Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সুবর্ণলতা – আশাপূর্ণা দেবী

    আশাপূর্ণা দেবী এক পাতা গল্প627 Mins Read0
    ⤷

    ১.০১ একাল-সেকাল নিয়ে তর্ক

    ভূমিকা

    আপাতদৃষ্টিতে সুবৰ্ণলতা একটি জীবনকাহিনী, কিন্তু সেইটুকুই এই গ্রন্থের শেষ কথা নয়। সুবৰ্ণলতা একটি বিশেষ কালের আলেখ্য। যে কাল সদ্যবিগত, যে কাল হয়তো বা আজও সমাজের এখানে সেখানে তার ছায়া ফেলে রেখেছে। সুবৰ্ণলতা সেই বন্ধন-জর্জরিত কালের মুক্তিকামী আত্মাৱ ব্যাকুল যন্ত্রণার প্রতীক।

    আর একটি কথা বলা আবশ্যক। আমার প্রথম প্রতিশ্রুতি গ্রন্থের সঙ্গে এর একটি যোগসূত্র আছে। সে যোগসূত্র কাহিনীর প্রয়োজনে নয়, একটি ভাবীকে পরবতী কালের ভাবধারার সঙ্গে যুক্ত করার প্রয়োজনে।

    সমাজবিজ্ঞানীরা লিখে রাখেন সমাজ-বিবর্তনের ইতিহাস, আমি একটি কাহিনীর মধ্যে সেই বিবর্তনের একটি রেখাঙ্কনের সামান্য চেষ্টা করেছি মাত্ৰ।

    –লেখিকা

     

    প্রথম পর্ব

    একাল-সেকাল নিয়ে তর্ক তো চিরকালের, কিন্তু কেমন করে চিহ্নিত করা যায়। সেই কালকে? একএকটা কালের আয়ু শেষ হলেই কি এক-একবার যবনিকা পড়ে? যেমন যবনিকা পড়ে নাট্যমঞ্চে?

    না, যবনিকার অবকাশ কোথায়? অবিচ্ছিন্ন স্রোত। তবু একাল সেকাল, এযুগ সেযুগ বলে অভিহিতও করা হয়। সমাজ, মানুষের রীতিনীতি, চলন-বিলন, এরাই ধরে রাখে কালের এক-একটা টুকরোকে, ইতিহাস নাম দেয় অমুক যুগ, তমুক যুগ।

    কিন্তু কালকে অতিক্রম করতেও থাকে বৈকি কেউ কেউ, নইলে কারা এগিয়ে দেবে সেই প্রবহমাণ ধারাকে? সে ধারা মাঝে মাঝেই স্তিমিত হয়ে যায়, নিস্তরঙ্গ হয়ে যায়। তবু এরা বর্তমানের পূজো কদাচিৎ পায়, এরা লাঞ্ছিত হয়, উপহসিত হয়, বিরক্ত-ভাজন হয়।

    এদের জন্যে কাটার মুকুট।
    এদের জন্যে জুতোর মালা।

     

    ০১.

    তবু এরা আসে। হয়তো প্রকৃতির প্রয়োজনেই আসে। তবে কোথা থেকে যে আসবে তার নিশ্চয়তা নেই। আসে রাজরক্তের নীল আভিজাত্য থেকে, আসে বিদ্যা বৈভবের প্রতিষ্ঠিত স্তর থেকে। আসে নামগোত্রহীন মূক মানবগোষ্ঠীর মধ্য থেকে, আসে আরো ঘন অন্ধকার থেকে।

    তাদের অভ্যুদয় হয়তো বা রাজপথের বিস্তৃতিতে, হয়তো বা অন্তঃপুরের সঙ্কীর্ণতায়।

    কিন্তু সবাই কি সফল হয়?

    সবাইয়েরই কি হাতিয়ার এক?

    না।

    প্রকৃতি কৃপণ, তাই কাউকে পাঠায় ধারালো তলওয়ার হাতে দিয়ে, কাউকে পাঠায় ভোঁতা বল্লম দিয়ে। তাই কেউ সফল সার্থক, কেউ অসফল ব্যৰ্থ। তবু প্ৰকৃতির রাজ্যে কোনো কিছুই হয়তো ব্যর্থ নয়। আপাত-ব্যর্থতার গ্লানি হয়তো পরবর্তীকালের জন্য সঞ্চিত করে রাখে শক্তিসাহস।

     

    সুবৰ্ণলতা এসব কথা জানতো না। সুবৰ্ণলতা তার গৃহত্যাগিনী মার নিন্দার সম্বল নিয়ে সংসারে নেমেছিল!

    তাই সে জেনেছিল সে কেবল তার অসাৰ্থক জীবনের গ্লানির বোঝা নিয়েই পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছে। জেনেছিল তার জন্য কারো কিছু এসে যাবে না।

    সুবৰ্ণলতার মৃত্যুতে যে সুবৰ্ণলতার সতেরো বছরের আইবুড়ো মেয়ে পায়ের তলার মাটি খুঁজে পায় নি, এ খবর জেনে যায় নি সুবৰ্ণলতা। জেনে যেতে পারে নি ওই মেয়েটার কাছে সুবৰ্ণলতার মৃত্যুদিনই জন্মদিন।

    দক্ষিণের এই চওড়া বারান্দাটায়, যেখানে শুয়ে থাকতো সুবৰ্ণলতা সংসার থেকে চোখ ফিরিয়ে, সেখানটা থেকে মেয়েটা যেন আর নড়তে চায় না। সুবৰ্ণলতাকে নতুন চোখে দেখতে শিখল বুঝি সে জায়গাটা শূন্য হয়ে যাবার পর। দেখতে শিখল বলেই ভাবতে শুরু করল, জীবন শুরু করবার সময়ে যদি সুবৰ্ণলতা একখানা দক্ষিণের বারান্দা পেত, হয়তো জীবনের ইতিহাস অন্য হতো সুবৰ্ণলতার।

    হয়তো ওই মেয়েটার চিন্তায় কিছু সত্য ছিল, হয়তো তাই হতো। কিন্তু তা হয় নি। দক্ষিণের বারান্দার দাক্ষিণ্য জোটে নি। সুবৰ্ণলতার কপালে।

    অথচ জুটলে জুটতে পারতো।

    সে বাড়িখানাও তো সুবৰ্ণলতার চোখের সামনেই তৈরি হয়েছিল। ওদের পুরনো এজমালি বাড়ির অংশের দরুন টাকাটা হাতে পেতেই সুবৰ্ণলতার বুদ্ধিমান ভাসুর, দেবর, স্বামী তাড়াতাড়ি বাড়িখানা ফেদে ফেলল। বলল, টাকার পাখা আছে। ওকে পুতে ফেলাই বুদ্ধির কাজ। গলির মধ্যে, তা হোক, বড় রাস্তার মুখেই, দুবার মোড় ঘুরতে হয় না।

    সেই বাড়িতেই তো ত্ৰিশটা বছর কাটিয়ে গেছে সুবৰ্ণলতা, সেখান থেকেই বার আষ্টেক আঁতুড়ে গেছে, কেন্দেছে, হোসেছে, খেটেছে, বিশ্রাম করেছে, সংসারলীলার যাবতীয় লীলাতেই অংশগ্রহণ করেছে, তবু পিঞ্জরের যন্ত্রণাবোধে অহরহই ছটুফট করেছে।

    সুবৰ্ণলতার স্বামী ক্ষুব্ধ গর্জনে বলতো, যেচে দুঃখ ডেকে আনা! সেধে কষ্ট ভোগ করা! শত সুখের মধ্যিখানে রাতদিন দীর্ঘনিঃশ্বাস পড়ছে মানুষের! আর কী চাই তোমার? আর কত চাই?

    সুবৰ্ণলতা বলতো, আমি তো কিছু চাই না।

    তা চাইবে কেন, না বলতে যখন সব কিছু হাতের কাছে পেয়ে যাচ্ছ। তোমার অন্য জায়েদের সঙ্গে অবস্থা মিলিয়ে দেখেছি কোনোদিন?

    সুবৰ্ণলতা মৃদু হেসে বলতো, দেখেছি বৈকি!

    তবু রাতদিন নিঃশ্বাস! যেমন মা তেমনি ছা হবে তো!

    সুবৰ্ণলতা তীব্রস্বরে বলতো, আবার?

    ওর বর তখন ভয় পেয়ে বলতো, আচ্ছা বাবা আচ্ছা, আর বলবো না।

    ওই তীব্রতার পিছনে যে এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার স্মৃতি। ভয় পাবে বৈকি।

    কিন্তু এসব তো অনেক দিন পয়ের কথা। যখন সুবৰ্ণলতার রাগের কাছে রূপোলী তারের আভাস, যখন সুবৰ্ণলতার সেই দীর্ঘ উন্নত বাড়-বাড়ন্ত গড়নে ক্ষয় ধরেছে।

    আগে যখন সুবৰ্ণলতা তার স্বামীত্যাগিনী মায়ের নিন্দনীয় ইতিহাসের সম্বল নিয়ে মাথা হেঁট করে শ্বশুর-ঘর করতে এসেছিল, যখন কোনো একটা উপলক্ষ পেলেই সুবৰ্ণলতার শাশুড়ী সুবৰ্ণলতাকে তার বিয়ের দরুন পাওয়া জরিতে জবড়াজঙ বেগুনী রঙা বেনারসী শাড়ী আর বড় বড় কলকাদার লাল মখমলের জ্যাকেট পরিয়ে সাজিয়ে ফেলত, আর বাড়িতে কেউ বেড়াতে এলেই তার সামনে সাতখানা করে নিন্দে করতো বৌয়ের আর বৌয়ের বাপের বাড়ির-তখন?

    তখন এত সাহস কোথা সুবৰ্ণর? নিজের বাড়িতেই তখন আড্ডা ছিল মুক্তকেশীর, যেতে হত না কোথাও। পাড়ার সবাই আসতো মুক্তকেশীর কাছে। অলিখিত আইনে পাড়ার মহিলাকুল সবাই ছিল মুক্তকেশীর প্রজা।

    বাড়িটা তিনতলা, ঘরদালানের সংখ্যা কম নয়, দুদিকে দুটো রান্নাঘর, শানবাঁধানো উঠোন, গোটা তিন-চার কল-চৌবাচ্ছা, ধর কিছু নেই কোথাও। তবে ওই পর্যন্তই। বাড়িটা যেন সাদামাটার একটা প্রতীক, না আছে শ্ৰী না আছে ছাদ, বাড়ি না বাড়ি!

    বাস করতে হলে কতটুকু কি আবশ্যক, শুধু এই চিন্তাটুকু ছাড়া বাড়ি বানাবার সময় আর কোনো চিন্তা যে এদের মাথায় এসেছিল এমন প্ৰমাণ পাওয়া যায় না।

    মঠ নয়, মন্দির নয়, বড়মানুষের বাগানবাড়িও নয়, গোরস্ত লোকের বসবাসের বাড়ি। তার মধ্যে শোভা সৌন্দর্য শিল্প-রুচি এ সবের সম্পর্ক কি এদের বুদ্ধির বাইরে।

    সুবৰ্ণলতাকে তাই এরা পাগল বলে। বলবে না কেন? সুবৰ্ণলতা যে ওই সব অদ্ভুত জিনিসগুলো খুঁজে বেড়ায়।

    খুঁজে বেড়ায় বলেই বাড়ি বানানোর মধ্যপথে পুলকিত আনন্দে বরের কাছে রোজ ধর্ণা দিয়েছে তাকে একবার দেখিয়ে আনতে বাড়িটা। তারপর নতুন সংযোজনার প্ল্যান যোগাবে সুবৰ্ণলতা।

    বর অবশ্য উড়িয়ে দিত আবদারটা। সুবর্ণ বলতো, বাঃ, তোমাদের আর কি? কতক্ষণই বা বাড়িতে থাকো? খাওয়া-নাওয়া আর ঘুম, এই তো! বাড়ি ভোগ করতে তো আমরা মেয়েমানুষরাই। আমাদের মত নিয়ে করলে—

    করলে আর কি? লোকে বলবে স্ত্রৈণা! তবে যেতে চাও মাকে বল গে!

    মাকে যে বলতেই হবে এ সত্য জানতো বৈকি সুবৰ্ণ, তবু বরের কাছে আবদার করায় আমোদ আছে, মিষ্টত্ব আছে, আশা আছে। হ্যাঁ, ছিল বৈকি আশা। বরের উপর না হোক, নিজের ক্ষমতার উপর অনেকখানি আস্থা আর আশা ছিল তখন সুবৰ্ণলতার। তখন সুবৰ্ণলতা কানে ইয়ারিং পরতো, তিনপেড়ে ড়ুরে শাড়ি পরতো, আর অনেক কসরৎ করে কাচপোকা ধরে তাকে কেটে কেটে টিপ করতো।

    ইচ্ছেটাই তখন প্ৰবল তার, সব বিষয়ে।

    অতএব মুক্তকেশীকেই গিয়ে ধরলো, বাড়িটা একবার দেখতে চলুন না মা, বেশি তো দূর নয়।

    মুক্তকেশী অবশ্য সে আগ্রহে জল ঢাললেন, হাঁ-হাঁ করে উঠে বললেন, শোনো কথা, এখন যাবে কি? আদিনে অক্ষণে গেলেই হল? ভিটে বলে কথা। ঠাকুরমশাই শুভদিন দেখে দেবেন, বাস্তুপূজো করে তবে তো গৃহপ্ৰবেশ!

    তার্কিক-স্বভাব সুবৰ্ণলতা অবিশ্যি সঙ্গে সঙ্গেই দুম করে বলে বসেছিল, আর এই যে আপনার ছেলেরা নিত্য-দিন যাচ্ছেন, তার বেলা দোষ হয় না?

    মুক্তকেশী অভ্যস্ত বিরক্তির গলায় বলেছিলেন, তক্ক করা রোগটা ছাড়ো তো বাছা, এই রোগেই আমার হাড় পুড়িয়ে খেলে তুমি। বেটা ছেলের আবার কিছুতে দোষ আছে নাকি? মেয়েমানুষকেই সব কিছু মেনে-শুনে চলতে হয়।

    অতএব বাড়ি তৈরি হতে হতে আর সে বাড়িকে দেখা ঘটে ওঠে নি। সুবৰ্ণলতার, কারণ সুবৰ্ণলতা যে মেয়েমানুষ এটা তো অস্বীকার করবার নয়।

    অগত্যা আবার বরকেই ধরা, সামনের দিকে একটা বারান্দা রাখতে হবে কিন্তু, ঝুলবারান্দা। যাতে রাস্তা দেখা যায়।

    সুবৰ্ণলতার বর চোখ কুঁচকে বলে উঠেছিল, কেন? রাস্তার দিকে ঝোলা বারান্দার হঠাৎ কি এত দরকার পড়ল? বিকেলবেলা বাহার দিয়ে দাঁড়াবার জন্যে?

    সুবৰ্ণলতা তখনও ছেলেমানুষ, তখনও ওর সন্দেহবাই বরের কুটিল কথাগুলোর অন্তর্নিহিত কদৰ্য অর্থগুলো ধরতে পারত না, তাই বলে উঠেছিল, বা রে, বাহার দেওয়া আবার কি? রাস্তার দিকে বারান্দা থাকলে রাস্তাটা কেমন দেখা যায়! ঠাকুরভাসান, মহরম, বর-কনে যাওয়া, ঘটার মড়ার হরি সংকীর্তন, কত কি দৃশ্য রাস্তায়—

    বর অবশ্য এবার হেসে ফেলেছিল। ওই এক কুটিল বান্তিকগ্ৰস্ত হলেও বয়সে সে-ও ছেলেমানুষই। হেসে বলেছিল, আর কিছু না হোক, শেষেরটা একটা দ্রষ্টব্য বটে। বিশেষণটা দিয়েছ ভাল, ঘটার মড়া।

    সুবৰ্ণলতা অতঃপর মুখঝামটা দিতে কসুর করে নি। বলেছিল, ভুল কি বললাম, ঘটাপটা করে মড়া নিয়ে যায় না লোকে?

    তা যায় বটে।

    আমাকেও তাই নিয়ে যাবে তো? আবদেরে গলায় বলে ওঠে সুবৰ্ণলতা, আমি যখন মরে যাব, ঘটা করে সংকীর্তন করে নিয়ে যাবে?

    বর মাথায় হাত দিয়ে বলে, সর্বনাশ! কে আগে মরে তার ঠিক আছে? আমি তোমার থেকে কত বড়, আমিই নিৰ্ঘাত আগে মরবো–

    সুবৰ্ণলতা নিশ্চিন্ত গলায় বলে, ইস। মরলেই হল আর কি? সেদিন মার সেই কালীঘাটের দৈবজ্ঞি। আমার হাত দেখে কী ঘলে গেল মনে নেই?

    না, মনে নেই তো—, বর অসহিষ্ণু গলায় বলে, কী বলেছিল? আমি অমর হবো?

    যদিও বৌয়ের বয়েস মাত্র চোদ এবং তার বাইশ, তত্ৰাচ অসহিষ্ণুতায় খুব একটা ঘাটতি দেখা যাচ্ছে না। অন্তত বরপক্ষে তো নয়ই।

    কিন্তু কথার ভটচায সুবৰ্ণলতাকে যে এই রাত্তিরেই যত কথায় পায়, তাই সে বলে ওঠে, আহা! কলিযুগে যেন অমর বর আছে! বলেছে আমি সধবা মরবো।

    বাঃ, বেড়ো! তা এই সুখবরটি দিতে বোধ হয় বেশ কিছু বাগিয়ে নিয়ে গেছে তোমার কাছ থেকে?

    আমার কাছ থেকে?

    সুবৰ্ণলতা আকাশ থেকে পড়ে, আমি আবার কোথায় কী পাবো? মা সবাইয়ের হাত দেখালেন, চাল দিলেন, পয়সা দিলেন, নতুন গামছা দিলেন—

    না, দিনের বেলায় নয়, দিনের বেলায় ছেলেমানুষ বৌ বরের সঙ্গে গল্প জুড়বে, এমন অনাচার আর যার সংসারে হয় হোক, মুক্তকেশীর সংসারে কদাপি ঘটতে পারে না।

    এ নাটক রাত্রেরাই।

    প্রথম অঙ্কের প্রথম দৃশ্য।

    অবশ্যই বর এই মধুর ক্ষণটুকু এমন অকারণে অপব্যয় করতে রাজী নয়, তাই ওই তুচ্ছ কথায় যবনিকা টানতে বলে ওঠে, ভালই করেছেন। ওরা সব লোক সুবিধের নয়। ওদের সন্তুষ্ট রাখাই ভাল।

    এ মন্তব্যের পরই বর একটু অনুচ্চ হাসির শব্দ শুনতে পায়।

    সঙ্গে সঙ্গেই কঠোর গলায় বলে ওঠে, হাসলে যে?

    এমনি।

    এমনি মানে? এমনি কেউ হাসে?

    পাগলে হাসে।

    তা তুমি কি পাগল?

    ছিলাম না, তোমাদের সংসারে এসে হয়েছি–চতুর্দশী সুবৰ্ণলতা প্ৰায় পাকা গিনীদের মতই ঝঙ্কার দেয়, দেখে-শুনেই পাগল। মার কোন কাজটাই বা তোমাদের কাছে ভুল? মা যদি ওকে কিছু না দিতেন, নিৰ্ঘাত বলতে, দেন নি বেশ করেছেন, যত সব ভণ্ড!

    বলা বাহুল্য সুবৰ্ণ-পতি এতে খুব প্রীত হয় না, তীব্ৰস্বরে বলে, তবে কী করা উচিত? মাকে থো করে বৌয়ের পাদোদক খাওয়া?

    সুবৰ্ণলতা দুৰ্গা দুৰ্গা করে উঠে বলে, যা নয়। তাই মুখে আনা! তার মানে আমায় রাগিয়ে দিয়ে কাজটি পণ্ড করার চেষ্টা। আমি কিন্তু রাগছি না, আমি হচ্ছি। ভবি। এই তোমার গা ছয়ে প্রতিজ্ঞা করছি সামনে বারান্দা না করলে তোমাদের সে বাড়িতে যাবই না। আমি।

    বর তখনকার মত বলে, আচ্ছা আচ্ছা দেখা যাবে। এখন শোও তো এসে।

    অন্ধকারের আবরণ তাই রক্ষে, নইলে বরের আদরের ডাকে তরুণী পত্মীর বিরক্তি-তিক্ত মুখভঙ্গীটুকু দেখতে পেলে বোধ করি ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যেত বর।

    তবু গলাটায় মাধুর্যের ঘাটতি ধরতে পারলো বৈকি। সুবৰ্ণ যখন নীরস গলায় বলল, তোমার তো দেখা যাবে।! যা দেখবে তা জানাই আছে। একের নম্বরের মিথু্যক! বাড়ি করতে আর জমি পেল না— গলির মধ্যে! তখন সেও সমান নীরস গলায় বলে ওঠে, বাড়ি আমার একলার নয়। মাথার ওপর মা দাদা এদিকে ভাইয়েরা, আমি আবদার করিগে–ওগো আমার বৌ গড়ের মাঠের ওপর বাড়ি চায়। যত সব!

    গড়ের মাঠ বলি নি আমি, শুধু বড় রাস্তাটা দেখতে চাই। মাথার ওপর ওপরওলা থাকলে একটা কথাও বলতে নেই বুঝি? আমি বলে রাখছি বারান্দা আমার চাই-ই চাই।

    আমার চাই-ই, চাই!

    বাঙালী গোরস্ত ঘরের বৌয়ের মুখের এই ভাষা! আসপদ্দা বটে একখানা! এত আসপদ্দা পেল কোথায় সুবৰ্ণলতা? এই কটা বছর শ্বশুরবাড়ির ভাত খেয়েই কি ওর মার ইতিহাস ভুলে গেছে? ভুলে গেছে তার লজ্জার গ্লানি? দিব্যি একখানি হয়ে উঠেছে।

    আসপদ্দাটা তাহলে ওই জন্মসূত্রেই পাওয়া? তা ছাড়া আর কি? আরো তো বৌ রয়েছে

    যখন-তখন তাই উদ্দেশে গালি পাড়েন মুক্তকেশী। কি করবো দুই বুড়ীই যে মরে হাতছাড়া হয়ে গেছে, নইলে আমার মাকে আর সইমাটিকে নিতাম এক হাত! নিজের নাতনীর গুণ জানতো না বুড়ী? জানতো, জেনে বুঝেই আমার গলায় এই অপরূপ মালাটি গছিয়ে দিয়েছিল। পূর্বজন্মের ঘোরতর শত্রুতা ছিল আর কি!

    আবার এও বলেন কখনো কখনো, বুড়ীদের আর দোষ দিই কেন, মা-টির গুণই গাই। কেমন মা! আমড়া গাছে কি আর ল্যাংড়া ফলবে!

    তবু সুবর্ণ তখনও চোটপাট উত্তর করতে শেখে নি। শাশুড়ী মায়ের প্রসঙ্গ তুললেই মরমে মরে যেত, আর শেষ অবধি যত আক্রোশ আর অভিযোগ গিয়ে পড়তো মায়ের উপরেই।

    কেন, কেন তার মা আর সকলের মায়ের মত নয়? কেন তার মা স্বামীত্যাগ করে গৃহত্যাগ করে ছেলেমেয়ের মুখ হাসিয়ে গেছে?

    সন্তানস্নেহ কিছুই নয় তা হলে? জেদটাই সব চেয়ে বড় তার কাছে? এমন কি একখানা চিঠি দিয়ে পর্যন্ত উদিশ করে না? সুবর্ণর যে অনেক বাধা সে কি মা বোঝে না? সুবর্ণ যদি তার মাকে একখানা চিঠি লিখতে বসে, বাড়িতে কোর্ট-কাছারি বসে যাবে না?

    আইনজারি হবে না?

    নিষেধাজ্ঞা?

    একেই তো ওই অপরাধে কেউ তাকে দেখতে পারে না।

    জবড়জং গাঢ় বেগুনী রঙা বেনারসী শাড়ি, আর জড়ির কলকাদার লাল মখমলের জ্যাকেট পড়া ন বছরের সুবৰ্ণলতা যখন ভাগ্যতাড়িতের মত এদের বৌ হয়ে এসে ঢুকলো, তখন তো একদিনেই তিন-তিনটে বছর বয়েস বেড়ে গেল তার। ঘরে পরে সবাই বলে উঠল, ন বছর? ওই ধাইপেয়ে দশাসই মেয়ের বয়স ন বছর? ন বছর ও তিন বছর আগে ছিল।

    সেই বিরূপতার দৃষ্টি আজও ঘুচল না। সংসারের। বলতে গেলে পতিতের দৃষ্টিতেই দেখা হয়েছে তাকে। হতে পারে মা খারাপ হয়ে বেরিয়ে যান নি, তবু কুলত্যাগ, গৃহত্যাগ, স্বামীত্যাগ, এও কি সোজা অপরাধ নাকি?

    তা অনেক দিন পর্যন্ত অপরাধিনী-অপরাধিনী হয়েই ছিল সুবর্ণ। তারপর দেখল। এরা শক্তের ভক্ত, নরমের যম! যত নীচু হও ততই মাথায় চড়ে এরা, অতএব শক্ত হতে শিখল।

    কিন্তু শক্র হয়ে কি রাস্তার দিকের বাবান্দা আদায় করতে পেরেছিল সুবৰ্ণ?

    না, পারে নি।

    ওর স্বামী প্ৰবোধ বুঝি চুপি চুপি একবার মায়ের কাছে তুলেছিল কথাটা, মুক্তকেশী বলেছিলেন, না না, ওর গোড়ে গোড় দিয়ে মরিস নি তুই পোবা! ঘরের ভেতর খেমটা নাচছে বৌ, আবার বারান্দায় গলা ঝোলালে আরও কত বড় বাড়বে তা আন্দাজ করতে পারছিস? তোর ভ্যাড়াকান্ত শ্বশুরটা পরিবারকে আস্কারা দিয়ে দিয়ে মাথায় তুলে শেষে পরিণামে কি ফল পেল দেখেছিস তো? চাই-ই চাই! মেয়েমানুষের মুখে এমন বাক্যি বাবার জন্মে শুনি নি।

    এরপর আর কি বলবে প্ৰবোধ? তবে চালাকি একটু খেলে সে। প্রতিদিনই প্ৰবোধ দেয় সুবৰ্ণলতাকে, হচ্ছে গো, শুধু বারান্দা হচ্ছে।

    পরিণামে যা হয় হোক, এখন তো বাড়তি কিছু সুখলাভ হয়ে যাচ্ছে, সুবৰ্ণলতার মুখে আহাদের আলো খেলছে, সুবৰ্ণলতা উৎসাহে অধীর হচ্ছে, সুবৰ্ণলতা আত্মসমর্পণে নমনীয় হচ্ছে।

    হচ্ছে।

    চৌদ্দ বছরের সুবৰ্ণলতার পক্ষে এ সন্দেহ করা শক্ত ছিল, এমন জলজ্যান্ত মিথ্যে ধাপ্পা দেওয়া যায়। বরের প্ৰেম প্ৰীতি ভালবাসার পরিচয়ে মুগ্ধ হচ্ছে তখনও। আর কল্পনায় স্বৰ্গ গড়ছে।

    চৌদ্দ বছরের সুবৰ্ণলতার পক্ষে এ সন্দেহ করা শক্ত ছিল, এমন জলজ্যান্ত মিথ্যে ধাপ্পা দেওয়া যায়। বরের প্ৰেম প্ৰীতি ভালবাসার পরিচয়ে মুগ্ধ হচ্ছে তখনও। আর কল্পনায় স্বৰ্গ গড়ছে।

    এই ভাঙা পচা বাড়িটা ছেড়ে নতুন বাড়িতে গিয়েছে সে, বারান্দার ধারে চমৎকার সুন্দর একখানি ঘর, বড় বড় জানলা, লাল টুকটুকে মেঝে, সেই ঘরটিকে নিজের মনের মত সাজাবে সুবৰ্ণ। দেয়ালে দেয়ালে ছবি, তাকের উপর ঠাকুর-দেবতার পুতুল, বাক্স-প্যাটরায় ফুলকটা ঘেরাটোপ, ঝালর দেওয়া বালিশ, ফর্সা বিছানা। সেই ঘরে বসে কাথায় ফুল তুলবে সুবৰ্ণ চুপি চুপি লুকিয়ে, ভবিষ্যতের জন্যে।

    কাঁথার প্রয়োজনের সূচনা নাকি দেখা দিয়েছে সুবর্ণর দেহের অন্তঃপুরে। সুবৰ্ণ বোঝে না। অতশত, গিনীরাই বোঝেন। ভয়ও করছে, বেশ একটা মজা-মজাও লাগছে।

    অনেক দোলায় দুলছে এখন সুবর্ণ। ন বছরে এসেছে। এদের বাড়ি, সেই থেকেই স্থিতি, মা নেই, কেই বা নিয়ে যায়? বাপ সাহসই করে নি। পিসি একটা আছে কাছে-পিঠে, নিয়ে যেতে চেয়েছিল। একবার, এরা পাঠায় নি। এরা বলেছে, সে-কুলের সঙ্গে আর সম্পর্ক রেখে কাজ নেই। বাপ দেখতে আসে মাঝে-মধ্যেই ওই ঢের! তাও তো এদের সামনে ঘোমটা দিয়ে একবার দেখা। বোধ হয় সেই দুঃখে বাপও এখন আর আসে না বেশি। অতএব এদের নিয়েই থাকতে হবে সুবৰ্ণকে, তাই এদের মানুষ করে তুলতে ইচ্ছে করে সুবর্ণর। ইচ্ছে করে এরা শৌখিন হোক, সভ্য হোক, রুচি-পছন্দর মানে বুকুক। এদের নিয়ে সুন্দর করে সংসার করবে। সুবর্ণ।

    রেষারেষি, ঝগড়াঝগড়ি, স্বাৰ্থ নিয়ে মারামারি, এসব দুচক্ষের বিষ সুবর্ণর, দু চক্ষের বিষ সারাক্ষণ ওই রান্নাঘরে পড়ে থাকাও। উদার আবহাওয়ার স্বাদ জানে না। এরা। জানে না বই পড়তে, পদ্য মুখস্থ করতে।. ভাবতে ভাবতে মনটা হারিয়ে যায় সুবর্ণর, মনে পড়ে যায় তার আকস্মিক বিয়েটার কথা। বিয়েটা না হয়ে গেলে হয়তো এতদিন পাসের পড়া পড়তো সুবর্ণ।

    মা তো বলতো তাকে, তোকে আমি তোর দাদাদের মতন পাসের পড়া পড়াবো।

    সুবৰ্ণর ভাগ্যে ভগবান তেঁতুল গুললো।

    যাক, এই জীবনের মধ্যেই মাথা তুলে দাঁড়াতে হবে সুবৰ্ণকে। আর দাঁড়ানোর প্রথম সোপানই তো সুন্দর একটা বাড়ি। পরিবেশটা সুন্দর না হলে জীবনটা সুন্দর হবে কিসের উপর?

    চোদ্দ বছরের সুবৰ্ণর কাছে জীবনসৌন্দর্যের মাপকাঠি তখন ওই রাস্তা দেখতে পাওয়া বারান্দা দেওয়া একখানি ঘর।

    বারে-বারেই সে তাই বরকে জিজ্ঞেস করে, হ্যাগো, কতখানি চওড়া হচ্ছে?

    বর ভুরু কুঁচকে বলে, তা অনেকখানি।

    তা বেশ। কারণ হঠাৎ একটা বরকনে কি ঠাকুর গেল, সবাই মিলে দেখতে হবে তো বারান্দায় বুকে?

    বীর তীক্ষ্ণ হয়।

    বলে, সবাই তোমার মতন অমন বারান্দা-পাগল নয়।

    তা সত্যি। সুবর্ণর চোখেমুখে আলো ঝলসে ওঠে, পাগলাই আছি আমি একটু! কী আহাদ যে হচ্ছে ভেবে! হ্যাগো, রেলিঙে সবুজ রঙ দেওয়া থাকবে তো?

    তা সবুজ বল সবুজ, লাল বল লাল, তোমার ইচ্ছেতেই হচ্ছে যখন—

    সুবৰ্ণ গলে পড়ে।

    সুবৰ্ণ তার বরের মধ্যে সেই প্ৰেম দেখতে পায়, যা সে বইতে পড়েছে। বই অবশ্য লুকিয়ে লুকিয়ে পড়তে হয়, শাশুড়ী ননদ দেখলে মেরে ফেলবে।

    কিন্তু যোগান দেয় এদেরই একজন।

    সুবৰ্ণর কাছে সে মানুষ দেবতা-সদৃশ। এদের সঙ্গে তুলনা করলে স্বর্গের দেবতাই মনে হয় তাকে সুবর্ণর। হায়, তার সঙ্গে যদি কথা কইতে পেত সুবর্ণ!

    কইবার হুকুম নেই।

    এদের রাশ বড় কড়া। বিশেষ করে প্রবোধ পরপুরুষের সঙ্গে কথা বলা তো দূরের কথা, তাকানো পর্যন্ত পছন্দ করে না। সুযোগ পেলেই যে মেয়েমানুষগুলো খারাপ হয়ে যায়, এ তার বদ্ধমূল ধারণা। ওই বই দেওয়াটা টের পেলে কী যে ঘটতো কে জানে! কিন্তু সুবর্ণ সাবধানী।

    তবু সুবর্ণর ইচ্ছে করে সেই দেবতুল্য মানুষটার সঙ্গে একটু কথা কয়। কথা কইতে পেলে সুবর্ণ তাকেই পাঠাতো বাড়িটা কেমন হচ্ছে দেখতে, প্রশ্ন করতো— বারান্দাটা কি রং হলে ভাল হয়!

    কিন্তু সে হবার জো নেই যখন, তখন বরের মুখেই ঝাল খাওয়া! যে বর বলেছে, বারান্দাৱ কথা দুঃমি এখন কাউকে গল্প করতে বোলো না। শুধু তুমি জানািচ্ছ। আর আমি জানছি, আর জানছে মিস্ত্রীরা!

     

    কিন্তু তার পর?

    গৃহপ্ৰবেশের দিন-ক্ষণ দেখে মুক্তকেশী যখন দুখানা ঘোড়ার গাড়ি ভাড়া করে আর লক্ষ্মীর হাঁড়ি কোলে করে সপরিবারে এসে উঠলেন নতুন বাড়িতে?

    ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Article১০টি কিশোর উপন্যাস – আশাপূর্ণা দেবী
    Next Article বকুলকথা – আশাপূর্ণা দেবী

    Related Articles

    আশাপূর্ণা দেবী

    বিবাগী পাখি – আশাপূর্ণা দেবী

    April 7, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী

    কুমিরের হাঁ – আশাপূর্ণা দেবী

    April 7, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী

    ঠিকানা – আশাপূর্ণা দেবী

    April 7, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী

    ততোধিক – আশাপূর্ণা দেবী

    April 7, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী

    ১. খবরটা এনেছিল মাধব

    April 7, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী

    নতুন প্রহসন – আশাপূর্ণা দেবী

    April 7, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }