Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সাহিত্যের সেরা গল্প – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়

    লেখক এক পাতা গল্প671 Mins Read0

    গন্ধ

    কলকাতায় আবার বৃষ্টিপাত আরম্ভ হয়েছে। রাস্তাঘাট এবং সব সবুজ মাঠ যদি কোথাও থাকে প্রায় খালবিলের মতো। উত্তর থেকে হাওয়া এলে জানালা দরজা খুলে দেওয়া হচ্ছে। দক্ষিণ থেকে হাওয়া এলে জানালা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। বৃষ্টিপাতের সময় দক্ষিণের হাওয়া প্রবল। গাড়ি ঘোড়া বাস ট্রাম ভিজতে ভিজতে চলে যায়। কখনও সার সার থেমে থাকে। বিদ্যুৎ চমকায়। আকাশ চুরমার করে দিয়ে বজ্রপাতের শব্দ নেমে আসে। তখন কেউ হুইসকি গলায় ঢেলে বৃষ্টিপাতের শব্দ শুনতে ভালবাসে। ক্যাবারেগুলোতে মধ্যযামিনীতে উদ্দাম নৃত্যমালা। কলকাতায় যে বৃষ্টিপাত আরম্ভ হয়ে গেল, একেবারেই তখন তা বোঝা যায় না।

    দেবদারু গাছটা ল্যাম্পপোস্টের মতো দাঁড়িয়ে ভিজছে। সকাল থেকে বৃষ্টি। সারারাত বৃষ্টি গেছে। রাস্তায় জল জমছে। বাড়ছে। লোকজন হাঁটুর ওপর কাপড় তুলে, মেয়েরা শাড়ি তুলে, ছেলেরা প্যান্ট ভিজিয়ে জল ভেঙে যাচ্ছে। কলকাতার এ-সময়ের চেহারা কেমন পাল্টে যায়। নরকের মতো হয়ে যায়। এবং দেবদারু গাছটার নীচে যে সংসারটা ছিল সেটা থাকে না। কোথাও উধাও হয়ে যায়। এবং জল নামতে শুরু করলে, হাইড্রেন খুলে ফেললে দেখা যায় শহরের ওপর সব কাক উড়ছে। এ-সময়টাতে শহরে বোধ হয় কাকের উপদ্রব বাড়ে।

    সকালে বিকেলে এভাবে বৃষ্টিপাতের ভেতর যখন কলকাতা ভিজছিল, যখন রাস্তায় মানুষের ভিড় উপছে পড়ছে এবং যখন সূর্য আর দেখা যাবে না বলে সবাই কোলাহল করছে তখন ফ্ল্যাট বাড়ির জানালায় একটা দুঃখী মুখ দেখা গেল। সে দাঁড়িয়ে আছে। দেবদারু গাছটার নীচে জল উঠে এসেছে। ছেঁড়া নেকড়া, হাঁড়িপাতিল ভাঙা এবং দূরে সে টের পেল গাড়িবারান্দার নীচে সেই সংসারের বুড়ো মানুষটি হাঁটু মুড়ে পরিত্যক্ত রোয়াকে বসে শীতে কাঁপছে।

    দুঃখী মেয়েটা বেশ সুখে ছিল। বাবা এই সুন্দর ফ্ল্যাট কিনে চলে এসেছে। মা এখন আরও যুবতী হয়ে উঠছে। সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেলে রোজ সেই দেবদারু গাছ। একেবারে পরিপাটি সংসারের বাইরে বিশ্রী সাংঘাতিক কিছু। সে যে প্রথম দেখছে এমন, সে যে আর কখনও ভিখিরী অথবা ফুটপাথবাসিনীদের দেখেনি তা নয়। কিন্তু এখানে সে রোজ সকালে উঠে যখন স্কুলে যায়, দেখতে পায় বছর দু বছরের বাচ্চাটা পড়ে থাকে গাছের নীচে। ঘুমোচ্ছে। কিংবা কখনও বসে বসে খেলা করছে। ওর বড় বোনটা বসে বসে উকুন মারছে। এবং যখন স্কুল থেকে সে বেণী দুলিয়ে ফেরে, দেখতে পায়, কোত্থেকে সেই মেয়ে এবং মা সংগ্রহ করে এনেছে রাজ্যের পচা পটল, পেঁয়াজ, কুমড়ো, মাছের পচা নাড়ি-ভুঁড়ি, পাঁঠার মাথার কঙ্কাল। ভীষণ দুর্গন্ধে ওর পেট গুলিয়ে ওঠে। সিঁড়ি ভাঙার সময় সব সুখ কারা এভাবে কেড়ে নেয় তার। সে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে বাথরুমে ঢুকে যায়। জল বমি করে ফেলে।

    মা দৌড়ে আসে। রাণু আবার বমি করছিস।

    —পেটটা আবার গুলিয়ে উঠল।

    এভাবেই মেয়েটার অসুখটা আরম্ভ হয়ে যায়। ডাক্তার হাসপাতাল, হাসপাতালে গেলে কমে যায়, এবং বাড়ি ফিরে এলেই আবার কেমন তার অসুখ।—মা তুমি পাচ্ছ না।

    —কি পাব।

    —কেমন একটা গন্ধ!

    —না তো।

    সত্যনারায়ণ বাড়ি ফিরে শুনতে পায়, মেয়েটা আবার খাচ্ছে না। খাবার দেখলেই বমি করে ফেলে।

    কি গন্ধরে বাবা! জানালাটা মা বন্ধ করে দাও।

    সত্যনারায়ণ মোটামুটি হিসেবী মানুষ, সামান্য ক্লার্ক থেকে বড়বাবু অফিসের। এবং টাকা লেনদেনের ব্যাপারে চতুর। স্ত্রীর অভাব অনটন সে একেবারেই রাখে নি, যা যা চাই ফ্ল্যাট বাড়ি এবং ফ্রিজে নতুন, গোদরেজের আলমারি, এবং হিসেবী বলে একমাত্র মেয়ে রাণু। সংসারের কোথাও সে হিসেবের বাইরে নয়। পুত্রসন্তানের যে ইচ্ছে ছিল না, এমন নয়, কিন্তু যা হয়ে থাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষাতে সে আর যায় নি। সে একটি হবার পরই সব থামিয়ে রেখেছে। এবং গতকাল এই শহরে বৃষ্টিপাতের ঠিক আগে সে দেখে এসেছিল, দেবদারু গাছটার নীচে, বৌটা আবার একটা বাচ্চা দিয়েছে। এই নিয়ে কটা বাচ্চা। সে ঠিক গুনে বুঝতে পারে না। ওদের কটা বাচ্চা, সে টের পায় না। বৌটার সঠিক স্বামী কোনটা। সে দেখতে পায়, তিন-চারজন পুরুষ, পরনে লুঙ্গি, কানে বিড়ি গোঁজা, গলায় তাবিজ, এবং সূর্যাস্তের মুখে তারা কোথায় চলে যায়। আবার সে কখনও দেখে বেশ আরামে বৌটার কোলে মাথা রেখে ঘুমোচ্ছে একটা বুড়ো মতো মানুষ। শহরের বাস ট্রাম তেমনি যায়। রাস্তায় লোকাভাব থাকে না, কলেজ এবং স্কুল ছুটি হলে সব সুন্দর সুন্দর দিদিমণিরা কত সব ফিসফাস কথা বলতে বলতে চলে যায়। সত্যনারায়ণ ভেবে পায় না তখন বৌটার কটা বাচ্চা! একটা দুটো না সহস্র। এবং যা হয়, সে রাস্তায় কোন অপোগণ্ড দেখলেই ভেবে ফেলে সেই বৌটার পেট থেকে বাচ্চাটা বের হয়েছে।

    সত্যনারায়ণ দরজা জানালা সব বন্ধ করে রাখে। বলে, পাচ্ছিস।

    —হ্যাঁ বাবা।

    —কোথা থেকে আসে!

    রাণু তখন চুপচাপ শুয়ে থাকে। আর কিছু বলে না।

    এক টুকরো আপেল, ক’দানা আঙুর এবং নাসপাতি এনে দেয় মালতী। বলে, খা। খাতো মা। না খেলে বাঁচবি কি করে!

    এই খাওয়া নিয়ে সংসারে এখন কত অশান্তি। মেয়েটা কিছুতেই কিছু খেতে চায় না। কেমন ভেতর থেকে তার দুর্গন্ধ উঠে আসে তখন। বাবার এত আয়াস, মার এমন যত্ন, তার কাছে তখন অত্যাচার মনে হয়। সে চিৎকার করে ওঠে কখনও, তোমরা সবাই মিলে কেন আমাকে মেরে ফেলতে চাও। আমি কি করেছি!

    মালতী আর পারে না। ডাক্তার মজুমদার বললেন, খাওয়াতেই হবে। অসুখটা কি ঠিক তো ধরা যাচ্ছে না। সবই তো করালেন। ট্রপিকেলে রেখে দেখলেন। কোথাও কেউ শরীরে কোন ত্রুটি খুঁজে পাচ্ছে না।

    এবং এভাবে দিনে দিনে মেয়েটা যখন শুকিয়ে যাচ্ছিল, এবং সংসারে সত্যনারায়ণ যখন চতুর কথাবার্তা বলতে আর একদম সাহস পায় না, অথবা কোন বিল পাস করে দেবার ব্যাপারে একটা মোটা অঙ্কের টাকা হাতে এসে যায়, সে আর আগের মতো মালতীর হাতে দিতে ভরসা পায় না। কেবল মনে হয় কোথাও কোন দুর্গন্ধ উঠছে, সে ভেতো মানুষ বলে, মালতীর চর্বি জমেছে বলে টের পাচ্ছে না। মেয়েটার ভেতর এখনও সে-সব দুর্গন্ধ জমা হয় নি, বাইরের সামান্য অন্ধকার চেহারা তাকে ভয় পাইয়ে দিচ্ছে।

    সত্যনারায়ণ বলল, রাণু তোমার কিছু হয় নি। ওটা তোমার ম্যানিয়া।

    রাণু ও-পাশ ফিরে শুয়ে আছে। পাখা ঘুরছে। কোথাও রেডিওতে বিবিধভারতী হচ্ছে, কোথাও কেউ পেট ভরে খেয়ে বড় ঢেকুর তুলছে এবং জানালা দিয়ে সেই অতীব দুর্গন্ধটা সারা বাড়ি ছেয়ে ফেলছে কেউ টের পাচ্ছে না। ওর হাই উঠছিল। জানালাটা বন্ধ করে দিলে ভাল হত। অথচ বন্ধ করে দিলেই কেমন দমবন্ধ ভাব। সে নিঃশ্বাস নিতে পারে না। কপাল ঘামে। শরীরের সুচিতা কেমন নষ্ট হয়ে যায় তার। তখন চিৎকার করতে থাকে, মা আমাকে কোথাও নিয়ে চল। এ-ভাবে এখানে থাকলে মরে যাব।

    মালতী হতাশ গলায় তখন বলে, রাণু তোমাকে নিয়ে পুজোর ছুটিতে গোপালপুর চলে যাব, আর কটা দিন, বাবার ছুটি হলেই আমরা চলে যাব। চলে গেলেই তুমি আর গন্ধটা পাবে না! তুমি নিরাময় হয়ে যাবে।

    রাণু আবার চুপ করে থাকে। কথা বলে না। এমন সুন্দর মেয়েটা, কি ভারী চোখ তার, আর হাত-পা লম্বা হয়ে যাচ্ছিল, চুল বড় হয়ে যাচ্ছিল। শরীরে সব অমোঘ নিয়তিরা বাড়ে দিনে দিনে। তখন কিনা এই অসুখ। কিছুই খাওয়ানো যায় না। যতটা খায় তার চেয়ে বেশী বমি করে দেয়। উগরে দেয় যেন। ভেতরে কোন দৈত্য বাসা বেঁধেছে। সুখী মেয়েটাকে এমন দুঃখী করে রেখেছে এবং একদিন চোখের ওপর বুঝতে পারে মেয়েটা মরে যাবে।

    সত্যনারায়ণ সেদিন দেবদারু গাছটার নীচে এসে থমকে দাঁড়াল। একটা মরা পায়রার ছাল ছাড়ানো হচ্ছে। পায়রা না ডাহুক, না কাক, সে আর এখন সঠিক কিছু বুঝতে পারছে না। বাতাসে সব পালক উড়িয়ে নিয়েছে। কেমন একটা পচা দুর্গন্ধ এসে নাকে লাগতেই ওপরে জানালায় দেখল রাণু দাঁড়িয়ে দেখছে। আর তখনই কেন জানি ওর ইচ্ছে হচ্ছিল, লাথি মেরে এই বৌটির হাঁড়ি পাতিল, ছেঁড়া কাঁথা কাপড়, পলিথিনের বাকস সব ফেলে দেয়। দুর্গন্ধে টেকা যাচ্ছে না। কতদিন পর ওর চোখের ওপর এই সব বেআইনী ইতর মনুষ্যকুলের নোংরা তৈজসপত্র তাকে গিলে খাচ্ছিল। রাণু কোন দিন বলে নি, বাবা, ওখানে গন্ধটা আছে। তুমি ওদের দূর করে দাও।

    আর সত্যনারায়ণের মাথায় কেমন রক্তপাত আরম্ভ হয়ে যায়। সে চিৎকার করে উঠল, রাণু তুমি ওখানে। দাঁড়িয়ে কি দেখছ, যাও ভিতরে যাও! অথচ সে দেখছে, পাঁচ-সাতটা অপোগণ্ড শিশু সেই ছেঁড়া পায়রার মাংস ভারী যত্নের সঙ্গে ভাঙা এনামেলের প্লেটে কেটে কেটে রাখছে। সাদা ফ্যাকাসে মাংসের টুকরো। পচা গন্ধটা অবিরাম সুখ দিচ্ছিল যেন। সামান্য হলুদ লঙ্কা বাটা মাখিয়ে, একটু আগুনের দরকার, কোথা থেকে প্লাইউডের একটা ভাঙা বাকস টানতে টানতে নিয়ে আসছে। বুড়ো মানুষটা দা দিয়ে কোপাচ্ছে কাঠ, আর দু-তিনটে ইটের ওপর হাইড্রেনের জল তুলে সেদ্ধ করছে বৌটা, ওরা নোংরা শালপাতা এনে বাসি রুটি ভাগ করে বসে আছে। মাংসটা পোড়া সেদ্ধ। পচা গন্ধটা ওদের পেটে খিদের উদ্রেক করছিল। জুল জুল চোখে তাকিয়ে আছে সব কটা জীব। সামান্য হলেই হামলে পড়বে। পোড়া চিমসে মাংস পোড়া গন্ধ। মেয়েটা তখন জানালায় নেই। অবিরাম গন্ধবাহী বাতাস দিকে দিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে। প্রায় সে যেন কোন শ্মশানে। মানুষের পোড়া মাংসের চামসে গন্ধের মতো উঠে এলে একদণ্ড সত্যনারায়ণ আর দাঁড়াতে পারল না! সে সোজা সিঁড়ি ধরে ওপরে উঠে দরজা জানালা বন্ধ করে দেবার সময় দৌড়ে গেল বাথরুমে। তারপর অক্ করে বমি করে দিল সবটা।

    মালতী দরজার গোড়ায় দাঁড়িয়ে দেখছে। সহসা এই বমি সত্যনারায়ণের, সে কেমন স্থাণুর মতো দাঁড়িয়ে আছে। একটা কথা বলতে পারছে না। রাণুর মতো একেবারে সোজা এমন একটা ঘটনা, ফের আর একজনকে আক্রমণ করবে এ-সংসারে সে কখনও ভাবে নি।

    চোখে মুখে জল দিয়ে সত্যনারায়ণ বের হয়ে এলে বলল, কি হয়েছে! তুমিও শেষ পর্যন্ত? সংসার কি যে হবে!

    সত্যনারায়ণ বলল, গন্ধ!

    —কিসের গন্ধ!

    —বারে পাচ্ছ না!

    —না তো।

    ঠিক রাণু যে-ভাবে বটিটমি করে চোখে-মুখে জল দিয়ে দাঁড়াত, কথা বলত, এবং শূন্যতা ফুটে উঠত চোখে, সত্যনারায়ণ ঠিক ঠিক হুবহু একইভাবে কথা বলছে।

    মালতী বলল, তোমরা আমাকে পাগল করে দেবে? কিসের গন্ধ—আমি তো পাচ্ছি না।

    —পাবে। বলে সে বসার ঘরে সোজা ঢুকে ডায়াল করল, হ্যালো, সুকুমার আছে?

    —সুকুমার? আছে ধরুন।

    সুকুমার বলল, কি দাদা, আমি সুকুমার বলছি।

    —তোমার দাদাকে একটা খবর দিতে পার? যাতে একটা ব্যবস্থা হয়।

    —কেন কি হয়েছে?

    —আর বলো না, নীচে আমাদের দেবদারু গাছটার নীচে যা সব হচ্ছে না! দেশে কি কোন শাসন নেই! তোমার দাদা তো একজন কর্তাব্যক্তি।

    —কি হচ্ছে বলবেন তো!

    —পঙ্গপাল!

    —পঙ্গপাল! কোথাকার!

    —জানি না। বাড়িতে টেকা যাচ্ছে না। আমরা সবাই এবার মরে যাব। হতাশ গলায় বলে যেতে থাকল সত্যনারায়ণ।

    —এই তো সেদিন ফ্ল্যাট কিনলেন! এত তাড়াতাড়ি হুজ্জোতি আরম্ভ হয়ে গেল। বুঝিয়ে বলুন না ওদের।

    —কোন লাভ হবে না। তুমি একবার অবশ্যই আসবে! ব্যবস্থা একটা করতেই হবে।

    —কি হয়েছে বলবেন তো।

    —না এলে বলা যাবে না।

    সুকুমার এল সন্ধের একটু আগে। সারাক্ষণ সুকুমার আসবে ভেবে সত্যনারায়ণ জানালায় মুখ রেখে দাঁড়িয়েছিল। দেবদারু গাছটার নীচে এখন সেই বৌটা তার পঙ্গপাল নিয়ে বসে রয়েছে। একটা খঞ্জনী বাজিয়ে বুড়ো লোকটা গান ধরেছে। ছোট দুটো ছেলে বুড়োটার চার পাশে টুইস্ট নাচছে। রাস্তায় গাড়ি রিকশা তেমনি, নির্বিকার মানুষজন, এমন একটা পোড়া চামসে গন্ধ কারো নাকে লাগছে না। ওর তো সেই গন্ধটা সেই যে নাকে লেগে রয়েছে আর যাচ্ছে না। শনিবার বলে সকাল সকাল ছুটি! বেশ বড় রকমের দাঁও মেরে উল্লসিত, একদণ্ড অফিসে সে দেরি করে নি। সোজা বাড়ি ফিরে মালতীর হাতে গোছা গোছা টাকা দিয়ে কোন একাউন্টে কিভাবে জমা দিতে হবে, এবং মালতীর জন্য আর দুটো নতুন ডিজাইনের অলংকার এ-ভাবে ভেবেছিল, হাতে মুখে চুমো খেয়ে রাতে একটা থিয়েটার সেরে আসবে। রান্নার মেয়েটা বাড়ির পাহারায়। রাণু শুয়ে শুয়ে গল্পের বই পড়বে। রাণু আজকাল একটু একটু খেতে পারছিল। বেশ নিরাময়ের ছবি আবার যখন ফুটে উঠেছিল চার পাশে, তখনই সে একটা পোড়া চামসে দুর্গন্ধে বমি করে দিল। সিঁড়ির গোড়ায় যারা থাকে, অর্থাৎ একতলার ফ্ল্যাটে, ওরা গন্ধটা পাচ্ছে না। পেলেও বোধ হয় আসছে যাচ্ছে না খুব একটা। সে সবাইকে জিজ্ঞেস করছিল, গন্ধটা আপনারা পাচ্ছেন না! ওরা কেমন নির্বিকার মুখে তাকিয়ে দেখছিল, সত্যনারায়ণকে। লোকটা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। মেয়েটা তার কতদিন থেকে একটা গন্ধ পাচ্ছিল, এবার সে পেতে শুরু করেছে।

    সে বলেছিল, পাবেন, আপনারাও পাবেন। বাড়ির সামনে এই সব বেওয়ারিশ মাল, অখাদ্য কুখাদ্য এনে জড়ো করছে, না পেয়ে যাবেন কোথায়।

    এবং বৌটার খোলা বুকে একটা নতুন বাচ্চা, এই মনে হয় দু-চার দিনও হয় নি, একেবারে বুকের ভেতর মুখ লাগিয়ে রেখেছে। হাত-পা কাঠি কাঠি, সবুজ শরীরটা, আজ কি কাল, যেমন রাণু হবার সময় সে হাসপাতালে গিয়ে একদিনের বাচ্চা রাণুকে দেখেছিল চামড়া কোঁচকানো, এবং চোখ মেলে তাকাতে পারছে না। আর তখনই জানালার নীচে সুকুমার, সে প্রায় স্বর্গ পাবার মতো চিৎকার করে বলল, এলে সুকুমার! পাশে দেখেছ?

    সুকুমার চারপাশে তাকাল। সে এমন কিছু দেখতে পেল না। কোথাও কোন গণ্ডগোল নেই, কেউ বাস চাপাও পড়ে নি, কোন মৃতদেহ বাড়ির পাশে কেউ ফেলে রেখে যায় নি, বরং বুড়োটা তার দুই নাতি নিয়ে, দুজন যুবক ছোঁড়া, এবং কিছু বেশী বয়সের দু-তিনটে মানুষ গোল হয়ে কলকাতার আকাশ পরিষ্কার দেখে খঞ্জনী বাজিয়ে গান ধরেছে। পাশে পোস্টাফিসে আলো জ্বালা হয়ে গেছে। আকাশের মাথায় ভাঙা চাঁদ। দেবদারু গাছটা ভারী সজীব। সুন্দর মতো এক যুবতী স্বামীর সঙ্গে পানের দোকানে দাঁড়িয়ে আছে। পান খেয়ে রাঙা ঠোঁট উল্টে পাল্টে দেখছে। কোথাও কিছু সে অস্বাভাবিক দেখতে পেল না। সত্যদার মেয়েটার ক’মাস থেকে কি একটা অসুখ, কখনও ভাল হয়ে যায়, কখনও বিছানা থেকে একেবারে উঠতেই পারে না—এসব খবর সে পেয়েছে। দু-চারবার সে দেখেও গেছে। কি একটা গন্ধ পায় সংসারে। মেয়েটা আসলে ভারী আদরে মানষ, ন্যাকা। একটুতেই ঘাবড়ে যায়। এমন একটা বয়সে বালিকারা ভারী কৌতূহলী হয়ে যায়। সংগোপনে সব কিছু দেখে বেড়াবার স্বভাব। আর কিনা মেয়েটা রুগ্ন বালিকার মতো জানালায় দাঁড়িয়ে থাকছে! ভেতরে আসলে সেই অসুখ হয়তো, বড় হতে গেলে কিছু অসুখ শরীরে আসবেই—সে এই সব ভেবে সিঁড়ি ভেঙে যত উঠছিল তত মনে হচ্ছিল, সত্যনারায়ণদা, ভারী মুসিবতে পড়ে গেছে।

    সুকুমার বলল, কিছু তো দেখলাম না!

    —কিছু না?

    —না তো!

    —তোমাদের চোখ নেই! তোমরা এত ভোঁতা মেরে গেছ।

    সুকুমার অবাক। চোখ মুখ ভয়ঙ্কর রকমের ভীতু, ভূতটুত দেখলে এমন চোখ মুখ হবার কথা! সুকুমার মনে মনে বলল, তোমার মাথাটা গেছে। চুরি করে ফাঁক করে দিচ্ছ—ধরা পড়ে যাবে ভয়ে শালা তুমি এমন মুখ করে রেখেছ। পাগলামি করলেও রেহাই নেই। এবার চাঁদ সত্য কথাটা বলে ফেল।

    সুকুমার বলল, রাণু কেমন আছে দাদা?

    —দু দিন বেশ খাচ্ছিল, আজ আবার খেতে পারছে না গন্ধে!

    —অনেক তো করলেন।

    হঠাৎ কেমন অসহায় মানুষের মতো চেপে ধরল সুকুমারের হাত। বলল, তুমি বাঁচাও। তুমিই পার।

    সুকুমার বলল, আপনি বসুন তো! উতলা হবেন না। বৌদি বৌদি! সে দরাজ গলায় ডাকলে, মালতী এসে দাঁড়াল সামনে। ওরও চোখ মুখ কেমন শুকনো। সেই নির্মল হাসিটুকু নেই।

    —আপনাদের কি হয়েছে?

    —জানি না ভাই। আর ভাল লাগছে না।

    সত্যনারায়ণ বলল, থানায় তোমার দাদাকে একটু খবর দিতে হবে।

    —কেন?

    —দেবদারু গাছটা সাফ করা দরকার।

    —গাছে কি হয়েছে?

    —গাছের নীচে সব পঙ্গপাল। অখাদ্য কুখাদ্য খায়।

    —খাচ্ছে খাক না। আপনার কি তাতে?

    —নীচে যা তা সেদ্ধ করে খাবে, আর ওপরে আমরা থাকব। সে কখনও হয়? গন্ধ! বলেই যেন ছুটে বের হয়ে গেল সত্যনারায়ণ।

    মালতী বলল, বুঝলেন।

    —হুঁ বুঝছি। দেখি। এদের সরানো যায় কিনা।

    সত্যনারায়ণ ফিরে এসে বলল, যা হয় কর একটা ভাই। আমরা না হলে মরে যাব। দু’দিন বাদে ঠিক মালতীও বমি করে দেবে। তখন আমরা তিনজন, আমি বলছি, কেউ বাদ যাবে না, পাশের ফ্ল্যাট, নীচে সবাই। আস্তে আস্তে সবাই পাবে। সবাই মরবে। একটা কিছু করো।

    সুকুমার প্রথমে ওর দাদার কাছে গেল। ওর দাদা বলল, আইনে নেই। তাড়াবার কোন আইন নেই। শেষে স্মরণ নিতে হল ছেলেদের।

    ওরা বলল, সরে পড়।

    —কোথায় যাব বাবু!

    —আমরা কি জানি কোথায় যাবে!

    বুড়ো লোকটা বলল, চলে যাব বাবু। সকালে চলে যাব।

    —এক্ষুনি। তোমাদের জন্য ভদ্রলোকেরা আর শহরে থাকতে পারবে না। সব অকর্ম-কুকর্ম করে বেড়াচ্ছে, আমরা বুঝি জানি না।

    ছেলেগুলো সব পোঁটলাপুঁটলি মাথায় নিয়ে ফেলেছে ততক্ষণে। হাঁড়ি-পাতিল বুড়ো মানুষটা। চুল সাদা, কানি পরনে, নাকের ভেতরে বড় গর্ত, কান বড় এবং লোমে ভর্তি। বুড়ো মানুষটা, দু বছরের বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নিলে আরও দু-চারজন এসে ঘিরে দাঁড়াল। এবং যা হয়ে থাকে বেশ সোরগোল পড়ে গেল। আর তখন যায় কোথায়। দৌড়ে পালাতে পারলে বাঁচে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ওরা দৌড়ে কোথায় চলে যাচ্ছে। নিমেষে দেবদারু গাছটার চার পাশ কেমন ফাঁকা হয়ে গেল। কিছু ভাঙা হাঁড়ি-পাতিল, পোড়া ইঁট, দুর্গন্ধময় কিছু ছেঁড়া কানি, আর সব পচা জীবজন্তুর উচ্ছিষ্ট হাড় মাংস ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। সত্যনারায়ণ জমাদার ডেকে জায়গাটা সাফ করে ফেলল, গঙ্গা জলে ধুয়ে দিল। শরীরে এবং চারপাশে যা কিছু আছে তার ওপর ওডিকোলন ছড়িয়ে এবং রাম রাম বলতে বলতে সিঁড়ি ধরে ওপরে উঠে গেল। তারপর দরজা জানালা খুলে দিল সব। রাণুকে নিয়ে জানালায় একবার দাঁড় করিয়ে বলল, পাচ্ছিস?

    রাণু নাক টেনে বলল, না বাবা।

    —এখানে?

    —না বাবা।

    —এদিকে আয়। দ্যাখ তো…?

    —না বাবা।

    তারপর সত্যনারায়ণ ভাল করে ঘর বারান্দা ধুয়ে দিতে বলল রান্নার মেয়েটাকে। যেখানে যা কিছু আছে সব তাতেই গন্ধটা লেগে আছে ভেবে জল দিয়ে একেবারে ঝকঝকে তকতকে করে ফেলল। মাছ মাংস রান্না হল না। নিরামিষ আহার করল সত্যনারায়ণ। সত্যনারায়ণ এবং রাণু আজ কত দিন পর যেন পেট ভরে ভাত খেল।

    আর আশ্চর্য সে রাতে শুয়ে পড়তেই ঘুমিয়ে পড়ল। এবং নাক ডাকতে থাকল। কিছুক্ষণ পর নাক ডাকা বন্ধ হয়ে গেল। কেউ যেন তাকে ডাকছে।—অমা দেখ এসো কি ব্যাপার। সে উঠে গেল জানালায়। আবার নতুন কারা আসছে। এবার একজন দুজন নয়। সে দেখল, গাছটার নীচে সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছে। চার পাশ থেকে পঙ্গপালের মতো ধেয়ে আসছে। মাথায় হাঁড়ি-পাতিল, বৌ একটা নয়, একেবারে সার দিয়ে এবং সবার কোলে বাচ্চা। পাঁচটা সাতটা করে অপোগণ্ড, উলঙ্গ প্রায় তারা সব, চুল শণের মতো, এবং অভাবী মানুষ। ওদের সঙ্গে আছে সব পচা শাকসব্জি, উচ্ছিষ্ট খাবার। পচা পরিত্যক্ত মাছ-মাংসের হাড়। মাছি ভনভন করছে। কত দিন চান করে না এরা, যেন এরা শহরের সবকিছু অধিকার করে নিতে আসছে। এবং সে দেখতে পেল, অফিস কাছারী করতে পারছে না মানুষ, রাস্তা পার হতে পারছে না। ডিঙিয়ে যেতে হচ্ছে। পার হতে সেই গন্ধ নাকে এসে লাগছে। মানুষেরা চার পাশে যারা আছে অক্ অক্ বমি করছে। চোখের ওপর একটা বেড়াল ছানা আগুনে লোহার শিকে সেঁকে নিচ্ছে আদিম বন্য হিংস্র এক মানুষ এমন সুসময়ে কলকাতার সব জুড়ে বসতে চাইছে সে। রাণু, মালতী সে পাশের ফ্ল্যাটে, নীচের ফ্ল্যাটে এবং সর্বত্র সেই অক অক জল বমি। প্রায় মহামারীর মত সব শহরকে গ্রাস করছে। এক প্রাগৈতিহাসিক জীবের মত ওদের সার। সে রাণু মালতীর হাত ধরে শহর লাফিয়ে লাফিয়ে পার হয়ে যাচ্ছে। প্রায় আধমরা হয়ে আসছে। চোখ মুখ ছিটকে বের হয়ে যাবার মত। যেন এবার তারা কোণঠাসা করে মারবে তাকে। সব কলকাতা এ-ভাবে পঙ্গপালে ছেয়ে গেল। সে চিৎকার করে উঠল, সুকুমার বাঁচাও।

    ওর ঘুম ভেঙে গেল। সে গলা শুকনো বোধ করল। জানালা খোলা। ভয়ে জানালার পাশে যেতে সাহস হচ্ছে না। জিরো পাওয়ারের আলো জ্বলছে। মালতী অঘোরে ঘুমোচ্ছে। ও ঘরে রাণু। সে পা টিপে টিপে এগোতে থাকল। ওরা এখনও ঘুমোচ্ছে। তার চিৎকার পর্যন্ত শুনতে পায় নি। শহরের ফুটপাথে এত মানুষ যাচ্ছে টের পাচ্ছে না। সে কোন রকমে পা টিপে টিপে জানালায় গিয়ে দাঁড়াল। আশ্বিনের বাতাস। দূরে ঢাকের বাদ্যি বাজছে। আর চাঁদের মরা আলোতে সে দেখতে পেল ভূতুড়ে দেবদারু গাছটা একাকী। নীচে একটা রাস্তার কুকুর শুয়ে আছে। গাছটার নীচে কেউ চলে আসে নি। কলকাতা আবার নিরিবিলি নিজের ভেতর ডুবে আছে। কলকাতা আছে কলকাতাতেই।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleনীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়
    Next Article নানা রসের ৬টি উপন্যাস – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়

    Related Articles

    তসলিমা নাসরিন

    সেইসব অন্ধকার – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    আমার প্রতিবাদের ভাষা – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    অগ্রন্থিত লেখার সংকলন – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    বন্দিনী – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নির্বাসন – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নেই, কিছু নেই – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Our Picks

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }