Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সায়েন্স ফিকশান সমগ্র ১ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল এক পাতা গল্প978 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০৩. দুঃস্বপ্নের শুরু

    ০৩. দুঃস্বপ্নের শুরু

    রু,

    কি?

    ভয় লাগছে তোমার?

    লাগছিল, তাই ভয়ের সুইচটা একটু আগে বন্ধ করে দিয়েছি।

    পল কুম জেটটা দিয়ে সাবধানে ডানদিকে ঘুরিয়ে বলল, কী মজা তোমাদের, যখন খুশি যেটা ইচ্ছা বন্ধ করে দিতে পার।

    তোমার ভাই ধারণা? চাও আমার মতো হতে?

    অন্য কোনো সময় চাই নি, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ব্যাপারটা খারাপ না।

    কেন জানি রু-টেকের একটু মন-খারাপ হয়ে গেল, সাবধানে একটা দীর্ঘশ্বাস গোপন করে সে। মানুষের এত কাছাকাছি হয়েও সে কখনো মানুষ হতে পারবে না।

    ঘুটঘুটে অন্ধকার চারদিকে, ওদের মাথার উপর থেকে যে-আলো বের হচ্ছে, সেটা অন্ধকারকে দূর করতে পারে না, অন্ধকার দূর করতে হলে আলোকে ছড়িয়ে পড়তে হয়, এখানে বায়ুমণ্ডল নেই বলে আলো ছড়ানোর কোনো উপায় নেই। ওদের পিঠে জেট গুলি লাগানো, হাতে কন্ট্রোল, গতিবেগ বাড়িয়ে শ’খানেক কিলোমিটার করে নিয়েছে, স্কাউটশিপের কাছে গিয়ে কমিয়ে নেবে। রু-টেক এসব কাজ খুব ভালো পারে, লু তাই ওকে পলের সাথে পাঠিয়েছে। নিচে গ্রহটিকে দেখা যাচ্ছে, ঈষৎ লালাভ একটা গ্রহ, গোল গোল গর্তের মতো জিনিসগুলি নাকি আস্তে আস্তে নড়ছে, খালিচোখে ধরা পড়ে না, কিন্তু ব্যাপারটি চিন্তা করেই কেমন একটা অস্বস্তি হয়। পল কুমের মনে হল, কিম জিবান ঠিকই বলেছিল যে ওগুলি চোখ, ঐ চোখ দিয়ে কেউ ওদের দেখছে।

    কিছুক্ষণের মাঝেই ওরা স্কাউটশিপের কাছে পৌঁছে গেল, সিসিয়ানের সবাই ওদের সাথে যোগাযোগ রাখছে। ব্লু-টেকের ঘাড়ের উপর যে-ক্যামেরাটি আছে, সেটা দিয়ে সবাই সবকিছু দেখতে পাচ্ছে। পল কুম আর রু–টেক মাঝে মাঝে একটি দুটি কথা বলে আশ্বস্ত রাখছে সবাইকে।

    স্কাউটশিপের দরজা খুলে প্রথমে ভিতরে ঢেকে রু-টেক, পিছু পিছু পল কুম। ভরশূন্য পরিবেশে দু’জনে একটা পাক খেয়ে নেয়, তারপর ঘুরেফিরে একপলক দেখে নেয় চারদিক, রু-টেক সাবধানে ডান হাতে অ্যাটমিক ব্লাস্টারটা ধরে রাখে, কে জানে, কোনো কোনায় যদি ঘাপটি মেরে বসে থাকে কোনো-এক বীভৎস প্রাণী। কোথাও কিছু নেই, ঠিক যেভাবে ওরা স্কাউটশিপটিকে পাঠিয়েছিল, সেভাবেই এটা ফিরে এসেছে। পল কুম তার ঘাড় থেকে কোনাসটা নামিয়ে বসাতে শুরু করে, ছোট একটা পরীক্ষা করতে হবে, দশ মিনিটের বেশি লাগার কথা নয়। ব্লু-টেকের কিছু করার নেই, সে পলকে নিরিবিলি কাজ করতে দিয়ে অ্যাটমিক ব্লাস্টারটা হাতে নিয়ে ভেসে বেড়াতে থাকে। মিনিট দুয়েক সে স্কাউটশিপকে লক্ষ করে প্রথমে সাধারণ আলোতে, তারপর আলট্রাভায়েলেটে, তারপর কী মনে করে এক্স-রে দিয়ে। কিছু-একটা অস্বাভাবিক জিনিস আছে এখানে, রু-টেক ঠিক বুঝতে পারে না সেটা কি। দেয়ালের কাছে এগিয়ে যায় সে, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকে দেয়ালটিকে, এলুমিনিয়াম, ক্যাডমিয়াম আর সিলঝিনিয়ামের সঙ্কর ধাতুর তৈরি, চকচকে মসৃণ দেয়াল। আরো মিনিট খানেক লাগে ওর বুঝতে, ঠিক কী জিনিসটি অস্বাভাবিক, এই স্কাউটশিপের দেয়ালে কোনো ত্রুটি নেই। মহাকাশ গবেষণাগারে তৈরি হয় এগুলি, তৈরি করার পর গামা-রে দিয়ে দেয়ালের ত্রুটি পরীক্ষা করা হয়, শতকরা তিন ভাগ পর্যন্ত ত্রুটি সহ্য করা হয়, এর বেশি হলে পুরোটা আবার নূতন করে তৈরি করতে হয়। সাধারণ মানুষের চোখে এসব কখনো ধরা পড়ে না, কিন্তু রু-টেক তার এক্স-রে সংবেদনশীল চোখ ব্যবহার করে ইচ্ছা করলে ধরতে পারে। র-টেকের কাছে খুব অস্বাভাবিক লাগে যে এটার দেয়ালে কোনো ত্রুটি নেই। সিসিয়ানের দেয়ালে পর্যন্ত নানারকম ত্রুটি আছে, আর এটি তো সাধারণ একটা স্কাউটশিপ। কোথায় তৈরি হয়েছে এই স্কাউটশিপ?

    রু-টেক গলা নামিয়ে লুয়ের সাথে যোগাযোগ করল, লু।

    কি? একটা অস্বাভাবিক জিনিস দেখছি এখানে।

    কি?

    স্কাউটশিপের দেয়ালটাতে কোনো ত্রুটি নেই, শতকরা তিন ভাগ পর্যন্ত ত্রুটি থাকার কথা।

    লু এক মুহূর্ত চুপ করে থেকে বলল, তার মানে কি?

    আমি জানি না, দাঁড়াও, সিডিসিকে জিজ্ঞেস করি। রু-টেক নিজস্ব ফ্রিকোয়েন্সিতে যোগাযোগ করে সিডিসির কাছ থেকে উত্তর জেনে নিল সাথে সাথেই।

    লু জিজ্ঞেস করল, কী বলল সিডিসি?

    রু-টেক একটু দ্বিধা করে বলতে, আশ্চর্য একটা কথা বলেছে সিডিসি। সত্যিই কি এটা সম্ভব?

    লু আবার জিজ্ঞেস করে, রু-টেক, সিডিসি কী বলেছে?

    সিডিসি বলেছে, এর দেয়ালে যদি কোনো ত্রুটি না থাকে, তার অর্থ হচ্ছে এটা মহাকাশ গবেষণাগারে তৈরি হয় নি, অন্য কোথাও তৈরি হয়েছে।

    কোথায় তৈরি হয়েছে?

    সিডিসির ধারণা, এটা ট্রাইটনে তৈরি হয়েছে।

    লু চমকে উঠে বলল, কী বললে তুমি?

    রু-টেক ইতস্তত করে বলল, সিডিসির ধারণা, আমরা যে স্কাউটশিপটা পাঠিয়েছিলাম, সেটা সত্যি ট্রাইটনে ধ্বংস হয়েছিল, ট্রাইটন থেকে তখন আরেকটা স্কাউটশিপ তৈরি করে পাঠানো হয়েছে।

    লু কয়েক মুহূর্ত কোনো কথা বলতে পারে না, খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, সিডিসির ধারণা সত্যি কি না তুমি প্রমাণ করতে পারবে?

    মনে হয় পারব। দাঁড়াও, একটা স্কু খুলে আনি, কাছে থেকে দেখলেই বোঝা যাবে এটা কী ভাবে তৈরি হয়েছে।

    লুয়ের সাথে সাথে সিসিয়ানে সবাই নিঃশ্বাস বন্ধ করে অপেক্ষা করতে থাকে।

     

    পল কুমের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে ওঠে। সে একটা অবিশ্বাস্য ব্যাপার দেখছে, সুশানের সাথে সে স্কাউটশিপে যে-জৈবিক পদার্থটি পাঠিয়েছিল, সেটি এখানে নেই, তার বদলে আছে অন্য একটি জৈবিক পদার্থ, প্রায় আগেরটার মতোই কিন্তু একটু অন্যরকম, দেখে মনে হয় কেউ তাদের পাঠানো পদার্থটি তৈরি করার চেষ্টা করেছে, ঠিক করে পারে নি, কিন্তু যেটুকু পেরেছে, সেটা অবিশ্বাস্য! মানুষ তার পুরো জ্ঞানভাণ্ডার নিয়ে হাজার বছর চেষ্টা করে এখনো একটা ক্ষুদ্র ভাইরাস পর্যন্ত তৈরি করতে পারে নি, কিন্তু কোনো-এক অসাধারণ বুদ্ধিমান প্রাণী কয়েক ঘন্টার মাঝে এধরনের একটা জৈবিক পদার্থ তৈরি করে ফেলেছে। পল কুমের নিজের চোখকে বিশ্বাস হয় না, আরেকবার দেখে নিঃসন্দেহ হওয়ার জন্যে সে তার কোনাসের উপর বুকে পড়ছিল, ঠিক তখন সে লু’য়ের গলা শুনতে পায়, পল কুম আর রু-টেক।

    কি হল?

    লু প্রায় মেপে মেপে বলল, তোমরা দু’জন এই মুহূর্তে স্কাউটশিপ থেকে বেরিয়ে এস। আবার বলছি, তোমরা দু’জন এই মুহূর্তে স্কাউটশিপ থেকে বেরিয়ে এস। বাকি দায়িত্ব আমাদের।

    কেন? পল কুমের গলা কেপে যায়, কী হয়েছে?

    এইমাত্র ট্রাইটন থেকে আরেকটা স্কাউটশিপ বেরিয়ে এসেছে।

    ভুয়ের একটা শীতল স্রোত পল কুমের মেরুদণ্ড দিয়ে বয়ে যায়, নিজেকে জোর করে শান্ত রাখে তবু। মূল্যবান কোনাসকে নিয়ে যাবে কি না এক মুহূর্তের জন্যে চিন্তা করে সে এটাকে ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। রু-টেক প্রায় অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে একটা ছোট স্ক্র পরীক্ষা করছিল, পল কুমকে দাঁড়াতে দেখে সে পিছু পিছু এগিয়ে যায়। দরজাটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে খুলতে হয়, একজন মানুষের জন্যে বেশ শক্ত, পল সরে গিয়ে রু-টেককে খুলতে দেয়, প্রয়োজনে রু-টেক অমানুষিক জোর খাটাতে পারে।

    রু-টেক দরজার হাতলটা স্পর্শ করে এক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে থেকে হঠাৎ পল কুমের দিকে তাকাল। পল অবাক হয়ে বলল, কি হল, রু-টেক, দরজা খুলছ না কেন?

    রু-টেক আস্তে আস্তে বলল, আমরা আটকা পড়ে গেছি, পল।

    কী বলছ তুমি। পল ধাক্কা দিয়ে রু-টেককে সরিয়ে দিয়ে দরজার হাতল ধরে ঝাঁকুনি দেয়, সেটা পাথরের মতো শক্ত।

    রু-টেক প্রায় ফিসফিস করে বলল, স্কাউটশিপের দরজাটা কম্পিউটার দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়, এই মুহূর্তে সেটা কোনভাবে জ্যাম করে দেয়া হয়েছে। কম্বিনেশান পাল্টে যাচ্ছে আমি শুনতে পাচ্ছি স্পষ্ট, এটা আর কেউ খুলতে পারবে না।

    তা হলে?

    সরে দাঁড়াও, অ্যাটমিক ব্লাস্টার দিয়ে ভেঙে ফেলি।

    পল কুম সরে দাঁড়াতেই রু-টেক দক্ষ হাতে অ্যাটমিক ব্লাস্টারটা তুলে নেয়, দরজার দিকে তাক করে ট্রিগার টানতে গিয়ে থেমে যায় রু–টেক, ওর হাত কাঁপতে থাকে থরথর করে।

    কি হল?

    কথা বলতে পারে না রু-টেক, অনেক কষ্টে বলে, পা-পারছি না।

    কি পারছ না?

    কপোট্রনে প্রচণ্ড চাপ পড়ছে, বার দশমিক আট মেগাহার্টজ তরঙ্গ, সব এলোমেলো করে দিচ্ছে আমার, রুটকের গলার স্বর ভেঙে আসে, পল তু-তুমি চেষ্টা কর, আ-আ-আমি আর পারলাম না। রু-টেকের গলা থেকে হঠাৎ আশ্চর্য ধাতব যান্ত্রিক শব্দ বের হতে থাকে। হাত থেকে অ্যাটমিক ব্লাস্টার প্রায় ছুটে যাচ্ছিল, পল কুম কোনোভাবে ধরে নেয়। রু-টেকের জ্ঞানহীন দেহ স্কাউটশিপে ঘুরপাক খেতে থাকে। পল কুম কাঁপা গলায় ডাকল, লু—লু—

    শুনতে পাচ্ছি পল। পল কুমের শুনতে অসুবিধে হয়, হেডফোনে ঝিঝি পোকার মতো আওয়াজ।

    রু-টেক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে, বার মেগাহার্টজ-এর তরঙ্গ–

    বুঝতে পারছি। ওর কপোট্রনের মূল তরঙ্গ এটা, এটা দিয়ে ওকে অচল করে দেয়া যায়। আমি বলছি তোমাকে, কী করতে হবে।

    লু, আমার ভয় করছে, খুব ভয় করছে।

    আমি বুঝতে পারছি পল। কিন্তু তুমি মাথা ঠাণ্ডা রাখ, তোমাকে আমি বলছি, কী করতে হবে।

    লু, দরজা বন্ধ হয়ে গেছে স্কাউটশিপের, আমরা—

    আমি জানি পল, তোমাকে দরজা ভেঙে বের হতে হবে।

    লু, আমি কখনো অ্যাটমিক ব্লাস্টার ব্যবহার করি নি, কী করতে হবে আমি জানি না।

    আমি তোমাকে বলছি, তুমি সোজা করে ধর অ্যাটর্মিক ব্লাস্টারটা, উপরে যেসুইচটা আছে, টেনে একেবারে সোজা তোমার কাছে নিয়ে এস।

    এই সময় হঠাৎ পুরো স্কাউটশিপটা প্রচণ্ডভাবে কেঁপে ওঠে, পল ছিটকে পড়ে একবার ঘুরপাক খেয়ে কোনোমতে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। ভয় পাওয়া গলায় জিজ্ঞেস করল, কী হয়েছে লু?

    যে-স্কাউটশিপটা ট্রাইটন থেকে উঠে তোমাদের দিকে এগিয়ে আসছিল, কিম জিবান সেটা উড়িয়ে দিয়েছে। তোমার সময় নেই পল, তুমি এসব জানতে চেয়ো না, তোমাকে যা বলছি তাই কর।

    কিন্তু এই স্কাউটশিপটা কেন কেঁপে উঠল?

    শক ওয়েভ।

    শক ওয়েভ কোথেকে আসবে, বায়ুমণ্ডল নেই তো শক ওয়েত কোথেকে আসবে?

    পল, তোমাদের স্কাউটশিপটা ঘিরে একটা বায়ুমণ্ডল তৈরি হচ্ছে, তোমাদের স্কাউটশিপটা ট্রাইটনে পড়ে যেতে চেষ্টা করছে। তোমার সময় নেই, তুমি যদি দশ সেকেন্ডের ভিতর দরজা ভেঙে বের হয়ে আসতে না পার, তোমাকে আমরা বাঁচাতে পারব না। কাজেই তুমি এখন আর কিছু জানতে চেয়ো না, তোমাকে যা বলা হয় করার চেষ্টা কর। আর নয় সেকেন্ড।

    রু-টেক? রু-টেকের কী হবে?

    রু-টেকের পুরো মেমোরি সিডিসিতে পাঠানো হয়ে গেছে, সে যদি ধ্বংসও হয়ে যায় তাকে আবার তৈরি করা যাবে। তাকে নিয়ে চিন্তা করো না। পল, আর আট সেকেন্ড। তুমি আর কথা বলবে না, শুধু শুনবে। ব্লাস্টারটা উঁচু করে ধর।

    ধরেছি।

    সুইচটাকে টেনে নাও নিজের দিকে।

    নিয়েছি।

    ট্রিগারে ডান হাত দাও। এখনি টানবে না, বাম হাত দিয়ে সবগুলি নব বাইরের দিকে ঠেলে দাও।

    দিয়েছি।

    চমৎকার। আর ছয় সেকেন্ড। উপরের লাল লিভারটি টেনে মিটারটি লক্ষ কর, মিটারের কাঁটাটি নড়ছে?

    হ্যাঁ, নড়ছে।

    বেশ। কাঁটাটি যখন সাত আর আটের ভিতরে আসবে ট্রিগারটি টেনে দেবে। তোমার জেটের কন্ট্রোল এখন আমাদের হাতে, ক্লাস্টার চালানোর সাথে সাথে ভাঙা দরজা দিয়ে তোমাকে টেনে বের করে আনা হবে। প্রচণ্ড আঘাত পাবে তুমি, সম্ভবত জ্ঞান থাকবে না তোমার, কিন্তু সেটা নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই। তিন সেকেন্ড আছে আর, কাঁটাটা কোথায় এখন পল?

    ছুয়ের কাছে, সাতে চলে আসছে।

    চমৎকার পল, বেঁচে গেলে তুমি, ট্রিগারটা টেনে দাও।

    পল ট্রিগার টেনে দিল। প্রচণ্ড বিস্ফোরণে জ্ঞান হারাল সাথে সাথে।

    লু মনিটরটির দিকে তাকিয়ে দরদর করে ঘামতে থাকে, পলকে সে বাঁচাতে পারে নি। অ্যাটমিক ব্লাস্টার দিয়ে দরজা ভেঙেও পলকে বের করে আনতে পারে নি, অসম্ভব দুততায় স্কাউটশিপটা ঘুরে গিয়েছিল, ভাঙা দরজা দিয়ে বেরিয়ে না এসে দেয়ালে আঘাত খেয়ে জ্ঞান হারিয়েছে পল কুম। লু দেখতে পায়, পল কুম আর রু-টেকের জ্ঞানহীন দেহ স্কাউটশিপের ভিতর ভেসে বেড়াচ্ছে। মনিটরের ছবি আবছা হয়ে আসছে দুত, কিছু-একটা নষ্ট হয়েছে স্কাউটশিপে, সেটা নিয়ে মাথা ঘামানোর কথা মনে পড়ল না লুয়ের।

    সবাই মনিটরটিকে ঘিরে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, কারো মুখে কোনো কথা নেই। এখনো আবছা আবছাভাবে স্কাউটশিপটাকে দেখা যাচ্ছে। দ্রুত সেটা ট্রাইটনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, কারো কিছু করার নেই। সিডিসি প্রাণপণ চেষ্টা করছে, কিন্তু সবাই জানে, সেও কিছু করতে পারবে না। তারা হঠাৎ করে ভয়ংকর এক প্রতিদ্বন্দীর সামনা-সামনি পড়ে গেছে।

    সুশান আস্তে আস্তে বলল, আরো একটা স্কাউটশিপ উঠে আসছে লু।

    লু অন্যমনস্কভাবে মাথা নাড়ে, এটা চতুর্থ স্কাউটশিপ। দ্বিতীয়টা উঠে এসেছিল প্রথমটার প্রায় আঠার ঘন্টা পর, তৃতীয়টা এসেছে অনেক তাড়াতাড়ি, প্রায় দুই ঘন্টার ভিতরে। চতুর্থটা এসেছে আরো তাড়াতাড়ি, প্রায় ঘন্টাখানেকের মাঝে। স্কাউটশিপগুলি হুবহু একরকম একটি জিনিস ছাড়া, ভিতরের জৈবিক পদার্থটি আস্তে আস্তে ওদের পাঠাননা জৈবিক পদার্থের মতো হয়ে আসছে। ব্যাপারটা এখন খুবই স্পষ্ট, ট্রাইটনে একধরনের অসাধারণ ক্ষমতাশালী প্রাণী আছে, সেগুলি স্কাউটশিপটা হুবহু করে তৈরি করতে চেষ্টা করছে। অন্য সবকিছু তৈরি করতে পেরেছে, কিন্তু জৈবিক পদার্থটি পারে নি, তাই সেটাই বারবার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সুশান সিসিয়ানে বসে জৈবিক পদার্থটি পরীক্ষা করে দেখছে, তার মতে ট্রাইটনের অধিবাসীরা সেটি প্রায় তৈরি করে এনেছে, পরের স্কাউটশিপটাতেই হয়তো ঠিক ঠিক তৈরি করে নেবে।

    প্রথম দিকে স্কাউটশিপগুলি যত উত্তেজনার সৃষ্টি করেছিল, এখন আর ততটুকু করছে না। চতুর্থ স্কাউটশিপটা কেউ ভালো করে লক্ষ পর্যন্ত করল না। সুশান রুটিনমাফিক পরীক্ষা করে বলে দিল, জৈবিক পদার্থগুলিতে এখন প্রতি ট্রিলিয়ন অণুতে একটি করে ভুল আছে, পরের বারের মাঝে সেটা ঠিক করে নেবে বলে মনে হয়। সুশান পরীক্ষা করার পরপরই কিম জিবান সেটাকে উড়িয়ে দিল, কোনো একটা অজ্ঞাত কারণে একটার বেশি স্কাউটশিপ থাকাটা ওদের ঠিক পছন্দ হচ্ছিল না। পঞ্চম স্কাউটশিপটিতে সুশান জৈবিক পদার্থটিকে নিখুঁত অবস্থায় পেল, এবং সেটিই ছিল ট্রাইটনের তৈরি করা শেষ স্কাউটশিপ।

    সিডিসি প্রাণপণ চেষ্টা করেও পুল কুম আর রটেকের স্কাউটশিপটাকে বাঁচাতে পারল না, তাদের অচেতন দেহ নিয়ে সেটা ধীরে ধীরে ট্রাইটনে পড়ে যেতে থাকে। একবার ট্রাইটনের ভিতর পড়ে যাওয়ার পর কী হবে, সেটা এখন কেউ চিন্তাও করতে চায় না। সবাই দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে থাকে ব্যাপারটি শেষ হয়ে যাওয়ার জন্যে, অনেকটা প্রিয়জনের যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যুদৃশ্য দেখার মতো। সিডিসি প্রাণপণ চেষ্টা করে যাওয়ায় পল কুম আর রু–টেককে নিয়ে ওদের স্কাউটশিপটা আরো ঘটখানেক ভেসে থাকল। যখন সেটি শেষ পর্যন্ত ট্রাইটনে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেল, তখন সিসিয়ানের সবাই মানসিকভাবে পুরোপুরি বিপর্যস্ত।

     

    মহামান্য ল, স্কাউটশিপটাকে বাঁচাতে গিয়ে আমি প্রথমবার আমার পুরো শক্তি ব্যয় করেছি, স্কাউটশিপটাকে বাঁচাতে পারি নি, কিন্তু তবুও আমাকে স্বীকার করতে হবে যে, এটি একটি অপুর্ব অভিজ্ঞতা। বুদ্ধিমত্তার পরিপূর্ণ বিকাশ বলতে পারেন–

    লু পা দিয়ে সুইচটা বন্ধ করে সিডিসিকে চুপ করিয়ে দিল, এই মুহূর্তে বুদ্ধিমত্তার পরিপূর্ণ বিকাশের আলোচনায় কারো উৎসাহ নেই। স্কাউটশিপটা বিধ্বস্ত হয়ে যাবার পর লু সবাইকে নিয়ে বসেছে, সিডিসি কথা বলার অনুমতি চাওয়ায় তাকে অনুমতি দেয়া হয়েছিল, কিন্তু তার কথা শোনার মতো মনের অবস্থা কারো নেই। লু ঠোঁটটা কামড়ে থেকে খানিকক্ষণ কী—একটা ভেবে বলল, তোমাদের কারো নিশ্চয়ই কোনো সন্দেহ নেই যে, এই গ্রহে মানুষ থেকে অনেক বুদ্ধিমান কোনো একধরনের প্রাণী আছে। আমাদের এই মুহূর্তে হাইপারভাইভ দিয়ে পালিয়ে যাবার কথা। লু এক মুহূর্ত থেমে সবার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে কেউ কিছু বলতে চায় কি না, কিন্তু কারো কিছু বলার নেই দেখে সে আবার শুরু করে, আমি কিন্তু এই মুহূর্তে হাইপারডাইভ দিতে রাজি না, পলকে বাঁচানোর কোনোরকম চেষ্টা না করে আমি এখান থেকে যেতে চাই না। আমার সিদ্ধান্তে কারো আপত্তি আছে?

    সবাই মাথা নেড়ে জানায়, কারো আপত্তি নেই, সিডিসি ছাড়া। সে তীব্র স্বরে বি বিপ্ শব্দ করে জানায় যে, তার আপত্তি আছে। লু তাকে অগ্রাহ্য করে আবার শুরু করতে যাচ্ছিল, নীষা বাধা দিয়ে বলল, সিডিসির আপত্তিটা কোথায়, শুনলে হত না?

    লু অনিচ্ছার সাথে সিডিসিকে কথা বলার সুযোগ করে দিতেই সে বলল, মানবজাতির উন্নতির প্রধান অন্তরায় হচ্ছে তাদের অযৌক্তিক আবেগপ্রবণ অনুভুতি। মহামান্য পল কুমকে আগের অবস্থায় ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা শূন্যের কাছাকাছি। তার প্রাণরক্ষা করার চেষ্টা করতে গেলে সিসিয়ানের অন্যান্যদের প্রাণনাশের আশঙ্কা আছে। কাজেই আমার বদ্ধমূল ধারণা, মহামান্য পল কুমকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে এই মুহূর্তে আমাদের পালিয়ে যাওয়া উচিত। ট্রাইটনে অত্যন্ত বুদ্ধিমান প্রাণী আছে, তারা যেভাবে স্কাউটশিপটাকে নামিয়েছে, সেটি বিস্ময়কর। আমার মতো অসাধারণ কম্পিউটার পর্যন্ত সেটি রক্ষা করতে পারে নি। অভিজ্ঞতাটি অপূর্ব, কিন্তু

    নীষা সুইচ টিপে সিডিসির কথা বন্ধ করে দেয়। লু ক্লান্ত গলায় বলল, নীষা, তুমি একবার বলেছিলে সিডিসির প্রোগ্রামের কী-একটা পাল্টে দিলে সে আর নির্বোধের মতো কথা বলবে না।

    হ্যাঁ, বলেছিলাম।

    কখনো সুযোগ পেলে প্রোগ্রামটা পাল্টে দিয়ে তো, আর সহ্য করা যাচ্ছে না!

    দেব।

    লু সবার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, কারো কিছু বলার আছে?

    কিম জিবান মাথা নাড়ে, হ্যাঁ।

    কি?

    পলকে উদ্ধার করার জন্যে কী করবে?

    কিছু না।

    কিছু না? কিম জিবান একটু অবাক হয়ে তাকায়, কিছু করবে না?

    লু ম্লানমুখে একটু হাসে, কী করব, বল? সমান সমান হলে যুদ্ধ করা যায়, কিন্তু এখানে তুমি কী করবে? আমার মনে হয়, অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। সিডিসিকে বলব, কিছু-একটা করা যায় কি না ভেবে দেখতে, কিন্তু আমার মনে হয় না সে কিছু ভেবে বের করতে পারবে। অপেক্ষা করা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার নেই কিম।

    শুধু অপেক্ষা করা?

    হ্যাঁ। আমার বিশ্বাস স্কাউটশিপটা আবার ফেরত আসবে, ভিতরে থাকবে পল আর র। জৈবিক পদার্থটি পাঁচ চেষ্টায় তৈরি হয়েছিল, পলকে তৈরি করতে হয়তো আরেকটু বেশি সময় নেবে।

    ভয়ের একটা শিরশিরে ভাব সুশানের সারা শরীরকে কাঁপিয়ে দেয়। ফ্যাকাসে মুখে বলল, তুমি সত্যি বিশ্বাস কর, পলকে ওরা তৈরি করার চেষ্টা করবে?

    হাঁ, আমি বিশ্বাস করি। এই মুহূর্তে হয়তো ওরা পলকে টুকরা টুকরা করে খুলে দেখছে। নিশ্চয় সব কিছু ওরা জেনে যাবে। পলের স্মৃতি থেকে হয়তো আমাদের সম্পর্কেও জানবে। লু হঠাৎ গলার স্বর পাল্টে হালকা গলায় বলল, অবশ্যি এটা আমার ধারণা, সত্যি নাও হতে পারে।

    সিডিসি বিপ বিপ করে কী একটা বলতে চেষ্টা করল, কেউ তাকে গ্রাহ্য করল না।

    লু একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলল, তোমরা বিশ্রাম নাও। সামনে কী আছে জানি না। কিম, তুমি হাইপারড়াইভের সব ব্যবস্থা করে রেখো, কয়েক সেকেন্ডের নোটিশে আমরা যেন হাইপারডাইভ দিতে পারি। নীষা, ভূমি মহাকাশকেন্দ্রে একটা খবর দিয়ে রাখ, আমাদের কী করা উচিত জানতে চেও না, ফেরত যেতে বলবে। সিডিসি, তুমি সিসিয়ানকে আরো এক হাজার কিলোমিটার সরিয়ে নাও, ট্রাইটনের এত কাছে থেকে কাজ নেই।

    নীষা বলল, ল, তুমি একটা জিনিস বলতে পারবে, এই গ্রহে যদি এত উন্নত প্রাণী থাকে, তা হলে তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে না কেন?

    জানি না, মনে হয় পারছে না। মনে নেই পল কুম বলেছিল, মানুষ কখনো পিপড়ার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে না, অনেকটা সেরকম হয়তো।

    কিন্তু তাই বলে একবার চেষ্টাও করবে না?

    করছে হয়তে, পল আর রু–টেককে নিয়ে যাওয়া হয়তো সেই চেষ্টার একটা নমুনা। তাদের ফিরিয়ে দিয়ে হয়তো দেখাবে যে তারা আমাদের কোনো ক্ষতি করতে চায় না।

    তোমার ভাই ধারণা?

    জানি না, লু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, পল থাকলে বলতে পারত।

    সবার বুকে কেমন জানি একটা মোচড় দিয়ে ওঠে, বেচারা পল।

     

    ঘন্টাখানেক পরে লু নিজের ঘরে বিশ্রাম নিতে এসেছে। ট্রাইটনে অসাধারণ ক্ষমতাবান কোনো একধরনের প্রাণী আছে জানার পর থেকে ওর ভিতরে একটা আশ্চর্য অনুভূতি হচ্ছে, একটা অসহায় অনুভূতি হঠাৎ করে সে যেন বুঝতে পারে, ল্যাবরেটরির খাঁচার ভিতরে একটা গিনিপিগের কেমন লাগে। লু যে-জিনিসটি নিয়ে আরো বেশি বিভ্রান্ত, সেটা হচ্ছে তার নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে সে কি ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে? সে কি বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে অহেতুক প্রাণের ঝুঁকি নিচ্ছে? কারো সাথে কথা বলতে পারলে হত, কিন্তু কাকে বলবে? সিডিসিকে শুনিয়ে শুনিয়ে মাঝে মাঝে সে হালকা কথাবার্তা বলে থাকে। আজকেও অনেকটা সেভাবে শুরু করে দিল, বুঝলে সিডিসি, মহাকাশযানের নেতা হওয়া খুব কষ্টের কাজ। সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলি নিজের দায়িত্বে নিতে হয়। এখানে থেকে যাওয়াটা খুব বিপদের কাজ হচ্ছে, কিন্তু আমি কী করব? পলকে না নিয়ে আমি যাই কেমন করে, আমি জানি সে ফেরত আসবে, আমার কেমন একটা বিশ্বাস আছে। কিন্তু ঝুকিটা কী বেশি নিয়ে নিলাম? আমি নিজের প্রাণ নিয়ে ছেলেখেলা করতে পারি, কিন্তু অন্যদের প্রাণ নিয়ে তো আমি ছেলেখেলা করতে পারি না। সবচেয়ে ভালো হত কি হলে জান? সবচেয়ে ভালো হত, যদি এখন দেখা যেত ট্রাইটনের অধিবাসীরা আমাদের জোর করে আটকে রেখেছে, হাইপারডাইত দিতে দিচ্ছে না। আমাকে তা হলে আর কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হত না।

    একটু হাসির শব্দ হল প্রথম, তারপর ভরাট গলায় কে যেন বলে, তোমাদের বুঝে ওঠা খুব মুশকিল। যখন আমার মনে হয় কাউকে পুরোপুরি বুঝে ফেলেছি, তখন সে এমন একটা কাজ করে, যে, আমাকে আবার প্রায় গোড়া থেকে শুরু করতে হয়।

    লু চমকে উঠে বলল, কে? কে কথা বলছে?

    আমি। আমি সিডিসি।

    সিডিসি?

    শ্রী।

    নীষা তোমার প্রোগ্রাম পাল্টে দিয়েছে বুঝি?

    ঠিক ধরেছ। চমৎকার মেয়েটি নীষা।

    হ্যাঁ।

    একটু চুপচাপ, কিন্তু চমৎকার!

    হ্যাঁ।

    কী?

    এক মুহূর্ত অপেক্ষা করে সিডিসি বলল, একটা কথা বলব?

    বল।

    আমার কী ভয় হচ্ছিল, জান? কী? ‘

    ভয় হচ্ছিল যে, ট্রাইটনের অধিবাসীরা আমাকে অচল করে দেবে। ইচ্ছা করলেই কিন্তু পারে, চারটা ভিন্ন ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি যদি পিকো সেকেন্ড পরে পরে পাঠায়, সেন্ট্রাল সি পি ইউটা অচল হয়ে থাকবে। ওরা পাঠিয়ে পরীক্ষা করে দেখেছে, আমি জানি। কিন্তু আমাকে অচল করে দেয় নি।

    সত্যি?

    সত্যি। শুধু তাই নয়, আরো একটা কাজ করেছে ওরা।

    কি?

    তেইশ মেগাসাইকেলের ব্যান্ডটা অচল করে রেখেছে।

    তার মানে তুমি আর কেন্দ্রীয় মহাকাশকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে পারবে না?

    না।

    ল চিন্তিতভাবে নিজের ঠোঁটটা কামড়াতে থাকে।

    সিডিসি একটু পরে বলল, সবকিছু দেখে আমার কী মনে হচ্ছে জান?

    কী?

    মনে হচ্ছে তোমাদের নিয়ে ট্রাইটনের প্রাণীদের কোনো-একটা পরিকল্পনা আছে। তোমাদের তারা এই মুহূর্তে কোনো ক্ষতি করতে চায় না। আবার তোমাদের যেতে দিতেও চায় না।

    ঠিক।

    তাই মনে হচ্ছে, তুমি ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছ, আমাদের একটু অপেক্ষা করে দেখতে হবে।

    লু কোনো উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকে। সিডিসি একটু পরে বলল, লু, তোমার হয়তো একটু ঘুমানোর চেষ্টা করা উচিত।

    ঠিকই বলেছ সিডিসি।

    ব্যবস্থা করে দেব? চমৎকার কিছু ক্লাসিক্যাল মিউজিক আছে আমার কাছে, আমার নিজের খুব প্রিয়। হালকা সুরে লাগিয়ে দেব?

    ঠিক আছে, দাও।

    লু জেগে জেগে ক্লাসিক্যাল মিউজিক শুনতে থাকে, স্বীকার না করে পারে না, সিডিসির সংগীতজ্ঞান খারাপ নয়, তার নিজের থেকে অনেক ভালো।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleটুনটুনি ও ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    Next Article আমার বন্ধু রাশেদ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    Related Articles

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    ছোটগল্প – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সাদাসিধে কথা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মেকু কাহিনী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    আমার বন্ধু রাশেদ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    টুনটুনি ও ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    আরো টুনটুনি ও আরো ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }