Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সহস্র এক আরব্য রজনী

    ক্ষিতিশ সরকার এক পাতা গল্প3728 Mins Read0

    ১.২৩ ইহুদী হেকিমের কাহিনী

    ইহুদী হেকিমের কাহিনী

    এই সময়ে সেই ইহুদী হেকিম এগিয়ে এলো। বাদশাহকে কুর্নিশ করে বললো, শাহেনশাহ, আমার কাহিনীটা মেহেরবানী করে শুনুন। আমার বিশ্বাস, ওদের চেয়ে হাজার গুণ ভালো লাগবে। আপনার। এমন কি, কুঁজোর মরার ঘটনার চাইতেও বেশী অবাক হবেন আপনি।

    বাদশাহ বললো, ঠিক আছে, যদিও আমি ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছি, তবু শোনাও দেখি।

    ইহুদী হেকিম তার কাহিনী শুরু করলো :

    আমার তরুণ বয়সে এই অদ্ভুত কাহিনীটা শুনেছিলাম। তখন আমি দামাসকাসে থেকে চিকিৎসাশাস্ত্র ও বিজ্ঞানে গবেষণা করি। তার আগে ওখানকার বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আমি পাশ করেছি।

    একদিন ওখানকার সুবাদার সাহেবের পেয়াদা এসে আমাকে ডেকে নিয়ে গেলো। একটা বিশাল প্রাসাদ। তার মাঝখানের প্রশস্ত কক্ষে দামী পালঙ্কে শুয়েছিলো এক যুবক। অসুস্থ। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, কি হয়েছে?

    কোনো কথা বললো না সে। শুধু চোখের ইশারায় কি যেন বলতে চাইলো। আমি বললাম, হাত দেখি–

    বাঁ হাতটা বের করে আমার সামনে তুলে ধরলো। আমি একটু অবাক হলাম, কিছুটা বা অপমানিতও। এমন সুন্দর শিক্ষিত এক তরুণ, সাধারণ সভ্য আদব-কায়দাও জানে না? যাইহোক মনে মনে বিরক্ত এবং ক্ষুব্ধ হলেও মুখে কিছু প্রকাশ করলাম না। বাঁ হাতের নাডি দেখে ঔষুধ লিখে দিলাম। পরদিন আবার আমাকে যেতে হলো। তারপর দিনও। এই ভাবে দশ দিন ধরে তার চিকিৎসা করে মোটামুটি সারিয়ে তুললাম। সুবাদার সাহেব আমার ওপর খুশি হয়ে অনেক ইনাম দিলেন। এবং দামাসকাসের সদর হাসপাতালের বড় হেকিমের পদে সসম্মানে বহাল করলেন আমাকে। আমি তাদের গৃহচিকিৎসক নিযুক্ত হলাম। তাই রোজই তাকে দেখতে যাই। কিন্তু আমার মনে একটা খটুকা রয়ে গেলো, কেন সে রোজই বাঁহাত বাড়িয়ে দেয়। দশ দিন পরে ওকে দরজা জানলা বন্ধ করে গরম জলে গা পুছিয়ে দিতে লাগলাম। কিন্তু এই কাজটা করা বেশ শক্ত। ঐ সময় কোন রকমে বাইরের হাওয়া গায়ে লাগলে বা গা মোছাবার সময় জলকণা গায়ে লেগে থাকলে উপকারের বদলে উল্টে অপকারের সম্ভাবনা বেশী। সুবাদার সাহেব বললো, আমি যেন নিজে সব ব্যাপারটা তদারক করি। সুতরাং নফরচাকররা তাকে যখন হামামে নিয়ে গেলো, আমাকেও সঙ্গে যেতে হলো। প্রথমে তার সমস্ত জামা কাপড় খুলে ফেলা হলো। আমি অবাক হয়ে দেখলাম, ওর ডানহাতটা নেই—কাটা। তার সর্বাঙ্গে চাবুকের দাগ। যুবক বললো, আপনি অবাক হচ্ছেন? তা হবারই কথা। কিন্তু এমনটা আমার জন্ম থেকে ছিলো না। কি করে হলো সে কাহিনী পরে বলছি। হামাম থেকে বেরিয়ে আমরা গিয়ে বসলাম নিচের বড় ঘরটায়। ওখানে সাজানো হয়েছিলো আমাদের সন্ধ্যাবেলার খানাপিনী।

    যুবক বললো, চলুন আমরা ওপরের ঘরে গিয়ে বসি। আরও নিরিবিলি। কী, আপত্তি নাই তো?

    আমি বললাম, না না, আপত্তি কিসের?

    তখন সে বাবুর্চিকে বললো, একটা ভেড়ার কাবাব করে, ওপরে পাঠিয়ে দাও। আমরা আজ রাতের খানা ও পরেই খাবো।

    একটু পরে খানসামা এসে খাবার সাজিয়ে দিলো। আমরা খেতে খেতে নানারকম টুকিটাকি খুচরো আলাপ সারলাম। তারপর আমি বললাম, এবার আপনার কাহিনী শোনান।

    তখন যুবক তার কাহিনী শুরু করলো :

    আমার জন্ম মসুল শহরে। খানদানী পরিবার হিসাবে আমাদের খুব নাম-ডাক ছিলো। সেখানে। আমার ঠাকুরদার দশ ছেলে। তার মধ্যে আমার বাবাই সব চেয়ে বড়। তার জীবদ্দশাতেই দশ ছেলের বিয়ে-শাদী দিয়ে গিয়েছিলো সে। কিন্তু একমাত্র আমার বাবা ছাড়া, অন্য ককাদের কোন সন্তানাদি ছিলো না। সেই কারণে, আমার কাকরা আমাকে দারুণ ভালোবাসতো। কোন সময়ই চোখের আড়াল করতে চাইতো না।

    এক জুম্মাবারে আমি গিয়েছিলাম বাবার সঙ্গে মসুলের বড় মসজিদে নামাজ পড়তে। নামাজ পর্ব শেষ হলে সবাই চলে গেলো, কিন্তু আমার বাবা আর কাকার রয়ে গেলো। সেখানে। একটা বিরাট কম্বল পেতে বসে ওরা সবাই নানা কথাবার্তা বলতে লাগলো। কাকরা বললো, আমরা ঠিক করেছি। বাণিজ্য করতে বেরুবো। অনেক জায়গার কথা উঠলো। শেষ পর্যন্ত ঠিক হলো, মিশরে যাবো। মিশরের প্রধান শহর কইরো নীল নদের তীরে। নীলের অনেক মনোরম দৃশ্যশোভার গুণকীর্তন করলো। ওরা। যারা বহুদেশ ঘুরেছে। তাদের মতে নাকি মিশরের মতো সুন্দর দেশ সারা দুনিয়ায় নাই। মিশরের জল হাওয়া খুব ভালো। ওখানকার প্রকৃতির শোভা নীলনদের ধারে ফুলের সমারোহ মানুষকে সকল শোকসন্তাপ ভুলিয়ে অন্য জগতে নিয়ে যেতে পারে।

    বাড়িতে ফিরে ভাবতে লাগলাম, এমন সুন্দর দেশ যদি না-ই দেখলাম, এ জীবন বৃথা। কাকারা যাবে, কিন্তু আমি তাদের সঙ্গে যাবো না-আমার ভীষণ মন খারাপ হয়ে গেলে। দিন কয়েকের মধ্যেই ককাদের যাবার আয়োজন শেষ হয়ে এলো। আমি বাবার কাছে গিয়ে বায়না ধরলাম। ককাদের সঙ্গে কাইরো যাবো। বাবা প্রথমে রাজি হলো না, অত দুর-দেশ, কী জানি কী হয়। কিন্তু আমার চোখে জল দেখে আর না করতে পারলো না। বললো, যাও, কিন্তু অত দূরে না। গিয়ে দামাসকাস অবধি গিয়ে বেডিয়ে এসো।

    কাকারা বললো, তাই হবে। শেষে একদিন মসুল ছেড়ে দামাসকাসের পথে রওনা হলাম আমরা। প্রথমে এলাম আলেপ্পো শহরে। সেখানে দু-এক দিন কাটাবার পর এসে পৌঁছলাম। এই দামাসকাস শহরে। দামাসকাস আমাকে মুগ্ধ করলো। সারা শহরটা গাছপালা বাগ-বাগিচায় ভরা। আর কাছেই স্রোতস্বিনী নদী। আমি একটা সরাইখানায় উঠলাম। শহর থেকে একটু দূরে। আর কাকারা শহরের ভিতরে ঢুকে গেলো। তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য বাণিজ্য। আর আমার ইচ্ছা প্ৰাণ ভরে দেখবো। শুধু প্রকৃতির শোভা।

    কাকারা বাণিজ্য সারাক্টো। মসুল থেকে যা যা এনেছিলো তার কিছুটা বিক্ৰী করলো দামাসকাসে। আর দামাসকাসের কিছু বাহারী জিনিস কিনে নিলো কইরোর বাজারে বেচার জন্যে। আমি ওদের বললাম, জানি না কইরো হয়তো আরও সুন্দর, আরও ভালো, কিন্তু কাক, দামাসকাসের শোভা আমার বড় ভালো লেগেছে। এখানকার তরুলতা, এই নদী, এই আকাশ বাতাস ছেড়ে যেতে মন চাইছে না। তোমরা যাও। আমার যদি ভালো না লাগে পরে যাবো তোমাদের কাছে।

    কাকারা, বললো, তাহলে তোর সওদাপত্র যা আছে তার দাম নিয়ে নে। আমার যতগুলো সওদা ছিলো প্রতিটির জন্যে পাঁচ দিরহাম লাভ সুদ্ধ সব টাকা দিয়ে গেলো তারা।

    নদীর ধারে মাসে দুদিনারে একটা সুন্দরবাড়ি ভাড়া করলাম আমি। আগাগোড়া বাড়িটা শ্বেতপাথরে তৈরি। সামনে ফুলের বাগিচা। জলের ফোয়ারা। এক কথায় অপূর্ব। মাত্র দু-দিনারে এমনবাড়ি ভাবা যায় না। খুশিতে মন ভরে গেলো। মনের আনন্দে মদ মাংস খাই, আর প্রাণ খুলে গলা ছেড়ে গান গাই।

    একদিন বাইরের রোয়াকে একটা আরাম কেদারায় অর্ধশায়িত হয়ে সরাবে ছোট ছোট চুমুক দিচ্ছি, আর নদীর ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া এক বঁটাক উজ্জ্বল পায়রা চেয়ে চেয়ে দেখছি। এমন সময় এক সুন্দরী যুবতী সামনে এসে দাঁড়ালো। আমি উঠে দাঁড়িয়ে স্বাগত জানালাম তাকে। ঘরে নিয়ে গিয়ে বসালাম। বোরখাটা খুলে এক পাশে রাখলো। তার রূপের জেল্লায় চোখ আমার ঝলসে গেলো। অল্পক্ষণের মধ্যেই কলহাস্যে মুখর হয়ে উঠলো সে।

    –সাহেবের বিবি কোথায়? তাকে দেখছি না তো?

    –এখনও বিয়ে শাদী করিনি।

    –ওমা সে কি? এই জোয়ান বয়স। মেয়েমানুষ ছাড়া রাত কাটাও কি করে গো?

    –তা আর কি করবো? শুয়ে শুয়ে কডিকাঠ গুনি।

    মেয়েটি চোখের বান ছুঁড়ে বলে, আহা, তোমার মতো নাগর পেলে সব মেয়েই বর্তে যাবে। আমি বসেছিলাম খাটে। চেয়ার ছেড়ে আমার পাশে এসে বসলো সে। একেবারে গা ঘেসে। কেমন অস্বস্তি বোধ হয়। একেবারে অচেনা অজানা এক সুন্দরী যুবতী।। একটু সরে বসার চেষ্টা করি। কিন্তু মেয়েটি আমার হাত চেপে ধরে। আহা! ঢং দেখে বাঁচি না, পেটে খিদে মুখে লাজ!

    বিছানায় গা এলিয়ে শুয়ে পড়ে সে। বুকের কাপড় সরে যায়। পায়ের কাপড় উরুর উপরে উঠে আসে। আমার রক্তে আগুন ধরে। উঠে গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে আসি। দুহাত বাড়িয়ে আমাকে বুকের ওপর ঝাপটে ধরে সে। তারপর কি হলো সে-কথা আপনাকে বলতে পারবো না।

    আমি বললাম, বুঝতে পেরেছি। ঠিক আছে, তার পর কী হলো, বলো।

    যুবক বলতে থাকে, আমি তার রূপের সমুদ্রে ডুবে গেলাম। অনেকক্ষণ পরে বিছানা ছেড়ে উঠলাম আমরা। হামামে ঢুকে ভালো করে স্নান করলাম দু’জনে। তারপর টেবিলে কাপড় পেতে খানা সাজালাম। মাংসের কাবাব, কোপ্তা, মোরগ মসাল্লাম, তন্দুরী, মিষ্টি, ফল আর দামী সরব।

    অনেকক্ষণ ধরে পুরো এক বোতল সরাব দু’জনে মিলে খেলাম। নেশা বেশ জমে উঠলো। খানাপিনা শেষ করে খাটে এসে শুয়ে পড়লাম আমরা। সে রাতের স্মৃতি আমি ভুলবো না কোনও দিন। সেই আমার জীবনের প্রথম সহবাস-রাত্রি। বেহেস্তে কি সুখ আছে জানি না, কিন্তু সে-রাতে যে সুখের স্বাদ পেয়েছিলাম তা আর কোনও দিন পেলাম না।

    সকালে ও যখন বিদায় নেবে, দশটা সোনার মোহর দিতে গেলাম তাকে। দু’হাত পিছিয়ে গিয়ে সে বললো, টাকা? টাকা নিয়ে আমি কি করবো? ও সব তুচ্ছ জিনিসে আমার প্রয়োজন নাই। আমি চাই—তোমাকে।

    —আমি তো তোমারই গোলাম হয়ে গেছি, বিবিজান।

    —আহা, গোলাম হতে যাবে কেন, তুমি আমার দিলাকা কলিজা।

    তারপর দু’হাতে জড়িয়ে ধরে গভীর আশ্লেষে চুম্বন করলে আমাকে। বললো, আজ চলি, সাহেব। তিনদিন বাদে আবার আসবো। সে দিনের যা খরচ-সব কিন্তু আমার। কী, রাজি?

    আমি ঘাড় নেড়ে জানালাম, ঠিক আছে, তাই হবে।

    –তা হলে, সোনা, এই টাকাটা রাখে। গতকাল যেমন খানাপিনার ব্যবস্থা করেছিলে, তেমনি ব্যবস্থা করে রেখো! আমি চারদিনের দিন বিকেলে আসবো।

    দশটা সোনার মোহর বাড়িয়ে দিলো আমার দিকে। আমি অবাক হলাম। মোহরগুলো নিলাম হাত পেতে।

    ডান হাতের তর্জনী দিয়ে আমার নিচের ঠোঁটে একটা ঠোনা মেরে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলো সে। আমি কোন কথা বলতে পারলাম না। বারান্দায় এসে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে থাকলাম তার চলে যাওয়া। বুকের মধ্যে কেমন হু হু করে উঠলো। মনে হতে লাগলো, ও বুঝি আমার কলিজােটা ছিঁড়ে নিয়ে চলে গেলো।

    ঠিক চারদিনের দিন বিকেল বেলায় আবার এলো সে। ঘরে ঢুকেই বোরখাটা খুলে ছুঁড়ে দিলো। সেদিন আরও জমকালো সাজে। সেজে এসেছে। সোনার জরিতে কাজ করা স্বচ্ছ মসলিন পরেছে। শরীরের প্রতিটি ভাজ প্রতিটি খাঁজ একেবারে স্পষ্ট পরিষ্কার চোখে পড়ছে। তার ঐ মোহিনী রূপের আগুনে আমার পৌরুষ—আমার যৌবন ঝলসে গেলো। নিজেক আর ধরে রাখতে পারলাম না। দু’হাতে চ্যাংদোলা করে তুলে ধরলাম ওকে। একটা চুমু খেয়ে খাটের ওপর শুইয়ে দিলাম।

    টেবিলে খানাপিনা সব সাজিয়েই রেখেছিলাম। গতিদিন যা যা খেয়েছিলাম সেদিনও ঠিক তাই-ই ছিলো। দুজনে মিলে মৌজ করলাম অনেকক্ষণ ধরে। তারপর নেশা যখন বেশ জমে উঠেছে—খানাপিনা সেরে শুয়ে পড়লাম। আর একটা সুখ-সম্ভোগের রাত্রি কেটে গেলো আমার! আমার জীবনের দ্বিতীয় সহবাসরজনী। পরদিন সকালে, আবার চলে গেলে সে। সেদিনও বলে গেলো, চারদিনের দিন আবার সে আসবে।

    এবং এলো তাই। খানাপিনা সাজিয়ে বসে আছি। সূর্য ডোবার একটু আগে এসে হাজির হলো সে। আরও জমকালো সাজ। আবার মৌজ করে খানাপিনী সারলাম। সারারাত বুকে জড়িয়ে শুয়ে থাকলাম। মোমবাতি জ্বলে জ্বলে গলে গলে এক সময় ফুরিয়ে গেলো। আমরা ঘুমিয়ে *७६।।

    সকালে উঠে যাবার আগে আমাকে একটা প্রশ্ন করলে সে-আচ্ছা প্রিয়তম, সতি্যু করে বলে তো, আমাকে তোমার কেমন লাগলো-এই তিন দিনে?

    আমি অবাক হই? দুম করে এ ধরনের এক প্রশ্নের জন্যে তৈরি ছিলাম না।-কেন, একথা জিজ্ঞেস করছে। কেন, বিবি জান? তোমাকে পেয়ে আমি বেহেস্তের চাঁদ হাতে পেয়েছি। আমার জীবন সুধা পাত্রে ভরিয়ে দিয়েছে তুমি। তোমাকে ছাড়া আমি আর কেব।

    সে বললো, আমি কি সত্যিই দেখতে খুব সুন্দর। তুমি কি আমার রূপে লী মুগ্ধ হয়ে ‘ভালোবাসা’ করছে? it

    —তোমার চেয়ে সুন্দরী কে আছে জানি না, কিন্তু আমার চোখে তোমার চেয়ে রূপবতী নারী আমি আর কখনও দেখিনি।

    –দেখোনি তো? ঠিক আছে, পরের দিন দেখাবো। আর একটা মেয়েকে নিয়ে আসবো সেদিন। সে, দেখবে, আমার চেয়ে আরও সুন্দরী। দেখলে চোখ ফেরাতে পারবে না।

    আমি বললাম, হতে পারে। কিন্তু তাতে আমার কী? আমি কেন তার রূপে পাগল হতে যাবো?

    —দেখা যাবে।

    এই বলে সে কুড়িটা মোহর আমার হাতে গুজে দিলো।—এটা রাখে। চারদিনের দিন বিকেলে আসবো আমরা। ঐ মেয়েটাকে সঙ্গে করে আনবো। সরাব আর খানা একটু বেশি করে ব্যবস্থা রেখো। তিনজনে মৌজ করে খাবো। খুব হাসি মজাক, হৈ হল্লা করে সারারাত কাটাবো আমরা।

    আমি বললাম, ঠিক আছে, তুমি যা বলবে তাই হবে।

    ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যেতে যেতে বললো, দেখো, নতুন মানুষের খাতির যত্নে যেন ত্রুটি না হয়।

    আমি বললাম, আগে আসুক, তারপর দেখে নিও, কী রকম অভ্যর্থনা করি।

    ঠিক চারদিনের মাথায় যথাসময়ে এলো ওরা। সঙ্গের মেয়েটির বয়স আরো কম। মনে হয় ষোলর বেশি হবে না। এতে রূপ যে কোন মেয়ের হতে পারে, চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। মনে হলো বেহেস্তের ডানাকাটা হুরী।

    তিনজনে মিলে হৈ-হল্লা করলাম খুব। প্রাণভরে সুরা পান করলাম। নেশায় মাতোয়ারা হলাম। তারপর খানাপিনা করে রাতের মতো শোবার তোড়জোড় করতে থাকলাম। শুতে যাবার আগে এক চক্কর সরাব নিলাম আমরা। আমি নিজে ঢেলে দিলাম। ওদের দুজনকে। নতুন মেয়েটির হাতে মদের গেলাম তুলে দেবার আগে আমার ঠোঁটে ছুঁইয়ে দিলাম। আমার প্ৰেয়সীর তা সহ্য হলো না। বুঝলাম, ভীষ চটে গেছে। কিন্তু মুখে প্রকাশ করলো না। বরং শুধু বললো, কি গো সাহেব, তোমার জন্যে নতুন চিড়িয়া ধরে আনলাম। তা তার সঙ্গে একটু কথাটথা বলে। একটু আদর সোহাগ করো। কেন, তোমার মন ওঠেনি নাকি? এমন রূপসী! তোমার ভালো व्लोव् न्याনা?

    আমি বলি, ভালো লাগবে না কেন? খুবই ভালো লেগেছে। তা এত ভালো জিনিস কি সবারই পেটে সহ্য হয়?

    —হবে হবে। একটু চোখেই দেখো না? আমি ভীষণ বোকা। তার এই কথায় একেবারে গলে গেলাম।–তুমি যদি বলো, চোখে দেখতে পারি।

    -বাঃ, এই তো পুরুষের মতো কথা। নাও, আজ রাতে এ তোমার শয্যাসঙ্গিনী হবে। ওকে নিয়ে শুলে, খুব খুশি হবো আমি।

    নির্বোধের মতো আমি বললাম, তোমার কথা তো ঠেলতে পারবো না। তুমি যা বলবে, তাই হবে।

    সে রাতে আমাদের দু’জনের শোবার ব্যবস্থা হলো খাটে। আর আমার প্ৰেয়সী বিছানা করে নিলো নিচে।

    আমার রক্তে তখন কামনার অধীর উত্তেজনা। নতুন নারী সম্ভোগের বাসনায় তাল মান জ্ঞান খুঁইয়ে বসেছি। নিচে শুলো সে। আর খাটের ওপরে নতুন মেয়েটির দেহটাকে নিয়ে আমি মেতে উঠলাম পুতুল খেলায়। এইভাবে কতক্ষণ কেটেছিলো জানি না। সকালে যখন ঘুম ভাঙ্গলো দেখি, আমার বাঁহাতের বান্ধটা রক্তে মাখামাখি হয়ে গেছে। আমি ভাবলাম, খোয়াব। চোখদুটো ভালো করে রগড়ে আবার তোকালাম। না, স্বপ্ন নয়, সত্যি রক্ত। শুধু আমার হাতে নয় বালিশের তোয়ালেও লালে। লাল। পাশে ঘুমন্ত মেয়েটাকে জাগাবার জন্যে। ওর কপালে হাত রেখে নাড়া দিই। আর কি বলবো, সঙ্গে সঙ্গে ওর মাথাটা গড়িয়ে মেজের ওপর পড়ে গেলো। আমার যে তখন কি অবস্থা আপনাকে বোঝাতে পারবো না। এমন বীভৎস ব্যাপার চোখে দেখা তো দূরে থাক, কল্পনাও করতে পারিনি কখনও। ভরে সারা শরীর হিম হয়ে যাচ্ছে-এখন কি করি! নিচে তাকিয়ে দেখি, সে মেয়েটি নাই! উঠে। হামাম দেখলাম। না, সে নাই। চোখ পড়লো, বাইরে যাবার দরজার হুড়কো খোলা। বাইরে থেকে দরজাটা ভেজানো। বাইরে এলাম। না, কোথাও নাই। সদর দরজাটা দেখলাম, হাট করে খোলা। বুঝতে বাকী রইলো না, কার কাণ্ড। কিন্তু এখন আমি কি করি? লোক জানাজানি হয়ে গেলে কোটাল এসে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাবে আমাকে। মেয়েটার ঠিকানা জানি না, কি জবাবদিহি করবো কোটালের কাছে। ভাবতে ভাবতে একটা উপায় পেলাম। ঘরের মাঝখানকার মেজের কয়েকখানা পাথর তুলে ফেললাম। মাটি খুঁড়ে একটা লম্বা গর্ত করে তার মধ্যে মেয়েটার লাশ আমার পরনের কাপড়চোপড়, বিছানার চাঁদর আর তোয়ালে পুরে মাটি চাপা দিয়ে দিলাম। শ্বেতপাথরের টালিগুলো যেমনভাবে লাগানো ছিলো হুবহু সেইভাবেই লাগিয়ে দিলাম।

    অন্য জামা কাপড় পরে বাইরে এলাম। বাড়িওয়ালার সঙ্গে দেখা করে বললাম, আমি কিছুদিনের জন্যে বিদেশে যাচ্ছি। কাজ হয়ে গেলেই ফিরে আসবো। এই নিন আগাম এক বছরের ভাড়া। অন্য কোন ভাড়াটেকে যাতে ভাড়া না দিয়ে দেন। সেই জন্যে বারোমাসের পুরো ভাড়া চব্বিশ দিনার দিয়ে যাচ্ছি। আপনাকে।

    বাড়িওলা খুশি হয়ে বললো, আপনার যখন খুশি ফিরবেন।বাড়ি আপনারই রইলো। সেই দিনই আমি কইরে রওনা হয়ে যাই। ওখানে আমার কাকরা আছে। তাদের সঙ্গে দেখা করে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে নেবো।

    কয়েক দিনের মধ্যে কইরো পৌঁছে গেলাম। কাকারা আমাকে দেখে মহাখুশি হলো। আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। টাকা কডি যা ছিলো দামাসকাসে ফুরিয়ে গেছে। এখন এখানে এসে কাকাদের সঙ্গে দেখা না হলে মহা বিপদে পড়তাম। কাকরা আমার খাওয়া দাওয়া থাকার ব্যবস্থা করে দিলো। খাই দাই আর ঘুরে ঘুরে মিশরের শোভা সৌন্দর্য দেখে বেড়াই।

    কিছুদিন বাদে কাকরা বললো, আমাদের কাজ-কাম সব শেষ। এবার দেশে ফিরে যাবার পালা।

    আমি বললাম, কিন্তু আমার আরো কিছুদিন থাকার ইচ্ছে এখানে। অনেক কিছু দেখার বাকী! ওরা বললো, তা থাক, না-বার বার তো আসা হবে না। ভালো করে দেখে যা।

    কাকারা আমাকে বেশ কিছু টাকা পয়সা দিয়ে দেশে চলে গেলো। আমি ছোটখাটো কেনা বেচার সওদা করি, আর খাই দাই ঘুরে বেড়াই। এইভাবে তিনটি বছর কেটে গেলো। প্রতি বছরই দামাসকাসের বাড়িওলাকে ভাড়ার টাকা পাঠিয়ে দিয়েছি। অবশেষে ঠিক করলাম দেশে ফিরে যাবো। তখন কাকাদের সঙ্গে যাইনি, তার কারণ, ককাদের সঙ্গে দামাসকাসে থামতে হতো। এবং আমার বাসায় গিয়ে উঠতো তারা। কিন্তু এখন, এই তিন বছর পরে আমার ধারণা হলো, লোক সব ভুলে গেছে। তাই দামাসকাসে এসে বাড়িওলার সঙ্গে দেখা করলাম। আমাকে বাড়ির চাবিটা দিয়ে তিনি বললেন, এই নাও তোমার চাবি। যেখান যা রেখে গিয়েছিলে, দেখো, সব ঠিকঠাক আছে কি না।

    শোবার ঘর খুলে ঢুকলাম। দেখলাম, সবই যথাযথ ঠিকই আছে। শুধু ধুলো বালি জমে গেছে সারা ঘরাময়, বিছানাটা ঝেড়ে বিছাবার জন্য তোষকটা তুলতেই অবাক হলাম। একটা জড়োয়া হাঁসুলী হার। বেশ ভারি। বুঝতে দেরি হলো না, সেই রাতে মেয়েটি শুতে যাবার আগে হারটা খুলে তোষকের তলায় রেখে দিয়েছিলো। সন্ধ্যাবেলায় তার গলায় এই হারটাই দেখেছিলাম, মনে °छळ।

    হাতে টাকা পয়সা কম ছিলো, এতখানি সোনা হাতে পেয়ে খুশিই হলাম। কিন্তু তখন কি ভাবতে পেরেছিলাম, এ সবই শয়তানের খেলা।

    পথশ্রমে তখন আমি বড় ক্লান্ত। কয়েক ঘণ্টা ঘুমিয়ে শরীরটা ঝরঝরে হলো। জড়োয়া হারটা জেবে পুরে বাজারের দিকে চললাম। ভাবলাম, আজই ওটাকে বেচে দেবো। এ জিনিস কাছে রাখার বিপদ আছে। বাজারে গিয়ে একটা দালালের গদিতে ঢুকলাম। সোনা রূপার দালালী করাই তার পেশা। হারটা তার হাতে দিয়ে বললাম, এটা বিক্রী করবো।

    সে আমাকে সাদরে বসালো। বললো, মেহেরবানী করে একটু বসুন সাহেব। আমি মহাজনের ঘরটা ঘুরে আসি। হারটা নিয়ে বেরিয়ে গেলো সে। আমি বসে রইলাম।

    ঘণ্টাখানেক বাদে সে ফিরে এলো। বললো, আমি ভেবেছিলাম খাঁটি সোনা, আর আসল মুক্তোর তৈরি। কিন্তু জহুরী সাহেব বললো, ঝুটো মুক্তা, আর নকল সোনা। ফ্রাঙ্কফুটের তৈরি নকলি মাল। আসল হলে এক হাজার দিনার দাম হতো। কিন্তু এ জিনিসের দাম এক হাজার দিরহামের বেশী হবে না।

    আমি বললাম, আপনি ঠিকই ধরেছেন। আমি একটা মেয়েকে ভোলাবার জন্যে এই ঝুটো হারটা কিনে দিয়েছিলাম। কিন্তু মেয়েটা মারা যাবার আগে আমার স্ত্রীর হাতে দিয়ে যায় ওটা। যাই হোক, যা দাম পাওয়া যায় তাতেই বিক্রী করে দিন। আর যত তাড়াতাডি পারেন টাকাটা এনে দিন আমাকে। অনেক কাজের তাড়া আছে। এখুনি যেতে হবে।

    এই সময় শাহরাজাদ দেখলো, রাত্রি শেষ হয়ে আসছে। গল্প থামিয়ে চুপ করে বসে রইলো সে।

     

    আঠাশতম রজনী।

    সে বলতে থাকে :

    সেই ইহুদী হেকিম তার কাহিনী বলে চলেছে :

    যখন সেই যুবক দালালটাকে বললো, যা দাম পাওয়া যায় নিয়ে এসে দিন তাড়াতাডি, দালালের সন্দেহ হলো। নির্ঘাৎ চোরাই মাল। তা না হলে, এক কথায় ঝুটো বলে মেনে নিলো কি করে। হয় সে কোথাও কুড়িয়ে পেয়েছে, নয় সে চুরি করে এনেছে।

    যুবকটি বলতে থাকে :

    দালালটা বললো, আপনি আর একটু বসুন, সাহেব। আমি এখুনি বিক্ৰী করে দাম নিয়ে আসছি।

    আমি বসে রইলাম টাকার জন্যে। কিন্তু টাকা পেলাম না, পেলাম হাত কড়া। কয়েকজন সিপাই এসে ঘিরে ফেললে আমাকে। হাতে কড়া পরিয়ে ধরে নিয়ে গেলো কোটালের কাছে।

    আমাকে দোকানে বসিয়ে লোকটা সোজা গিয়েছিলো। ওদের বড় দালালের কাছে।

    তাকে বলতেই সে খবর দেয় কোতোয়ালীতে।

    কোটাল আমাকে প্রশ্ন করলো, এ হার কার?

    –জী আমি একটি মেয়েকে উপহার দিয়েছিলাম। সে মারা যাবার পর আমার বিবির হাতে আসে হারটা।

    —কম দামে কিনে ছিলে? কোথা থেকে কিনে ছিলে? বললাম, ঠিক মনে নাই। তবে হাজার দুই দিরহাম হবে। কিনেছিলাম কইরোর এক মনোহারী দোকান থেকে।

    কোটাল সাহেব হো হো করে হেসে উঠলো। —বাঃ চমৎকার বানিয়ে বলতে পারো তো, যাদু। হারটার আসল দাম কতো তা এখুনি টের পাবে।

    এই বলে সপাং সপং করে চাবুকের ঘা বসাতে লাগলো আমার সর্বাঙ্গে। যন্ত্রণায় আর্তনাদ করে উঠলাম। কোটাল থামলো না। —আগে বল কোথায় পেয়েছিস? কোথা থেকে চুরি করেছিস।

    —আজ্ঞে চুরি করিনি।

    আবার সপাং করে চাবুকের ঘা পড়ে আমার পিঠে। —চুরি করোনি, সোনার চাঁদ। তবে কি করে এলো তোমার হাতে? এতো দামী জিনিস পেলে কোথায়? উজির আমির ছাড়া এ গহনাকার ঘরে থাকে?

    বুঝলাম দালালটা আমাকে ধোঁকা দিয়েছে। উপায়ন্তর না দেখে, আর একটা মিথ্যে কথা বানিয়ে বললাম। তাকে।

    —হারটা আমি চুরি করেছি।

    —কোথা থেকে?

    –বড় দালালের গদি থেকে।

    অনেক ভেবে এই মিথ্যে কথাটা বললাম। না হলে দারোগার মারি থেকে রেহাই পাবো না। সত্যি কথা বলার বিপদ ছিলো। কেঁচো খুঁড়তে সাপ উঠে পড়বে। চুরি ছেড়ে খুনের দায়ে পড়বো। এখানে হয়তো একটা অঙ্গ যাবে। কিন্তু খুনের আসামীর সাজা প্ৰাণদণ্ড।

    কোটাল সাহেব সিপাইদের বললো, ওর ডান হাতখানা কেটে ফেলো।

    কোটালের হুকুমে আমার ডান হাতখানা কাটা হলো। তারে আগেই আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিলাম। কে যেন আমার মুখে কি একটা দাওয়াই ঢেলে দিলো। তারপর জ্ঞান ফিরে আসে।

    আস্তে আস্তে উঠে বাসায় ফিরে এলাম। সারা শহরে ছড়িয়ে পড়েছিলো এই মুখরোচক খবর। বাসায় ঢোকার মুখেই দেখি বাড়িওলা দাঁড়িয়ে আছেন। বললেন, সারা শহরে টি টি পড়ে গেছে! তুমি বাপু, অন্যবাড়ি দেখো, এখানে আর রাখতে পারবো না তোমাকে। আগাম যা দিয়ে রেখেছে। কাল হিসেব করে ফেরৎ দিয়ে দেবো।

    কাতর অনুনয় করে বললাম, কালই কোথায় যাবো। আমাকে দু একটা দিন সময় দিন, বাসা খুঁজে নিশ্চয়ই চলে যাবো।

    বাড়িওলা চলে গেলে ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়লাম। ব্যথায় টনটন করছে হাতটা। চোখে জল এসে গেলো, হায় আল্লাহ একি হলো আমার। এই কাটা হাত নিয়ে কি করে দেশে যাবো আমি। মসুলের কোন লোক কি বিশ্বাস করবে। আমার কোন বানানো কথা। সব দেশের লোকই জানে, চুরি করলে হাত কাটা যায়। এই একমাত্র সাজা।

    ভেবে কোন কুল-কিনারা করতে পারলাম না। বাসা খুঁজতেও বেরুলুম না। পথে বেরুলেই লোকে ছিঃ ছিঃ করে থুথু ফেলবে। আর এই অবস্থায় কে আমাকে বাসা ভাড়া দেবে? সুতরাং সে-চেষ্টা না করে না খেয়ে, না নেয়ে, খোদা ভরসা করে ঘরেই পড়ে রইলাম। এইভাবে তিনটে দিন কেটে গেলো। ভাবলাম, আজ হোক কাল হোক, বাড়িওলা আবার আসবে। আমার আগাম টাকা ফেরৎ দিয়ে, ঘরের সামান-পত্র রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে আমাকে বের করে দেবে। দেয় দিক। কি আর করবো। আর ভাবতে পারি না। যা হয় হবে। তখনকার কথা তখন ভাববো। কিন্তু মন মানে না। যত রাজ্যের ভাবনা এসে আচ্ছন্ন করে ফেলে আমাকে।

    হঠাৎ কিসের শব্দে তন্দ্র কেটে যায়। চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি আমার সামনে দাঁড়িয়ে জাঁদরেল ফোঁজি আব্বসার। গ্রেপ্তারী পরোয়ানা দেখিয়ে বললো, সুবাদার সাহেবের হুকুমে তোমাকে গ্রেপ্তার করলাম।

    ফৌজরা এসে আমাকে বেঁধে ফেললো। সুবাদারের দরবারে দাঁড় করানো হলো আমাকে। দেখলাম। সেখানে অনেক লোক জড়ো হয়েছে। তার মধ্যে আমার বাড়িওলা আর সেই দুই দালালকেও দেখলাম। সুবাদার সাহেব বললেন, কোটোয়ালের কাছ থেকে শুনলাম, এই হাঁসুলী হারটা তুমি নাকি এই দালালটার ২৯ দোকান থেকে চুরি করেছে। কিন্তু হারটার মালিক তো এই দালাল নয়। এটা আমার মেজো মেয়ের হার। আজ তিন বছর আগে একদিন বড় মেয়ের সঙ্গে বেড়াতে যায়, কিন্তু আর ফিরে আসেনি। এখন তোমার কাছে আমার একান্ত অনুরোধ, সত্যি কথা কি, বলতো? আমি তোমাকে কোন সাজা দেবো না। আজ তিনটি বছর ধরে দামাসকাসের প্রতিটি কোণে কোণে আমি তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি। কিন্তু তার কোন হদিস করতে পারিনি। আজ এই হারটা আমার হাতে এসেছে। এখন বুঝতে পারছি, সে আর জান-এ বেঁচে নাই।

    সুবাদার সাহেবের কথা শুনে আমার পায়ের তলার মাটি সরে যেতে লাগলো। এবার আর বাঁচার কোন আশা নাই। মৃত্যু অনিবার্য। কিন্তু দুনিয়াতে অবাক করার মতো ঘটনাও মাঝে মাঝে ঘটে। সুবাদারসাহেব ফৌজদারকে বললেন, শিকল খুলে দাও।

    আমাকে বন্ধন মুক্ত করা হলো। সুবাদার সাহেব তার আরও কাছে ডাকলেন আমাকে। তারপর বড় দালালের দিকে তাকিয়ে বললেন, এই লোকটা মিথ্যেবাদী শয়তান। মিথ্যে সাক্ষী দিয়ে তোমার হাতটা কাটিয়েছে। ওকে আমি জেলে ভরবো। এই বেচারার কাটা হাতের উপযুক্ত খেসারৎ দাও। এবং এক্ষুণি আমার সামনে! না হলে তোমাকে আমি শূলে দেবো। বুঝেছে। শয়তান। দালালী করা তোমার জন্মের মতো ঘুচিয়ে দেবো।

    সুবাদার সাহেবের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। একেবারে মুখোমুখি। দরবার ছেড়ে সবাইকে চলে যেতে হুকুম দিলেন। এমনকি সুবাদারের ব্যক্তিগত রক্ষীও রইলো না সেখানে। আমাকে আদর করে পাশে বসলেন তিনি। বললেন, আচ্ছা বাবা এবার বলোতো সত্যি কথাটা কি? আমি জানি তোমার দ্বারা কোন খারাপ কাজ সম্ভব নয়। তোমার চোখ, তোমার চেহারা সে কথা আমাকে বলে দিয়েছে। তোমার একটুও ভয় নেই। আমি বঁচালে তোমার কোন ক্ষতিই কেউ করতে পারবে না। এখানে। সুতরাং নিৰ্ভয়ে বলে। তা সে যত অপ্রিয়ই হোক, আমি শুনতে চাই। আর তোমার সাজার ভয়? সে তো তোমাকে আগেই বলেছি, কোন ভয় নাই। কোন সাজা তোমাকে দেবো না।

    আমি কেঁদে ফেললাম, আপনি আমাকে যে সাজাই দিন, কোন কথা না ছুপিয়ে আগাগোড়া সব খুলে বলবো আপনাকে।

    তারপর প্রথম মেয়েটির কথা বলললাম। সে আমার সঙ্গে যা যা করেছিলো সব বললাম। তার পরে কবে দ্বিতীয় মেয়েটাকে আনলো এবং তার সঙ্গে আমাকে এক খাটে শুতে দিয়ে সে নিচে শুয়ে পড়লো এবং গভীর রাতে খুন করে পালিয়ে গেলো-সবিস্তারে সব বললাম।

    আমার কথা শুনতে শুনতে সুবাদার সাহেব মাথাটা নিচু করে রুমালে মুখ ঢাকলেন। ছোট ছেলের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়েকাঁদতে  থাকলেন অনেকক্ষণ ধরে। আমি আর কী সান্ত্বনা দেবো। তঁাকে। চুপ করে বসে রইলাম। রুমালে চোেখ মুছে বললেন, সেই প্রথম মেয়েটি আমার বড় কন্যা। ছোটবেলা থেকেই সে খারাপ হয়ে যায়। পাড়ার ছেলেদের নিয়ে ঘুরে ঘুরে বেড়াতো। না। বলে বাড়ির বাইরে রাত কাটাতো। আমি তাকে নানাভাবে শাসন করেছি, ভয় দেখিয়েছি। কিন্তু কিছুতেই তাকে ভালো করা গেলো না। শেষে আমার ছোটভাই-এর কাছে পাঠিয়ে দিলাম। কইরোয়। আমার ভাইপোর সঙ্গে শাদী দিয়ে দিলাম। আশা, যদি সে ভালো হয়। কিন্তু নসীব খারাপ, বছর না ঘুরতেই ওর স্বামী মারা গেলো। তখন আর কোন উপায় না দেখে আবার তাকে এখানে–আমার কাছে নিয়ে এলাম।

    এখানে আসার পর দেখলাম, আরও খারাপ হয়ে গেছে সে। মিশরে থাকাকালে ওখানকার মেয়েদের সঙ্গে মিশে, তাদের সব খারাপ দোষগুলোই সে বেশ রপ্ত করে ফেলেছিলো। তুমি তো মিশরে ছিলে, নিশ্চয়ই জানো, মিশরের মেয়েদের মতো বদ-চরিত্রের মেয়েমানুষ সারা দুনিয়ার কোথাও নাই। কামনার বিকৃতি তাদের রক্তের কণায় কণায়। নানা ছল চাতুরি দিয়ে ছেলেদের সর্বস্বাস্ত করে পথে বসাতে তারা ওস্তাদ। নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্যে পারে না এমন কোনও কাজ নাই। দরকার হলে নিজের ছেলেকে খুন করতে পারে। কোনও যুবককে চোখে ধরলে তার আর নিস্তার নাই। সে যতো চরিত্রবান ছেলেই হোক, ছলাকলা দেখিয়ে, যেনি-তেন-প্রকারেন, তাকে জাহান্নামে টেনে নামাবেই। মিশরের মেয়েদের সব গুণই সে আয়ত্ত করে ফেলেছিলো।

    এখন বুঝতে পারছি মিশর থেকে আসার পর সে তোমাকেই তাক করেছিলো। পর পর চারবার তোমার ঘরে গিয়েছিলো সে। তা যাক, তাতে আমার আর দুঃখ ছিলো না। অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু আর ভালো করা যাবে না নিশ্চিত হয়ে ওকে আমি খরচের খাতায় লিখে রেখেছিলাম। কিন্তু চিন্তা হলো যখন দেখলাম, আমরা মেজো মেয়েটাকেও সে খারাপের পথে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কড়া শাসনে চোখে চোখে রাখতাম মেজোটকে। যাতে সে তার দিদির সঙ্গে বেশী মেলামেশা না করে। কিন্তু আমি নানা কাজের লোক, অন্দরমহলে বসে থাকলে তো আমার চলে না। হরদম সুবা-র কাজে এখানে ওখানে চলে যেতে হয় আমাকে। সেই ফাঁকে বড় মেয়েটা মেজোটাকে নিয়ে এদিক-ওদিক বেরিয়ে পড়ে। তুমি তো বাবা জানো, মেজোর কি কচি বয়স ছিলো। এই বয়সের ছেলেমেয়েরা স্বভাবতই একটু বেশী কৌতূহলী হয়। নতুন কোন কিছু জানার দিকে, নতুন কোন কিছুর স্বাদ পাওয়ার জন্যে ভীষণ লোভ হয়। দেহে প্রথম যৌবনের জোয়ার আসে। সেই স্রোতে গা ভাসিয়ে তলিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। সেই জন্যেই খুব কড়া নজর রাখতে হয়। এই সময়। নজর আমার কড়াই ছিলো। কিন্তু বড় মেয়ের কারসাজীর কাছে আমার হার হয়ে গেলো। এই বয়সে কামনার আগুন। একবার জ্বলিয়ে দিতে পারলেই হলো। তারপর আর তাকে নিরস্ত করা শক্ত। আমার অনুপস্থিতির সুযোগে মেজোটাকে নিয়ে সে মাঝে মাঝে বাড়ির বাইরে গিয়ে রাত কাটাতো।

    একদিন সকালে মহাল থেকে ফিরে এসে শুনলাম মেজো মেয়েটাবাড়ি নাই। বড়কে ডেকে জিজ্ঞেস করতেই হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো। বললো, কাল বিকেলে ওকে নিয়ে আমি বাজারে গিয়েছিলাম, দু-একটা মনোহারী জিনিস কিনতে। কিন্তু ভীড়ের মধ্যে কোথায় সে হারিয়ে গেলো আর খুঁজে পেলাম না আব্বাজান।

    প্রথমে ভেবেছিলাম, বড়টা ওকে কোন ছেলের সঙ্গে ভিডিয়ে দিয়েছে। হয়তো আজই ফিরে আসবে। কিন্তু আমার ধারণা যে ভুল তা আজ তোমার এবং বড়মেয়ের কথা থেকে জানতে পারলাম। সেদিন বিকেলে সে তাকে সঙ্গে করে তোমার বাসায় গিয়ে উঠেছিলো। বরাবরই লক্ষ্য করেছি, মেজোর অসাধারণ রূপ সে কিছুতেই সহ্য করতে পারতো না। সে নিজেও কিছু কম সুন্দরী না, কিন্তু মেজোর মতো অতোটা না। ওর সামনে যদি মেজো মেয়ের রূপের প্রশংসা করতো। কেউ, তার ওপর ক্ষেপে লাল হয়ে উঠতো। অথচ মেজোকে ছেড়েও থাকতো না সে। সারা দিন রাত তার সঙ্গে খাওয়া দাওয়া গল্পগুজব করতো। মনে হতো, ওরা যেন বোন নয়—দুই সখী।

    তোমার বাসাতে অযাচিত ভাবে তাকে নিয়ে যাওয়ার একটাই উদ্দেশ্য ছিলো। হত্যা করা। মেজোর রূপ। সে সহ্য করতে না পেরে আগে থেকেই মতলব এটে রেখেছিলো—কিভাবে কোথায় তাকে খুন করবে। আজ যখন মেজো মেয়ের হাঁসুলী হারটা তাকে দেখলাম, তখন সে সব কথা কবুল করেছে আমার কাছে। তোমার মুখ থেকে শুনে বুঝলাম, সে যা বলেছে সবই ঠিক।

    তাকে আর ফিরে পাবো না, বাবা। সারা জীবন শোকের আগুনে পুড়ে পুড়ে ছাই হবো আমি। আর বাবা, তোমার কি দুৰ্ভাগ্য দেখো, বিনা দোষে তোমার হাতখানা কাটা গেলো। তাও তো আর ফেরৎ হবে না। এই-ই হয়। নিয়তির লেখা কেউ খণ্ডন করতে পারে না। তাই বলছি, মনে কোন ক্ষোভ রেখো না, বাবা। আবার নতুন করে জীবন শুরু করো।

    আমি বললাম, কিন্তু এই কাটা হাত নিয়ে আমি দেশে ফিরবো কী করে? লোকে তো বিশ্বাস করবে না। আমার কথা। আমি দেশে যেতে পারবো না।

    আমিও তোমাকে এখানেই ধরে রাখতে চাই, বাবা। আমার তিন মেয়ে। কোন ছেলে নাই। তুমি আমার ছোট মেয়েকে শাদী করে আমার কাছেই থাকে। আমার ছেলের অভাব পূরণ করো। রূপে সে মেজো মেয়ের চেয়েও সুন্দরী। আর গুণে সে সকলের সেরা। অমন মেয়ে লাখে একটা মেলে।

    আমি হাতে স্বৰ্গ পেলাম। বললাম, আপনি যা বলবেন তাই করবো। শুধু একটা কথা, খবর পেলাম, মসুলে আমার বাবা গত হয়েছেন। আমরা পাওনা বিষয় সম্পত্তিগুলো সব বেচে দিতে চাই।

    তিনি বললেন, আজই আমি আমার লোকজন সঙ্গে দিয়ে একজন বড় আবসার পাঠিয়ে দিচ্ছি সেখানে। তোমার যা ন্যায্য প্রাপ্য কড়ায় গণ্ডায় বুঝে সে নিয়ে আসবে। তোমাকে কিছু চিন্তা করতে হবে না।

    এর পর সুবাদার সাহেবের ছোট মেয়েকে শাদী করে বেশ সুখে দিন কাঁটাচ্ছি। আমার বিবি বড় ভালো মেয়ে। জান দিয়ে ভালোবাসে আমাকে। আর সুবাদার সাহেব-আমার শ্বশুর যে কি চোখে দেখে আমাকে সে তো আপনি এই কদিনে ভালো করেই জেনেছেন।

    ইহুদী হেকিম বলতে থাকে, যুবকের কাহিনী আমি অবাক বিস্ময়ে শুনছিলাম এতক্ষণ। এবার বললাম, যেভাবে আসন্ন মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচেছে তা সত্যিই রোমাঞ্চকর। তবে সবই সম্ভব হয়েছে সুবাদার সাহেবের মতো এমন ভালো মানুষের সঙ্গে তোমার যোগাযোগ ঘটেছিলো বলে।

    জামাতার অসুখ সেরে গেলে সুবাদার সাহেব খুশী হয়ে আমাকে প্রচুর অর্থ এবং নানা শৌখিন জিনিসপত্র উপহার দিলেন।

    হাতে অনেক টাকা পয়সা এসে গেলো। দেশ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়লাম। দুনিয়ার নানা দেশ ঘুরতে ঘুরতে জাঁহাপনা, আপনার সালতানিয়তে এসে বড় ভালো লেগেছে। তাই এখানে একখানা বাসা ভাড়া করে বসবাস করছি। হঠাৎ কাল রাতে এই কাণ্ড। কে বা কারা এই কুঁজোটার লাশ আমার বাসায় ফেলে রেখে চলে গিয়েছিলো। তার পরের ঘটনা তো আপনার সবই জানা, হুজুর।

    চীনের সুলতান তখন মাথা দুলিয়ে বললো, হ্যাঁ, তোমার গল্পটা মন্দ নয়। কিন্তু কুঁজোর মরার ঘটনার চেয়ে অবাক করার মতো কিছু না। নাঃ, তোমাদের কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না। ফাঁসী। তোমাদের দেবোই।

    এই সময় সেই দর্জি এগিয়ে এসে কুর্নিশ জানালো। দুনিয়ার মালিক জাঁহাপনা, আমি আপনাকে আমার কাহিনী শোনাতে চাই। আপনি মেহেরবানী করে একটু ধৈর্য করে শুনবেন এই আমার আর্জি।

    জিন্দেগীভর যতো কাহিনী কিসসা এতাবৎকোল আপনি শুনেছেন, সে-সবের চেয়ে সেরা, মজাদার এবং সবচেয়ে অবাক করার মতো আমার এই কাহিনী।

    সুলতান মাথা দুলিয়ে বললেন, ঠিক আছে, এতো করে যখন বলছে, শুনবো তোমার কাহিনী। যদি সত্যিই ভালো লাগে, যদি সত্যিই অবাক হই, তবে তোমাদের চারজনকেই বেকসুর খালাস করে দেবো। আর যদি তা না হয়, তবে কারো রক্ষা নাই। মনে রেখো, ফাঁসীতে ঝুলাবো।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86 87 88 89 90 91 92 93 94 95 96 97 98 99 100 101 102 103 104 105 106 107 108 109 110 111 112 113 114 115 116 117 118 119 120 121 122 123 124 125 126 127 128 129 130 131 132 133 134 135 136 137 138 139 140 141 142 143 144 145 146 147 148 149 150 151 152 153 154 155 156 157 158 159 160
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleকবীর – ১ – ক্ষিতিমোহন সেন
    Next Article প্রাচীন পূর্ববঙ্গ গীতিকা – ক্ষিতীশচন্দ্র মৌলিক
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.