Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সায়েন্স ফিকশন সমগ্র – হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ এক পাতা গল্প1195 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০৫. গ্যালাক্সি-ওয়ানের নিয়ন্ত্রণকক্ষ

    গ্যালাক্সি-ওয়ানের নিয়ন্ত্রণকক্ষে জরুরি মীটিং বসেছে। একটি জরুরি পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। তিনটি প্রাণী ঘুরে বেড়াচ্ছে স্বাধীনতাবে। এখন পর্যন্ত তারা কারোর কোনো ক্ষতি করে নি। তাই বলে যে ভবিষ্যতেও করবে না, তেমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। সবচেয়ে বড় কথা, অত্যন্ত শক্তিশালী রেডিয়েশনও এদের কিছুমাত্র কাবু করে নি। ছোটাছুটি করছে উৎসাহের সঙ্গে।

    ক্যাপ্টেন কীম গম্ভীর মুখে বললেন, বর্তমান পরিস্থিতির উপর একটি রিপোর্ট দেয়ার জন্যে আমি কম্পিউটার সিডিসিকে বলেছি। আলোচনা শুরু করার আগে আমি সিডিসির রিপোর্টটি শুনতে চাই। আপনারাও মন দিয়ে শুনুন।

    আমি সিডিসি বলছি। বর্তমান সমস্যাটি একটি জটিল এবং ভয়াবহ সমস্যা। তিনটি অসাধারণ বুদ্ধিমান প্রাণী গ্যালাক্সি-ওয়ানে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ করছেন, আমি বুদ্ধিমান শব্দটির আগে অসাধারণ বিশেষণটি ব্যবহার করেছি। আপনাদের কারো কারো আপত্তি থাকতে পারে। কিন্তু আমার কাছে এমন সব প্ৰমাণ আছে, যা সন্দেহাতীতভাবে বলবে প্রাণীগুলি বুদ্ধিমান।

    প্রথম প্রমাণ : প্রাণীগুলি দ্রুত বুঝতে চেষ্টা করছে গ্যালাক্সি–ওয়ান কী করে কাজ করে। কোনো একটি অদ্ভুত উপায়ে এরা ইলেকট্রনের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সেই ক্ষমতাবলে এরা গ্যালাক্সি-ওয়ানের প্রতিটি যন্ত্রপাতির ইলেকট্রন-প্রবাহ প্রভাবিত করেছে। অবশ্য খুব অল্প সময়ের জন্য। কিন্তু করেছে।

    দ্বিতীয় প্রমাণ : তারা একটি ট্রেসারেক্ট তৈরি করেছে। কোনো ত্রিমাত্রিক বস্তু দিয়ে ট্রেসারেক্ট তৈরি করা যায় না, কিন্তু এরা করেছে। তিন নম্বর কক্ষে হলডেন কিউব দিয়ে তৈরি ট্রেসারেক্টটি এখনো আছে। আপনারা কি আর কোনো প্রমাণ চান?

    না। ক্যাপ্টেন, আপনি আমাদের ট্রেসারেক্টটি দেখাবার ব্যবস্থা করুন।

    ক্যাপ্টেন সুইচ টেপামাত্র তিন নম্বর কক্ষটির ছবি ত্রিমাত্রিক পর্দায় ভেসে উঠল। জিনিসটি যে ট্রেসারেক্ট এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে হলডেন কিউবগুলি (যেগুলি ট্রেসারেক্টের ষােলোটি কোণে বসে আছে) ঠিক কী উপায়ে ঘুরছে। কম্পিউটার সিডিসি আবার কথা বলা শুরু করল, আমি এখন আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি অন্য একটি দিকে। এই প্রাণীগুলি কোনো খাদ্য গ্রহণ করে না। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, এরা শক্তি কোথায় পায়? প্রশ্নটির উত্তরের উপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে।

    সিডিসি কিছুক্ষণের জন্যে চুপ করে থাকল। সম্ভবত শুনতে চাইল কারোর কোনো বক্তব্য আছে কি-না। কেউ কথা বলল না।

    প্রাণীগুলি বুদ্ধিমান হলেও, এরা এই প্রথম কোনো একটি বুদ্ধিমান প্রাণীর সংস্পর্শে এসেছে বলে আমার ধারণা।

    এই ধারণার পেছনে কী কী যুক্তি আছে তোমার?

    আমার কাছে এই মুহূর্তে তিনটি প্রথম শ্রেণীর যুক্তি আছে। যুক্তিগুলি বলবার আগে আপনাদের একটি দুঃসংবাদ দিচ্ছি আমাদের যে অনুসন্ধানী দলকে এই গ্রহে নামান হয়েছিল, তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। আমার ধারণা প্রাণীগুলি ইচ্ছাকৃতভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করেছে।

    নিয়ন্ত্রণকক্ষের জরুরি মিটিং আধা ঘণ্টার জন্যে স্থগিত রাখা হল।

     

    অনুসন্ধানী দলের প্রধান ডঃ জুরাইন অত্যন্ত বিরক্ত বোধ করছিলেন। ডঃ জুরাইন গ্যালাক্সি-ওয়ানের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রধান। তিনি অনুসন্ধানী দলের সঙ্গে আসতে চান নি। তিনটি অদ্ভুত প্রাণীকে কাছ থেকে পরীক্ষা করার সুযোগ ছেড়ে কে আসতে চায় অনুসন্ধানী দলের সঙ্গেতবু তাঁকে আসতে হয়েছে, কারণ এই গ্রহে আরো প্রাণী থাকার সম্ভাবনা। নানান ধরনের প্রাণী। শুধু এক শ্রেণীর প্রাণের বিকাশ হবে তা ভাবার কোনোই কারণ নেই। কাজেই ডঃ জুরাইনকে আসতে হয়েছে। এই গ্রহে প্রাণের বিকাশ কোন পথে হয়েছে, সেটা পরীক্ষা করার দায়িত্ব পড়েছে তার উপর। কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত অন্য কোনো প্রাণীর দেখা পান নি।

    গত বারো ঘণ্টা ধরে অনুসন্ধানী হেলিকপ্টার উড়ছে। খানাখন্দ এবং প্রকাণ্ড সব পাথর ছাড়া এখন পর্যন্ত কিছু চোখে পড়ে নি। না পড়ারই কথা। প্রাণের বিকাশ হবার জন্যে যা যা প্রয়োজন, তার কিছুই এ গ্রহে নেই। তাহলে প্রশ্ন হয়, ঐ প্রাণী তিনটি এল কোত্থেকে, আকাশ থেকে পড়ে নি নিশ্চয়ই।

    ডঃ জুরাইন, আপনাকে একটি প্রশ্ন করতে পারি?

    পার।

    আমার সন্দেহ হচ্ছে, যে প্রাণী তিনটি দেখছি, সেগুলি অন্য কোনো গ্রহ থেকে এখানে এসেছে। এরা এ গ্রহের প্রাণী নয়।

    এ রকম মনে হওয়ার কোনো কারণ আছে কি?

    জ্বি স্যার, আছ। প্রাণীগুলির চলাফেরার জন্যে এই গ্রহ উপযোগী নয়। সমস্ত গ্রহটি প্রকাণ্ড সব পাথরে ঢাকা। পাথরগুলি মসৃণ। প্রাণীটি মসৃণ জিনিসের উপর দিয়ে চলাফেরা করতে পারে না। লক্ষ করেছেন নিশ্চয়ই, গ্যালাক্সি-ওয়ানের মেঝেতে এরা বারবার পিছলে পড়ে যাচ্ছিল।

    তুমি বলতে চাচ্ছ, প্রাণীটি এই গ্রহের অধিবাসী হলে মসৃণ জাগয়ায় চলাফেরার ক্ষমতা তার মধ্যে থাকত। জীবনের বিকাশ হত সেই দিকে?

    জ্বি স্যার।

    ভালো বলেছ নিমায়ের। চমৎকার যুক্তি।

    ধন্যবাদ স্যার।

    নিমায়ের কল্পনাও করে নি, ডঃ জুরাইন এত সহজে তার যুক্তি মেনে নেবেন। ডঃ জুরাইন একজন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি। এরা বিশেষজ্ঞ ছাড়া অন্য কারোর কথায় কান দেয় না। নিমায়ের এক জন সামান্য সিকিউরিটি গার্ড, কিন্তু ডঃ জুরাইন তার যুক্তি প্রশংসা করলেন।

    অনুসন্ধানকারী দলের সঙ্গে একটি প্রথম শ্রেণীর রোবট সব সময়ই থাকে, কিন্তু এ দলটির সঙ্গে ছিল না। এদের সঙ্গে একটি দ্বিতীয় শ্রেণীর রোবট আছে। এই জাতীয় রোবট রুটিন কাজ করবার ব্যাপারে সুদক্ষ, কিন্তু এরা যুক্তির মাধ্যমে কোনো সিদ্ধান্তে পৌছতে পারে না। এরা নিজ থেকে কখনো কোনো আলোচনায় অংশগ্রহণ করে না। প্রশ্ন করলেই শুধু উত্তর দিয়ে থাকে। এই বার খানিকটা ব্যতিক্রম হল। রোবটটি হঠাৎ কথা বলে উঠল, ৬ জুরাইন। আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

    ডঃ জুরাইন অবাক হয়ে তাকালে।

    কি ব্যাপার?

    আমি একটি সুরেলা ধ্বনি পাচ্ছি। ধ্বনিটি ক্রমশই স্পষ্ট হচ্ছে।

    ডঃ জুরাইনের বিস্ময়ের সীমা রইল না।

    কই, আমি তো কিছু শুনতে পাচ্ছি না। নিমায়ের, তুমি কিছু শুনতে পাচ্ছ?

    না স্যার।

    রোবটটি শান্তস্বরে বলল, আপনাদের শ্রবণশক্তি আমার মতো তীক্ষ্ণ নয়। আপনারাও শুনবেন। আমরা সেই সুরেলা ধ্বনির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

    মিনিট পাঁচেকের মধ্যে সত্যি সত্যি সুরধ্বনি শোনা গেল। ডঃ জুরাইনের মুখ পাংশুবর্ণ ধারণ করল। সুরটি খুবই চেনা। নিমায়ের উদ্বিগ্ন স্বরে বলল, ডঃ জুরাইন, আপনি কি সুরটি চিনতে পারছেন?

    হ্যাঁ।

    কী ব্যাপার ডঃ জুরাইন?

    বুঝতে পারছি না।

    সুরটি যে নিওলিথী সুর, সে সম্পর্কে আপনার কি কোনো সন্দেহ আছে?

    না।

    আপনার কি মনে হয়, আমরা নিওলিথি সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাব?

    হ্যাঁ–কোথাও না কোথাও দেখবে ছটি অদ্ভুতদৰ্শন আকাশছোঁয়া ঘর। বাতাস এসে সেই ঘরগুলিকে ধাক্কা দিচ্ছে আর তৈরি হচ্ছে এই অপার্থিব নিওলিথি সুর।

    স্পেস-স্যুটের শীতলতায়ও ডঃ জুরাইন ঘামতে থাকলেন।

    স্যার, আমাদের উচিত গ্যালাক্সিওয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করা।

    কথার উত্তর দিল রোবটটি। সে তার যান্ত্রিক শীতল স্বরে বলল, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ওদের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই।

    কখন থেকে যোগাযোগ নেই।

    এক ঘণ্টা বার মিনিট তেইশ সেকেন্ড।

    এতক্ষণ বল নি কেন?

    আপনারা জানতে চান নি, তাই।

    ডঃ জুরাইন বহু কষ্টে রাগ সামলালে। নিময়ের চেঁচিয়ে উঠল, স্যার, দেখুন দেখুন।

    নিওলিথি ঘর ছটি দেখা যাচ্ছে। অদ্ভুত সবুজ রঙ বেরুচ্ছে তার দেয়াল থেকে। মনে হচ্ছে সেই সবুজ রঙ সমস্ত অঞ্চলটিকেই যেন আলোকিত করে তুলেছে।

    আহ, কী অদ্ভুত!

    স্যার, নিওলিথি সভ্যতার সমস্ত ঘর-বাড়ি কি সবুজ পাওয়া গেছে?

    হ্যাঁ।  তবে রঙের গাঢ়ত্বের তারতম্য আছে। কোনো কোনো জায়গায় রঙ হালকা সবুজ। কোথাও পাওয়া গেছে গাঢ় রঙ।

    স্যার আপনি কি স্বচক্ষে এর আগে নিওলিথি ঘর দেখেছেন?

    না, গ্যালাক্সি-ওয়ানের কেউ দেখে নি। মনের মধ্যে একটি অন্য রকম ভাব হয়।

    তা ঠিক। খুবই ঠিক।

    ঘরগুলি শুধু যে অদ্ভুত তাই নয়, এদের বিশালত্বও কল্পনাতীত। অপার্থিব সুরে ধ্বনি বেজে যাচ্ছে। যেন একটি বুভাঙা হাহাকার। নিমায়ের চোখে গভীর আবেগে জল এসে গেল।

     

    তারা তিন জন তিন দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এত কিছু দেখার আছে এখানে, এত কিছু আছে শেখার। ভাষাটা শিখে ফেললে অনেক সহজ হত। কিন্তু এটি শিখতে সময় লাগছে। কারণ মানুষগুলি প্রায় সময়ই চিন্তা করে এক রকম, কিন্তু বলে অন্য রকম। যেমন ক্যাপ্টেন কীম একবার সিকিউরিটির একজনকে জিজ্ঞেস করল, এই সম্পর্কে তোমার কি মত?

    লোকটি হাসিমুখে বলল, স্যার, এটি খুব ভালো ব্যবস্থা।

    অথচ লোকটি মনে মনে ভাবছে-ব্যবস্থাটি একটুও কাজ করবে না। এর চেয়ে মন্দ আর কিছু হতে পারে না। কোনটি ঠিক এর মধ্যে ব্যবস্থাটি কি আসলেই মন্দ না ভালো? তাহলে মন্দের অর্থ কী, আবার ভালোর অর্থইবা কী?

    এ ছাড়াও এই মানুষগুলি কথা বলতে প্রচুর সময় নেয়। তারা যেমন একটি শব্দকেই অসংখ্য কম্পনের মধ্যে উচ্চারণ করে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ করে, মানুষ তা পারে না। সামান্য মনের ভাব প্রকাশ করার জন্যেও এর অনেকগুলি শব্দ পাশাপাশি ব্যবহার করে। এবং একেক বার করে একেক রকম ভাবে, তাতে অর্থের কী তারতম্য হয় কে জানে? যেমন সামান্য খাওয়ার কথাই ধরা যাক। একবার বলছে, চল খাই। আবার বলছে খাই চল। এর মানে কি? এদের কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। আরেকটি মজার জিনিস হচ্ছে, এরা অকারণে কথা বলে। কোনো সমস্যা ছাড়াই কয়েক জন মিলে অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে। এদের ধরনধারণ এ রকম, যেন চিন্তা করার মতো কোনো সমস্যা নেই। এই সব নিয়ে এদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে ইচ্ছা হয়।

    অয়ু এখন পর্যন্ত যা শিখেছে, তার সাহায্যে মানুষদের সঙ্গে সে কথা বলতে পারে, কিন্তু এখনই সে বলতে চায় না। ভাষাটি ভালোমতো জানা দরকার। তারও আগে জানা দরকার, ওরা তাদের এত ভয় করছে কেন। ভয় করার কী আছে?

    অয়ু মনে মনে বলল, আমরা তো তোমাদের কোনো ক্ষতি করছি না। তোমাদের কাছ থেকে আমরা শিখতে চাই এবং তার বদলে আমরা তোমাদের সমস্যা নিয়ে চিন্তা করব।

    আমরা তোমাদের জন্যে যে জিনিসটি তৈরি করেছি যা দেখে তোমরা অবাক হচ্ছ এবং বলছ ট্রেসারেক্ট-এর চেয়ে অনেক অনেক অদ্ভুত জিনিস আমরা তোমাদের জন্যে তৈরি করে দেব। এত দিন আমরা এ সব তৈরি করি নি, আমরা জানতাম না এ সবের কোনো মূল্য আছে। এখন বুঝতে পারছি আছে।

    অযু কথাবার্তা গুছিয়ে ভেবে রাখতে চেষ্টা করে। একদিন এসব কথা বলতে হবে। ওরা কি শুনবে তাদের কথা?

    ওদের মনের ভাব ভালো নয়। সবাই চাহে কুৎসিত প্রাণীগুলি যেন শেষ হয়ে যায়। কেন এ রকম করছে ওরা? এত ভয় পাচ্ছে কেন? ভয়ের তো কিছুই নেই। ভয় কিসের?

    এই মহাকাশযানের তিনটি স্তর আছে। অয়ুরা আছে সবচেয়ে নিচের স্তরে। মানুষরা ভয় পেয়ে নিচের স্তরটি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে, যেন ওরা দ্বিতীয় বা প্রথম স্তরে যেতে না পারে। ব্যাপারটি অয়ুর কাছে হাস্যর মনে হয়েছে। এদের সমস্ত দরজা চৌম্বক শক্তিতে লাগান। অয়ু, নীম বা লী–এদের যে কেউ যে কোনো চৌম্বক শক্তিকে প্রভাবিত করতে পারে। ইচ্ছা করলেই এর দ্বিতীয় বা প্রথম স্তরে যেতে পারে। তা যাচ্ছে না, তার একমাত্র কারণ, তারা মানুষদের আর ভয় পাইয়ে দিতে চায় না।

    তা ছাড়া নিজেদের স্তরেও অনেক কিছু দেখায় এবং শেখার আছে। বেশ কিছু মানুষও আটকা পড়েছে এই স্তরে। মানুষগুলি ভয়ে অস্থির হয়ে আছে। এক জনকে অবশ্যি পাওয়া গেছে যার ভয়টয় বিশেষ নেই। মোটাসোট। ফুর্তিবাজ লোক। অয়ু তার ঘরে ভুল করে ঢুকে পড়েছিল। এই লোকটি অন্যদের মতো লাফিয়ে ওঠে বা চিৎকারও শুরু করে নি। হাসিমুখে বলেছে, আমার মাকড়সান্ধুটির খবর কি? আমাকে ভক্ষণ করবার হেতু আগমন নাকি?

    অয়ু ভক্ষণ শব্দটির অর্থ ধরতে পারে নি। লোকটি বলেহে, এসেছেন যখন, তখন বসুন।

    এর অর্থ বেশ বোঝা গেল। অয়ু লোকটি যে রকম আসনে বসে আছে, সে রকম একটি আসনে উঠে বসল। লোকটি গম্ভীর হয়ে বলল, আপনি কি আমার কথা বুঝতে পেরে বসলেন, না ঐটি একটি কাকতালীয় ব্যাপার।

    অয়ু কাকতালীয় শব্দটিও বুঝতে পারল না। এদের ভাষা যথেষ্ট জটিল। এই শব্দটি সে আগে একবারও শশানে নি।

    কিছু পান করবেন? কমলালেবুর সবত দিতে পারি, কিন্তু আসল নয় নকল। সবই সিনথেটিক।

    অয়ুর খুব ইচ্ছা করছিল লোকটিকে অবিকল মানুষের ভাষায় জবাব দেয়, বলে, আপনাকে ধন্যবাদ। খাদ্য গ্রহণ করার মতো শারীরিক ব্যবস্থা আমাদের নেই। আমরা সরাসরি শক্তি সগ্রহ করে থাকি। আপনাদের সঙ্গে আমাদের কিছু মৌলিক পার্থক্য আছে।

    কিন্তু আয়ু কিছু বলল না। লী বলে দিয়েছে, যেন তা করা না হয়। তার ধারণা মানুষরা যখন টের পাবে তারা ওদের ভাষায় কথা বলতে পারে, তখন আরো ভয় পেয়ে যাবে। ওদের সঙ্গে যোগাযোগের আগে ওদের মনের বৈরী ভাব প্ৰথমে দূর করতে হবে। নীম লীর কথা মেনে নিতে পারে নি। নীম বলেছে, ওদের মনের ভয় দূর করার সবচেয়ে ভালো পথ হচ্ছে ওদের সঙ্গে কথা বলা।

    লী শান্ত স্বরে বলেছে, না, মানুষদের মনে ভয় ঢুকে গেছে। তারা ভাবছে আমরা হয়তো ওদের চেয়েও বুদ্ধিমান। এটি তারা মেনে নিতে পারছে না।

    আমরা ওদের ভাষায় কথা বলামাত্র ওদের ধারণা বদ্ধমূল হবে–যার ফল হবে অশুভ।

    মানুষদের এই ধারণাটিকেও অয়ুর অদ্ভুত লাগে। মানুষদের কাণ্ডকারখানা দেখে তারা তিন জনই মুগ্ধ হয়েছে। এমন একটি মহাকাশযান তৈরি করতে সীমাহীন বুদ্ধির প্রয়োজন। লীর মতে মানুষের জ্ঞান সীমাহীন। নীম তা স্বীকার করে না। তার ধারণা, কম্পন সম্পর্কে মানুষরা জানে খুব কম। নীমের ধারণা ভুল নয়। এ বিষয়ে তারা সত্যি সত্যি কম জানে। কিন্তু তবু মানুষদের জ্ঞানের পরিমাণও কম নয়। নানান তথ্য জমা করে রাখার জন্যে তারা যে কম্পিউটার তৈরি করেছে, তা একটি আশ্চর্য জিনিস। কম্পিউটারটি যে শুধু তথ্যাদি জমা করে তা এখনো পরিষ্কার হয় নি। তবে হন্তে শিগগিরই। লী এবং নীম দুজনেই এই সমস্যাটি নিয়ে চিন্তা করছে। অর বর্তমানে চিন্তা করবার মতো কোনো সমস্যা নেই। তাকে আবার সেই পুরনো সমস্যাটি দেয়া হয়েছে–ছটি আকাশছোঁয়া ঘরের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কী?

     

    অনুসন্ধানকারী দলের সঙ্গে যোগাযোগ কেন বিচ্ছিন্ন হয়েছে, তা বের করা গেল না। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, অদ্ভুত প্রাণীগুলি হয়তো কিছু একটা করেছে। সে ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। গ্যালাক্সি-ওয়ানের সমস্ত যন্ত্রপাতি নিখুঁতভাবে কাজ করছে।

    অনুসন্ধানকারী স্কাউটশিপটিতে কোনো ঝামেলা হয়েছে, সে রকম ভাবা ঠিক নয়। কারণ যোগাযোগের বেশ কয়েকটি বিকল্প ব্যবস্থা আছে। মাইক্রোওয়েভ ও লেসার ছাড়াও অত্যন্ত জরুরি অবস্থার জন্যে আছে ওমিক্রন রশ্মির ব্যবহার। এর একটির সঙ্গে অন্যটির কোনো সম্পর্ক নেই। মাইক্রোওয়েভ ও লেসার কাজ না করলেও ওমিক্রন রশ্মি কাজ করবে।

     

    কম্পিউটার সিডিসি যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হবার দুটি সম্ভাব্য কারণ উল্লেখ করে জরুরি মন্ত্রণালয় তার রিপোর্ট পেশ করল।

    প্রথম সম্ভাব্য কারণ : অনুসন্ধানী স্কাউটশিপটি অদ্ভুত প্রাণীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে এবং তারা যাবতীয় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। সে সম্ভাবনা অবশ্যি খুবই কম। প্রথমত স্কাউটশিপটি অনেক উঁচু দিয়ে উড়ছে। অদ্ভুত প্রাণীগুলি বৈদ্যুতিক ও চৌম্বক শক্তিকে প্রভাবিত করতে পারলেও এদের কোনো প্রযুক্তিবিদ্যা নেই। এরা উড়ে-যাওয়া একটি স্কাউটিশিপের ক্ষতি হয়তোবা করতে পারবে না।

    দ্বিতীয় কারণটি সিডিসি যথেষ্ট কুণ্ঠার সঙ্গে ব্যাখ্যা করল। সিডিসি বলল, আমি পুরান তথ্যাদির উপর নির্ভর করে দ্বিতীয় সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করছি। ইন্টার গ্যালাকটিকা আর্কাইভে বলা হয়েছে, যে ধ্বংসপ্রাপ্ত নিওলিথি সভ্যতার পঞ্চাশ হাজার গজের কাছাকাছি যখন কোনো স্কাউটশিপ বা মহাকাশযান যায় তখন তার যোগাযোগ ব্যবস্থা সাময়িকভাবে নষ্ট হয়ে যায়।

    তার মানে তুমি বলতে চাচ্ছ, এই গ্রহে নিওলিথি সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ আছে?

    আমি সম্ভাবনার কথা বলছি।

    জন ফেন্ডার বলল, আমরা সহজেই তোমার সম্ভাবনা প্রমাণ করতে পারি। আমাদের কাছে নিওলিথি সুরের বেশ কিছু রেকর্ড আছে। রেকর্ডগুলি বাজানো হলে যে তিনটি প্রাণী আমাদের কাছে আছে; ওরা সেই সুর চিনতে পারবে।

    তা ঠিক।

    কম্পিউটার সিডিসি বলল, আমি জানতাম, আপনারা এই সিদ্ধান্তে আসবেন। এই মুহূর্তে তৃতীয় স্তরে নিওলিথি সুর বাজানো হচ্ছে। ত্রিমাত্রিক পর্দা চালু করলে আপনার প্রাণী তিনটির উপর নিওলিথি সুরের প্রভাব লক্ষ করতে পারবেন।

     

    স্রুরা তার ঘরের দরজা খোলা রেখেছে।

    তার ধারণা হয়েছে প্রাণীগুলি ভয়াবহ নয়। এরা দেখতে কুৎসিত, শক্তিশালী রেডিয়েশনেও এদের কিছু হয় না, তবু খুব সম্ভব নিরীহ। এখন পর্যন্ত ওরা কারোর কোনো ক্ষতি করে নি। ওদের মধ্যে এক জনের সঙ্গে তার বেশ ভাব হয়েছে। সেটির পায়ে কোনো আঘাত লেগেছে বা কিছু হয়েছে। একটি পা সব সময় সাবধানে গুটিয়ে রেখে চলাফেরা করে। সে প্রায়ই তার ঘরে এসে চুপচাপ বসে থাকে। চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চারদিকে তাকায়।

    আজও সে এসেছে। এবং অন্যদিনের মধ্যে উঠে বসেছে চেয়ারে। স্রুরা হাসিমুখে বলল, কি বন্ধু, আবার এসেছ। হুঁ। আজকে কী নিয়ে আলাপ করি? তুমি তো আবার আলাপে অংশ নিতে পার না।

    প্রাণীটি মনে হল মাথা নাড়াল। যেন কথাবার্তা সব বুঝতে পারছে। স্রুরা বলল, ই, তোমার পা একটি মনে হচ্ছে জখম হয়েছে। আমি অবশ্য এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। কারণ আমি ডাক্তার নই, আমি একজন হাইপারডাইভ ইঞ্জিনিয়ার। হাইপারডাইভ কী, জানতে চাও?

    প্রাণীটি মাথা নাড়ল। যেন সে সত্যি সত্যি জানতে চায়।

    হাইপারডাইভ একটি অদ্ভুত জিনিস। আমরা এসেছি মি১৫ওয়ে গ্যালাক্সি থেকে। সেটি তোমাদের এই এড্রেমিডা নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে পাঁচ লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে। হাইপারডাইভ ছাড়া এত দূর মানুষের পক্ষে আসা সম্ভব নয়। বুঝতে পারছ কিছু।

    না, বুঝতে পারছি না, অসুবিধা হচ্ছে।

    স্রুরা মনে করল, সে ভুল শুনছে। সে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল প্রাণীটির দিকে।

    কে কথা বলছে? আমি, আমি বলছি। আমার নাম অয়ু।

    স্রুরা কপালের ঘাম মুছলুকনো গলায় বলল, তোমরা আমাদের কথা বুঝতে পার?

    কিছু কিছু পারি।

    তোমরা কে?

    তোমার প্রশ্ন বুঝতে পারছি না স্রুরা।

    এই গ্রহে তোমাদের মতো কি আরো প্রাণী আছে?

    না, এই গ্রহে অন্য কোনো প্রাণী নেই।

    তোমরা আমাদের ভাষা শিখলে কি করে? শুনে শুনে শিখেছি।

    শুনে শুনেই শিখে ফেললে?

    হ্যাঁ। তুমি কিন্তু হাইপারডাইভ সংক্রান্ত বিষয়টি এখনো ব্যাখ্যা কর নি।

    ঠিক এই মুহুর্তে তোমাকে বোঝাতে পারব কিনা জানি না।

    চেষ্টা করে দেখ। আমরা যে কোনো যুক্তিপূর্ণ বিষয় বুঝতে পারি।

    হুঁ, তা পার। আমাকে মানতেই হবে তোমরা তা পার। তবে হাইপারডাইভ জানতে হলে তোমাকে চতুর্মাত্রিক সময় সমীকরণ জানতে হবে। তা কি তুমি জান?

    না। তুমি আমাকে বুঝিয়ে দাও।

    এখন নয়, এ ঘন নয়। আমার মাথা ঘুরছে। আমাকে কিছুক্ষণ ভাবতে দাও।

    ঠিক আছে।

    আমার এখনো মনে হচ্ছে আমি স্বপ্ন দেখছি।

    স্বল্প কী?

    পরে বলব, পরে বলব।

    স্রুরা দেখল অযু নামের প্রাণীটি নেমে যাচ্ছে। এই কদাকার কুৎসিত প্রাণীটির সঙ্গে সত্যি সত্যি এতক্ষণ কথা হল। স্রুরা কপালের ঘাম মুছল। সুইচ টিপে গ্যালাক্সি-ওয়ানের ক্যাপ্টেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা প্রয়োজন। কিন্তু স্রুরার ইচ্ছা করছিল না।

    অয়ু ঘর থেকে বেরিয়েই লীকে খুঁজে বের করল। মানুষদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে, এটি তাকে জানান প্রয়োজন তৃতীয় স্তরে লম্ব করিডোরে কাউকে দেখা গেল না। অয়ু ধীর পায়ে ঐগাতে লাগল। শেষ প্রান্তে দুজন মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। এদের দুজনের হাতেই দুটি অস্ত্র। কী জাতীয় অস্ত্র তা জানতে লুখগুলি বের করতে ইয়। কিন্তু সে সুযোগ পাওয়া গেল না। করিডোরের এ-প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত তীব্র আগুনের হকা বয়ে গেল। ব্যাপারটি পূর্ব পরিকল্পিত, এজন্যেই করিডোরে আজ একটি মানুষও নেই।

    অয়ু তার পাগুলি গুটিয়ে ফেলল শরীরের ভেতর। উত্তাপের ফলে শরীরের অণুগুলির কম্পন দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে, সেগুলি তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে। উত্তাপ ছড়িয়ে দিতে হবে চার দিকে। লুখগুলি শরীরের ভেতরে থাকায় বেশ অসুবিধা হচ্ছে। তার কষ্ট হতে থাকল। বাচার একমাত্র উপায় ঐ মানুষ দুটিকে মেরে ফেলা। কোনোই কঠিন কাজ নয়, অনায়াসে করা যেতে পারে।

    কিন্তু তা করা যাবে না। চিন্তাটাই লজ্জাজনক। অয়ু প্রাণপণে শরীরের কোষগুলির কারণ বদলাতে লাগল। ঠাণ্ডা মাথায় তা করা দরকার। একটু ভুল হলেই রক্ষা নেই। কিন্তু নীম এবং লী–এরা কোথায়? ওরা থাকলে অসুবিধা হত না। তিন জন কাছাকাছি থাকলে যে কোনো ধরণের কম্পনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায়। এ জন্যেই কি মা সব সময় বলতেন, তিন জন একসঙ্গে থাকবে, কাছাকাছি থাকবে?

    অয়ু লক্ষ করল তার ভুল হতে শুরু করেছে। অসুস্থ পায়ের অনেকগুলি কোষ নষ্ট হয়ে গেছে। তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছে। ভুল হবার সম্ভাবনা আরো বেড়ে যাবে। মানুষ দুটিকে মেরে নিজে বাঁচার চেষ্টা করাটাই কি এখন উচিত। এটি একটি সমস্যা। কাজেই ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করে এর উত্তর বের করতে হবে।

    উত্তাপের তীব্রতা হঠাৎ করে কমে গেল। আহ্ কী শান্তি! অয়ু মাথা ঘুরিয়ে দেখল, করিডোরের অন্য প্রান্তে লী এবং নীম। ওদের সব কটি লুখ বের করা। উত্তাপ এখন ওরাই সামলাচ্ছে। আর ভয় নেই।

    লী উদ্বিগ্ন স্বরে বলল, তুমি ঠিক আছ, অয়ু?

    হ্যাঁ, ঠিক আছি।

    ভালো। আমার মনে হয়, এখন থেকে আমাদের উচিত, সব সময় একসঙ্গে থাকা।

    হ্যাঁ।

    আর ওদের সঙ্গে কথা বলাও উচিত। ওদের জানান উচিত আমরা ওদের কোনো ক্ষতি করতে চাই না। এ

    হুঁ, ওদের বলা উচিত। আমরা ওদের সঙ্গে থেকে ওদের কাছ থেকে শিখতে চাই।

    হুঁ, তা চাই।

    অয়ু, তোমার পা সম্ভবত নষ্ট হয়ে গেছে।

    হ্যাঁ। অসহনীয় যন্ত্রণা হচ্ছে লী।

    তোমাকে আমি একটি সমস্যা দিচ্ছি। তুমি সমস্যা নিয়ে চিন্তা করতে থাক, যন্ত্ৰণা ভুলে যাবে।

    দাও, সমস্যা দাও।

    লী খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে সমস্যাটি বলল, সমস্যাটি আমি মানুষদের কাছ থেকে পেয়েছি। এদের কম্পিউটারে যে সমস্ত তথ্যাদি আছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে আলোর গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে এক লক্ষ ছিয়াশি হাজার মাইল। এরা এসেছে পাঁচ লক্ষ আলোকবর্ষ দূর থেকে। এরা যদি আলোর গতিবেগে আসে তাহলেও এদের লাগবে পাঁচ লক্ষ বছর। কিন্তু ওদের তথ্যানুযায়ী কোনো বস্তুর গতিবেগ আলোর গতিবেগের বেশি হতে পারে না। তুমি শুনছ মন দিয়ে?

    আমি শুনছি।

    এখন তুমি ভেবে বের কর, এই দীর্ঘ পথ ওরা কী করে এত অল্প সময়ে পার হল। সমস্যাটি অত্যন্ত জটিল। এটি নিয়ে ভাবতে বসলে তোমার পায়ের যন্ত্রণা আর টের পাওয়া যাবে না।

    সমস্যাটি ভাবতে হলে আমাকে অনেক কিছু জানতে হবে।

    তুমি ভাবতে শুরু কর। যখন কিছু জানার দরকার হবে, আমাদের জিজ্ঞেস করবে, আমরা জেনে দেব।

    অয়ু সমস্যা নিয়ে ভাবতে শুরু করল। আর ঠিক তখনি তৃতীয় স্তরের সবকটি ধাপে অপূর্ব নিওলিথি সুর বেজে উঠল। লী এবং নীম উৎকর্ণ হয়ে কয়েক মুহূর্ত শুনল। অয়ু বলল, ঘরের শব্দ আসছে। এই মানুষেরা আমাদের ঘরের শব্দ জানে।

    নীম বলল, কে জানে, আমাদের এই ঘর হয়তো এইসব মানুষরাই বানিয়েছে।

    নতুন এই সমস্যা নিয়ে আমাদের ভাবতে বসা উচিত।

    যে লোক দুটি লেসার রশ্মি দিয়ে অয়ুকে আঘাত করেছে, ওরা স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে ছিল। তারা দুজনেই সিকিউরিটির। প্রাণী তিনটিকে শেষ করে দেয়ার মূল পরিকল্পনা তাদেরই নিয়ন্ত্রণ পরিষদ এ সম্পর্কে কিছুই জানে না। শুধু নিয়ন্ত্রণ পরিষদ নয়, তৃতীয় স্তরের ক্রু মেম্বাররাও কেউ কিছু জানে না। তাদেরকে বলা হয়েছে নিরাপত্তার খাতিরে কেউ যেন কোনো অবস্থাতেই করিডোরে না আসে।

    আক্রমণ ফলপ্রসূ হয় নি, কিন্তু একটি জিনিস পরিষ্কার হয়েছে যখন প্রাণীটি একা ছিল, তখন সে উত্তাপ সহ্য করতে পারছিল না। কিন্তু আর দুটি প্রাণী এসে যোগ দেয়া মাত্র সব অন্য রকম হয়ে গেছে। লেসার রশ্মির কল্পনাতীত শক্তিও নিমিষের মধ্যে দুর্বল হয়ে গেল। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ এবং ক্যাপ্টেনকে জানানো প্রয়োজন। এই পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক করতে হবে।

    সিকিউরিটি গার্ড দুটি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। প্রাণী তিনটির মধ্যে কি যেন কথাবার্তা হচ্ছে। মাথার উপরে খুঁড়ের মতো জিনিসগুলি খুব দুলছে। এক জন তার শুড় গুটিয়ে ফেলছে। একটি, এটি খুব সম্ভবত পালের গোদা, ঝিঝি পোকার মতো শব্দ করছে। একি, হঠাৎ করে নিওলিথি সুর বাজছে কেন? সব কটি চ্যানেলে বাজানো হচ্ছে। গার্ড দুজন অস্বস্তির সঙ্গে লক্ষ করল, প্রাণী তিনটি নিওলিথি সুর শুনে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। এদের ভাবভঙ্গি এ রকম, যেন এ সুর তাদের চেনা, পালের গোদাটি থপথপ শব্দে এগিয়ে আসছে। গার্ড দুজনের শরীর দিয়ে শীতল স্রোত বয়ে গেল। লেসার গান দুটি শক্ত করে ধরা আছে, তবু গানগুলি কাঁপছে। প্রাণীটি কি প্রতিশোধ নেবার জন্যে এগিয়ে আসছে।

    লী এগিয়ে গেল অনেকখানি। গার্ডদের প্রায় পঞ্চাশ গজ দূরে থমকে দাঁড়াল এবং পরিষ্কার স্বরে বলল,

    আমরা তোমাদের সঙ্গে কথা বলতে চাই। তোমরা যে সুর বাজাচ্ছ, সেই সুর সম্পর্কে জানতে চাই।

    গার্ড দুজন ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল।

     

    ডঃ জুরাইন অবাক বিস্ময়ে নিওলিথি সভ্যতার ধ্বংসস্তুপের সামনে দাঁড়িয়ে রইলেন। একে ধ্বংসস্তৃপ বলা হয় কেন? কোনো কিছুই ধ্বংস হয় নি। আকাশছোঁয়া ঘরগুলি এখনো অমলিন অবিকৃত। ঠিক কী উদ্দেশ্যে এই সব তৈরি হয়েছিল। জানবার আজ আর কোনো উপায় নেই। নিওলিথি সভ্যতার জনকদের সন্ধান এখনো পাওয়া যায় নি, পাওয়া যাবে এমন আশা এখন আর কেউ করে না। নিমায়ের বলল,

    ডঃ জুরাইন।

    বল।

    ঠিক কত দিন আগে এই সরু তৈরি হয়েছিল?

    সঠিক বলা যায় না। রেডিও একটিভ ডেটিং করে দেখা গেছে, প্রায় সত্তর থেকে আশি লক্ষ বছর পুরান। আমার ভুলও হতে পারে। আমি ঠিক জানি না।

    কোথায় জানা যাবে?

    গ্যালাক্সি-ওয়ানের কম্পিউটার মেমরি সেলে নিওলিথি সভ্যতাসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাদি আছে।

    তাহলে আমাদের রোবটটিও তো জানবে। সিডিসি মেমরি সেলের অনেক কিছুই তো অনুসন্ধানী রোবটগুলির মেমরি সেলে থাকে।

    ঠিক বলেছ।

    ডঃ জুরাইন তার বাঁ পাশে দাঁড়ানো রোবটটির দিকে তাকাতেই রোবটটি বলল, হ্যাঁ, আমি জানি। আমিও নিওলিথি সভ্যতা সম্পর্কে অনেক কিছুই জানি।

    জানলে চুপ করে আছ কেন?

    আমাকে তো কিছু জিজ্ঞেস করা হয়নি।

    নিওলিথি সভ্যতা কত পুরান?

    বিষয়টি আপেক্ষিক। চতুর্মাত্রিক সময় সমীকরণ হিসেবে কোনো বস্তুর স্থায়িত্বকাল হচ্ছে একটি ত্রৈরাশিক গুণিতক। যার প্রথম রাশিটি একটি আপেক্ষিক রাশি, যাকে–

    ঠিক আছে, তুমি থাম।

    তবে গ্রহগুলিতে নিওলিথি সভ্যতার প্রাচীনত্ব বের করা যায়। গ্রহগুলিতে ত্রৈরাশিক গুণিতকের নাম আপেক্ষিক নয়।

    যথেষ্ট হয়েছে, তুমি থাম। এখন থেকে যা জিজ্ঞেস করব, শুধু তার উত্তর দেবে এবং খুব কম সংখ্যক বাক্য ব্যবহার করবে।

    ঠিক আছে।

    এখন বল, এ পর্যন্ত কটি নিওলিথি সভ্যতার সন্ধান পাওয়া গেছে।

    সর্বমোট নটি। প্রথমটি পাওয়া গেছে মি১িওয়ে গ্যালাক্সিতে। নবুখ সলের চতুর্থ গ্রহটিতে। সেটির বর্ণ হালকা সবুজ।

    ঘর ছটি ছিল?

    যে নটি নিওলিথি সভ্যতা পাওয়া গেছে। তার প্রতিটিতে ঘরের সংখ্যা হয়। প্রতিটি থেকেই অপূর্ব সুরধ্বনি হয় এবং প্রতিটির রঙ হচ্ছে সবুজ। এই কারণেই ইণ্টার গ্যালাকটিকা এনসাইক্লোপিডিয়াতে নিওলিথি সভ্যতাকে বলা হয়েছে সবুজ সুরময় সভ্যতা

    আকাশছোঁয়া এই ঘর বাড়ি ছাড়া আর কী নিদর্শন আছে নিওলিথি সভ্যতার?

    আর কোনোই নিদর্শন নেই। এটি একটি মহারহস্যময় ব্যাপার। আকাশছোঁয়া এই সব প্রাসাদ কী করে তৈরি করা হয়েছে, তা এখনো জানা যায় নি। নিওলিথী সভ্যতার জনকরা কোনো কিছুই লিখে রেখে যায় নি। কোনো বই নেই, যন্ত্রপাতি নেই, কিছুই নেই।

    হুঁ, রহস্যময় তো বটেই।

    আরো রহস্যময় হচ্ছে তাদের স্থান নির্বাচন। প্রতিটি সভ্যতা গড়ে উঠেছে জনমানবহীন গ্রহে। গ্রহগুলিতে গাছপালা পর্যন্ত নেই।

    এই গ্রহটির ক্ষেত্রে সেটি সত্য নয়। এখানে আমরা তিনটি প্রাণী পেয়েছি।

    তা ঠিক। তবে এ রকম দু-একটি প্রাণের সন্ধান অন্যান্য নিওলিথি সভ্যতার ধ্বংসাবশেষেও পাওয়া গেছে।

    ডঃ জুরাইন খুব আশ্চর্য হলেন। এটি একটি নতুন তথ্য।

    কী ধরনের প্রাণের সন্ধান পাওয়া গেছে।

    প্রথম অভিযাত্রী দল যে নিওলিথি সভ্যতার সন্ধান পায়, সেখানে দুটি প্রাণী পাওয়া গিয়েছিল। প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছিল, প্ৰাণী দুটি অসম্ভব বুদ্ধিমান।

    সেগুলি দেখতে কেমন ছিল?

    সরীসৃপ জাতীয় লম্বা।

    এটাই কি একমাত্র উদাহরণ?

    না, আরো আছে। এড্রোমিডা নক্ষত্রপুঞ্জের রিবাত সলের সপ্তম গ্রহের যে নিওলিথি সভ্যতা পাওয়া গেছে, সেখানেও চারটি প্রাণী পাওয়া গিয়েছিল।

    সেগুলি দেখতে কেমন?

    দ্বিপদ প্ৰাণী, অত্যন্ত খর্বাকৃতি। প্রাথমিক রিপোর্টে এদেরও প্রথম শ্ৰেণীর বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে বলা হয়েছে।

    এই সব প্রাণী সম্পর্কে তুমি আর কী জান?

    এদের সম্পর্কে বিশেষ কিছুই জানা যায় না, কারণ কোনো এক বিচিত্র কারণে দুটি মহাকাশযান ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল। ধ্বংসের সময় প্রাণীগুলি মহাকাশযানে ছিল।

    ডঃ জুরাইন নির্মায়েরকে বললন, তুমি কি ঘরগুলির ভেতর ঢুকে দেখতে চাও?

    হা চাই। আপনি চান না? চাই, আমিও চাই। কিন্তু দুজনে এক সঙ্গে যাওয়া কি ঠিক হবে?

    ডঃ জুরাইন, আমার মনে হয় দুজনের এক সঙ্গে যাওয়া ঠিক হবে না।

    ডঃ জুরাইন অস্বস্তির সঙ্গে বললেন, ঘরগুলির ভেতর যারা যায়, পরবর্তীকালে তাদের মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হয়—এই জাতীয় কথাবার্তা শুনেছি।

    রোবটটি বলল, কথাটি আংশিক সত্য। কেউ কেউ মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে, সবাই হারায় নি।

    মানসিক ভারসাম্য হারাবার কারণ কি?

    নানান ধরনের মতবাদ আছে। কেউ কেউ বলেন জিনিসটির বিশালত্ব, নির্জনতা এবং সুরধ্বনি স্নায়ুকে প্রভাবিত করে। আবার দ্বিতীয় এক দলের ধারণা, ঘরগুলির ভেতর দাঁড়ালে বহুমাত্রিক জগৎ সম্পর্কে ধারণা হয়।

    ডঃ জুরাইন ঘরের ভেতরে গিয়ে দাঁড়াবেন বলে মনস্থির করলেন। এ কম সুযোগ জীবনে আর আসবে না। নিওলিথি সভ্যতার খবর গ্যালাকটিক ম্পায়ারে পৌছানোমাত্র এগুলি সরকারি নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। এর ভেতর ওয়ার আর কোনো উপায় থাকবে না। নিওলিথি সভ্যতার পঞ্চাশ হাজার জের ভেতর যাওয়া গ্যালাকটিক আইন অনুযায়ী একটি প্রথম শ্রেণীর অপরাধ।

    ডঃ জুরাইন নিমায়েরের হাত ধরে প্রথম ঘরটির ভেতর ঢুকলেন।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86 87 88 89 90 91 92 93 94 95 96 97 98 99 100 101 102 103 104 105 106 107 108 109 110 111 112 113 114 115 116 117 118 119 120 121 122 123 124 125 126 127 128 129 130 131 132 133 134 135 136 137 138 139 140 141 142
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleনীল অপরাজিতা – হুমায়ূন আহমেদ
    Next Article মিসির আলির অমিমাংসিত রহস্য – হুমায়ূন আহমেদ

    Related Articles

    হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ রচনাবলী ১১

    December 12, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই আমি – হুমায়ূন আহমেদ

    December 12, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    মীরার গ্রামের বাড়ী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }