আবার খুন
লগ্নজিতা চারটে ফোন নম্বর সুশোভনকে পাঠিয়ে বলল, ‘ট্র্যাক করো৷ আমি আজকে জলধরবাবু, উৎপল, রাঘব, রিম্পা আর অনীতা সকলকে একসঙ্গে বসিয়ে জেরা করব৷ আমরা অপরাধীকে চিনি না ঠিকই কিন্তু অপরাধী আমাদের সকলের ওপরে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে, বুঝলে? সন্ধেতে বসি এদের নিয়ে৷ সব ক-টা জটিল জিনিস, বুঝলে?’
সুশোভন বলল, ‘ম্যাডাম, এদিকে আবার একটা ঘটনা ঘটেছে, এইমাত্র ফোন করে পারিজাতস্যার জানালেন৷ রুদ্রজ্যোতিস্যারের ওপরে ছোট্ট করে একটা হামলা হয়েছে৷ উনি তপন মহান্তির ঘরের দিকে যাচ্ছিলেন তখন৷ কারা যেন বাইক থেকে লাঠি দিয়ে ওঁকে মারার চেষ্টা করেছিল৷ উনি সরে যাওয়ায় হাতের কনুইয়ে বোধহয় লেগেছে৷’
লগ্নজিতা বলল, ‘রুদ্রস্যার এখন কোথায়?’
সুশোভন বলল, ‘ওই তো একটা ফ্ল্যাট রেন্ট নিয়ে আছেন৷’
লগ্নজিতা বলল, ‘অ্যাড্রেসটা আমায় সেন্ড করো৷’ লগ্নজিতা যখন রুদ্রজ্যোতির ফ্ল্যাটে পৌঁছাল তখন সন্ধে নামছে তিলোত্তমার আকাশে৷ আলো-ঝলমলে তিলোত্তমা আলোর মালায় নিজের রূপচর্চা করতে ব্যস্ত৷ ফ্ল্যাটের দরজা হাট করে খোলা৷ ড্রয়িংরুমে কাউকে না দেখে লগ্নজিতা ভাবছিল, সুশোভন ঠিক অ্যাড্রেস পাঠিয়েছে তো? নাকি ওই ভুল ঠিকানায় ঢুকে পড়েছে৷
রুদ্রস্যার ওকে এখন তুমি করেই ডাকেন৷ বললেন, ‘লগ্নজিতা, তুমি আমার থেকে অনেকটা ছোটো৷ তোমায় ম্যাডাম ম্যাডাম ডাকতে বড়ো অস্বস্তি হচ্ছে৷ যদিও এত অল্প বয়েসে তুমি যে পজিশনে উঠেছ তাতে ম্যাডাম বলাই উচিত৷’
লগ্নজিতা রুদ্রস্যারের কথা শেষ করতে না দিয়েই বলেছিল, ‘প্লিজ আপনি আমায় তুমি করেই বলুন৷ আমার নিজেরও অস্বস্তি কমবে৷ ‘সেই সৌজন্যেই দেখা করতে আসাটা উচিত বিবেচনা করল লগ্নজিতা৷ খোলা দরজার সামনেই বারকয়েক বেল বাজাল লগ্নজিতা৷ কেউ বেরোল না দেখেই ফোন করল রুদ্রজ্যোতিকে৷ ফোনটা ঘরের ভিতরেই বাজছে৷ কিন্তু কেউ রিসিভ করছে না৷ এবারে রীতিমতো ভয় করছে ওর৷ আজ সকালে যারা অ্যাটাক করে ব্যর্থ হয়েছিল, তারাই আবার ফাঁকা ফ্ল্যাটে কিছু করে দিয়ে গেল না তো? ভয়ে ভয়েই ফ্ল্যাটের ভিতরে ঢুকে পড়ল লগ্নজিতা৷ সার্ভিস পিস্তলটা হাতে নিয়ে অত্যন্ত