০৫. খোকনের ছোটচাচা আমিন সাহেব
খোকনের ছোটচাচা আমিন সাহেব ঢাকা এয়ারপোর্ট এসে পৌঁছলেন বিকেল তিনটায়। চারদিক কেমন থমথম করছে। প্রচুর পুলিশ। এয়ারপোর্ট থেকে কেউ বেরুতে পারছে না।
আমিন সাহেবকে নেওয়ার জন্যে কেউ আসেনি। রাস্তাঘাট ফাঁকা। পুলিশের গাড়ি আর অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া আর কিছু চোখে পড়ছে না। কাস্টমসের একজন অফিসার বললেন, শহরে কার্ফু জারি হয়েছে। তবে আপনাদের কোনো অসুবিধা হবে না। আপনাদের পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হবে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন।
আমিন সাহেব দুঘন্টা অপেক্ষা করলেন। কোনো ব্যবস্থা হলো না। খোকনের ছোটচাচি রাহেলা খুব অস্থির হয়ে পড়লেন। কারণ প্রিসিলার হঠাৎ শরীর খারাপ করেছে। দুবার বমি হয়েছে। জ্বর আসছে মনে হয়। ওকে ডাক্তার দেখানো উচিত। রাহেলা বললেন, এখন আমরা কী করব? সারা রাত এয়ারপোর্টে বসে থাকব নাকি?
অন্যরা যদি বসে থাকে আমরাও থাকব।
এ আবার কী ধরনের কথা? লোকজনদের সঙ্গে কথাটথা বলে দেখো কিছু করা যায় কি না।
আমিন সাহেব দুএক জায়গায় টেলিফোন করতে চেষ্টা করলেন। কোনো লাভ হলো না। লাইন নষ্ট বা কিছু একটা হয়েছে।
এয়ারপোর্টে বেশ কিছু লোক আটকা পড়েছে। একটি আমেরিকান ফ্যামিলিকে দেখা গেল খুব চিন্তিত। ভদ্রলোকের নাম পিটার কল। তিনি যেচে এসে আমিন সাহেবের সঙ্গে কথা বললেন, তোমাদের শহরের অবস্থা তো ভয়াবহ মনে হচ্ছে।
হুঁ।
আন্দোলন হচ্ছে শুনেছিলাম, এতটা বুঝতে পারিনি।
নরওয়ে থেকে এক ভদ্রমহিলা এসেছেন, তিনি শহরে ঢুকতে চান না। পর ফ্লাইটে নরওয়ে চলে যেতে চান। ইংল্যান্ডের দুটি পরিবার আছে। ওদের সঙ্গে তিনটি ছেলেমেয়ে। ছেলেমেয়েগুলি সমস্ত এয়ারপোর্ট জুড়ে ছোটাছুটি করছে। বাচ্চাগুলির মাকেও মনে হলো বেশ হাসিখুশি। খুট খুট করে ছবি তুলছে।
