্না মুকুট হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে।

    সেটা কিন্তু অকাট্য প্রমাণ নয়। মুকুটের বাদবাকি অংশে চোট লেগেছে?

    বেঁকে গেছে।

    বাঁকা অংশ সিধে করার চেষ্টা করছিল বলে মনে হয়নি আপনার?

    অতই যদি সাধু হবে তো বলতেই পারত।

    তা ঠিক। এটাও ঠিক যে দোষ করে থাকলে এক-আধটা মিথ্যেও তো বলতে পারত বলল না কেন? ওর ওই চুপ করে থাকাটার মানে অনেক গভীর। যে-শব্দ শুনে আপনার ঘুম ভেঙেছে, সে-শব্দ কীসের পুলিশ কি তা ধরতে পেরেছে?

    ওদের মতে, আওয়াজটা আর্থারের শোবার ঘরের দরজা বন্ধ করার শব্দ।

    গল্প হিসেবে মন্দ নয়। রাতদুপুরে বাড়িসুদ্ধ লোককে জাগিয়ে দেওয়ার মতো আওয়াজ করে দরজা বন্ধ করল এমন একটা লোক যে কিনা চুপিসারে চুরি করতে চাইছে রত্ন মুকুট। পান্না তিনটের অদৃশ্য হওয়া সম্পর্কে কী বলে পুলিশ?

    সারাবাড়ির তক্তা পর্যন্ত খুলে দেখেছে কোথাও লুকিয়ে রাখা হয়েছে কি না।

    বাড়ির বাইরে দেখবার কথা একবারও ভেবেছে কি?

    নিশ্চয়। তন্নতন্ন করে দেখা হয়েছে বাগান।

    দেখুন মশায়, আপনারা যা ভেবেছেন, এ-কেস ততটা সোজা নয়। বেশ জটিল। আপনার ছেলে খাট থেকে নেমে ভীষণ ঝুঁকি নিয়ে এল আপনার ড্রেসিং রুমে, আলমারি খুলে পান্না মুকুট বের করে গায়ের জোরে তা থেকে তিনটে পান্না খসিয়ে নিয়ে এমন একটা জায়গায় লুকিয়ে রাখল যার সন্ধান কেউ পাচ্ছে না আবার ফিরে এল ছত্রিশটা পান্না সমেত মুকুট হাতে ধরা পড়বার বিপদের ঝুঁকি নিয়ে ড্রেসিং রুমে। মশায়, সম্ভব বলে মনে হয় কি?

    তা ছাড়া আর কী হতে পারে তাহলে বলুন! নিঃসীম নৈরাশ্যে যেন ভেঙে পড়লেন বেচারি ব্যাঙ্কার। উদ্দেশ্য যদি মহৎ থাকে তো খুলে বলল না কেন?

    সেইটাই এখন আমাদের দেখতে হবে, বললে হোমস। চলুন, আপনার বাড়ি যাওয়া যাক।

     

    বাড়িটা চৌকোনো, সাদা পাথরের। সামনে বরফ ঢাকা লন। দু-দিকে দুটো লোহার ফটক। ডান দিকে আর বাঁ-দিকে দুটো গলি। বাঁ-দিকেরটা গেছে আস্তাবলের দিকে–লোকজনের যাতায়াত সেখানে কম। ডান দিকেরটা গেছে বাগানের দিকে–এদিকেই বাইরের লোক চলে বেশি। হোমস এই গলি দিয়ে বাগানে গেল তো গেলই কাঁহাতক আর দাঁড়িয়ে থাকা যায়, মি. হোল্ডার আমাকে নিয়ে বসলেন খাবার ঘরে। এমন সময়ে একজন সুন্দরী তরুণী ঢুকল ঘরে। বিষণ্ণ মুখটি ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছে। সজল কালো চোখেও বিষাদ ফুটে বেরোচ্ছে। নীরক্ত ঠোঁট। মুখ দেখেই বোঝা যায় ভেতরে ভেতরে একেবারেই ভেঙে পড়েছে মেয়েটি। কিন্তু ধাত শক্ত বলেই বাইরে অতটা প্রকাশ করছে না।

    ঘরে ঢুকেই সোজা গেল মি. হোল্ডারের কাছে। মাথায় হাত বুলিয়ে বললে, কাকা, আর্থারকে ছেড়ে দিতে বলেছ?

    দুর! আগে ফয়সালা হোক–তারপর।

    কিন্তু আমি জানি সে নির্দোষ।

    তাহলে মুখে কথা ফুটছে না কেন?

    পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছ বলে হয়তো ঘা খেয়েছে মনে।

    অকারণে তো দিইনি। মুকুট ওর হাতেই দেখেছি আমি।

    হাতে নিয়ে দেখছিল। ওকে ছাড়িয়ে আনো, কাকা। ও নির্দোষ।

    মেরি, পান্না তিনটে না-পাওয়া পর্যন্ত আর্থারকে ছাড়া হবে না। লন্ডন থেকে বড়ো গোয়েন্দা নিয়ে এনেছি রত্ন উদ্ধারের জন্যে। যতক্ষণ না পাচ্ছি, কাউকে ক্ষমা করব না।

    ইনি?

    না, এঁর বন্ধু। এখন পাশের গলি দেখছেন।

    গলি দেখছেন? ভুরু দুটো ধনুকের মতো বেঁকিয়ে ফেলল সুন্দরী।গলিতে কী আছে?–এই যে, এসে গেছেন। আপনিই লন্ডন থেকে এসেছেন? আমার ভাই যে নির্দোষ, প্রমাণ করতে পারবেন তো? আমি যে জানি সে কোনো দোষ করেনি।

    আমিও তাই বিশ্বাস করি, মিস হোল্ডার, ঘরে ঢুকে পা ঠুকে ঠুকে জুতো থেকে বরফ ঝাড়তে ঝাড়তে বললে হোমস। সেইজন্যেই দু-একটা প্রশ্ন করতে চাই আপনাকে।

    স্বচ্ছন্দে করুন–তাতে যদি আমার ভাই খালাস পায়, ক্ষতি কী?

    কাল রাতে আপনি কোনো আওয়াজ শোনেননি?

    না। কাকার চেঁচামেচি শুনে দৌড়ে আসি–তার আগে কিছু শুনিনি।

    রাতে সব জানলা বন্ধ করেছিলেন তো?

    নিশ্চয়।

    আজ সকালেও সব বন্ধ ছিল।

    হ্যাঁ।

    এ-বাড়ির একজন দাসীর একটা মনের মানুষ আছে শুনেছি। কাল রাতে আপনিই খবরটা দিয়েছিলেন কাকাকে বাইরে বেরিয়েছিল নাকি তার সঙ্গে দেখা করতে।

    রত্নমুকুটের কথা কাকা ওর সামনেই বলে ফেলেছিল।

    তাই নাকি? তার মানে আপনার ধারণা মনের মানুষটিকে খবরটা পৌঁছে দেয় এই দাসী–মুকুট সরায় দুজনে যোগসাজশ করে?

    মি. হোল্ডার বলে উঠলেন, ধারণা-টারণার কোনো দরকার আছে কি? আমি নিজের চোখে দেখেছি আর্থারকে মুকুট নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে।

    হোমস বললে, আর্থারের কথা পরে হবে মি. হোল্ডার। মিস হোল্ডার, মেয়েটি বাড়ি ফিরেছিল কি রান্নাঘরের দরজা দিয়ে?

    হ্যাঁ। দরজা বন্ধ হয়েছে কি না দেখতে গিয়ে দেখলাম বাড়ি ফিরছে টিপে টিপে। লোকটাকেও আবছাভাবে দেখেছিলাম অন্ধকারে।

    চেনেন তাকে?

    চিনি। সবজি বেচে। নাম, ফ্রান্সিস প্রসপার।

    দরজার একটু বাঁ-দিক ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ছিল–রাস্তার ওপর?

    হ্যাঁ।

    একটা পা কাঠের?

    সুন্দরীর ভাবব্যঞ্জক কালো চোখে ভয়ের ছায়া পড়ল যেন।

    হাসল। বলল, আপনি জাদুকর নাকি? জানলেন কী করে?

    হোমস কিন্তু হাসল না। শীর্ণ মুখটি উদ্দীপ্ত হয়ে রইল আতীব্র আগ্রহে।

    বলল, বাইরেটা আর একবার দেখবখন। তার আগে নীচের তলার জানলাগুলো দেখে নিই–তারপর দেখব ওপরতলা।

    দ্রুত পদক্ষেপে এক জানলা থেকে আর এক জানলায় সরে গেল হোমস। থমকে দাঁড়াল বড়ো জানালাটার সামনে এখান থেকে দেখা যায় পাশের সরু গলি। পকেট থেকে ম্যাগনিফাইং লেন্স বের করে তন্ময় হয়ে দেখতে লাগল গোবরাট।

    তারপর বললে, চলুন এবার ওপরে যাওয়া যাক।

    ব্যাঙ্কারের ড্রেসিং রুমের আসবাবপত্র অতি সাধারণ। আয়না আলমারি আর কার্পেট। আলমারির তালাটার দিকে চোখ পাকিয়ে চেয়ে রইল হোমস।

    বলল, খোলার চাবি কোনটা?

    আমার ছেলে যে-চাবির কথা নিজের মুখে বলেছে–গুদামঘরের চাবি।

    আছে এখানে?

    ড্রেসিং টেবিলের ওপর রয়েছে।

    চাবিটা তুলে নিয়ে আলমারি খুলল শার্লক হোমস।

    বলল, খোলার সময়ে একদম আওয়াজ হয় না–সেই কারণেই ঘুম ভাঙেনি আপনার। মুকুটটা নিশ্চয় এই বাক্সতে আছে। দেখি কীরকম, বলে বাক্স খুলে অপূর্ব সুন্দর রত্নমুকুট বের করে চেয়ে রইল অনিমেষে। দেখবার মতোই মুকুট বটে। এ-রকম উৎকৃষ্ট পান্না আমি জীবনে দেখিনি। একটা কোণ ভাঙা–তিনটে পান্না খসিয়ে নেওয়া হয়েছে ওইখান থেকে।

    মি. হোল্ডার, কোণটা ভাঙুন দিকি, বললে হোমস।

    আঁতকে উঠলেন ব্যাঙ্কার ভদ্রলোক, ও-কথা মুখে আনাও পাপ।

    তাহলে আমিই ভাঙছি, বলেই হঠাৎ সর্বশক্তি দিয়ে কোণটা ভাঙতে গেল হোমস, কিন্তু পারল না। বলল, আমার আঙুলের জোর নেহাত কম নয়, মি. হোল্ডার। কিন্তু এ-জিনিস ভাঙতে গেলে আরও সময় দরকার। সাধারণ মানুষ পারবে না ভাঙতে। ভাঙবার পরেও পিস্তল ছোঁড়ার মতো একটা প্রচণ্ড শব্দ হবে। এত কাণ্ড ঘটে গেল আপনার খাট থেকে মাত্র কয়েক গজ দূরে, অথচ আপনি জানতে পারলেন না?

    আমার মাথায় কিছু ঢুকছে না।

    মিস হোল্ডার, আপনি কী বলেন?

    কাকার মতো আমিও ধাঁধায় পড়েছি।

    ছেলেকে যখন দেখেছিলেন, তখন কি তার পা খালি ছিল? জুতো বা চটি কিছু পরে ছিল কি?

    প্যান্ট আর শার্ট ছাড়া কিছু না।

    ধন্যবাদ, ভাগ্য সহায় আমাদের, তাই কেসটা সহজেই সুরাহা করা যাবে। মি. হোল্ডার, এবার বাইরেটা ফের দেখে আসা যাক।

    গেল কিন্তু একলাই–সবাই মিলে গেলে নাকি অত পায়ের ছাপে সব একাকার হয়ে যাবে। ঘণ্টাখানেক পরে ফিরে এল জুতো ভরতি বরফ আর মুখভরা হেঁয়ালি নিয়ে।

    বললে, মি. হোল্ডার, যা দেখবার সব দেখা হয়ে গেছে। এবার আপনার কাজটা বাড়ি ফিরে সারব।

    কিন্তু রত্ন তিনটে কোথায় বলে যাবেন তো?

    তা তো বলতে পারব না।

    সে কী! জন্মের মতো খোয়া গেল বলতে চান! ছেলেটা? তার কী হবে?

    একবার যা বলেছি, তার অন্যথা হবে না।

    কাল রাতের ব্যাপার একটু খোলসা করে বলুন তাহলে!

    কাল সকাল ন-টা থেকে দশটার মধ্যে বেকার স্ট্রিটে আমার সঙ্গে দেখা করুন। যা বলবার তখনই বলব। রত্ন উদ্ধারে নিশ্চয় কার্পণ্য করব না। যা খরচ হবে, দেবেন তো?

    আরে মশাই, যথাসর্বস্ব যদি চান, তাও পাবেন!

    তাহলে এখন চলি। হয়তো সন্ধে নাগাদ একবার আসতে হতে পারে।

    বেশ বুঝলাম, মনে মনে রত্ন-রহস্যের মীমাংসা করে এনেছে বন্ধুবর। বেশ কয়েকবার কথা বলাতে চেষ্টা করলাম ফেরবার পথে, কিন্তু এড়িয়ে গেল প্রতিবার। বাড়ি ফিরেই ঢুকল নিজের ঘরে। মিনিট কয়েক পরে বেরিয়ে এল পাক্কা লোফারের ছদ্মবেশে।

    বললে, তোমাকে সঙ্গে নিতে পারলে বাঁচতাম, কিন্তু সাহস পাচ্ছি না। হয়তো ঠিক পথেই চলেছি, অথবা আলেয়ার পেছনে ধাওয়া করছি। যাই হোক ফিরব ঘণ্টা কয়েক পরে। তাক থেকে মাংস নিয়ে দুটো পাউরুটির মধ্যে রেখে স্যান্ডউইচ বানিয়ে পকেটে পুরতে পুরতে উধাও হল শার্লক হোমস।

    ফিরে এল আমার চা পানের সময়ে। ফুর্তি যেন ফেটে পড়ছে। হাতে এক পাটি ইলাস্টিক লাগানো বুট জুতো। ঘরের কোণে জুতোটা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বসে গেল চা খেতে।

    বলল, যাওয়ার পথে ঢুঁ মেরে গেলাম।

    আবার কোনদিকে?

    ওয়েস্ট এন্ডের ওপাশে। ফিরতে দেরি হতে পারে।

    কাজ এগোল?

    মোটামুটি। ব্যাঙ্কারের পাড়ায় গেছিলাম এখন, বাড়ি মাড়াইনি। রহস্যটা ছোট্ট হলেও চমৎকার। যাকগে, আপাতত এই বিতিগিচ্ছিরি ধড়াচূড়া ছেড়ে নিজের পোশাকে ঢোকা যাক।

    মুখে না-বললেও চকচকে চোখ আর রক্তিম গাল দেখেই বুঝলাম কাজ ভালোই এগোচ্ছে। দ্রুত উঠে গেল ওপরতলায়। একটু পরেই দড়াম করে বন্ধ হল হল ঘরের দরজা। তার মানে, আবার অভিযানে বেরোল শার্লক হোমস।

    মাঝরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেও যখন ফিরল না, তখন শুয়ে পড়লাম। তদন্তে ড়ুব দিলে অনেক রাত অনেক দিন এইভাবেই ও বাইরে কাটায়। পরের দিন সকাল বেলা প্রাতরাশের টেবিলে দেখলাম এক কাপ কফি আর দৈনিক কাগজ নিয়ে বসে রয়েছে দিব্যি তাজা চেহারায়।

    ওয়াটসন তোমাকে ফেলেই খেতে বসে গেছি বলে কিছু মনে কোরো না। মনে আছে তো, মক্কেল ভদ্রলোক আজ একটু সকাল সকাল আসবেন?

    বললাম, আরে, ন-টা তো বেজে গেছে। এসে গেলেন বোধ হয়, ওই শোনো ঘণ্টা বাজছে।

    ব্যাঙ্কারই বটে। কিন্তু আঁতকে উঠলাম মুখ দেখে। এ কী চেহারা হয়েছে। মুখ আরও ফ্যাকাশে হয়েছে, চোয়াল আরও ঝুলে পড়েছে, চুল পর্যন্ত যেন আরও সাদা হয়ে এসেছে। পা যেন আর চলছে না—নিঃসীম অবসাদেশরীর ভেঙে পড়েছে। চেয়ার এগিয়ে দিতেই বসে পড়লেন ধপ করে।

    বললেন ভাঙা গলায়, জানি না কী পাপের জন্যে এত সাজা পাচ্ছি। দু-দিন আগেও আমার ভেতর সুখ আর সম্পদ উথলে উঠেছিল–দুনিয়ার কারো ধার ধারিনি। আজ আমার কেউ নেই। মানসম্মানও নেই। দুঃখ শোক কখনো একলা আসে না–পরের পর আসে। ভাইঝিটা চলে গেল।

    চলে গেল?

    হ্যাঁ। বিছানা স্পর্শ করেনি। ঘর ফাঁকা। কাল রাতে রাগের মাথায় বলে ফেলেছিলাম, আর্থারকে বিয়ে করলে ছেলেটা আজ সুখে থাকত। বলাটা বোধ হয় ঠিক হয়নি। চিঠিতে সে-কথাটাও লিখেছে :

    আমার প্রাণপ্রিয় কাকা,

    বেশ বুঝেছি আমার জন্যেই আজ তুমি এই ঝামেলায় পড়েছ। যতই তা ভাবছি, ততই বুঝেছি এ-বাড়িতে আমার আর থাকা উচিত নয়। কোনোদিনও আর শান্তি পাব না। তাই জন্মের মতো চললাম। আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভেবো না–সে-ব্যবস্থা হয়েছে। তার চেয়েও বড়ো কথা, আমাকে খুঁজতে যেয়ো না চেষ্টাটা বৃথা হবে। জীবনে মরণে জানবে আমি তোমার পরম স্নেহের সেই,

    —মেরি

    মি. হোমস, মানে কী চিঠিটার? আত্মহত্যা?

    মোটেই না। বলতে পারেন, জটিল সমস্যার চমৎকার সমাধান। মি. হোল্ডার, আপনার রাহুর দশা এবার কাটতে চলেছে।

    অনেক খবর জানেন মনে হচ্ছে? পান্নাগুলো কোথায়?

    এক-একটা পান্নার জন্যে হাজার পাউন্ড দিতে পারবেন তো?

    দশ হাজার দোব।

    অত দরকার হবে না। পুরস্কার বাবদ কিছু টাকা ধরলে সব মিলিয়ে হাজারেই হবে। চেকবই এনেছেন? এই নিন কলম। চার হাজারের একটা চেক লিখে দিন।

    ভ্যাবাচ্যাকা মুখে চেক লিখে দিলেন ব্যাঙ্কার। ডেস্কের ড্রয়ার থেকে একটা বস্তু বার করল হোমস। তেকোনা সোনায় বসানো তিনটে পান্না। ছুঁড়ে দিল টেবিলের ওপর।

    তীব্র আনন্দে পাগলের মতো চেঁচিয়ে উঠে জিনিসটা খামচে ধরলেন মক্কেল ভদ্রলোক।

    বাঁচালেন! ওঃ, আমার প্রাণটা আপনি বাঁচিয়ে দিলেন!

    কড়া গলায় হোমস বললে, মি. হোল্ডার, আপনাকে আর একটা দেনা মেটাতে হবে।

    তৎক্ষণাৎ কলম তুলে নিলেন ব্যাঙ্কার, বলুন কত দিতে হবে?

    দেনাটা আমার কাছে নয়–আপনার অত্যন্ত মহৎ ওই ছেলের কাছে।

    বলেন কী! আর্থার তাহলে চুরি করেনি?

    সে-কথা কালকে বলেছিলাম–আজও বলছি।

    তাহলে চলুন, এখুনি গিয়ে বলে আসি।

    ও জানে। আমি গেছিলাম আজকে। দু-একটা ব্যাপারে ধোঁকা কাটছিল না—আপনার ছেলেই তা পরিষ্কার করে দিয়েছে। আপনি গিয়ে রত্ন উদ্ধারের খবরটা দিলে নিজেই মুখ খুলবেখন।

    রহস্যটা কী এবার বলবেন?

    নিশ্চয় বলব, খুব আঘাত পাবেন শুনলে। স্যার জর্জ বার্নওয়েল আর আপনার ভাইঝির মধ্যে আঁতাত ছিল। দুজনেই পালিয়েছে একসঙ্গে।

    মেরি? অসম্ভব!

    অসম্ভব হলেও সত্যি। স্যার জর্জ বার্নওয়েলকে আপনারা চেনেন না। ইংলন্ডের কুখ্যাত জঘন্য বদমাশদের তিনি অন্যতম। বিবেক বলে কোনো বস্তু নেই। জুয়ো খেলে পথে বসেছেন। বহু মেয়ের সর্বনাশ করেছেন। এখন করলেন আপনার ভাইঝির। প্রায় প্রতিদিন সন্ধের সময়ে দেখাসাক্ষাৎ হত দুজনের।

    বিবর্ণ হয়ে গেলেন মি. হোল্ডার, অবিশ্বাস্য! একেবারেই অবিশ্বাস্য!

    তাহলে শুনুন সেই রাতের ঘটনা। আপনি শুতে গেছেন জেনে ভাইঝিটি জানলা খুলে মুকুটের খবরটা দিয়েছিল তাকে। লোভী তিনি। শুনেই চেয়ে বসলেন রত্নমুকুট। এই সময়ে আপনি এসে পড়ায় জানলা বন্ধ করে দিয়ে দাসীর খবরটা আপনাকে দেয় মেরি।

    আর্থারের সঙ্গে আপনার কথা কাটাকাটির পর দুজনেই শুয়ে পড়লেন। ক্লাবে দেনার কথা ভাবতে ভাবতে মাথা গরম হয়ে গেল আর্থারের ঘুম উড়ে গেল চোখ থেকে। এমন সময়ে পায়ের শব্দ শুনে পা টিপে টিপে বেরিয়ে এসে দেখে বোন যাচ্ছে আপনার ড্রেসিং রুমে। তাড়াতাড়ি গায়ে জামা চড়িয়ে খালি পায়ে পিছু নেয় আর্থার। আড়াল থেকে দেখে আলমারি খুলে মুকুট নিয়ে নীচে গেল মেরি, জানলা খুলে পাচার করে দিল বাইরে। মেরি নিজের ঘরে না-যাওয়া পর্যন্ত লোকটার পিছন ধাওয়া করতে পারেনি সে। তারপরেই জানলা খুলে লাফ দিল বাইরে। দেখেই চিনল বার্নওয়েলকে। ধস্তাধস্তির সময়ে ঘুসি মেরে বার্নওয়েলের চোখের ওপর বেশ খানিকটা জায়গা কেটেও দেয়–মুকুট ছিনিয়ে নিয়ে ফিরে আসে বাড়ির ভেতরে। এত কাণ্ড সে করেছে শুধু আপনার সর্বনাশ হতে চলেছে দেখে চেঁচামেচিও করতে পারেনি মেরির জন্যে। তাকে যে সে ভালোবাসে। একেই বলে শাঁখের করাত।

    ড্রেসিং রুমে ফিরে এসে দেখল মুকুটের কোণ ভাঙা। হাত দিয়ে যখন বাঁকা দিকটা সিধে করার চেষ্টা করছে ঠিক তখন আপনি চড়াও হলেন তার ওপর। এত বড়ো কাজ করার প্রশংসা পেল না–পেল চোর বদনাম। পুলিশে ধরিয়ে দিলেন নিজের হাতে। তাই প্রচণ্ড অভিমানে একটি কথাও সে বলেনি–মেরিকেও ধরিয়ে দেয়নি কিন্তু পাঁচ মিনিটের জন্যে বাইরে বেরোতে চেয়েছিল মুকুটের ভাঙা কোণটা রাস্তা থেকে খুঁজে আনার জন্যে ও ভেবেছিল টানাটানিতে ভেঙে গিয়ে নিশ্চয় পড়ে আছে গলির মধ্যেই।

    আপনার বাড়ি গিয়ে রান্নাঘরের দরজার পাশে বরফের ওপর ছাপ দেখে বুঝলাম, একজন নারী একজন পুরুষের সঙ্গে দাঁড়িয়ে গল্প করেছে সেখানে। পুরুষটির একটি পা কাঠের গোল দাগ পড়েছে বরফে। লুসি আর তার মনের মানুষের ব্যাপারটা তাহলে সত্যি।

    কিন্তু গলির মধ্যে ঢুকে দেখলাম আশ্চর্য এক কাহিনি। বরফের ওপর আঁকা দু-জোড়া পায়ের ছাপ। একজন বুট পরে গেছে–বুটের ছাপ মাড়িয়ে দৌড়েছে খালি পায়ে একজন। আপনার ছেলের পায়ে জুতো বা চটি ছিল না–আপনিই বলেছেন। অর্থাৎ বুট-পরা লোকটার পেছন পেছন সে দৌড়েছে। কিছুদূর যেতেই বরফের মধ্যে বেশ খানিকটা গর্ত দেখে বুঝলাম দারুণ ঝটাপটি চলেছে সেখানে। ফোঁটা ফোঁটা রক্তও পড়ে আছে। বুট-পরা লোকটা এরপর একাই চলে গেছে–ফোঁটা ফোঁটা রক্ত তার পায়ের ছাপের পাশে পড়তে পড়তে গেছে। অর্থাৎ মারপিটে সে জখম হয়েছে। খালি পা ফিরে এসেছে। অর্থাৎ আপনার ছেলে ফিরে এসেছে।

    আপনার বাড়ি গিয়ে জানলার গোবরাট দেখেছিলাম আতশকাচ দিয়ে। চিহ্ন দেখে বুঝলাম, কেউ যেন লাফ দিয়ে জানলা টপকে বাইরে গেছে। এ থেকেই মনে হয়েছিল, ওপর থেকে কোনো একজন মুকুট এনে বাইরে কারুর হাতে চালান করেছিল। আর্থার তা দেখে ফেলে পিছু নেয়। মারপিট করে মুকুট ছিনিয়ে আনে। টানাটানিতে মুকুট ভেঙে যায়। কিন্তু তারা কারা? ওপর থেকে মুকুট নামিয়ে আনল কে? বাইরে থেকে মুকুট নিয়ে পালাচ্ছিলই-বা কে?

    ভাবতে ভাবতে জবাব পেয়ে গেলাম। মুকুট আপনি নিশ্চয় নামাননি। দাসীদের কেউ চুরি করে থাকলে আপনার ছেলে তার নাম গোপন করে নিজে হাজতে যাবে কেন? তাহলে সে এমন কেউ যার মুখ চেয়ে সে কেলেঙ্কারি গোপন করতে চেয়েছে। মেরিকে সে ভালোবাসে। মেরির জন্যে সে হাজতে যেতেও পারে। মনে পড়ল, মেরিকেই আপনি রাত্রে জানলার সামনে দেখেছিলেন। আর্থার আর মুকুট দেখে এই মেরিই চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল।

    কিন্তু মুকুটটা কার হাতে চালান করেছিল মেরি? বাড়িতে স্যার জর্জ বার্নওয়েল ঘন ঘন আসে–মেরির সঙ্গেও দেখা করে আপনি বলেছেন। বার্নওয়েলের কুখ্যাতি আমার অজানা নয়। বুটের ছাপ নিশ্চয় তারই পান্না তিনটেও তার কাছে।

    লোফারের ছদ্মবেশ ধারণ করে গেলাম স্যার জর্জ বার্নওয়েলের বাড়ি। চাকরটার সঙ্গে ভাব জমালাম। শুনলাম আগের রাতে মুখ ফাটিয়ে বাড়ি এসেছেন স্যার জর্জ। ঘুস দিয়ে তার এক পাটি বুট নিয়ে গেলাম আপনার বাড়ি পাশে। দেখলাম, বুটের ছাপের সঙ্গে স্যার জর্জের বুট হুবহু মিলে গেল।

    লাফিয়ে উঠলেন মি. হোল্ডার, আরে হ্যাঁ, কাল সন্ধের দিকে একটা লোফার ঘুর ঘুর করছিল বটে গলিতে।

    আমিই সেই লোফার। বাড়ি ফিরে ভদ্রলোক সেজে সোজা গেলাম বার্নওয়েলের কাছে। আমি জানতাম সোজা আঙুলে ঘি উঠবে না। কড়া কথাতেও যখন কাজ হল না, কিছুতেই স্বীকার করতে চাইলেন না–উলটে তেড়ে মারতে এলেন–তখন পিস্তল বার করে রগে ঠেকালাম।

    ফেরত চাইলাম পান্না তিনটে বিনিময়ে দোব তিন হাজার পাউন্ড। শুনেই চমকে উঠলেন স্যার জর্জ। ভাবতেই পারেননি এত টাকা পাওয়া যেত। বলে ফেললেন, মাত্র ছ-শো পাউন্ডের বিনিময়ে হাতছাড়া করে ফেলেছেন তিনটে পাথর!

    ঠিকানা আদায় করে গেলাম পাথর যে কিনেছে তার কাছে। কথা দিলাম, পুলিশি হামলা হবে—কিন্তু তিন হাজার পাউন্ডে পাওয়া যাবে পান্না তিনটে। বাড়ি এসে ঘুমোলাম রাত দুটোয়।

    উঠে পড়লেন মি. হোল্ডার, মি. হোমস, আপনার ঋণ আমি শোধ করতে পারব না। যা ভেবেছিলাম, তার চাইতে অনেক বেশি বুদ্ধিমান আপনি। ইংলন্ডকে এক মস্ত কলঙ্কের হাত থেকে আজ আপনি বাঁচিয়ে দিলেন। চলি এখন ছেলেটার কাছে ক্ষমা চেয়ে আসি। জানি না মেরি এখন কোথায়।

    স্যার জর্জ বার্নওয়েলের কাছে। পাপের সাজা সেখানেই পাবে, বলল–শার্লক হোমস।

     

    —————-

    টীকা

    ১. পান্না-মুকুটের আশ্চর্য অ্যাডভেঞ্চার : দি অ্যাডভেঞ্চার অব দ্য বেরিল করানেট স্ট্র্যান্ড ম্যাগাজিনের মে, ১৮৯২ সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়।

    ২. হোল্ডার অ্যান্ড স্টিভেনশন ব্যাঙ্ক : এই নামে কোনো ব্যাঙ্ক ইংলন্ডে আদৌ ছিল না। সেই সময়ে এই ধরনের যে জনপ্রিয় ব্যাঙ্কটির নাম পাওয়া যায়, সেটি হল গ্লাইন, মিলস অ্যান্ড কোম্পানি।

    ৩. পঞ্চাশ হাজার পাউন্ড : সে-কালের পঞ্চাশ হাজার পাউন্ড, আজকের হিসেবে প্রায় সাত মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি।

    ৪. মরক্কো চামড়া : বিশেষভাবে পাকানো বা tan করা ছাগলের চামড়া।

    ৫. পান্না : বেরিলিয়াম এবং অ্যালুমিনিয়ামের সিলিকেট বেরিল। এর ক্রিস্টাল ছয় কোনা বিশিষ্ট। সবুজ রঙের বেরিলকে পান্না বলা হয়। নীলচে সবুজ বেরিল পরিচিত অ্যাকোয়ামেরিন নামে। নানা ধরনের বেরিলের মধ্যে সবচেয়ে দামি পাথর হল পান্না।

    ৬. দু-বার বিয়ে করতে চেয়েছে : ভিক্টোরীয়-ইংলন্ডে তুতো-ভাইবোনদের মধ্যে বিবাহ প্রচলিত ছিল। প্রসঙ্গত, রানি ভিক্টোরিয়া এবং তার স্বামী প্রিন্স অ্যালবার্ট ছিলেন তুতো-ভাইবোন। একই সম্পর্ক ছিল চার্লস ডারউইন এবং তার স্ত্রী এমা ওয়েজউডের।

    ৭. আমার আঙুলের জোর নেহাত কম নয় : শার্লক হোমসের হাতের জোরের পরিচয় পাওয়া যায় দ্য স্পেকলড ব্যান্ড গল্পে ফায়ারপ্লেস খোঁচানোর শিক সোজা করার ঘটনায়।

    ৮. দড়াম করে বন্ধ হল হল ঘরের দরজা : দোতলায় হোমসের ঘর থেকে সোজা হল ঘরে নামবার জন্য আলাদা কোনো দরজা থাকার কথা নয়।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপ্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ – আরিফ আজাদ
    Next Article শার্লক হোমস সমগ্র ১ – অনুবাদ : অদ্রীশ বর্ধন

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }