জলধরের জলপান
গাড়িতে উঠে স্টার্ট দিতে দিতেই ভাবল, আজ একবার বিধাননগর থানায় যেতে হবে৷ সুমনের কী হল জানতে হবে৷ আগে থানায় গিয়ে অনীতার সঙ্গে কথা বলতে হবে৷ আপাতত এটাই প্রধান কাজ৷
ম্যাডাম, ইউসুফ বলছি, ‘ফোনটা রিসিভ করেই লগ্নজিতা বলল, ‘আবার আলাদা নম্বর? হ্যাঁ বলো৷’
ম্যাডাম, আমি যাকে জয়ন্তর বাড়ি পাহারা দিতে বসিয়ে রেখেছিলাম, সে বলল, জয়ন্ত সন্ধেতে আসেনি৷ এক মহিলা স্কুটি করে এসে দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল৷ দু-মিনিটের মধ্যে চলেও গিয়েছিল৷ মনে হয়েছিল, কোনো কাস্টমার, দোকান বন্ধ দেখে চলে গিয়েছিল৷ জয়ন্তকে তো দেখেনি বলছে৷ এখন ও যদি টয়লেট করতে গিয়ে থাকে আর সেই সময় ঢোকে তাহলে বলতে পারবে না৷ তবে ম্যাডাম, যে লরিটা সারাদিন ওখানে দাঁড়িয়ে ছিল, তার ডিটেলস পেয়েছি৷ কিন্তু সেই লরিটাই জয়ন্তকে টসকে দিল কি না, সেটা তো বোঝা যাচ্ছে না৷ কারণ যখন ওই লরিটা নেমেছিল ফুটে, তার কিছুক্ষণ আগেই দাঁড়িয়ে-থাকা লরিটা চলে গিয়েছিল অন্যদিকে৷ খুব কনফিউশন ম্যাডাম৷ অ্যাক্সিডেন্ট-ঘটানো লরিটাই দাঁড়িয়ে-থাকা লরি কি না বুঝতে পারছি না তো৷ স্কুলের সামনের সি.সি.টি.ভি.টা চেক করতে হবে৷
লগ্নজিতা বলল, ‘দাঁড়িয়ে থাকা লরির ডিটেলস পাঠাও৷ ম্যাডাম, পাঠিয়েছি আপনাকে, হোয়াটসঅ্যাপ চেক করুন৷’
লগ্নজিতা বলল, ‘আমার জয়ন্তর ওয়াইফের ছবি চাই৷ রাঘবের সঙ্গে জয়ন্তর রিলেশনের ডিটেলস চাই৷ আর সুমনের বউ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য লাগবে৷ এগুলো তাড়াতাড়ি দাও ইউসুফ৷’
থানায় ঢুকেই দেখল, সুশোভন কোনো কারণ ছাড়াই পায়চারি করছে৷ লগ্নজিতাকে দেখেই কিছু বলতে উদ্যত হল৷ ওকে থামিয়ে দিয়ে লগ্নজিতা বলল, ‘অনীতাকে পাঠাও৷’
ঘরের মধ্যে এলোমেলো পায়চারি করছেন জলধরবাবু৷ সামনে মুখ নিচু করে বসে আছে উৎপল৷ সন্তানবিয়োগের পর উৎপলকেই আঁকড়ে ধরেছিলেন জলধরবাবুর স্ত্রী ও উনি নিজে৷ উৎপলরা দুই ভাই৷ জলধরবাবুর ভাইয়ের দুই ছেলে৷ অভিরূপ আর উৎপল৷ অভিরূপ বরাবরই খুব ব্রিলিয়ান্ট ছেলে৷ আপাতত পড়াশোনার জন্যই বিদেশে আছে৷ আর উৎপল ছোটো থেকেই বুদ্ধি হালকা৷ আর জেঠু অন্ত প্রাণ ছিল৷ লেখাপড়ায় ভালো না হলেও সকলের প্রতি মায়াদয়া ছিল ছেলেটার৷ জলধর চেষ্টা করেছিলেন উৎপলকে পড়াশোনা করানোর৷ কিন্তু উৎপল বার বার ব্যর্থ হয়েছে৷ ট্রান্সপোর্টের প্রতি নেশা ছিল৷ ভালো ড্রাইভ করত ছোটো থেকেই৷ সেই কারণেই সবাই সিদ্ধান্ত নিয়ে ওকে চারচাকা কিনে দেওয়া হয়েছিল৷ মন্দ চলছিল না ব্যাবসাটা৷ হঠাৎই ছেলের শখ হল, লরির ব্যাবসা শুরু করবে৷ জলধরবাবুর স্ত্রী উৎপলকে লরি কিনে দেওয়ার জন্য রীতিমতো আরজি করছিলেন৷ জলধর বুঝেছিল, উৎপল জেঠিমার কাছে গিয়ে আবদার করেছে৷ জানে, পৃথিবী উলটে গেলেও জেঠিমা ওর আবদার ফেলতে পারবে না৷ কিছুটা নিমরাজি হয়েই লরিটা কিনে দিয়েছিল লোন নিয়ে৷ উৎপল বলেছিল, ‘জেঠু, ওই লোন আমি শোধ করব লরির ইনকাম থেকেই৷’ করছিলও শোধ৷ জলধর প্রায়ই বলতেন, ড্রাইভার বদলাচ্ছিস যখন আধার কার্ড আর লাইসেন্স দেখে নিবি৷ ‘সবই তো চলছিল ঠিকমতো, হঠাৎ এতগুলো ঘটনার ঘনঘটা ঘটল ওই ক্লাস সেভেনের পিনাক মণ্ডলের ধরা পড়ায়৷ স্কুলের সুনাম তো দায়িত্ব নিয়ে যাবে৷ অলরেডি মিডিয়া ফোন শুরু করে দিয়েছে৷ আপনার স্কুলের ছাত্র ড্রাগস এজেন্ট, আপনি জানতেন না? এদের কীভাবে ঠেকাবে, ভাবতে ভাবতেই এমন একটা রক্ত-হিম-করা ঘটনা ঘটল৷ জয়ন্ত প্রামাণিক খুন হল৷ লরি চাপা পড়ে মরল৷
উৎপল কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল, ‘জেঠু, তুমি বিশ্বাস করো, আজ আর কাল সারাদিন আমার লরিটা বিশুর চায়ের দোকানে যেখানে থাকে, ওখানেই দাঁড়িয়ে ছিল৷ তারকের বোনের বিয়ে বলে ও ছুটি নিল৷ তাই লরি বের করার কথাই নয়৷ হঠাৎই সন্ধেবেলা একটা ছেলে এসে প্রায় কাকুতিমিনতি করে বলল, ইটভাটা থেকে ইট আসার কথা ছিল৷ লরি পায়নি৷ রাতের মধ্যে ইঁট না এলে কাল মিস্ত্রিরা এসে ফিরে যাবে৷ যা ভাড়া তা-ই দিচ্ছি৷ আমিও একদিনের ভাড়া বললাম৷ ছেলেটা নিজেও ড্রাইভার৷ লাইসেন্স দেখাল৷ বলল, লাইসেন্স জমা রাখুন৷ মাত্র আধ ঘণ্টার কাজ আছে৷ যথারীতি আধ ঘণ্টার মধ্যেই গাড়ি জায়গায় রেখে, চাবি ফেরত দিয়ে দিয়েছিল৷ তার পরে শুনছি, জয়ন্তদাকে চাপা দিয়েছে আমার লরি৷ মানুষকে বিশ্বাস করাই দেখছি ভুল৷ কান্নাকাটি করছিল তাই দিলাম৷ আমার খালাসিকেও পাঠিয়েছিলাম৷ শুভ কিছু বোঝার আগেই নাকি এসব ঘটে গেছে৷ ওর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বলেছে, চুপ করে থাক৷ হাতে হাজার দশেক ধরিয়ে দিয়েছে৷ চাবি ওর হাতে দিয়ে পালিয়েছে৷
জলধর চিন্তিত হয়ে বলল, ‘এসব কে শুনবে, উৎপল? পুলিশ এল বলে৷ গাড়ির নম্বর দেখবে৷ রেকর্ড মেলাবে৷ তোকে অ্যারেস্ট করবে৷ তারপর মিডিয়া লিখবে, আমি স্কুলে জয়ন্তর মাধ্যমে ড্রাগসের ব্যাবসা করতাম৷ পিনাক ধরা পড়ল সেই কারণেই জয়ন্ত অ্যারেস্ট হত৷ হলে আমার নাম বলত, তাই আমি ভাইপোকে দিয়ে জয়ন্তকে লরি চাপা দিয়ে দিলাম৷ এর থেকে সহজ সমাধান আর কিছু আছে, উৎপল? এভাবে আমার সুনামটুকুকে তুই ধূলিসাৎ করবি, ভাবতে পারিনি৷’
উৎপল মাথা নিচু করে বসে আছে৷ জলধরবাবু শান্ত হয়ে বসে থাকতেও পারছেন না৷ ‘তপনকে পুলিশ নিয়ে গিয়েছিল জেরার জন্য৷ যা মাথামোটা লোক তপন, কী যে বলেছে, কে জানে৷ এমনিতেই ওই লেডি অফিসার আমায় আকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়ে গেছে, স্কুলের সামনের দোকানে ড্রাগসের ব্যাবসা চলত, স্কুলের ছেলেরা রীতিমতো ড্রাগস অ্যাডিক্টেড হয়ে পড়ছে, আর প্রধানশিক্ষক হয়েও আমি সে সম্পর্কে ঘুণাক্ষরেও জানি না, এই বিষয়টা উনি হজম করলেন না৷ সুতরাং সন্দেহ আমার ওপরে ছিলই, তারপবে খবর পেল, তোর লরিতেই জয়ন্ত খুন হয়েছে৷ এরপরেও আমরা জেলে যাব না— এটা হতে পারে না৷ জলধরবাবুর স্ত্রী জয়িতা বেশ বিচক্ষণ মহিলা৷ অল্প বয়সে রীতিমতো ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷ কলেজের জি.এস. ছিলেন দু-বছর৷ সেই থেকেই হয়তো সমস্যার সময় তুখোড় বুদ্ধি খোলে৷ জলধরবাবু আর উৎপলের কথা মন দিয়ে শুনে বললেন, ‘রেডি হও৷ সোজা থানায় যাও৷ নিজেরা গিয়ে সোজা বলো, গতকাল উৎপলের চাবি চাওয়া থেকে জয়ন্ত খুন—পুরোটা গিয়ে স্বীকার করে নাও৷ নিজেরা গিয়ে বলো, কেউ দায়িত্ব নিয়ে তোমাদের ফাঁসাচ্ছে৷’
উৎপল বলল, ‘হ্যাঁ জেঠু, জেঠিমা ঠিক বলছে৷’
জলধরবাবু বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘তুই থাম উপু৷ তোর আর তোর জেঠিমার বুদ্ধির ঠেলায় এখুনি জেলে ঢুকব৷ অফিসার বলবে, আপনার স্কুলের সামনে জয়ন্তর দোকানটা কি আজ তৈরি হল? হয়েছে তো বছর তিন-চার আগে৷ ও ড্রাগসের ব্যাবসা কি কাল শুরু করেছিল? নিশ্চয়ই মাস পাঁচেক আগে শুরু করেছিল৷ তাহলে আজ বলতে এসেছেন কেন? আগে নয় কেন? এসব প্রশ্ন উনি কেন করবেন না, সেটা তোর জেঠিমার মাথায় ঢুকেছে কি না জিজ্ঞাসা কর? শোন উৎপল, তুই একটা কাজ কর, আপাতত কদিন মামাবাড়ি গিয়ে থাক৷ এদিকটা আমি সামলে নিই৷ পুলিশ এলে বলব, তুই নেই৷ খালাসি গাড়ি নিয়ে গেছে, তখন ওকে মেরে একজন অপরিচিত লোক এসব করেছে৷ তুই নেইটা ম্যাটার করে৷ না হলে প্রথমেই জেলে ঢোকাবে৷’
জয়িতা বলল, ‘প্রশ্নটা তো আমারও, তোমার স্কুলের বাচ্চাদের হাতে এল.এস.ডি.,কোকেনের মতো মাদকদ্রব্য আসে কোথা থেকে?
জলধরবাবু তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠে বললেন, ‘শোনো, তোমার ওই বামপন্থার ন্যায়নীতি নিয়ে আমি এখন বক্তৃতা দিতে বসিনি৷ শুনতেও বসিনি৷ কলেজে কবে (চজ্জ করেছ, এখনও তার জের টানতে হচ্ছে আমায়৷ আরে আমি প্রধান শিক্ষক৷ আমার কাজ পড়াশোনা দেখা৷ কে বাইরের দোকানে লজেন্সের মধ্যে ড্রাগ দিয়ে বিক্রি করছে, সেটা দেখা আমার কাজ নয়৷ অযথা কেন এই বিপদের সময় তর্ক করছ?
জয়িতা বলল, ‘উৎপলকে মাত্র দুটো দিন আগেই জয়ন্তর দোকানের সামনের বেঞ্চে বসে থাকতে দেখেছে সবাই৷ এতটা সহজ হবে না ওকে নির্দোষ প্রমাণ করা৷ তাই আমি বলছি, গিয়ে নিজেরা সত্যিটা বলে এসো৷’
জলধরবাবু স্ত্রী-র কথাতে কর্ণপাত না করে বললেন, ‘উপু, রেডি হয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যা৷ বসে বসে তোর জেঠিমার লেকচার শুনিস না৷ সময় নেই৷’
জয়িতা আজও বোঝে না জলধরের এত টাকার লোভ কেন? কার জন্য? নিজেদের সন্তানটাকে তো কপালদোষে ধরে রাখতে পারল না৷ উৎপলকে লরি কিনে দিয়েছে ভালো কথা৷ নিজেও তো মাইনে কিছু কম পায় না৷ তারপরেও কেন এসব অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে কয়েকটা টাকার লোভে কে জানে! জয়িতার দৃঢ় ধারণা জয়ন্ত যে ড্রাগস বিক্রি করত বাচ্চাদের এজেন্ট বানিয়ে এটা জলধর জানত৷ হয়তো জয়ন্ত কিছু ধরিয়ে দিত বলেই এটা নিয়ে স্টেপ নেয়নি জলধর৷ মানুষ চেনা সত্যিই বড়ো কঠিন৷ কলেজের থার্ড ইয়ারে যখন পরিচয় হল ওর সঙ্গে তখন জলধর মাস্টার্সের স্টুডেন্ট৷ হাতে সবসময় বই৷ হয় স্বামী বিবেকানন্দ নয় সক্রেটিস নয়তো নেতাজি নিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছে জলধর ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে৷ মুগ্ধ হয়ে শুনত জয়তি৷ মনে হত আদর্শবান পুরুষ৷ দৃঢ় চরিত্রের মানুষ৷ সেই দেখেই প্রেমে পড়েছিল জয়িতা৷ কিন্তু বিয়ের পর ঘনিষ্ঠভাবে যখন মানুষটাকে চিনতে পারল তখন বুঝতে পারছিল, ওর কলেজে দেখা মানুষটার সঙ্গে বিস্তর ফারাক৷ একদিনে বড়োলোক হবার লোভে পড়ে কত যে লটারির টিকিট কাটত জলধর তার শেষ নেই৷ জয়িতা নিষেধ করলে বলত, ‘এমন ছাপোষা মাস্টারের জীবন আমার পছন্দ নয়৷ তখন অবশ্য প্রধানশিক্ষক ছিল না জলধর৷ জয়িতা তখন প্রাইমারি টিচার৷ বেশ দূরে পোস্টিং ছিল৷ সন্তান হবার পরে যাতায়াতে অসুবিধার জন্যই চাকরিটা ছাড়তে হয়েছিল৷ জলধর বলত, ‘দেখো, একদিন আমরা বিদেশে ঘুরতে যাব৷ পাহাড়ে বাংলো কিনবে৷ ‘জলধর কখনো ছাপোষা স্বপ্ন দেখত না৷ ওর স্বপ্নগুলোও ছিল বড্ড ধনী৷ জয়িতার চোখের সামনে সেই আদর্শবান মানুষটারও একটু একটু করে মৃত্যু হয়েছিল৷ কিন্তু সংসারের বন্ধনে বেঁধে যাওয়ার পরে জয়িতা প্রতিবাদ করলেও ছেড়ে চলে যায়নি জলধরকে৷ কিন্তু মানুষটার এই ডুয়াল ক্যারেক্টর চমকে দিয়েছে জয়িতাকে৷ উৎপলকে কী সব বুদ্ধি দিচ্ছিল জলধর৷ বিরক্ত হয়েই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এল ও৷ যা ইচ্ছে করুক৷ যদি অন্যায় করে থাকে, শাস্তি পাক৷ একমাত্র সন্তানকে হারিয়েও যে মানুষের টাকার লোভ কমে না কেন, ঈশ্বর জানেন৷ নিজের ঘরে বসেই টের পেল, জয়িতা উৎপল বেরিয়ে গেল৷ জলধর কারো সঙ্গে ফোনে কথা বলছে৷ একটা কথাই কানে এল—‘পুলিশ কী কী জানতে চাইল? আর তুমি কী কী বললে? ভুলে যেয়ো না, স্কুলের বদনাম করে এলে তোমায় সরাতে আমার একদিন লাগবে৷ ম্যানেজিং কমিটিকেও ডাকতে হবে না এক্ষেত্রে৷ তাই আমার নামে যদি একটা কথাও বলে এসে থাকো তাহলে কাল থেকে আর গেটে দাঁড়াতে হবে না৷ কী বললে? চাবি খুলে দিয়েছিলে সি.সি.টি.ভি. রুমের? উৎপলের লরি তার ফুটেজ পুলিশ নিয়ে গেছে? এগুলো কার পারমিশন নিয়ে করলে তুমি? গো টু হেল৷ আমি যেটা বলছি, মন দিয়ে শোনো তপন৷’ জয়িতা জোড়ে নিশ্বাস ছেড়ে ফিসফিস করে বলল, ‘বিপদে পড়বে মানুষটা এবার৷ এমন গভীর জলে পড়বে, যে সাঁতরে উঠতেই পারবে না৷’