Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সায়েন্স ফিকশান সমগ্র ৩ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল এক পাতা গল্প1002 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ১. সকালে ঘুম ভাঙতেই

    আজ সকালে ঘুম ভাঙতেই আমার মায়ের কথা মনে পড়ল, অস্পষ্ট আবছা এবং হালকাভাবে নয়— অত্যন্ত তীব্রভাবে। মায়ের সাথে আমার যোগাযোগ নেই প্রায় বারো বৎসর— আমার ধারণা ছিল খুব ধীরে ধীরে আমার মস্তিষ্ক থেকে মায়ের স্মৃতি অস্পষ্ট হয়ে আসছে। কিন্তু আজ ভোরবেলা আমি বুঝতে পারলাম সেটি সত্যি নয়, মায়ের স্মৃতি হঠাৎ করে আমাকে প্রবলভাবে নাড়া দিয়ে গেছে। মা এবং সন্তানের মাঝে প্রাণীজগতের যে তীব্র তীক্ষ্ণ এবং আদিম ভালোবাসা রয়েছে সেই ভালোবাসার একটুখানির জন্যে আজ সকালে আমি বুকের ভিতরে একধরনের শূন্যতা অনুভব করতে থাকি, আমার মাকে একনজর দেখার জন্যে কিংবা একবার স্পর্শ করার জন্যে হঠাৎ করে নিজের ভেতর একধরনের বিচিত্র অস্থিরতা আবিষ্কার করে আমি নিজেই একটু অবাক হয়ে যাই।

    আমি নিজের ভেতরকার এই অস্থিরতা দূর করার জন্যে বিছানায় শুয়ে শুয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে রইলাম, আলোর প্রতিফলন এবং বিচ্ছুরণ ব্যবহার করে আমার ছোট বাসস্থানটিতে খানিকটা বিশালত্ব আনার চেষ্টা করা হয়েছে— বাসার ছাদটিকে মনে হয় আকাশের কাছাকাছি। সেই সুদূর আকাশের কাছাকাছি ধূসর ছাদের দিকে তাকিয়ে থেকেও আমার ঘুরেফিরে মায়ের কথা মনে হতে থাকে, আমার বর্ণাঢ্য শৈশবের নানা ঘটনা আমার মনকে বিক্ষিপ্ত করে তুলতে শুরু করে। আমি আমার বিছানায় সোজা হয়ে বসে একটা নিঃশ্বাস ফেলে মাথার কাছে সুইচটা স্পর্শ করলাম, সাথে সাথে ঝুপ করে বিছানাটা নিচে নেমে এল। আমি অনাবৃত শরীরটি নিও পলিমারের চাদর দিয়ে ঢেকে বিছানা থেকে নেমে জানালার কাছে এসে দাঁড়ালাম। স্বচ্ছ কোয়ার্টজের জানালা দিয়ে বাইরের বিস্তৃত লোকালয় চোখে পড়ে। সারি সারি বসতি গায়ে গায়ে জড়িয়ে উঁচু হয়ে উঠেছে, অনেক উঁচুতে বায়োডোম পুরো বসতিটিকে এই গ্রহের ভয়ঙ্কর পরিবেশ থেকে রক্ষা করে রেখেছে। বাইরে হালকা বেগুনি আলো দেখেই কেমন জনি মন খারাপ হয়ে যায়। আমি একটা নিঃশ্বাস ফেলে জানালা থেকে সরে এলাম আমার ঘরের দেওয়ালে ত্রিমাত্রিক ভিডি টিউব বসানো রয়েছে, অনেকটা অন্যমনস্কভাবে সেটা স্পর্শ করতেই ঘরের মাঝামাঝি আমার মায়ের ত্রিমাত্রিক ছবি জীবন্ত হয়ে ফুটে উঠল। ষোলো-সতেরো বছরের একজন কিশোরীর মতো চেহারা, কোমল ত্বক এবং লালচে চুল। শাদা রংয়ের পোশাকে আমার মাকে স্বর্গ হতে নেমে আসা একজন দেবীর মতো দেখায়। মা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, কেমন আছিস বাবা ইবান?

    আমি জানি এটি ত্রিমাত্রিক হলোগ্রাফিক ছবি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি অসংখ্যবার আমার মায়ের এই একমাত্র ভিডিও ক্লিপটা দেখেছি। কিন্তু তবু আমি ফিসফিস করে বললাম, ভালো আছি মা। আমি ভালো আছি।

    হলোগ্রাফিক ছবিতে আমার মা একদৃষ্টিতে আমার দিকে কয়েক মুহূর্ত তাকিয়ে থেকে চোখ নামিয়ে নিয়ে কোমল গলায় বললেন, কতদিন তোকে দেখি না— এতদিনে তুই নিশ্চয়ই আরো কত বড় হয়েছিস। আমার মাঝে মাঝে খুব জানতে ইচ্ছে করে তুই কোথায় আছিস, কেমন আছিস।

    মা খানিকক্ষণ চুপ করে নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে রইলেন তারপর বিষণ্ণ গলায় বললেন, যেখানেই থাকিস বাবা ইবান, তুই ভালো থাকিস।

    আমি ফিসফিস করে বললাম, তুমি ভেবো না মা, আমি ভালো থাকব।

    আমার মা ডান হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে তার চোখ মুছে কাতর গলায় বললেন, আমার উপর রাগ পুষে রাখিস না বাবা— আমি আসলে বুঝতে পারি নি। যদি বুঝতে পারতাম তাহলে আমি তোকে এমনভাবে জন্ম দিতাম না। বিশ্বাস কর–

    আমার মা ভেঙে পড়ে আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলেন আমি তার আগেই ভিডি টিউবটা বন্ধ করে দিলাম আমি অসংখ্যবার আমার কাছে রাখা আমার মায়ের একমাত্র হলোগ্রাফিক ভিডিও ক্লিপটা দেখেছি, ভিডিও ক্লিপের এই অংশে মায়ের তীব্র অপরাধবোধের গ্লানিটুকু দেখতে আমার ভালো লাগে না। জিনের প্রতিটি ক্রমাবর্তনকে নিয়ন্ত্রণ করে যখন একজন মানুষকে অতিমানবের পর্যায়ে জন্ম দেয়া যায় তখন আমার মতো সাধারণ একজন মানুষের জন্ম দিয়ে আমার প্রতি যে অবিচার করা হয়েছে আমার মা সেজন্যে নিজেকে কখনো ক্ষমা করেন নি। আমার চারপাশে যারা আছে তারা সবাই সূক্ষ্ম হিসেবনিকেশ করে জন্ম দেওয়া মানুষ। তারা সুদর্শন, সুস্থ সবল, মেধাবী, প্রতিভাবান এবং সাহসী। তাদের তুলনায় আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ, আমার ভিতরে অন্য মানুষের জন্য ভালোবাসা ছাড়া আর কোনো বিশেষ। গুণাবলি নেই। আমাকে জন্ম দেওয়ার আগে আমার মা জিনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করে শুধুমাত্র এই মানবিক একটি ব্যাপার নিশ্চিত করেছিলেন তার ধারণা ছিল একজন ভালো মানুষ হচ্ছে শ্রেষ্ঠ মানুষ, সুখী মানুষ। আমাকে তাই একজন হৃদয়বান ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। বড় হতে গিয়ে আমি আবিস্কার করেছিলাম মানবসভ্যতার ক্রমবিকাশের এই স্তরে আসলে আমার মতো মানুষের প্রয়োজন খুব কম। আমি বড় হতে গিয়ে পদে পদে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। আমাকে ভালো স্কুলে যেতে দেওয়া হয় নি, বড় সুযোগ থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছেএকরকম জোর করে বারবার আমাকে প্রমাণ করতে হয়েছে যে আমি আসলে অক্ষম নই। আমার বয়স যখন মাত্র তেরো বৎসর তখন এই বৈষম্য থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্যে আমি আমাদের গ্রহ থেকে পালিয়ে এসেছিলাম, প্রথমে একটা মহাকাশযানের শিক্ষানবিশী হিসেবে কাজ করেছি, নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে আমি শেষপর্যন্ত চতুর্থ মাত্রার বাণিজ্যিক মহাকাশযান চালানোর লাইসেন্স পেয়েছি। আমার মা আজ আমাকে দেখলে খুব খুশি হতেন— তার ছেলেকে জিনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করে অতিমানবের কাছাকাছি পৌঁছে না দেওয়াতেই খুব একটা ক্ষতি হয় নি। যেটুকু অর্জন। করার আমি সেটুকু অর্জন করে নিয়েছি, কষ্ট হয়েছে সত্যি কিন্তু অসাধ্য হয় নি।

    আমি ভিডি টিউবের সামনে খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম, তারপর একরকম জোর করে মাথা থেকে সবকিছু বের করে দিলাম— দিনটি মাত্র শুরু হয়েছে, নষ্ট করার মতো সময় আমার হাতে একেবারেই নেই।

     

    ভোরবেলা আন্তঃনক্ষত্র মহাকাশযানের একটি প্রদর্শনীতে যাবার কথা ছিল। সেখানে রওনা দেবার আগেই ভিডি টিউব। থেকে একটি জরুরি সংকেত এল। এই কলোনির আন্তঃনক্ষত্র যোগাযোগব্যবস্থার পরিচালকে লি-হান আমার সাথে কথা বলতে চায়— ভিডি টিউবে নয়, সরাসরি। আমি টিউবটি তুলে রেখে একটা নিঃশ্বাস ফেললাম। সরাসরি কথা বলার একটিই অর্থ, কোনো একটি আন্তঃনক্ষত্র অভিযানের চুক্তি পাকাপাকি করে ফেলা। আমি মাত্র একটি অভিযান শেষ করে এসেছি, নতুন করে কোথাও যাবার আগে কিছুদিন বিশ্রাম নিতে চেয়েছিলাম সেটি আর সম্ভব হবে বলে মনে। হয় না।

    ঘণ্টাখানেকের মাঝে আমার পরিচালকের সাথে দেখা হলো, মধ্যবয়স্ক হাসি খুশি মানুষ, আমাকে দেখে হাত উপরে তুলে আনন্দ প্রকাশ করার একটি ভঙ্গি করে বলল, এই যে ইবান, তোমাকে পেয়ে গেলাম!

    আমি হেসে বললাম, লি-হান, তুমি এমন ভান করছ যে আমাকে পেয়ে যাওয়া খুব সৌভাগ্যের একটা ব্যাপার!

    অবশ্যি সৌভাগ্যের ব্যাপার! এই পোড়া কলোনিতে কি মানুষ থাকে? একজন একজন করে সবাই সরে পড়ছে!

    আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম, চারপাশে বেগুনি রংয়ের একধরনের চাপা আলো, বহু উপরে বায়োডোমের উপর গ্রহটির প্রলয়ঙ্করী আবহাওয়া হুটোপুটি খাচ্ছে। চেষ্টা করলে এখান থেকেও সেই বাতাসের হুটোপুটি শোনা যায়। আমি মাথা নেড়ে বললাম, ঠিকই বলেছ। এই কলোনিটা আসলে মানুষের থাকার অযোগ্য। আমার সবসময় কী ভয়। হয় জানো?

    কী?

    একদিন এই বায়োডোম ধসে পড়বে আর আমরা সবাই ব্যাক্টেরিয়ার মতো মারা পড়ব। ঠিক গ্রিশিন গ্রহের কলোনির মতো।

    লি-হান হা হা করে হেসে বলল, তোমাকে যেন ব্যাক্টেরিয়ার মতো মারা যেতে না হয় সেই ব্যবস্থা করে ফেলেছি। পঞ্চম মাত্রার মহাকাশযানে করে তোমাকে এই কলোনি ছেড়ে চলে যাবার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।

    আমি একটু অবাক হয়ে বললাম, তুমি জানো আমার পঞ্চম মাত্রার মহাকাশযান চালানোর লাইসেন্স নেই।

    আমরা সেই লাইসেন্সের ব্যবস্থা করে দেব।

    আমি ভুরু কুঁচকে আন্তঃনক্ষত্র যোগাযোগব্যবস্থার পরিচালক লি-হানের দিকে তাকালাম, লাইসেন্সের ব্যবস্থা করে দেবে?

    হ্যাঁ।

    কেন?

    কারণ এটি জরুরি। তা ছাড়া আমরা তোমার ফাইল খুব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছি, আমাদের কমিটি মনে করে পঞ্চম মাত্রার মহাকাশযানের দায়িত্ব তুমি নিতে পারবে। তোমার কোনো জিনেটিক প্রাধান্য নেই, কিন্তু সেটি ছাড়াই তুমি অনেক ওপরে চলে এসেছ— কমিটি সেটা খুব বড় করে দেখেছে।

    আমি তীক্ষ্ণ চোখে লি-হানের চোখের দিকে তাকিয়ে পুরো ব্যাপারটি বোঝার চেষ্টা করলাম। আমি জানি যাদের জিনেটিক প্রাধান্য নেই তাদেরকে প্রায় মানুষ হিসেবেই বিবেচনা করা হয় না। লি-হান আমার সাথে কোনো কারণে মিথ্যে কথা বলছে। লি-হান আমার দৃষ্টি থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে বলল, আমার মনে হয় এটি তোমার জন্যে চমৎকার একটি সুযোগ। পরবর্তী কমিটি অন্যরকম হতে পারে তারা তোমাকে সেই সুযোগ না-ও দিতে পারে।

    আমি জোর করে একটু হাসার চেষ্টা করে বললাম, আমার মা আমাকে জন্ম দেবার আগে জিনেটিক কোডিংয়ে। বুদ্ধিশুদ্ধি বিশেষ কিছু দেন নি! আমি সম্ভবত অন্য মানুষের তুলনায় খানিকটা নির্বোধই— কিন্তু তবুও আমার মনে হচ্ছে এখানে অন্য ব্যাপার রয়েছে।

    লিহান অস্বস্তিতে একটু নড়েচড়ে বলল, অন্য কী ব্যাপার?

    আমি আমার স্বল্প বুদ্ধি দিয়ে সেটা বোঝার চেষ্টা করছি। আমার ধারণা এই অভিযানের খুঁটিনাটি জানতে পারলেই সেটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। যেমন মনে করো আমার প্রথম কৌতূহল গন্তব্যস্থান নিয়ে আমাকে মহাকাশযান নিয়ে কোথায় যেতে হবে?

    লি-হান আমার দৃষ্টি থেকে চোখ সরিয়ে ওপরের দিকে তাকিয়ে বলল, রিশি নক্ষত্রের কাছে যে গ্রহাণুপুঞ্জ আছে। সেখানে।

    আমি চমকে উঠে সোজা হয়ে বসে বললাম, কী বললে? রিশি নক্ষত্রের কাছে?

    লি-হান দুর্বল গলায় বলল, হ্যাঁ।

    তার মানে আমাকে যেতে হবে মাহালা নক্ষত্রপুঞ্জের কাছে দিয়ে?

    হ্যাঁ, তা ছাড়া উপায় নেই। দুই পাশে দুটি ব্ল্যাকহোল থাকায় যাত্রাপথটা হয় ঠিক মাহালা নক্ষত্রপুঞ্জের কাছে দিয়ে। আমি স্বীকার করছি এত কাছাকাছি দুটি ব্ল্যাকহোল থাকলে যাত্রাপথ বিপজ্জনক।

    আমি লি-হানকে থামিয়ে দিয়ে বললাম, তুমি বাজে কথা বলে সময় নষ্ট করছ। তুমি খুব ভালো করে জানো ব্ল্যাকহোল কোনো সমস্যা নয়, গত একশ বছর থেকে মানুষ ব্ল্যাকহোলের মহাকর্ষ শক্তি ব্যবহার করে মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছে। সমস্যা অন্য জায়গায়।

    লি-হান চোখেমুখে বিস্ময় ফুটিয়ে বলল, সমস্যা কোথায়?

    তুমি খুব ভালো করে জানো কোথায়। ঐ অঞ্চলে মানুষের কলোনি বিদ্রোহ করে আলাদা হয়ে গিয়েছে। পুরো এলাকাটা এখন ছোট-বড় একশটা মহাকাশ- দস্যুর আখড়া। গত দশ বৎসরে এই পথ দিয়ে যত মহাকাশযান গেছে তার অর্ধেক লুট হয়ে গেছে। কোনো ক্রু জীবন্ত ফিরে আসে নি!

    তুমি অতিরঞ্জন করছ ইবান।

    আমি এতটুকু অতিরঞ্জন করছি না— তোমরা সত্য গোপন করছ তা না হলে সংখ্যাটি আরো অনেক বেশি হতো। আমি হঠাৎ করে নিজের ভিতরে এক ধরনের ক্রোধ অনুভব করতে থাকি। অনেক কষ্ট করে গলার স্বরকে স্বাভাবিক রেখে বললাম, শুধু কী মহাকাশ-দস্যু? মাহালা নক্ষত্রপুঞ্জ হচ্ছে অনাবিষ্কৃত এলাকা। সেখানে কোনো একধরনের মহাজাগতিক প্রাণী রয়েছে—

    লিহান অবাক হবার ভান করে বলল, তাতে কী হয়েছে? মহাজগতে মানুষ ছাড়াও যে প্রাণী রয়েছে সেটি তো আর নতুন কোনো ব্যাপার নয়!

    না সেটি নতুন ব্যাপার নয়। আমি মাথা নেড়ে বললাম, কিন্তু সেই প্রাণী যদি বুদ্ধিমান হয়, সেই প্রাণী যদি ভয়ঙ্কর হয়, সেই প্রাণী যদি মানুষের প্রতি শত্র ভাবাপন্ন হয় এবং মানুষ যদি সেই প্রাণী সম্পর্কে কিছু না জানে তাহলে মানুষ তাদের ধারেকাছে যায় না। সে-সম্পর্কে সুস্পষ্ট মহাজাগতিক আইন রয়েছে। আমাকে সেদিক দিয়ে পাঠিয়ে তোমরা মহাজাগতিক আইন ভাঙার চেষ্টা করছ।

    লি-হানের মুখ একটু অপ্রসন্ন হয়ে ওঠে। সে শীতল গলায় বলল, তুমি যদি যেতে না চাও তাহলে যাবে না, আমি ভেবেছিলাম এটি তোমার জন্যে একটি চমৎকার সুযোগ।

    কোনটি সুযোগ আর কোনটি আমাকে বিপদে ফেলার ষড়যন্ত্র সেই সিদ্ধান্তটা আমাকেই নিতে দাও। আমি চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে গিয়ে থেমে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, পঞ্চম মাত্রার এই মহাকাশযানে আমাকে কী কারগো নিতে হবে?

    লিহান বিড়বিড় করে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, আমি তাকে বাধা দিয়ে বললাম, আমি বাজী ধরে বলতে পারি সেই কারগো হবে দূষিত, বিষাক্ত এবং বিপজ্জনক কোনো জিনিস। যে জিনিস ধ্বংস হয়ে গেলে তোমাদের কারো কোনো মাথাব্যথা হবে না। হয়ত এমনও হতে পারে যে তোমরা চাও সেই কারগো ধ্বংস হয়ে যাক।

    লি-হান এবারে তার মুখ একটু কঠিন করে বলল, তুমি একটু বেশি বাড়াবাড়ি করছ ইবান। এই অভিযানের কারগো খুব গুরত্বপূর্ণ।

    সেটি কী?

    তুমি যতক্ষণ এই যাত্রাপথে যেতে রাজি না হচ্ছ আমি তোমাকে সেটা বলতে পারব না।

    কিন্তু আমি যতক্ষণ জানতে না পারছি আমাকে কী কারগো নিয়ে যেতে হবে ততক্ষণ আমি রাজি হতে পারছি না।

    লি-হান ভুরু কুঁচকে কতক্ষণ কিছু-একটা চিন্তা করে আমার দিকে ঘুরে তাকিয়ে বলল, ঠিক আছে আমি তোমাকে বলছি। তোমার কারগো আসলে জীবন্ত একজন মানুষ।

    মানুষ?

    হ্যাঁ। মানুষটির নাম হচ্ছে ম্যাঙ্গেল ক্বাস। ম্যাঙ্গেল ক্বাস হচ্ছে—

    আমি বাধা দিয়ে বললাম, তোমাকে ম্যাঙ্গেল ক্বাসের পরিচয় দিতে হবে না, আমি তাকে চিনি।

    তুমি দেখেছ আমার ধারণা সত্যি? মহাকাশযানের কারগো সত্যি-সত্যি দূষিত, বিষাক্ত এবং বিপজ্জনক?

    লি-হান শীতল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রইল কোনো কথা বলল না। আমি একটা নিঃশ্বাস ফেলে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম, বেগুনি রংয়ের আলোটাতে একটা কালচে গা-ঘিনঘিন-করা ভাব। চলে এসেছে, দেখেই কেমন জানি মন খারাপ হয়ে যায়।

    ম্যাঙ্গেল ক্বাস এই সময়কার সবচেয়ে দুর্ধর্ষ মহাকাশ-দস্যু। সাধারণত একটি স্বার্থ নিয়ে দুদলের মাঝে সংঘর্ষ বেধে যায় এবং একদল অন্য দলকে দস্যু বলে সম্বোধন করে। মহাজাগতিক অনেক কলোনিতেই নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্যে ছোট ছোট মানবগোষ্ঠী বিদ্রোহ করেছে এবং অনেক সময় তাদেরকে দস্যু আখ্যা দিয়ে খুব নিষ্ঠুরভাবে বিদ্রোহ দমন করা হয়েছে। ম্যাঙ্গেল ক্বাসের ব্যাপারটি সেরকম নয়— সে প্রকৃত অর্থেই দস্যু, ছোট সুগঠিত একটা দল নিয়ে সে মাহালা নক্ষত্রপুঞ্জের কাছাকাছি থাকে, অত্যন্ত কৌশলে সে আন্তঃনক্ষত্র মহাকাশযানগুলোকে দখল করে নেয়। মহাকাশযানের কুদের প্রতি আমানুষিক নিষ্ঠুরতা নিয়ে ম্যাঙ্গেল ক্বাসের অনেক গল্প প্রচলিত রয়েছে। মানুষটি সুদর্শন এবং বুদ্ধিমান, আধুনিক প্রযুক্তি সে খুব দক্ষতার সাথে ব্যবহার করে। মানুষের মস্তিষ্কের উপর তার মৌলিক গবেষণা রয়েছে বলেও শোনা যায়। মহাজাগতিক প্রতিরক্ষাবাহিনী অনেকদিন থেকে তাকে ধরার চেষ্টা করছিল এবং মাত্র কিছুদিন আগে তাকে ধরতে পেরেছে। বিচারের জন্যে তাকে আঞ্চলিক কেন্দ্রে পাঠাতে হবে— আমি অবশ্যি মনে করি এত ঝামেলা না করে প্রতিরক্ষাবাহিনীই তার বিচার করে শাস্তি দিয়ে ফেলতে পারত। এই ভয়ঙ্কর মানুষটিকে বাঁচিয়ে রাখা আসলে বিপদকে ঘরে টেনে আনা ছাড়া আর কিছু নয়।

    আমার সামনে বসে থাকা লি-হান এবারে একটু ঝুঁকে পড়ে জিজ্ঞেস করল, তুমি কি সত্যিই যেতে চাও না?

    ম্যাঙ্গেল ক্বাসের মতো চরিত্রকে নিয়ে যাওয়াটা কি তুমি খুব আকর্ষণীয় কাজ মনে কর?

    কিন্তু তাকে শীতল করে পাথরের মতো জমিয়ে ফেলা হবে, টাইটেনিয়ামের ভল্টের মাঝে পাকাপাকিভাবে আটকে রাখা হবে। মহাকাশযানের কারগো-বে তে তাকে মালপত্র হিসেবে নেয়া হবে— মানুষ হিসেবে নেয়া হবে না।

    আমি একটা নিঃশ্বাস ফেলে বললাম, সত্যি কথা বলতে কী তোমরা যদি মানুষটিকে শীতলঘরে করে না নিতে, যদি তার সাথে কথা বলা যেত তাহলে আমার একটু আগ্রহ ছিল। আমি কথা বলে দেখতাম এই ধরনের মানুষেরা কীভাবে চিন্তা করে।

    না, তোমার সেই সুযোগ নেই। লি-হান মাথা নেড়ে বলল, একেবারেই নেই।

    মহাকাশযানের অন্য কুদের কীভাবে বেছে নিচ্ছ?

    আমার প্রশ্ন শুনে হঠাৎ করে লি-হান নিজের নখের দিকে তাকিয়ে সেটি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করতে শুরু করল এবং আমি বুঝতে পারলাম এ-ব্যাপারেও নিশ্চয়ই কোনো সমস্যা রয়েছে। আমি আবার টের পেলাম আমার ভিতরে। একটা শীতল ক্রোধ ছড়িয়ে পড়ছে। নিজেকে কষ্ট করে শান্ত করে আমি একটু সামনে ঝুঁকে পড়ে বললাম, এই ক্রুয়ের ব্যাপারটাও তাহলে আমি অনুমান করার চেষ্টা করি। আমার ধারণা এই অভিযানে ক্রু হিসেবে যাবে এমন কিছু মানুষ যাদের জীবনের কোনো মূল্য নেই। আমার মতো—

    লি-হান বাধা দিয়ে বলল, আসলে কোনো ক্রু থাকবে না। তুমি একা এই মহাকাশযানটি নিয়ে যাবে।

    আমি চমকে উঠে বললাম, একা?

    হ্যাঁ।

    একটি আন্তঃনক্ষত্র অভিযানে একজন মানুষ একা একটি পঞ্চম মাত্রার মহাকাশযান নিয়ে যাবে?

    হ্যাঁ। নতুন পঞ্চম মাত্রার যে মহাকাশযানগুলো বের হয়েছে সেগুলো বিস্ময়কর। প্রকৃত অর্থেই সেখানে কোনো মানুষের প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র মহাজাগতিক আইন রক্ষা করার জন্যে এখনো অধিনায়ক হিসেবে মানুষ রাখতে হয়। তাদেরকে কর্তৃত্ব দেয়া হয়।

    আমি কোনো কথা না বলে লি-হানের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। সে আমার দৃষ্টি উপেক্ষা করে বলল, পঞ্চম মাত্রার এই মহাকাশযানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে নতুন যে সিস্টেম দাঁড় করানো হয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই তা মানুষের মস্তিষ্ক থেকে ভালো। সত্যি কথা বলতে কী আমরা যদি নিউরণ সংখ্যা, এবং সিনান্স সংযোগ এসব দিয়ে হিসেব করি তাহলে এই সিস্টেমকে প্রায় একডজন মানুষের মস্তিষ্কের সুষম উপস্থাপন হিসেবে বিবেচনা করতে পার। যার অর্থ হচ্ছে—

    আমি জানি।

    লি-হান হা হা করে হেসে বলল, অবশ্যি তুমি জানো। মানুষের মস্তিষ্কের ওপর তোমার কৌতূহলের কথা সবাই জানে।

    হ্যাঁ। আমি শীতল গলায় বললাম, সবাই এটাও জানে যে এটা এসেছে আমার হীনমন্যতা থেকে। যেহেতু বুদ্ধিমত্তায় আমার জিনেটিক প্রাধান্য নেই তাই আমি সবসময় বোঝার চেষ্টা করি বুদ্ধিমত্তা এসেছে কোথা থেকে। প্রচলিত বিশ্বাস এটা আমার দুর্বলতা। আমার সীমাবদ্ধতা।

    লি-হান মাথা নাড়ল, বলল, না, তোমার এ ধারণা সত্যি নয়। তোমাকে আমি তোমার সম্পর্কে কমিটির রিপোর্ট দেখাতে পারব না, যদি পারতাম তাহলে দেখতে তোমার ক্ষমতা সম্পর্কে কমিটির পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে।

    কোনটি সত্যি কথা, কোনটি মিথ্যা কথা এবং কোনটি কাজ উদ্ধারের জন্যে চাটুকারিতা সেটা বোঝা আমার জন্যে কঠিন নয়। কখন কথা বলতে হয় কখন চুপ করে থাকতে হয় এবং কখন রেগে যেতে হয় এতদিনে আমি সেটাও শিখে ফেলেছি, কাজেই আমি কোনো কথা না বলে চুপ করে রইলাম।

    লি-হান তার গলায় একটু বাড়াবাড়ি উচ্ছ্বাস ফুটিয়ে বলল, বারোজন মানুষের মস্তিষ্কের সুষম উপস্থাপন-এর অর্থ। বুঝতে পারছ? বারোজন মানুষ নয়— বারোগুণ মানুষ— বুদ্ধিমত্তার বারোগুণ—

    আমি হাত তুলে লি-হানকে থামিয়ে দিয়ে বললাম, আমি জানি।

    তাহলে?

    তাহলে কী?

    তাহলে তোমার মাঝে উৎসাহ নেই কেন?

    তুমি শুনতে চাও কেন আমার মাঝে উৎসাহ নেই?

    লি-হান মাথা নাড়ল, বলল, হ্যাঁ শুনতে চাই।

    তাহলে শোনো। আমি একটা বড় নিঃশ্বাস নিয়ে বললাম, পঞ্চম মাত্রার এই মহাকাশযানটি মাত্র তৈরি করা হয়েছে, এটা পরীক্ষা করা দরকার। এই পরীক্ষার জন্যে গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করা হবে আমাকে— এটাই হচ্ছে। সত্যি কথা। এই সত্যি কথা যে জানে তার পক্ষে এই অভিযানে উৎসাহ পাওয়া সম্ভব নয়।

    তোমার এই সন্দেহ অমূলক।

    হতে পারে। কিন্তু তাতে কিছু আসে যায় না। আমি উঠে দাঁড়িয়ে বললাম, আমার পক্ষে এই অভিযানে যাওয়া সম্ভব নয়।

    ভেবে দেখ ইবান। তুমি সবসময়ে মানুষের বুদ্ধিমত্তা, মানুষের নৈতিকতা, মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা স্বপ্ন এবং ভালোবাসা নিয়ে ভেবেছ। পৃথিবীর বড় বড় মানুষকে নিয়ে তোমার কৌতুহল। তারা কেমন করে ভাবে, কেমন করে। ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে সেটা জানতে চেয়েছ। এই প্রথম তোমার সুযোগ এসেছে পৃথিবীর সেরা মনীষীদের মুখোমুখি হবার। পঞ্চম মাত্রার মহাকাশযানের নিয়ন্ত্রণপ্রক্রিয়ার জন্যে তৈরি নিউরাল নেটওয়ার্কই১২ শুধুমাত্র তোমাকে সেই সুযোগ দেবে। তুমি ইচ্ছে করলে পৃথিবীর সেরা মনীষীদের মস্তিষ্ক ম্যাপিং১৩ সাথে নিয়ে যেতে পারবে। তোমার দীর্ঘ এবং নিঃসঙ্গ যাত্রাপথে তারা তোমার চমৎকার সঙ্গী হতে পারে। তোমার সারা জীবনের স্বপ্ন সত্যি হওয়ার—

    আমি হাত নেড়ে বললাম, তোমার বক্তৃতার জন্যে ধন্যবাদ লি-হান। কিন্তু আমি তোমার এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারছি না।

    লি-হান কোনো কথা না বলে আমার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। আমি মাথা নেড়ে তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে লম্বা পা ফেলে ঘর থেকে বের হয়ে এলাম। আমার পিছনে স্বয়ংক্রিয় দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল তখন লি-হান আমাকে ডাকল, ইবান।

    আমি ঘুরে তাকিয়ে বললাম, কী হলো?

    আমার ধারণা তুমি কিন্তু শেষপর্যন্ত আমার প্রস্তাবে রাজি হয়ে এই অভিযানে যাবে।

    আমি তীক্ষ্ণ চোখে লি-হানের দিকে তাকালাম, সে জোর করে একটু হাসার চেষ্টা করল। আমি কঠিন গলায় বললাম, কেন? তুমি কেন ভাবছ আমি তোমার প্রস্তাবে রাজি হব?

    কারণ, তোমার একটা চিঠি এসেছে।

    আমি চমকে উঠে বললাম, চিঠি?

    হ্যাঁ।

    কার চিঠি?

    তোমার মায়ের।

    আমার মায়ের?

    হ্যাঁ। আমি কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করলাম, আমার মা কী লিখেছে চিঠিতে?

    আমি জানি না। আন্তঃমহাজাগতিক যোগাযোগ কেন্দ্র থেকে সবেমাত্র পাঠিয়েছে। লি-হান তার ড্রয়ার থেকে ছোট একটা ক্রিস্টাল বের করে আমার দিকে এগিয়ে দিল।

    আমি ক্রিস্টালটি হাতে নিয়ে লি-হানের দিকে তাকালাম। সে আবার একটু হাসার চেষ্টা করে বলল, চিঠিটা এসেছে রিশি নক্ষত্রের কাছাকাছি মানুষের কলোনি থেকে। মাহালা নক্ষত্রপুঞ্জ পার হয়ে যেই কলোনিতে যেতে হয়।

    লি-হান উঠে দাঁড়িয়ে জানালার কাছে এগিয়ে গেল। জানালা দিয়ে কিছুক্ষণ বাইরে তাকিয়ে থেকে আবার আমার দিকে ঘুরে তাকিয়ে বলল, ইবান, তুমি খুব সৌভাগ্যবান যে একজন মায়ের গর্ভে তোমার জন্ম হয়েছে। তুমি জানো আমার জন্ম হয় নি, আমাকে জিনম ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা হয়েছে! ফ্যাক্টরিতে যেভাবে মহাকাশযানের ইঞ্জিন তৈরি করা হয়, সেভাবে!

    আমি লি-হানের দিকে তাকিয়ে রইলাম, আমি একটু অবাক হয়ে লক্ষ করলাম তাকে হঠাৎ একজন দুঃখী মানুষের মতো দেখাতে থাকে।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপ্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    Next Article বৃষ্টির ঠিকানা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    Related Articles

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    ছোটগল্প – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সাদাসিধে কথা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মেকু কাহিনী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    আমার বন্ধু রাশেদ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সায়েন্স ফিকশান সমগ্র ১ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    টুনটুনি ও ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }