Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সায়েন্স ফিকশন সমগ্র ৫ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল এক পাতা গল্প1035 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০৬. ক্রিনিটি চলে যাবার পর

    ক্রিনিটি চলে যাবার পর নিকি ছোট খুপরির মতো বাক্সের ভেতর ঘুমানোর চেষ্টা করল। তার চোখে সহজে ঘুম নেমে এল না, যখনি তার চোখে একটু ঘুম নেমে আসছিল ঠিক তখনই কাছাকাছি রোববানগরীর কোনো এলাকা থেকে বিচিত্র একধরনের হল্লার শব্দে সে পুরোপুরি জেগে উঠতে থাকল।

    শেষ পর্যন্ত সে হাল ছেড়ে দিয়ে পুরোপুরি উঠে বসে এবং বাক্সের ডালাটা একটু খুলে বাইরে উঁকি দেয়। বাইরে আবছা অন্ধকার দূর থেকে রঙিন আলোর ভুটা এসে মাঝে মাঝে জায়গাটি একটু আলোকিত করে দিচ্ছে। আশপাশে কেউ নেই শুধু, বাইভার্বালগুলো সারি সারি সাজানো। নিকি কিছুক্ষণ চারদিকে লক্ষ করে, যখন সে দেখল কোথাও কেউ নেই তখন সে সাবধানে বাক্সের। ভেতর থেকে বের হয়ে এল। নিকি কিছুক্ষণ বাইভার্বালের মেঝেতে বসে রইল তারপর সে সেখান থেকে নেমে এল। কাছাকাছি অনেকগুলো বাইভার্বাল, নিকি হেঁটে হেঁটে কাছাকাছি বাইভার্বালটার কাছে দাঁড়ায়। আবছা অন্ধকারে ভালো করে দেখা যাচ্ছিল না তারপরেও বোঝা যায় তাদের বাইভার্বাল থেকে এটি অনেক বেশি সুন্দর, অনেক চকচকে। নিকি হাত দিয়ে স্পর্শ করল, রাইভার্বালের আবরণটি মসৃণ এবং শীতল। নিকি হেঁটে হেঁটে পাশের বাইভার্বালের কাছে গেল, সেটিকেও খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করল হাত দিয়ে স্পর্শ করে দেখল। পরের বাইভার্বালটির কাছে গিয়ে সে হতবাক হয়ে যায়। এই বাইভার্বালটি অনেক বড়, পেছন দিকে বড় বড় দুটি জেট, ওপরে একটি পাখা। সামনে অনেকগুলো স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র। আবছা অন্ধকারে বাইভার্বালটিকে একটা বিশাল দৈত্যের মতো দেখায়। নিকি কাছে গিয়ে বাইভার্বালটিকে স্পর্শ করল।

    সাথে সাথে একটি ভয়ংকর ব্যাপার ঘটে যায়। বাইভার্বালটি জীবন্ত প্রাণীর মতো ঝটকা দিয়ে নড়ে উঠে, তীব্র আলোতে চারদিকে ঝলসে উঠে আর তীক্ষ্ণ এলার্মের শব্দে চারদিক সচকিত হয়ে ওঠে। নিকি ভয় পেয়ে লাফিয়ে সরে আসে, বাইভার্বাল থেকে অনেকগুলো সার্চ লাইট তার দিকে ঘুরে আসে, তীব্র আলোতে নিকির চোখ ধাধিয়ে যায়।

    নিকি দুই হাতে চোখ ঢেকে ছুটতে থাকে, কোথায় কোনদিকে যাচ্ছে সে বুঝতে পারছিল না, যতক্ষণ পর্যন্ত তীব্র এলার্ম আর আলোর ঝলকানি হতে থাকল ততক্ষণ সে ছুটতে থাকল। যখন এলার্মের শব্দ শেষ পর্যন্ত কমে এলো নিকি তখন থামল এবং তাকিয়ে দেখল সে একটি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। দূরে আলো জ্বলছে এবং সেই আলোতে দেখা যাচ্ছে নানা আকারের কিছু রোবট ইতস্তত হাঁটছে।

