Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সূর্যতামসী – কৌশিক মজুমদার

    কৌশিক মজুমদার এক পাতা গল্প289 Mins Read0

    পঞ্চম পর্ব— উত্তরপ্রবেশ

    সোনাগাজি থেকে দর্জিপাড়া হাঁটাপথ। এ গলি ও গলি ধরে তারিণী আর গণপতি চলল নবীন মান্নার বাড়ির দিকে। তারিণীর মাথায় চিন্তার ভাঁজ। গণপতি কেমন যেন বোকা হয়ে গেছে। কিছুই তার মাথায় ঢুকছে না। সেই সেদিন চিনা পাড়ার খুনের ঘটনার পর একে একে যা ঘটে চলেছে, প্রায় সবকটাই তার হিসেবের বাইরে। শেষ চমক একটু আগে খেল। নবীন মান্নাও যে রাঁড় পোষেন, আর সেটা অন্য কেউ না, স্বয়ং লক্ষ্মীমতি, এটা এতদিনেও ঘুণাক্ষরে জানতে পারেনি! পাক্কা ম্যাজিশিয়ান বটে! ভাগ্যিস তারিণী জিজ্ঞাসা করল। কিন্তু তারিণী কেন নবীন মান্নার সঙ্গে দেখা করতে চাইছে সেটা গণপতির মাথা দিয়ে আসছে না। তবে তারিণী কিছু একটা আভাস পেয়েছে, নইলে এমন ভূতে পাওয়ার মতো তক্ষুনি দৌড়োত না।

    গণপতির কাজ একটাই। তারিণীর সঙ্গে নবীন মান্নার দেখা করিয়ে দেওয়া। নবীন মান্না এর আগে তারিণীকে দেখেছেন। সেই গঙ্গার ঘাটে বা সেদিন থিয়েটারে। কিন্তু সেভাবে আলাপ হয়নি। তারিণী নিজের মনে বিড়বিড় করতে করতে রাস্তায় চলছে। ওর এই রূপ আগে দেখেনি গণপতি।

    একটু বাদেই দুজনে নবীন মান্নার বাড়ির সামনে এসে উপস্থিত। খুব বড়োলোক না হলেও বেশ সচ্ছল মানুষ নবীন মান্না। নুনের ব্যবসা আছে, পূর্বপুরুষের টাকা আছে। তাই ম্যাজিক, থিয়েটার এসব করে মনের সাধ মেটান। কলকাতার বাবুয়ানাতে তবু তাঁকে মধ্যবিত্তই বলা চলে। দরজায় টোকা দিতে চাকর এসে দরজা খুলে দিল। সে গণপতিকে চেনে। আগে বেশ কয়েকবার দেখেছে।

    “বাবু আছেন?” গণপতি শুধাল।

    “এজ্ঞে আছেন। ভিতরবাড়িতে। আপনেরা আসেন।” বলে তাদের দুজনকে নিয়ে একতলার বসার ঘরে বসতে বলল। মাঝারি সাইজের ঘর। চারটে বড়ো বড়ো জানলা, মাথায় লাল-নীল কাচ বসানো। দুটো দরজার একটা অন্দরমহলে যাচ্ছে আর একটা সদরে। সামনে ছোটো দেউড়ি। ঘরে চেয়ার, টেবিল, আলমারি, আর ছোবড়ার গদিওয়ালা উঁচু একটা তক্তাপোশ সাদা চাদরে ঢাকা। সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গোটা চার-পাঁচ তাকিয়া। তারিণীরা ওখানেই বসল।

    দেওয়ালে রঙের পোঁচড়া ঘুরিয়ে একদিকে তিনটে গোলাপফুল, আর অন্যদিকে দুটি পাখি আঁকা। যেদিকটা ফাঁকা, সেখানে শোভা পাচ্ছে ডিমের মতো ফ্রেমে বাঁধানো নবীনবাবুর বাবার ফটোগ্রাফ, রবি বর্মার শান্তনু-গঙ্গা, রানি ভিক্টোরিয়ার ছবি। ছবির তলায় ধূপদানি দেখে তারিণী বেশ মজা পেল। দেবতাদের সঙ্গে রানিও তবে এই বাড়িতে পুজো পান!

    ভাবতে ভাবতেই নবীন মান্না বেরিয়ে এলেন। আদুড় গা। একটা পাড়-ছেঁড়া ধুতি গুটিয়ে পরা। গণপতিকে দেখেই বললেন, “কী ব্যাপার হে গণপতি? এই অসময়ে? সব ঠিক আছে তো? বসো বসো, দাঁড়াতে হবে না।”

    নিজেও বসলেন তক্তপোশে। ওদের পাশেই।

    গণপতি বেশ কিন্তু কিন্তু করে বলল, “আজ্ঞে দরকারটা আমার না। দরকার এর। আমার বন্ধু তারিণী। ওকে তো আপনি দেখেছেন।”

    “হ্যাঁ, দেখেছি বটে, তবে কথা হয়নি। বলো কী দরকার”, বলে তারিণীর দিকে হাসিমুখে ফিরলেন নবীনচন্দ্র।

    তারিণীকে ড্রিসকল সাহেব যা যা শিখিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে প্রথম হল জেরা করার সময় যাকে জেরা করছ, তাকে ভাববার বা তৈরি হবার সময় দেবে না। আঘাতটা করবে একেবারে শুরুতেই। আর সেটা এত জোরে, যেন সামলাতে সময় লাগে। বড়ো বড়ো ঘাঘু অপরাধী অনেক সময় মাথা ঠান্ডা রাখতে পারে না। গোটা রাস্তায় আসতে আসতে ঠিক এই মুহূর্তটার অপেক্ষাই করছিল তারিণী। কোনওরকম ভদ্রতার পথেই গেল না। সোজা নবীনচন্দ্রের চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করল, “একটা কথাই জানতে চাই, আপনি চিঠিটার কথা পুলিশকে বললেন না কেন?”

    নবীনের হাসিমুখ একনিমেষে ফ্যাকাশে হয়ে গেল। তাঁর দুই চোখে তারিণী যা দেখতে পেল, তার নাম আতঙ্ক। খানিক চুপ করে থেকে নবীন একটু থেমে থেমেই বললেন, “কী… কীসের চিঠি?”

    “যে চিঠির সঙ্গে কার্টারের মৃত্যুর যোগ আছে সেই চিঠি।”

    “কে বলেছে আমি কোনও চিঠি পেয়েছি? বেরিয়ে যাও। এক্ষুনি বেরিয়ে যাও আমার বাড়ি থেকে। আর গণপতি, আমি তোমায় করিন্থিয়ান থিয়েটারে ম্যাজিক দেখানোর ব্যবস্থা করলাম, আর তার বদলে তুমি এইসব বন্ধু নিয়ে আসছ? তুমিও বেরোও। কোনও দিন যেন আমি তোমার মুখ না দেখি। আর হ্যাঁ, উইজার্ড ক্লাবের ঘরে তোমার থাকা আজ থেকে বন্ধ। তুমি নিজের পথ দ্যাখো”, নবীনচন্দ্র ততক্ষণে উঠে দাঁড়িয়েছেন। রাগে তাঁর গোটা শরীর কাঁপছে।

    গণপতি অপ্রস্তুত হয়ে ওঠার উপক্রম করলেও তারিণী নড়ল না। বরং হাসিমুখেই বসে রইল। খুব শান্ত গলায় বলল, “রাগ করবেন না নবীনবাবু, তবে আমাদের বললে আপনার লাভ বই ক্ষতি হত না। প্রিয়নাথ দারোগার নাম জানেন তো? তিনি নিজে এই কেসের ভার নিয়েছেন। উনি বড়ো সহজ মানুষ নন। সেদিনের জোড়া মৃত্যুর সঙ্গে আপনার যোগাযোগের কথা যদি তিনি জানতে পারেন, তবে আপনাকে ছেড়ে কথা বলবেন না। নিশ্চিত থাকুন। আর কথা বার করার পুলিশের অনেক উপায় আছে। আমি ওঁর কথাতেই এই তদন্তে সাহায্য করছি। আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি নবীনবাবু, আপনি সত্যি কথা বললে আপনার নাম কেউ জানবে না। আমি জানি আপনি কোনও অপরাধ করেননি। ফেঁসে গেছেন। আপনাকে ফাঁসানো হয়েছে। কিন্তু গোটা ঘটনাটা খুলে না বললে কীভাবে বুঝব বলুন তো, ঠিক কী হয়েছিল?”

    নবীনচন্দ্র একটু যেন শান্ত হলেন। একবার ভিতরমহলের দিকে, একবার রানির ছবির দিকে তাকালেন। তারপর তারিণীর পাশে ধপ করে বসে বললেন, “সব বলব। কিন্তু তার আগে আমারও কিছু প্রশ্ন আছে।”

    —বলুন।

    —তোমরা চিঠির কথা কার থেকে জানলে?

    —লক্ষ্মীমতিকে আপনিই বলেছেন।

    —লক্ষ্মীমতি!! তার খবর তোমাদের কাছে এল কীভাবে? এ খবর তো…

    —ধরে নিন কপালজোরে। আপনার লক্ষ্মীমতি একবার আমাদের গণপতিকে প্রাণে বাঁচায়। তখন থেকে সে গণপতিকে ভাই মেনেছে।

    মাথা টিপে বসেছিলেন নবীন মান্না। ধীরে ধীরে বললেন, “এই পাতানো ভাইয়ের কথা আমিও শুনেছি। ওর মুখেই। নাম বলেনি। আমিও জিজ্ঞেস করিনি কোনও দিন।”

    —তারপর বলুন।

    —কী বলব?

    —চিঠির ব্যাপারটা।

    —এই চিঠির সঙ্গে কার্টারের সম্পর্ক আছে, সেটা তুমি বুঝলে কেমন করে?

    —লক্ষ্মীদিদির মুখে শুনলাম, প্রায় দিন দশ-পনেরো হল আপনি আনমনা। বলছেন, কী কুক্ষণে চিঠিটা পেলাম। দশ-পনেরো দিন আগে একটাই ঘটনা ঘটেছিল, যাতে আপনি ভেঙে পড়তে পারেন। আর সেটা মঞ্চে জোড়া মৃত্যু। আমি যদি ভুল না করি, চিঠি আপনি পেয়েছিলেন তারও আগে। কিন্তু তখন বোঝেননি সেই চিঠির গুরুত্ব। বুঝেছিলেন কার্টার মারা যাবার পর। আর কোনও কারণে নিজেকে দোষী ভাবছেন।

    —একেবারে ঠিক ধরেছ।

    —যদি কিছু মনে না করেন, এটা কি সেই চিঠি যেটা আপনি স্টেটসম্যান পত্রিকার অফিসের ডাকবাক্সে ফেলে এসেছিলেন?

    আবার চমকালেন নবীন মান্না। এ যুবক দেখতে সাধারণ হলেও এর এক অদ্ভুত জাদুকরী ক্ষমতা আছে, অথবা প্রখর বুদ্ধি ধরে। সব কিছু কীভাবে অনুমান করছে? তাও একেবারে ঠিকঠাক?

    যেন নবীনচন্দ্রের মনের কথা বুঝতে পেরেই তারিণী বলল, “সেদিন প্রিয়নাথ দারোগা আমার অফিসে এসেছিলেন। কথায় কথায় বললেন, গত ১২ ডিসেম্বর চিনা পাড়ায় যে সাহেবকে খুন করা হল, তাঁর দেহ পাওয়া গেছে প্রায় মাঝরাতে। কিন্তু পরদিন সকালে স্টেটসম্যানে এই খবর ছাপা হয়। পুলিশ তদন্ত করে দেখেছে, আগের দিন সন্ধ্যাবেলাতেই কে যেন ডাকবাক্সে একটা বেনামি চিঠি ফেলে দিয়ে গেছিল। সেটা কে পুলিশ ধরতে পারছে না। কাল চিঠির কথা শুনে তাই ওটাই সবার আগে মনে পড়ল।”

    “ঠিক ধরেছ”, বললেন নবীনচন্দ্র। “কী কুক্ষণে যে চিঠিটা ফেলতে গেলাম!”

    “আপনি চিনা পাড়ায় সাহেবের মৃত্যু দেখেছিলেন?” জিজ্ঞাসা করল তারিণী।

    পাশাপাশি মাথা নাড়লেন নবীনচন্দ্র, “তোমাদের মতো আমিও পরদিন খবরের কাগজেই দেখি। আমার সন্দেহ হয়েছিল এটা বুঝি আমার চিঠির জন্যেই, তবু মনকে সান্ত্বনা দিয়েছি। ভেবেছি আমি ভুল। বুঝিনি আমাকে শুধু বাহক হিসেবে ব্যবহার করেছিল।”

    —কে?

    —কার্টার। ও-ই আমাকে চিঠিটা দিয়েছিল।

    —কবে?

    —গত বারো তারিখ। এই সন্ধে পাঁচটা নাগাদ হবে।

    —কোথায়?

    —সোনাগাজিতে। ওর নিয়মিত যাতায়াত ছিল ওখানে।

    —ওরও বাঁধা মেয়েছেলে ছিল?

    —না। ও যেত পাড়ার একটেরে একটা বাড়িতে। ও বাড়িতে মাঝে কেউ থাকত না। পরে শুনেছি একপাল পাগল এনে রাখত। সেখানে ময়না বলে একটা মেয়ে যেত শুধু। ওই বাড়িতে ওর কী কাজ অনেক জিজ্ঞেস করেছি। বলেনি। আসলে যতই বন্ধু হোক, ও সাহেব। আমি নেটিভ। তফাত তো থাকবেই। তাই আমিও বেশি কিছু জানতে চাইনি।

    —আপনি সেদিনের কথা বলুন।

    —সেদিন লক্ষ্মীর কাছে গেছিলাম দুপুরবেলা। রাতে এক জলসায় যাবার কথা ছিল। বেরোতে বেরোতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। দাশুর পানের দোকান থেকে একখিলি পান কিনে মুখে পুরতে যাব, এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে কার্টার নেমে এল উলটোদিকের বাড়ি থেকে। সে দৃশ্য আমি কখনও ভুলব না। চোখে উদভ্রান্ত দৃষ্টি, সারা শরীর যেন ভয়ে কাঁপছে, কপালে ঘাম। আমাকে দেখেই প্রথমে ভূত দেখার মতো চমকে গেল। তারপর কী ভেবে রাস্তা পার হয়ে উলটোদিকে এসে বলল, মান্না, তোমাকে আজ আমার একটা উপকার করতে হবে। বদলে পরে তুমি যা চাইবে, আমি রাজি হব। আমি বললাম, কী উপকার? বলল, আমাদের পরের শো-র বিজ্ঞাপনে কিছু বদল হবে। আমি সেটা লিখে দিয়েছি। তুমি এই খামটা শুধু স্টেটসম্যানের অফিসের সামনে ডাকবাক্সে ফেলে দিয়ো। কেউ যেন দেখতে না পায়।

    —আপনি জিজ্ঞাসা করেননি, কেন এত গোপনীয়তা?

    —করেছিলাম। বলল করিন্থিয়ান হলের নাকি দারুণ চাহিদা। কেউ জানতে পেলে আগেভাগে বুক করে নেবে।

    —আপনার মনে হল এটা সত্যি?

    —মনে হয়নি। কিন্তু আর কিছু বলার আগেই প্রায় দৌড়ে ও ওই বাড়িতে ঢুকে গেল।

    —আপনি খুলে দেখলেন না, কী লেখা আছে?

    —আমাকে কি তোমার চামার মনে হয়? আমি বিশ্বাসভঙ্গ করি না।

    —তারপর? চিনা পাড়ায় খুনের পরে কার্টারের কাছে গেছিলেন?

    —হ্যাঁ। ওর হোটেলে। সেদিন ওর অন্য রূপ। মনে খুব ফুর্তি। সেজেগুজে তৈরি হচ্ছিল। আমি প্রসঙ্গ তুলতেই বলল, ও নাকি আমার মনের ভ্রম। আমি আজব কল্পনা করছি। চিনা পাড়ার খুনের সঙ্গে ওই চিঠির কোনও সম্পর্কই নেই।

    —আর?

    —আর বেশিক্ষণ কথা হয়নি। ও বেরিয়ে গেল। স্বয়ং বড়োলাট নাকি ওর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন।

    —বড়োলাট নিজে? কেন?

    —তা জানি না।

    —সেই আপনাদের শেষ কথা?

    —না। আর-একবার হয়েছিল।

    —কবে?

    —যেদিন কার্টার মারা গেল, সেদিন সন্ধ্যায়। আমি গ্রিনরুমে গেছিলাম।

    —কী কথা হল?

    —সেদিন দেখি একেবারে অন্য মূর্তি। চোখ ছলছল। মুখ গম্ভীর। আমাকে অদ্ভুত একটা প্রশ্ন করল।

    —কী প্রশ্ন?

    —বলল, মান্না, তুমি কর্মফল মানো? ভগবান মানো? স্বীকার করলাম দুটোই মানি। তারপর বলল, তুমি জানো, জিসাস বলেছেন পাপ করলে প্রায়শ্চিত্ত করতে হয়? বললাম, তাও জানি। তখন বলল, হাত যখন হাতিয়ার ব্যবহার করে প্রাণ নেয়, তখন পাপ কার হয়? হাতের না হাতিয়ারের? বললাম, কারও না, হাত যার পাপ তার। প্রায়শ্চিত্ত করতে হলে সে-ই করবে। কার্টার একলাফে উঠে আমায় জড়িয়ে ধরে বলেছিল, তুমি আমার মনের সংশয় দূর করলে।

    —কী সংশয়?

    —আমিও সেটা জানতে চেয়েছিলাম। কার্টার মুচকি হেসে বলেছিল, বুঝলাম প্রয়োজনে হাতিয়ার হাতের আদেশও অমান্য করতে পারে। কারণ পাপ যদি করেই থাকে, হাত করেছে। হাতিয়ার না।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleআঁধার আখ্যান – কৌশিক মজুমদার
    Next Article নোলা : খাবারের সরস গপ্পো – কৌশিক মজুমদার

    Related Articles

    কৌশিক মজুমদার

    নোলা : খাবারের সরস গপ্পো – কৌশিক মজুমদার

    August 4, 2025
    কৌশিক মজুমদার

    আঁধার আখ্যান – কৌশিক মজুমদার

    August 4, 2025
    কৌশিক মজুমদার

    নীবারসপ্তক – কৌশিক মজুমদার

    August 4, 2025
    কৌশিক মজুমদার

    অগ্নিনিরয় – কৌশিক মজুমদার

    August 3, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.