Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সমাজ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

    উপন্যাস রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এক পাতা গল্প504 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ইংরাজদিগের আদব-কায়দা

    ইংরাজদিগের এবং য়ুরোপীয় অন্যান্য দেশের আদব-কায়দার কাছে আমাদের দেশের আদব-কায়দা ঘেঁষিতেও পারে না। য়ুরোপে সকলই যেমন যন্ত্রে নির্বাহিত হয়, তেমনি হৃদয়ের ভাবও য়ুরোপীয়েরা এমন যন্ত্রবদ্ধ করিয়া রাখিয়াছে যে, দুঃখ না হইলেও তাহারা দুঃখ প্রকাশ করিতে পারে, হাসি না পাইলেও হাসিতে পারে। ভদ্রতার ভাব হইতে যে-সব নিয়ম প্রসূত তাহাকেই তো আদব-কায়দা বলে? তোমার নিয়ম বাঁধা থাক্‌ বা না থাক্‌, যাহারা ভদ্র তাহারা কখনো অভদ্রতা করিতে পারে না। তাহারা স্বাভাবিক অবস্থায় পরের প্রতি যেরূপ ব্যবহার করে তাহাই ভদ্রতা। আমাদের হিন্দুজাতির অত আইনকানুন নাই, অথচ স্বাভাবিক ভদ্রতার ভাব এমন আর কোথাও দেখিবে না। আমাদের দেশে তো এত নিয়মের বাঁধাবাঁধি নাই, তবুও তো মনিয়র উইলিয়াম্‌স কহিয়াছেন, ভারতবর্ষের ছোটোলোকেরাও এমন ভদ্র শান্ত প্রভুভক্ত, যে য়ুরোপে তাহার তুলনা পাইবে না। ইংরাজদিগের আচার-ব্যবহার আমাদের কাছে অনেক কারণে নূতন ও আমোদজনক লাগিবে।

    ইংলন্ডে প্রণামের স্থলে শেক্‌-হ্যান্ড করিবার সময় স্ত্রীলোকরাই প্রথম হাত বাড়াইয়া দেন। তোমার অপেক্ষা মান-মর্যাদায় যিনি বড়ো তাঁহার প্রতি তুমি প্রথমে হাত বাড়াইতে বা গ্রীবা নত করিতে পার না। যাহাদের সঙ্গে তুমি আলাপ-পরিচয় রাখিতে ইচ্ছা কর না, তাহারা যদি তোমাকে প্রকাশ্যে অভিবাদন করে, তবে তুমি ফিরাইয়া না দিতেও পার। কিন্তু ইংরাজি আদব-কায়দাজ্ঞ ব্যক্তি কহেন– তাহা অপেক্ষা অভ্যস্ত- উপেক্ষার সহিত তাহার প্রণাম ফিরাইয়া দেওয়াই ভালো। কিন্তু তাই বলিয়া কোনো পুরুষ কোনো অবস্থায় স্ত্রীলোকের অভিবাদন উপেক্ষা করিতে পারেন না। স্ত্রীলোক ইচ্ছা করিলে কোনো পুরুষকে ওরূপ উপেক্ষা করিতে পারেন, কিন্তু কোনো অবিবাহিতা স্ত্রী বিবাহিতা স্ত্রীর অভিবাদন ওরূপ অগ্রাহ্য করিতে পারেন না। যদি কোনো ব্যক্তি নিমন্ত্রণ-সভায় কোনো মহিলাকে বিশেষ যত্ন করিয়া থাকেন, তাঁহার সহিত অধিক গল্প করিয়া থাকেন বা আহার-স্থানে হাত ধরিয়া লইয়া গিয়া থাকেন, তবে তাহার পরদিন কোনো প্রকাশ্য স্থানে দেখা হইলে সে মহিলা সে ভদ্রলোকটির প্রতি সম্মান-প্রদর্শনার্থ গ্রীবা নত করিতে পারেন। অনেক সাহেব ভারতবর্ষীয়দের অভিবাদন, মাথা কাঁপাইয়া বা টুপি ছুঁইয়া মাত্র ফিরাইয়া দেন, কিন্তু ভালো আদব-কায়দা অমন হোমিওপ্যাথিকমাত্রায় প্রণাম করিতে পরামর্শ দেন না, সম্পূর্ণরূপে টুপি না খুলিয়া যদি অভিবাদন করিতে চাও, তবে তাহার চেয়ে না করাই ভালো। যাহার সহিত শেক্‌-হ্যান্ড করিতে চাও, তাহার সহিত দেখা হইলে বাম হস্তে টুপি খুলিতে হইবে ও ডান হস্তে শেক্‌-হ্যান্ড করিতে হইবে। পথে আসিতে আসিতে কোনো পরিচিতা মহিলা যদি তোমার সম্মুখে আসিয়া পড়েন, তবে কথা কহিবার জন্য তাঁহার সম্মুখে দাঁড়াইয়া তাঁহার পথ বন্ধ করিয়ো না, যেদিকে তিনি যাইতেছেন তাহা তোমার গম্য পথের বিপরীত দিক হইতে পারে, কিন্তু মহিলার পাশে পাশে সে দিকেই তোমার যাওয়া উচিত, পরে কথা শেষ করিয়া তোমার যাহা ইচ্ছা তাহা করিয়ো। যে মহিলার সহিত তুমি কথা কহিবে না, তাঁহার সহিত যদি দেখা হয়, তবে, তিনি যদি ডান দিকে থাকেন তবে বাম হস্তে বা যদি বাম দিকে থাকেন তবে ডান হস্তে টুপি খুলিতে হইবে অর্থাৎ যে হস্ত মহিলা হইতে অধিক দূর, সেই হস্তে টুপি খুলিতে হইবে। ঘোড়ায় চড়িয়া যাইবার সময় যদি কোনো পদাতিক-মহিলার সহিত সাক্ষাৎ হয়, তবে ঘোড়া হইতে নামিয়া তাহার লাগাম ধরিয়া মহিলার সঙ্গে সঙ্গে গিয়া কথা কহিবে, ঘাড় উঁচু করিয়া কথা কহিবার কষ্ট যেন মহিলাকে না দেওয়া হয়। কোনো মহিলার সঙ্গে সঙ্গে চলিবার সময় তাঁহার হস্তে পুস্তক প্রভৃতি যাহা-কিছু থাকিবে তাহা তুমি বহন করিবে। যদি চুরট খাইতে খাইতে পথে আইস, তবে কোনো মহিলার সহিত কথা কহিতে হইলেই তাহা ফেলিয়া দিয়ো। শেক্‌-হ্যান্ড করিতে হইলে যাহাকে শেক্‌-হ্যান্ড করিবে, তাহার খুব কাছে না আসিলে হাত বাড়াইয়ো না, দূর হইতে হাত বাহির করিয়া আসিলে বড়ো ভালো দেখায় না। মহিলারা আসিলে ভদ্রলোকদিগকে উঠিয়া দাঁড়াইতে হইবে, কিন্তু পুরুষেরা আসিলে মহিলাদিগকে উঠিতে হয় না। অগ্নিকুণ্ডের (Fire place) কাছাকাছি যাইবার জন্য তুমি এক চৌকি ছাড়িয়া আর-এক চৌকিতে যাইতে পার না। গৃহের কর্ত্রী তোমাকে যদি কাহারো সহিত পরিচিত করিয়া দেন, তবে তুমি তাহার প্রতি গ্রীবা নত করিবে, তবে যদি সে ব্যক্তি কর্ত্রীর বিশেষ আত্মীয় বা পুরাতন বন্ধু হয় ও কর্ত্রী যদি তাহার সহিত তোমার বিশেষ আলাপ করিয়া দিতে ইচ্ছা করেন, তাহা হইলে শেক্‌-হ্যান্ড করিতে পার। মহিলারা পুরুষের প্রতি হাত বাড়াইয়া দেন বটে, কিন্তু হাত নাড়েন না, মহিলার হস্ত লইয়া নাড়িয়া দেওয়া পুরুষের কর্তব্য কর্ম। যুবতীরা অবিবাহিত পুরুষের প্রতি কেবলমাত্র গ্রীবা নত করিবেন। যখন কাহারো সহিত সাক্ষাৎ করিতে গিয়াছ, যতক্ষণ থাকা প্রয়োজন ততক্ষণ থাকিয়াছ, এমন সময়ে যদি অন্য আগন্তুক তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ প্রার্থনা করিয়া পাঠায়, তাহা হইলে তখনই তুমি উঠিয়া যাইয়ো না; যখন অভ্যাগতগণ চৌকিতে আসিয়া বসিল, তখন গৃহের কর্ত্রীর নিকট বিদায় লইয়া এবং নবাগতদিগকে অতি নম্র নমস্কার করিয়া চলিয়া যাইবে। হয়তো কর্ত্রী তোমাকে বসিবার জন্য অনুরোধ করিবেন, কিন্তু একবার যখন উঠিয়াছ, তখন আবার বসিতে গেলে বড়ো ভালো দেখাইবে না। কাহারও সহিত সাক্ষাৎ করিবার সময় যদি ঘড়ি দেখিবার প্রয়োজন হয় তবে “অন্য কাজ আছে এইজন্য ঘড়ি দেখিতেছ’ এই বলিয়া কারণ দর্শাইয়া ও অনুমতি লইয়া তুমি ঘড়ি দেখিবে। কোনো মহিলা বিদায় লইতে উঠিলে পুরুষেরও উঠিয়া দাঁড়াইতে হয়, এবং যদি তাঁহার নিজের বাড়ি হয় তবে গাড়িতে পৌঁছিয়া দিতে হয়। অভ্যাগত আইলে বিশেষ সম্ভ্রম দেখাইবার ইচ্ছা না থাকিলে মহিলারা অগ্রসর হইয়া তাঁহাকে অভ্যর্থনা করিবেন না, যদি তিনি এক পদ মাত্র অগ্রসর হইয়া তাহাকে শেক্‌-হ্যাণ্ড করেন ও সে না বসিলে না বসেন, তাহা হইলেই যথেষ্ট হইবে। অভ্যাগতগণ বিদায় লইবার সময় উঠিলে মহিলাকেও উঠিতে হইবে ও যতক্ষণ না তাঁহারা ঘর হইতে বাহির হইয়া যান ততক্ষণ দাঁড়াইয়া থাকিবেন, কিন্তু ঘরের সীমা পর্যন্ত তাঁহাদের সঙ্গে সঙ্গে যাইবার কোনো প্রয়োজন নাই। নিজে যে চৌকিতে বসিয়া থাক, নিজে না বসিয়া সম্ভ্রম প্রদর্শনের জন্য সে চৌকি কাহাকেও বসিবার জন্য দিয়ো না, তবে যদি অন্য চৌকি না থাকে সে এক আলাদা কথা। এই তো গেল প্রণাম নমস্কার প্রভৃতি সম্ভ্রম প্রদর্শনের রীতি-নীতি। এক্ষণে দেখা-সাক্ষাৎ করিবার নিয়ম-অনিয়মের বিষয় লিখি।

    সকল সময়েই দর্শকদিগকে অভ্যর্থনা করাই ভদ্রতার নিয়ম। যদি তোমার হাতে সর্বদা কাজ থাকে, তবে চাকরদিগকে বলিয়া রাখিয়ো তাহারা আগন্তুকদিগকে বলিবে যে, প্রভু অমুক দিন বা অমুক সময় ব্যতীত কখনো ঘরে থাকেন না। যদি দৈবক্রমে ভৃত্য কাহাকেও ঘরের মধ্যে আনিয়া থাকে তবে যত অসুবিধাই হোক-না কেন, তাহাকে অভ্যর্থনা করাই উচিত। কোনো মহিলা আগন্তুকদিগকে অপেক্ষা করাইয়া রাখিবেন না। ছাতা এবং “ওভার-কোট্‌’ “হলে’ রাখিয়া দেখা করিতে যাইতে হইবে।

    “মর্নিং-কল’ অর্থাৎ দিনের বেলায় দেখা-সাক্ষাৎ করিতে যাওয়া বিকাল ৩টা হইতে ৫টার মধ্যেই উচিত। কারণ আহারাদি ও সাজগোজ করিবার সময় দেখা করিতে গেলে বড়ো অসুবিধা হয়।

    দেখা করিতে যাইবার সময় টুপি খুলিয়া টেবিল বা অন্য কোনো দ্রব্যের উপর রাখা উচিত নহে, টুপি হাতে করিয়া রাখিতে হইবে, অথবা যদি রাখিতেই হয় তবে ভূমির উপর রাখা উচিত। “মর্নিং কল’ করিতে যাইবার সময় শখের কুকুর সঙ্গে লইয়া ঘরে যাইয়ো না, কারণ তাহারা চেঁচামেচি করিতে পারে, অথবা কোনো লেডির গাউনের উপর বা মকমলের কৌচের উপর শুইতে কিছুমাত্র সংকোচ বোধ না করিতে পারে। অথবা গৃহের কর্ত্রীর সাধের বিড়ালটি হয়তো অগ্নিকুণ্ডের পার্শ্বে ঘুমাইতেছে, তাহার সহিত অনর্থক একটা বিবাদ বাধাইতে পারে। যদি কোনো মহিলা কাহারও সঙ্গে দেখা করিতে যান, তবে তিনি যেন তাঁহার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছেলেপিলে সঙ্গে লইয়া না যান। কারণ, যাহার সঙ্গে দেখা করিতে যান সে বেচারীর হয়তো বুক ধড়াস ধড়াস করিতে থাকে, পাছে তাঁহার “আলবাম’ ছিঁড়িয়া ফেলে বা তাঁহার সাধের প্রস্তর-মূর্তিটি অঙ্গহীন করিয়া ফেলে। তোমার যদি গাড়ি না থাকে তবে বাদলার দিনে কাহারও সঙ্গে দেখা করিতে যাইয়ো না, কারণ তুমি যদি ভিজা কোটে ও কাদা-মাখা জুতায় কাহারও ঘরের কার্পেটের উপর বিচরণ কর তবে গৃহের কর্ত্রীর বড়োই মন খারাপ হইয়া যাইবে। লোকাকীর্ণ ঘরে গেলে প্রথমে গিয়াই গৃহের কর্ত্রীকে সম্ভ্রম জানানো আবশ্যক, পরে অন্য কাজ। কোনো মহিলা কাজকর্ম ছাড়া আর কোনো কারণে ভদ্র লোকদের সঙ্গে দেখা করিতে যাইতে পারেন না। বন্ধুত্বের সাক্ষাতে বড়ো অধিক কালব্যয় করিয়ো না, বড়ো জোর আধ ঘণ্টা কথাবার্তা কহিবে। আদব-কায়দাজ্ঞ ব্যক্তিরা কহেন যে, তুমি এতটুকু থাকিবে যাহাতে বন্ধুগণ তুমি এত শীঘ্র চলিয়া গেলে বলিয়া কষ্ট পান, কিন্তু দেরি করিতেছ বলিয়া মনে মনে তোমার বিদায় প্রার্থনা না করেন। কাহারও সামাজিক সাক্ষাৎ (অর্থাৎ যে সাক্ষাৎ বিশেষ নিয়মানুসারে করিতেই হয়, বন্ধুত্ব অথবা অন্য প্রকারের সাক্ষাৎ নহে) ফিরিয়া দিবার সময় ঘরের মধ্যে না গিয়া একটা কার্ড রাখিয়া গেলেও হয়। কিন্তু অমনি বাড়ির লোকেরা কেমন আছেন, সে সংবাদটা লইয়ো। আবার যে মহিলার সঙ্গে তুমি দেখা করিতে গিয়াছ তাঁহার সঙ্গে যদি তাঁহার ভগিনী বা কন্যাগণ থাকেন, তবে প্রত্যেককে আলাদা আলাদা কার্ড দিতে হইবে। অথবা যদি বাড়িতে অন্য অভ্যাগত উপস্থিত থাকেন, তবে কাহাকে কার্ড পাঠাইতেছ, তাহা বিশেষ করিয়া জানাইবার জন্য তোমার নামের উপর তাঁহার নাম লিখিয়ো। কাহারও শোকে শোক প্রকাশ করিবার জন্য যে সাক্ষাৎকারের নিয়ম আছে, তাহা শোকের ঘটনা ঘটিবার পরে সপ্তাহের মধ্যে পালন করা উচিত। তোমার যদি বিশেষ আত্মীয় বন্ধু না হন তবে কার্ড পাঠাইয়া দিয়ো। কাহারও আনন্দে আনন্দ প্রকাশ করিবার নিমিত্ত সাক্ষাৎ করিতে হইলে কার্ড না পাঠাইয়া নিজে যাইয়ো। যে বন্ধু বা আলাপীর বাড়িতে নিমন্ত্রণে গিয়াছ, বা যাহাদের নিমন্ত্রণের চিঠি পাইয়াছ, সপ্তাহের মধ্যে তাহাদের সহিত দেখা করিয়ো। দেশে আগমন ও বিদায়-বার্তা জানানো ভিন্ন অন্য কোনো কারণে চাকরের হস্তে কার্ড পাঠানো বড়োই অসম্ভ্রম প্রদর্শনের চিহ্ন।

    কার্ডের উপর নাম ধাম সমস্ত লিখা থাকিবে। সাক্ষাৎ করিবার কার্ড খুব সাদাসিদা হওয়া উচিত, চকচকে কার্ডের “ফ্যাশান’ এখন আর নেই। নিজের নামের সহিত খেতাব প্রভৃতি যেন না থাকে, সাদাসিদা “ইটালিক’ অক্ষরে নাম লিখা থাকিবে, “রোমান’ বা অন্য প্রকার ঘোর-ফের অক্ষরে যেন নাম লেখা না হয়। “কন্টিনেন্টে’ অর্থাৎ ফ্রান্স প্রভৃতি দেশে নামের পূর্বে “মশিও’ বা “মিস্টর’ বা “মিস’ প্রভৃতি লেখে না, ইংলন্ডেও কেহ কেহ তাহার অনুকরণ করেন। নিজের হাতের লেখার অনুরূপ অক্ষরে নাম লিখিলে, হাস্যাস্পদ হইতে হয়। তবে বড়ো বড়ো প্রতিভাসম্পন্ন লোক, যাঁহাদের হাতের অক্ষর দেখিতে লোকের কৌতূহল জন্মে, তাঁহারা এরূপ করিতে পারেন; জন্‌ স্টুয়ার্ট মিল বা কার্লাইলের হাতের অক্ষরের কার্ড শোভা পায়, অন্য লোকের নহে। শোকগ্রস্ত ব্যক্তিদিগের কার্ডের চারি দিকে কালো ঘের থাকিবে। অবিবাহিতা কুমারী যাঁহারা পিত্রালয়ে বাস করিতেছেন, তাঁহাদের আর স্বতন্ত্র কার্ডের প্রয়োজন নাই। কার্ডে তাঁহাদের মাতার নামের নিম্নে নিজের নাম লিখা থাকিবে। যেমন

    Mrs Charles Gilbert

    Miss Charles Gilbert

    কোনো কোনো বিবাহিত সস্ত্রীক দেখা করিতে আইলে উভয় নামের একটি কার্ড ব্যবহার করেন; যেমন Mr. & Mrs. Stewart Austin। পরিবারের কাহারও মৃত্যু হইলে ইংরাজেরা অনেক সময়ে কার্ড পাঠাইয়া সেই সংবাদ দেন; সেই কার্ডে মৃত ব্যক্তির নাম, বয়স, জন্মস্থান, বাসস্থান ও কবরস্থান লিখিত থাকে। বিদায় লইবার কার্ডের এক কোণে P.P.C. (pour prendre cong) অথবা P.D.A. (pour dire adieu) এই অক্ষর তিনটি খোদিত থাকে।

    বিদেশ হইতে নবাগত ব্যক্তি যদি তোমার বন্ধুর পরিচয়-পত্র (Letter of introduction) তোমার কাছে পাঠাইয়া দেয়, তবে তাহার পরদিন গিয়া তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিয়ো। দেখা করিয়া তাহার পরেই তাঁহাকে ভোজনের নিমন্ত্রণ করিবে। যদি তেমন ক্ষমতা না থাকে, তবে তাঁহাকে লইয়া সংগীতালয় পশুশালা প্রভৃতি দেশে যাহা-কিছু দেখিবার স্থান আছে লইয়া যাইয়ো। যাহাকে কাহারও নিকট পরিচিত করিবার নিমিত্ত পরিচয়-পত্র লিখিবে, তাহার চরিত্রের বিষয় কিছু লিখিবার আবশ্যক নাই। চরিত্রের বিষয় কিছু না বলিলেও বুঝায় যে, যাহাকে তুমি তোমার বন্ধুর সহিত পরিচিত করিতে চাও, তাহাকে অবশ্য তোমার বন্ধুর পরিচয়ের যোগ্য মনে করিতেছ। শুদ্ধ এই লিখিলেই যথেষ্ট যে– “অমুক ব্যক্তি তোমার বন্ধু হইলেন, ভরসা করি তোমার অন্যান্য বন্ধুরা তাঁহাকে আদরের সহিত গ্রহণ করিবেন।’

    ভারতী, জ্যৈষ্ঠ , ১২৮৫

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleসমবায়নীতি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    Next Article সমূহ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

    Related Articles

    উপন্যাস বুদ্ধদেব গুহ

    কোয়েলের কাছে – বুদ্ধদেব গুহ

    May 23, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রবার্টসনের রুবি – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    বোম্বাইয়ের বোম্বেটে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রয়েল বেঙ্গল রহস্য – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    ফেলুদা এণ্ড কোং – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }