Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    শেষ নাহি যে – ইন্দ্রনীল সান্যাল

    ইন্দ্রনীল সান্যাল এক পাতা গল্প182 Mins Read0

    শেষ নাহি যে – ১৪

    বাইক চালাচ্ছে মন্টু। তার পিছনে সুদাম। একদম পিছনে বিহান। বাইকের আসনে এগিয়ে পিছিয়ে বসে কোনওরকমে ব্যবস্থা হয়েছে। মন্টুর মাথায় হেলমেট আছে। তার কাছে অতিরিক্ত একটা হেলমেট ছিল। সেটা

    সুদাম পরেছে। বিহান হেলমেটহীন। রাস্তায় পুলিশ ধরলে কী হবে কে জানে!

    ফোরশোর রোড জনহীন। পুলিশ, পাবলিক বা মিলিটারি— কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। ফাঁকা রাস্তা দিয়ে দ্রুতগতিতে বাইক যাচ্ছে।

    রাস্তার ডিভাইডারে লাগানো রেলিংয়ের দিকে তাকিয়ে বিহান বলল, “মন্টুদা, বাইক দাঁড় করাও।”

    “কেন গো?” বাইক না থামিয়েই প্রশ্ন করেছে মন্টু, “এই সব রাস্তা যত তাড়াতাড়ি পেরিয়ে যাওয়া যায়, ততই ভাল। ব্রিজে ওঠার পরে দাঁড়াতে বোলো। ওখানে কোনও ঝঞ্ঝাট নেই।”

    “ব্রিজে একবার উঠে গেলে আমার কাজ হবে না। তুমি প্লিজ় দাঁড়াও।” হাত বাড়িয়ে মন্টুর কাঁধ খামচে ধরেছে বিহান। বাধ্য হয়ে মন্টু বাইক দাঁড় করাল। “কী হল? পেচ্ছাব করবে?”

    “না,” রাস্তার ডিভাইডারে লাগানো রেলিং-এর দিকে দৌড়েছে বিহান। এখানে গাদা গাদা পতাকা লাগানো। কিশলয় পার্টি, খরাজ পার্টি, গণতান্ত্রিক মোর্চা— সব দলেরই আছে। একটু বড় পতাকাগুলো সরু তার দিয়ে রেলিং-এর সঙ্গে আটকানো। অপেক্ষাকৃত ছোট পতাকাগুলো সুতলি দড়ি দিয়ে বাঁধা। বড় পতাকার দিকে হাত বাড়াল না বিহান। পটাপট সুতো ছিঁড়ে তিন পার্টির তিনটে করে ফ্ল্যাগ খুলে আবার বাইকের পিছনে বসল।

    মন্টু বাইকে স্টার্ট দিয়েছে। হুশ করে চলে এল শিবপুরের শ্মশান। এখান থেকে ডানদিকে ঘুরলেই রিভারসাইড মল। এখানকার মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখা নিয়ে কত মান-অভিমান হয়েছিল দরিয়ার সঙ্গে! সেই সব দিনের কথা মনে পড়ায় বিহানের ঠোঁটের কোণে হালকা হাসি ফুটে উঠেই মিলিয়ে গেল। সে জিজ্ঞেস করল, “মন্টুদা, তুমি কোনও পার্টি করো নাকি?”

    “কেন?” বাইক চালাতে চালাতে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে মন্টু।

    “এমনিই জিজ্ঞেস করলাম। আমি রাজনীতির কিছু বুঝি না।”

    মন্টু বলল, “আমি কোন দল করি সেটা জেনে তুমি কী করবে? পাঁচ মিনিট পরেই তুমি তোমার রাস্তা দেখবে, আমি আমার রাস্তা দেখব।”

    সুদাম হাসতে হাসতে বলল, “এই সব কথা বাদ দাও। সামনেই ব্রিজে ওঠার গেট। টাকা বার করো।”

    টোল প্লাজ়ায় টাকা দিয়ে কুপন কাটার পরে বিহান বলল, “পতাকাগুলো আমার কাছে রাখলাম। সামনে যে দল দেখব, সেই দলের পতাকা সুদামদার হাতে ধরিয়ে দেব। সুদামদা সেটা বাইকের হ্যান্ডেলে বেঁধে দেবে। মন্টুদা, তোমার আপত্তি নেই তো?”

    মন্টু কোনও কথা না বলে বাইক চালাচ্ছে। সুদাম গলা ছেড়ে গান ধরল, “যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে!”

    গানে গানে ব্রিজ শেষ হয়ে এসেছে। বিহান বলল, “মন্টুদা, তুমি বাঁ দিকের রাস্তা দিয়ে চলো। যেটা ফোর্ট উইলিয়ামের দিকে নেমে গেছে। আমরা রেড রোড হয়ে বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজ যাব।”

    মন্টু বাইকের গতি না কমিয়ে বলল, “অকারণে ঘুরপথে যাবে কেন? সামনে রাস্তা ফাঁকা।”

    “না না। তুমি বাঁদিকের রাস্তা ধরো!” অনুরোধ করে বিহান। সেটা কানে না তুলে সোজা পিটিএসের দিকে এগোচ্ছে মন্টু।

    দূর থেকেই দেখা যাচ্ছে, অবরোধ একটা আছে। জনাদশেক গণতান্ত্রিক মোর্চার সমর্থক দলীয় পতাকা নিয়ে ডিভাইডারে বসে রয়েছে।

    বিহান গণতান্ত্রিক মোর্চার পতাকা সুদামের দিকে বাড়িয়ে দিল। নিজেও একটা নিল। কিশলয় আর খরাজ পার্টির পতাকা রাস্তার ধারে ফেলে দিল। আশা করা যায়, এত দূর থেকে ওরা দেখতে পাচ্ছে না।

    মন্টু বাইকে পতাকা বাঁধতে দিল না। এখন সুদামের হাতে দুটো পতাকা। বিহানের হাতে একটা। বাইক যখন অবরোধকারীদের সামনে দাঁড়াল, তখন সুদাম আর বিহান বীরবিক্রমে পতাকা দোলাচ্ছে।

    রোগাপাতলা একটা ছেলে বলল, “এখানে আমরা অবরোধ করছি। আপনারা ফিরে যান।”

    বিহান বুঝল, আর কিছু করার নেই। এখানে বাইক থেকে নামতেই হবে। বাকি রাস্তা হেঁটে যাওয়া ছাড়া গতি নেই। সে মন্টুর দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলল, “আমি বললাম ওইদিককার রাস্তা দিয়ে যেতে…”

    সুদামও বাইক থেকে নেমে পড়েছে। একটিও কথা না বলে বাইক ঘুরিয়ে অন্য একটা লেনে উঠে ফেরার রাস্তা ধরল মন্টু। বিহান আর সুদাম সামনের দিকে এগোল।

    “এদিকে রাস্তা বন্ধ,” বলল রোগাপাতলা ছেলেটি, “আপনারা কোথায় যাবেন?”

    “আমি রাস্তায় গানবাজনা করি ভাইটি,” বিহানকে বলতে না দিয়ে কথা শুরু করেছে সুদাম, “আজ ছুটির দিনে সারা শহর জুড়ে গান গাইতে গাইতে চলেছি। তোমরা শুনবে?”

    “হাতে পতাকা কেন?” বিনয়ের সঙ্গে জিজ্ঞেস করল রোগাপাতলা।

    “তোমার পতাকা যারে দাও, তারে বহিবারে দাও শকতি!” হাসছে সুদাম, “হ্যাঁ গো ভাই, তোমরা একাই পার্টি করবে? আমরা যারা গানটান গাই, ঘুরেটুরে বেড়াই, ভিক্ষেটিক্ষে করি, তাদের কি পতাকায় কোনও অধিকার নেই? পার্টি কি শুধু তোমাদের? আমাদের নয়?”

    “অবশ্যই আপনাদের,” জানাল রোগাপাতলা, “তা আপনি এখন কী গান শোনাবেন?”

    “তোমরা যে গান বলবে,” পায়ে ঘুঙুরের বোল তুলেছে সুদাম, হাতের একতারায় আঙুল চলছে।

    “বলছি দাঁড়ান। তার আগে আপনার বন্ধুর সঙ্গে একটু আলাপ-পরিচয় করি।” বিহানের দিকে ফিরেছে রোগাপাতলা, “আপনি কোথায় যাচ্ছেন দাদা? আপনাকে দেখে তো ঠিক রাস্তায় গান গাওয়া পার্টি বলে মনে হচ্ছে না।”

    বিহান জানত, প্রশ্নটা আসবে। সে উত্তরও ঠিক করে রেখেছে, “আমরা দু’জনেই বকুলতলায় থাকি। ট্রেনে করে হাওড়া আসছিলাম। মাঝরাস্তায় জানলাম কলকাতা শহরে গন্ডগোল হয়েছে। আপ আর ডাউন, সব ট্রেন বন্ধ। বকুলতলায় ফেরার উপায় নেই। কলকাতায় আত্মীয়ের বাড়িতে রাত কাটিয়ে কাল ফিরে যাব।”

    “আত্মীয়বাড়ি কলকাতার কোথায়?”

    রোগাপাতলার প্রশ্নে বিরক্ত হয়ে বিহান বলল, “আপনি কি আমাকে জেরা করছেন?”

    “হ্যাঁ,” রোগাপাতলার মুখে এখনও বিনীত হাসি।

    এই প্রথম বিহানের ভয় করতে শুরু করল। এই ছেলেগুলোর শরীরের ভাষা শ্বাপদের মতো। শ্বাস বন্ধ করে, থাবা গেড়ে, পেশি সংকুচিত করে অপেক্ষা করছে। একটু এদিক-ওদিক হলেই ঝাঁপিয়ে পড়বে। মাথা থেকে বিরক্তি আর ভয় হটিয়ে বিহান বলল, “নাগেরবাজারে আমার মামার বাড়ি।” সত্যি কথাই বলেছে বিহান। শ্রীরূপার বাপের বাড়ি নাগেরবাজারে।

    “নাগেরবাজার যাওয়ার জন্যে দ্বিতীয় হুগলি সেতু কেন? হাওড়া ব্রিজ ধরলে কম হাঁটতে হত।”

    “আমরা তো হেঁটে আসছিলাম না!” একটু একটু করে কনফিডেন্স ফিরে পাচ্ছে বিহান, “আমরা মোটরবাইকে আসছিলাম। ওই বাইকওলা আমাদের কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা নিয়েছে। এইটুকু আসার জন্যে।”

    “আর এই পতাকাগুলো?”

    “আমি ভাই গণতান্ত্রিক মোর্চার সাপোর্টার,” মুঠোবন্দি হাত উপরে তুলে বিহান বলে, “আমার নেতার নাম মনোজ বসু। আজ মানসী বসুকে খরাজ পার্টির গুন্ডারা যে ভাবে খুন করল, তার পরে হাতে ঝান্ডা না নিয়ে কোনও উপায় নেই।”

    “তা ঠিক,” বলল রোগাপাতলা, “যাঁর বাইকে চড়ে আপনারা এতদূর এলেন, তাঁর নাম মন্টু হাইত। বঙ্গবাসী হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়। খরাজ পার্টির খুব ঘনিষ্ঠ। উনি আপনাদের বাইকে ওঠাতে আপত্তি করেননি?”

    বিহান ঘাবড়ে গিয়েছে। রোগাপাতলা ছেলেটি মন্টুর নাম জানল কী করে? কী করে জানল সে কোথায় কাজ করে, কী কাজ করে! মন্টু ওই জন্যেই বাইকের হ্যান্ডেলে পতাকা বাঁধতে দেয়নি।

    বিহান বলল, “উনি খরাজ পার্টির সমর্থক হতে পারেন। কিন্তু আমাদের জন্যে যেটা করেছেন সেটার জন্যে ওঁর প্রশংসা করতেই হবে। এই অশান্তির বাজারে যে ভাবে আমাদের নিয়ে এলেন! যাই হোক। আমরা এবার যাই? অনেক দূর যেতে হবে।”

    কথা বলতে বলতে বিহান খেয়াল করল, ফ্লাইওভারের আড়াল থেকে একগাদা ছেলে বেরিয়ে আসছে। সবার হাতে খরাজ পার্টির পতাকা। ছেলেগুলোর চেহারা দেখেই বোঝা যায়, এরা কথা বলে কম, হাত চালায় বেশি। ওদের মধ্যে লম্বাচওড়া একটা ছেলেকে দেখে বিহান ঘাবড়ে গিয়ে বলল, “ওরা কারা?”

    বিহানের পিছন থেকে চেনা একটা গলা বলল, “আমরা সবাই খরাজ পার্টির সদস্য।”

    “সনৎ তুই?” চমকে উঠে পিছন ফেরে বিহান। দেখে সনৎ আস্তে আস্তে তার দিকে এগিয়ে আসছে। বিহান বলল, “মন্টুদার সঙ্গে তোর আগে থেকে কথা হয়ে ছিল! ওই জন্যেই লোকটা রেড রোডের দিকে গেল না! ওই জন্যেই মন্টুদাকে তোরা আটকালি না!”

    সনৎ এখন বিহানের এক ফুটের মধ্যে। বিহানের দিকে তাকিয়ে সে বলল, “একদম ঠিক বলেছিস।” তারপর চ্যালাদের দিকে তাকিয়ে বলল, “রাজ্য সরকারের তরফ থেকে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী বারংবার টিভিতে, রেডিয়োয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুরোধ করছেন, ‘তদন্ত নিজের পথে এগোক। কাউকে আগে থেকে দোষী সাব্যস্ত করবেন না। খাপ পঞ্চায়েত বসাবেন না।’ কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটা ঘটছে। গণতান্ত্রিক মোর্চার এই ক্যাডার একটু আগে প্রকাশ্যে বলেছে, ‘আজ মানসী বসুকে খরাজ পার্টির গুন্ডারা খুন করল।’ আমরা, মানে খরাজ পার্টির সমর্থকরা কি এটা মেনে নেব?”

    কেউ কোনও কথা বলল না। সবাই জানে, এর পরে কী হতে চলেছে।

    সনৎ বলল, “আমরা এই মালটার বিরুদ্ধে এখানেই ব্যবস্থা নেব। তবে ভায়োলেন্সের মাধ্যমে কখনওই নয়।”

    “সনৎ! আমায় যেতে দে! প্লিজ়!” বিহানের সব সাহস শেষ। সে আবার হাতজোড় করেছে ছোটবেলার বেস্ট ফ্রেন্ডের সামনে। বড়বেলার একমাত্র শত্রুর সামনে। তার পেশাদার জীবন, তার লাভ লাইফ, তার বিবাহিত জীবন, তার নিজের বাড়ি, তার শ্বশুরবাড়ি, ভাবী সন্তানের জন্ম— সব কিছুর সামনে দেওয়াল তুলে দিয়েছে এই সনৎ। হার মানা ছাড়া, ক্ষমা ভিক্ষা চাওয়া ছাড়া বিহানের সামনে অন্য কোনও অপশন নেই।

    “যেতে দেব,” বলছে সনৎ, “তার আগে হাতজোড় করে বল, আমি, বিহান চট্টোপাধ্যায়, গণতান্ত্রিক মোর্চার সমর্থক…”

    “তুই জানিস আমি গণতান্ত্রিক মোর্চার সমর্থক নই!” কাঁদছে বিহান।

    রোগাপাতলা তার ঘাড়ে রদ্দা কষিয়ে বলল, “দলের ফ্ল্যাগ হাতে নিয়ে মিথ্যে কথা বলা?”

    মার খেয়ে কুঁকড়ে গেছে বিহান। ঘাড় ঝনঝন করছে। ফ্ল্যাগ ফেলে দিয়ে সে হাতজোড় করে বলল, “আমি, আমি… বিহান চট্টোপাধ্যায়, গণতান্ত্রিক মোর্চার সমর্থক…”

    “আজ থেকে খরাজ পার্টিতে যোগদান করলাম। আগে বলতাম, ‘মনোজ বসু জিন্দাবাদ।’ আজ থেকে বলব, ‘মনোজ বসু মুর্দাবাদ।’ ”

    বিহানের চোখ দিয়ে জল পড়ছে। সে তোতাপাখির মতো কথাগুলো আওড়াচ্ছে। জোড়া হাত নামিয়ে নিতেই সনৎ ঘাড় নেড়ে বলল, “প্রায়শ্চিত্ত শুরুই হল না। এত তাড়াতাড়ি হাত নামিয়ে নিলে হবে?”

    বিহান আবার হাতজোড় করেছে।

    সনৎ বলল, “বল, ‘আগে বলতাম সুধাকর ঘোষ মুর্দাবাদ। আজ থেকে বলব সুধাকর ঘোষ জিন্দাবাদ!’ ”

    বিহান বলল।

    “এবার কান ধরে কথাগুলো বলতে থাক।”

    “মনোজ বোস মুর্দাবাদ, সুধাকর ঘোষ জিন্দাবাদ,” কান ধরে আওড়ে যাচ্ছে বিহান। একবার, দু’বার, তিন, চার, ছয়, দশ…

    “থামলি কেন?” বিহানের পিছনে লাথি কষিয়েছে লম্বাচওড়া। বিহান হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেল। সুদাম দৌড়ে গিয়ে বিহানকে তুলে ধরল। কাঁধ থেকে নিয়ে নিল ব্যাকপ্যাক। বিহান উঠে দাঁড়াল। তার দিকে তাকিয়ে ভুরু কুঁচকে সনৎ বলল, “হাতজোড় করে বললে প্রায়শ্চিত্তটা ঠিক হচ্ছে না। অন্য কোনও শাস্তি মাথায় আসছে?” রোগাপাতলা সুযোগ লুফে নিয়ে বলল, “কান ধরে বলালে কেমন হয়? ইশকুলে পড়া না পারলে মাস্টাররা যে রকম শাস্তি দিত?”

    “দারুণ আইডিয়া!” সনৎ খুব খুশি, “তার সঙ্গে ওঠবোসটাও করুক।”

    লম্বাচওড়া বলল, “কান ধরে ওঠবোস করুক আর বলুক।”

    সনৎ আর তার স্যাঙাতদের মধ্যে আলোচনা চলছে আর বিহানের মাথার মধ্যে এই শীতকালে আষাঢ়ের মেঘ ঘনিয়ে আসছে। আজ সকালেই সে দরিয়াকে বলেছিল, “আমি যতক্ষণ না তোমার কাছে পৌঁছচ্ছি ততক্ষণ আমরা দুঃখ, কষ্ট, ব্যথা, বেদনা— এই সব নিয়ে ভাবব না। এই সব নিয়ে কথা বলব না। আমরা অন্য কথা ভাবব। আমরা অন্য কথা বলব।”

    বিহান নিজে এখন সেই নিয়ম মানবে। এরা যতই অত্যাচার করুক না কেন, সেটা গায়ে মাখবে না। যখন মানুষ সম্পূর্ণ ভাবে হেরে যায়, যখন তার আর কিছু করার থাকে না, যখন সে গিলোটিনের তলায় গলা দেয় অথবা ফাঁসির দড়ির দিকে এগিয়ে যায় বা ইলেকট্রিক চেয়ারে বসে অপেক্ষা করে অমোঘ মুহূর্তের জন্য, তখন সে কী ভাবে? আর কয়েকটা সেকেন্ড! তার পরেই সব ঠিক হয়ে যাবে! নাছোড়বান্দা মানুষ এই ভাবেই নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে। ‘নেভার সে ডাই! দু’বেলা মরার আগে মরব না। আমি ভয় করব না।’

    বিহানও হার মানবে না। সে এখন ভাল ভাল কথা ভাববে। নিজের জীবনের সেরা মুহূর্তগুলোর স্লাইড শো হবে মনের মধ্যে। বাইরে কী হচ্ছে, তা নিয়ে মাথাই ঘামাবে না!

    বিহানের মনে পড়ছে, বিয়ের কিছুদিন আগে সে আর দরিয়া ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে বেড়াতে গিয়েছিল। দরিয়ার বক্তব্য ছিল খুব সোজাসাপটা। “কলকাতার প্রেমিক-প্রেমিকারা যেখানে যেখানে যায়, আমাদেরও সেই সব জায়গায় যেতে হবে। বিয়ের পরে নয়, আগে। কোর্স কমপ্লিট না করে পরীক্ষায় বসা যাবে না।”

    ঘোর কেটে গেল বিহানের। শুনতে পেল সনৎ বলছে, “আমি বরং শুভ উদ্বোধনটা করে দিই। কী বল বিহান?” তারপর বিহানের গালে একটা থাপ্পড় মেরে বলল, “শুরু কর শালা!”

    ভিক্টোরিয়ায় গিয়ে একদম ভাল লাগেনি দু’জনের। এখানে প্রেমিক-প্রেমিকারা বিশেষ আসে না। যারা ঝোপের আড়ালে ঘনিষ্ঠভাবে বসে আছে, তাদের চেহারা প্রেমিক-প্রেমিকাদের মতো নয়। পরের প্ল্যানটা বিহানের মাথায় আসে। দু’জনে মিলে রাস্তা পেরিয়ে চলে যায় তারামণ্ডলে। সেখানে বাংলায় অনুষ্ঠান শুরু হতে চলেছে। টিকিট কেটে ভিতরে ঢুকে দরিয়া আর বিহান অবাক! গোটা তারামণ্ডল জুড়ে তাদের মতো পাঁচটি বুদ্ধিমান বাঙালি প্রেমিক-প্রেমিকা ছাড়া আর কোনও দর্শক নেই। তারপর আর কী! অন্ধকার প্ল্যানেটোরিয়ামের আকাশে অমাবস্যার অন্ধকার। একটা-দুটো করে তারা ফুটে উঠছে। দেখা যাচ্ছে সপ্তর্ষিমণ্ডল, লুব্ধক, ধ্রুবতারা। মহাকাশকে সাক্ষী রেখে বিহান চুমু খেয়েছিল দরিয়াকে। ওই গভীর ও তীব্র আশ্লেষ, ওই অলৌকিক প্রেম আর ফিরে আসেনি। ওইরকম জাদু-ঝলমলে মুহূর্ত জীবনে একবার এলেই সে জীবন সার্থক। দরিয়া বলেছিল, “তুমি যদি ঠিক করে থাকো যে আমার সঙ্গেই বাকি জীবনটা কাটাবে, তা হলে দেরি করে লাভ নেই। শুরু করা যাক। বাড়িতে বলো বিয়ের ব্যবস্থা করতে।”

    বিহান কান ধরে ওঠবোস করেছে আর বলছে, “মনোজ বোস মুর্দাবাদ, সুধাকর ঘোষ জিন্দাবাদ। মনোজ বোস মুর্দাবাদ, সুধাকর ঘোষ জিন্দাবাদ!” পনেরো, কুড়ি, তিরিশ, চল্লিশ, ষাট… সত্তরে এসে হাল ছেড়ে দিল বিহান। কত কাল এসব করে না। জল থেকে তুলে আনা মাছের মতো খাবি খাচ্ছে সে।

    লম্বাচওড়া তার গালে থাপ্পড় মেরে বলল, “থামলি কেন? শুরু কর!”

    বিহানের হাঁটু ঠকঠক করে কাঁপছে। সে কান ধরে হাঁটু গেড়ে বসল। চোখ বুজে বলল, “মনোজ বোস মুর্দাবাদ, সুধাকর ঘোষ জিন্দাবাদ।”

    বিহানের চোখ বন্ধ। মনের মধ্যে সে নতুন নতুন দৃশ্যের জন্ম দিচ্ছে। যা কিছু ভাল, যা কিছু সুন্দর, সেই সব দৃশ্য ফুটে উঠছে অন্তরমহলে।

    বিয়ের পোশাকে দরিয়াকে কী সুন্দর যে দেখতে লাগছে! পেঁয়াজ খোসা রঙের বেনারসিতে রূপ আরও খুলেছে। মাথায় পরেছে টিকলি। নাকে নথ! পাড়ার ছেলেরা পিঁড়ি উঁচু করে ধরেছে। শুভদৃষ্টির সময়ে দারুণ মজা হল। কান ধরে উঠবোস করতে করতে বিহান দেখল, দরিয়া মুখের সামনে পানপাতা ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আশপাশ থেকে সবাই চিৎকার করে বলছে পানপাতা সরানোর জন্যে। দরিয়া খুব আস্তে আস্তে পাতা সরাচ্ছে। এই স্লো মোশন ভিডিয়োগ্রাফারের হুকুমে হচ্ছে! পানপাতা সরানোর পরে লজ্জায় বিহানের দিকে তাকাচ্ছে না দরিয়া। মাথা ঝুঁকে রয়েছে, চোখ মাটির দিকে। সবাই বলছে, “কী রে! এত লজ্জা কীসের? তাকা!” হাঁটু ভেঙে বসছে বিহান। কান ধরে বলছে, “মনোজ বোস মুর্দাবাদ, সুধাকর ঘোষ জিন্দাবাদ।” দরিয়া লাজুক চোখ উপরের দিকে তুলছে। বিহানের চোখে চোখ রাখছে। তারপর টুক করে চোখ মেরে আবার লজ্জায় রাঙা হয়ে যাচ্ছে। এবার বিহানের লজ্জা পাওয়ার পালা। লাজুক মেয়ের এ কী পরিবর্তন রে বাবা! “মনোজ বোস মুর্দাবাদ, সুধাকর ঘোষ জিন্দাবাদ।” বিহান দাঁড়িয়ে রয়েছে মালাবদলের জন্যে। পিঁড়িতে বসে থাকা দরিয়া এখন বিহানের চেয়ে উপরে। সেই দেখে বন্ধুরা বিহানকে পাঁজাকোলা করে আরও উঁচুতে তুলে ধরল। এই সুযোগে বিহান টুক করে মালাটা পরিয়ে দিল। বিহান আর দরিয়ার বন্ধুরা সবাই হোহো করে হাসছে! হাসছে সনৎও। বলছে, “এবার তোর ছুটি! পালা!” তারপর রোগাপাতলার দিকে তাকিয়ে ইশারা করছে।

    বিহান দৌড় দিয়েছে। পিটিএস থেকে বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজ কতটা রাস্তা? সে পারবে না, পৌঁছতে? হ্যাঁ সে পারবে। তাকে পারতেই হবে!

    পিছনে ছুটে এল রোগাপাতলা, লম্বাচওড়া আর সনতের বাকি স্যাঙাতেরা। লম্বাচওড়া বিহানের ঘাড়ে এক ধাক্কা মারতেই সে ছিটকে পড়ল রাস্তার উপরে। সঙ্গে সঙ্গে দশ-বারোজন মিলে বেমক্কা হাত-পা চালাতে লাগল। গণধোলাই খেয়ে রাস্তায় পড়ে গেল বিহান।

    পিটিএস থেকে একটু দূরে সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর বা ইস্টার্ন কমান্ড। সেখান থেকে দুই ট্রাক ভরতি মিলিটারি গেটের বাইরে বেরচ্ছে। সুদাম আর পারল না। সনতের দলবলকে টপকে ওদের দিকে দৌড় দিল। চিৎকার করতে লাগল, “এদিকে আসুন। এদিকে আইয়ে! একজনকে পিটিয়ে মেরে ফেলছে। এই যে! শুনছেন!”

    একের পর এক ঘুসি আছড়ে পড়ছে বিহানের মুখে। তার মনে পড়ে যাচ্ছে ফুলশয্যার কথা…

    বিবাহ এবং ফুলশয্যা— দুটোই হয়েছিল দরিয়ার বাড়ি। একই দিনে। বিহানের বাড়ি থেকে কেউ উপস্থিত ছিল না। বাসর মাতিয়ে রেখেছিল বিহান আর দরিয়ার বন্ধুরা। রাত এগারোটা বাজে, সাড়ে এগারোটা, পৌনে বারোটা… কারও যাওয়ার নাম নেই। একের পর এক গান গেয়ে যাচ্ছে। বিহান বাধ্য হয়ে বলেছিল, “এবার তোরা যা।”

    “কেন লা বকুলফুল? আমরা কী পাপ করিচি যে চলে যেতে বলচিস?” নিষ্পাপ দৃষ্টি বিছিয়ে জিজ্ঞেস করেছিল মণিদীপা।

    “ফুলশয্যে? সেটা কী লো বকুলফুল? আমায় বল। শুনে প্রাণটা জুড়োক!” নির্বোধের ভূমিকায় অভিনয় করে ফাটিয়ে দিচ্ছে মণিদীপা।

    “স্বামী আর স্ত্রী একে অপরকে জানে, চেনে…” বলেছিল বিহান।

    “বকুলফুল তো তোমাকে ইশকুল থেকে জানে এবং চেনে। আর কত জানবে, হে প্রাণনাথ!” বুকে হাত দিয়ে ঘনঘন শ্বাস ফেলছে মণিদীপা। চোখ ফড়ফড় করে দরিয়ার দিকে তাকিয়ে বলছে, “বল না বকুলফুল। আমরা একন কিচুতেই যাবুনি কো।”

    বিহান আর দরিয়াকে বাঁচিয়ে দিলেন সাম্যব্রত। ঘরে ঢুকে গলা খাঁকরে বললেন, “রাত বারোটা বাজে। তোমাদের বাড়ি ফিরতে দেরি হলে সেটা গৃহকর্তা হিসেবে আমার অসম্মান। তোমরা এবার এসো।”

    সাম্যব্রতর কথা শুনে মণিদীপা অবাক হয়ে বলল, “ওব্বাবা! এত দেরি হয়ে গেছে? বুঝতেই পারিনি। স্যরি স্যরি। আমরা যাচ্ছি।” তারপর দরিয়াকে পটাং করে চোখ মেরে দলবল নিয়ে কেটে পড়ল। সদর দরজা পর্যন্ত গিয়ে তাদের বিদায় জানিয়ে দরজা বন্ধ করে বিহান দেখল, সাম্যব্রত আর সীমা নিজেদের ঘরের দরজা বন্ধ করে শুয়ে পড়েছেন। দরিয়াও ঢুকে গিয়েছে শোওয়ার ঘরে। ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে বিহান দেখল, দরিয়া জানলার ধারে দাঁড়িয়ে রয়েছে। চোখে জল।

    সারাদিন খাটাখাটনি গিয়েছে। পেটে প্রায় কিছু পড়েনি। বিহান খুব টায়ার্ড। প্ল্যান আছে এক ঘুমে রাত কাবার করার। দরিয়া কী ভাবল তাতে বয়েই গেল। কিন্তু এখন দরিয়ার চোখে জল দেখে তার পাশে দাঁড়িয়ে বলল, “কী ব্যাপার? চোখে গ্লিসারিন কেন?”

    বিহানের বুকে মাথা রেখে দরিয়া বলল, “যাওয়ার আগে মণিদীপা বলে গেল, সনৎ ওকে ফোন করে বলেছে, ‘দরিয়া যদি আমাকে বিয়ে করত, তা হলে একই দিনে বিয়ে আর বউভাত হত না। বাসর আর ফুলশয্যা একই দিনে হত না। বাপের বাড়িতে ফুলশয্যা করতে হত না।’ সনৎ নাকি হেস্টিংসে সাউথ ফেসিং ফ্ল্যাট কিনেছে। চার তলায়। ব্যালকনিতে দাঁড়ালে হাওড়া ব্রিজ আর দ্বিতীয় হুগলি সেতু দেখতে পাওয়া যায়।”

    বিহান বলল, “এই জন্যে এত কান্না? যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তোমাকে ভাড়াবাড়িতে নিয়ে যাব। প্রমিস।”

    চোখের জল মুছে ফিকফিক করে হাসছে দরিয়া। বলছে, “অ্যাই! হাম তুমকো ভালবাসতা হ্যায়। তুম হামকো বাসতা হ্যায়?”

    দশ-বারো জনের একটা দল একটানা মুখে ঘুসি আর পেটে লাথি মেরে যাচ্ছে! মাথার চুল ধরে টেনে তুলে থাপ্পড় কষাচ্ছে! খিস্তি করছে। চোখের সামনে কালো রঙের পরদা নেমে আসছে। মাথা হালকা হয়ে আসছে। শরীরে আর কোনও ব্যথা-বেদনা নেই। কয়েকটা লাল-নীল বল চোখের সামনে ঘুরছে। বিহান জানে, ঈশ্বর এখন জাগলিং করছেন। জন্ম আর মৃত্যু, সুখ আর দুঃখ, ভাল আর মন্দ, সাদা আর কালো, আনন্দ আর বেদনা, পাওয়া আর না-পাওয়ার জাগলিং। কোথা থেকে এলাম আর কোথায় চলেছি— এর জাগলিং। একটু বাদেই তিনি টুপি খুলে অভিবাদন গ্রহণ করে বিদায় নেবেন।

    কালো পরদা নেমে আসার আগের মুহূর্তে বিহান বলল, “বাসতা হ্যায়! বহুত ভাল বাসতা হ্যায়…”

    সুদামের চিৎকার শুনে গাড়ি থেকে লাফিয়ে নেমেছে জলপাই সবুজ পোশাক পরা একদল সৈনিক। হাতে আগ্নেয়াস্ত্র। দৌড়ে আসছে ক্যামেরা কাঁধে টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক। সনৎ আর তার স্যাঙাতরা মিলিটারিদের আসতে দেখে ফ্লাইওভারের পাশে পার্ক করে রাখা বাইকে চেপে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে নিমেষের মধ্যে। রাস্তায় পড়ে আছে অজ্ঞান বিহান। পড়ে আছে পতাকা আর রক্ত।

    সুদামের কাঁধে বিহানের ব্যাকপ্যাক। সে শুনতে পেল বিহানের মোবাইলে রিং হচ্ছে। ব্যাকপ্যাকের সাইড-পকেট থেকে মোবাইল বার করে কানে দিতেই সুদাম শুনতে পেল, ও প্রান্ত থেকে পুরুষকণ্ঠ খুশিয়াল গলায় বলছেন, “বিহান, সব ভাল যার শেষ ভাল। অপারেশন হয়ে গেছে। দরিয়ার জ্ঞান ফিরেছে। ও তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাইছে।”

    সুদাম চুপ। অন্য প্রান্ত থেকে এবার দরিয়া কথা বলছে, “বিহান, আমাদের মেয়ে হয়েছে। আমি ভাল আছি। তুমি আসছ না কেন?”

    সুদাম চুপ। এবার ফোনে সাম্যব্রত, “তুমি কথা বলছ না কেন? তুমি কোথায়?”

    সুদাম চোখের জল মুছে বলল, “আমি সুদাম। আপনার জামাইয়ের সঙ্গে হাসপাতালে আসছিলাম। পিটিএসের সামনে সনৎ আর তার চেলারা বিহানকে ধরে খুব মেরেছে। ও আর নড়ছে না।”

    “কী বললেন?” চিৎকার করছেন সাম্যব্রত, “ওকে ফোনটা দিন। প্লিজ় বিহানকে ফোনটা দিন।”

    সুদাম ফোন কেটে দিল। কেননা একজন সৈনিক এসে বিহানের পালসে হাত রেখেছে। কিছুক্ষণ বাদে সে বলল, “ইয়ে বান্দা জিয়েগা নহি।”

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleমধুরেণ – ইন্দ্রনীল সান্যাল
    Next Article অপারেশন ওয়ারিস্তান – ইন্দ্রনীল সান্যাল

    Related Articles

    ইন্দ্রনীল সান্যাল

    অপারেশন ওয়ারিস্তান – ইন্দ্রনীল সান্যাল

    July 10, 2025
    ইন্দ্রনীল সান্যাল

    মধুরেণ – ইন্দ্রনীল সান্যাল

    July 10, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.