Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সায়েন্স ফিকশান সমগ্র ১ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল এক পাতা গল্প978 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০১. লাল গাড়ি

    ০১. লাল গাড়ি

    আমি আর বাবা বাজার করে ফিরে আসছিলাম। বাজারের বড় ব্যাগটা আমার হাতে বাবার হাতে একটা মাঝারি বোয়াল মাছ। বাবা বোয়াল মাছটাকে উপরে তুলে ধরে। রেখে সেটার সাথে কথা বলছেন। তাঁর একটু মাথা-খারাপের ভাব আছে, এটা হচ্ছে। তার এক নাম্বার লক্ষণ। জন্তু-জানোয়ার, পশুপাখি, গাছপালা সবার সাথে কথা বলেন। বোয়াল মাছটাকে জিজ্ঞেস করলেন, বাবা বোয়াল মিয়া, আপনার শরীরটা ভালো? কোন গাং থেকে এসেছেন?

    মাছটি মনে হয় এক্ষুণি ধরে এনেছে, এখনো জ্যান্ত। বাবার কথা শুনেই কি না জানি না, দুর্বলভাবে লেজটা একবার নেড়ে দিল। বাবা গম্ভীরভাবে মাথা নেড়ে বললেন, আপনি বাস্তবিকই সত্যি কথা বলেছেন। নীল গাঙের পানি বড়ই ঘোলা। আপনার বেশি কষ্ট হয় নাই তো?

    মাছটির আলাপে বেশি উৎসাহ নেই দেখে বাবা সেটাকে একবার ঝাঁকিয়ে দিলেন, তারপর সেটাকে কানের কাছে ধরে রেখে কিছু-একটা শুনে ফেললেন। মাথা নাড়তে নাড়তে বললেন, খাওয়াদাওয়ার কষ্ট? সেটা কার নাই বলেন, তেয়াত্তর সালে মানুষ পর্যন্ত না খেয়ে রাস্তায় মরে আছে—

    আমি বললাম, বাবা, তুমি আসলেই মাছের কথা শুনতে পাও?

    বাবা অবাক হয়ে বললেন, কেন শুনতে পাব না?

    কেমন করে শোন?

    ওরা বলে, তাই শুনি।

    আমরা তো শুনি না।

    বাবা গম্ভীর হয়ে মাথা নাড়তে নাড়তে বললেন, শুনতে চাইলে সবাই শুনতে পারে। কেউ তো শুনতে চায় না।

    তুমি আমাকে শোনাতে পারবে?

    বাবা চোখ উজ্জ্বল করে বললেন, কেন পারব না? এক শ’ বার পারব। তুই শুনবি?

    আমি বললাম, শুনব।

    বাবা বড় একটা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে বললেন, নে, ব্যাগটা রাখ। তারপর চোখ। বন্ধ করে গাছের সাথে তোর কানটা লাগা। যখন গাছের নিঃশ্বাসের শব্দ শুনতে পারবি তখন বলবি, জনাৰ গাছ, আপনার শরীরটা ভালো?

    আমি বললাম, আপনি করে কেন বলতে হয়?

    কত বয়স গাছের, সম্মান করে কথা বলতে হয় না? নে, ব্যাগটা আমার হাতে দো।

    সড়ক দিয়ে আরো কত লোকজন যাচ্ছে-আসছে, এর মাঝে চোখ বন্ধ করে গাছের সাথে কান লাগিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি কেমন করে? এমনিতেই বাবার একটু মাথাখারাপ বলে আমাদের কত যন্ত্রণা, চেনা কেউ-একজন দেখে ফেললে কোনো উপায় আছে? আমি বললাম, আজ থাক বাবা, আরেকদিন নেব।

    বাবার মন-খারাপ হল, মুখটা কালো করে বললেন, এই জন্যে তোরা শুনতে পারিস না, তোদের শোনার আগ্রহ নাই।

    বাবা আরো কী বলতে চাইছিলেন, কিন্তু হঠাৎ দূরে কী দেখে থেমে গেলেন। আমিও তাকালাম, দূরে ধুলা উড়িয়ে সড়ক দিয়ে শব্দ করে কী-একটা আসছে। গ্রামের সড়ক, একটা দুইটা রিকশা ছাড়া কিছু যায় না। মাঝে মাঝে পাশের গঞ্জ থেকে একটা পুরানো ট্রাক আসে। মেম্বার সাহেব একটা মোটর সাইকেল কিনেছেন, তাঁর বড় শালা মাঝে মাঝে ফটফট শব্দ করে চালিয়ে বেড়ায়, এর বেশি কিছু নেই। আমিও তাকিয়ে রইলাম, প্রচণ্ড শব্দ করে ধলা উড়িয়ে লাল রংয়ের একটা গাড়ি পাশ কাটিয়ে চলে গেল। এই সড়ক দিয়ে গাড়ি খুব একটা আসে না, আশেপাশে যারা ছিল সবাই হাঁ করে গাড়িটার দিকে তাকিয়ে রইল।

    বাবাও খানিকক্ষণ অবাক হয়ে গাড়িটার দিকে তাকিয়ে রইলেন, তারপর বললেন, ইস্! কী একটা জিনিস।

    আমি জিজ্ঞেস করলাম, গাড়ি যায় কেমন করে, বাবা?

    বাবা অনেকক্ষণ চিন্তা করে বললেন, ভিতরে মনে হয় পাওয়ার আছে। যখন পাওয়ার সামনে দেয় তখন সামনে যায়, যখন পিছনে দেয় তখন পিছনে যায়। পাওয়ার হচ্ছে বড় জিনিস, যার পাওয়ার নাই ভার কিছু নাই। ( কথাটার কি মানে আমি ঠিক বুঝলাম না, পাগল মানুষ; যখন যেটা মনে হয় সেটা বলে ফেলেন, লোকজন শুনে হাসাহাসি করে। খুব খারাপ লাগে তখন। আমার যখন অনেক পয়সা হবে তখন বাবাকে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাব, আজকাল নাকি পাগলের চিকিৎসা হয়।

    বাবার জন্য আমার বড় কষ্ট হয়।

     

    বাড়ির সামনে এসে দেখি সেখানে মন্ত ভিড়। লাল গাড়িটা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে আর সেটাকে ঘিরে অনেক লোকজন। সবাই গাড়িটা একবার ছুঁয়ে দেখতে চায়। ফুলপ্যান্ট পরা একজন মানুষ নিশ্চয়ই গাড়ির ড্রাইভার হবে, মুখের কোনে একটা সিগারেট কামড়ে ধরে হুঙ্কার দিয়ে বলছে, খবরদার, কেউ কাছে আসবে না, একেবারে

    জানে মেরে ফেলব। আমি হঠাৎ করে বুঝতে পারলাম যে, ছোট খালা এসেছেন। ছোট খালা হচ্ছেন আমাদের বড়লোক আত্মীয়দের মাঝে এক নম্বর। চেহারা খুব ভালো বলে নানাজান অনেক বড় ঘরে বিয়ে দিয়েছিলেন। ছোট খাল ইঞ্জিনিয়ার, জার্মানি বা আমেরিকা কোথায় জানি গিয়েছিলেন, সেখান থেকে একটা গাড়ি নিয়ে এসেছেন। এটা নিশ্চয়ই সেই গাড়ি।

    আমি প্রায় ছুটে ভিতরে ঢুকে গেলাম, বাইরে যেরকম ভিড়, ভিতরেও সেরকম ভিড়। উঠানের মাঝখানে একটা চেয়ারে ছোট খালা বসে আছেন। তাঁকে ঘিরে পাড়ার সব বৌ-ঝিরা দাঁড়িয়ে আছে। ছোট খালা দরদর করে ঘামছেন, রাঙা বুবু একটা হাতপাখা দিয়ে তাঁকে প্রাণপণে বাতাস করে যাচ্ছে। ছোট খালা একসময়ে নাকি খুব সুন্দরী ছিলেন, কিন্তু এখন আর দেখে বোঝা যায় না, মোটা হয়ে গোল একটা কলসির মতো হয়ে গেছেন। গায়ের রং অবশ্যি ধবধবে ফর্সা, কেমন যেন একটা গোলাপী আভা। তার পাশে আমার মাকে দেখাচ্ছিল শুকনা, কালো এবং অনেক বেশি বয়স।

    আমি ছোট খালু কিংবা তাঁদের ছেলেমেয়েদের খুঁজে পেলাম না, মনে হয় ড্রাইভারকে নিয়ে একাই এসেছেন। মা তাঁর ছোট বোনকে দেখে খুব খুশি হয়েছেন, কী করবেন বুঝতে পারছেন না। আমাকে দেখে বললেন, বিলু, ভোর ছোট খালাকে সালাম কর।

    আমি ব্যাগটা রেখে ছোট খালাকে সালাম করতে এগিয়ে যেতেই ছোট খালা পা গুটিয়ে নিয়ে বললেন, থাক, থাক, সালাম করতে হবে না।

    আমি তবুও হামলে পড়ে সালাম করে ফেললাম। ছোট খালা বললেন, তুই বিলু কত বড় হয়েছিস দেখি!

    আমি কী বলব বুঝতে না পেরে শুধু বোকার মতো একটু হাসলাম। ছোট খালা

    বললেন, স্কলারশিপ পেয়েছিস শুনলাম, খুব ভালো, খুব ভালো।

    মা বললেন, এই সংসারে কি পড়ার সময় পায়? তার মাঝে বৃত্তি পেয়ে গেল, ডিস্ট্রিক্টের মাঝে এক নাম্বার।

    মা এমনভাবে বললেন যে শুনে আমি নিজেই লজ্জা পেয়ে গেলাম। কিছু-একটা বলতে হয়, কিন্তু কী বলব বুঝতে পারলাম না, পায়ের নখ দিয়ে উঠানের মাটি খুঁচিয়ে তুলতে থাকলাম। মা জিজ্ঞেস করলেন, তোর বাবা কই?

    বাইরে। গাড়ি দেখছেন। কী সুন্দর গাড়ি মা। তুমি দেখেছ?

    ছোট খালা খুশি হয়ে বললেন, কই আর সুন্দর। মেটাল কালার চাচ্ছিলাম, পাওয়া গেল না।

    মা বললেন, তোর বাবাকে ডেকে আন্ গিয়ে, যা!

    আমি ছুটে বের হয়ে গেলাম।

     

    বাবা ছোট খালাকে দেখেই বললেন, শানু, তুমি এত মোটা হলে কেমন করে? ভালোমন্দ অনেক খাও মনে হয়।

    বাবা পাগল মানুষ, কখন কী বলতে হয় জানেন না, যখন যেটা মুখে আসে বলে ফেলেন। বাবার কথা শুনে ছোট খালা একেবারে পাকা টমেটোর মতো লাল হয়ে গেলেন। তাই দেখে মা খুব রেগে গেলেন, বললেন, কী—সব কথা বলেন আপনি, মাথামুণ্ডু কিছু নাই।

    বাবা মুখ গম্ভীর করে বললেন, ভুল বলছি আমি? তুমি তো মোটা হও নাইহয়েছ? ভালোমন্দ খেতে পাও না, কেমন করে মোটা হবে?

    মা লজ্জায় একেবারে মাটির সাথে মিশে যাচ্ছিলেন, কোনোমতে বললেন, আপনি এখন যান তো দেখি।

    ঠিক তখন একটা মোরগ কক কক করে ডেকে উঠল, হয়তো আকাশে একটা চিল উড়ে যেতে দেখেছে বা অন্য কিছু। বাবা লাফিয়ে উঠে বললেন, ঐ দেখ, মোরগটাও বলেছে, দেখেছ? দেখেছ?

    বাবা মারগটার দিকে এগিয়ে গেলেন, ভুল বলেছি আমি? ভুল বলেছি?

    লজ্জায় দুঃখে মায়ের চোখে একেবারে পানি এসে যাচ্ছিল। ছোট খালা সামলে নিয়ে বললেন, দুলাভাই তো দেখি একেবারে বদ্ধ পাগল! বুবু, তোমার একি অবস্থা? ছেলেপুলে নিয়ে কী করবে তুমি?

    মা লম্বা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, আল্লাহ্ দিয়েছে, আল্লাহ্ দেখবে। আমি আস্তে আস্তে বাইরে চলে এলাম, মনটা কেন জানি খারাপ হয়ে গেল।

     

    দুপুরবেলা খেতে বসে ছোট খালা শুধু ছটফট করলেন। বাসায় চেয়ার-টেবিলে বসে খান, এখানে মেঝেতে মাদুর পেতে বসতে নিশ্চয়ই খুব কষ্ট হচ্ছে। ছোট খালা বেশি কিছু খেলেনও না, খাবারগুলো শুধু হাত দিয়ে নাড়াচাড়া করলেন। এত কম খেয়ে ছোট খালা এত মোটা হলেন কেমন করে কে জানে!

    খাবারের মাঝামাঝি হঠাৎ ছোট খালা বললেন, বুবু, বিলুকে নিয়ে যাই আমার সাথে, ঢাকায় থেকে পড়াশোনা করবে।

    আমার নিজের কানকে বিশ্বাস হল না, এত বড় কপাল কি আমার সত্যি কখনো হবে? মায়ের মুখের দিকে তাকালাম, মা কি রাজি হবেন? যদি না বলে বসেন?

    মা কোনো উত্তর না দিয়ে আমার দিকে তাকালেন, তারপর বাবার দিকে তাকালেন। বাবা বোয়াল মাছের মাথাটা খুব যত্ন করে চুষছেন, ছোট খালার কথা শুনতে পেলেন বলে মনে হল না।

    ছোট খালা আবার জিজ্ঞেস করলেন, কী বল, বুবু?

    উত্তেজনায় আমার নিঃশ্বাস প্রায় বন্ধ হয়ে যাবার অবস্থা হল। ছোট খালার বাসায় থাকব আমি? লাল গাড়ি করে যাব-আসব আমি? ফ্রিজ থেকে বরফ বের করে খাব? আমি আবার মায়ের মুখের দিকে খুব আশা নিয়ে তাকালাম। মা খানিকক্ষণ আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে খুব আস্তে আস্তে বললেন, ঠিক আছে শানু।

    আমার ইচ্ছে হল খুশিতে একটা লাফ দিই, অনেক কষ্ট করে নিজেকে থামিয়ে রাখলাম।

    ছোট খালা বললেন, আজই চলুক আমার সাথে। গাড়ি করে চলে যাবে।

    মা একটু চমকে উঠে বললেন, আজই?

    আমি উদগ্রীব হয়ে বললাম, হ্যাঁ মা, যাই?

    মায়ের মুখে কেমন জানি একটা দুঃখের ছায়া পড়ল। আবার বাবার দিকে তাকালেন, বাবা তখনো গম্ভীর মুখে মাছের মাথাটা চুষছেন। মা খুব আস্তে আস্তে, প্রায় শোনা যায় না স্বরে বললেন, ঠিক আছে শানু।

     

    গাড়ির চারদিকে সবাই ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে। ড্রাইভার জোরে জোরে দুইটা হর্ন দিল, তবু সামনে থেকে কেউ নড়ল না। ড্রাইভার চাবি ঘুরিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিতেই সবাই একটু সরে দাঁড়াল। বড়রা তখন ছোট বাচ্চাদের ঠেলে ঠেলে সরিয়ে গাড়িটা যাবার একটা জায়গা করে দিল। আমি গাড়ির সামনে ড্রাইভারের পাশে বসেছি, ছোট খালা বসেছেন পিছনে। গাড়ির পিছন থেকে সবকিছু অন্যরকম দেখায়। নিজেকে কেমন

    জানি রাজা রাজা মনে হয়।

    আমি বাড়ির ভিতরে তাকালাম, বেড়ার ফাঁক দিয়ে মা তাকিয়ে আছেন। মায়ের চোখে আঁচল। মায়ের পিছনে রাঙাবুবু। বড় বুবু শশুরবাড়ি থেকে আসতে পারে নি। লাবুটা বোকার মতন চিৎকার করে কাঁদছে, সেও আমার সাথে গাড়ি করে যেতে চায়। রশীদ চাচা তাকে শক্ত করে ধরে রেখেছে। এক পাশে দুলাল আমার লাইব্রেরির বই কয়টা শক্ত করে বুকে চেপে ধরে রেখে কেমন জানি হতভম্বের মতো দাঁড়িয়ে আছে। দুলাল হচ্ছে আমার প্রাণের বন্ধু—এরকম হঠাৎ করে এভাবে চলে যাব সে এখনো বিশ্বাসই করতে পারছে না। দুলালকে আমি সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে এসেছি, আমার লাইব্রেরির সবগুলো বই, আমাদের গ্রিন বয়েজ ক্লাবের ফুটবলটা, দেয়াল পত্রিকার লেখাগুলো। এতগুলো ঝামেলা সে একা কেমন করে সামলাবে কে জানে!

    ড্রাইভার ঠিক যখন গাড়িটা ছেড়ে দিচ্ছে তখন হঠাৎ কোথা থেকে জানি বাবা এসে হাজির হলেন। গাড়ির জানালা দিয়ে অবাক হয়ে ভিতরে আমার দিকে তাকালেন। তারপর অবাক হয়ে বললেন, এইট

    আমি মাথা নাড়লাম।

    বাবা বললেন, ভিতরে বসে আছিস যে? গাড়ি যে ছেড়ে দেবে এক্ষুনি—

    আমি বললাম, বাবা, আমি তো ছোট খালার সাথে যাচ্ছি।

    কী বললি?

    আমি ছোট খালার সাথে যাচ্ছি।

    কোথায়–

    আমি কিছু বলার আগেই ড্রাইভার গাড়ি ছেড়ে দিল। ধুলা উড়িয়ে বাবাকে পিছনে ফেলে গাড়ি ছুটে চলে গেল সামনে। আমি পিছনে তাকিয়ে দেখলাম বাবা অবাক হয়ে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন।

    আমার প্রথমবার কেমন জানি একটু মন-খারাপ হয়ে গেল।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleটুনটুনি ও ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    Next Article আমার বন্ধু রাশেদ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    Related Articles

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    ছোটগল্প – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সাদাসিধে কথা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মেকু কাহিনী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    আমার বন্ধু রাশেদ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    টুনটুনি ও ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    আরো টুনটুনি ও আরো ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }