Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    শুনছ, কোথাও আছো কি কেউ?

    ইয়স্তেন গার্ডার এক পাতা গল্প72 Mins Read0

    ৩. বাড়ি

    ৩. বাড়ি

    আমার কানে এলো ঘরের মধ্যে ফোন বাজছে, মিকাও শুনল। হঠাৎ সে কান পরিষ্কার করার জন্য প্রবলভাবে মাথা ঝাঁকাতে শুরু করে।

    ‘আমার কানে একটা ভয়ংকর শব্দ আসছে, আতংকগ্রস্ত হয়ে সে চিৎকার করে। এতে আমার হাসি পায়, ‘এটা তো টেলিফোন বাজার শব্দ,’ আমি বলি।

    এতে করে ও আরো বেশি করে ঘাবড়ে যায়। ‘তোমার কানে টেলিফোনের শব্দটা বিপজ্জনক নয়?’ সে জিজ্ঞেস করে।

    ‘তোমার কানেও নয় এটা’ আমি ব্যাখ্যা করে বলি। ওর সাথে আর বেশি কিছু বলার ছিল না, কারণ ফোন ধরার জন্য এক্ষুনি বাড়ির দিকে ছুটতে হবে। মিকাও পেছনে পেছনে তড়বড় করে ছোটে।

    বাবার ফোন।

    ‘হ্যালো, জো, আমরা এখন হাসপাতালে। সবকিছু ঠিকঠাক চলছে, তবে বাচ্চাটার আসতে আরো কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে। তুমি ঠিক আছ তো? হেলেন চাচী এসেছে কি?’

    ‘না সে এখনও আসেনি, তবে চিন্তা করো না, আমি বেশ আছি।’

    এমন সময় মিকা হুড়মুড় করে হলঘর থেকে বেরিয়ে সোজা কিচেনে গিয়ে ঢোকে। একটা চেয়ারের উপর উঠে সোজা গিয়ে দাঁড়ায় রান্নার টেবিলে।

    আমি অবাক হয়ে ভাবছি হেলেন চাচী আসতে এত দেরী করছে কেন,’ বাবা বলে, ওর কণ্ঠস্বরে উৎকণ্ঠা।

    মিকা হাত বাড়িয়ে কাবার্ডের একটা পাল্লা খুলে ফেলে।

    ‘তুমি কি নিশ্চিত জো, সব ঠিকঠাক চলছে?’ বাবা বলে।

    ঠিক সেই সময় বড় একটা ময়দার ব্যাগ কাবার্ড থেকে গড়িয়ে পড়ে।

    ‘হ্যাঁ হ্যাঁ নিশ্চয়ই,’ আমি বলি।

    আমি লক্ষ্য করি মিকা কিচেনে তুষার ঝড় তুলেছে, তবে এ নিয়ে বাবাকে কিছু বলতে পারলাম না। তাকে তো আর বলা চলে না যে গ্রহান্তরের এক আগন্তুক এসেছে আমাদের বাড়িতে।

    ‘তাহলে তুমি করছ কি?’ বাবা জিজ্ঞেস করে। ইতিমধ্যে মিকা হাঁচি দিতে শুরু করেছে। একবার হাঁচি, আর একবার হাসি।

    ‘কিছু না,’ আমি বলি, ‘আমাকে যেতে হচ্ছে, বাই, ড্যাড।’

    কিচেনে ছুটে যাই আমি, পাঁজাকোলো করে নামিয়ে আনি মিকাকে। ‘তুমি কী করছ?’ আমি বলি।

    মিকা আমার দিকে তাকিয়ে শুধু হাসে, তাই আমি কড়া গলায় বললাম, ‘তুমি কোনো জিনিসে হাত লাগাবে না!’

    এতে করে মিকা চেঁচাতে শুরু করে, ওর চিৎকার এতই তীক্ষ্ণ যে আমাকে কানে আঙুল দিতে হয়। দেখে বোঝা গেল সে সহজে শান্ত হবার নয়, আর যতক্ষণ চাচী হেলেন এসে না পৌঁছায় ততক্ষণ কানে আঙুল দিয়ে ঘুরে বেড়ানোও মুশকিল। ওকে থামানোর জন্য নতুন কিছু একটা ভাবতে হবে।

    প্রথমে আমার হাত পাকাতে থাকি, তারপর মুখে একটা অদ্ভুত ভঙ্গি করি। এতে কাজ না হওয়ায় কিচেনের মেঝেতে নাচা শুরু করে দেই, এক পায়ের ওপর ভারসাম্য রক্ষা করে

    মোরগের মতো সামনে পেছনে লাফালাফি করি। কোনো কিছুতে কাজ দিচ্ছে না, অবশেষে ব্যাগ থেকে এক মুঠো ময়দা নিয়ে হাওয়ায় ছুঁড়ে দেই। হয়তো মিকাকে ময়দা নিয়ে খেলতে না দেওয়ায় ও মন ভার করেছে। তবুও ওর থামার নাম নাই। ওর চেঁচামেচি উঁচু থেকে উঁচুতে উঠছে। আর ওকে শান্ত করতে গিয়ে নিজেকেই আহাম্মক মনে হতে থাকে।

    এরপর মাথায় একটা চমৎকার বুদ্ধি খেলে গেল। পাশে বসে ওর ঘাড়ে আঙুল দিয়ে সুড়সুড়ি দিতে থাকি। সাথে সাথে ওর চিৎকার বন্ধ তারপর একদম চুপচাপ। ঘাড়ে সুড়সুড়ি দেয়া বন্ধ করে দেই। তবে সেটা ছিল ভুল, কারণ সাথে সাথেই আবার চিৎকার শুরু। কাজেই আবার সুড়সুড়ি। এবার গালেও আঙুল ঠোকা। লক্ষ করলাম ওর চামড়া কিন্তু তোমার আমার চামড়া থেকে অনেক আলাদা। এরপর রান্নাঘরে নৈশব্দ, তবে আমার আঙুল সচল থাকে। মাঝে মাঝে আঙুল থামিয়ে কিছু সান্ত্বনার কথা বলি। ধীরে ধীরে বিরতির সময় বাড়িয়ে দিয়ে পরীক্ষা করি, তারপর একসময় একদম থামিয়ে দেই।

    এরপর আমার কাজ হলো মেঝেটা পরিষ্কার করা। ময়দাগুলো ঝাড়ু দিয়ে ময়লা রাখার বালতিতে ফেলে দিই। তারপর মিকার পাশে গিয়ে বসি।

    ‘আমাদের এই গ্রহে খাদ্যবস্তু অপচয় করার অধিকার নাই,’ আমি বলি।

    আমি খুব সদয় মোলায়েম সুরে কথাগুলো বললাম, যাতে না আবার চেঁচামেচি শুরু হয়। তবে ওর গোমড়ামুখের কোনো পরিবর্তন নাই।

    ‘এটাও একটা স্বপ্ন মাত্র। কাজেই যা খুশী করা চলে,’ ওর কণ্ঠে অবাধ্যতার সুর। সবকিছু স্বপ্ন বলে উড়িয়ে দেয়াটা আমার পছন্দ নয়।

    ‘তুমি আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে পার না,’ আমি বললাম। আমি পুরোপুরি জেগে আছি, আর তাছাড়া এখানেই আমার বাস, ওর উত্তরটা আমার ঠিকঠাক মনে আছে।

    ‘তবে আমি তো এখানে বাস করি না, কাজেই আমি নিশ্চয়ই স্বপ্ন দেখছি।’

    আমি সবকিছু ঠিকঠাক জোড়া দিতে পারছি না। ব্যাপারটা আরো বেশি এলোমেলো হয়ে গেল যখন সে বলে :

    ‘আমাকে তাড়াতাড়ি ফিরে যেতে হবে যাতে স্বপ্ন ভাঙ্গার আগেই আমি ফিরে যেতে পারি, তা নাহলে আর কখনই বাড়ি ফিরা হবে না,’ সে আর বেশি কিছু বলার সুযোগ পেল না।

    মিকা আবারো মাথা ঝাঁকিয়ে ওর কান পরিষ্কার করার চেষ্টা করে। ‘আবারো টেলিফোন বাজছে!’ চমকে উঠে বলে ও।

    ‘এবার চাচী হেলেন;’ আমি বলে উঠলাম, এখন কী করা যায়? আমি তো আর চাচীকে ভিতরে নিয়ে এসে বলতে পারি না, এ একজন গ্রহান্তরবাসী আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। মিকাকে লুকিয়ে ফেলার চেষ্টা করতে হবে।

    আমি জানি আমাদের বাড়িতে লুকোবার মতো অনেক ফাঁকফোকর আছে, তবে এবার তো লুকোনোর জিনিসটা কোনো সাধারণ বস্তু নয়। লুকোতে হবে এমন একটা ছেলেকে যে উত্তেজনায় চেঁচাতে শুরু করবে। এও বলা সম্ভব নয় যে মিকা আমার এক বন্ধু আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। সে তো আর দেখতে তোমার আমার মতো নয়।

    দরজার বেল আবারো বাজে, আমি বুঝি যা করার ঝটপট করতে হবে।

    ‘আমরা কি একটু লুকোচুরি খেলব?’ আমি জিজ্ঞেস করি।

    মনে হলো ও আমার কথা বুঝতে পেরেছে, অন্য কোনো গ্রহে যদি জীব থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই সেখানে লুকোবার জায়গাও থাকবে। আর যদি লুকোবার মতো ভালো জায়গা পাওয়া যায়, তাহলে লুকোচুরি খেলার বুদ্ধিটাও মাথায় আসতে বাধ্য। আমার বিশ্বাস যে কোনো গ্রহের প্রাণীদের জন্য প্রথম যে ধারণাটা মাথায় আসবে তা হলো লুকোনো। মিকার হাত ধরে ওকে আমার রুমে নিয়ে গেলাম, সিঁড়ি বেয়ে ওপর তলায় উঠতে উঠতে সে ঘরে জিনিসপত্রের দিকে অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে চেয়ে দেখছিল।

    ‘তুমি আমার রুমে লুকিয়ে পড়তে পার,’ আমি বললাম, ‘তবে কোনো শব্দ করবে না,’ তৃতীয়বারের মতো দরজার বেল বাজার শব্দ আসে, আমি হলের মধ্য দিয়ে দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দেই।

    চাচী হেলেন এতই অবাক হয়ে যায় যেন সে এইমাত্র চাঁদ থেকে পড়ল, যদিও তাকে আমি আপেল গাছের ডাল থেকে কেটে নামাই নি। এক সেকেণ্ডের জন্য আশংকা হলো মিকা তো আবার আমার পিছে পিছে চলে আসেনি!

    ‘ওহো, জো, আমি সত্যি খুব দুঃখিত আমার দারুণ দেরী হয়ে গেছে। বেশ কয়েক ঘণ্টা আগেই আমার এখানে হাজির হওয়া উচিৎ ছিল। গাড়িটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তুমি ঠিক আছ তো? তোমাকে এত আলুথালু দেখাচ্ছে কেন?’ সে জিজ্ঞেস করে, আর বেল বাজানোর পর দরজা খুলতে এত দেরী হলো কেন?’ ওর মেজাজ তেমন খারাপ না হলেও সে তিনটা প্রশ্ন করে বসল। আমি তিনবার বাউ করলাম।

    ‘তোমার বাউ করার মানে কী?’ সে প্রশ্ন করে বসে।

    আমি আবারো বাউ করি।

    ‘এই বাড়ির রেওয়াজ কেউ মজাদার কোনো প্রশ্ন করলে নত হয়ে বাউ করা।

    হেলেন চাচী আমাকে ঠেলে সরিয়ে হল পেরিয়ে রান্নাঘরে ডুকলেন। ভেতরটা দেখে আরেকটা প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন তিনি। ‘জো, সত্যি বল তো, তোমার হয়েছে কি?’

    ‘ময়দাগুলো!’ বুঝতে পারছিলাম না কী বলা উচিত। তারপর মনে পড়ল মেঝে ঝাড়ু দিতে দিতে কী ভেবেছিলাম।

    ‘আমি প্যানকেক বানাবার চেষ্টা করছিলাম,’ আমি বলি, আমাদের পরিবারে আমরা বিশেষ উপলক্ষে সবসময় প্যানকেক তৈরি করে থাকি, সে নত হয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে আদর করে। ‘ভাব তো একবার, তোমার একটা ছোট্ট ভাই বা বোন হয়েছে।’

    ‘ভাই,’ আমি বলি।

    চাচী আমাকে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে কাপড় চোপড়ের ময়দা ঝেড়ে ফেলে। সে প্রতিজ্ঞা করে লাঞ্চে আমাকে প্যানকেক বানিয়ে খাওয়াবে। আর সেজন্য আমার উচিত মিকাকে ধন্যবাদ দেয়া।

    এ পর্যন্ত আমার ব্রেকফাস্ট খাওয়া হয় নাই, তবে আমার ভয় হলো, কিচেনে বসে খাওয়ার সময় ওদিকে চাচী যদি আমার ঘরে যায়, ওকে মিকার কথা তো বলাই হয় নাই। যেইমাত্র শোবার ঘরে গিয়ে ও লম্বা ইজি চেয়ারটায় গা এলিয়ে দিয়েছে, আমি সোজা ছুট দোতালার সিঁড়িটার দিকে।

    ‘আমার লেগো দিয়ে আমি কিছু একটা বানাতে চাই,’ আমি বললাম। মিকা লুকানোর কোনো চেষ্টাই করে নাই। সে বিছানায় বসে বসে আমার ডাইনোসরের বইটা দেখছে। আমি ঘরে ঢুকলে সে আমার দিকে চোখ তুলে তাকাবারও গরজ বোধ করল না। ওর এক হাতে ধরা ছিল আমার ম্যাগনিফাইং গ্লাস।

    ‘এখানে আশেপাশে এ ধরনের অনেক জন্তু জানোয়ার আছে বুঝি?’ সে জিজ্ঞেস করে, ‘শ্!’ আমি ফিস ফিস করি, আমি ওর পাশে বিছানায় বসে পড়ি। ‘ওগুলো ডাইনোসর,’ আমি বলি, ‘বিশাল ঐ প্রাণীগুলো লাখ লাখ বছর আগে এখানে বাস করত, তবে এখন ওগুলো লোপ পেয়ে গেছে।

    মিকা চোখ বড় বড় করে তাকায়।

    ‘ওদের বিকাশ লাভের পূর্বেই?’

    আমি মাথা দোলাই।

    ‘তারা মানুষে পরিণত হওয়ার আগেই?’ যদিও আমি ততক্ষণে এই গ্রহের ইতিহাস সম্বন্ধে অল্প স্বল্প জানতাম, কিন্তু ওর প্রশ্নটা এতই বেমক্কা যে আমি বুঝতে পারছিলাম না কী উত্তর দেব।

    ‘সে সময় কোনো মানুষ জীবিত ছিল না,’ আমি ব্যাখ্যা করে বলি।

    ‘তাহলে তোমরা এলে কোত্থেকে?’ মিকা জিজ্ঞেস করে। প্রশ্নের উত্তরে অমি বাউ করতে ভুলে গেছি। সেজন্যই সম্ভবত সে উত্তরের অপেক্ষায় না থেকে, আমার বইয়ের অক্ষরগুলো আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।

    ‘আর এই ছোট ছোট ছবিগুলো কি?’ এগুলো এত ছোট যে আমার চোখ ব্যথা করছে। ‘শশ্! ওগুলো অক্ষর,’ আমি ফিস ফিস করে বলি। আমি ভুলিনি যে চাচী শোবার ঘরে বসে বসে ভাবছে আমি আমার লেগো নিয়ে খেলছি। কিন্তু ‘এগুলো দিয়ে কী বোঝাচ্ছে?’ যারা পড়তে পারে না, তাদেরকে বোঝানো সহজ নয়, অক্ষর বলতে কী বোঝায়,

    ‘ভালো কথা, মোট ছাব্বিশটা অক্ষর আছে,’ আমি শুরু করি।

    ‘সবগুলো কিন্তু আলাদা আলাদা নয়, কতকগুলো প্রায় একই রকমের,’ মিকা বলে। ‘সে যা হোক, এগুলো তো অঙ্কন বটে, তাই না?’

    ‘আমরা এদেরকে বলি অক্ষর,’ আমি বলি।

    ‘ওদের কয়েকটাকে একত্র করে আমরা শব্দ তৈরি করি, ওদের দেখাকে আমরা বলি পড়া।’ মিকাকে হতবিহ্বল দেখায়।

    ‘এই বইয়ের সব শব্দগুলোই ডাইনোসরদের নিয়ে,’ আমি বলে চলি। মিকা বইটাকে ওর চোখের কাছে তুলে ধরে যাতে করে সে ভালোভাবে দেখতে পারে। সে বড় ম্যাগনিফায়িং গ্লাসটাও তুলে ধরে। তারপর বইটা কোলের ওপর ছেড়ে দেয়। নাহ্, এটা কোনো কাজের না!’ ও বলে ‘আমি বলতে পারব না এদের মানে কি?

    ‘আমি কি পড়ে শোনাব?’ আমি জিজ্ঞেস করি।

    সে বইটা আমার দিকে ঠেলে দেয়, আর আমি বইটা পড়তে থাকি। ডাইনোসরদের প্রথম দিককার গল্প। গল্প পড়ার সাথে সাথে শব্দগুলোর ওপর দিয়ে আঙুল সরাতে থাকি।

    ‘স্তন্যপায়ী কী?’ মিকা মাঝখানে প্রশ্ন করে।

    ‘যেসব প্রাণী জীবন্ত সন্তান প্রসব করে, তাদের বলে স্তন্যপায়ী,’ আমি ব্যাখ্যা করে বলি। যেমন বিড়াল গরু, হাতি, তিমি।’

    ‘কিন্তু সব বাচ্চারাই তো জীবন্ত,’ মিকা বাধা দিয়ে বলে।

    আমি ওকে স্তন্যপায়ী আর অন্য প্রাণীদের পার্থক্য বোঝাতে যাব, যে স্তন্যপায়ী প্রাণীরা প্রথম দিকে তাদের মায়ের দুধ খেয়ে বাঁচে, ঠিক তখনি চাচী হেলেনের কণ্ঠস্বর কানে আসে। ‘জো! তুমি কি এখন একটু ব্রেকফাস্ট খাবে?’ উঁচু গলায় চাচীর ডাক কানে আসে।

    ‘না ধন্যবাদ!’ আমি জোর গলায় উত্তর দেই, যদিও ব্রেকফাস্টের চাহিদাটা পুরো মাত্রায় ছিল।

    তারপর ওর উপরে উঠে আসার পায়ের শব্দ শুনতে পাই।

    ‘আমি আসছি!’ আমি আবার চেঁচিয়ে বলি।

    আমি নিচের দিকে ছুটতে গিয়ে চাচীর সাথে

    ধাক্কা খাই, ‘উফ্‌!’

    সে থেমে যায়। ‘ব্যাপার কী জো?’

    ‘কিছু না! বাইরে একটু খেলতে যাব।’

    চাচীর মাথায় যদি আমার ঘরটাতে উঁকি দেয়ার বুদ্ধি খেলে যেত, তাহলে তার জীবনের সবচেয়ে বড় শক খেত। সৌভাগ্যবশত সে এতই অবাক হয়েছে যে আমার সাথে সেও নিচে নেমে আসে।

    সামনের দরজা পর্যন্ত যাওয়ার আগেই আমাকে একটা মতলব বের করতে হবে যাতে করে মিকাকে বের করে আনা যায়। ঠিক তখনই চোখ পড়ল শোবার ঘরে ভ্যাক্যুয়াম ক্লিনারটার ওপর।

    ‘তুমি কি ঘর পরিষ্কার করতে যাচ্ছ?’ আমি জিজ্ঞেস করি।

    সে মাথা দোলায়। ‘সবখানে ময়দা ছড়িয়ে রয়েছে।

    ‘দুঃখিত আন্টি হেলেন!’ আমি বলি। ‘ঠিক আছে তাহলে তোমাকে আর আটকাবো না।’ সে হতাশভাবে মাথা ঝাঁকায়, তারপর ক্লিনারের প্লাগটা ঢুকিয়ে সুইচ অন করে দেয়। এবার আমি উপর তলায় ছুটে গেলাম। মিকা পাথর হয়ে বসে আছে। হাত দিয়ে ওর কান চেপে ধরা।

    ‘এটা শুধু ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের শব্দ, কিছুক্ষণের মধ্যেই সব আবর্জনা সাফ হয়ে যাবে। আমরা এখন গুড়ি মেরে বের হয়ে যেতে পারি।’

    আমি ওর হাত ধরে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলাম।

    পাখির ছানার মতো ওর ছোট্ট হাতটা আমার হাতে বেশ লাগে।

    আমরা যখন হলঘরে নেমে এলাম, ততক্ষণে চাচী হেলেন কিচেনে চলে গেছে। সৌভাগ্যবশত সে আমাদের দিকে পেছন ফিরে দাঁড়িয়ে ছিল। দরজার দিকে রওনা দেয়ার আগে মিকা ওকে এক নজর দেখে নিল। আমার মনে হয় না ওর সাথে পরিচিত হওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা ছিল তার।

    বাগানে পৌঁছে ও আরো কয়েকবার ক্যাঙ্গারু লাফ দেয়। ওর তিড়িং- বিড়িং লাফ আর গুনগুন গান শুনে মনে হয় একশ বছর ঘুমিয়ে থাকার পর এইমাত্র জেগে উঠল।

    আমার মনে একটা ভাবনাই খেলে যাচ্ছিল। বাড়ির অসংখ্য জানালা বাগানের দিকে খোলা, কাজেই বেশিক্ষণ এখানে থাকা নিরাপদ নয় তবে আমার একটা প্ল্যান ছিল…

    1 2 3 4 5 6 7 8
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleইমদাদুল হক মিলনের বিবিধ রচনা
    Next Article সোফির জগৎ – ইয়স্তেন গার্ডার

    Related Articles

    ইয়স্তেন গার্ডার

    শুনছ, কোথাও আছো কি কেউ?

    August 13, 2025
    ইয়স্তেন গার্ডার

    সোফির জগৎ – ইয়স্তেন গার্ডার

    July 10, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.