Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সহস্র এক আরব্য রজনী

    ক্ষিতিশ সরকার এক পাতা গল্প3728 Mins Read0

    ২.১২ কসাই ওয়াঁর্দার ও উজির-কন্যার কাহিনী

    কসাই ওয়াঁর্দার ও উজির-কন্যার কাহিনী

    শারিয়ার বললেন-ঘুম যাতে না আসে সেই জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করেছি আমি। ঘুম আসবে কেমন করে? তুমি একটা শিক্ষামূলক গল্প বলো দেখি, শুনি।

    -কী ধরণের গল্প জাঁহাপনা?

    ধর, কোন মেয়েদের গল্প—যে মেয়েরা স্বামীদের মনে কেবল নারী দেহের কামনা জাগায়, আর তাকে ভোগের পথে টেনে কবরের দিকে টেনে নেয়-এই রকম একটা গল্প। এই জাতীয় মেয়েদের কী রকম শাস্তি হবে তোমার গল্পের মধ্যে সেটার-ও ইঙ্গিত থাকে যেন।

    শাহরাজাদ কিছুক্ষণ ভাবলো; তারপরে বললো—জাঁহাপনা, এই জাতীয় একটা ভালো গল্প সমার মনে পড়েছে। সেইটাই বলছি। আপনি শুনুন।

    এক সময় কায়রোতে ওয়ার্দা নামে একটি লোক থাকত। পেশায় লোকটা ছিলো। কসাই। কায়রো শহরে লোকটার একটা মাংসের দোকান ছিলো। তার দোকানো একটি মেয়ে রোজ মাংস কিনতে আসত। মেয়েটির গায়ের রঙ বিবৰ্ণ, চোখ দুটো বড় ক্লান্ত। তার সঙ্গে থাকত একটা বিশেষ কুলি। কুলিটার মাথায় থাকত একটা ঝাকা। দোকানে এসে ভেড়ার সব চেয়ে মাংসল অংশটা কিনত; সঙ্গে নিত ভেড়ার এক জোড়া রাং। মাংস কিনে দাম দিয়ে যেত একটি করে সোনার ছোট মোহর। টুকরোটার দাম ছিলো দুই দিনার। মাংসটা কুলির ঝুডিতে চাপিয়ে বাজারে অন্য অনেক দোকানেই সে ঘুরে-ঘুরে জিনিস কিনত। মেয়েটির গতিবিধিও ছিলো প্রায় একই রকম। কারও সঙ্গেই সে প্রায় কথাবার্তা বলত না।

    অনেক দিন ধরে একইভাবে আসা-যাওয়ার পরে কেমন যেন কৌতুহল হলো ওয়ার্দার। মেয়েটির সম্বন্ধে অনেক কিছু জানতে ইচ্ছে হলো তার। কিন্তু মেয়েটি তো নির্বাক। জানবে কেমন করে? তাই সে অপেক্ষা করতে লাগলো।

    একদিন সুযোগ এলো। সেদিন মেয়েটির কুলি একাই যাচ্ছিল দোকানের পাশ দিয়ে। তাকে ডাকল কসাই। সে এসে দাঁড়ালে তার হাতে বড় একটা ভেড়ার মাথা দিয়ে বললো—বাবুর্চিকে বলবে মাথাটা যেন সে গোটাই রান্না করে। আমি ছাড়িয়ে ঠিক করে দিয়েছি। আর বেশী কাটাকুটি করলে ওর স্বাদ নষ্ট হয়ে যাবে। …তা হ্যাগো সাহেব, ওই যে মেয়েটি রোজ তোমাকে সঙ্গে করে নিয়ে বাজারে আসে ও কেবলত! ওর ব্যাপারটা আমার ঠিক মাথায় ঢুকছে না। ও থাকে কোথায়? মেয়েটি প্রতিদিন মাংসের সঙ্গে একটা করে অন্ডকোষ নিয়ে যায় কেন? ওকে সব সময় এত ক্লান্ত দেখায় কেন? কিছু বলতে পোর?

    কুলিটি বললো—আপনার খুব জানার ইচ্ছে, তাই না? আমি অবশ্য বেশী কিছু জানি না। তবে এই গরীবকে দয়া করে বিনা পয়সায় আপনি অত বড় একটা ভেড়ার মাংস দিলেন, আপনাকে না। বলে পারি? …; যেটুকু জানি তাই আপনাকে বলছি।…

    –তাই বলো।

    বাজার করা শেষ হয়ে গেলে আমার মালকিন ওই কোণের খ্ৰীষ্টানের দোকানে গিয়ে একদিন খাওয়ার মত সরাব কেনে। তার পরে আমাকে সঙ্গে করে ধনী উজিরের বাগানবাড়িতে যান। সেখানে একখানা কাপড় দিয়ে আমার চোখ দুটো বেঁধে দেন; তারপরে আমার একটা হাত ধরে নিয়ে যান একটা সিডির কাছে। সিডি দিয়ে আমরা নিচে নামতে থাকি। খানিকটা যাওয়ার পরে কেউ একজন আমার মাথা থেকে ঝুডিটা তুলে নিয়ে আমার হাতে আধ দিনার গুঁজে দেয়। তারপরে সেই চোখ-বাঁধা অবস্থায় আমাকে আবার ওপরে পৌঁছে দেয়। আমিও চলে আসি। তার পরের দিন ওই একই ব্যাপার ঘটে। অত মাংস, বাদাম, মোমবাতি দিয়ে কী করেন তা আমি জানি নে।

    কসাই বললো-আমার কৌতূহলটা তুমি আরও বাড়িয়ে দিলে ভাই।

    এমন সময় দোকানে দু’চারজন খদের এসে পড়ায় সেদিন এ সম্বন্ধে আর বেশী কিছু কথা হয়। নি। কিন্তু ওয়ার্দার ভাবনাটা কাটলো না। এমন কি সারা রাত ধরেই মেয়েটির কথা সে ভাবতে লাগলো।

    পরের দিন যথারীতি সেই মেয়েটি সেই কুলিটাকে নিয়ে দোকানে মাংস কিনে আর তার দাম দিয়ে বাজারের মধ্যে ঢুকে গেলো। সে মনে-মনে ঠিক করে নিলো যেমন করে হোক ব্যপারটা আমাকে জানতেই হবে।–আর আজই। কখন সে বাজার থেকে বেরিয়ে যাবে সেই তক্কে রইলো সে। মেয়েটি যেই বাজার থেকে বেরোল অমনি কসাই একটা বাচ্চা ছেলের ওপর দোকানের ভার দিয়ে তার পিছু নিলো। তার হাতে যে পাঠা-কাটা ভোজালিটা ছিলো সেটাও ভুলে সে সঙ্গে করে নিয়ে গেলো।

    মেয়েটি যাতে তাকে দেখতে না পায় এইভাবে আড়ালে-আড়ালে লুকিয়ে সে তার পিছু পিছু চলতে লাগলো। ধনী উজিরের বাগানের সামনে হাজির হলো মেয়েটি। সে-ও একটা গাছের আড়ালে লুকিয়ে পড়লো। গাছের ফাঁক দিয়ে দেখলো কুলির চোখ বেঁধে হাত ধরে তাকে নিয়ে এগিয়ে চলেছে মেয়েটি। তারপর আবার কিছুক্ষণ পরে চোখের বাঁধন খুলে কুলিটি বেরিয়ে গেলো। সেখান থেকে। আরও একটু অপেক্ষা করলো ওয়ার্দা। তারপরে গাছের আড়ালে নিজেকে ঢেকে খুব সন্তৰ্পণে সে মেয়েটিকে অনুসরণ করলো। যেতে-যেতে একটা বড় পাথরের চাই-এর সামনে এসে দাঁড়ালো মেয়েটি। চারপাশে একবার তাকিয়ে দেখলো। তারপরে পাথরের একটা বিশেষ জায়গায় আঙুলের চাপ দিলো। সঙ্গে-সঙ্গে একটা গর্ত বেরিয়ে পড়লো। সেই গর্তের মুখে দেখা গেলো একটা সিঁড়ি। মেয়েটি সিঁড়ি দিয়ে নেমে গর্তের ভেতরে অদৃশ্য হয়ে গেলো।

    কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ওয়ার্দা-ও সেই পাথরের কাছে এগিয়ে গেলো। চাপ দিলো পাথরের গায়। তারপরে সিডির ওপরে নেমে এলো। এর পরে কসাই-এর জবানীতে শুনুন কাহিনীটা।

    গর্তের মুখটা বন্ধ করে দেওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে চারপোশ অন্ধকার হয়ে গেলো। কোন দিকে যাব তা আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি। তারপরে দেখলাম কোথা দিয়ে যেন একটু আলো আসছে। সেই আলো ধরে বুড়ো আঙুলের ওপরে ভর দিয়ে খুব আস্তে-আস্তে আমি এগিয়ে গেলাম। উত্তেজনায় আমার বুক ধড়পড় করে কাঁপছিলো তখন। কিছুটা যাওয়ার পরেই একটা দরজা পেলাম। দরজার ওপরে কান পেতে শুনলাম ভেতরে খুব হাসির হুল্লোিড় চলছে। কে যেন শুয়োরের মত ঘোৎ ঘোৎ করছে ভেতরে সেই সঙ্গে ভেসে আসছে নানান ধরণের আওয়াজ। দরজার গায়ে একটা ফোকর ছিলো। সেই ফোকরের ভেতর দিয়ে আলো আসছিলো বাইরে। সেই ফোকরে চোখ রেখে দেখলাম। হ্যাঁ; সেই মেয়েটাই বটে; মেয়ে একটা পালঙ্কে শুয়ে রয়েছে; আর একটা বেশ বড় বাঁদর মেয়েটাকে দলাই-মালাই করছে। বানরের মুখ অনেকটা মানুষের মুখের भ5!

    একটু পরে মেয়েটা উঠে পড়লো; তারপরে জামা কাপড় খুলে উলঙ্গ হয়ে আবার সেপালঙ্কের ওপরে শুয়ে পড়লো। বাঁদরটা উলঙ্গ মেয়েটার বুকের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়লো; তারপর সজোর জড়িয়ে ধরলো মেয়েটিকে। সারা শরীর দিয়ে ঢেকে দিলো তাকে। কিছুক্ষণ পরে ক্লান্ত হয়ে বাঁদরটা উঠে পড়ে একটু বিশ্রাম নিলো। তারপরে আবার কাঁপিয়ে পড়লো মেয়েটির ওপরে। আবার আগের মত মেয়েটির বুকের ওপরে শুয়ে নিজের শরীর দিয়ে ঢেকে নিলো তাকে। আর আশ্চর্যের কথা, প্রতিবারই মেয়েটি গভীর সুখে বানরটাকে দু’হাতে জড়িয়ে ধরলো, সোহাগ করলো-মানুষ যেমন সঙ্গমের সময় নারীকে সোহাগ করে ঠিক সেই রকম। এই রকম বার দশেক করার পরে দুজনেই এলিয়ে বিছানার ওপরে ঢলে পড়লো; তারপরে পড়লো ঘুমিয়ে। আর কারও সাড়াশব্দ নেই। টা ভোর হয়ে আসছে দেখে থেমে গেলো শহরাঞ্জাদ।

    তিনশো তিপান্নতম রজনী:

    পরের দিন রাত্ৰিতে শাহরাজাদ। আবার শুরু করলো গল্প :

    কসাই বললো—আমার অবস্থােটা সহজেই আপনারা বুঝতে পাচ্ছেন। আমি যেন বোঝা হয়ে গেলাম। এরকম মেয়ে থাকে? ওরা ঘুমোচ্ছে। এমন সুযোগ আর আসবে না বুঝতে পেরে কঁধ দিয়ে চাপ মেরে দরজা খুলে লাফ দিয়ে ঢুকলাম। হাতে আমার কসাই-এর ছুরিটা তখন কাঁপছে। লোকে বলে এই ছুরিটা মাংস কাটার আগে হাড়ে গিয়ে পৌঁছয়। এত ধার ছুরিটার।

    সেই ছুরি নিয়ে ঘুমন্ত বাঁদরটার ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে মুহূর্তের মধ্যে তার শিরটা ধড় থেকে নামিয়ে দিলাম। মরার আগে গলার ভেতর থেকে একটা বীভৎস আর্তনাদ বেরিয়ে এলো। রক্তে ভেসে গেলো সারা ঘর। ভীষণ ধড়পড় করতে-করতে স্থির হয়ে গেলো দেহটা। হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলো মেয়েটির। চোখ খুলে দেখে রক্তে মাখা ছোরা হাতে নিয়ে আমি তার পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছি। বুঝতে পেরেই সে এমন জোরে চোঁচাতে আরম্ভ করলে যে মনে হলো সে বুঝি মারেই যাবে। চোঁচাতে-চেঁচাতে হঠাৎ সে অজ্ঞান হয়ে গেলো। চোখে-মুখে জলের ঝাপটা দিয়ে জ্ঞান ফিরিয়ে আনলাম তাঁর। তারপরে মেয়েটা ধাতস্থ হলো। চিনতে পারলো আমাকে।

    —তুমিই সেই ওয়ার্দা। একজন ভালো খদেরকে কী পুরস্কার দিলে! বললাম—ওই জানোয়ারটার হাত থেকে তোমাকে মুক্তি দিলাম। কিন্তু তোমাকে আনন্দ দেওয়ার মত কি পুরুষ নেই দুনিয়ায়? একটা জানোয়ারের সঙ্গে তোমাকে …;

    মেয়েটি বললো-আগে আমার কাহিনীটা মন দিয়ে শোনো ওয়ার্দা। তাহলে আমাকে খানিকটা বুঝতে পারবে।

    বলো-তোমার কাহিনী কী শুনি।

    মেয়েটি বললো-আমি ধনী উজিরের একমাত্র মেয়ে। পনের বছর বয়স পর্যন্ত বাবার বাড়িতে আমার সুখেই কেটেছিলো। আমাদের একটা নিগ্রো ক্রীতদাস ছিলো। একদিন আমি তারই পাল্লায় পড়লাম। তুমি বোধ হয় জান, মেয়েদের ভেতরের কামনা জাগাতে ওদের জুড়ি আর কেউ নেই। বিশেষ করে তরুণী মেয়েদের যৌবনের ক্ষিদে মেটাতে ওরা ওস্তাদ। তা ছাড়া, আমার গড়নটা এমনি ছিলো যে সেই বয়সেই আমাকে বাইশ-তেইশ বছরের মেয়ে বলে মনে হোত। ওই নিগ্রোর কাছেই আমি প্রথম যৌবনের স্বাদ পেলাম। ক্ষিদেটাও এমন বেড়ে গেলো যে প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় ওই নিগ্রোর সঙ্গে সহবাস না করলে আমার চলত না।

    ভালোই চলছিলো; কিন্তু একটা দুর্ঘটনায় নিগ্রোটি হঠাৎ মারা গেলো একদিন। পুরুষের সঙ্গে সহবাসের স্বাদ যে পেয়েছে সে কি চুপ করে থাকতে পারে? পুরুষ সঙ্গ না পেয়ে আমি দিন-দিন অস্থির হয়ে উঠতে লাগলাম। এমনি সময় আমাদের বাড়ির এক বুড়িকে সব খুলে বললাম। সে বললো—এ জগতে ওসব ব্যাপারে নিগ্রোদের চেয়ে উপযুক্ত মানুষ আর নেই বাছা। তোমার যে কষ্ট হবে সে আর এমন কথা কী? তবে নিগ্রো যদি না-ই পাও তাহলে অগত্যা গরিলার মত দেখতে কোন একটা বাঁদরই বেছে নাও। এসব কাজে বাদাররাও বিশেষ দক্ষ।

    কিন্তু ওই জাতীয় বঁদেরই বা পাই কোথায়? আমার যে আর তাঁর সইছে না। বাঁদর খোঁজার চেষ্টায় ছটফট করে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এমন সময় দেখলাম আমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে একটা লোক কতগুল বাঁদর নিয়ে যাচ্ছে। আমার বুকের ভেতরটা টিপটপ করতে লাগলো। লোকটা আমার জানলার দিকে এগিয়ে এলো। নাকাব সরিয়ে বানরগুলির দিকে তাকলাম আমি। কী করব, কী করব ভাবছি; এমন সময় দেখলাম লোকটার দলের বেশ একটা বড় ধরুনের বাঁদর আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। সেই বড় বোদরটা আমাকে দেখে কী ভাবলো কে জানে। হঠাৎ সে তার শেকল ছিঁড়ে লাফ দিয়ে রাস্তার ওধারে চলে গেলো; তারপরেই হাওয়া। লোকটা অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও বাঁদরটাকে খুঁজে না পেয়ে হায়রানি হয়ে শেষ পর্যন্ত চলে গেলো। বাঁদরটা এতক্ষণ আমাদের বাগানের এক কোণে লুকিয়েছিলো। লোকটা চলে যাওয়ার পরে সে সটান আমার ঘরের ভেতরে চলে এলো। আসর সঙ্গে-সঙ্গে এক মুহূর্ত দেরী না করে সে আমাকে জাপটে ধরে ফেললো। প্রথম-প্রথম আমার গা-টা ঘিনীঘিন করত; তারপরে, অভ্যাস হয়ে গেলো। এখন বেশ আরামই হয়।

    শেষে একদিন বাবা সব ধরে ফেললেন। আমাকে সেদিন তিনি বেদম প্রহার করেছিলেন। কিন্তু ওকে ছাড়া আমি বাঁচিব কেমন করে? তাই ওকে লুকিয়ে রাখার জন্যে এই মাটির তলায় ওর ঘর বানিয়ে দিয়েছি। এতে ও বাঁচালো; আমি যথারীতি আনন্দ পেতে লাগলাম। রোজই ওর জন্যে আমি খাবার এনে দিই, এনে দিই সরাব। কিন্তু এখন আমার কী হবে? আমি কাকে নিয়ে বাঁচব?

    বলতে বলতে মেয়েটা বর-কার করে কেঁদে ফেললো।

    আমি তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বললাম-কেঁদো না। তোমার কাজ চলা নিয়ে কথা। বান্দরের বদলে আমিই তোমার কাজ চালিয়ে যাব। দেখবে, ওই বোদরটার চেয়ে আমার ক্ষমতা মোটেই কম নয়। আমি বেশ ভালো ঘোড়ায় চড়তে পারি। লোকে বলে শুধু ঘোড়া নয়, আর সব ব্যাপারেই কারও ওপরে চড়ার সুযোগ পেলে আর কিছু আমি চাই নে।

    আমার প্রস্তাবে রাজি হলো মেয়েটি। কেবল সেদিনই নয়; তারপর থেকে প্রতিদিনই আমি তার কাছে যেতাম আর তাকে বহুৎ আনন্দ দিতাম। তাকে আনন্দ দিতে আমারও বেশ ভালো লাগত। একদিন সে স্বীকারই করে ফেললো যে এসব ব্যাপারে বদরের চেয়েও আমার শক্তি আর কৌশল অনেক বেশী। ফলে উৎসাহ পেয়ে আমি দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে তার কাছে যেতে লাগিলাম।

    কিন্তু এসব জিনিস একভাবে বেশী দিন চলে না। প্রথমে লোভে পড়ে এগিয়ে গিয়েছিলাম। বটে; কিন্তু কয়েক সপ্তাহ পরেই আমার শক্তি কমে গেলো। সমুদ্রে সাঁতার কাটতে কাটতে মানুষ যেমন অনতিবিলম্বেই হাবুডুবু খেতে থাকে আমার অবস্থাও সেই রকম দাঁড়ালো। তীরে বোধ হয় আর পৌঁছতে পারব না। এদিকে মেয়েটির কামনায় যেন ঘি পড়লো। তার কামনা উত্তরোত্তর বাড়তে লাগলো। প্রতিদিনই সে উগ্র থেকে উগ্রতর হয়; আমাকে গ্রাস করে ফেলে। দুর্বর হয়ে ওঠে সে। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আমাকে ছাড়িয়ে সে সামনে এগিয়ে যায়। পেছোতে সে আমাকে কিছুতেই দেবে না। আমারও শক্তি নেই তার সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার। এমন বিপদেও পুরুষ মানুষে পড়ে? ই আল্লা!

    পরিস্থিতিটা এই রকম জটিল হয়ে উঠলে একটি বুড়ির সঙ্গে আমি কিছুটা শলাপরামর্শ করলাম। বুড়িটা তুকতাক জানত; তা ছাড়া, গোপন রোগ সারানোর দাওয়াই জানত অনেক! অনেকের অনেক রোগই সে নাকি সারিয়ে দিয়েছে। সমস্ত ঘটনা তাকে খুলে বললাম-দস্যি মেয়েটার ক্ষিদে মেটাতে পারি। এমন একটা দাওয়াই আমাকে দাও। এমন একটা ওষুধ দাও যেটা খাইয়ে তাকে শান্ত করতে পারি।

    দাদি বললো-রোগটা বড় সোজা নয়রে সাহেব।

    —দেখ দাদি, তুমি তো বাপু আজকের মানুষ নও। সব চুলই তোমার পেকে সাদা হয়ে গিয়েছে। তোমার নামডাক কত! আমি জানি, অনেক লোককেই তুমি ওষুধ দিয়েছ। তুমিই পারবে আমাকে বাঁচাতে।

    — দেখি, কী করতে পারি।

    এই বলে বুড়ি একটা মাটির হাঁডি নিলো। তার ভেতরে ঢাললো মিশরীয় নুপিন গাছের একমুঠো বীজ, এক গ্রাস ভিনিগার, দু’ ছটাক হপ গাছের ছাল; আরও কিছু গাছ-গাছড়ার ছাল। তাদের নাম আমি জানিনে। তারপরে জলে ভর্তি করে সেই হাঁডিটা বসিয়ে দিলো গানগনে উনোনে। টগবগ করে ফুটতে লাগলো জল। ঘন্টা দুই পরে উনুন থেকে হাঁডি নামিয়ে ছেকে শিশিতে পুরে বুড়ি বললো—এই নাও দাওয়াই। এতেই কাজ হবে।

    জিজ্ঞাসা করলাম—কিন্তু এ ওষুধটা খাওয়াবো, না, লাগাব? না, বাবা। এসব কাজ আমার দ্বারা হবে না। তুমি আমার সঙ্গে গিয়ে যাহোক একটা বিহিত করে এসো।

    —ঠিক আছে। চলো।

    বুড়িকে সঙ্গে করে লুকিয়ে মাটির নিচের ঘরটিতে নিয়ে গেলাম। বুড়ি আমাকে চুপিচুপি বললো-অন্য দিনের মতই তুমি কাজ করে যাবে। সে যেন তোমার মতলবঁটা বুঝতে না পারে। কাজ শেষ হওয়ার পরে সে যখন ঘুমিয়ে পড়বে তখন তুমি আমাকে ডেকে নিয়ে যেয়ো।

    এই বলে বুড়ি অন্ধকার বারান্দার একটি কোণে ঘাপটি মেরে বসে রইলো। ভাবলাম, আজ আমার জীবন-মরণ সমস্যা। সুতরাং, বুড়ির নির্দেশ মতই চলতে হবে আমাকে।

    গায়ে তখন আমার মত্ত হাতির বল। অন্য দিনের চেয়ে সেদিন মেয়েটিকে আমি অনেক বেশী আনন্দ দিলাম। দশবারের বার আনন্দের ধাক্কাটা সহ্য করতে না পেরে সে অজ্ঞান হয়ে গেলো। সেই সুযোগে লাফ দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে বুড়িকে ডেকে নিয়ে এলাম! বুড়িও তাড়াতাড়ি তার ওষুধ নিয়ে এলো। ওষুধটা প্রথমে সে গরম করলো। তারপরে মেয়েটার পা দুটো ফাঁক করে দুই উরুর মাঝখানে গরম গরম সেই ওষুধটা ঢেলে দিলো। একটা রঙিন ধোঁয়া মেয়েটার নিম্নাংগ ঢেকে ফেললো। বেশ বোঝা গেলো, ধোঁয়াটা ধীরে-ধীরে তার শরীরের ভেতরে ঢুকছে। ওষুধটা যথেষ্ট কড়াই বলতে হবে; কারণ, তার দুটি উরুর ফাঁকি থেকে হঠাৎ পোকার মত কী যেন দুটি জিনিস বেরিয়ে এলো। ভালো করে নজর দিয়ে দেখলাম-পোকা দুটো বেশ বড়-অনেকটা বান-মাছের মত! একটার রঙ কালো, আর একটার হলুদে।

    ভোর হয়ে আসছে দেখে চুপ করে গেলো শাহরাজাদ।

     

    তিনশো চুয়ান্নতম রজনী :

    পরের দিন রাত্ৰিতে শুরু হলো শাহরাজাদের গল্প :

    বান মাছের মত দুটো পোকা দেখে চেঁচিয়ে উঠলো বুড়ি—হয়েছে; ওষুধে কাজ হয়েছে। আল্লাকে ধন্যবাদ জানাও। মেয়েটার এই ভীষণ যৌনক্ষুধার কারণই ওই দুটো পোকা। তুমি বলছিলে না? এই দেখ। নিগ্রোটার সঙ্গে সহবাসের ফলে জন্মেছে এই কালো পোকাটা; আর বাঁদরের সঙ্গে সহবাসের ফলে জন্মেছে এই হলদেটা। ওই দুটো পোকার জন্যেই ওর এই অবস্থা। পোকা দুটো গেলো। এবার ও স্বাভাবিক হয়ে আসবে। আর পাঁচটা মেয়েদের মতই। অমন খাই খাই, গেলুম-গেলুম ভাবটা আর থাকবে না। ওর।

    বুড়ি ঠিকই বলেছিলো। পরের দিন যখন তার কাছে গেলাম তখন সে বেশ শাস্তভাবেই আমাকে গ্রহণ করলো। কামনার আর সেই উগ্রতা নেই। অনর্থক বিলম্ব না করে আমি তাকে শাদীর প্রস্তাব দিলাম, এতদিন আমার সঙ্গে শুয়েছে সেইজন্যে সে আর আপত্তি করলো না। আমাদের শাদীও হয়ে গেলো। আমাদের দুজনের জীবনে নেমে এলো বেহেস্ত। সুখের সাগরে ভেসে গেলাম আমরা। সেই বুড়িকে আমাদের বাড়িতে এনে আদর, যত্ন করে রাখলাম। আমাদেরই পরিবারের একজন হয়ে গেলো সে। বুড়ি আমাদের দুজনকেই বাঁচিয়েছে। স্বাভাবিক সুন্দরভাবে কেমন করে বাঁচা যায় সে ওষুধও সে আমাদের দিয়েছে। আল্লাহ ভালোই আছি আমরা।

    শাহরাজাদ বললো-যে সব মেয়েরা সব সময় খাই-খাই করে তাদের রোগ সারানোর গল্প আপনি শুনলেন জাঁহাপনা!

    শারিয়ার বললেন—এই ওষুধটার কথা আমি গতবছর জেনেছি। আর এই গল্পটাও গতবছরের। ওই বদমাস মেয়েটাকে ধোঁয়া দিয়ে সারানো হয়েছিলো তা-ও আমি শুনেছি। মানে, মেয়েটাকে আমি দেখেছি। শাহরাজাদ, ও সব শেকড়-বাকড়ের কথা আজ থোক। যা আগে শুনিনি এমন একটা দারুণ গল্প তুমি আমাকে বলো। আজ মনটা বিশেষ ভালো নেই আমার। মনে উত্তেজনা জাগে এই রকম একটা গল্প বলো।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86 87 88 89 90 91 92 93 94 95 96 97 98 99 100 101 102 103 104 105 106 107 108 109 110 111 112 113 114 115 116 117 118 119 120 121 122 123 124 125 126 127 128 129 130 131 132 133 134 135 136 137 138 139 140 141 142 143 144 145 146 147 148 149 150 151 152 153 154 155 156 157 158 159 160
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleকবীর – ১ – ক্ষিতিমোহন সেন
    Next Article প্রাচীন পূর্ববঙ্গ গীতিকা – ক্ষিতীশচন্দ্র মৌলিক
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.