সচেতনভাবে ঢুকল ফ্ল্যাটে৷ টু বেডরুমের ফ্ল্যাট৷ বেডরুমেও কেউ নেই৷ খুব ভালো করে এদিক-ওদিক তাকিয়ে দেখল লগ্নজিতা৷ কাউকে জোর করে কিডন্যাপ করে নিয়ে যাওয়ার কোনো চিহ্নই নেই ফ্ল্যাটে৷ বাথরুমে ঢুকেই একটা বডি অয়েলের বা বডি লোশনের গন্ধ পেল লগ্নজিতা৷ কোন ব্র্যান্ডের লোশন মনে করতে পারল না ও কিন্তু গন্ধটা চেনা লাগল৷ রান্নাঘর চেক করে, আরেকটা বেডরুমে বিছানার ওপরে প্রচুর বই ছড়ানো৷ সেখানেও মিনিট পাঁচেক কাটিয়ে ড্রয়িং রুমে একটা ফোটোফ্রেমের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ হল ওর৷ ঠিক তখনই একটা ফ্লাস্ক হাতে ঢুকলেন রুদ্রজ্যোতি৷ ওকে দেখে খুব ক্যাজুয়ালি বললেন, ‘এই তোমাদের পুলিশদের কাজ নেই? পারিজাতকে এতবার বারণ করলাম কাউকে কিছু না বলতে, তারপরেও এই সামান্য চোটের কথা রাষ্ট্র করার কী ছিল? আর তোমাকেও বলিহারি কাজকর্ম ফেলে আমায় দেখতে চলে এসেছ? যা-ই হোক এসেছ যখন বোসো৷ আরে দেখো-না আচমকা গ্যাস শেষ৷ এদিকে আমার চা-তেষ্টা পেয়েছে৷ তাই বাধ্য হয়েই এই ওপরের ফ্লোরে মিস্টার ত্রিবেদীর বাড়িতে গিয়ে এক ফ্লাস্ক চা করিয়ে আনলাম৷ তুমি এক কাপ খাবে নাকি?’
লগ্নজিতা ঘাড় নেড়ে বলল, ‘না স্যার, আমি খাব না৷ আপনার হাতটা তো বাঁধা আছে দেখছি৷ চোটটা কি খুব বেশি নাকি?’
রুদ্রজ্যোতি বললেন, ‘আরে না, ক্রেপ ব্যান্ডেজ করে দিল এক ডক্টর৷ তেমন বেশি কিছু নয়৷ বুঝলে লগ্নজিতা, এতদিনে বুঝলাম, আমরা ঠিক পথেই যাচ্ছি৷ ওদের লক্ষ্য আমাদের আহত করে কাজটাকে বন্ধ করে দেওয়া৷ শোনো লগ্নজিতা, আমি যেটুকু এগিয়েছি, সেটা হল, তোমাদের ওই ড্রাইভার আর তার স্ত্রী এতে ইনভলভ৷ সুমন রেগুলার রাতে জয়ন্তর দোকানে যেত৷ আর সকালের দিকে যেত রিম্পা৷ ওদের ছেলেই স্কুলের অনেক স্টুডেন্টকে ওই চকোলেট বিক্রিও করেছে৷ এই ফ্যামিলিটার সঙ্গে জয়ন্তদের বেশ ভালো বন্ধুত্ব ছিল৷ জয়ন্তর কাজের মেয়েটা বলল, রিম্পা নাকি মাঝে মাঝেই রান্না করে জয়ন্তর জন্য পাঠাত৷ সুমনের ব্যাগে জয়ন্তকে ওই বিশেষ সিগারেট ঢুকিয়ে দিতেও দেখেছে অনীতা৷’
লগ্নজিতা বলল, ‘স্যার, অনীতা আপনাকে জয়ন্তর স্ত্রী-র অ্যাড্রেস দিলো?’
রুদ্রজ্যোতি চায়ের কাপটা নামিয়ে বললেন, ‘দিল তো মিস ভট্টাচার্য৷ কিন্তু ওই ফ্ল্যাটে চার প্যাকেট ডিটারজেন্ট নিয়ে সেলস বয় সেজে ঘুরেও এলাম৷ পাখি সেখানে নেই৷ জয়ন্তর স্ত্রী অমন সুন্দরী মহিলা হয়ে জয়ন্তর মতো একটা ছাপোষা দোকানদারকে বিয়ে কেন করেছিল, ওটাই তো রহস্য৷ আবার অনেকে বলল, মাতৃসদন নামের এক নার্সিং হোমে নাকি ভরতি আছে৷ সেখানেও ফল নিয়ে গিয়েছিলাম রোগী দেখতে৷ তো রিসেপশন থেকে জানাল আবিরা নামের কোনো পেশেন্ট ভরতি হয়নি কখনো৷ তাহলেই বোঝো কাণ্ড৷ দেখো লগ্নজিতা, ওই সুমন আর সুমনের বউকে নিয়ে এসে থানায়, চাবকালে অনেক কিছুই বেরোবে৷ এই তুমি রাগ করছ না তো? আফটার অল, সুমন ছেলেটা তোমার ড্রাইভার৷ তোমার সঙ্গে এতদিন থেকেছে, তোমার নাকের ডগায় বসে ড্রাগ বিক্রি করে গেছে, তুমি জাস্ট বুঝতেই পারোনি, এটা ভেবে আপসেট হবার কিন্তু কিছু নেই৷ এরা তুখোড় হয়৷’
লগ্নজিতা বলল, ‘স্যার, এদিকে মূর্তি চুরির কেসটা তো…৷’
কথার মাঝেই রুদ্রস্যারের একটা ফোন এল৷ রুদ্রজ্যোতি উত্তেজিত হয়ে বললেন, ‘আমি আসছি৷ মিস ভট্টাচার্য, আমি এখন একটু বেরোব৷ এক কাজ করো, সুমন আর ওর ওয়াইফকে অ্যারেস্ট করো৷ প্রমাণ আমি জোগাড় করে দিচ্ছি৷ লগ্নজিতা বলল, স্যার কোনো প্রবলেম? আমায় বলতে পারেন৷’
রুদ্রজ্যোতি বলল, প্রয়োজনে নিশ্চয়ই বলব৷ আগে আমি গিয়ে দেখি, আদৌ ওরা ঠিক খবর দিল কি না৷ তারপর জানাচ্ছি৷’
লগ্নজিতা বেরিয়ে এল৷ সুমনের বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই বেশ কিছু প্রমাণ জোগাড় করেছেন রুদ্রজ্যোতি, না হলে এতটা বিশ্বাসের সঙ্গে কী করে বলতে পারলেন সুমন দোষী৷ ছেলেটাকে অনেকদিন ধরেই চেনে লগ্নজিতা৷ প্রায় বছরখানেক ওর গাড়ি চালাচ্ছে৷ তার আগেও দমদম থানায় গাড়ি চালাত৷ তাই বিশ্বাস করতে একটু কষ্ট হচ্ছিল৷ আনমনেই থানায় ঢুকল লগ্নজিতা৷ নিজের অফিসেও বেশ কিছু কাজ জমেছে৷ কিন্তু যতক্ষণ না এই কেসটার নিষ্পত্তি ঘটাতে পারছে, ততক্ষণ অন্য কাজে মনোনিবেশ করতেও পারছে না ও৷ নিজের রুমে বসে সবে একটু চায়ের অর্ডার করেছে তখনই ইন্দ্রনীল হন্তদন্ত হয়ে এসে বলল, ‘ম্যাডাম, একটা লোক এসে বলল, ওই জয়ন্তর বাড়ির মেইড নাকি আত্মহত্যা করেছে৷’
লগ্নজিতা যখন সুশোভনকে নিয়ে অনীতার বাড়িতে পৌঁছাল তখনও অনীতার শরীর ঠান্ডা হয়নি৷ বমি করেছে ঘরের মেঝেতেই৷ লগ্নজিতা দেখল রুদ্রজ্যোতিস্যার অলরেডি ঘরের কোণে দাঁড়িয়ে নোটপ্যাডে কিছু লিখছেন৷ লগ্নজিতা বলল, ‘স্যার, কখন হল?’
রুদ্রজ্যোতি বললেন, ‘প্রমাণ লোপাটের খেলায় মেতেছে অপরাধীরা৷ আমি যখন এলাম তখন দেখলাম, বমি করছে শুয়ে শুয়ে৷ অ্যাম্বুলেন্সে ফোন করতে করতেই শেষ৷’
লগ্নজিতা বলল, ‘খবরটা আপনাকে কে দিল, স্যার?’
রুদ্রজ্যোতি ফিসফিস করে বলল, আমার সোর্স৷ অনীতা নাকি সকালেই বাড়ির সবাইকে অন্য কোনো আত্মীয়ের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল৷ তখন থেকেই নজর রাখতে বলেছিলাম৷ ভেবেছিলাম, কোনো অপরাধ করবে, হাতেনাতে ধরব৷ কিন্তু এ যে আত্মহত্যা করবে— এটা বুঝিনি৷’
‘স্যার, কী মনে হয়? কী খেয়েছে?’
রুদ্রজ্যোতি বলল, ‘যেটার টেস্ট ওর ভালো লেগেছে৷ হয় এল.এস.ডি, নয় কোকেন নয় হেরোইন৷ সেটা তো টেস্ট না করলে বোঝা যাবে না, লগ্নজিতা৷ এনিওয়ে, বডি পোস্টমর্টেমে পাঠানোর ব্যবস্থা করো তোমরা৷ আমি একটা কাজে যাচ্ছি৷
রুদ্রজ্যোতি বেরিয়ে যাবার পরে লগ্নজিতা অনীতার বডির পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দুজনকে একটু জিজ্ঞাসাবাদ করল৷ ঘরটা সার্চ করতে বলল, লগ্নজিতা যে ভীষণ চিন্তিত, সেটা ওর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে৷ পর পর তিন তিনটে খুন হয়ে গেল ওরই এলাকায়, অথচ ও কিছুই করতে পারল না৷ এবারে মন্ত্রীমহলের কাছে জবাবদিহি করতে হবে৷ নেহাত খুব হাই প্রোফাইল কেউ নয় তাই এখনও শোকজ হয়নি৷ কিন্তু নিজেরই কেমন অপদার্থ লাগছে৷ এখন অবধি না ড্রাগ পাচারকারীকে ধরতে পেরেছে লগ্নজিতা, না খুনিকে৷ খুব ফ্রাস্ট্রেডেড লাগছে৷ আজকে এদের নিয়ে একবার বসবে ঠিক করেছিল, তার মধ্যে থেকে একজন সুইসাইড করেই ফেলল৷ এরপর কার পালা? অনীতার বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়েই দেখল, ওর হাজবেন্ড বাচ্চা মেয়েটাকে সঙ্গে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ঢুকছে৷ ওদের বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়েই দেখল, একটা ছোটো ম্যাটাডোর গাড়ির ওপরে বাসনপত্র তোলা হচ্ছে৷ সামনে দাঁড়িয়ে আছে রাঘব৷ লগ্নজিতা বলল, ‘কী ব্যাপার মিস্টার রাঘব, আপনাকে ফোন করলাম, রিসিভ করলেন না৷ এদিকে উৎপলের গার্লফ্রেন্ডের ফোন তো দুবার রিং হলেই রিসিভ করেন৷ ওদিকে ভাইপোর অভাব বোধ করতে দিচ্ছেন না জলধরবাবুকে৷ শুনলাম, নাকি ঘন ঘন যাচ্ছেন ওই বাড়িতে৷ তা ভালো, শত্রুতা সব মিটে গেছে তো? উৎপলের গার্লফ্রেন্ড নাকি ওকে ফোনে না পেলেই আপনাকে কল করে? ওদিকে উৎপল বলল, জয়ন্ত প্রামাণিকের সঙ্গে নাকি আপনারই হৃদ্যতা বেশি ছিল৷ দেখুন রাঘব, আপনি দিন পাঁচেক শহরের বাইরে গিয়ে ক্যাটারিংয়ের কাজ করতেই পারেন, কিন্তু আজীবন তো পারবেন না৷ আর পারবেন না যখন, নিজেই থানায় যাবেন নাকি আমি আদর করে নিয়ে যাব, সেটা জানাবেন৷’ রাঘবের মুখে সেই স্মার্টনেস আর নেই৷ লগ্নজিতা বলল, ‘সুশোভন, দত্ত বাড়ির মেয়েটাকে বুঝিয়ো রাঘব ভালো ছেলে, উৎপল ভালো নয়৷ ওর জন্য বন্ধুত্বের ফাটল ধরে গেছে— এটাও জানিয়ো৷
‘রাঘব বলল, ‘আমি আসছি, ম্যাডাম৷ কদিন একটু বাইরে ছিলাম৷ কাজের চাপ ছিল৷’
লগ্নজিতা বলল, ‘আপনার বাড়ির পিছনেই একজন খুন হয়েছে, জানেন?’
রাঘব একটু চমকে বলল, খুন নয় ম্যাডাম, ও বিষ খেয়েছে শুনলাম৷’
লগ্নজিতা বলল, ‘সে দেখা যাবে৷ আপনি আসুন, থানায় চা দেয় নিতাইদা৷ ওর চা খাওয়াব৷’ লগ্নজিতা ইশারায় বলল, রাঘবকে তুলে নিয়ে এসো৷
থানায় ঢোকার পরেই কৌশিক ফোন করে জানাল, সোনাঝুরির ব্লাড টেস্ট রিপোর্ট এসেছে৷ মাদক পাওয়া গেছে৷ আপাতত একটু স্টেবল আছে সোনাই৷ তবে কথাবার্তা একটু অসংলগ্ন৷ যেমন আমায় দেখেই বলল, দাদাভাই, তুই আজ কলেজে যাস না৷ আমরা অন্ত্যাক্ষরি খেলব৷ এসব ভুলভাল একটু বকছে৷ বেসিক্যালি ডোপ টেস্ট করা হয়েছিল৷ ব্লাড আর ইউরিন দুটোতেই পাওয়া গেছে মাদক৷’
লগ্নজিতা বলল, ‘প্রতিটা শিক্ষানিকেতনে এই ডোপ টেস্ট মাস্ট করা উচিত, কৌশিক৷ শুধু খেলোয়াড় বা গাড়িচালক নয়, শিক্ষার্থীদেরও করা উচিত৷ এনিওয়ে, তোমায় বলা হয়নি, পিনাকের মাসি মল্লিকা আর সৃজিতের মাসি রক্তিমা একই ব্যক্তি৷ হ্যান্ডরাইটিং এক্সপার্ট বলেছে এরা একই ব্যক্তি৷ ইনি ইউনিভার্সাল মাসিমণি৷ আচ্ছা কৌশিক, তোমায় সেদিন দুটো ওষুধের নাম দিয়েছিলাম, জানালে না তো ওগুলো কীসের ওষুধ?’
কৌশিক বলল, ‘দেখো, মেসেজ করছি তোমায়৷ কার গো?’
লগ্নজিতা বলল, সে বলব পরে৷ আপাতত রাখলাম৷’
লগ্নজিতা কৌশিকের মেসেজগুলোই পড়ছিল৷ চমকে উঠল দেখে৷ এটা ওর ধারণার বাইরে ছিল অবশ্য৷ ইউসুফ ফোন করে বলল, ‘ম্যাডাম, পার্লার অ্যান্ড স্পা-এর অ্যাড্রেস পাঠালাম আপনাকে৷ এদের মালকিনের ছবিও সেন্ড করেছি৷ এখন আপনার সন্দেহ যদি সত্যি হয় তাহলে এটাই জয়ন্ত প্রামাণিকের স্ত্রী৷ এটাই পিকুর মাসি, সৃজিতের মাসি৷ দিয়াশা দস্তিদার— ওই যার নম্বর জয়ন্তর ফোনে পাওয়া গিয়েছিল, ওটাই জয়ন্তর স্ত্রী৷ ম্যাডাম, একটাই মহিলা নাম পালটাচ্ছে৷’
লগ্নজিতা ছবিটা সুশোভনকে দেখিয়ে বলল, ‘বুঝলে সুশোভন, আমাদের নাকের ডগা দিয়ে জাস্ট ধাপ্পা দিয়ে অপরাধী ঘুরে বেড়াল আমরা টেরও পেলাম না৷ আমার তো মনে হয় না, এখন ইনি পার্লারে বসে আছেন৷ আমরা গিয়ে ধরব বলে৷’
সুশোভন বলল, ‘ম্যাডাম, সৃজিতকে হসপিটাল থেকে নিয়ে যাওয়ার পরে এর সাহস আরও বেড়ে গিয়েছিল৷ তাই থানায় ঢুকে জামিন করিয়ে নিয়ে গেছে সুমনকে৷’
লগ্নজিতা বলল, ‘চলো, তোমার ফোর্স নাও, আগে পার্লার, তারপর পারিজাতের পাঠানো অ্যাড্রেসে৷ যাদবপুরের ফ্ল্যাটে যাব৷ রেড করে দেখি, কী পাওয়া যায়৷’