Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সমাজ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

    উপন্যাস রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এক পাতা গল্প504 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    আপনি বড়ো

    মুখে যাহারা বড়াই করে তাহারা সুখে থাকে, তাহাদের অল্প অহংকার অল্পেই উদ্‌বেলিত হইয়া প্রশমিত হইয়া যায়। কিন্তু মনে মনে যাহারা বড়ো হইয়া বসিয়া আছে, অথচ বুদ্ধির আতিশয্যবশত মুখ ফুটিয়া বলিতে পারে না, তাহাদের অবস্থা সুখের নহে। যেমন বাষ্পের ধর্ম ব্যাপ্ত হওয়া, তেমনি অহংকারের ধর্মই প্রকাশ পাওয়া। যে তাহাকে অন্তরে আটকে রাখিতে চায় সে তাহার সেই রুদ্ধ অহংকারের অবিশ্রাম আঘাতে সর্বদাই পীড়িত হইতে থাকে। বরং নিজের দুঃখশোক নিজের মধ্যে রোধ করিয়া থাকিলে মহৎ ধৈর্যজনিত একপ্রকার গভীর সুখ লাভ করা যাইতে পারে, কিন্তু চপল অহংকারকে হৃদয়ের গোপন কক্ষের মধ্যে শোষণ করিয়া সেই মহত্ত্বের সুখটুকুও পাওয়া [যায়] না।

    যাহারা দুঃখ শোক নীরবে বহন করিয়া সহিষ্ণুতা সঞ্চয় করিয়াছে, তাহাদের বিশীর্ণ পাণ্ডুমুখের উপরে একপ্রকার উত্তাপবিহীন জ্যোতির্ময় ছায়া পড়ে, কিন্তু অপরিতৃপ্ত অহংকার যাহাদের হৃদয়বিবরে ক্ষণে ক্ষণে উষ্ণনিশ্বাস ত্যাগ করিতেছে, তাহাদের নেত্রের অধঃপল্লবে একপ্রকার জ্যোতিহীন জ্বালা, তাহাদের চিরশীর্ণ তীক্ষ্ণ মুখে, দৃঢ়বদ্ধ ওষ্ঠাধরপ্রান্তে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গভীর রহস্যরেখাসকল প্রকাশ পায়। বরঞ্চ যৌবনকালে এই উগ্র প্রাখর্য তাহাদের সৌন্দর্যের তেমন ক্ষতিকর না হইতেও পারে, কিন্তু প্রৌঢ় বয়সের যে বিমল শান্তিময় মমতাপূর্ণ অচঞ্চল শারদ শোভা তাহা তাহারা কিছুতেই রক্ষা করিতে পারে না। বয়সকালে তাহাদের চক্ষুপল্লবে সেই উজ্জ্বল কোমল অশ্রুরেখার ন্যায় ভারাক্রান্ত স্নিগ্ধদৃষ্টি, তাহাদের ওষ্ঠাধরে সেই স্নেহভাষায় জড়িত বাসনাহীন সান্ত্বনাপূর্ণ সুধাধৌত মৃদুহাস্য কিছুতেই প্রকাশ পায় না। তাহারা সৌন্দর্য প্রাণপণে রক্ষা করিতে চায়, কিন্তু তাহাদের হৃদয়ের অন্ধকূপ হইতে কুৎসিত বাষ্প অল্পে অল্পে উত্থিত হইয়া তাহাদের মুখের সহজ মানব-শোভা লোপ করিয়া দেয়। তাহারা বার্ধক্য গোপন করিতে চায়, অকালে বৃদ্ধ হইয়া পড়ে, অথচ কোনোকালে বার্ধ্যকের পরিণত গাম্ভীর্য লাভ করিতে পারে না।

    যাহারা কিছু একটা কাজ করিয়া তুলিয়াছে, কোনো একটা অনুষ্ঠানে প্রবৃত্ত হইয়াছে, এবং সাধ্যানুসারে ক্রমশ তাহা সম্পন্ন করিতেছে, তাহাদের হৃদয়ে অহংকার সঞ্চিত হইতে পারে না, কার্যস্রোতের সঙ্গে বাহির হইয়া ভাঙিয়া চলিয়া যায়। কিন্তু যাহারা কিছু করে না, করিতে পারে না, মনে করে করিতে পারি অথচ করিতে গিয়া নিষ্ফল হয়, তাহারা অহংকার বাহির করিয়া ফেলিবার পথ পায় না। তাহারা কিছুতেই আপনার কাছে এবং পরের কাছে প্রমাণ করিতে পারে না যে তাহারা বড়ো, এইজন্য মনের খেদ মনে মনে আপনার বড়োত্বের প্রতি ক্রমশ অধিকতর অন্ধ বিশ্বাস স্থাপন করিয়া আপনাকে প্রাণপণে সান্ত্বনা দিবার চেষ্টা করে। কিন্তু কণ্টকশয্যায় যেমন বিরাম নাই, তেমনি সে সান্ত্বনায় সান্ত্বনা নাই। তাহারা যত আপনাকে বড়ো মনে করে ততই আরও অধিকতর দগ্ধ হইতে থাকে।

    আমি যাহাদের কথা বলিতেছি, তাহাদের বুদ্ধি আছে অথচ এমন ক্ষমতা নাই যে কোনো মহৎ কাজ সম্পন্ন করিয়া উঠিতে পারে। এই বুদ্ধির প্রভাবে তাহারা আপনাকে সম্পূর্ণ প্রতারণা করিতে পারে না। কেবল সচেতন বেদনা অনুভব করিতে থাকে। তাহারা দেখিতে পায় যে, আমরা আপনাকে এত বড়ো মনে করিতেছি তবুও কিছুতেই বড়ো হইয়া উঠিতেছি না। এই অলস অহংকার দান্তের নরকযন্ত্রণা বর্ণনায় স্থান পাইবার যোগ্য। বিপুল অভিমানে বিদীর্ণ হইবার উপক্রম করিতেছি অথচ এক-তিল প্রসর বাড়িতেছে না, সে কোন্‌ মহাপাতকের ভোগ!

    এইরূপ বুদ্ধিমান গুপ্ত অহংকারী সর্বদাই বৃহৎ সংকল্প সৃষ্টি করিতে থাকে। সকল দিকেই হাত বাড়াইতে থাকে অথচ নাগাল পায় না। পাশের লোক তাহাকে যে, কোনো বিষয়ে অতিক্রম করিয়া যাইবে ইহা তাহার ইচ্ছা নহে। এইজন্য কাহাকে কোনো লক্ষ্যমুখে যাত্রা করিতে দেখিলে সেও এক-এক সময়ে তাড়াতাড়ি ছুটিতে আরম্ভ করে, পথের মধ্য হইতে ফিরিয়া আসে ও মনে মনে কহে যদি শেষ পর্যন্ত যাইতাম তো আমিই জিতিতাম। সে চুপি চুপি এইরূপ প্রচার করে আমি যে কোনো কিছুতেই বাস্তবিক কৃতকার্য হইতে পারি নাই, সে কেবল ঘটনাবশত। কারণ যাহারা নিজ নিজ সংকল্পে কৃতকার্য হইয়াছে, তাহাদের অপেক্ষা সে আপনাকে মনে মনে এত বড়ো বলিয়া ঠিক করিয়া রাখিয়াছে যে নিজের অক্ষমতা সে কল্পনা করিতে পারে না। ক্ষমতা আছে অথচ ক্রমিক প্রতিকূল ঘটনাবশত বড়ো হইতে পারিতেছি না, এই দুঃখে সে সর্বদাই এক প্রকার তীব্রস্বভাব অবলম্বন করিয়া থাকে। এমন-কি, তাহার ঈশ্বর ভক্তি চলিয়া যায়। তাহার সমস্ত ভক্তি সে নিজের পদতলে আনিয়া গোপনে আপনার পূজা করিতে থাকে– বলিতে থাকে “আমি মহৎ– সমস্ত জগৎ আমার প্রতিকূল, ঈশ্বর আমার প্রতিবাদী। কিন্তু যে যাহা বলে বলুক, আমি আমাকেই আমার শিরোধার্য করিয়া সংসারের পথে সবলে পদক্ষেপ করিব।’ এই বলিয়া সে কখনো কখনো সবলে বন্ধন ছিঁড়িয়া হঠাৎ এক রোখে ছুটিতে থাকে, সগর্বে চারি দিকে চাহিতে থাকে– বলে “কী আমার দৃঢ়চিত্ততা! স্বকপোলকল্পিত কর্তব্যের অনুরোধে সমস্ত জগৎসংসারের প্রতি কী প্রবল উপেক্ষা!’ বুঝিতে পারে না যে তাহা সহসা প্রতিহত সংকীর্ণ আত্মাভিমানের সফেন উচ্ছ্বাস মাত্র!

    পূর্বেই বলিয়াছি ইহাদের বুদ্ধি যথেষ্ট আছে, এত আছে যে, বন্ধুবান্ধবেরা সকলেই প্রত্যাশা করিয়া আছেন কবে ইহারা আপন বুদ্ধিকে স্থায়ী কার্যে নিযুক্ত করিবে। বন্ধুদিগের উত্তেজনায় এবং আত্মাভিমানের তাড়নায় তাহাদের বুদ্ধি অবিশ্রাম চঞ্চল হইয়া বেড়াইতে থাকে, মনে করে হাতের কাছে আমার অনুরূপ কার্য কিছুই নাই। কোনো একটা অনুষ্ঠানে প্রবৃত্ত হইতে ভয় হয় পাছে ক্ষমতায় কুলাইয়া না উঠে এবং আত্মীয়সাধারণের চিরবর্ধিত প্রত্যাশার মূলে কুঠারাঘাত পড়ে। ফলাফলের ভার বিধাতার হস্তে সমর্পণপূর্বক মহৎ কার্যের অমোঘ আকর্ষণে আকৃষ্ট হইয়া আত্মসমর্পণ করা এরূপ লোকের দ্বারা সম্ভবপর নহে।

    সুতরাং অবজ্ঞা, উপেক্ষা, প্রবল তর্ক এবং সমালোচনার আগ্নেয় বেগে ইহারা আপনাকে সকলের ঊর্ধ্বে উৎক্ষিপ্ত করিতে চায়। অভিমান-শাণিত তীক্ষ্ণ বুদ্ধি প্রয়োগ করিয়া ইহারা সমস্ত সৃষ্টিকার্যকে ক্ষতবিক্ষত করিয়া তোলে! অন্য সকলকে অত্যন্ত সূক্ষ্ম বিচারে বিপর্যস্ত করিয়া মনে করে, “গঠন কার্যে নিশ্চয়ই আমার অসাধারণ নৈপুণ্য আছে নহিলে এমন সূক্ষ্মাণুসূক্ষ্ম বুঝিতে পারি কী করিয়া!’ কিন্তু এত ক্ষমতা সত্ত্বেও তাহারা কেন যে কোনো সৃজনকার্যে প্রবৃত্ত হইতে চাহে না ইহাই ভাবিয়া ভাবিয়া তাহারা এবং তাহাদের প্রতিবেশীবর্গ নিরতিশয় আশ্চর্য হইতে থাকে।

    ইহারা নিতান্ত পার্শ্ববর্তী লোকের প্রশংসা সহ্য করিতে পারে না। কারণ পাশের লোক হইতে নিজের ব্যবধান অধিক নহে। পাশের লোক যদি বড়ো তবে আমিই বা বড়ো নহি কেন এই কথা মনে আসিয়া আঘাত দেয়। আমার বুদ্ধি ইহার অপেক্ষা অল্প নহে। বিচার করিতে তর্ক করিতে সূক্ষ্ম যুক্তি বাহির করিতে আমার মতো কয়জন আছে? তবে আমিই বা ইহার অপেক্ষা খাটো কিসে! এ ব্যক্তি কেবল আপন সামান্য শক্তি প্রকাশ করিয়াছে এবং পাঁচজন মূর্খ লোকে ইহাকে বলপূর্বক বাড়াইয়া তুলিয়াছে– দৈবক্রমে আমার বিপুল শক্তি মহৎ মস্তিষ্কভারে চাপা পড়িয়া আছে বলিয়া আমাকে আমি এবং দুই-একটি বন্ধু ছাড়া আর কেহ চিনিল না! আমি বর্তমান থাকিতে আমার পার্শ্বে যে লোকের দৃষ্টি পড়ে ইহা অপেক্ষা মূঢ়-সাধারণের অবিবেচনার প্রমাণ আর কী আছে! এরূপ স্থলে নিকটস্থ লোককে খাটো করিবার অভিপ্রায়ে ইহারা দূরস্থ লোকের অতিশয় প্রশংসা করে, হঠাৎ এত প্রশংসা করিতে আরম্ভ করে যে তাহার আর আদি অন্ত পাওয়া যায় না!

    অধিকাংশ স্থলে ইহাদের কতকগুলি করিয়া নিজের জীব থাকে। তাহাদিগকে ইহারা সমাধা করিয়া তুলিতে চাহে। এই-সকল স্বহস্তগঠিত পুত্তল মূর্তিকে যখন তাহারা সর্বসাধারণের সমক্ষে পূজা করিতে থাকে, তখন তাহাতে করিয়া তাহাদের আত্মাভিমান ক্ষুণ্ন হয় না, বরঞ্চ পরিতৃপ্ত হইতে থাকে। কারণ এই পুত্তলপ্রতিষ্ঠার মধ্যে তাহারা আপনাদের আত্মকর্তৃত্ব বিশেষরূপে অনুভব করিতে থাকে।

    ইহাদের একপ্রকার শুষ্ক বিনয় আছে তাহার মধ্যে বিনয়ের মাধুর্য কিছুই নাই। সে বিনয় এত কঠিন যে অবিনয় তাহা অপেক্ষা অধিক কঠিন নহে। মনে হয় যেন অহংকার তাহার সমস্ত মাংসপেশী কাষ্ঠের ন্যায় শক্ত করিয়া সবলে স্থির হইয়া আছে। বিনয়বচনের মধ্যে যেন কেমন একটা পরিহাসের স্বর প্রচ্ছন্ন রহিয়াছে। অভিমান যেন গভীর বিদ্রূপভরে বিনয়ের অনুকরণ করিতেছে। অথবা সে যেন সকলকে ডাক দিয়া বলিতেছে, “আমি নিজের মহোচ্চ স্বন্ধের উপর চড়িয়া এতই উন্নত হইয়া উঠিয়াছি যে বিনয় প্রকাশ করিলেও আমার কোনো ক্ষতিবৃদ্ধি নাই। আমি আপনাকে বিস্তর বড়ো বলিয়া জানি এইজন্য বিস্তর অহংকারভরে বিস্তর বিনয় করিয়া থাকি।’

    ইহারা যতই আত্মসংযম অভ্যাস করুক না, থাকিয়া থাকিয়া আত্মীয়স্বজনদের প্রতি ইহাদের কঠোর কটাক্ষ, নিষ্ঠুর বাক্য, ক্রূর পরিহাস বাহির হইয়া পড়ে। সংবরণ করিতে পারে না। তীব্র জ্বালাস্রোত মরুহৃদয়ের ভূগর্ভে অন্তঃসলিলা বহিতে থাকে, সময়ে সময়ে সামান্য কারণে ক্ষীণ আবরণ ভেদ করিয়া রক্তনেত্র, বিস্ফারিত নাসারন্ধ্র, বিদীর্ণ ওষ্ঠাধরের মধ্য দিয়া বাহিরে উৎসারিত হইয়া উঠে। এক-এক সময়ে বিদ্যুৎস্ফুলিঙ্গের ন্যায় এক-একটি ক্ষুদ্র তীক্ষ্ণ সহাস্য বাক্যে তাহাদের গোপন মর্মগহ্বরের বিস্তীর্ণ অগ্নিকুণ্ড চক্ষের সমক্ষে উদ্ভাসিত হইয়া উঠে। এরূপ আকস্মিক নিষ্ঠুরতার কারণ তৎক্ষণাৎ খুঁজিয়া বাহির করা যায় না, কিন্তু সে কারণ অল্পে অল্পে বহুদিন ধরিয়া হৃদয়ে সঞ্চিত হইতেছিল। অবরুদ্ধ অহংকার অজ্ঞানে অলক্ষিতভাবে যখন-তখন আঘাত সহিতেছিল, অবশেষে সহিষ্ণুতা উত্তরোত্তর ক্ষয়প্রাপ্ত হইয়া একদিন সামান্য আঘাতে দ্বিধা হইয়া যায় এবং অভিমানের বিষদন্ত সম্মুখে যাহাকে পায় তাহাকেই আসিয়া বিদ্ধ করে।

    এই হৃদয়বিবরবাসী অহংকারের উষ্ণ নিশ্বাস-বাষ্পে প্রশান্ত স্নেহ, নিরভিমান, প্রেম ও উদার করুণা আচ্ছন্ন হইয়া যায় এবং ক্রমশ কলুষিত হইয়া উঠে। আত্মবিস্তৃত সরল সহৃদয়তার সুখ আর ভোগ করিতে পারি না, সর্বদাই রুদ্ধ দ্বার, রুদ্ধ হৃদয়, তামসী মুখশ্রী, সংকীর্ণ জীবনের গতি। গৃহকোণ অবলম্বন করিয়া কাল্পনিক উদারতার অভাব নাই, অথচ যথার্থ হৃদয়ের সহিত কাহাকেও হৃদয়ের কাছাকাছি অভ্যর্থনা করিয়া আনিতে পারি না। এই বিচিত্র জনপূর্ণ সহস্র সুখদুঃখময় পৃথিবীতে সকলকে দূরে রাখিয়া, স্বজনদিগকে আঘাত দিয়া, আত্মম্ভরিতার অন্ধকূপের মধ্যে আপনাকে লুপ্ত করিয়া আমাদের মর্ত্যজীবন অন্ধকারে নিষ্ফল অতিবাহিত করিয়া দিই, অবশেষে মৃত্যু আসিয়া আমাদিগকে এই জীবন্মৃত্যু হইতে শুভক্ষণে মুক্ত করিয়া দেয়!

    কল্পনা, জ্যৈষ্ঠ, ১২৯৪

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleসমবায়নীতি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    Next Article সমূহ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

    Related Articles

    উপন্যাস বুদ্ধদেব গুহ

    কোয়েলের কাছে – বুদ্ধদেব গুহ

    May 23, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রবার্টসনের রুবি – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    বোম্বাইয়ের বোম্বেটে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রয়েল বেঙ্গল রহস্য – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    ফেলুদা এণ্ড কোং – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }