Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    শার্লক হোমস সমগ্র ২ – অনুবাদ : অদ্রীশ বর্ধন

    লেখক এক পাতা গল্প1414 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    গ্রিক দোভাষীর দুর্দশা

    শার্লক হোমসের তিন কুলে কেউ আছে জানা ছিল না। এতদিনের মেলামেশায় কক্ষনো বলেনি ছেলেবেলার কাহিনি অথবা আদৌ কোনো আত্মীয়স্বজন আছে কি না। সেই কারণেই আমার ধারণা হয়েছিল ও একটা হৃদয়হীন মস্তিষ্কময় যুক্তিসর্বস্ব যন্ত্রবিশেষ। মেয়েদের দু-চক্ষে দেখতে পারে না। আবেগ-টাবেগের ধার ধারে না এবং নতুন মানুষের সঙ্গে মিশতে চায় না। বাপ-মা ছেলেবেলাতেই মায়া কাটিয়েছেন, এ-সংসারে সে একেবারে একা।

    তাই একদিন ওর মুখেই যখন শুনলাম ওর একজন ভাই আছে, পিলে চমকে উঠল আমার।

    কথাটা উঠল একদিন বিকেলের দিকে চা খাওয়ার পর। এলোমেলো হাজারো বিষয় আলোচনা করতে করতে মানুষ রক্তসূত্রে কতটা শেখে এবং নিজের চেষ্টায় কতটা শেখে, এই নিয়ে আরম্ভ হল কথাবার্তা।

    আমি বললাম, তুমি নিজেই নিজেকে গড়েছ! অদ্ভুত এই বিশ্লেষণী ক্ষমতা আর পর্যবেক্ষণ শক্তি তোমার নিজস্ব ব্যাপার।

    আনমনা হয়ে হোমস বললে, কিছুটা তাই। গাঁইয়া জমিদারের বংশে জন্মেছি আমি, সেই জীবনধারার কিছুটা আমার রক্তেও এসেছে। ঠাকুমা ছিলেন ফরাসি শিল্পী ভের্নের বোন। শিল্পীয় তন্ময়তা আর পর্যবেক্ষণ শক্তি নাতির রক্তেও তাই রয়ে গেছে। কিন্তু এ-তন্ময়তা যে রক্তসূত্রে পেয়েছ, তার কী প্রমাণ? আমার ভাই মাইক্রফটের মধ্যেও এ-গুণ আছে, বেশিমাত্রায়।

    শুনে হাঁ হয়ে গেলাম আমি। এ যে একেবারে নতুন খবর; কিন্তু তা কী করে হয়? হোমসের চাইতেও তুখোড় যুক্তিবাদীর সংবাদ লন্ডনের কাকপক্ষীও জানতে পারল না, এ কি সম্ভব? নিশ্চয় বিনয় করে নিজেকে ছোটো করছে হোমস। কথাটা বলতে গেলাম, কিন্তু হেসেই উড়িয়ে দিল হোমস।বলল, বিনয় জিনিসটা আর যাই হোক একটা সৎ গুণ নয়। সত্যের অপলাপ করাটা কি ভালো? কট্টর যুক্তিবাদী কখনো সত্যকে খামোকা ছোটো করে বা অযথা বড়ো করে জাহির করে না, যা দেখে, তাই বলে! আমি যখন বলছি মাইক্রফটের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা আমার চেয়ে ঢের বেশি, তুমি ধরে নিতে পার কথাটা সত্যি, এর মধ্যে বিনয়ের মিথ্যে প্রলেপ নেই।

    তোমার ছোটো ভাই?

    বড়ো দাদা–সাত বছরের ব্যবধান।

    তবে তাকে কেউ চেনে না

    কেন?

    নিজের মহলে সবাই তাকে চেনে।

    সে-মহলটা কোথায়?

    ডায়োজিনিস ক্লাবে।

    নামটা নতুন আমার কাছে। হোমস তা বুঝে ঘড়ি দেখে বলল, ডায়োজিনিস ক্লাব হল লন্ডনের কিছু আশ্চর্য লোকের আড্ডাখানা। মাইক্রফট নিজেও একজন আশ্চর্য মানুষ। প্রত্যেকদিন পৌনে পাঁচটা থেকে আটটা কুড়ি পর্যন্ত ক্লাবে থাকে সে। এখন ছ-টা বাজে, ইচ্ছে থাকলে আশ্চর্য একটা ক্লাব আর তার চাইতেও আশ্চর্য একটি মানুষের সঙ্গে আলাপ করে আসতে পার।

    মিনিট পাঁচেক পরে রিজেন্ট সার্কাসের দিকে পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে শার্লক হোমস বললে, ভাবছ আশ্চর্য এই ক্ষমতাকে কাজে লাগায় না কেন দাদা? কারণ আর কিছুই না, সে-ক্ষমতা তার নেই।

    কিন্তু এক্ষুনি যে বললে—

    বলেছি, চোখ দিয়ে আর মন দিয়ে বিচার করার ব্যাপারে আমি তার কাছে ছেলেমানুষ। শুধু চেয়ারে বসেই যদি এ-কাজ করা যেত তাহলে এই পৃথিবীতে তার চাইতে বড়ো সত্যান্বেষী আর থাকত না কিন্তু সে-রকম কোনো উচ্চাশা বা বাসনাই তার মধ্যে নেই। যুক্তি দিয়ে বিচার করার পর হাতেনাতে যাচাই করা দরকার, আদালতে পেশ করার উপযুক্ত করে তথ্যপ্রমাণ দিয়ে মামলা সাজানো দরকার কিন্তু সে-ব্যাপারে ওর কোনো উৎসাহ নেই। ও শুধু চেয়ারে বসেই বলে দেবে কোনটা ভুল, কোনটা ঠিক। পরে আমি মিলিয়ে দেখেছি সত্যিই ঠিক বলেছে দাদা। বহুবার বহু গোলমেলে ব্যাপারে ওর পরামর্শ নিয়েছি–কিন্তু ওই পর্যন্তই। সমস্যার গভীরে প্রবেশ করে মামলা সাজানোর কোনো ক্ষমতাই নেই মাইক্রফটের।

    বিশেষ এই ক্ষমতা খাঁটিয়ে রুটি রোজগারের ধান্দায় উনি নেই বলছ?

    একেবারে নেই। আমার কাছে যা জীবিকা ওর কাছে তা শখ ছাড়া কিছুই নয়। অঙ্কে তুখোড়। সরকারি দপ্তরে হিসেবের খাতা দেখে। থাকে পলমল-এ। ব্যায়াম বলতে সকাল-সন্ধে রাস্তার মোড় পর্যন্ত পায়চারি। বাড়তি সময় কাটায় আশ্চর্য এই ডায়োজিনিস ক্লাবে আর কোথাও নয়।

    এই প্রথম শুনলাম ডায়োজিনিস ক্লাবের নাম।

    তুমি কেন, অনেকেই এ-ক্লাবের নাম শোনেনি। তার কারণ, ক্লাবের সদস্যরা নিজেরাই মুখ-টেপা, লাজুক এবং মিশুকে মোটেই নয়। মনুষ্য-সংসর্গ এদের ভালো লাগে না কিন্তু চেয়ারে গাট হয়ে বসে নতুন নতুন ম্যাগাজিন পড়তে পেলে আর কিছু চায় না। সাধারণ ক্লাবের গুলতানি এদের দু-চোখের বিষ। তাই ডায়োজিনিস ক্লাবের পত্তন ঘটেছে শুধু এদের জন্যেই। এখানে প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে নিমগ্ন থাকে পাশের লোক সম্বন্ধে কৌতূহল দেখায় না–গায়ে পড়ে আলাপ করতে যায় না–দর্শনার্থীদের ঘর ছাড়া ক্লাবঘরের মধ্যে বকবক করে না। পরপর তিনবার এর অন্যথা ঘটলে সভ্য-পদ থেকে নাম পর্যন্ত খারিজ হয়ে যেতে পারে। আমার দাদাটি বিচিত্র এই ডায়োজিনিস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ওয়াটসন, এ-ক্লাবের পরিবেশটা আমারও খুব ভালো লাগে।

    কথা বলতে বলতে পৌঁছে গেলাম ডায়োজিনিস ক্লাবে। ভেতরে ঢোকার আগেই আমাকে মুখে চাবি দিয়ে থাকতে বলল হোমস। বসবার ঘরের দিকে যাওয়ার পথে দেখলাম বিস্তর লোক হল ঘরে খবরের কাগজে নাক ড়ুবিয়ে বসে আছে–কেউ কারো সাথে বাক্যবিনিময় করছে না। বসবার ঘরে আমাকে বসিয়ে রেখে বেরিয়ে গেল হোমস। একটু পরেই ফিরে এল যাঁকে নিয়ে নিঃসন্দেহে তিনি তার সহোদর ভাই মুখচ্ছবিতেই তার স্পষ্ট স্বাক্ষর। সেইরকম তীক্ষ্ণ্ণ অন্তর্ভেদী চাহনি চলতে ফিরতেও যেন ধ্যান করছেন নিজের মনে। অথচ এই ধ্যানস্থ আত্মনিমগ্ন সুদূরের চাহনি শার্লক হোমসের চোখে কেবল কূট সমস্যা সমাধানের সময়েই দেখেছি—সবসময়ে নয়। চোখ দুটো অদ্ভুত হালকা রঙের পিচ্ছিল পারার মতো তরল ধূসর আভায় সমুজ্জ্বল। তফাতের মধ্যে শার্লক হোমসের চাইতে ইনি অনেক বেশি দোহারা চেহারা এবং বেজায় মোটা। পেটাই গড়ন, মুখ ভারী হলেও ছোটো ভাইয়ের মতোই ধারালো।

    আমার সঙ্গে করমর্দন করে বললেন, আপনার কলমের দৌলতে শার্লকের কীর্তিকাহিনি তো এখন লোকের মুখে মুখে। ভালো কথা, শার্লক, আমি ভেবেছিলাম ম্যানর হাউসের সেই কেস নিয়ে গত সপ্তাহে আসবি। হালে পানি পাসনি বোধ হয়?

    অট্টহেসে শার্লক হোমস বললে, ঠিক উলটো। কিনারা করে ফেলেছি।

    অ্যাডামসই নিশ্চয় নাটের গুরু?

    তা আর বলতে।

    গোড়াতেই আঁচ করেছিলাম, বলে ভাইকে নিয়ে জানলার ধারে বসলেন মাইক্রফট হোমস–মানুষের চরিত্র নিয়ে কত গবেষণাই-না করা যায় এই জানলা থেকে। মিনিটে মিনিটে হরেক রকমের নমুনা যাচ্ছে রাস্তা দিয়ে। যেমন ধর, ওই লোক দুটো।

    একজন তো দেখছি বিলিয়ার্ড খেলার হিসেব রাখে।

    ধরেছিস ঠিক। অপর জন?

    লোক দুজন ততক্ষণে জানলার সামনে এসে গেছে। বিলিয়ার্ড খেলার হিসেব রাখে যাকে বলা হল, তার ওয়েস্টকোটের পকেটে কয়েকটি খড়ির দাগ ছাড়া বিলিয়ার্ড খেলার কোনো চিহ্ন সর্বাঙ্গে দেখলাম না। দ্বিতীয় ব্যক্তি খর্বকায়, গাঢ় রঙের মানুষ। টুপি পেছনে হেলাননা, বগলে খানকয়েক পুলিন্দা। শার্লক হোমস বিনা বাধায় বললে, এককালে সৈন্য ছিল।

    সম্প্রতি রিটায়ার করেছে, ততোধিক ঝটিতি ধুয়ো ধরলেন মাইক্রফট হোমস।

    ভারতবর্ষে ডিউটি দিয়েছে।

    সনন্দ-বিহীন অফিসার।

    খুব সম্ভব গোলন্দাজ বাহিনীর।

    বিপত্নীক।

    কিন্তু একটা বাচ্চা আছে।

    একটা নয় রে, অনেকগুলো, বললেন মাইক্রফট।

    হেসে ফেললাম আমি। বললাম, থামুন! থামুন! মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছেন দেখছি।

    শার্লক হোমস বললে, ভায়া, যার চেহারা রোদে পুড়ে কালচে মেরে গেছে, চালচলন যার বেশ ভারিক্কি, সে যে কর্তৃত্বব্যঞ্জক, উচ্চপদস্থ সৈনিকপুরুষ এবং সদ্য ভারতবর্ষ থেকে এসেছে, তা আঁচ করা কি খুব কঠিন?

    মাইক্রফট হোমস সঙ্গেসঙ্গে বললেন, পায়ের গোলাগুলি-মার্কা বুট দেখেও তো বোঝা যায় সবে মিলিটারির কাজ ছেড়েছে।

    ঘোড়সওয়ার সৈন্য নয়, অথচ ভুরুর একদিকের হালকা রং দেখে বোঝা যাচ্ছে কাত করে টুপি পরত। ওইরকম ওজনের লোক মাটি কাটার কাজও করে না। তাই বললাম, গোলন্দাজ বাহিনীতে থেকেছে এতদিন।

    মাইক্রফট বললেন, আপাদমস্তক অশৌচের বেশ দেখে বুঝলাম নিশ্চয় অত্যন্ত প্রিয়জন কাউকে হারিয়েছে। বাজার-হাট নিজেই যখন করছে, প্রিয়জনটি নিশ্চয় স্ত্রী। জিনিস কিনছে বাচ্চাদের জন্যে। ঝুমঝুমি দেখে বুঝলাম, একটি বাচ্চা নেহাত শিশু। সম্ভবত আঁতুড়েই মারা গেছে স্ত্রী। বগলে ছবির বই নেওয়ার কারণ শিশু ছাড়াও আর একটা বড়ো বাচ্চা ঘরে আছে।

    শার্লক হোমস বলেছিল, দাদার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা নাকি অনেক বেশি। এখন তা হাড়ে হাড়ে বুঝলাম। আমার দিকে চেয়ে মৃদু হেসে কচ্ছপের খোলের নস্যিদানি বার করে নস্যি দিলেন মাইক্রফট। বিরাট একটা লাল সিল্কের রুমাল দিয়ে বাড়তি গুঁড়ো ঝেড়ে ফেললেন।

    বললেন, শার্লক, একটি আশ্চর্য রহস্য হাতে এসেছে। শুনবি?

    বলো, বলল, বলে ফেললা, লাফিয়ে উঠল শার্লক হোমস।

    নোটবই বার করে পাতা ছিঁড়ে কী লিখলেন মাইক্রফট। বেয়ারাকে ডেকে চিরকুটটা দিলেন তার হাতে।

    বললেন, মি. মেলাসকে ডাকতে বললাম। ভদ্রলোক জাতে গ্রিক, পেশায় দোভাষী, নিবাস আমার ওপরতলায়। হোটেলে যেসব টাকার কুমিররা আসে, তাদের সেবা করে পেট চালান। গাইডের কাজ আর কি। কখনো-সখনো আইন-আদালতে দোভাষীর কাজ করেন।

    মিনিট কয়েক পরেই ঘরে ঢুকলেন খর্বাকৃতি হৃষ্টপুষ্ট এক ব্যক্তি। আঁটসাঁট মজবুত চেহারা। জলপাই রঙের মুখ আর কয়লা-কালো চুল দেখেই মালুম হয় মাতৃভূমি দক্ষিণাঞ্চলে কথাবার্তা কিন্তু শিক্ষিত ইংরেজের মতো। সাগ্রহে করমর্দন করলেন শার্লক হোমসের সঙ্গে বিখ্যাত বিশেষজ্ঞটির সমীপে নিজের বিচিত্র কাহিনি নিবেদন করার সুযোগ পাওয়ায় খুশির রোশনাই ঝিলমিলিয়ে উঠল তার দুই চোখে।

    বললেন কাঁচুমাচু মুখে, পুলিশ তো আমার কোনো কথাই বিশ্বাস করছে না। কিন্তু মুখে পট্টিওয়ালা লোকটার কী হাল হল না-জানা পর্যন্তও যে নিশ্চিন্ত হতে পারছি না।

    আমাকে বলুন, বলল শার্লক হোমস।

    ঘটনাটা ঘটে দু-দিন আগে–সোমবার। আমার মাতৃভাষা গ্রিক–তাই বেশির ভাগ ওই ভাষাতেই দোভাষীর কাজ করি। কিন্তু প্রায় সব ভাষাই আমি জানি। লন্ডনের সব হোটেলেই আমাকে চেনে।

    বিদেশি পর্যটকরা ফাঁপরে পড়লেই আমাকে তলব করে। তাই অনেক সময়ে গভীর রাতেও আমার ডাক পড়ে। সোমবার রাতে মি. ল্যাটিমারকে দেখে তাই অবাক হইনি।

    ভদ্রলোক নীচে গাড়ি রেখে ওপরে এলেন। তার এক গ্রিক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলতে পারছেন না–গ্রিক ছাড়া তিনি কিছু জানেন না। বাড়ি তার কেনসিংটনে–কাছেই।

    তাড়াহুড়ো করে আমায় নামিয়ে এনে গাড়িতে তুললেন মি. ল্যাটিমার। কিন্তু সোজা পথে–গিয়ে গাড়ি চলল ঘুরপথে। কারণটা জিজ্ঞেস করতেই ভদ্রলোক এমন একটা কাণ্ড করে বসলেন যে হাঁ হয়ে গেলাম আমি।

    উনি বসে ছিলেন আমার মুখোমুখি। হঠাৎ সিসে দিয়ে ভারী করা একটা সাংঘাতিক লাঠি পকেট থেকে বার করে সামনে পেছনে দুলিয়ে হাতে বাড়ি মেরে ওজনটা পরখ করলেন, রাখলেন পাশে সিটের ওপর! তারপর ঝপাঝপ করে বন্ধ করে দিলেন জানলাগুলো। তখনই দেখতে পেলাম, প্রত্যেকটা জানলা কাগজ দিয়ে ঢাকা–যাতে বাইরে দেখতে না-পাই।

    বললেন, মি. মেলাস, বুঝতেই পারছেন, কোথায় যাচ্ছেন আপনাকে তা জানাতে চাই।

    ভদ্রলোকের কাণ্ড দেখে আমার তখন হাত-পা ঠান্ডা হয়ে এসেছে। লাঠি বাদ দিলেও মি. ল্যাটিমার শক্তিমান পুরুষ। ইয়া চওড়া কাঁধ। হাতাহাতি করেও সুবিধে করতে পারব না।

    তাই তো-তো তোতলাতে তোতলাতে বললাম, এটা কীরকম হল, মি. ল্যাটিমার?

    মি. মেলাস, চেঁচামেচি করবেন না–বিপদে পড়বেন। মনে রাখবেন, আপনি কোথায় যাচ্ছেন কেউ জানেন না।

    কথাগুলো খুব ঠান্ডাভাবে বলা হলেও গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল আমার। বেশ বুঝলাম, পড়েছি যবনের হাত খানা খেতে হবে সাথে। বাধা দিতে গেলে বিপদ বাড়বে বই কমবে না।

    তাই বসে রইলাম মুখে চাবি এঁটে। ঝাড়া দু-ঘণ্টা নানা পথঘাট পেরিয়ে গাড়ি দাঁড়াল। ঝট করে দরজা খুলে চট করে আমাকে টেনে নামিয়ে দেওয়া হল নীচু খিলেন দেওয়া একটা দরজার ভেতরে। পলকের জন্যে দেখলাম দু-পাশের গাছের সারিওলা একটা লন।

    ভেতরে একটা ম্যাড়মেড়ে রঙিন আলো জ্বলছে। দেওয়ালে ছবি ঝুলছে। বেশ বড়ো ঘর। দরজা খুলছে ইতর চেহারার চোয়াড়ে টাইপের গোল কাধওলা একটা মর্কটাকৃতি বেঁটে লোক। চোখে চশমা। মধ্যবয়স্ক। নোংরা হেসে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, মি. মেলাস নাকি? এই ভাবে জামাই আদরের জন্যে রাগ করবেন না। কিন্তু চালাকিও করতে যাবেন না। তাহলেই—

    বলে, আবার খি-খি করে এমন একটা রক্ত-জল-করা হাসি হাসল যে লোম-টোম খাড়া হয়ে গেল আমার।

    একজন গ্রিক ভদ্রলোকের সঙ্গে কথা বলবেন। আমাদের প্রশ্ন তাকে শোনাবেন তার জবাব আমাদের বলবেন। যা জিজ্ঞেস করতে বলব তার বেশি একটা কথাও বলতে যাবেন না। কৌতূহল দেখাতে যাবেন না। যদি দেখান আবার সেই রক্ত-জল-করা খি-খি হাসি হেসে মর্কট বাঁটুল বললে এমন টাইট দেব যে অনুশোচনার আর অন্ত থাকবে না–তখন ভাববেন, আহা রে! কেন মরতে জন্মাতে গেলাম পৃথিবীতে।

    কথার মাঝেই খুলে গেল একটা দরজা। আমাকে নিয়ে যাওয়া হল পাশের ঘরে। দামি দামি ফার্নিচার আর পা-ড়ুবে-যাওয়া কার্পেট দিয়ে সাজানো ঘর। একটু পরেই প্রায় ধরে ধরে এক ব্যক্তিকে আনা হল সেই ঘরে। কাছে আসতেই ক্ষীণ আলোয় দেখলাম তার মুখের চেহারা। আঁতকে উঠলাম সেই মুখ দেখে। মোচড় দিয়ে উঠল ভেতরটা অব্যক্ত বেদনায়। সারামুখে তার অজস্র পটি–প্লাস্টার আর প্লাস্টার। একটা বিরাট প্লাস্টার দিয়ে মুখটা বন্ধ কথা বলার জো নেই। দেহে শক্তি এক বিন্দুও নেই, কিন্তু মন এখনও নুয়ে পড়েনি। অপরিসীম আত্মবল ধক ধক করে জ্বলছে বিশাল দুই চোখে।

    লোকটাকে একটা চেয়ারে বসানো হল বটে, কিন্তু তা না-বসারই শামিল। যেকোনো মুহূর্তে ঘাড় মুচকে ধড়াস পড়ে যাবেন মনে হল।

    মাঝবয়েসি লোকটা বলল, হ্যারল্ড, ওঁর হাত খোলা আছে। পেনসিলটা হাতে দাও। মি. মেলাস, আপনি জিজ্ঞেস করবেন, উনি লিখে জবাব দেবেন। প্রথমে জিজ্ঞেস করুন, কাগজপত্রে সই দেবেন কি না?

    মুমূর্য গ্রিকের বিশাল চোখে বিদ্যুৎ খেলে গেল এই প্রশ্নে। গ্রিক ভাষায় ক্যাঁচ ক্যাঁচ করে স্লেটে জবাব লিখলেন, কখনোই না।

    কোনো শর্তেই নয়? ইতর লোকটার প্রশ্ন তরজমা করলাম আমি।

    একটাই শর্ত, গ্রিক পুরুতের সামনে ওর বিয়ে দিতে হবে।

    কপালে অনেক দুর্ভোগ আছে দেখছি।

    পরোয়া করি না।

    এইভাবে চলল কথাবার্তা। আমি জিজ্ঞেস করছি, উনি লিখে জবাব দিচ্ছেন। একই প্রশ্ন আর জবাব ঘুরে ফিরে এল প্রশ্নোত্তরের মধ্যে। কাগজপত্তর সই করবেন কি না, এই কথার একটাই জবাব দিয়ে গেলেন উনি, কখনোই না। সীমাহীন ঘৃণা যেন ঠিকরে ঠিকরে বেরুল জবাব লেখার ধরনে। এই সময়ে মতলব এল মাথায়। সাংঘাতিক একটা ঝুঁকি নিলাম। যেটুকু জিজ্ঞেস করতে বলা হল আমাকে, তার চেয়ে একটু বেশিই জিজ্ঞেস করলাম এবং জবাবটা নিজের মনেই জমিয়ে রাখলাম–শয়তানদের কাছে চেপে গেলাম।

    কীরকমভাবে চালাকিটা খেললাম শুনুন :

    কেন গোঁয়ারতুমি করছেন? কে আপনি?

    বেশ করছি। লন্ডনে আমি নবাগত।

    অবাধ্যতার শাস্তি মৃত্যু। কদ্দিন এসেছেন?

    হোক না মৃত্যু। তিন সপ্তাহ।

    এ-সম্পত্তি এ-জীবনে আপনি পাবেন না। কী হয়েছে আপনার?

    আমি না-পাই, শয়তানের বাচ্চাদেরও দোব না। না-খাইয়ে রেখেছে আমাকে।

    সইটা করলেই ছেড়ে দেব। এ-বাড়িটা কোথায়?

    সই করব না। জানি না।

    তাতে ওর কোনো লাভ হচ্ছে কি? কী নাম আপনার?

    সেটা ওর মুখেই শুনব। ক্রাতাইদিস।

    সই করলেই দেখা হবে। কোত্থেকে এসেছেন?

    তাহলে চাই না দেখা করতে। এথেন্স থেকে।

    মি. হোমস, আর একটা প্রশ্ন করলেই কুচুক্কুরে লোক দুটোর সামনেই ব্যাপারটা ফাঁস হয়ে যেত। কিন্তু ঠিক এই সময়ে আচম্বিতে দরজা খুলে ঘরে ঢুকল একজন পরমাসুন্দরী লাবণ্যময়ী মহিলা। তন্বী, দীর্ঘাঙ্গী এবং কৃষ্ণকেশী।

    ভাঙা-ভাঙা ইংরেজিতে বললেন, হ্যারল্ড, কতক্ষণ আর একা থাকব? আরে পল যে!

    শেষ বিস্ময়ধ্বনিটা বেরোল গ্রিকভাষায়। চক্ষের নিমেষে লাফিয়ে দাঁড়িয়ে উঠলেন নিগ্রহ-বিধ্বস্ত গ্রিকপুরুষ, একটানে খুলে ফেললেন মুখের প্লাস্টার এবং সোফি! সোফি! বলে আকুল কণ্ঠে চেঁচিয়ে উঠে জড়িয়ে ধরলেন সুন্দরীকে।

    পলকের মধ্যে ঘটল পরবর্তী ঘটনাগুলো। বয়স যার কম সেই লোকটা মহিলাটিকে জাপটে ধরে বেরিয়ে গেলেন এক দরজা দিয়ে। আর এক দরজা দিয়ে অত্যাচারে আধমরা গ্রিক ভদ্রলোককে টানতে টানতে বেরিয়ে গেল মাঝবয়সি লোকটা।

    ঘর ফাঁকা। সুযোগটার সদ্ব্যবহার করব কি না ভাবছি, এমন সময়ে দেখি দরজা আগলে দাঁড়িয়ে ইতর চেহারার মাঝবয়সি সেই লোকটা।

    আমার দিকে পলকহীন চোখে তাকিয়ে চিবিয়ে বলল, মি. মেলাস, আমাদের নিজস্ব দোভাষী হঠাৎ অন্যত্র যাওয়ায় এই গোপন ব্যাপারে আপনাকে ডাকতে হয়েছে। জেনেও ফেলেছেন অনেক কিছু। এই নিন। আপনার পারিশ্রমিক। হাত বাড়িয়ে নিলাম পাঁচ পাউন্ড পারিশ্রমিক। কাছে আসায় দেখতে পেলাম বেঁটে বামনের বিকট মুখখানা। হলদেটে মুখ, ছুঁচোলো সুতলি দাড়ি, ভয়ংকর ধূসর ইস্পাতকঠিন নির্মম একজোড়া চোখ–নরকের সমস্ত শয়তানি পুঞ্জীভূত হয়েছে কুতকুতে সেই চোখে। থেমে গেলাম আমি, একটা ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল মেরুদণ্ড বেয়ে।

    আমার বুকে টোকা মেরে বিশ্রী হেসে ঠোঁট আর চোখের পাতা অদ্ভুতভাবে কাঁপিয়ে মূর্তিমান শয়তানটা বললে, একটা কথাও যদি প্রকাশ পায়, আমাদের কানে তা আসবেই। আপনার কপালেও তাহলে অনেক দুর্গতি আছে জানবেন। যান, গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে।

    আবার আমাকে ঠেলেঠুলে তুলে দেওয়া হল গাড়ির মধ্যে। মি. ল্যাটিমার বসলেন গাড়ির মধ্যে আমার সামনে। আগের মতোই অনেকক্ষণ ছুটল গাড়ি। থামল মাঝরাত নাগাদ একটা বিজন অঞ্চলে। আমাকে নামিয়ে দেওয়ার আগে মি. ল্যাটিমার বললেন, পেছন নিতে চেষ্টা করবেন

    বলে দিলাম। গাড়ি থেকে লাফিয়ে নামতেই কোচোয়ানের ছিপটি খেয়ে তিড়বিড়িয়ে ঘোড়া ছুটল সামনে দেখতে দেখতে মিলিয়ে গেল অনেক দূরে।

    জায়গাটা একটা রেললাইনের পাশে, ক্ল্যাপহ্যাম জংশন থেকে মাইলখানেক দুরে; হেঁটে গেলাম স্টেশনে। শেষ ট্রেন ধরে পৌঁছালাম ভিক্টোরিয়ায়। পরের দিন মি. মাইক্রফট হোমসকে আশ্চর্য অভিযানের রোমাঞ্চ কাহিনি বললাম এবং পুলিশে খবর দিলাম।

    কাহিনি শেষ হল। কিছুক্ষণ কারো মুখে কথা নেই।

    তারপর শার্লক হোমস দাদাকে জিজ্ঞেস করল, ব্যবস্থা কিছু হয়েছে?

    টেবিল থেকে ডেলি নিউজ কাগজটা তুলে নিয়ে মাইক্রফট হোমস বললেন, এই বিজ্ঞাপনটা ছেড়েছি সব কাগজেই কিন্তু জবাব আসেনি।

    বিজ্ঞাপনটা এই :

    পল ক্র্যাইদিস নামক এক ইংরেজি-অজ্ঞ গ্রিক ভদ্রলোক সম্বন্ধে খবর চাই। এসেছেন এথেন্স থেকে। সোফি নাম্নী এক গ্রিক মহিলার সম্বন্ধেও খবর চাই। পুরস্কার দেওয়া হবে।

    শার্লক বললে, গ্রিক দূতাবাসে খবর নিলে হয় না?

    নিয়েছি। ওরা কোনো খবরই রাখে না।

    বেশ তো, কেসটা তুই নে না।

    নিলাম, উঠে পড়ল শার্লক হোমস। মি. মেলাস, আপনি কিন্তু হুঁশিয়ার। কাগজে বিজ্ঞাপন যখন বেরিয়েছে, শত্রুপক্ষও জেনে গেছে আপনি সব ফাঁস করে দিয়েছেন।

    বাসায় ফেরার পথে পোস্টাপিস থেকে খানকয়েক টেলিগ্রাম পাঠাল হোমস।

    তারপর বললে, ভায়া, সন্ধেটা দেখছি কাজে লেগে গেল। এইভাবেই অনেক চিত্তাকর্ষক কেস মাইক্রফটের মারফত আমার হাতে এসেছে। মি. মেলাসের কাহিনি শুনে তোমার কী মনে হল বলো।

    ইংরেজ নওজোয়ান হ্যারল্ড ল্যাটিমার গ্রিক সুন্দরী সোফিকে এথেন্স থেকে ইলোপ করে এনেছে।

    তোমার মাথা। শুনলে না, ল্যাটিমার গ্রিক ভাষা একদম জানে না? এথেন্সে সে যায়নি।

    তাহলে সোফি লন্ডনে এসেছিল, তখন মেয়েটাকে পটিয়েছে ল্যাটিমার।

    তা সম্ভব।

    তারপর মেয়েটির দাদা, গ্রিক ভদ্রলোক নিশ্চয় তার সহোদর ভাই, খবর পেয়ে লন্ডনে আসে এবং শয়তানদের খপ্পরে পড়ে। সোফি কিন্তু জানত না দাদা এসেছে লন্ডনে। খুব সম্ভব ভাইবোনের সম্পত্তির অছি এই ভদ্রলোক। ওঁকে দিয়ে বোনের সম্পত্তিটা লিখিয়ে নিতে চাইছে দুই শয়তান। সোফি হঠাৎ দেখে ফেলেছে দাদাকে।

    চমৎকার বলছ, ওয়াটসন! ভয় পাচ্ছি এই সোফিকে নিয়েই এবার তার ওপরেই-না মারধর শুরু হয়।

    কিন্তু বাড়িটা খুঁজে পাবে কী করে?

    খুব মুশকিল হবে বলে মনে হয় না। সোফিকে নিয়ে ল্যাটিমার বেশ কিছুদিন থেকেছে কোথাও, ভাই খবর পেয়েছে অনেক পরে। মেয়েটির নাম যদি সোফি ক্যাতাইদিস হয়, আর লন্ডনের কোনো পাড়ায় যদি একনাগাড়ে কিছুদিন তাকে দেখা যায়, প্রতিবেশীরা খবর রাখবেই। বিজ্ঞাপনেরও জবাব আসবে।

    কথা বলতে বলতে পৌঁছে গেলাম বেকার স্ট্রিটে। ঘরে ঢুকেই দুজনেই চমকে উঠলাম মাইক্রফট হোমসকে দেখে। চেয়ারে মৌজ করে বসে তোফা ধূমপান করছেন।

    আমাদের চমৎকৃত মুখচ্ছবি দেখে অট্টহেসে বললেন, আমার এত উদ্যম দেখে অবাক হয়ে গেছিস দেখছি।

    এলে কী করে? শার্লকের প্রশ্ন।

    গাড়িতে, তোদের পেরিয়ে।

    কিছু ঘটেছে মনে হচ্ছে?

    বিজ্ঞাপনের জবাব এসেছে, তোরা চলে যাওয়ার পরেই।

    কী লিখেছে?

    এই দেখ। রয়্যাল ক্রিম কাগজে জে মার্কা নিয়ে ক্ষীণজীবী মাঝবয়েসি মানুষের হাতে লেখা।

    মহাশয়,

    আপনার বিজ্ঞাপনের জবাবে জানাই যে মেয়েটিকে আমি চিনি এবং তার দুঃখের কাহিনিও জানি। কষ্ট করে যদি পায়ের ধুলো দেন তো খুলে বলতে পারি।দি মার্টলস বেকেনহ্যাম, এই ঠিকানায় মেয়েটি এখন আছে।

    আপনার বিশ্বস্ত

    জে, ডেভেনপোর্ট

    মাইক্রফট বললেন, চিঠি এসেছে লোয়ার ব্রিক্সটন থেকে। চল, মেয়েটার দুঃখের কাহিনি শুনে আসা যাক।

    তুমি খেপেছ? বললে শার্লক হোমস। মেয়েটার দুঃখের কাহিনির চেয়ে বেশি দামি তার ভাইয়ের জীবন। দেরি হলে খুন হয়ে যেতে পারেন ভদ্রলোক। স্কটল্যান্ডে গিয়ে ইনস্পেকটর গ্রেগসনকে নিয়ে এখুনি হানা দেওয়া দরকার শয়তানদের আস্তানায়।

    আমি বললাম, যাওয়ার পথে মি. মেলাসকেও নিয়ে যেতে হবে। দোভাষীর দরকার হতে পারে।

    ঠিক কথা, বলে ড্রয়ার খুলে রিভলভার নিয়ে পকেটে পুরল হোমস।

    কিন্তু মি. মেলাসের বাড়ি গিয়ে শুনলাম একটু আগেই নাকি হাসিখুশি বেঁটেখাটো চশমাওলা একটা লোকের সঙ্গে বেরিয়ে গেছেন মি. মেলাস!

    শুনেই আর তর সইল না হোমসের, সর্বনাশ! আবার ওদের খপ্পরে গিয়ে পড়েছে মি. মেলাস। ভদ্রলোক যে রামভীতু, তা এক রাতেই ওরা বুঝতে পেরেছে বলেই বাড়ি বয়ে এসে হুমকি দেখিয়ে ধরে নিয়ে গিয়েছে। এবার বোধ হয় জ্যান্ত ফিরতে হবে না। চলো, আগে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড, তারপর শয়তানদের বিবরে।

    কিন্তু সময়মতো গাড়ি পাওয়া গেল না। গাড়ি পাওয়া গেল তো, সরকারি নিয়ম রক্ষে করে বাড়ি তল্লাশির অনুমতি বার করতে বেশ খানিকটা সময় নষ্ট হল। ট্রেনে চেপে বেকেনহ্যাম পৌঁছে আধমাইলটাক গাড়ি চেপে মার্টলস-এর সামনে যখন গেলাম, তখন রাত বেশ গভীর হয়েছে। রাস্তা থেকে একটু ভেতরে অন্ধকারের মধ্যে খাড়া নিঝুম বাড়িটার দিকে তাকিয়ে ইনস্পেকটর বললে, জানলা অন্ধকার। লোকজন আছে বলে তো মনে হচ্ছে না।

    পাখি উড়েছে। বলল শার্লক হোমস।

    কীভাবে বললেন?

    মালপত্র বোঝাই একটা গাড়ি এক ঘণ্টার মধ্যে গেছে এখান থেকে।

    হেসে ফেলল ইনস্পেকটর, ফটকের আলোয় গাড়ির চাকার দাগ দেখা যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু মালপত্র বোঝাই কি না বুঝছেন কী করে?

    একই চাকার দাগ ওদিক থেকে এদিক দিয়ে বেরিয়ে গেছে। আসার সময়ে চাকার দাগ গভীর নয়, যাওয়ার সময়ে মাটি কেটে বসে গেছে। তার মানে, খালি গাড়ি এনে মালপত্র চাপিয়ে লম্বা হয়েছে।

    হেরে গেলাম,কাঁধ ঝাঁকিয়ে বললেন ইনস্পেকটর। যা মজবুত দরজা, ভাঙা চাট্টিখানি কথা নয়। ঠেঙিয়ে দেখা যাক জবাব পাওয়া যায় কি না।

    কিন্তু লাথি ঘুসি মেরে, ঘণ্টা বাজিয়েও কারো সাড়া পাওয়া গেল না। সুট করে সরে পড়ল শার্লক হোমস। ফিরে এল মিনিট কয়েক পরে। বলল, একটা জানলা খুলে ফেলেছি।

    জানলা খোলার কায়দা দেখে চোখ কপালে উঠল ইনস্পেকটরের। বাইরে থেকে অদ্ভুত কৌশলে ভেতরের ছিটকিনি সরিয়ে দিয়েছে শার্লক।

    তাজ্জব কণ্ঠে বললেন ইনস্পেকটর, পুলিশের কপাল ভালো আপনি চোর বদমাশের খাতায় নাম লেখাননি। চলুন, পরিস্থিতি যেরকম ঘোরালো, বিনা নেমন্তন্নে বাড়িতে ঢুকলে অপরাধ হবে না।

    ভেতরে ঢুকে লণ্ঠন জ্বালিয়ে নিলেন ইনস্পেকটর। শুন্য কক্ষ। টেবিলের ওপর খালি ব্র্যান্ডির বোতল, দুটো খালি গেলাস আর এঁটো খাবার পড়ে।

    আচমকা কাঠ হয়ে গেল শার্লক, ওকী!

    একটা চাপা কান্নার শব্দ ভেসে এল মাথার ওপর থেকে। কে যেন গুঙিয়ে গুঙিয়ে অব্যক্ত বেদনায় কাঁদছে। ঝড়ের মতো ঘর থেকে ঠিকরে গিয়ে হল ঘরে ঢুকল শার্লক, সেখান থেকে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে পেছনে আমরা। ভারী শরীর নিয়ে যদূর সম্ভব বেগে পেছনে লেগে রইলেন শার্লক-অগ্রজ মাইক্রফট হোমস।

    তিনতলায় পর পর তিনটে দরজার একটার ভেতর থেকেই যেন আসছে চাপা গোঙানি। কখনো উচ্চগ্রামে উঠে কান্নায় ভেঙে পড়ছে একই কণ্ঠস্বর। দরজা বাইরে থেকে চাবি দেওয়া। এক ধাক্কায় দরজা খুলে সবেগে ভেতরে ঢুকেই পরমুহূর্তেই গলা খামচে ধরে ছিটকে বেরিয়ে এসে আতীক্ষ্ণ কণ্ঠে বলল শার্লক হোমস, কাঠকয়লার দম বন্ধ করা গ্যাস, বেরিয়ে যেতে দিন!

    খোলা দরজা দিয়ে গলগল করে বেরিয়ে এল পুঞ্জ পুঞ্জ দম আটকানো বিষাক্ত ধোঁয়া। উঁকি মেরে দেখলাম, ঘরের ভেতরে চাপ চাপ ধোঁয়ার মধ্যে দেখা যাচ্ছে একটা অস্পষ্ট নীল শিখা। একটা পেতলের তেপায়ার ওপরে দেখা যাচ্ছে সেই নীলাভ দ্যুতি। দেওয়ালের ধার ঘেঁষে লুটিয়ে আছে দুটো মনুষ্য মূর্তি। ওইটুকু দেখতে গিয়েই বিষাক্ত গ্যাস ফুসফুসে চলে গেল, শুরু হল প্রচণ্ড কাশি। দম আটকে আসে আর কি! সিঁড়ির কাছে দৌড়ে গিয়ে বুক ভরে টাটকা বাতাস নিয়ে তিরবেগে ঘরে ঢুকল শার্লক হোমস এবং এক ঝটকায় পেতলের তেপায়া তুলে নিয়ে গিয়ে জানলা গলিয়ে ফেলে দিল বাইরের বাগানে।

    বেরিয়ে এল পর মুহূর্তেই। হাঁপাতে হাঁপাতে বললে, মিনিট খানেক না-গেলে ঢোকা যাবে–নিশ্বাস নেওয়া যাচ্ছে না। মোমবাতি কোথায়? বন্ধ ঘরে মোমবাতি বোধ হয় জ্বলবে না। মাইক্রফট, দরজার কাছে ধরো তত বাতি। আমি ওদের টেনে নিয়ে আসি ভেতর থেকে।

    দুজনে মিলে ধরাধরি করে একসঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা দুটি নরদেহ তুলে নিয়ে এলাম বাইরে। দুজনেই অজ্ঞান। চোখ-মুখ ফুলে ঢোল–চেনা দায়। ঠোঁট নীল। কোটর থেকে অক্ষিগোলক ঠিকরে আসছে। দোভাষী ভদ্রলোকের কালো দাড়ি আর মজবুত চেহারাটা দেখে চিনতে পারলাম। কপালে চোখের ঠিক ওপরেই একটা ভয়ংকর আঘাতের চিহ্ন। দ্বিতীয় ব্যক্তির সারামুখে প্লাস্টারের পটি–কঙ্কালসার লম্বা চেহারা। ধুকছে এবং গোঙাচ্ছে। বাইরে আনার পর গোঙানিটুকুও বন্ধ হয়ে গেল। মানে, সব শেষ হয়ে গেল। দুজনের একজন মায়া কাটাল পৃথিবীর।

    দোভাষী কিন্তু বেঁচে গেলেন। অ্যামোনিয়া শুকিয়ে ব্র্যান্ডি খাইয়ে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে চাঙ্গা করে তোলার পর শুনলাম তার মর্মন্তুদ কাহিনি। ইতর শ্রেণির লোকটা হাসি হাসি মুখে বাড়ি ঢুকে পকেট থেকে মারাত্মক হাতিয়ার বার করে কেবল বলেছিল–চেঁচালেই খুন করে ফেলব। চুপচাপ সঙ্গে এসো হে মি. মেলাস। তাইতেই ঘেমে যান ভদ্রলোক। গুটি গুটি চলে আসেন। এইভাবে। শুরু হয় প্রশ্নোত্তর। আবার গ্রিক ভদ্রলোককে হুমকি দেওয়া হয় কাগজে সই করার জন্যে। কিন্তু মরতে হবে জেনেও যখন কাগজে সই দিলেন না তখন শয়তানের দল তাকে নিয়ে যায় বাইরে এবং বারণ করা সত্ত্বেও গোপন কথা ফাঁস করার অপরাধে মাথায় লাঠি মেরে অজ্ঞান করে ফেলা হয় মি. মেলাসকে। খবরের কাগজের বিজ্ঞাপন দেখেই ওরা আঁচ করেছিল খবরটা কার মুখ থেকে বেরিয়েছে।

    গ্রিক দোভাষীর বিচিত্র মামলার কিনারা কিন্তু আর হয়নি। বিজ্ঞাপনের জবাবে মেয়েটির দুঃখের কাহিনি যিনি বলবেন লিখেছিলেন, তার মুখে আমরা শুনলাম, সোফি মেয়েটা গ্রিকদেশের এক বিরাট বড়োললাকের মেয়ে। ইংলন্ডে এসেছিল বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে। হ্যারল্ড ল্যাটিমার তার সঙ্গে ভাব করে এবং এমন পটিয়ে ফেলে যে শেষ পর্যন্ত পালিয়ে গিয়ে তার গলায় মালা দেবে ঠিক করে সোফি। জল অনেক দূর গড়াচ্ছে দেখে বন্ধুরা আঁতকে উঠে খবর দেয় এথেন্সে তার দাদাকে। খবর দেওয়ার পর কী হল, তা নিয়ে আর মাথা ঘামায়নি।

    দাদাটি ইংরেজি জানত না। বোনের সর্বনাশ হতে যাচ্ছে শুনে বোকার মতো এসে ল্যাটিমার আর তার উক্ত সঙ্গীর খপ্পরে পড়ে। একই বাড়িতে ভাইবোনকে আটকে রেখেছিল এই দুই কুচক্রী। ইতর সঙ্গীটির নাম উইলসন কেম্প। এককালের দাগি আসামি। বহু জঘন্য কাজের জন্যে মার্কামারা।

    ওরা চেয়েছিল দাদাকে নিয়ে বোনের সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখিয়ে নিতে। অত্যাচার চলছিল সেই কারণেই। পাছে বোন দেখে চিনে ফেলে দাদাকে, তাই দাদার মুখময় প্লাস্টারের পটি লাগিয়ে রাখা হত। কিন্তু মেয়েদের মন তো, পটির আবরণ খুঁড়েও চিনতে পেরেছে মায়ের পেটের ভাইকে।

    মেয়েটি নিজেও বন্দিনী ছিল বাড়িতে। কোচোয়ান আর তার বউ ছাড়া বাড়িতে লোকজন আর কেউ ছিল না। দুজনেই ছিল শয়তানের হাতের পুতুল।

    -খাইয়ে রেখে মারধর করেও যখন উদ্দেশ্য সিদ্ধ হল না, তখন ওরা দু-ঘণ্টার মধ্যে মেয়েটাকে নিয়ে পালিয়ে যায় বাড়ি থেকে। অবাধ্য দাদা আর বিশ্বাসঘাতক দোভাষীর মৃত্যুর ব্যবস্থা করে যায় বদ্ধ ঘরে কাঠকয়লার ধোঁয়ায়।

    মাস কয়েক পরে বুদাপেস্ত থেকে প্রকাশিত খবরের কাগজে একটা অদ্ভুত খবর বেরোয়। দুজন ইংরেজ একজন গ্রিক সুন্দরীর সঙ্গে যেতে যেতে ছুরিকাহত হয়ে মারা গেছে। পুলিশের ধারণা, নিজেরাই ছুরি মারামারি করে মরেছে। শার্লক হোমসের ধারণা অবশ্য অন্যরকম। ভাইবোনের ওপর অত্যাচারের প্রতিশোধ কীভাবে নিল সোফি, তা তার মুখ থেকেই শুনবে শার্লক, যদি কোনোদিন দেখা হয়।

    ———-

    টীকা

    গ্রিক দোভাষীর দুর্দশা : দ্য গ্রিক ইন্টারপ্রেটার সেপ্টেম্বর ১৮৯৩-এর স্ট্র্যান্ড ম্যাগাজিনে এবং ১৬ সেপ্টেম্বর ১৮৯৩-এর হার্পার্স উইকলিতে প্রথম প্রকাশিত হয়।

    গাঁইয়া জমিদার বংশে : শার্লক হোমসের বাবা বা মা-র কথা কখনো জানা যায়নি।

    ফরাসি শিল্পী ভের্নের : ফ্রান্সের শাসক পঞ্চদশ লুইয়ের সমসাময়িক ক্লদ যোসেফ ভের্নে (১৭১৪-১৭৮৯) ছিলেন নিসর্গ দৃশ্য আঁকার জন্য বিখ্যাত। তার ছেলে শার্ল হোরেস ভের্নে (১৭৫৮-১৮৩৫) বিখ্যাত ছিলেন যুদ্ধের দৃশ্য আঁকিয়ে হিসেবে। শার্ল-এর ছেলে এমিল আঁ হোরেস ভের্নেও (১৭৮৯-১৮৬৩) পারদর্শী ছিলেন যুদ্ধের দৃশ্য আঁকায়।

    রিজেন্ট সার্কাস : পিকাডিলি সার্কাস এবং অক্সফোর্ড সার্কাস, দুই অঞ্চলই কোনো সময়ে রিজেন্ট সার্কাস নামে পরিচিত ছিল।

    সরকারি দপ্তরে হিসেবের খাতা দেখে : শার্লক হোমসের গল্প দ্য ক্রস-পার্টিংটন প্ল্যানস-এ জানা যায় মাইক্রফটের কাজ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ এবং সে ব্রিটিশ সরকারের এক বিশেষ অংশ।

    পলমল : লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অঞ্চলে সেন্ট জেমস স্ট্রিট থেকে ওয়াটার্ল প্লেস হয়ে হে-মার্কেট পর্যন্ত বিস্তৃত রাস্তা।

    মুখচ্ছবিতেই : ১৯৬৫-তে এ স্টাডি ইন টেরর ছায়াছবি নির্মিত হয় শার্লক হোমসের কাহিনি অবলম্বনে। তাতে মাইক্রফটের ভূমিকায় অভিনয় করেন রবার্ট মর্লে। রবার্ট মর্লের চেহারা বা মুখের সঙ্গে আশ্চর্য মিল স্ট্র্যান্ড ম্যাগাজিনে প্রকাশিত সিডনি প্যাগেটের আঁকা ছবিতে মাইক্রফটের চেহারা এবং মুখের।

    বিলিয়ার্ড : ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে ইউরোপের উঁচু সমাজে বিলিয়ার্ড খেলা অসম্ভব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বিলিয়ার্ডের ভক্ত ছিলেন রানি ভিক্টোরিয়া এবং পোন নবম পায়াস।দ্য ডান্সিং মেনগল্পে দেখা যায় ডা. ওয়াটসনও নিয়মিত বিলিয়ার্ড খেলতেন।

    গোলাগুলি-মার্কা বুট : সাধারণ সৈনিকদের জন্য দেওয়া অ্যামুনিশন বুট।

    বিজ্ঞপনটা ছেড়েছি : হোমসের সঙ্গে পরামর্শ না-করেই বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন মাইক্রফট। তাতে মি. মেলাস কিন্তু বিপদে পড়ে যান।

    জে মার্কা : এক ধরনের মোটা নিব-যুক্ত কলম। কলমের গায়ে জে লেখা থাকত।জে ছাড়া জি এবং আর মার্কা কলমও তৈরি করতেন বহু ইংরেজ কলম তৈরির সংস্থা।

    মৃত্যুর ব্যবস্থা করে : ক্রাইদিস এবং মেলাসকে মারবার জন্য কয়লার ধোঁয়ার মতো এমন ঝামেলার পথ কেন বাছল অপরাধীরা? আরও সহজ এবং নিশ্চিত পদ্ধতি তারা গ্রহণ করতে পারত।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপ্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ – আরিফ আজাদ
    Next Article শার্লক হোমস সমগ্র ১ – অনুবাদ : অদ্রীশ বর্ধন

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }