Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সব ভুতুড়ে – ইশতিয়াক হাসান

    ইশতিয়াক হাসান এক পাতা গল্প188 Mins Read0

    ভুতুড়ে প্রাণী

    মানুষের ভূত বা অতৃপ্ত আত্মা থাকতে পারলে অন্য প্রাণীদের থাকবে না? ‘ভুতুড়ে প্রাণী’তে রোমাঞ্চিত হবেন এমন প্রাণীদের নিয়ে কিছু ভৌতিক ঘটনার বর্ণনা শুনে।

    অশুভ সাদা বাঘ

    চার্লস দ্য সিলভা নামের এক লোক ভারতের জঙ্গলের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। পূর্ণিমা না হলেও চাঁদের বেশ আলো আছে। এসময়ই পিছন থেকে ট্যাপ, ট্যাপ, ট্যাপ শব্দ শুনলেন। চরকির মত ঘুরে দাঁড়িয়েই অসহায় একটা লোককে দেখলেন। সে শুধু যে অন্ধ আর খোড়া তাই নয় তার শরীরে বাসা বেঁধেছে ভয়ঙ্কর কুষ্ঠ। এদিকে বেচারা চার্লস দ্য সিলভা, জঙ্গলকে যতটা ভয় পান তার চেয়েও বেশি ভয় পান কুষ্ঠকে। দ্রুত বাড়ির পথে হাঁটতে লাগলেন। তবে অন্ধ লোকটার লাঠির ট্যাপ, ট্যাপ, ট্যাপ তাঁকে অনুসরণ করতে লাগল। ধীরে ধীরে যেন তাদের মধ্যে ব্যবধান আরও কমতে লাগল। লোকটার শরীরে মাখা তেলের, যেটা কুষ্ঠে রঞ্জিত হয়ে সাদা হয়ে গেছে, গন্ধও যেন পাচ্ছেন সিলভা।

    সাহেব, তুমি যেই হও, দাঁড়াও। অনুনয় করল অসহায় লোকটা।

    কিন্তু সিলভা জঙ্গলের ভিতর দিয়ে তাড়াতাড়ি হাঁটতে লাগলেন। এসময়ই হঠাৎ সামনের ঝোপ ফাঁক করে একটা শিয়ালকে আবির্ভূত হতে দেখে দাঁড়িয়ে গেলেন। প্রাণীটা এমনভাবে তাকাল যে শরীরে কাঁপন ধরে গেল সিলভার। তারপরই যেন বাতাসে মিলিয়ে গেল ওটা। তারপর আরও একটা শিয়াল এল। তবে, ওটা আগেরটার মত অদ্ভুতুড়ে না। তাকে দেখে ছুটে পালাল শিয়ালটা।

    ট্যাপ, ট্যাপ, ট্যাপ। আবার কাছাকাছি হলো কুষ্ঠরোগী। তবে এবার আশপাশে একটা বাঘের উপস্থিতির আশংকা করায় লোকটার উপস্থিতিতে অখুশি হওয়ার বদলে বরং কৃতজ্ঞতা অনুভব করলেন সিলভা। লোকে বলে শিয়াল নাকি বাঘ ডেকে নিয়ে আসে। আর ভারতের জঙ্গলে এই অভিজ্ঞতা হয়েছে অনেক শিকারীরই।

    কুষ্ঠরোগী অনুনয় করে বলল, খোদার দোহাই, সাহেব, থামো! শিয়ালগুলোকে দেখনি? গন্ধ তাদের পরিচয় ফাস করে দিয়েছে আমার কাছে। দয়া করে আমার সঙ্গে হাঁটো, সাহেব।

    কিন্তু তাকে সাহায্য করার বদলে সিলভা যে কাজটা করলেন এর জন্য তাকে সারা জীবন ভুগতে হলো। সিলভা ওই মুহূর্তে নিজের বিবেককে বুঝালেন তিনি তাঁর স্ত্রীকে গভীরভাবে ভালবাসেন। অপর দিকে এই কুষ্ঠরোগীর না আছে কোনো স্ত্রী, সন্তান আর ভবিষ্যৎ। যেদিকে বাঘটা ঘাপটি মেরে আছে বলে সন্দেহ করছেন সেদিকে একটু এগিয়ে একটা ঝোপের আড়ালে সরে পড়লেন সিলভা। এদিকে অন্ধ লোকটা আস্তে আস্তে তাকে পেরিয়ে গেল। যাবার সময় লাঠিটা এক চুলের জন্য সিলভার পা স্পর্শ করল না। রাস্তাটা যেখানে দু-ভাগ হয়েছে সেখানে দাঁড়াল অন্ধ কুষ্ঠরোগী। উজ্জ্বল চাঁদের আলোয় তাকে খুব ফ্যাকাসে আর অসুস্থ দেখাচ্ছে। দৃষ্টিহীন দুই চোখ চারদিকে ঘুরাচ্ছে, পথের দিশা পাচ্ছে না। এসময়ই অন্ধকার জঙ্গল থেকে বিশাল একটা প্রাণী লাফ দিল। এক মুহূর্তের জন্য সিলভা ভাবলেন তার জীবনের অন্তিম সময় উপস্থিত। তারপরই কুষ্ঠরোগীর আতংকিত চিৎকার শুনতেই বুঝে গেলেন এ যাত্রা রেহাই পেয়ে গেছেন। ওদিকে তাকাতেই দেখলেন বিশাল একটা বাঘ হতভাগা লোকটার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে।

    কয়েক ঘণ্টা পরের ঘটনা। সিলভা নিরাপদেই বাড়ি পৌঁছেছেন। এসময় হঠাৎ আবার যেন ভয়ঙ্কর সেই চিৎকারটা শুনতে পেলেন। আর এর সঙ্গে যেন মৃত লোকটার তাঁকে অভিশাপ দেওয়ার শব্দও কানে এসে বাজল। তাঁর স্ত্রীকে এটার কথা বললেন না সিলভা। এমনকী ঘটনাটা বললেন অনেক রেখেঢেকে।

    ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, তুমি বেঁচে গেছ। বললেন ভদ্রমহিলা, তবে দুর্ভাগা কুষ্ঠ রোগীর জন্য খুব মন খারাপ হচ্ছে আমার। আমার ধারণা তোমারও কিছু করার ছিল না।

    আমার রাইফেলটা সঙ্গে রাখতে পারতাম। অপরাধবোধে ভুগছেন এমন ভাব করলেন সিলভা, তবে তাতেও মনে হয় না লোকটাকে বাঁচানো যেত।

    তবে আলাদাভাবে ব্যক্তিগত পরিচারক কুসাইকে কুষ্ঠরোগীর অভিশাপের বিষয়টা বললেন।

    ওহ খোদা! ওটা মনে হয় নাহরা। বলল সে। আপনাকে যদি অভিশাপটা সে দিয়ে থাকে, তবে সাবধান! সে কালো জাদু জানে। একটা প্রার্থনা করে পেটের ব্যামো সারিয়ে দিতে পারত, আবার চাইলে যে কারও শরীরে জ্বর নামাতে পারত।

    ভয়ে কেঁপে উঠলেন চার্লস দ্য সিলভা। ভারতে অনেক বছর ধরেই আছেন তিনি। তার এটাও জানা আছে এখানকার কোনো কোনো লোক অস্বাভাবিক আর অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী। কুসাইকে তার ছোট্ট ছেলেটার দিকে নজর রাখতে বললেন। স্ত্রীকে বাঘটা না মারা যাওয়া পর্যন্ত তাঁর কোনো আত্মীয়ের বাড়ি গিয়ে থাকতে বললেন। কিন্তু ভদ্রমহিলা রাজী হলেন না।

    শুকনো মৌসুম পার হলো, বর্ষা এল। তবে সিলভারা তাঁদের পুরানো বাসস্থানেই আছেন। জঙ্গলের সেই ভয়ঙ্কর রাতের অভিজ্ঞতার এক বছর পর ভয়াবহ একটা মানুষখেকো বাঘের খবর এল সিলভার কাছে। তবে তার আত্মা পানি করে দিল খবরের যে অংশটা তা হলো, যে-ই বাঘটার আক্রমণের শিকার হয়ে বেঁচে ফিরছে সে-ই কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সিলভা কুসাইয়ের কাছে জানতে চাইলেন বাঘটাকে সবাই, সাদা বাঘ বলে কেন?

    কারণ, সাহেব, কুষ্ঠ রোগ হয়েছে। মানুষের মত ওটার শরীরও এই রোগে সাদা হয়ে গেছে। তবে আমি লোকেদের আপনার গল্পটা বলিনি। তারা শুধু জানে বাঘটার কুষ্ঠ হয়েছে।

    কপালে যা থাকে, সাদা বাঘটার একটা হেস্তনেস্ত করার সিদ্ধান্ত নিলেন সিলভা। তাঁর উইনচেস্টার রিপিটার রাইফেলটা নিয়ে বাঘটার খোঁজে বেরিয়ে পড়লেন। হন্যে হয়ে ঘুরলেন কয়েকটা দিন। তারপরই ভয়াল প্রাণীটার মুখোমুখি হলেন। এক লোককে মেরে পৈশাচিক একটা ভোজের মাঝপথে তখন ওটা। পর পর দুটো গুলি করলেন সিলভা। দ্বিতীয় গুলিটা বাঘটার কপালে ঢুকল। মাটিতে পড়ে স্থির হয়ে গেল প্রাণীটা।

    অভিশাপে এখন আর কিছু আসে যায় না আমার, কুসাই, হাসতে হাসতে বললেন সিলভা। সাদা বাঘটাকে মেরে ফেলেছি। আমি।

    এত তাড়াতাড়ি হাসবেন না, সতর্ক করল কুসাই। নাহরা খুব ধূর্ত।

    কিছু দিন পরের ঘটনা। রেলওয়ের একটা ভবন তৈরির কাজ তদারকি করছেন সিলভা। এসময়ই হঠাৎ সাদা বাঘের ভয়াবহ গর্জন শুনলেন। রড, শাবল ফেলে শ্রমিকরা চম্পট দিল। দ্রুত রাইফেলটা হাতে নিয়ে, গজ পঞ্চাশেক দূরে আবির্ভূত হওয়া সাদা প্রাণীটার দিকে নিশানা করলেন সিলভা। নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে তাঁর, কেবল কয়েক দিন আগে যে প্রাণীটাকে মারলেন সেটা আবার ফিরে এল কীভাবে? নিঃশব্দে, ধীরে-সুস্থে তাঁদের দিকে এগিয়ে আসছে ওটা। দেখে মনে হচ্ছে কিছু একটা করার জন্য দৃঢ়সংকল্প সে। এসময় হঠাৎ সিলভার মনে হলো তার স্ত্রী আজ এখানে তাঁদের ছেলে এরিককে নিয়ে এসেছে। বাঘটার মনোযোগ নিজের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে ছুট লাগালেন। তারপরই যে দৃশ্যটা দেখার আশঙ্কা করেছেন সেটাই দেখলেন। লাফ দেওয়ার ভঙ্গিতে রয়েছে বাঘটা। আর তার স্ত্রী, ছেলে আর আয়া আতংকে পাথরের মত জমে গিয়েছে। প্রাণীটা জীবিত নাকি এটা ওটার প্রেতাত্মা জানেন না সিলভা। শুধু দেখলেন তার ছেলে এরিকের দিকে তাকিয়ে থাকা প্রাণীটার শরীর কাঁপছে। আর এক মুহূর্ত, তারপরই বাঘটা কিংবা তার প্রেতাত্মাটা লাফিয়ে পড়বে। লাফ দিল ওটা। গুলি করলেন সিলভা। কিন্তু তখনই দেখলেন বাঘ না, তাকে ভেংচি কাটছে নাহরা। পাথরে গুলি লাগার শব্দ হলো, ব্যাং। দ্রুত দৌড়ে গেলেন। তাঁর স্ত্রী আর ছেলে ভাল আছে, তবে আমার জ্ঞানহীন দেহ মাটিতে পড়ে আছে। এদিকে বাঘ আর নাহরা দুজনেই অদৃশ্য হয়েছে।

    ঈশ্বরকে ধন্যবাদ! স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে বললেন সিলভা। এটা কেবল একটা প্রেতাত্মা ছিল। তবে জীবনে এত ভয় কখনও পাইনি।

    ভয়ংকর, হাঁফাতে হাঁফাতে বললেন তার স্ত্রী। তবে আমার একে সত্যি মনে হয়েছে। যেমন এরিক, যেমন…এসময়ই আয়ার দিকে দৃষ্টি গেল তাঁর। তারপরই আবিষ্কার করলেন সে মারা গেছে। ভয়েই মারা গেছে ভারতীয় মেয়েটা।

    এসময়ই সিলভা তার স্ত্রীকে বললেন নাহরার অভিশাপের কথা। তারপর এটাও বললেন বাঘটাকে আসল মনে করে ছেলেকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টায় আয়াকে মাঝখানে ঠেলে দিয়েছিলেন তিনি। পরে বাসায় ফিরে এরিকের গালে লাল, চিকন ক্ষতচিহ্ন চোখে পড়ল তাদের। দেখে মনে হলো বাঘের নখের আঘাতে এটা হয়েছে। কিছুদিন পরেই কুষ্ঠ রোগ ধরল এরিককে। এক মাস পরে মারা গেল ছেলেটি। ভারত ছেড়ে ইংল্যাণ্ডের উদ্দেশে যাত্রা করলেন সিলভা আর তার স্ত্রী। তবে রওয়ানা হওয়ার আগে কুসাই সিলভাকে বলল, আমি জানি একটা ফাঁড়ায় পড়েছিলেন আপনারা। নাহরা চমৎকার একজন মানুষ। আর এখন তার অভিশাপ পূরণ হয়েছে। এবার নিশ্চিন্ত হতে পারেন, আর কোনো ক্ষতি আপনাদের হবে না। আজ সকালে স্বপ্নে নাহরাকে দেখেছি আমি। নাহরা বলেছে সে আর সাদা বাঘের আত্মা দুজনেই এখন শান্ত হয়ে গেছে। আপনারও আর কোনো ক্ষতি তারা করবে না।

    কিন্তু প্রেতাত্মার নিশ্চয়তা এল অনেক পরে, ছেলেকে হারিয়ে তাঁদের আর তখন কিছুতেই কিছু আসে যায় না।

    কালো কুকুরের আতংক

    ইংল্যাণ্ড, আয়ারল্যাণ্ড, স্কটল্যাণ্ডসহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে কালো কুকুর নিয়ে প্রচলিত আছে নানান ধরনের ভৌতিক কাহিনি। তবে এদের অনেকগুলোতেই রং চড়েছে। আমাদের এবারের সংকলনে এসব কাহিনি থেকে একটি তুলে ধরছি পাঠকদের সামনে।

    অভিজ্ঞতাটি চার্চ অভ ইংল্যাণ্ডের এক যাজকের। নিশ্চিত কোনো প্রমাণ না থাকলেও তাঁর এই কাহিনিটিতে ফাঁক-ফোকর নেই সে অর্থে। তাঁর মুখ থেকেই আমরা এখন শুনব এটি।

    আমার কিশোর বয়সের ঘটনা। বাবা-মার সঙ্গে মফস্বল এলাকায় থাকি। বাবা তার পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অবসরে কিছু চাষ-বাস করতেন। তাঁর নিয়মিত কোনো কামলা ছিল না। তবে যখন দরকার হয় রোজ হিসাবে কিছু কামলা কাজে লাগান। এসময় এই মজুরদের সঙ্গে খেতে কাজ করে বেশ মজা পেতাম আমিও। মনোযোগ দিয়ে শুনতাম তাদের কথা-বার্তা। একদিন এই কাজের সময় শুনলাম একজন মজুর বলছে সে একবার শয়তান দর্শন করেছে। কৌতূহলী হয়ে তাকে ঘটনাটি খুলে বলতে বললাম। লোকটা বলল একটা রাস্তা দিয়ে হাঁটছিল সে। হাঁটতে হাঁটতে এমন একটা জায়গায় চলে এল যেখানে একটা ব্যক্তিগত এলাকার শুরু। ঢোকার মুখে বিশাল একটা গেট (জায়গাটা আমার নিজেরও খুব পরিচিত)। এসময়ই রাস্তার ধারে একটা কালো কুকুরকে বসে থাকতে দেখল। শুরুতে এটাকে গুরুত্ব দেওয়ার কোনো প্রয়োজন মনে করল না। ভাবল এটা সাধারণ একটা রিট্রিভার। কিন্তু দুই কি তিনশো গজ এগোনোর পর দেখল কীভাবে যেন ওটা তার পাশে চলে এসেছে। কুকুরটার চোখ রক্তের মত টকটকে লাল। ওটাকে ভয় দেখিয়ে তাড়ানোর জন্য ঝুঁকে কিছু পাথর তুলে নিল সে। কিন্তু একটার পর একটা পাথর ছুঁড়ে মেরেও ওটাকে বিন্দুমাত্র আহত করতে পারল না, এমনকী ওগুলো ওটার গায়ে লাগছে বলেই মনে হলো না। তারপর হঠাৎ করেই অদৃশ্য হয়ে গেল প্রাণীটা।

    মজুরের গল্পটা এখানেই শেষ। কয়েক বছর পরের ঘটনা। ইতিমধ্যে তার বলা কাহিনিটা একবারেই ভুলে গেছি। এসময়ই আমার এক বন্ধুর পরিবার, যে বাড়িটার প্রবেশদ্বারের সামনে ঘটনাটি ঘটেছে ওই বাড়িটা কিনে নিল। তারা সেখানে বসবাস শুরু করার পর বাড়িটাতে নিয়মিত যাতায়াত শুরু করলাম। এখানে আসার পর থেকেই একটা কালো কুকুর নিয়ে ঝামেলায় পড়ে তারা। সত্যি বলতে আমি কখনও দেখিনি ওটাকে। তবে বন্ধুর পরিবারের অনেকের সামনেই দেখা দিয়েছে ওটা। বাড়ির দিকে চলে যাওয়া রাস্তাটা বেশ লম্বা। আর হঠাৎ হাজির হয়ে ললাকেদের রাস্তার বড় একটা অংশ সঙ্গ দেওয়ার বদভ্যাস গড়ে ওঠে অশুভ কুকুরটার। শেষমেশ ওটার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে আমার বন্ধুরা এই বাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় বসবাস শুরু করে। আর তাদের এই অভিজ্ঞতা যেন বেশ কয়েক বছর আগে বলা মজুরের কাহিনিটিরই সত্যতা প্রমাণ করে।

    আয়ারল্যাণ্ডের ভৌতিক বিড়াল

    আয়ারল্যাণ্ডের ডাবলিনের উপকূলের কাছে কিলাকি হাউস নামে একটি বাড়ি আছে। বিশালাকায় একটা কালো বিড়াল এখানে দেখে গেছে অনেকবারই। বিশেষ করে ১৯৬৮ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে এই বিড়ালটা নানান ধরনের অঘটনের জন্ম দেয়। এমনকী এখনও হঠাৎ হঠাৎ হাজির হয়ে লোকজনকে ভয় পাইয়ে দেয় ওটা।

    মিসেস মারগারেট ওব্রেইন নামের এক মহিলা আইরিশ আর্ট সেন্টার স্থাপনের জন্য কিলাকি হাউস কিনবার পর থেকেই মূলত বিড়ালটাকে দেখা যেতে শুরু করে। সেসময় অট্টালিকাটির সংস্কার কাজ চলছিল। আর তখনই প্রথম ওটাকে দেখা যায়। যদিও এ ধরনের একটি ভৌতিক কালো বিড়ালের উপস্থিতির গুজব এই এলাকায় ছড়িয়ে ছিল অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে।

    নামী চিত্রকর টম ম্যাকাসে মিসেস ওব্রেইনের সঙ্গে বাড়িটার সাজ-সজ্জায় ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছিলেন। দুজন শ্রমিকও সাহায্য করছিল কাজে। এক রাতে একটা দরজা লাগিয়ে ছয় ইঞ্চি লম্বা একটা স্কু দিয়ে ভালভাবে আটকে দেন তারা। কিছুটা সময় পেরোনোর পরই ওটা অদৃশ্য হয়। আপনা আপনি যেন দরজাটা খুলে গেল। শ্রমিক দুজন সহ গ্যালারিতে হাজির হলেন ম্যাকাসে, কী ঘটেছে দেখতে। অন্ধকারে কিছুই চোখে পড়ল না ঠিকমত। এসময়ই এক কোনায় কালো ছায়ার মত একটা জিনিস নজরে পড়ল। ম্যাকাসে ভাবলেন কেউ তাদের সঙ্গে মজা করছে। জোরে চেঁচিয়ে উঠলেন, যেই থাক বেরিয়ে এসো। আমরা তোমাকে দেখতে পেয়েছি।

    কর্কশ কণ্ঠে কেউ জবাব দিল, তুমি কখনওই আমাকে দেখতে পাবে না। দরজা খোলা রাখো। তা না হলে, আমার জানা আছে কীভাবে বেরোবার পথ খুঁজে নিতে হয়।

    এরপর আর সেখানে দাঁড়াবার সাহস করল না শ্রমিক দুজন। এই কামরা থেকে পালাল তারা। দরজা লাগিয়ে সরে এলেন ম্যাকাসেও। তারপর আঁর চোখের সামনে নিজে থেকেই খুলে গেল দরজাটা। বড়সড় কুকুরের আকারের একটা কালো বিড়াল হলরুমে হাজির হলো, পরমুহূর্তেই অদৃশ্য হলো।

    আয়ারল্যাণ্ডের পোল ভোল্ট চ্যাম্পিয়ান ভাল ম্যাকগান অনেকবারই রহস্যময় এই কালো বিড়ালটিকে দেখেছেন। এমনকী একবার নিজেকে স্থির রাখতে না পেরে গুলিও ছোঁড়েন ওটার দিকে। তবে এতে বিড়ালটার কোনো ক্ষতি হয়েছে এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

    নীল চোখের বানর

    এবারের কাহিনিটি বলেছেন আমেরিকার মিসৌরির ক্যারলিন নামের এক নারী। আমরা বরং এটা তার মুখ থেকেই শুনি।

    বছর তিনেক আগের একটা দিন। তখন মোটামুটি ভোর সাড়ে পাঁচটার মত বাজে। আমি এবং আমার স্বামী আমাদের শোবার ঘরে ঘুমাচ্ছিলাম। আর বাচ্চাদুটো তাদের নিজেদের কামরায়। এসময়ই হঠাৎ আমার বড় ছেলে জেমস আমাদের ঘরে ঢুকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলল আমাকে। বলল একটা কিছু তাকে ঘুম থেকে তুলে ফেলেছে। ভাবলাম কোনো স্বপ্ন-টপ্ন দেখেছে। তাই বললাম আবার বিছানায় গিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করতে। সকালে নাস্তার সময় হলে তাকে জাগিয়ে দেব। কী মনে করে আমার কথা মেনে নিল ও। তারপর কামরাটা থেকে বের হয়ে হলওয়ে ধরে তার শোবার ঘরের দিকে চলে গেল।

    কিন্তু একটু পরই জেমসকে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে শুনলাম। আমি এগোবার আগেই জোরে দৌড়ে আসার শব্দ শুনলাম ওর। আমার রুমে ঢুকেই বিছানার ওপর লাফিয়ে পড়ল। কী হয়েছে বুঝতে না পেরে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। তাড়াতাড়ি জিজ্ঞেস করলাম কী হয়েছে। ও কেবল বলল আমার বিছানায় ওটা উঠেছে। বার বার একই কথা বলতে লাগল। শেষ পর্যন্ত বুঝিয়ে-শুনিয়ে অনেক কষ্টে শান্ত করা গেল ওকে। এবার বললাম পুরো ঘটনা ধীরে-সুস্থে খুলে বলতে। তারপর সে যেটা বলল সেটা হজম করা কঠিনই হলো আমার জন্য।

    জেমস যখন নিজের কামরায় দরজা দিয়ে ঢুকছে তখন অবাক হয়ে দেখে বানরের মত, তবে অনেক বড় একটা জিনিস তার বিছানায় বসে আছে। শুধু তাই না একদৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে ওটা। এত জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছিল যে পরিষ্কার শুনতে পাচ্ছিল সে। তারপরই বলল, ওটার চোখের রং তার চোখের রংয়ের মত। কিন্তু জেমসের চোখের রং নীল। একটা বানরের চোখের রং নীল হবে এটা বিশ্বাস করি কীভাবে? জিজ্ঞেস করলাম কেমন করে বুঝল ওটা বানরই ছিল। জবাবে চেহারাটার বর্ণনা দিল। আর বলল ওটার দিকে সে এতক্ষণ তাকিয়ে ছিল যে প্রাণীটার পায়ের লোমও দেখতে পাচ্ছিল।

    জেমস যা বলছে তা বিশ্বাস করা কঠিন। আশপাশে কোনো বন নেই। কথা নেই বার্তা নেই, একটা বানরের মত দেখতে প্রাণী হাজির হবে কীভাবে। তারপর আবার ওটার চোখ নাকি নীল। কিন্তু ঘটনা হলো ওর বয়স খুব কম নয়। আর কখনও বানিয়ে বা মিথ্যা কিছু বলার অভ্যাস নেই তার। ওর সঙ্গে কামরাটায় গেলাম। সেখানে গিয়ে একটা ধাক্কা খেলাম। বিছানার যে কোনাটায় ওটা বসেছিল বলছে সে জায়গাটা গভীরভাবে দেবে গেছে। মনে হয় যেন ভারি কিছু বসেছিল। এবার আমিও নিজে আতংকিত হয়ে পড়লাম। তারপর থেকে এই কামরাটায় থাকতে জেমসকে মানা করে দিয়েছি। এখন সে তার ছোট ভাইয়ের সঙ্গে একই কামরায় থাকে।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঅশরীরীজগৎ – ইশতিয়াক হাসান
    Next Article ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    Related Articles

    ইশতিয়াক হাসান

    অশরীরীজগৎ – ইশতিয়াক হাসান

    July 11, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.