    নিকি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে হাপাতে থাকে। সে তার এলাকায় জঙ্গলের প্রতিটি গাছকে চিনত, এখানে সে কিছুই চেনে না। ক্রিনিটি ফিরে এসে তাকে খুঁজে না পেলে কী করবে সে জানে না। ক্রিনিটি বলেছিল বাইভার্বালের বাক্সটায় শুয়ে ঘুমাতে, নিকি তার কথা শুনে নি, কাজটা মোটেও ভালো হয় নি। নিকির মনে হল সে কেঁদে ফেলবে কিন্তু সে কঁাদল না। ঠোঁট কামড়ে ধরে নিজেকে একটু শান্ত করে সে যেদিক থেকে হেঁটে এসেছে সেদিকে হেঁটে যেতে শুরু করল।

    খানিকদূর হেঁটে নিকি বুঝতে পারল সে ভুল দিকে চলে এসেছে রাস্তায় অনেকগুলো দোকান এবং সেই দোকানের আশপাশে বেশ কিছু রোবট। একটি রোবট তার পাশে দিয়ে গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে লম্বা পা ফেলে হেঁটে হেঁটে চলে গেল। রোবটটি তাকে দেখেছে কিনা নিকি বুঝতে পারল না। নিকি আবার ঘুরে উল্টো দিকে হাঁটতে থাকে খানিকটা নির্জন জায়গা পার হয়ে সে একটি দেয়ালের সামনে এসে দাঁড়াল তখন কোনদিকে যাওয়া উচিৎ সে বুঝতে পারছিল না। যখন সে ডানে-বামে তাকাচ্ছে তখন দেখতে পেল দুটি রোবট লম্বা পা ফেলে তার দিকে এগিয়ে আসছে।

    রোবট দুটি কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়ে গেল, তাদের সবুজ ফটোসেলগুলো জ্বলজ্বল করে জ্বলে উঠল। ধাতব গলায় একটি রোবট জিজ্ঞেস করল, তুমি কে? কোথা থেকে এসেছ।

    নিকি কিছু বলার আগেই অন্য রোবটটা বলল, খেলনা। নিশ্চয়ই খেলনা। দেখছ না কত ছোট?

    প্রথম রোবটটা বলল, কিন্তু কোনো রেডিয়েশন নাই। বৈদ্যুতিক সিগন্যাল ছাড়া কেমন করে চলছে?

    খুব ভালো করে সিল করেছে। দামি খেলনা।

    প্রথম রোবটটা আরো একটু কাছে এসে বলল, তুমি কে?

    নিকি বলল, আমি নিকি।

    রোবট দুটি কেমন যেন ঝাঁকুনি দিয়ে উঠল। প্রথম রোবটটা বলল, শব্দের কম্পাঙ্ক ষোল থেকে শুরু করে পঁচিশ কিলো হার্টজ পর্যন্ত গিয়েছে। অপূর্ব সুষম উপস্থাপন!

    সত্যিকারের মানব শিশুর মতো।

    নিশ্চয়ই অত্যন্ত দামি খেলনা। ভালো কোম্পানির তৈরি।

    দ্বিতীয় রোবটটি বলল, কোন কোম্পানির তৈরি?

    পিঠে কোম্পানির লোগো আছে নিশ্চয়ই।

    দ্বিতীয় রোবটটি তখন খপ করে নিকিকে ধরে ফেলল, এবং সাথে সাথে ছেড়ে দিল। প্রথম রোবটটি জিজ্ঞেস করল, কী হয়েছে?

    এর ত্বকটি পলিমারের নয়। জৈবিক পদার্থ। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত। গঠন অবিশ্বাস্য।

    প্রথম রোবটটি বলল, ব্যাটারিটা খুলে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা যাক।

    কানের নিচে সুইচ থাকে। আগে সুইচটি অফ করে নাও।

    প্রথম রোবটটা এবারে নিকিকে ধরার চেষ্টা করল, নিকি তখন ছিটকে পেছনে সরে এল। রোবটটা থমকে গিয়ে বলল, একটি খেলনার জন্য এটি যথেষ্ট ক্ষিপ্র!

    নিকি একটি দৌড় দেবার চেষ্টা করল কিন্তু তার আগেই রোবটটি তাকে ধরে ফেলেছে। নিকি প্রাণপণে নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করতে করতে বলল, ছেড়ে দাও! ছেড়ে দাও আমাকে।

    রোবটটি তাকে ছাড়ল না। শক্ত করে ধরে তার কানের নিচে সুইচ খোঁজার চেষ্টা করতে থাকল।

    সেখানে কিছু না পেয়ে তার পিঠে হাত বুলিয়ে ব্যাটারি প্যাক খুঁজতে লাগল। সেখানেও কিছু পেল না, তখন রোবটটি থেমে গেল। নিকির হাতটি শক্ত করে ধরে রেখে বলল, অবিশ্বাস্য। এটি অবিশ্বাস্য।

    দ্বিতীয় রোবটটি বলল, কী অবিশ্বাস্য।

    এর কোনো ব্যাটারি প্যাক নেই।

    তার মানে?

    তার মানে এটি একটি জৈবিক প্রাণী। এটি একটি জীবন্ত মানবশিশু।

    জীবন্ত মানব শিশু? হ্যাঁ।

    প্রথম রোবটটি এদিক-সেদিক তাকাল, তারপর বলল, এই মুহূর্তে আমাদের কপোট্রন ফায়ারওয়ালে আড়াল করে নিতে হবে যেন আর কেউ খোঁজ না পায়।

    হ্যাঁ। আড়াল করে নিতে হবে।

    দুটি রোবটই তাদের কপোট্রন ফায়ারওয়ালে আড়াল করে রোবটদের নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিল। তারপর নিচু হয়ে বসে নিকিকে পরীক্ষা করতে থাকে।

    নিকি ছটফট করে নিজেকে মুক্ত করে নেয়ার চেষ্টা করতে করতে বলল, ছেড়ে দাও ছেড়ে দাও আমাকে।

    প্রথম রোবটটি বলল,  তোমাকে আমরা ছাড়ব না। তুমি সত্যিকারের মানব শিশু। পৃথিবীতে সত্যিকারের মানব শিশু নেই। তোমাকে কিছুতেই ছাড়া যাবে না।

    কেন ছাড়া যাবে না।

    তার কারণ তুমি পৃথিবীতে এখন অমূল্য সম্পদ।

    দ্বিতীয় রোবটটি উঠে দাঁড়াল, চারদিকে একবার তাকাল তারপর বলল, আমরা এই মানবশিশুটিকে নিয়ে কী করব?।

    অনেক কিছু করতে পারি। বিজ্ঞান একাডেমীতে বিক্রয় করতে পারি। থিয়েটারে দেখাতে পারি। শরীরের অংশ কেটে কেটে বিক্রয় করতে পারি। আমাদের অফুরন্ত সুযোগ।

    আমরা দুজন সুযোগটা কিভাবে গ্রহণ করব?

    প্রথম রোবট বলল, সেটি কোনো সমস্যা হবার কথা নয়।

    কেন?

    তার কারণ আমি আমার কপোট্রনে কিছুদিন আগে ভিগা মডিউল লাগিয়েছি।

    ভিগা মডিউল? এটি বেআইনি। সম্পূর্ণ বেআইনি। কেউ তার কপোট্রনে ভিগা মডিউল লাগালে তাকে ধ্বংস করে দিতে হয়।

    সেটি আমি জানি।

    তাহলে কেন লাগিয়েছ?

    ভিগা মডিউল কপোট্রনের নৈতিক ব্যাপারগুলো অচল করে বড় বড় অপরাধ করার ব্যবস্থা করে দেয়। আমি যে কোনো অনৈতিক কাজ করতে পারি। অপরাধ করতে পারি।

    দ্বিতীয় রোবটটি একটু বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। সেটি কিছুক্ষণ চিন্তা করে বলল, কিন্তু সেটি অত্যন্ত বিপজ্জনক কাজ। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী খবর পেলে তোমাকে সাথে সাথে ধ্বংস করে দেবে।

    আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কেমন করে খবর পাবে? আমি কাউকে এই তথ্যটি দিই নি।

    এই যে আমাকে দিলে।

    আমি তোমাকে দিয়েছি কারণ আমি তোমাকে এক্ষুণি ধ্বংস করে দেব। এই মানবশিশুর মালিকানায় আমি কাউকে কোনো অংশ দিতে চাই না।

    রোবটটি কথা শেষ করার আগেই তার শরীরের ভেতর থেকে একটি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র বের করে দ্বিতীয় রোবটটির মাথা লক্ষ করে গুলি করল। একটি ছোট বিস্ফোরণের মতো শব্দ হলো এবং দ্বিতীয় রোবটটি কয়েকবার দুলে উঠে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। প্রথম রোবটটি সেটিকে পরীক্ষা করে অস্ত্রটি আবার তার শরীরের ভেতর ঢুকিয়ে নেয়।

    নিকি নিজেকে মুক্ত করার জন্যে আরেকবার চেষ্টা করে চিৎকার করে বলল, আমাকে ছেড়ে দাও।

    আমি তোমাকে ছাড়ব না। তোমাকে আমি নিয়ে যাব।

    আমি তোমার সাথে যাব না।

    সেটি কোনো সমস্যা নয়। আমি তোমাকে জোর করেই নিয়ে যাব। কিন্তু সারাক্ষণ তুমি যদি চিৎকার করতে থাক তাহলে অনেক সমস্যা হতে পারে। নিরাপত্তাবাহিনী এসে গেলে অনেক ঝামেলা হবে।

    নিকি চিৎকার করে বলল, আমি চিৎকার করব।

    রোবটটি গম্ভীর গলায় বলল, আমি তোমাকে তার সুযোগ দেব না। মানব শিশুর ঘাড়ে জোরে আঘাত করলে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনের বাধার কারণে সে অচেতন হয়ে পড়ে। আমি তোমাকে অচেতন করে নিয়ে যাব।

    নিকি নিজেকে ছুটিয়ে নেবার চেষ্টা করতে করতে বলল, না। না–আমাকে ছেড়ে দাও।

    তবে কতো জোরে আঘাত করতে হয় আমি জানি না। একটু জোরে আঘাত করলে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনী ছিঁড়ে যেতে পারে। মেরুদণ্ড ভেঙে যেতে পারে। আমি তারপরেও সেই ঝুঁকি নেব। ঘটনাক্রমে তুমি মরে গেলেও তোমার দেহটি থাকবে। সেটিও অনেক মূল্যবান।

    রোবটটি নিকিকে তার একটি ধাতব হাত দিয়ে শক্ত করে ধরে রাখে এবং অন্য হাতটি দিয়ে আঘাত করার জন্যে হাতটি উপরে তোলে।

    ঠিক তখন তার পেছনে একটি বাইভার্বাল এসে থামল আর সেখান থেকে ক্রিনিটি তার স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রটি হাতে নিয়ে নেমে আসে। রোবটটি কিছু একটি বুঝতে পেরে হাতটি স্থির রেখে মাথা ঘুরিয়ে তাকাল। ক্রিনিটি সাথে সাথে তার স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রটির ট্রিগার টেনে ধরে এবং একটি বিস্ফোরণের শব্দের সাথে সাথে রোবটটির পুরো মাথাটি ভস্মীভূত হয়ে উড়ে যায়। তীব্র উত্তাপের একটি হলকায় সাথে সাথে ঝাঝালো একটি গন্ধে পুরো এলাকাটি ভরে গেল। রোবটটি কয়েকবার দুলে উঠে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে।

    নিকি ঝটকা দিয়ে নিজের হাত-পা টেনে ধরতেই রোবটের অ্যাঙ্গেলগুলো খুলে যায়, নিজেকে মুক্ত করে সে ক্রিনিটির দিকে ছুটে গিয়ে বলল, ক্রিনিটি! তুমি এসেছ।

    হ্যাঁ। আমি এসেছি। তাড়াতাড়ি বাইভার্বালে উঠে পড়।

    উঠছি ক্রিনিটি।

    বিস্ফোরণের শব্দে অন্য রোবট এসে পড়বে। তখন আমাকে আরো রোবটের কপোট্রন ভস্মীভূত করতে হতে পারে। আমি এখন সেটি করতে চাই না।

    নিকি বাইভার্বালে উঠে ক্রিনিটিকে জড়িয়ে ধরে বলল, তুমি কী আমার ওপরে রাগ করেছ ক্রিনিটি?

    ক্রিনিটি বলল, আমি তৃতীয় মাত্রার রোবট। আমার রাগ করার ক্ষমতা নেই নিকি। যদি থাকত তাহলে আমি হয়তো রাগ করতাম।

    আমি তোমাকে বলছি ক্রিনিটি, আমি আর কক্ষনো তোমার কথার অবাধ্য হব না।

    তুমি যখন আরেকটু বড় হবে, তখন তুমি তোমার নিজের দায়িত্ব নিতে পারবে। তখন তোমার আমার কথা শোনার প্রয়োজন হবে না। কিন্তু এখন আমার কথাগুলো শোনা তোমার নিরাপত্তার জন্যে ভালো।

    ক্রিনিটি বাইভার্বালটা মাটি থেকে একটু উপরে তুলে সেটিকে উড়িয়ে নিতে থাকে। নিকি জিজ্ঞেস করল, আমরা এখন কোথায় যাব ক্রিনিটি।

    প্রথমে এই শহর থেক বেরিয়ে যাব।

    তারপর?

    তারপর যাব ইম্পানা নামে নগরে।

    সেখানে কী আছে?

    শুনেছি সেখানে একজন মানবশিশু আছে।

    নিকি অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে ক্ৰিনিটির দিকে তাকাল। বলল, মানবশিশু? আমার মতো?

    হ্যাঁ, তোমার মতো।

    তার সাথে দেখা হলে আমি কী বলব ক্রিনিটি?

    সেটি নিয়ে এই মুহূর্তে তোমার চিন্তা করতে হবে না। তুমি বরং এখন বাক্সটার ভেতর ঢুকে যাও। আমি চাই না আর কোনো রোবট তোমাকে দেখুক।

    ঠিক আছে ক্রিনিটি।

    নিকি চলন্ত বাইভার্বালেই গুড়ি মেরে পেছনে গিয়ে বাক্সটার ভেতর ঢুকে গেল।

    গভীর রাতে একটি হ্রদের পাশে ক্রিনিটি তার বাইভার্বালটি নামিয়ে আনে। খাবারের কৌটা খুলে কিছু খাবার বের করে সেগুলো একটু গরম করে সে নিকির কাছে নিয়ে যায়। বাইভার্বালের পেছনের বাক্সটি খুলে ক্রিনিটি আবিষ্কার করল নিকি শুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে। ক্রিনিটি নীচু গলায় তাকে ডাকল। নিকি ঘুমের মাঝে অস্পষ্ট একটি শব্দ করে পাশ ফিরে আবার ঘুমিয়ে পড়ল।

    ক্রিনিটি কিছুক্ষণ খাবারগুলো হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে তারপর নিচু হয়ে নিকির গলা থেকে মাদুলিটি খুলে নিয়ে বাইভার্বালের মেঝেতে বসে পড়ে। মাদুলির ভেতর থেকে ছোট ক্রিস্টালটা বের করে সে ক্রিস্টাল রিডারে ঢুকিয়ে একটি মাইক্রোফোন টেনে নেয়। রোবটের একঘেয়ে যান্ত্রিক গলার স্বরে সে বলতে থাকে, রোবোনগরীর প্রথম দিনের অভিজ্ঞতাটি ছিল যথেষ্ট উত্তেজনাময়। মানবশিশু নিয়ে রোবটসমাজের অস্বাভাবিক একধরনের আগ্রহ রয়েছে। নিকি যখন রোববানগরীতে হারিয়ে গিয়েছিল তখন সে দুটি চতুর্থ মাত্রার রোবটের কবলে পড়ে। তাদের একটি ছিল অপরাধকর্মে পারদর্শী। নিকির গলায় মাদুলির আকারে যে ট্রাকিওশানটি রয়েছে সেটির কারণে আমি তাকে খুঁজে পাই। তাকে রক্ষা করার জন্যে আমি কোনো ঝুঁকি নিই নি। অপরাধ করতে পারদর্শী রোবটের কপোট্রনটি সে কারণে আমার ধ্বংস করে। দিতে হয়।

    আমি আশা করছি নিকির কথা এই রোবট দুটির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে নি। আমি ধীরে ধীরে বুঝতে পারছি রোবটদের মাঝে নিকির উপস্থিতি মোটেও নিরাপদ নয়। ইস্পানা নগরে যে মানবশিশুটি রয়েছে বলে শুনেছি তার সাথে দেখা করার প্রক্রিয়াটি হবে অনেক বিপজ্জনক।

    আজকের দিনটির মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল…

    ক্রিনিটি নিখুঁতভাবে পুরো দিনলিপিটি লিপিবদ্ধ করতে থাকে।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86 87 88 89 90 91 92 93 94 95 96 97 98 99 100 101 102 103 104 105 106 107 108 109 110 111 112
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleভূত সমগ্র – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    Next Article নাট বল্টু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    Related Articles

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    ছোটগল্প – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সাদাসিধে কথা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মেকু কাহিনী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    আমার বন্ধু রাশেদ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সায়েন্স ফিকশান সমগ্র ১ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    টুনটুনি ও ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }