Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সায়েন্স ফিকশান সমগ্র ৩ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল এক পাতা গল্প1002 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ২.১ মহাকাশযানটি আশ্চর্য রকম নীরব

    মহাকাশযানটি আশ্চর্য রকম নীরব। গতিবেগ বাড়ানোর বা কমানোর সময় তার শক্তিশালী ইঞ্জিনটি চালু করা হয় তখন তার চাপা গুমগুম শব্দ অনুভব করা যায়। এখন এটি একটি বোয়াইট ডোয়ার্ফ২২ ধরনের সাধারণ নক্ষত্রের মহাকর্ষ বলে আটকা পড়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, ইঞ্জিনগুলো চালু করে রাখা নেই বলে কিছু বোঝার উপায় নেই। মহাকাশযানের গোলাকার জানালাগুলো দিয়ে বাইরে তাকালে অপরিচিত নক্ষত্রগুলো চোখে পড়ে, সেগুলো দেখে মহাবিশ্বের কোথায় তারা চলে এসেছে সেটি বোঝার কোনো উপায় নেই।

    মহাকাশযানের অপ্রয়োজনীয় আলোগুলো নিভিয়ে রাখা হয়েছে বলে পুরো মহাকাশযানে এক ধরনের কোমল আলো এবং অন্ধকার। মহাকাশযানের তীব্র চোখ ধাঁধানো আলো নেই বলে এখানে এক ধরনের শান্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। ইরন মহাকাশযানের গোল জানালার সামনে দাঁড়িয়ে বাইরের নিকষ কালো অন্ধকার মহাকাশের অসংখ্য নক্ষত্রের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে একটা ছোট দীর্ঘশ্বাস ফেলল। মহাকাশযানের এই শান্ত পরিবেশটুকু আসলে তাদের মানসিক অবস্থার প্রতিফলন নয়। তারা ভিতরে ভিতরে অশান্ত এবং অস্থির। কোথায় আছে এবং কোথায় যাচ্ছে জানে না বলে কিছুতেই স্থির হয়ে কোথাও বসতে পারছে না, ঠাণ্ডা মাথায় কিছু ভাবতে পারছে না। মহাকাশযানের মূল কম্পিউটার গত কয়েকদিন থেকে হিসাব করে যাচ্ছে, মহাকাশযানের তথ্যকেন্দ্রে রাখা মহাকাশের গ্যালাক্সি ও নক্ষত্রের তালিকার সাথে চারপাশের নক্ষত্রের অবস্থান মিলিয়ে বের করার চেষ্টা করছে তারা এখন কোথায়। কিন্তু এখনো কোনো লাভ হয় নি।

    ইরন একটা ছোট নিশ্বাস ফেলে মহাকাশযানের ডকিং বে৩ এর দিকে হাঁটতে থাকে। জায়গাটা মহাকাশযানের বাইরের দিকে, সেখানে বিশাল গোলাকার স্বচ্ছ ছাদের ভিতর দিয়ে বাইরে দেখা যায়, বিশাল বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের তুলনায় তারা কত ক্ষুদ্র ব্যাপারটি হঠাৎ করে নতুনভাবে যেন তারা অনুভব করতে পারে।

    ইরন মহাকাশযানের মূল লিফটে করে উপরের দিকে যেতে থাকে। বড় একটা করিডোর ধরে হেঁটে দ্বিতীয় একটি লিফটে করে ডকিং বেতে হাজির হল। গোলাকার ঘরটির মাঝামাঝি জায়গায় বসার জন্য আরামদায়ক কিছু চেয়ার সাজানো রয়েছে। তার একটিতে ত্রালুস এবং শুমান্তি পাশাপাশি অন্তরঙ্গভাবে বসে আছে। ইরনকে দেখে দুজনেই অবাক হয়ে। তার দিকে তাকাল। এই ডকিং বেতে সে আগে কখনো আসে নি। ইরন মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল, তোমরা এখানে? সময় কাটানোর জন্য ভালো একটা জায়গা পেয়েছ মনে হচ্ছে।

    হ্যাঁ, খুব সুন্দর জায়গা। ত্রালুস মাথা নেড়ে বলল, এখানে বসে বাইরে তাকাতে খুব ভালো লাগে।

    শিল্ডিংয়ের কী অবস্থা কে জানে। বাড়াবাড়ি রেডিয়েশান হলে এখানে থেকো না।

    ত্রালুস মাথা নাড়ল, বলল, না, থাকব না।

    ইরন একটা চেয়ারে বসে উপরের দিকে তাকাল। নিকষ কালো অন্ধকারে নক্ষত্রগুলো জ্বলজ্বল করছে। মাঝামাঝি একটা স্পাইরাল গ্যালাক্সি দেখা যাচ্ছে। দূরে দুটি নক্ষত্রপুঞ্জ। এই আকাশের একটি নক্ষত্রকেও তারা আগে কখনো দেখে নি। ইরন আকাশ থেকে চোখ ফিরিয়ে এনে ত্ৰালুস এবং শুমান্তির দিকে তাকাল, বলল, তোমরা নিশ্চয়ই খুব অস্থির হয়ে আছ, নিশ্চয়ই খুব অশান্তিতে রয়েছ। আমি দুঃখিত যে এ রকম একটা অবস্থায় আছি অথচ কিছু করতে পারছি না।

    ত্রালুস এবং শুমান্তি অবাক হয়ে ইরনের দিকে তাকাল। ত্ৰালুস একটু ইতস্তত করে বলল, কিন্তু ইরন

    কী?

    আসলে আমরা কিন্তু একেবারেই অশান্তিতে নেই। আমরা খুব আনন্দের মাঝে আছি। আমাদের আসলে খুব ভালো লাগছে।

    ভালো লাগছে?

    হ্যাঁ। কী চমৎকার শান্ত একটা পরিবেশ। নিরিবিলি সুমসাম। তা ছাড়া

    তা ছাড়া?

    তা ছাড়া আমরা তো আসলে খুব অস্বাভাবিক একটা পরিবেশে বড় হয়েছিলাম, কখনো নিজেদের ক্লোন ছাড়া অন্য কাউকে দেখি নি। নিজেদের ক্লোন আসলে নিজের মতো–তাদের সাথে থাকা আসলে নিজের সাথে থাকার মতো। তাদের সাথে কথাও বলতে হত। না, কারুণ, আমরা জানতাম অন্যেরা কখন কী ভাবছে, কখন কী বলবে!

    তাই নাকি?

    হ্যাঁ। কিন্তু এখন সম্পূর্ণ অন্য ব্যাপার। এই যে আমার শুমান্তির সাথে দেখা হল, তার সাথে কথা বলছি, এটা যে কী আনন্দের তোমাকে বোঝাতে পারব না। সে সম্পূর্ণ ভিন্ন। একটা মানুষ, তার ব্যক্তিত্ব ভিন্ন, সব ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত আছে, চিন্তা করতে পার?

    ইরন একটু অবাক হয়ে ত্রাস এবং শুমান্তির দিকে তাকিয়ে রইল, সে কখনোই চিন্তা করে নি মানুষের একেবারে স্বাভাবিক একটা ব্যাপার–ভিন্ন মানুষের ভিন্ন ব্যক্তিত্ব বা ভিন্নভাবে চিন্তা করতে পারার ব্যাপারটি কারো কাছে অস্বাভাবিক মনে হতে পারে। সে অবিশ্বাসের ভঙ্গিতে মাথা নেড়ে বলল, আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না, তোমরা বলছ যে তোমরা খুব ভালো আছ!

    হ্যাঁ। শুমান্তি এবং ত্রালুস একসাথে মাথা নাড়ল, বলল, আমরা খুব ভালো আছি।

    তোমরা পৃথিবীতে ফিরে যেতে চাও না?

    ত্রালুস এবং শুমান্তির মুখে ভয়ের একটা ছায়া পড়ল। কয়েক মুহূর্ত দুজনেই চুপ করে থাকে। তারপর শুমান্তি নিচু গলায় বলে, না, আমরা পৃথিবীতে ফিরে যেতে চাই না। এখানেই আমরা খুব ভালো আছি। পৃথিবীতে ফিরে গেলে আবার আমাদের ছোট একটা জায়গায় অন্য ক্লোনদের সাথে রাখবে। আমাদের নাম থাকবে না, পরিচয় থাকবে না। শুমাস্তি ভয়ার্ত মুখে মাথা নাড়তে থাকে।

    ইরন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল, সে নিজের চোখে না দেখলে কখনোই বিশ্বাস করত না যে কোনো মানুষ পৃথিবীতে ফিরে যাওয়া থেকে এই মহাকাশযানে জীবন কাটিয়ে দেওয়াকে বেশি আনন্দদায়ক মনে করে। নামপরিচয়হীনভাবে থাকার ব্যাপারটি সে জানে না। ক্লোন করা বেআইনি, যারা করেছে তারা বড় অপরাধ করেছে। কিন্তু একবার করা হয়ে গেলে তাকে নিশ্চয়ই মানুষের সম্মান দিতে হবে। ইরন চিন্তিত মুখে বলল, পৃথিবীতে আমরা ফিরে যেতে পারব কি না জানি না। যদি যেতেও পারি তা হলে সেটি পৃথিবীর সময়ে কবে যাব জানি না। কিন্তু আমাদের চেষ্টা করতে হবে। এই মহাকাশযানের মাঝে তো কেউ সারা জীবন কাটাতে পারবে না।

    কেন পারবে না? আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি এখানে সবকিছু রি–সাইকেল২৪ করা যায়। কৃত্রিম খাবার তৈরি করা যায়–

    ইরন হেসে বলল, সারা জীবন কৃত্রিম খাবার খেয়ে কাটিয়ে দেবে? একটা মহাকাশযানে?

    কেন, তাতে অসুবিধে কী?

    ইরন মাথা নাড়ল, তুমি যদি নিজে অসুবিধেটা বুঝতে না পার তা হলে কেউ তোমাকে বোঝাতে পারবে না। তা হলে বুঝতে হবে আসলেই কোনো অসুবিধে নেই।

    ইরন মহাকাশযানের মূল তথ্যকেন্দ্রের তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে দেয়। মহাকাশযানের অনেক ঘুঁটিনাটি তথ্য সে জানতে পারে যেটা অন্য কোনোভাবে তার পক্ষে জানা সম্ভব ছিল না। যেমন সে জানত না মহাকাশযানে ব্যবহারের জন্য দেহের কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ রয়েছে, যুদ্ধ করার জন্য প্রচুর অস্ত্র রয়েছে, বিনোদনের জন্য পৃথিবীর প্রাচীনতম সংগীতের সংগ্রহ রয়েছে এবং প্রার্থনা করার জন্য পৃথিবীর সকল ধর্মের ধর্মগ্রন্থ রয়েছে। কিন্তু তারা কোথায় আছে সেই তথ্যটি কোথাও নেই। উদ্দেশ্যহীনভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া এই মুহূর্তে আর কিছুই তাদের করার নেই।

    ইরন তথ্যকেন্দ্র থেকে সরে এসে কীশাকে খুঁজে বের করল। সে মহাকাশযানের যোগাযোগ কেন্দ্রে বেশ কিছু যন্ত্রপাতির সামনে চিন্তিত মুখে বসে আছে। ইরনকে দেখে কীশা তার মুখে একটু হাসি ফুটিয়ে বলল, কী খবর ইরন?

    কোনো খবর নেই। আমার ধারণা অদূর ভবিষ্যতেও কোনো খবর থাকবে না। আমরা হারিয়ে গেছি।

    হারিয়ে গেছি?

    হ্যাঁ। মহাকাশযানকে যদি কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাম তা হলে একটা কথা ছিল!

    তা হলে কী করতে?

    ঠিক যেদিক দিয়ে এসেছি সেদিক দিয়ে ফিরে যেতাম। মহাকাশযানের লগে পুরো গতিপথ রাখা আছে, ফিরে যাওয়া কোনো সমস্যাই নয়। কিন্তু মহাকাশযানের ওপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।

    কীশা কোনো কথা না বলে ইরনের দিকে তাকিয়ে রইল। ইরন একটা নিশ্বাস ফেলে কীশার কাছে এগিয়ে যায়, তুমি কী করছ?

    কীশা একটু ইতস্তত করে বলল, আমি মহাকাশের চারপাশে বিদ্যুৎ চৌম্বকীয়২৫ তরঙ্গ মাপছি।

    ইরন ভুরু কুঁচকে বলল, কেন?

    কোথাও অস্বাভাবিক কিছু দেখা যায় কি না দেখছি।

    অস্বাভাবিক কিছু?

    হ্যাঁ।

    ইরন কীশার সামনে রাখা যন্ত্রপাতিগুলো দেখল, এগুলো দৈনন্দিন ব্যবহারের যন্ত্র নয়, মহাকাশযানের প্রস্তুতির সময়েও তাদেরকে এগুলো দেখানো হয় নি। কীশা এগুলো খুঁজে পেল কেমন করে? জিজ্ঞেস করতে গিয়ে সে থেমে গেল। খানিকক্ষণ কীশার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল, তুমি ঠিক কী ধরনের অস্বাভাবিক সিগন্যাল খুঁজছ?

    একটা বিশেষ কম্পন বা একাধিক বিশেষ কম্পন।

    যদি খুঁজে পাও তা হলে কী হবে?

    যদি খুঁজে পাই তার অর্থ আশপাশে কোথাও বুদ্ধিমান প্রাণী রয়েছে।

    ইরন চমকে উঠে কীশার দিকে তাকাল, বুদ্ধিমান প্রাণী?

    হ্যাঁ। পৃথিবী থেকে বুদ্ধিমান প্রাণী এভাবেই খোজা হয়েছিল, মহাকাশের কোনো বিশেষ অংশ থেকে বিশেষ কোনো কম্পনের বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ আসছে কি না সেটা দেখা হয়। —

    ও! ইরন কিছুক্ষণ কীশার দিকে তাকিয়ে থেকে জিজ্ঞেস করল, কোনো বিশেষ সিগন্যাল পেয়েছ?

    কীশা একটু হেসে বলল, না।

    ইরন সামনে রাখা হলোগ্রাফিক স্ক্রিনের একটি বিশেষ আলোকিত বিন্দুকে দেখিয়ে বলল, এটা কী?

    এটা কিছু নয়। কীশা হাত নেড়ে পুরো ব্যাপারটি উড়িয়ে দেবার ভঙ্গি করে বলল, এটা ক্যালিব্রেশান সিগন্যাল।

    ইরন আবার হেঁটে হেঁটে মহাকাশযানের খোলা অংশের দিকে যেতে থাকে, ঠিক কী কারণ সে জানে না কিন্তু কিছু একটা ব্যাপার নিয়ে তার ভিতরে অস্বস্তি বাধছে, কিন্তু ব্যাপারটি কী সে বুঝতে পারছে না। খোলা ডকে একটা কালো আসনে সে লম্বা হয়ে শুয়ে পড়ল, পাশের সুইচ স্পর্শ করতেই একটা ছোট পোর্ট হোল খুলে গিয়ে সেখানে কালো মহাকাশ ফুঠে ওটে। পোর্ট হোলের ঠিক মাঝখানে স্পাইরাল গ্যালাক্সিটিকে দেখা যাচ্ছে। পৃথিবী থেকে বেশ কষ্ট করে খালি চোখে এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সিকে দেখা যায়। কিন্তু এখান থেকে এই গ্যালাক্সিটিকে খুব স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, মাঝখানে নক্ষত্রপুঞ্জের চোখধাঁধানো উজ্জ্বল আলো, দুটি প্যাচানো অংশে লক্ষ কোটি নক্ষত্রের আলোক বিন্দু। দেখে মনে হয় সে বুঝি কোনো একটি টেলিস্কোপে চোখ রেখে বসে আছে। স্পাইরাল গ্যালাক্সিটির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ইরনের চোখে ঘুম নেমে আসে। সে চোখ বন্ধ করে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।

    ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে সে বিচিত্র স্বপ্ন দেখে, অজানা একটি গ্রহে যেন সে হারিয়ে গেছে। গ্রহের লালচে মাটিতে সে হাঁটছে, কিন্তু হাঁটতে পারছে না, তার পা মাটিতে বসে যাচ্ছে। সে শুনতে পাচ্ছে দূরে কোথায় যেন একটি শিশু কাঁদছে, শিশুটির কাছে সে যেতে চাইছে কিন্তু যেতে পারছে না। যত তাড়াতাড়ি সে হাঁটতে চাইছে ততই যেন তার পা মাটিতে আরো শক্ত হয়ে বসে যাচ্ছে। মাটিতে শুয়ে সে শক্ত লাল পাথরে খামচে খামচে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু যেতে পারছে না। ধারালো পাথরের আঘাতে তার হাত ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে, যন্ত্রণায় সে চিৎকার করে ওঠে এবং সাথে সাথে তার ঘুম ভেঙে গেল।

    ইরন ধড়মড় করে উঠে বসল। মহাকাশযানের আবছা অন্ধকারে পুরোপুরি জেগে উঠতে তার আরো কয়েক মুহূর্ত সময় লাগল। বুকের ভিতর হৃৎপিণ্ডটি ধধ করে শব্দ করছে। ঘামে সারা শরীর ভিজে গেছে। সে একটা লম্বা নিশ্বাস ফেলে পোর্ট হোলের দিকে তাকাল, বাইরে এখনো নিকষ কালো অন্ধকার। এখনো সেখানে জ্বলজ্বলে কিছু নক্ষত্র এবং সেই বিচিত্র আলোকোজ্জ্বল স্পাইরাল গ্যালাক্সি। গ্যালাক্সিটির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ইরন হঠাৎ চমকে উঠল, এটি পোর্ট হোলের ঠিক মাঝখানে ছিল কিন্তু এখন সেটি মাঝখানে নেই, ডান পাশে একটু সরে গেছে।

    এটি হতে পারে শুধুমাত্র একটি জিনিস ঘটে থাকলে, মহাকাশযানটি যদি তার গতিপথের দিক পরিবর্তন করে থাকে।

    ইরন নিশ্বাস বন্ধ করে উপরের দিকে তাকিয়ে থাকে, মহাকাশযানটিকে কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না, হঠাৎ করে কে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করল? কীভাবে?

    ইরন উঠে দাঁড়ায়, ব্যাপারটি খুব গুরুত্বপূর্ণ, কী হচ্ছে তাকে বুঝতে হবে, সবচেয়ে আগে কীশাকে খুঁজে বের করতে হবে। যোগাযোগ মডিউলটি হাতে নিয়ে কীশাকে ডাকতে গিয়ে সে থেমে গেল। যোগাযোগ কেন্দ্রে কীশা বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গের পরিমাপ করছিল, এখনো হয়তো সেখানেই আছে। ঘরটির সামনে গিয়ে ইরন থমকে দাঁড়ায়, বাইরের দরজাটি বন্ধ। স্বচ্ছ জানালা দিয়ে সে ভিতরে তাকাল। বড় হলোগ্রাফিক মনিটরে বিশেষ আলোকিত বিন্দুটি ধীরে ধীরে আরো বড় হয়ে উঠছে। বিন্দুটিকে কীশা ক্যালিব্রেশান বলে দাবি করছে কিন্তু তা হলে তার বড় হওয়ার কথা নয়–সব সময় একই আকারের থাকার কথা। এটি ক্যালিব্রেশানের বিন্দু নয়, এটি সত্যিকারের সিগন্যাল।

    ইরন নিশ্বাস বন্ধ করে হলোগ্রাফ্রিক স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকে, ব্যাপারটি অবিশ্বাস্য। কিন্তু পুরো ব্যাপারটিকে শুধুমাত্র একভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। মহাকাশের এই অংশে কোথাও কোনো বুদ্ধিমান প্রাণী রয়েছে, তাদের সিগন্যাল লক্ষ্য করে এই মহাকাশযানটি দিক পরিবর্তন করে এখন সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।

    ইরন যোগাযোগ মডিউলটি হাতে নিয়ে কীশাকে ডাকতে গিয়ে আবার থেমে গেল, কেন তার মনে হচ্ছে কীশা পুরো ব্যাপারটি জানে?

    কেন তার মনে হচ্ছে কীশা পুরো ব্যাপারটি নিয়ন্ত্রণ করছে?

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপ্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    Next Article বৃষ্টির ঠিকানা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    Related Articles

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    ছোটগল্প – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সাদাসিধে কথা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মেকু কাহিনী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    আমার বন্ধু রাশেদ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সায়েন্স ফিকশান সমগ্র ১ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    টুনটুনি ও ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }