Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সুবর্ণলতা – আশাপূর্ণা দেবী

    আশাপূর্ণা দেবী এক পাতা গল্প627 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ২.০২ পারু বকুকে ইস্কুলে ভর্তি

    পারু বকুকে ইস্কুলে ভর্তি করার কি হলো? কতদিন ধরে বলছি যে—

    ভানুর কাছে এসে আবেদন জানিয়েছিল সুবৰ্ণলতা। বড় ছেলে, তার ওপর আস্থা এনেছিল, বলেছিল, তোদের বাপের দ্বারা হবে না, তোরা বড় হয়েছিস, তোরা নিবি ভার।

    ভানু আজ-কাল করে এড়াচ্ছিল। একদিন ভুরু কোঁচকালো। ঠিক ওর সেজকাকা যেমন ভঙ্গীতে ভুরু কোঁচকায়।

    ভুরু কুঁচকে বলেছিল, পারুকে এখনো ইস্কুলে ভর্তি করার সাধ তোমার? আশ্চর্য মা! অত বড় ধিঙ্গী মেয়ে ইস্কুলে যাবে?

    যাবে।

    স্থির স্বরে বলেছিল সুবৰ্ণলতা।

    ভানু তথাপি কথা কেটেছিল, গিয়ে তো ভর্তি হবে সেই ক্ষুদে ক্ষুদে মেয়েদের সঙ্গে! লজ্জা করবে না।

    সুবৰ্ণলতা একবার ছেলের ঐ বিরক্তি-কুঞ্চিত মুখের দিকে নির্নিমেষ দৃষ্টি হেনে বলেছিল, লজ্জা তো। ওর করবার কথা, লজ্জা করবার কথা ওর বাপ-ভাইয়ের নয়। বাবা। কিন্তু একের অপরাধের লজ্জা অপরকে বইতে হয়, এই হচ্ছে আমাদের দেশের রীতি। তাই হয়তো করবে লজ্জা। কিন্তু উপায় কি? একেবারে ঘরে বসে থাকলে তো লজ্জা আরো বেড়েই চলবে।

    ভানু যে মাকে ভয় করে না তা নয়!

    ভিতরে ভিতরে যথেষ্ট করে।

    কিন্তু অতটা ভয় করে বলেই হয়তো বাইরে নির্ভয়-এর ভাব ফোঁটাবার চেষ্টা করে। তাই অগ্রাহ্যাভরে বলে, লজ্জার কি আছে? দিদি, চন্নন, ও বাড়ির সব মেয়েরা, সবাই লজ্জায় একেবারে মরে আছে। আর এই বুড়োবয়সে তোমার পারুলের ইস্কুলে ভর্তি হয়ে হবেটা কি? রাতদিন তো নাটক-নভেল গেলা হচ্ছে মেয়ের, আবার শুনি পদ্য লেখেন, আর দরকার?

    সুবৰ্ণলতা আজকাল অনেক আত্মস্থ হয়েছে বৈকি। অনেক নিরুত্তাপ। তাই ফেটে না পড়ে সেই নিরুত্তাপ গলায় বলে, মনের অন্য কোনো খোরাক নেই বলেই নাটক-নভেল পড়ে। লেখাপড়ার চাপ থাকলে করবে না। যাক, তুমি পারবে কিনা সেটাই বল!

    পারা না-পারার কথা হচ্ছে না, ভানু বিরক্ত গলায় বলে, এরকম বিশ্ৰী কাজ করতে যে কী মুশকিল লাগে সে ধারণা নেই তোমাদের। তোমরা স্রেফ হুকুম করেই খালাস। তালগাছের মত এক মেয়ে নিয়ে ভর্তি করাতে যেতে হবে প্রাইমারী স্কুলে! মাথা কাটা যাবে না?

    সুবৰ্ণলতার বড় সাধ ছিল যে তার ছেলেরা বাড়ির ঐ অকালবৃদ্ধ কর্তাদের ভাষা থেকে অন্য কোনো পৃথক ভাষায় কথা বলবে। যে কথার ভাষা হবে মার্জিত, সভ্য, সুন্দর। যাতে থাকবে তারুণ্যের ঔজ্জ্বল্য, কৈশোরের মাধুর্য, শৈশবের লাবণ্য।

    সুবৰ্ণর সে সাধ মেটে নি।

    পাগলের সব সাধ মেটাও শক্ত বৈকি।

    তা ছাড়া কথা শেখার সমস্ত বয়েসটা পার করে ফেলে তবে তো ঐ অকালবৃদ্ধদের আবেষ্টন ছেড়ে আসতে পেরেছে সুবৰ্ণলতার ছেলেরা!

    তা ছাড়া একখানি বড় রকমের আদর্শ তো চোখের সামনেই আছে!

    তাই ভানু কৰ্তাদের ভাষাতেই কথা বলে।

    বলে, মাথাটা কাটা যাবে না?

    সুবৰ্ণলতা ঐ মাথা কাটার কথাটা নিয়ে আর কথা-কাটাকাটি করে না। সুবৰ্ণলতা শুধু ঠোঁটটা কামড়ে বলে, প্রাইমারী ইস্কুলে ভর্তি করতে হবে কেন? বলেছি তো অনেকবার, পারু নিজের চেষ্টায় যতটা শিখেছে, তাতে চার-পাঁচটা ক্লাসের পড়া হয়ে গেছে। সেই বুঝে উঁচু  ইস্কুলেই দেবে।

    ভানু অগ্রাহ্যের হাসি হেসে বলে, হ্যাঁ, মেয়েরা তোমার ঘরে বসে অরু দত্ত তরু দত্ত হচ্ছে! তাই এখন থেকেই পদ্য!

    কথা শেষ করতে পারে না।

    সুবৰ্ণলতা তীব্ৰস্বরে বলে ওঠে, চুপ, চুপ। আর একটাও কথার দরকার নেই। মিথ্যেই আশা করে মরেছিলাম, চিনেছি তোদের সবাইকে। বুঝেছি। জীবনের সর্বস্ব সার দিলেও আমড়া গাছে আম ফলানো যায় না।

    হ্যাঁ, সুবৰ্ণলতা বুঝেছে আমড়া গাছে আম ফলানো যায় না!

    তিল তিল করে বুঝেছে!

    বুঝে-বুঝেও চোখ বুজে অস্বীকার করতে চাইছিল এতদিন। যেমন অন্ধকারে ভূতের ভয়কে ঠেকিয়ে রাখতে চায় লোকে খোলা চোখকে বন্ধ করে ফেলে।

    কিন্তু ক্রমশই ধরা পড়েছে, আর মনের সঙ্গে মন-ভোলানো খেলা চলবে না। আর ছেলেমানুষের মুখের শেষ বুলি বলে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।

    ভানুর বিদ্রুপব্যঞ্জক মুখভঙ্গিমায়, চোখের পেশীর আকুঞ্চিনে, আর ঠোঁটের বঙ্কিম রেখায় স্পষ্ট দেখতে পেয়েছে সুবৰ্ণলতা, এদের বংশের প্রথম গ্র্যাজুয়েট প্রভাসচন্দ্ৰকে। সুবৰ্ণলতাকে ব্যঙ্গ করাই ছিল যার প্রধানতম আনন্দ।

    আর সব ভাজেদের আর বোনেদের এবং জানাশুনো সব মেয়েদেরই সুবৰ্ণলতার সেজ দ্যাওর অবজ্ঞা করে এসেছে বার বার, কিন্তু সুবৰ্ণলতাকে অবজ্ঞা করে যেন সম্যক সুখ হতো না তার।

    তাই অবজ্ঞার সঙ্গে মেশাতো বিদ্রূপ।

    সেই বিদ্রূপ অহরহ প্ৰকাশ পেতো চোখের আকুঞ্চিনে, ঠোঁটের বঙ্কিম রেখায়, আর ধারালো হাসির ছুরিতে।

    ভানুর প্রকৃতি সেই বীজ।

    সুবৰ্ণলতার সারাজীবনের সর্বস্ব সার দেওয়া গাছ!

    সুবৰ্ণলতার আর বুঝতে বাকি নেই, সে গাছ কোনো মহীরূহ হয়ে ওঠার প্রতিশ্রুতি বহন করছে না। সে গাছ বাঁশঝাড় মাত্ৰ।

    যে বাঁশঝাড় বংশধারার অতুলন। তুলনা!

    আজ আর সন্দেহ নেই।

    আজ শুধু নিশ্চিত জানার স্তব্ধ নিশ্চেষ্টতা।

    আজ আর নতুন করে আতঙ্কের কিছু নেই।

    হঠাৎ আতঙ্কিত হয়েছিল সেই একদিন। অনেকদিন আগে সেই যেদিন বড় হয়ে ওঠা বড় ছেলের কাছে এসে হাসি-হাসি মুখে বলেছিল সুবৰ্ণ, ভানু, তুই তো বড় হয়েছিস, পাস দিলি, কলেজে ঢুকলি, আমায় এক জায়গায় নিয়ে যেতে পারবি? একলা চুপি চুপি—

    একলা চুপি চুপি!

    ভানু অবাক গলায় বলেছিল, তার মানে?

    মানে পরে বোঝাবো, পারবি কি না বল আগে!

    ভানু এই রহস্য-আভিযানের আকর্ষণে উৎসাহিত হয় নি। ভানু নিরুত্তাপ গলায় বলেছিল, কোথায় যেতে হবে না জেনে কি করে বলবো?

    আহা, আমি কি বাপু তোকে বিলেতে নিয়ে যেতে বলছি! সুবর্ণর চোখ ভুরু নাক ঠোঁট সব যেন একটা কৌতুক-রহস্যে নেচে উঠেছিল, এখান থেকে এমন কিছুই দূর নয়, বলতে গেলে তোর কলেজেরই পাড়া-

    ভানুর বোধ করি হঠাৎ একটা সন্দেহ জেগেছিল, তাই ভানু ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করেছিল, কি, তোমার সেই বাপের বাড়ি বুঝি? সে আমার দ্বারা হবে-টবে না।

    সুবৰ্ণর মুখের আলোটা দপ করে নিভে গিয়েছিল, সুবর্ণর চোখে জল এসে গিয়েছিল, সুবর্ণর ইচ্ছে হয়েছিল বলে, থাক, দরকার নেই, কোথাও যেতে চাই না তোর সঙ্গে।

    কিন্তু সে কথা বললে পাছে ভানুর সন্দেহটাই সত্য বলে প্রমাণিত হয়, তাই জোর করে গলায় সহজ সুর এনে বলেছিল, বাপের বাড়ির কথা তোকে বলতে আসি নি। আমি। তোদের মা হচ্ছে ভূইফোঁড়, বাপের বাড়ি-টাড়ি কিছু নেই তার। বলছিলাম ছেলেবেলার সেই ইস্কুলটাকে একবার দেখতে ইচ্ছে করে। সেই যে গরমের ছুটিতে চলে এলাম, ইহজীবন আর চক্ষে দেখলাম না-

    হঠাৎ চুপ করে গিয়েছিল সুবর্ণ, অন্যদিকে মুখ ফিরিয়েছিল।

    কিন্তু ভানু মায়ের এই ভাব-বৈলক্ষণ্য বুঝতে পারে নি, অথবা বুঝতে চেষ্টাও করে নি। ভানু যেন ব্যঙ্গের গলায় বলে উঠেছিল, তা আবার গিয়ে ভর্তি হবে!

    সুবৰ্ণ তখনো আতঙ্কিত হয় নি, সুবৰ্ণ মনে করেছিল সবটাই ছেলেমানুষের ছেলেমানুষি কৌতুক।

    ষোলো বছরের ছেলেকে ছেলেমানুষই ভেবেছিল সুবর্ণ।

    তাই বলে উঠেছিল, হ্যাঁ, হবো ভর্তি! তুই জ্যাঠামশাই হয়ে আমাকে ঘাগরা পরিয়ে হাত ধরে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে দিবি! আরে বাবা, রাস্তা থেকে একবার চোখের দেখাটা দেখবো।

    রাস্তা থেকে!

    ভানু যেন পাগলের প্রলাপ শুনেছে।

    তা তবুও সুবর্ণ প্ৰলাপ বকেছে, হ্যাঁ, রাস্তা থেকে। হাঁ করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। ভয় নেই বাবা, গাড়ি থেকে নামতে চাইব না, শুধু গাড়িটা একবার সামনে দাঁড় করাবি, জানিলা দিয়ে একটু দেখবো।

    বলেছিল। আর ঠিক সেই সময় সেই হাসির আভাস ফুটে উঠেছিল ভানুর মুখে, যে হাসি এ বাড়ির প্রথম গ্র্যাজুয়েট প্রভাসচন্দ্রের একচেটে। আর তখনই ধরা পড়েছিল ওর মুখের গড়নটা ওর সেজ কাকার মত।

    সুবৰ্ণ সহসা শিউরে উঠেছিল।

    তথাপি সুবৰ্ণ যেন মনে মনে চোখ বুজেছিল। সুবৰ্ণ ভেবেছিল, কক্ষনো না, আমি ভুল দেখেছি।

    তাই সুবর্ণ আবার তাড়াতাড়ি কথা বলে উঠেছিল, যেমন ভাবে ছোট ছেলেকে বকে মায়েরা, বলে, এত বড় হলি, এটুকু আর পারবি না? তবে আর তুই বড় হয়ে আমার লাভটা কি হলো?

    ভানু নিরুত্তাপ গলায় বলেছিল, কারুর লাভের জন্যে কি আর কেউ বড় হয়! বয়েস বাড়লে বড় হওয়া নিয়ম তাই হয়। ও তুমি বাবার সঙ্গে যেও, আমি বাবা মেয়েমানুষকে নিয়ে কোথাও যেতেটেতে পারবো না। সাধে তোমায় পাগল বলে লোকে! যত সব কিন্তুতকিমাকার ইচ্ছে!

    সেই দিন।

    সেই দিন ভয়ঙ্কর এক আতঙ্কে হাত-পা হিম হয়ে গিয়েছিল সুবর্ণর। সুবর্ণ তার ছেলের মুখে তার সেজ দ্যাওরের ছায়া দেখতে পেয়েছিল।

    সুবৰ্ণ যে মনে মনে কল্পনা করে আসছে এযাবৎ, ভানু বড় হয়ে উঠলেই সে একটু স্বাধীন হবে, সে পৃথিবীর মুখ দেখতে পাবে, আর সেই দেখার পরিধি বাড়াতে বাড়াতে একদিন ট্রেনে চেপে বসবে বহুদিনের হারিয়ে যাওয়া একখানি মুখ দেখতে!

    কারো কোনো মন্তব্য প্রকাশের সাহস হবে না, সুবর্ণ বড় গলায় বলবে, আমার ছেলের সঙ্গে যাচ্ছি। আমি, বলুক দিকি কেউ কিছু! উপর্যুক্ত ছেলের মা আমি, আর তোমাদের কচি খুকী বৌ নই!

    এবং তার সেই উপর্যুক্ত ছেলেও বলে উঠবে, সত্যিই তো, আমি বড় হয়েছি আর আমার মাকে তোমরা আমন জাতার তলায় রাখতে পারবে না।

    কিন্তু স্বপ্ন ভেস্তে গেল।

    সুবৰ্ণলতার ছেলে বললো, মেয়েমানুষকে নিয়ে রাস্তায় যাওয়া আমার দ্বারা হবে না।

    মেয়েমানুষ!

    মেয়েমানুষ!

    প্রতিটি অক্ষরে যেন মুঠো মুঠো অবজ্ঞা ঝরে পড়েছে।

    এই অবজ্ঞার উৎস কোথায়?

    অশোধ্য ঋণের কুণ্ঠাময় অনুভূতি?

    ধ্বনিটির প্রতিধ্বনি সদা ব্যঙ্গ করে,
    ধ্বনির কাছে ঋণী সে যে পাছে ধরা পড়ে।

    একদা যে এই মেয়েমানুষের দেহদুর্গে আশ্রয় নিতে হয়েছিল, সে কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। নিতান্ত অসহায় অবস্থায় তার সহায় ছাড়া গতি ছিল না, সে কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, তাই অবজ্ঞা দিয়ে ঢাকা দিতে হবে সেই ঋণ।

    অথবা আর এক উপায় আছে, অতিভক্তির জাকজমক। যেটা মুক্তকেশীর ছেলেদের, আরো আমন অনেক ছেলেদের।

    সুবৰ্ণর ছেলে দ্বিতীয় পথে যায় নি।

    সুবৰ্ণর ছেলে সহজ পথটা ধরেছে।

    রক্ত-মাংসের এই ঋণটা অশোধ্য একথা স্বীকার না করে সবটাই অবজ্ঞা দিয়ে ওড়াবে।

    আর তারপর?

    যখন বড় হবে?

    যখন ওর নিজের রক্ত-মাংস ওর শত্রুতা করবে?

    যখন সেই শত্রুর কাছে অসহায় হবে? দুর্বল হবে? চির অবজ্ঞেয় ওই জাতটার কাছে ভিক্ষাপাত্র নিয়ে দাঁড়ানো ছাড়া গতি থাকবে না?

    তখন আরো আক্ৰোশে মরীয়া হবে, অন্ধকারের অসহায়তায় সাক্ষীকে দিনের আলোয় পায়ে

    বেথুন ইস্কুলের বাড়িখানা আর একবার দেখবার বাসনাটা মেটে নি সেদিন সুবৰ্ণলতার, তবু সে তখনো একেবারে হতাশ হয় নি। তখনো খেয়াল করে নি, বংশধারার মূল উৎস থাকে অস্থিমজ্জার গভীরে, পরিবেশ বড় জোর পালিশ দিতে পারে, যেটা হয়তো আরো মারাত্মক। কখন কোন মুহূর্তে যে সেই পালিশের অন্তরাল থেকে বর্বরতার রূঢ় দাঁত উঁকি মারবে ধারণা থাকবে না, দাতের তীক্ষ্ণতায় দিশেহারা হতে হবে।

    সুবৰ্ণলতা তার ছেলেকে পরিবেশ-মুক্ত করে নিয়ে এসেছিল, তাই তার ছেলের গায়ে পালিশ পড়েছে, নিষ্প্রভ করে দিয়েছে সে তার এ বাড়ির প্রথম গ্র্যাজুয়েট কাকাকে।

    তবে কি কানু, মানু আর সুবলও এই এক রকমই হবে? দরজিপাড়ার সেই গলিটা এসে বাসা বাঁধিবে সুবৰ্ণলতার এই হালকা ছিমছাম ছবির মত গোলাপী রঙ বাড়িটার মধ্যে?

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Article১০টি কিশোর উপন্যাস – আশাপূর্ণা দেবী
    Next Article বকুলকথা – আশাপূর্ণা দেবী

    Related Articles

    আশাপূর্ণা দেবী

    বিবাগী পাখি – আশাপূর্ণা দেবী

    April 7, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী

    কুমিরের হাঁ – আশাপূর্ণা দেবী

    April 7, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী

    ঠিকানা – আশাপূর্ণা দেবী

    April 7, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী

    ততোধিক – আশাপূর্ণা দেবী

    April 7, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী

    ১. খবরটা এনেছিল মাধব

    April 7, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী

    নতুন প্রহসন – আশাপূর্ণা দেবী

    April 7, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }