সুইসাইড না মার্ডার?
লাঞ্চ শেষ হতেই পারিজাতের ফোন৷ ম্যাডাম সুমনের বউ আর তার বোন এসেছিল উকিল নিয়ে৷ সুমনকে আর ওর ছেলেকে বেল করিয়ে নিয়ে গেল৷ আমাদের সান্যালস্যারও বললেন, এরা চুনোপুঁটি, এদের ধরে রেখে লাভ নেই৷ লগ্নজিতা বলল, ‘পারিজাত, আমায় একটা খবর দাও তো, সুমনের স্ত্রী-র ওই বোনটা কেমন দেখতে?’
পারিজাত একটু থমকে বলল, ‘ম্যাডাম, খুব সুন্দর৷ মডেলের মতো৷ কোনো অ্যাঙ্গল থেকে একে রিম্পার বোন মনে হয় না৷’
কৌশিকের বলা কথার সঙ্গে পারিজাতের কথার বড্ড মিল পাওয়া যাচ্ছে৷ তবে কি হসপিটালের সৃজিতের মাসি আর পিনাকের মাসি একই ব্যক্তি? পারিজাত, ওই পিনাকের মাসির সাইনটা আমার দরকার৷ নাম কি বলেছে মহিলা?
পারিজাত একটু মনে করে বলল, ‘মল্লিকা৷ কেন ম্যাডাম, কী হয়েছে? এ সুমনের শালি নয়? আমারও সেটাই মনে হল সুমনের মুখের এক্সপ্রেশন দেখে৷ একমাত্র রিম্পাই খুব বোন বোন করে ফাটাচ্ছিল৷ ওই বোনই সঙ্গে করে উকিল এনেছিল৷ উকিলের সঙ্গে কথা ওই মল্লিকাই বলছিল, ম্যাডাম৷’ লগ্নজিতা আর কিছু বলার আগেই সুশোভন প্রায় ছুটে এসে ঢুকল লগ্নজিতার রুমে৷
উত্তেজিত গলায় বলল, ‘ম্যাডাম, ওই স্কুলের সিকিউরিটি তপন মহান্তি সুইসাইড করেছে ওর নিজের ঘরে৷ জানালাটা খোলা ছিল, ম্যাডাম তাই পাশের বাড়ির লোকটা দেখতে পেয়েছে সিলিং থেকে বডি ঝুলছে৷ থানায় খবর দিয়েছে এলাকার লোক৷ অদ্ভুত ব্যাপার ম্যাডাম, আমরা যেদিন দেখলাম ওকে, সেদিন তো এত ডিপ্রেসড মনে হয়নি৷ মিডিয়া থানার বাইরে ওয়েট করছে, ম্যাডাম৷ আপনি কি কথা বলবেন? মেজোবাবু বললেন, মিডিয়া চেঁচাচ্ছে চেঁচাক, ওদের এন্টারটেইন না করতে৷ কী করব ম্যাডাম?’
লগ্নজিতা বলল, ‘ওয়েট, আমি আসছি৷ মেজবাবুকে পাঠিয়ে দাও তপন মহান্তির ওখানে৷ বডি নামিয়ে রুম সিল করতে বলে দাও৷ মিডিয়া সামলে আমরা আসছি, ঘণ্টাখানেকের মধ্যে৷’
আত্মহত্যা করার কোনো কারণ নেই৷ এটাও খুন৷ ওই চত্বরে চার দিনের ব্যবধানে দুটো খুন হয়ে গেল অথচ লগ্নজিতা কিছুই করতে পারল না? এবারে মন্ত্রীমহল থেকে চাপ আসবেই৷ তা ছাড়া এখানের এম. এল. এ.-এর সঙ্গে লগ্নজিতার সম্পর্ক মোটেই ভালো নয়৷ সরকারি স্কুলকে কেন্দ্র করে ব্যাপার৷ রাজনৈতিক মহল চাইবেই বিষয়টা নিয়ে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি না হোক৷ তাই কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে বের হোক কেউ চাইবে না৷
লগ্নজিতা বাইরে বেরিয়েই দেখল, গোটা তিনেক মিডিয়ার গাড়ি দাঁড়িয়েই আছে৷ থানা ঘেরাও করেছে সাধারণ মানুষজন৷ চোখ বুলিয়েই বুঝল বিষয়টা প্রিপ্ল্যানড৷ এলাকার মানুষজন বেশ বিক্ষুব্ধ৷ মিডিয়ার লোক এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করল, ‘ম্যাডাম, আপনার এলাকায় সন্ধেবেলা এভাবে খুন হয়ে গেল, আপনারা কিছুই করতে পারলেন না৷ আপনার এলাকায় বাচ্চাদের স্কুল রমরমিয়ে ড্রাগসের বিজনেস চালানো হত সেটাও জানতে পারলেন না আগে৷ এখন ওই স্কুলের সিকিউরিটি আত্মহত্যা করল, কারণ আপনারা তাকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের নাম করে জয়ন্ত প্রামাণিক খুনের দায় তার ঘাড়ে চাপিয়ে দায় এড়াতে চেয়েছিলেন বলেই সে আজ নিরুপায় হয়ে আত্মহত্যা করল৷
লগ্নজিতা শান্ত গলায় বলল, ‘আত্মহত্যা না মার্ডার, সেটা তো আগে দেখি৷ তারপর তো সময় রইল আপনাদের জন্য৷ টি.আর.পি. বাড়ানোর জন্য প্রচুর খবর পাবেন৷ আপাতত আমায় যেতে হবে৷
মিডিয়াদের চেঁচামেচিকে উপেক্ষা করেই লগ্নজিতা গাড়িতে গিয়ে উঠল৷ সুশোভন, ইন্দ্রনীল আর রীতেশ সঙ্গেই ছিল৷
লগ্নজিতার কপালে দুশ্চিন্তার ছাপ স্পষ্ট৷ তপন মহান্তি যে এভাবে খুন হবে ধারণাই করতে পারেনি ও৷ লোকটা নাকি থানা থেকে গিয়ে পরের দিন মিডিয়া ডেকে বলেছিল, থানায় ওকে হ্যারাস করা হয়েছে৷ কথাটা শুনেও সেভাবে গুরুত্ব দেয়নি লগ্নজিতা৷ ভেবেছিল, মিডিয়াকে জলধরবাবু খুঁচিয়ে দিয়েছে৷ জলধর লোকটা বেশ ঘোরালো লোক৷ ভাইপোকে লুকিয়ে রেখে এসব করছে৷ আজ স্কুল ছুটি, তপনের ডিউটি নেই৷ তাই কারো নজরে পড়বে না তপন নেই, সেই কারণেই গতকাল রাতটা চুজ করা হয়েছে সম্ভবত৷ লগ্নজিতা শিয়োর তপন সুইসাইড করেনি, তাকে মেরে দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু কেন? ঠিক কী জানত তপন মহান্তি? যেটা লগ্নজিতাকে জেরার মুখেও বলল না লোকটা৷ নাকি কিছু বলে ফেলেছে সন্দেহ থেকেই এটা করল৷ থানা থেকে বেরোনোর পরেই তপনকে ফোন করেছিল জলধর৷ ওর পরামর্শেই তপন মিডিয়াকে বলেছিল, থানায় ওকে হ্যারাস করা হয়েছে৷ এসব খবর সবই আছে ওর কাছে৷ আজকের সুইসাইডটা জাস্টিফায়েড করা হয়ে গেল৷ লগ্নজিতারা যখন বসু ইনস্টিটিউশনে ঢুকল তখনই খেয়াল করল, সামনেই মিস্টার সান্যাল আর রুদ্রজ্যোতি দাঁড়িয়ে আছেন৷ লগ্নজিতা রুদ্রজ্যোতিকে বিলক্ষণ চেনে৷ কলকাতাতে সেভাবে দেখা না গেলেও জানে ভদ্রলোক প্রাইভেট ডিটেকটিভ৷ দিল্লিতে পর্ন ভিডিয়ো কেসটা সলভ করেছেন দক্ষতার সঙ্গে৷ এ ছাড়াও কলকাতায় অষ্টধাতুর মূর্তি চুরির কেসটা ওঁর আন্ডারেই রয়েছে৷ ওকে দেখেই মিস্টার সান্যাল এগিয়ে এসে বললেন, ‘এই যে সুশোভন, বাংলা সিনেমার মতো দেরি করে এন্ট্রি নিলে হবে? ওদিকে তো আপনাদের এম. এল. এ. থেকে মন্ত্রীমশাই নিজের এলাকায় এমন সব অঘটনের তদন্তের জন্য রুদ্রজ্যোতিকে ইনভাইট করেছেন৷ উনি এখন কলকাতায় আছেন৷ তাই চলে আসতে পারলেন৷
লগ্নজিতা নমস্কারের ভঙ্গিমা করলেও বেশ বুঝতে পারছিল, এ কেস থেকে ওকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে লোকাল এম. এল. এ. মিস্টার অভিষেক পান্ডে৷ লোকটা এমনিতেও সুবিধার নয়৷ রুদ্রজ্যোতি হেসে বললেন, আমি আপনার নাম শুনেছি, ম্যাডাম৷ আপনি অফিসিয়ালি যদি আমাকে হেল্প করেন তাহলে দুজনে মিলে কাজটা করতে সুবিধা হবে৷ আপনার হাতে পাওয়ার আছে, আমি নেহাতই প্রাইভেট ডিটেকটিভ৷
লগ্নজিতা আগ্রহের সঙ্গে বলল, ‘আপনার সঙ্গে কাজ করাটা সৌভাগ্য৷ আপনি বয়সেও বড়ো, অভিজ্ঞতাতেও৷ আমি আপনার গোটা চারেক কেস হিস্ট্রি পড়েছি৷ খুব ইন্টারেস্টিং৷’
রুদ্রজ্যোতি হেসে বলল, ‘আমি ওই ক’টাই সলভ করেছি৷ হ্যাঁ, কেসগুলো অবশ্যই ইন্টারেস্টিং৷’
লগ্নজিতা বলল, ‘বডি নামানো হয়েছে নাকি সান্যালবাবু?’ মিস্টার সান্যাল বললেন, ‘হ্যাঁ হয়েছে ম্যাডাম৷ ওই আপনাদের মেজবাবুই নামানো করালেন৷ এমএলএ সাহেবের বাড়িও তো কাছেই, উনিও ছিলেন তখন৷ আপনি ফরেনসিককে খবর দিয়েছেন তো?’
সুশোভন বলল, আমার টিম এসেছে, স্যার৷
রুদ্রজ্যোতি তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তপন মহান্তির বডির দিকে৷ লগ্নজিতা বলল, গলার দাগ দেখে তো মনে হচ্ছে সুইসাইড৷ আর তো কোনো ক্ষতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না শরীরে৷ কিন্তু আমি জানি এটা মার্ডার৷
রুদ্রজ্যোতি বলল, ‘আমি শিয়োর এটা মার্ডার৷ কিন্তু আপনি প্রমাণ করতে পারবেন না৷ দেখুন, হাতে ছুঁচের দাগটা বেশ কালো হয়ে আছে৷’
লগ্নজিতা লক্ষ করে বলল, ‘ড্রাগসের ওভারডোজ৷’
রুদ্রজ্যোতি নর্ম্যাল গলায় বলল, ‘হয় উনি ড্রাগ নিতেন, নিতে নিতে ওভারডোজ করে ফেলে সুইসাইড করেছেন৷ আদারওয়াইজ কেউ ওভারডোজ করিয়ে টাঙিয়ে দিয়েছে৷ ফরেনসিক রিপোর্টে আলাদা আর কী আসবে? ঘরটা একবার দেখতে হবে৷ কোনো ছুঁচ পাওয়া যায় কি না?’
রুদ্রজ্যোতির তীক্ষ্ণদৃষ্টির কাছে মাথা নোয়াল লগ্নজিতা৷ সত্যিই লোকটা মারাত্মক ক্ষুরধার৷ পান্ডের ওপরে হওয়া আচমকা রাগটা কমে গেল ওর৷ রুদ্রজ্যোতির বয়েস পঁয়তাল্লিশ মতো৷ কিন্তু ভদ্রলোকের সাজপোশাকটা এতটা ব্যাকডেটেড বলেই বেশি বয়স্ক মনে হয়৷ ভদ্রলোক একটু যেন এলোমেলো প্রকৃতির৷ মিস্টার সান্যাল বললেন, ‘মিস ভট্টাচার্য, রুদ্রজ্যোতি বছর চারেক আগে কলকাতার এক মাদক পাচারকারীকে ধরিয়ে দিয়েছিল৷ গাড়ি ভরতি মাদক যেত আফগানিস্তানে৷’
লগ্নজিতা বলল, ‘কিন্তু মিস্টার সান্যাল, আমার যতদূর মনে পড়ছে, ওটা তো আপনার ক্রেডিট ছিল আর নারকোটিক ডিপার্টমেন্টের মিস্টার গুপ্তর নাম বেরিয়েছিল কাগজে৷’
মিস্টার সান্যাল গোঁফের ভিতর দিয়ে নরম হেসে বললেন, ‘সে তো রুদ্রজ্যোতি নিজের নাম গোপন রাখতে বলেছিল তাই৷ আরে ম্যাডাম, পান্ডে মশাই দেখলাম আপনার ওপরে হেভি চটা৷ আপনি বোধহয় ওর দলের ছেলেদের অ্যারেস্ট করেছিলেন ইভটিজিংয়ের জন্য৷ সেই থেকেই ভদ্রলোক চটে আছেন৷ আজকের ঘটনার পরেই আমায় কল করে বললেন, এ কেস আপনাকে দেখতে হবে৷ এটা আমার এরিয়া, আমি একজন প্রাইভেট ডিটেকটিভ ডেকেছি, বলে ফোন রেখে দিলেন৷ তারপরে এখানে এসেই দেখলাম, অভিষেক পান্ডে আর রুদ্রজ্যোতি দাঁড়িয়ে আছে৷ আমি ভাবলাম, মাদক সংক্রান্ত ব্যাপার যখন, তখন রুদ্রজ্যোতিকে ডেকে মন্দ করেননি৷ রুদ্রজ্যোতি এখন ওই আগরওয়ালের ব্যাঙ্কের ভল্ট থেকে চুরি-যাওয়া অষ্টধাতুর মূর্তির কেসটা দেখছিল৷ কলকাতাতেই ছিল বলে সুবিধাই হয়েছে৷ এতে আমার কোনো হাত নেই, ম্যাডাম৷ এনিওয়ে ম্যাডাম, আপনার আশা করি, কোনো সমস্যা হবে না রুদ্রজ্যোতির সঙ্গে কাজ করতে৷
লগ্নজিতা হেসে বলল, ‘একেবারেই নয়৷ উনি কাজ করেন প্যাশানে, নাম বা টাকার জন্য নয়৷ আমিও কাজ করি প্যাশনে৷ তাই আমাদের প্রবলেম হওয়ার কথাই নয়৷’
রুদ্রজ্যোতি বলল, তাহলে ম্যাডাম বডি পোস্টমর্টেম হওয়ার পরে আমায় রিপোর্টটা পাঠাবেন প্লিজ৷
লগ্নজিতা বলল, ‘আসুন, একটু কফি খাওয়া যাক৷’
রুদ্রজ্যোতি বলল, ‘দেখুন মশাই আপনি যদি কফি খাওয়ার জন্য আমায় চার্জ দেন তবেই খাব৷’
লগ্নজিতা বিস্মিত হয়ে বলল, ‘বুঝলাম না৷’
রুদ্রজ্যোতি তার খদ্দরের পাঞ্জাবির কোনা তুলে নিজের চশমাটা মুছে নিয়ে বলল, আমার একটু হেল্প লাগবে ম্যাডাম৷ আসলে কলকাতায় আমার সোর্স একটু কম৷ দিল্লিতে যেমন আমার কাজ করা খুব সহজ হয়৷ কারণ আমার বেশ কয়েকজন বিশ্বস্ত লোক আছে৷ তারাই নিঃশব্দে আমায় খবর সাপ্লাই করে৷ কলকাতায় আমার কাজ খুব কম বলে এখানে সেভাবে টিম বানাইনি৷ আপনার নাম আমিও শুনেছি৷ আপনাকে লোকে আড়ালে পুলিশ গোয়েন্দা বলে৷ কেউ বলে লেডি ডিটেকটিভ৷ দেখুন, আমি প্র্যাইভেট প্রাকটিস করি তাই সর্বত্র চলে যেতে পারি না৷ সবাই অ্যালাও না-ও করতে পারে৷ তাই হুটহাট যার তার অফিসে তো আপনাদের মতো পোস্ট আর পোশাকের জোরে ঢুকে যেতে পারি না ম্যাডাম, তাই আমার কয়েকটা তথ্য লাগবে৷ যদি আমার মূর্তি চুরির কেসটার কিছু তথ্য আপনার সোর্স খাটিয়ে জোগাড় করে দেন তবেই কফি খাব৷
লগ্নজিতা হেসে বলল, নিশ্চয়ই৷ আপনি আমায় একটু মূর্তি চুরির কেসটার কেস ডিটেলসটা বলবেন, আমি আপনাকে সবরকম সাহায্য করব৷
রুদ্রজ্যোতি বলল, ‘আরেকটা শর্ত আছে৷ আপনার এই মাদকচক্রকে ধরতে আমি হেল্প করব, কিন্তু আমার নামটা প্রকাশ্যে আনা যাবে না৷’
লগ্নজিতা বলল, ক্রেডিট নিতে না চাওয়ার রহস্যটা যদি বলেন কফি খেতে খেতে তাহলে ভেবে দেখতে পারি৷’
মিস্টার সান্যাল বললেন, ‘আমি তাহলে থানায় যাচ্ছি, রুদ্রজ্যোতি৷ আপনারা কেসটা মুভ করুন৷ কোনো হেল্প লাগলে জানাবেন৷ আমি আছি৷’
রুদ্রজ্যোতি হেসে বলল, ‘আপনি এবারে একটা গল্প লিখুন, যত গণ্ডগোল নেশাতে৷’
মিস্টার সান্যাল রুদ্রজ্যোতির মুখের দিকে তাকিয়ে মাপার চেষ্টা করছিলেন, কথাটা ওঁর সাহিত্য সৃষ্টি নিয়ে ব্যঙ্গ করা বলা হল নাকি উৎসাহ দেওয়া হল? রুদ্রজ্যোতির ভাবলেশহীন মুখ দেখে কিছুই বুঝতে পারল না সান্যাল৷ এই লোকটা ডিটেকটিভ, না গ্রামের চাষা, না সরকারি কেরানি— কিছু বোঝা যায় না হাবভাব দেখে৷ রুদ্রজ্যোতি আর লগ্নজিতা একটা ক্যাফের উদ্দেশে এগোল৷ সুশোভনকে বলে এল, ‘সুমনের বাড়িতে ভিজিট করে এস৷ আর অনীতাকে এখুনি ছাড়ার দরকার নেই৷ উৎপলকে জেরা আমি গিয়ে করব৷