Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সহস্র এক আরব্য রজনী

    ক্ষিতিশ সরকার এক পাতা গল্প3728 Mins Read0

    ১.১২ কুলি-ছেলে আর তিন কন্যা

    কুলি-ছেলে আর তিন কন্যা

    শাহরাজাদ একটু থামলো, পরে বললো, কিন্তু মনে ভেবো না, এর চেয়ে সুন্দর কাহিনী আর নেই। এর পর এক কুলির কাহিনী তোমাদের শোনাবো। সে কাহিনী আরও চমৎকার। আরও মজার।

    এক সময়ে বাগদাদ শহরে এক প্রিয় দর্শন যুবক বাস করতো। এক সে। বিয়ে থা করেনি। কুলি-গিরি করে খায়। একদিন তার খালি ঝুডিটা সামনে রেখে রাস্তার একপাশে খদ্দেরের প্রতীক্ষা করছিলো। এমন সময় নজর পড়লো। ক্ষীণ-কটি উদ্ধত উন্নতাবক্ষণ, অন্সর সদৃশ, পরমা সুন্দরী এক যুবতী তারই দিকে এগিয়ে আসছে। দুধে-আলতা গায়ের রঙ। চাঁপার কলির মতো তার হাতের আঙ্গুলগুলো। কাছে এসে মুখের নাকবি ঈষৎ সরিয়ে সে বললো, এই, যাবে?

    হরিণীর মতো টানা টানা চোখ। সুরমা পরে আরও সুন্দর দেখাচ্ছে। টিকালো নাক। গোলাপের পাপড়ির মতো ঠোঁট মাথায় একরাশ ঘন কালো চুল। এমন রূপসী নারী সচরাচর চোখে পড়ে না! ও যখন ডাকলো, এই যাবে? যেন মধু ঢেলে দিলো তার কানে। কি মিষ্টি গলার স্বর।

    খালি ঝুডিটা তুলে নিয়ে তার পিছে পিছে চলতে থাকে সে। এক সময় এক বাডির দরজার সামনে এসে কড়া নাড়লো মেয়েটি। একটি ট্যাশ মেয়েছেলে দরজা খুলে দিলো। তার হাতে কিছু দিনার দিতে একবোতল মদ এনে দেয় সে। সরাবের বোতল ঝুডিতে তুলে দিয়ে আবার চলতে থাকে। তার পিছে পিছে চলে কুলি। এক ফলের দোকানের সামনে এসে থামে। কিছুফল কেনে। নানা দেশের সেরা সব ফল। সিরিয়ার আপেল, ওসমানী বেদনা, উমানের আখরোট, আলেপ্লোর আলুবখরা, দােমস্কাসের আঙুর, নীল-এর শশা, মিশরের পাতিলেবু, সুলতানী চাটনী, লাল রঙের জাম। ফলগুলো ঝুডিতে তুলে নিলো এবার হেনা, গোলাপ, চামেলী, যুঁই, আরও সব নানা জাতের সুন্দর সুন্দর সুগন্ধী ফুল কিনলো মেয়েটি। তারপর এল কষাই-এর দোকানে। পাঁচ সের মাংস নিলো। এর পর সে আলমন্ড কিনলো। তারপর এলো মিষ্টির দোকানে; পেস্তার বরফি, গাজরের হালওয়া, মাখন চীজ, দুধ, মধু, চিনি দিয়ে তৈরি হরেক রকম জিভে-জাল-আসা ভালো ভালো মেঠাই কিনে ঝুডিতে তুলে দিলো। তার সওদা করার বহর দেখে কুলি তো অবাক। ঝুডিতে আর অ্যাটে না। কী পোল্লাই ভারি হয়ে গেলো ঝুডিটা। একটু বিরক্ত হয়ে অথচ হাসতে হাসতে বললো, আগে যদি জানাতে মালকিন, তা হলে তোমার জন্য একটা খচ্চর ভাড়া করে। দিতাম। এতো কি মানুষ বইতে পারে।

    তার রসিকতায় হাসলো মেয়েটিা চোখে বান মারলো। মুখে কথা বললো না।

    একটা আতরের দোকানে এসে গোলাপজল, আতর আর দশ বোতল নির্মল পানীয় জল নিলো। পিচকারীর যন্ত্রও কিনলো একটা। সব শেষে সে আলেকজান্দ্ৰিয়ার সুন্দর সুন্দর মোমবাতি কিনলো কিছু। সবগুলো ঝুডিতে তুলে দিয়ে বললো, নাও, চলো, সব হয়ে গেছে।

    সুবোধ বালকের মতো ঝুডি মাথায় তার পিছু পিছু চলতে থাকে সে। এক সময় দেখে অবাক হতে হয়, এক মনোরম প্রাসাদ-প্রাঙ্গণে এসে হাজির হলো তারা। সামনে ফুলের বাগিচা। জলের ফোয়ারা। দরজায় টোকা দিতেই খুলে গেলো। কুলিটা দেখলো, দরজা খুলে দিয়েছে এক নবযৌবন-উদ্ভিন্না এক কিশোরী। যৌবনে হবে পরমা সুন্দরী রমণী। তার ছোট ছোট সুগঠিত স্তন, সরু কোমর আর কুসুম-পেলাব তনুতে এখনই যাদু লেগেছে। টানা টানা চোখ, উন্নত নাসিকা, গালে গোলাপের আভা। চোখের তারায় হরিণীর চঞ্চলতা।

    আজকের দিনটা তার ভালোই যাবে মনে হচ্ছে। কুলিটা ভাবলো, সকাল বেলায় এমন সুন্দরী নারীর দর্শন, এ পরম সৌভাগ্যের কথা।

    ঘরের ভিতর ঢুকলো ওরা। বিশাল বিস্তুত হল ঘর। দরজা জানলায় কারুকার্য করা সিস্কের পদার্থ। দামি আসবাবে সাজানো গোছানো! মেহগনি কাঠের টেবিল চেয়ার, সোফা কোচ। পারস্য-গালিচায় মোড়া মেঝে। একটা পালঙ্কে মখমলের শয্যায় শুয়ে ছিলো একটি মেয়ে। তার পায়ের গোড়ালির কাছে শাড়িটা একটু উপরে উঠে গেছে। ধবধবে ফর্সা পা দু’টো দেখে অবাক হয়ে যায় কুলিটা। এমন ফর্সা মানুষ হয়? ওপাশে কাত হয়ে শুয়েছিলো মেয়েটা। ওর চওড়া ভারি নিতম্ব ছোট্ট একটা পাহাড়ের ঢেউ খেলানো চূড়োর মতো। কোমরের কাছে উঠে গেছে। পিঠের নিচে কটিদেশে ও গ্ৰীবার অনাবৃত অংশটুকু দেখে কুলির সারা দেহে রোমাঞ্চ লাগে। অপলক চোখে দেখতে দেখতে ভুলে যায় তার মাথার ওপর অত বড় একটা ভারি বোঝা। এমন সময় আড়মোড়া ভেঙে পাশ ফিরলো মেয়েটি, প্রভাতের শুকতারার মতো প্রশান্ত মুখশ্ৰী। নিখুঁত সুন্দর। চোখ মেলে তাকালো। সমুদ্র-নীল গভীর আয়ত চোখ। আলস্য ঝেড়ে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। তারপর বললো, তোমরা সব আমন ভাবে দাঁড়িয়ে আছ কেন? ওর মাথা থেকে ঝুডিটা নামিয়ে নাও।

    দু’জনে ধরাধরি করে ঝুডিটা নামিয়ে নিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখতে লাগলো শামানগুলো। কুলিটাকে দু’টো দিনার দিয়ে বললো ঠিক আছে?

    কিন্তু কুলিটা কোন কথা বলতে পারলো না। হতবাক নিশ্চল পাথরের মতো দাঁড়িয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে দেখতে লাগলো মেয়েগুলোকে। এত সুন্দর মেয়েছেলে ও জীবনে দেখেনি কখনও? এমন রূপ যৌবন অথচ কোন পুরুষ মানুষ নেই। ওদের! এতো খানা-পিনার আয়োজন, এতো ফুলের সৌরভ, মনমাতানো সুগন্ধ সবই ওদের নিজেদের জন্যে? কোন পুরুষের ভাগ নেই। এতে। অবাক হলো কুলিটা।

    মেয়েগুলোর মধ্যে বড়জন জিজ্ঞেস করলো। কি হলো, তুমি দাঁড়িয়ে রইলে কেন? তোমার কিরায়া পছন্দ হয়নি? এই নাও আরেক দিনার দিচ্ছি।

    কুলিটা হাত সরিয়ে নিলো। না না, সে কি কথা। আমার মজুরী তো মাত্র এক দিনার। তোমরা দিয়েছ আমাকে দু দিনার। সেদিক থেকে আমি খুব খুশি।

    —তবে? মেয়েটি অবাক হয়। তবে দাঁড়িয়ে রইলো।

    কুলি ছেলেটা একটু ইতস্তত করে বলে, তখন থেকে অন্য একটা কথা ভাবছি আমি। তোমরা তিনটি খুবসুরৎ লেড়কী। কোন কিছুই অভাব নাই তোমাদের। কিন্তু এমন একা একা থাকো কেন তোমরা? আমার তখন থেকে একটা কথাই মনে হচ্ছে-তোমাদের কোন পুরুষ মানুষ নাই কেন? যদি আচ্ছাসে ভোগ না করতেই পারলে তবে এই অঢেল রূপ যৌবনের কি দরকার, বলো? তোমরা তো তিনজনই উঠতি বয়সের যুবতী নারী। কামনা-বাসনা-লালসা সবই তোমাদের আছে? না নাই? অন্তত একটা পুরুষমানুষও তো তোমাদের দরকার! যদি না কোন পুরুষের সঙ্গ পায় যদি না তার পৌরুষের স্বাদ পায়। তবে তো নারীর রূপ যৌবন সবই বিফলে যায়। এ সব আমার বানানো কথা না বিবিজান। কিতাবে লেখা আছে।

    —কিন্তু আমরা যে কুমারী মেয়ে, গো। পরপুরুষের সঙ্গ আমাদের বিপদ ঘটাতে পারে। বড়বোন বলতে থাকে, তারা কাছে এসে আমাদের সর্বনাশ করে দিয়ে পালিয়ে যাবে। আর তার পাপের বোঝা বয়ে বেড়াতে হবে আমাদের। এই ভয়েই আমরা একা এক দিন কাটাই।

    তার কথা শেষ করতে না দিয়ে কুলি ছেলেটি বলে ওঠে, আমি তোমাদের কথা দিচ্ছি, আমাকে দিয়ে কোন বিশ্বাসঘাতকতার কাজ পাবে না তোমরা। যেমনটি চাইবে তেমনটিই করবো।

    নানা রকম ভালো ভালো শায়ের আওড়াতে থাকে ছেলেটা। কুলিগিরি করে বটে। কিন্তু পড়াশুনা বেশ আছে। ওর কথা বাতায় কবিতায় সবাই বেশ খুশি হলো।

    মেজোটা বড়দিদির কানে কানে ফিসফিস করে বলে, ছোঁড়াটাকে নিয়ে একটু মজা মস্করা কর দিদি।

    বড়টা গভীর হওয়ার ভান করে বলে, তুমি তো নিজের চোখেই দেখেছে আজকের বাজার হাট অনেক খরচাপাতি হয়ে গেছে আমাদের। আজকের মাইফেলে আমাদের সঙ্গ দিতে চাইছো, খুব ভালো কথা। কিন্তু মালকডি আছে কিছু সঙ্গে? দিতে পারবে কিছু? আনন্দে ভাগ নেবে। খরচার ভাগ দেবে না?

    কুলি ছেলেটা মুখ কাচুমাচু করে বলে দিন আনি দিন খাই। তোমাদের এই পোল্লায় খরচের কতটুকু দিতে পারি বলো। আর সে সামান্য পয়সা নিয়ে তোমাদেরই বা কি হবে?

    মেজো বোনটা এগিয়ে এসে বলে, তা বললে কি করে চলবে, নাগর। সারা দিন। সারা রাত ধরে মাইফেল চলবে আমাদের। সরাবের ফোয়ারা ছুটবে। খানা পিনা— কতো খরচ বলো। তার কিছু ভাগ না নিলে কি করে চলে বলে? মুফতে কি এসব চিজ মেলে?

    –কিন্তু আমি কোথায় পয়সা পাবো অতো। এখন তোমরা যত দিনারের সওদা করে আনলে সারা মাসেও আমি তা রোজগার করতে পারি না।

    এই বলে ঝুডিটা তুলে নিয়ে ছেলেটা বেরিয়ে যাবার জন্য পা বাড়াতেই মেজোটা খপ করে। চেপে ধরলে ওর একখানা হাতা আহা, গোসা হয়ে গেলো বুঝি নাগরের। খারাপটা কি বলেছি শুনি? পুরুষ মানুষ, মেয়েছেলে নিয়ে ফুর্তি করবে, পয়সা খরচা করতে পারবে না? তুমি না। পুরুষ মানুষ। মেয়ে মানুষ খুশি করার পয়সা রোজগার করতে পার না কেন?

    বড়বোন এবার মুখ খুললো, জানো তো পয়সা ছাড়া পিরীত জমে না। কথায় আছে, ফেল করি। মাখ তেল, তুমি কি আমার পর?

    মেজো আর বড় দু’জনেই খিলখিল করে হেসে ওঠে। ছোটটা কিন্তু রেগে ওঠে। কি, হচ্ছে দিদি, বেচারাকে নিয়ে আমন পুতুল নাচ করাচ্ছে কেন? ওকে ধরে রাখো আজকের মাইফেলে। দেখো, মজা হবে খুব। আমাদের তিনজনকেই আনন্দ দিতে পারবে ছেলেটা। দেখছে না। ওর বুকের ছাতিখানা।

    মেজোটা ভীষণ আমুদে। বলে, কিন্তু ওর ট্যাক তো গড়ের মাঠ। বিনি। পয়সায়—

    ছোট বলে, ঠিক আছে রাখো তোমার পয়সা। পয়সাটাই সব না? এক কডি পয়সা খরচ করে কতো তো সওদা করে এনেছো। ওসব খেয়ে ভালোও লাগবে ঠিকই। সরাবের নেশায় বুদ হয়ে পড়ে থাকতেও পারবে। কিন্তু তাই কি সব? পেটের খিদে পুরে গেলে, সুরার নেশা মিটে গেলেও আরও কিছু বাকি থেকে যায়। তা কি মেটাতে পারবে ওসব দিয়ে? আর পয়সাই যদি চাও না হয়। আমি দেব ওর হয়ে।

    মেজোটা বঁকা চোখে তাকায়। মুখে দুষ্ট হাসি। বলে, মরেছিস।

    এ কথা শুনে আনন্দে নেচে ওঠে ছেলেটার মন। ছোটকে লক্ষ্য করে বললো, তোমার অনুগ্রহের জন্য আমি চিরঋণী থাকবো।

    —থাক ও কথা, মেয়েটি বললো, এসো এবার আমরা মন খুলে একটু কথাবার্তা বলি।

    অন্য দুই বোনও ছেলেটিকে ভরসা দিয়ে বললো, আমরা এতক্ষণ তোমাকে নিয়ে মজা করছিলাম। তোমার কোন অনাদর হবে না। আজ তুমি আমাদের মেহমান। যতো পার পান। করো, খাও, নাচো, গাও।

    এক এক করে সুরাপত্র পূর্ণ করে নিলো সবাই। তিনটি রূপবতী নারী পরিবেষ্টিত হয়ে ছেলেটি ভাবতে লাগলো, একি অবিশ্বাস্য কাণ্ড। মৃদুমদের নেশা লেগেছে। ছোট বোনটি এক এক করে তিনবার সরাব ঢেলে দিলো তাকে। তারা নিজেরাও নিলো। ধীরে ধীরে নেশা জমছে।

    ছেলেটা গান ধরলো :

    আজকে রাতে মদের নেশায় টলবো না,
    আজকে শুধু গাইবো গান,
    কাজের কথা বলবো না।
    রূপের নেশায় মাতাল আমি,
    মদের নেশায় নাই।
    একটুখানি আদর করো,
    যেটুকু সময় রই।।

    গান শেষে তিনজনের হাতে চুমু খেলো সে। তারপর বড়জনকে বললো, আমি তোমার দাসানুদাস, যেমন তুমি হুকুম করবে, তামিল করব আমি।

    তোমার দুয়ারে ক্রীতদাস আমি
    আদেশ করোগো, বিবিজান।
    অসাধ্য কিছুই নাই
    বলে যদি দিতে পারি প্ৰাণ।

    –খুব হয়েছে, বড়বোন বললো, এবার মদ খাও তো। এসো, কাছে বসো।

    মদের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে আবার গান ধরলো সে :

    সুরার নেশায় বিভোর হয়ে
    ছিনু বাধা প্রিয়ার বাহু ডোরে।
    কে ভাঙ্গালো ঘুম গো আমার,
    সাক্ষী তারার ভোরে।

    ছোটবোন আরও এক পেয়ালা মদ এনে ধরলো তার ঠোঁটের কাছে।

    এক চুমুকে উজাড় করে এবার উঠে নাচতে লাগলো ছেলেটি। তার সঙ্গে ওরা তিন বোনও নাচতে শুরু করলো। দুজনকে দু’পাশে আর বড়জনকে সামনে নিয়ে নাচতে লাগলো ছেলেটা। হাসির হুল্লোড়ে মাতোয়ারা সবাই। এক সময় অন্য দু’টোকে ছেড়ে বড়টিকে নিয়ে নাচতে আরম্ভ করলো ছেলেটা। মেজোটা একটা ফুলগাছের ডাল নিয়ে পেটাতে থাকে ছেলেটাকে। তখন বড়কে ছেড়ে মেজোর কোমর জড়িয়ে ধরে নাচতে থাকে।

    এদিকে ছোটজন রাগে ফুসছে। কিল চড় লাথি চালাতে লাগলো ছেলেটার ওপর। কিন্তু তখন ওরা অন্য রাজ্যে। আলিঙ্গন আর অবলেহনের অতৃপ্ত আনন্দে আত্মহারা। নিরুপায় হয়ে শ্বেত পাথরের মেজেয় শুয়ে হাত-পা ছুড়তে থাকে ছোট।

    ছেলেটা তখন মেজোকে ছেড়ে দিয়ে ছোটর দিকে এগিয়ে যায়। দু-হাতে ওর দেহটা কাঁধের ওপর তুলে নিয়ে বাইরে বাগিচা প্রাঙ্গণে গিয়ে দাঁড়ায়।

    নানা জাতের মন মাতানো ফুলের সৌরভো বাগিচা ভরপুর। হরেক রকম রঙের বাহারী ফুলের সাজে। সেজেছে সে। মাঝখানে একটা জলের ফোয়ারা। আর তার পাশে ঘিরে আছে এক প্রকান্ড চৌবাচ্চা। ছোটখাটো একটা পুকুর বলা যায়। মারবেল পাথরে বাঁধানো তার পাড়। চৌবাচ্চার পাড়ে বসে নিরস্তর নির্বাের ফোয়ারার দিকে চেয়ে থাকতে কতো না ভালো লাগে। চারপাশে ফোটা ফুলের সৌরভ, আর চৌবাচ্চার হালকা নীল স্বচ্ছ জলের তলায়, লাল নীল হলদে রঙের ছোট্ট ছোট্ট মাছগুলোর হুটোপুটি, মনে বসন্তের রঙ ধরিয়ে দেয়।

    ছোটর রাগ আরও বেড়ে যায়। ছেলেটার মাথার চুল ছিড়তে থাকে। এলো পাথাড়ী চড়াচাপড় মারতে থাকে। কিন্তু ছেলেটা নিরস্ত করে না তাকে। তার ছোট ছোট নরম হাতের আঘাতে মাদকতা আছে। ভালো লাগে—খুব ভালো লাগে ছেলেটার। কাঁধের ওপর থেকে বুকের মধ্যে নামিয়ে নেয় ওর দেহটা ৷ এবার হঠাৎ কেমন শাস্ত হয়ে যায় মেয়েটা। দু’হাতে ছেলেটার গলা জড়িয়ে ধরে আয়ত চোখ দু’টো মেলে আপলক ভাবে দেখতে থাকে ওর মুখ। ওর পৌরুষ–পুরু ঠোঁট। কয়েকটা মুহূর্ত কাটে এইভাবে। অতর্কিতে মুখটা ওপরে তুলে দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে ছেলেটার নিচের ঠোঁটটা। আঃ বলে যন্ত্রণায় ককিয়ে ওঠে ছেলেটা। ঠোঁট দিয়ে রক্ত ঝরে পড়ে।

    ছোট এই প্রথম বুঝলো, রক্তের স্বাদ নোনতা। আরও নিবিড় করে চেপে ধরে ছেলেটাকে।

    ছেলেটার বুকের মধ্যে তখন সমুদ্রের ঝড়। মেয়েটার শরীরের শক্ত বঁধুনির আকর্ষণে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতর হয়ে মেয়েটাকে বুকে জড়িয়ে ধরেই মারবেলের ওপর বসে পড়লো ছেলেটা। ছোটকে শুইয়ে দিলো নিচে। ওর উদ্ধত বুকের দিকে চেয়ে চেয়ে দেখতে লাগলো। মেয়েটির চোখ ছেলেটির চোখের দিকে। ঠোঁটের কোণে দুন্টু হাসি ফুটে উঠলো। ছেলেটার হাত দু’টো টেনে নিয়ে নিজের বুকের ওপর চেপে ধরলো। ছেলেটা আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না।

    নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে অস্ফুট স্বরে স্তনন করতে থাকে ছেলেটা। এই সময় জলের পাড়ে এসে দাঁড়ালো বড়বোন। মদির নেশায় ঢুলু ঢুলু চোখ! ভিতরের অঙ্গবাস ছাড়া একে একে অন্য সব সাজ পোশাক খুলে ঝাপ দিলো জলে। সাঁতার কেটে খেলা করতে লাগলো। জল ছিটাতে লাগলো গায়ে। ডাকতে লাগলো, ওহে নাগর, নেমে এসো।

    ছেলেটার কোন সাড়া নাই। অসাড়ের মতো পড়ে আছে। চিৎপাট হয়ে। জলে জলে সারা জামাকাপড় ভিজে একাকার! সেদিকেও ভ্রূক্ষেপ নাই।

    ছোট উঠে এসে ছেলেটার জামা পাতলুম খুলে দিলো। একটা তোয়ালে এনে সযত্নে মুছিয়ে দিলো ওর সারা শরীর। কি শক্ত তার হাতের পেশী। কি বিশাল চওড়া বুকের ছাতি। এক সুঠাম সুন্দর যৌবন। শরীরের কোথাও এক ফোঁটা চর্বি নাই। শক্ত সমর্থ মাংসপেশী গড়া এক সিংহ সদৃশ পৌরুষ প্রত্যক্ষ করতে করতে রোমাঞ্চিত হয়ে ওঠে সে।

    বড় উঠে আসে জল ছেড়ে। ঝাঁপিয়ে পড়ে ছেলেটার ওপর। এবার আচ্ছন্নভাব কেটে যায় ছেলেটার। দু-হাতে জড়িয়ে ধরে ওকে।

    কি যেন ঘটে গেলো মুহুর্তে। কি যাদু ছড়িয়ে দিলো বড়, যেন বেহেস্তের দরজা খুলে গেলো তার সামনে।

    মেয়েটা শীৎকার দিয়ে বলে, কি অসভ্য তুমি?

    এক হাতে তার ঘাড়টা চেপে ধরে অন্য হাতে থাবড়াতে লাগলো ছেলেটাকে। সে আঘাত বড় মধুর মনে হতে থাকে তার। রিরংসায় ক্রমশই হিংস্রতর হতে থাকে মেয়েটি।

    এক সময় ক্লান্ত অবসন্ন। অথচ প্রসন্ন হয়ে ছেলেটার দেহের উপরে ঢলে পড়ে মেয়েটা।

    এর পর আর এক চক্কর সুরা পান করা হলো।

    এবার মেজো বোনের পালা।

    সেও জলে ঝাঁপিয়ে পড়লো। কিছুক্ষণ জল-কেলি করার পর সিক্ত দেহে উঠে এসে ছেলেটার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো।

    তারপর চলতে থাকে সেই একই রঙ্গরীতি।

    অবশেষে ক্লান্ত, অবসন্ন। অথচ প্রসন্ন হয়ে সে-ও ঢলে পড়ে এক সময়।

    এবার উঠে দাঁড়ালো ছোট ঝাঁপিয়ে পড়লো জলে। সাঁতারের নানা কায়দা জানে সে। কখনও ডুব দিয়ে হারিয়ে যায়। আবার কখনও চিৎ হয়ে জলের উপর ভাসতে থাকে। মনে হয় ওর শরীরের বুঝি বা কোন ওজন নাই। হালকা একটা শোলার, ভেলা। ফিকে নীল জলের ওপর ওর চাপার কলির মতো দেহটা আরও মনোহারিণী আরও রমণীয় মনে হয়। তার মরাল সদৃশ গ্ৰীবা, কুসুম পেলাব বাহু, আপেলের মতো স্তন, ক্ষীণ কটি ভারি নিতম্ব দিনে দিনে তাকে এক পূর্ণ নারী করে তুলেছে।

    মেয়েটা উঠে আসে। লজাবনতা হয়ে ছেলেটার কাছে এসে দাঁড়ায়। শুয়ে শুয়ে সব দেখছিলো ছেলেটা। এবার দু-হাত বাড়িয়ে দেয়। সে ডাকে সাড়া না দিয়ে থাকতে পারে না। মেয়েটা।

    এবার পুতুল খেলায় মেতে উঠে ছোট। এক সময় প্রবল একটা ঝাঁকানি দিয়ে কেঁপে ওঠে ছেলেটা। আর তৎক্ষণাৎ মেয়েটির সে কি অস্ফুট আর্তনাদ। আরও শক্ত করে জাপটে ধরলো ছেলেটাকে। উত্তেজনায় কাঁপতে থাকে।

    কিছুক্ষণ বাদে অবসাদে অসাড় হয়ে ঢলে পড়ে ছোটর দেহ। সারা মুখে তখন ছড়িয়ে পড়েছে তার অনেক পাওয়ার পরিতৃপ্তি। এবার ছেলেটি নামলো জলে। ভালো করে ঘসে মেজে সাফ করলো নিজেকে।

    তিন বোন তখন শান বাধানো জলের পাড়ে শুয়ে ছেলেটার জলকেলি প্রত্যক্ষ করছিলো। প্রত্যক্ষ করছিলো তার সারা শরীরের মজবুত মাংসপেশী। রিরংসায় কাতর হচ্ছিলো দেহমন।

    ছেলেটা জল থেকে উঠে এসেই বসে পড়লো বাড়বোনের পাশে। তার কাণ্ড দেখে তিনজনেই হেসে খুন।

    –বিবিজান, এবার তোমায় ছাড়বো না।

    মেয়েটি ওর কোমরটা জড়িয়ে ধরে বলে, তুমি ছাড়লেই আমি। ছাড়বো নাকি।

    ছেলেটি মুখটা নামিয়ে আনে মেয়েটার কানের কাছে!! ফিসফিস করে বলে, কী? কেমন?

    -খু-উ-ব ভালো। মনে হচ্ছে, যেন কোথায় কোন এক অজানা দেশে ভেসে চলেছি।

    এবার ওরা আরও বেশী সময় ধরে গভীর আলিঙ্গনে আবিষ্ট হয়ে পড়ে রহলো।

    এক সময় ঘুমে জড়িয়ে আসে ওদের চোখ।

    এদিকে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে। বাহুপাশ মুক্ত করে উঠে পড়ে দু’জনে।

    বড়বোন বলে, অনেক রঙ্গ দেখালে বটে। কোন মায়ের দুধ খেয়েছিলে গো? এত তাগৎ পেলে কোথায়। বাব্বাঃ, শরীরটা আমার তুলোধোনা করে দিয়েছে। সে যাক, সন্ধ্যে হয়ে এলো, এবার তুমি কেটে পড়ে নাগর।

    –না না, ছেলেটি কান্নার স্বরে মিনতি জানায়, আমন করে এখনি আমাকে তাডিয়ে দিও না। তাহলে আমি মড়ে যাব। সোনা, তোমাদের পায়ে ধরি, আজকের রাতটা এমনি সুখে কাটাতে দাও। কাল তো আমাকে যেতেই হবে।

    ছোটজন বললো, থাক দিদি, আজকের রাতটা। কেমন মজার আমুদে লোক। সারাদিন ধরে কতো আনন্দ দিলে আমাদের। রাতটাও বেশ হৈহুল্লোড়ে কাটাতে পারবো। লোকটার সরাম লজ্জা একটু কম, কিন্তু বেশ ভালো।

    তার কথায় অন্য দুই বোন রাজি হলো। বড়জন বললো, বেশ ঠিক আছে, আজকের রাতটা আমাদের সঙ্গে কাটাবে তুমি। কিন্তু একটা শর্তা! আমরা যা বলবো তাই করতে হবে তোমাকে। কেন করতে হবে কৈফিয়ৎ চাইতে পারবে না। কী, রাজি?

    –রাজি।

    তাহলে ওঠো, চলো দেখবে দরজার পাল্লায় কী লেখা আছে। ছেলেটাকে নিয়ে দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো ওরা। ওকে দেখালো, সোনার অক্ষরে লেখা আছেঃ

    ‘তোমার ভালো লাগলো কি মন্দ লাগলো সেটা কোন কথাই নয়, যা করতে বলবো শুধু তাই করে যাবে। অন্যের ব্যাপারে আদৌ নাক গলাবে না।’

    ছেলেটা বললো তোমাদের সাক্ষী রেখে আমি হলফনামা পড়লাম। এর অন্যথা করবো না।

    এক সময় রাত্রি শেষ হয়ে আসছে দেখে শাহরাজাদ গল্প থামালো।

    পর দিন দশম রাত্রি। শাহজাদা অন্দরে এলে আবার কাহিনী শুরু করলো শাহরাজাদ।

    কুলিটা হলফ করার পর মেয়েরা খাবার টেবিলে খানা সাজালো। সারাদিন মদ খেয়ে হৈহুল্লোড় করে সবারই পেটে চনমনে ক্ষিদে। একজন জেলে দিলো মোমবাতি-সুগন্ধী-চন্দন ধূপ। এবার সবাই খেতে বসলো। ছোটজন আর এক পাত্র মদ ঢেলে দিলো সবাইকে। তার পর নানারকম মুখরোচক খানা খেয়ে পরিতৃপ্ত হলো সকলে। সবচেয়ে উপভোগ্য হলো ছেলেটার অনর্গল কবিতা আবৃত্তি। চোখ বুজে মাথাটা দুলিয়ে দুলিয়ে আবৃত্তি করতে থাকে সে। ওরা মুগ্ধ হয়ে শোনে। হঠাৎ কড়া নাড়ার শব্দে চৈতন্য ফেরে। কে যেন ডাকে?

    বড়বোন উঠে গিয়ে দরজা খোলে। একটু পরে ফিরে এসে বলে, আজ রাতে সত্যিই মজা হবে। তিনজন বিদেশী এসেছে। রাতটা এখানে থাকতে চায়। কারোরই দাডি গোঁফ নেই। আর তিনজনের বাঁ। চোখটা কানা—ঠলি পরা। অদ্ভুত কেমন যোগাযোগ। দেখলেই বোঝা যায় ওরা সবাই রাম দেশের বাসিন্দা। ওদের যদি থাকতে দেওয়া যায় তা হলে ভারি মজা হতে পারে রাতে।

    সবাই বললো, বেশ তো ওদের ভিতরে নিয়ে এসো। কিন্তু ওদের আগে দরজার হলফনামা পড়িয়ে দাও। ওই শর্তে যদি ওরা রাজি থাকে। তবেই ওরা থাকতে পারে, নচেৎ নয়।

    ছোট বোনটা ছুটে গেলো দরজার দিকে। একটু পরে ওই তিনজন বিদেশীকে ভিতরে নিয়ে এলো সে। সবাই মিলে তাদের অভ্যর্থনা করে বসালো। ওরা বসলো। কুলি ছেলেটার দিকে তাকিয়ে দেখলো তারা। ছেলেটা তখন মদের নেশায় মাতাল। ওকে দেখে ওরা ফিসফিস করে। বলাবলি করতে থাকে। মনে হচ্ছে, ওই ছেলেটাও আমাদের জাতভাই–আর এক কালান্দার ফকির।

    ওদের কথা কিন্তু ছেলেটার কানে গেলো। আর হঠাৎ সে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে উঠে বললো, ঠিক আছে ভাইসাব, আপনারা আরোও একটু ঘরোয়া হয়ে আলাপ সালাপ চালান। গোমড়া মুখ হয়ে বসে থাকলে তো চলবে না।

    ওর কথা বলার ধরণধারণ দেখে সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।

    মেয়েরা বললো, আমরা এই বিদেশী কালান্দার ফকিরদের নিয়ে একটু মজা করবো।

    কালান্দারদের খেতে দিলো। ওরা। গোগ্রাসে খেলোও তারা প্রচুর। যেমন খেলো খানা, তেমনি গিললো মদ। অবশেষে সবাই যখন মদের নেশায় চুর তখন মেয়েগুলো বায়না ধরলো, কালান্দারদের গান শুনবে তারা। ওরা বললো, নিশ্চয়ই শোনাবো। কিন্তু গানের সাথে বাজনা না হলে কি জমবে? বাজাবার কিছু আছে ঘরে?

    বড় বোন জবাব দিলো, আছে–একটা বড় মসুল জয়ঢাক আছে। ইরাকের ফুট আর পারস্যের সানাই আছে আমাদের ঘরে।

    উল্লাসে ফেটে পড়লো ছেলেটা। হা, হা ইয়া আল্লাহ, কী মজা! গানের সঙ্গে এমন বাজনাজামবে ভালো।

    এমন সময় আর একবার কড়া নাড়ার শব্দ শোনা গেলো।

    সেই রাতে খলিফা হারুন-আল-রাসিদ নগর পরিক্রমায় বেরিয়েছেন। প্রায় প্রতি রাতেই তিনি নিজের চোখে দেখতে বেরোন তার প্রজারা কীভাবে দিন কাটাচ্ছে। তাঁর সঙ্গে থাকে উজির জাফর-আল-বারিমাকি এবং তার তলোয়ার বাহক মাসরুর।

    যখন তিঁনি নগরের পথ ধরে হেঁটে চলেছেন, তখন এই বাডিটার ভেতর থেকে গান বাজনার আওয়াজ শুনে দাঁড়িয়ে পড়লেন। জাফরকে বললেন, আমি বাডিটার অন্দরে ঢুকে দেখতে চাই কারা এই গান বাজনায় মত্ত।

    জাফর খলিফাকে নিরস্ত করার জন্য বললো, ওরা এখন মদটব্দ খেয়ে চুর হয়ে হৈহুল্লোড় করছে। ওদের সামনে যাওয়া কি আপনার ঠিক হবে, হুজুর। হয়তো আপনার কোন চোট লেগে যেতে পারে।

    —তা হোক, খলিফা বললেন, দেখতে হবে ব্যাপারটা। তুমি এমনভাবে ঢোকার ব্যবস্থা কর যাতে ওরা বুঝতে না পারে আমার পরিচয়।

    —যা বলবেন হুজুর।

    জাফর গিয়ে দরজায় কড়া নাড়ালো। ছোট বোনটি খুলে দিলো দরজা। জাফর বললো, শোনো মা, আমরা তিবারিয়া দেশের সওদাগর। দশ দিন হলো বাগদাদ শহরে এসেছি। এখানকার সওদাগরদের মোড়লের বাড়িতে উঠেছি আমরা। সেখানেই রেখেছি আমাদের সামানপত্তর। আজ রাত্রে এক ব্যবসায়ী আমাদের খানাপিনার নিমন্ত্রণ করেছিলো। তার বাডিটাও আমরা দেখেছি। কিন্তু এই রাতের অন্ধকারে ঠাওর করতে পারছি না। পথ হারিয়ে ফেলেছি। গোলক ধাধায় ঘুরতে ঘুরতে অনেক রাত হয়ে গেলো। এখন আমরা আর ফিরতে পারবো না। আজকের রাতটার মতো যদি তোমাদের এখানে একটু আশ্রয় দাও, খুব উপকার হয়। আল্লাহ তোমাদের দেয়া করবেন।

    মেয়েটি দেখলো, সম্ভ্রান্ত বংশের লোক এরা। ভিতরে গিয়ে অন্য দুই বোনের সঙ্গে পরামর্শ করে ফিরে এসে বললো, আপনারা মেহেরবানী করে ভেতরে আসুন। আজ রাতে আমাদের মেহমান হয়ে থাকবেন আপনারা!

    ভিতরে ঢুকতেই আর দুই বোন স্বাগত জানালো। আজ রাতে আপনার স্বচ্ছন্দে এখানে থাকুন। শুধু একটি শর্ত। ঐ দরজার গায়ে যে হলফনামাটা লেখা আছে। আপনারা সকলে তা মেনে চলবেন, এই অনুরোধ।।

    জাফর হলফনামা পড়ে দেখলো। বললো, আমরা রাজি।

    ওরা তিনজনে গিয়ে বসলে ঐ কালান্দারদের পাশে। একটি মেয়ে সোনার পাত্রে সব চেয়ে দুস্তপ্ৰাপ্য সরাব এনে ধরলো খলিফার সামনে। খলিফা বললেন, আমি হজযাত্রী ওসব আমি খাই না। তখন গোলাপ জলের সরবৎ এনে দেওয়া হলো তাকে। সাগ্রহে পান করলেন তিনি।

    খলিফা অবাক হয়ে দেখতে লাগলো, তিনজন কালান্দারের বা চোখ কানা—ঠুলি পরা।

    ওদিকে নাচ গান বাজনা খানা পিনা জোরসে চলছে। এক সময় বড়জন বললো, আর কারো খানাপিনার কিছু দরকার আছে? সবাই জানালো, না যথেষ্ট হয়ে গেছে। তখন কালান্দারদের সে অনুরোধ করলো তারা হলের মাঝখানটা ছেড়ে যেন দরজা ঘেঁসে বসে।

    হলটা ভালো করে সাফ করলেন এক বোন। অন্য দু’জন কুলি ছেলেটাকে ডেকে বললো, তোমাকে একটা কাজ করতে হবে। তুমি তো আর বাইরের লোক নও। এখন আমাদের ঘরেরই একজন।

    ছেলেটি তৎক্ষণাৎ গায়ের চাঁদর আর জামা খুলে ফেলে কোমরের দডিটা ভালো করে আটতে আটিতে বললো, জো হুকুম, বিবিসিাব।

    আমার পিছনে এসো। এই বলে তাকে সঙ্গে নিয়ে পাশের ঘরে চলে গেলো। একটু পরে শিকল বঁধা দু’টো কালো কুচকুচে মাদি কুকুরকে নিয়ে আবার ঘরের মাঝখানে ফিরে এলো। একখানা শঙ্কর মাছের চাবুক হাতে তুলে দিয়ে ছেলেটাকে বললো, কষে লগাও ঘা কতক, এই মাদিটাকে।

    একটা কুকুরকে এগিয়ে দিলো সামনে। বড় বোনের হুকুম মতো চাবুক চালাতে লাগলো সে। কুকুরটা যন্ত্রণায় আর্তনাদ করতে থাকে। এক সময় ছেলেটার হাত থেকে চাবুক কেড়ে নিয়ে কুকুরটাকে জড়িয়ে ধরে সোহাগ করতে লাগলো। পিঠ চাপড়ে আদর করলো, চোখের জল মুছিয়ে দিলো, আর কপালে চুমু খেলো। একটু পরে অন্য কুকুরটাকে এগিয়ে দিলো ছেলেটার দিকে। বললো, চালাও চাবুক।

    একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে লাগলো।

    এই দৃশ্য দেখে খলিফার হৃদয় বেদনার্ত হয়ে উঠলো। জাফরকে বললো, মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করোতো কি ব্যাপার?

    জাফর বললো, এ ব্যাপারে চুপ করে থাকাই ভালো।

    মেজো বোন ছোটকে বললো, এসো, আমরা রোজ রাতের মতো প্রথা অনুসারে, এবার যা যা করতে হবে, করি।

    এই বলে মারবেল পাথরের বাঁধানো বেদীর উপর উঠে দাঁড়ালো সে। ছোট বোনটি পাশের ঘর থেকে নিয়ে এলো একটা বটুয়া থলে। অন্য দুই বোনের সামনে দাঁড়িয়ে থলে থেকে ছোট্ট একটা ফুট বের করে বাজাতে লাগলো। অনেকক্ষণ ধরে করুন সুর বাজালো। পরে যখন থামলো, মেজোবোন চিৎকার করে উঠলো, আল্লাহ তোমাকে শান্তি দেবেন বোন।

    তারপর উন্মাদের মতো নিজের পোশাক-আসাক ছিড়ে কুটি কুটি করতে লাগলো। এক সময় অচৈতন্য হয়ে মেজেয় লুটিয়ে পড়লো। খলিফা লক্ষ্য করলেন, মেয়েটির সবঙ্গে চাবুকের দাগ। বিস্ময়ে হতবাক হয়ে পড়লেন তিনি। বড় বোন এসে তার মুখে জলের ঝাপটা দিতে লাগলো। কিছুক্ষণ পরে তার জ্ঞান ফিরলো। এবার সে নতুন জামা কাপড় পড়ে উঠে দাঁড়ালো। খলিফা ফিসফিস করে জাফরকে বললেন, ব্যাপারটা লক্ষ্য করলে? কিছু বুঝলে? মেয়েটির সবঙ্গে চাবুকের দাগ দেখতে পেয়েছে? ঐ মাদী কুকুর দু’টোকে নির্মম ভাবে প্রহার করা, আর মেয়েটার পিঠের ঐ চাবুকের দাগ, আমাকে গোিলক ধাঁধায় ফেলেছে। এ রহস্যের সন্ধান আমাকে করতেই হবে।

    জাঁহাপনা, জাফর সবিনয়ে বললো, সেই শর্তের কথা স্মরণ করুন, হুজুর। কোন কিছু অহেতুক কৌতুহল এবং যে ব্যাপারের সঙ্গে আপনি জডিত নন। সে কথা জিজ্ঞেস করা শর্ত বিরুদ্ধ।

    এমন সময় মেজো বোনটা আবার সেই ফুট বাজাতে লাগলো। সেই করুণ সুর। আবার সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলো। খলিফা দেখলেন, মেয়েটি তার পরিধেয় বস্ত্ব কুটি কুটি করে ছিড়ে ফেলে অজ্ঞান হয়ে গেলো। তার গায়ে সেই চাবুকের দাগ। চোখে মুখে জলের ঝাপটা মেরে আবার ঐ২ জ্ঞান ফেরানাে হলো। এই ভাবে একই ঘটনার তিনবার পুনরাবৃত্তি হলো।

    সেই তিন কালান্দার ফকির এবার ফিসফিস করে বলাবলি করতে লাগলো। এর চেয়ে অন্য কোথাও রাত কাটালেই ভালো ছিলো। এই বীভৎস দৃশ্য চোখে দেখা যায় না।

    খলিফা তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ব্যাপারটা কী বলুন তো?

    কালান্দাররা বললো, আমরাও তাই জিজ্ঞেস করবো ভাবছিলাম।

    ওঃ, তবে এখানে আপনার নবাগত?

    –একেবারে। আপনাদের আসার একটু আগে এসেছি আমরা। কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার মনে হয়, ঐ ছেলেটা বোধহয় সব জানে।

    কুলি ছেলেটার কানে গেলো কথাগুলো। বললো, আজই আমি প্রথম ঢুকেছি এ বাড়িতে। এই সব হতচ্ছাড়া কান্ডকারখানার বিন্দু-বিসর্গ বুঝতে পারছি না। আমি। আজকের রাতটাই মাটি হয়ে গেলো। এর চেয়ে যদি রাস্তার ফুটপাতে শুয়ে থাকতাম, তাও ভালো ছিলো।

    তখন ওরা সবাই মিলে পরামর্শ করতে লাগলো। আমরা সাতজন আর ওরা তিনটি মেয়ে। আমাদের অতো ভয় পাবার কি আছে? চলো, আমরা এর চেয়ে কৈফিয়ৎ তলব করি, এসবের মানে কী? কেন এই নৃশংসতা? ওরা যদি সোজা কথায় জবাব না দেয় জোর করে জবাব আদায় করতে হবে।

    সবাই এককথায় রাজি হলো। হলো না শুধু জাফর। বললো, আমরা যে শতাবদ্ধ সে কি মনে নেই? আজ রাতে আমরা ওদের মেহমান। আগে থেকে শর্ত করিয়ে নিয়েছে আমাদের। যে ব্যাপারে আমাদের কোন স্বাৰ্থ নেই, সে ব্যাপারে নাক গলানো চলবে না। কোন কৈফিয়ৎ তলব করা চলবে না। এখন যদি আমরা এ শর্ত না রাখি, আতিথ্যের অপমান করা হয় না? ভোর হতে আর তো মাত্র ঘণ্টাখানেক বাকী। তারপর আল্লাহর নাম করে যে যার পথে বেরিয়ে পড়বো।

    খলিফার দিকে ঝুঁকে আবার বলতে লাগলো। আর তো মাত্র ঘণ্টাখানেক বাকী। তারপর দরবারে ফিরে গিয়ে ওদের তলব করে নিয়ে যাবো। তখন তো আপনি সব ব্যাপারই জানতে পারবেন, হুজুর।

    —কিন্তু, খলিফা অধৈৰ্য হয়ে বললেন, অতোটা সময় আমি ধৈর্য ধরে থাকতে পারবো না। এ ব্যাপারে সকলেই অধৈর্য হয়ে উঠলো। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কে জিজ্ঞেস করবে ওদের? শেষ পর্যন্ত ঠিক হলো ছেলেটাই বলবে।

    মেয়েদের একজন জিজ্ঞেস করলো! তোমরা ফিসফিস করে কী কথা বলাবলি করছো?

    তখন বুকে সাহস করে কুলি ছেলেটা উঠে আপনি এই কুকুর দু’টোকে আমনু প্রহার করলেন? আর কেনই বা তাদের সোহাগ করে চুমু খেলেন? আর আপনার দেহেই বা ওরকম চাবুকের দাগ দেখলাম কেন? কী ব্যাপার, আমাদের খুলে বলুন।

    বড়বোন জিজ্ঞেস করলো, একি তোমার একার প্রশ্ন না। সবাই জানতে চেয়েছেন? ছেলেটা বললো, একমাত্র জাফর ছাড়া আর সকলেরই এই জিজ্ঞাসা।

    বড় বোন বিস্মিত হয়ে বললো, আপনারা আতিথ্যের শর্তভঙ্গ করেছেন। আপনাদের শাস্তি পেতে হবে। আপনার না প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, অন্যের ব্যাপারে নাক গলাবেন না, কোন কৈফিয়ৎ চাইবেন না? কিন্তু এ কি ব্যবহার আপনাদের। আদর করে ঘরে ডেকে এনে জায়গা দিয়ে ভালো মন্দ খাইয়ে আমরা কি অন্যায় করেছি?

    এই বলে চাবুকটা তুলে নিয়ে শপিং শপিং করে তিনবার আওয়াজ করলো মেজেয়। আর তখনি, কি আশ্চর্য, পদার ওপারে দরজার পাল্লা খুলে গেলো। সঙ্গে সঙ্গে ভিতরে ঢুকলো, দৈত্যের মতো দেখতে, সাতজন নিগ্রো। সবারই হাতে ধারালো অস্ত্ব। মালকিন হুকুম দিলো, এই অসভ্য লোকগুলোকে শিকল দিয়ে একটার সঙ্গে একটাকে বাঁধো।

    তৎক্ষণাৎ ওরা সবাইকে শিকল দিয়ে বেঁধে ফেলে বললো, মালকিন হুকুম করুন, এখুনি এগুলোকে কোতল করি।

    এই কথা বলে খাড়া তুলতেই, শোনা গেলো, থামো! ঘণ্টাখানেক বাদে আমি হুকুম দেবো। তার আগে জেনে নিতে চাই কে কি মেকদারের লোক।

    কুলি ছেলেটা কেঁদে ফেললো, দোহাই মালকিন, আমার কোন দোষ নাই, আমাকে মেরো না! এই এক চোেখওলা কালান্দার ফকিরগুলো যদি না চুকতো বাড়িতে, তাহলে এসব কিছুই হোতো না। যত নষ্টের গোড়া এই ফকিরগুলো।

    বড় বোন অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো, ছেলেটার কথা শুনে।

    এমন সময় শাহরাজাদ দেখলো রাত শেষ হয়ে আসছে। গল্প শেষ করে চুপ করে বসে রইলো সে।

     

    পরদিন একাদশ রাত্রি। কাহিনী শুরু হলো।

    বড় বোনের অট্টহাসিতে সবাই আড়ষ্ট হয়ে উঠলো। না জানি কি করে? সবাইকে লক্ষ্য করে। সে বললো, আমি তোমাদের অসহায় নিরাশ্রয় ভেবে এখানে আশ্রয় দিয়েছি। তোমরা প্রত্যেকে নিজের নিজের আত্ম-পরিচয় বলো, শুনবো। যদি বুঝি তোমরা সত্যিই অসহায় নও তা হলে তোমাদের মৃত্যু অনিবার্য।

    এই সময় খলিফা জাফরকে বললো, শুনলে তো জাফর। আর বাঁচার কোন আশা নাই। চটপট আমাদের আসল পরিচয় জানিয়ে দাও। নাহলে বেঘোরে প্ৰাণ যাবে।

    —তাইতো আমাদের প্রাপ্য, হুজুর।

    —এটা কি রসিকতা করার সময়, জাফর?

    বড় বোন সব আগে কালান্দার ফকির তিন জনকে লক্ষ্য করে বললো, তোমরা কি তিনজন ভাই?

    —না না। তিনজন তিন দেশের লোক। আমরা গরীব দুঃখী মানুষ। দিন আনি, দিন খাই। আমাদের বিষয়-আশয়, সহায় সম্বল বলতে কিছুই নাই। ত্যাগই আমাদের ধর্ম।

    –তোমাদের কি সবাই জন্ম থেকে এক চোখ কানা?

    একজন কালান্দার জবাব দিলো, না। জন্মের সময় আমি কানা ছিলাম না। কিন্তু এক অদ্ভুতভাবে আমার চোখটা হারিয়েছি আমি।

    বাকী দু’জন কালান্দারও এই একই কথা বললো। আরও বললো, তারা তিনজনে তিন দেশের বাসিন্দা। ঘটনাচক্রে একত্র হয়ে গেছে। ওদের জীবনের কাহিনী বড় বিচিত্র চমৎকার।

    ঠিক আছে, বড় বোন গভীরভাবে বললো, তাহলে এক এক করে তোমাদের জীবনের কাহিনী শোনাও। সব শুনে যদি ভালো লাগে। তবে, এখান থেকে নিরাপদে চলে যেতে দেওয়া হবে।

    কুলি ছেলেটা এগিয়ে এসে বললো, মালকিন, আমি গরীব সামান্য কুলি–সে তোমাদের জানা। তোমরা আমাকে কুলি হিসেবেই বাড়িতে নিয়ে এসেছে। আমার জীবনের অদ্ভুত ঘটনা উী কিছু নাই। অদ্ভূত যা কিছু আমার জীবনে আজ দিনের বেলায় তা ঘটেছে। আর সেসব তো তোমাদের জানা। সে কাহিনী এখানে বলাও যাবে না। তাই, আমাকে রেহাই দাও।

    ঠিক আছে, এখন তুমি যাও বিশ্রাম কর গে, সব শেষে তোমার কথা শুনবো। ছেলেটি আপত্তি জানিয়ে বললো, না, না, ওদের কাহিনী না শুনে আমি নড়বো না।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86 87 88 89 90 91 92 93 94 95 96 97 98 99 100 101 102 103 104 105 106 107 108 109 110 111 112 113 114 115 116 117 118 119 120 121 122 123 124 125 126 127 128 129 130 131 132 133 134 135 136 137 138 139 140 141 142 143 144 145 146 147 148 149 150 151 152 153 154 155 156 157 158 159 160
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleকবীর – ১ – ক্ষিতিমোহন সেন
    Next Article প্রাচীন পূর্ববঙ্গ গীতিকা – ক্ষিতীশচন্দ্র মৌলিক
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.