Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সায়েন্স ফিকশান সমগ্র ২ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল এক পাতা গল্প892 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০৭. অবলাল সংবেদী চশমা

    রিশান চোখে অবলাল সংবেদী চশমাটা লাগিয়ে সামনে তাকাল। যতদূর চোখ যায় শুকনো পাথর ছড়িয়ে আছে। ঝড়ো বাতাসে ধুলো উড়ছে, তার সাথে এক ধরনের চাপা গর্জন। অত্যন্ত প্রতিকূল আবহাওয়া, এই গ্রহটি মানুষের বসবাসের জন্যে উপযোগী নয়। এই বিশাল গ্রহে দশ বছরের একটি ছেলে কোথাও হারিয়ে গেছে, তাকে খুঁজে বের করা খুব সহজ ব্যাপার নয়।

    রিশান এটমিক ব্লাস্টারটি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। চারটি বিকন ছেড়ে দেয়া হয়েছে, সেগুলো এই এলাকাটি স্ক্যান করা শুরু করেছে, দশ বছরের বাচ্চাটির পোশাকে যে বিপারটি লাগানো আছে সেটা খুঁজে পাওয়া মাত্র সেখানে লক্ষ্যবদ্ধ হয়ে যাবে। তারপর বিকনের সঙ্কেত অনুসরণ করে বাচ্চাটিকে খুঁজে বের করতে হবে। বাচ্চাটি এই বসতি থেকে কতদূরে সরে গিয়েছে তার ওপর নির্ভর করছে তাকে খুঁজে বের করতে কত সময় লাগবে। গ্রহটির বায়ুমণ্ডল যদি এত অস্বচ্ছ এবং এত আয়োনিত না হত তাহলে মহাকাশযানের অনুসন্ধানী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা যেত, কিন্তু এই গ্রহটিতে তার কোনো আশা নেই।

    রিশান ঝড়ো হাওয়ার মাঝে দাঁড়িয়ে তার যোগাযোগ মডিউলটির দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। মানুষের বসতিতে অন্যেরা তার জন্যে অপেক্ষা করছে, বাচ্চাটিকে নিয়ে ফিরে গেলে সবাই মহাকাশযানে ফিরে যাবে। যদি সে বাচ্চাটাকে খুঁজে না পায়? যদি কোনো কারণে বাচ্চাটি তার বিপারটি বন্ধ করে দিয়ে থাকে? রিশান জোর করে চিন্তাটি মাথা থেকে সরিয়ে দিল।

    ঝড়ো হাওয়ার একটা বড় ঝাঁপটা হঠাৎ রিশানকে প্রায় উড়িয়ে নিতে চায়, সে সাবধানে একটা পাথরের আড়ালে আশ্রয় নিল। হলুদ ধুলো পাক খেয়ে খেয়ে উঠতে থাকে, অন্ধকার হয়ে আসে চারদিক। রিশান দাতে দাঁত চেপে এটমিক ব্লাস্টারটি শক্ত করে ধরে রাখে। এই গ্রহের প্রাণীগুলো কি এখন তাকে লক্ষ করছে? গ্রুনি নামের এককোষী প্রাণী তো বুদ্ধিমান প্রাণী হতে পারে না, বুদ্ধিমান প্রাণীটা তাহলে কী রকম? তাদের জৈবিক ব্যবহার কী রকম? জৈৱিক কথাটি কি ব্যবহার করা যাবে এই প্রাণীটির জন্যে? তারা কি সত্যিই বুদ্ধিমান? মানুষের মতো চিন্তা করতে পারে? মানুষের মতো কি বুদ্ধিমান? যদি সত্যিই মানুষের মতো বুদ্ধিমান হয়ে থাকে তাহলে প্রাণীগুলো মানুষকে মেরে ফেলেছে কেন? আর সত্যিই যদি সবাইকে মেরে ফেলে থাকে তাহলে এই বাচ্চাটিকে কেন বাচিয়ে রেখেছে? রিশান জোর করে চিন্তাটুকু ঠেলে সরিয়ে দেয়, তার কাছে এখন যথেষ্ট তথ্য নেই যে ভেবে সে একটা কূলকিনারা পাবে।

    রিশান এটমিক ব্লাস্টারটি হাতবদল করে তার অবলাল চশমা দিয়ে দূরে তাকাল। কী ভয়ঙ্কর অশরীরী একটি দৃশ্য, সৃষ্টিজগতে কি এর থেকে কুশ্রী, এর থেকে নিরানন্দ কোনো এলাকা আছে? একটি দশ বছরের বাচ্চা কি তার জীবনে এর থেকে ভালো কিছু পেতে পারে না?

    ক্ষীণ একটা শব্দ শুনে রিশান তার যোগাযোগ মডিউলটির দিকে তাকাল, একটা লাল আলো জ্বলছে এবং নিভছে–যার অর্থ বিকন চারটি এই বাচ্চা ছেলেটিকে খুঁজে পেয়েছে। রিশান একটা নিশ্বাস ফেলে বসতিতে যোগাযোগ করল, নরম গলায় বলল, লি–রয়, বাচ্চাটিকে মনে হয় খুঁজে পাওয়া গেছে।

    কোথায়?

    এখান থেকে অনেক দূরে। এত ছোট একটি বাচ্চা একা এত দূরে কেমন করে গেল সেটা একটা রহস্য। আমি যাচ্ছি তাকে আনতে।

    বেশ। আমরা তোমার জন্যে অপেক্ষা করছি। এদিকে আরো কিছু বিচিত্র জিনিস ঘটেছে–

    কী?

    তুমি ফিরে এস তখন বলব। তোমার কিছু সাহায্য লাগলে বল

    বলব।

    রিশান যোগাযোগ কেটে দিয়ে হাঁটতে শুরু করে। দীর্ঘ পথ, হেঁটে যেতে অনেকক্ষণ লাগবে। একটু আগে যেটা ঝড়ো হাওয়া ছিল, মনে হচ্ছে ধীরে ধীরে সেটা পুরোপুরি একটা ঝড়ে পরিণত হতে যাচ্ছে।

    বিকনের সঙ্কেত অনুসরণ করে রিশান হাঁটছে। খালি চোখে গ্রহটিকে যেরকম দুর্গম মনে হচ্ছিল হাঁটতে গিয়ে অনুভব করে সেটি তার থেকে অনেক বেশি দুর্গম। ছোট একটা বাই ভার্বাল নিয়ে আসার দরকার ছিল, কিন্তু কিছু আনা হয় নি। সেটা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে সে এখন হাঁটার দিকে মনোযোগ দেয়। পুরো গ্রহটি পাথুরে মাঝে মাঝে বিশাল গহ্বর। সমস্ত পথ উঁচু–নিচু, তার মাঝে হলুদ এক ধরনের ধুলো উড়ছে। মাধ্যাকর্ষণ বল কম বলে প্রতি পদক্ষেপেই সে একটু করে ভেসে উপরে উঠে যাচ্ছে। ঝড়ের গতি আস্তে আস্তে বাড়ছে, তার সাথে সাথে গ্রহের ঘোলাটে আলোটাও মনে হচ্ছে আস্তে আস্তে তীব্রতর হচ্ছে। তবে আলোটি স্থির নয়, ক্রমাগত নড়ছে, যার ফলে চোখের উপর প্রচণ্ড চাপ পড়ছে।

    বিকনের সঙ্কেত অনুসরণ করে হেঁটে হেঁটে রিশান যত কাছে যেতে থাকে যোগাযোগ মডিউলে লাল আলোটি তত স্পষ্ট হতে থাকে। আলোটি কিছুক্ষণ আগেও নড়ছিল, এখন স্থির হয়েছে। মনে হচ্ছে ছেলেটি হাটা থামিয়ে কোথাও বিশ্রাম নিচ্ছে। কাছাকাছি পৌঁছানোর ফলে রিশান যোগাযোগ মডিউলে আরো নানা ধরনের তথ্য পেতে থাকে, ইচ্ছে করলে সে এখন ছেলেটির সাথে কথা বলতে পারে, এমনকি হলোগ্রাফিক ছবিও পাঠাতে পারে, কিন্তু সে কিছুই করল না। দশ বছরের একটি বাচ্চা নেহাতই শিশু, তার সাথে একটু সতর্ক হয়ে যোগাযোগ করা দরকার। বিশেষ করে সে যখন এ ধরনের কিছুই আশা করছে না।

    শেষ অংশটি হল সবচেয়ে কঠিন। খাড়া একটি পাহাড় বেয়ে উঠে আবার নিচে নেমে যেতে হল। এখানকার পাথরগুলোও দুর্বল, পায়ের চাপে হয় খুলে আসছিল নাহয় ভেঙে যাচ্ছিল। রিশান প্রচণ্ড পরিশ্রমে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। একটি বাই ভার্বাল না নিয়ে আসা নেহাতই বোকামি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আর না পেরে শক্ত একটা পাথর খুঁজে বের করে সেখানে হেলান দিয়ে বসে বড় বড় নিশ্বাস নিতে থাকে। চারদিকে কিছুক্ষণের জন্যে অন্ধকার নেমে এসেছে, হঠাৎ কোথায় জানি আলো ঝলসে উঠল, আর রিশান চমকে উঠে দেখে তার সামনে একটি মূর্তি দাঁড়িয়ে আছে। অবিকল মানুষের মতো, একটি নারীমূর্তি।

    রিশান চিৎকার করতে গিয়ে নিজেকে সামলে নিয়ে চোখ বন্ধ করল, বিড়বিড় করে নিজেকে বলল, দৃষ্টিবিভ্রম হচ্ছে আমার। অতিরিক্ত পরিশ্রমে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গিয়ে নানা ধরনের দৃশ্য দেখছি; যখন খানিকক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে চোখ খুলব, দেখব কিছু নেই। রিশান বড় বড় কয়েকটা নিশ্বাস নিয়ে আবার চোখ খুলল, সত্যিই কোথাও কিছু নেই।

    রিশান বুঝতে পারে এখনো তার বুক ধকধক করছে। নারীমূর্তিটি এত বাস্তব ছিল যে সত্যি সত্যি মনে হচ্ছিল তার সামনে বুঝি একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এখানে মেয়ে কোথা থেকে আসবে? যে বুদ্ধিমান প্রাণীটি রয়েছে সেটি দেখতে পৃথিবীর মেয়েদের মতো হবে। বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। সৃষ্টিকর্তা বলে সত্যিই যদি কেউ থাকে তার কল্পনাশক্তি নিশ্চয়ই এত কম নয় যে, সব বুদ্ধিমান প্রাণীকে মানুষের রূপ দিয়ে তৈরি করবে। রিশান মাথা থেকে চিন্তাটি দূর করে দিল। সে নিজের কাছেও স্বীকার করতে চাইছে না যে সে ভয় পেয়েছে।

    বিকনের সঙ্কেত অনুসরণ করে কিছুক্ষণের মাঝেই সে পাহাড়ের একটা গুহার কাছাকাছি হাজির হল–ভিতর থেকে একটা ক্ষীণ আলোকরশ্মি বের হয়ে আসছে। রিশান বাইরে এক মুহূর্ত অপেক্ষা করে ভিতরে ঢুকল। গুহাটি বেশ বড়, মাঝামাঝি একটা বড় পাথরের উপরে একটা ছোট জিনন ল্যাম্প জ্বলছে, তার কাছাকাছি একটা ছোট ছেলে মহাকাশচারীর পোশাক পরে শুয়ে আছে। রিশানকে ঢুকতে দেখে ছেলেটি বিদ্যুৎগতিতে উঠে দাঁড়ায়, নিচে থেকে কী একটা তুলে নিয়ে লাফিয়ে পিছনে সরে গিয়ে সেটা বিশানের দিকে তাক করে দাঁড়ায়, রিশান জিনিসটি চিনতে পারল, একটা প্রাচীন কিন্তু কার্যকরী অস্ত্র।

    রিশান কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, তার আগেই সে ছেলেটার রিনরিনে গলার স্বর শুনতে পেল, হাতের অস্ত্র ফেলে দাও না হয় গুলি করে তোমার কপোট্রন ফুটো করে দেব।

    রিশান কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, ছেলেটা আবার ধমক দিয়ে ওঠে, এক্ষুনি

    রিশান এটমিক ব্লাস্টারটি ছুঁড়ে ফেলে দিল।

    এবার দুই হাত উপরে তুলে দাঁড়াও।

    রিশান দুই হাত উপরে তুলে দাঁড়াল।

    এবারে ডান হাত নামিয়ে সাবধানে তোমার কপোট্রনের সুইচ অফ করে দাও, একটু ভুল করেছ কি গুলি করে তোমার কপোট্রন উড়িয়ে দেব।

    আমার কপোট্রনের সুইচ নেই, আমি একজন মানুষ।

    আমি বিশ্বাস করি না। ছেলেটা তীব্র স্বরে বলল, এখানে কোনো মানুষ নেই, সব রবোট।

    আমি এখানে থাকি না। আমি পৃথিবী থেকে এসেছি। তোমাকে উদ্ধার করে নিতে এসেছি।

    বিশ্বাস করি না। ছেলেটা তার রিনরিনে গলার স্বরে চিৎকার করে অস্ত্রটা বিপজ্জনকভাবে ঝাঁকিয়ে বলল, বিশ্বাস করি না। তুমি কাছে আসবে না।

    ঠিক আছে, আমি কাছে আসব না।

    কী চাও তুমি?

    আমি তোমাকে বলেছি, আমি একজন মানুষ। এই গ্রহ থেকে একটা বিপদ সঙ্কেত পেয়ে নেমে এসেছি। এসে শুনেছি তুমি এখানে আছ। আমি তাই তোমাকে নিতে এসেছি।

    আমি যেতে চাই না, কোথাও যেতে চাই না, তুমি যাও।

    রিশানের বুক হঠাৎ এই বাচ্চাটির জন্যে গভীর মমতায় ভরে আসে, সে নরম গলায় বলল, তুমি যদি যেতে না চাও আমি তোমাকে জোর করে নেব না সানি। কিন্তু যদি তুমি আমার সাথে কথা বল তাহলে আমি বাজি ধরে বলতে পারি, তুমি আমার সাথে পৃথিবীতে যাবে।

    কেন?

    সেটা আমি তোমাকে এখন বলব না। আমি কি এখন একটু কাছে আসতে পারি?

    না। তুমি কাছে আসবে না।

    ঠিক আছে, তুমি যদি না চাও আমি তোমার কাছে আসব না। এই দেখ আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি

    না, তুমি চলে যাও

    বিশান মাথা নাড়ল, না আমি যাব না।

    যদি না যাও, তাহলে আমি তোমাকে গুলি করব।

    রিশান আবার মাথা নাড়ল, না তুমি গুলি করবে না। তুমি একজন মানুষ, আমি আরেকজন মানুষ। একজন মানুষ কখনো আরেকজন মানুষকে গুলি করে না।

    ছেলেটি খানিকক্ষণ রিশানের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল, তুমি সত্যি মানুষ?

    আমি সত্যি মানুষ।

    তুমি হাসতে পার?

    আমি হাসতে পারি।

    ছেলেটি একটু ইতস্তত করে বলল, তাহলে তুমি একবার হাস।

    রিশান হাসিমুখে বলল, মানুষ এমনি এমনি তো হাসতে পারে না, তুমি একটা হাসির গল্প বল, আমি হাসব।

    আমি হাসির গল্প জানি না। ছেলেটি খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, তুমি জান?

    রিশান আরো একটু এগিয়ে যায়, আমিও খুব বেশি জানি না কিন্তু কয়েকটা জানি। তুমি যদি শুনতে চাও, তোমাকে আমি বলব।

    ছেলেটি কোনো কথা বলল না। রিশান আরো একটু এগিয়ে যায়, ছেলেটি তখনো তার দিকে প্রাচীন অস্ত্রটি তাক করে ধরে রেখেছে। রিশান বলল, তুমি যেভাবে নিজেকে রক্ষা করছ আমি দেখে মুগ্ধ হয়েছি! তুমি যদি চাও, আমি তোমাকে আমার অস্ত্রটি দেখাতে পারি। দেখবে?

    ছেলেটি মাথা নাড়ল। রিশান সাবধানে এটমিক ব্লাস্টারটি হাতে তুলে নিয়ে গুহার বাইরে দূরে একটা বড় পাথরের দিকে তাক করে ট্রিগার টেনে ধরে, একটা নীল আলো ঝলসে উঠে সাথে সাথে পুরো পাথরটি চূর্ণ হয়ে উড়ে যায়। ছেলেটি অবাক হয়ে সেদিকে তাকিয়ে রইল। রিশান এটমিক ব্লাস্টারটি সানির দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, তুমি নেবে?

    ছেলেটি সাগ্রহে সেটা টেনে নিল। রিশান বলল, এখন তুমি আমাকে কাছে বসতে দেবে?

    ছেলেটি মাথা নাড়ল, বলল, বস।

    রিশান ছেলেটার কাছে বসে তার দিকে তাকাল, মহাকাশচারীর পোশাকের স্বচ্ছ হেলমেটের ভিতরে একটি কমবয়সী শিশু–চোখে এক ধরনের বিস্ময় নিয়ে রিশানের দিকে তাকিয়ে আছে। রিশানের খুব ইচ্ছে করল তার চুলে হাত বুলিয়ে দিয়ে কোমল স্নেহের একটা কথা বলে। কিন্তু সেটি সম্ভব নয়, বিষাক্ত গ্যাসের গ্রহটিতে মহাকাশচারীর পোশাকের আড়ালে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে, তাছাড়া দশ বছরের এই ছেলেটিকে কেউ কখনো স্নেহের কথা বলে নি। অনভ্যস্ত হাতে যে অস্ত্র ধরে রাখে, তাকে স্নেহের কথা বললে সে কি সেটি বুঝতে পারবে?

    রিশান একটি নিশ্বাস ফেলে নরম গলায় বলল, সানি, চল আমরা তাহলে যাই।

    কোথায়?

    প্রথমে বসতিতে, সেখানে অন্য সবাইকে নিয়ে মহাকাশযানে। ছেলেটা একটু অবাক হয়ে রিশানের দিকে তাকাল, তারপর মাথা নেড়ে বলল, এখন তো যেতে পারব না।

    কেন?

    দেখছ না ঝড় উঠেছে। এই ঝড় বেড়ে যাবে তারপর আকাশ থেকে আগুন পড়তে থাকবে–

    আগুন?

    হ্যাঁ, দেখা যায় না কিন্তু আগুন। যেখানে পড়বে সেটা দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকবে! দেখছ না আমি এই গুহায় বসে আছি।

    রিশান বাইরে তাকাল, সত্যি বাইরে ঝড়ের গতি অনেক বেড়েছে আর স্থানে স্থানে সত্যি নীলাভ এক ধরনের আগুন ধিকিধিকি করে জ্বলছে।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleআবারো টুনটুনি ও আবারো ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    Next Article আমি তপু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    Related Articles

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    ছোটগল্প – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সাদাসিধে কথা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মেকু কাহিনী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    আমার বন্ধু রাশেদ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সায়েন্স ফিকশান সমগ্র ১ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    টুনটুনি ও ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }