Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    সমগ্র কিশোর সাহিত্য – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025

    ছোটগল্প – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025

    টেনিদা সমগ্র – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    স্বভূমি – নবনীতা দেবসেন

    নবনীতা দেবসেন এক পাতা গল্প104 Mins Read0

    স্বভূমি – ৪

    সন্তোষ মুখোপাধ্যায়

    এই জন্যেই কি আমাকে এত বছর বাঁচিয়ে রেখেছিলে ঈশ্বর। এই খবর শোনাবে বলে? হেমই সুখী যেহেতু হেম দূরদর্শী নয়; সে বিশ্বাস করেনি এখনও। চা—মোহনভোগ খাচ্ছে। সে বোঝেনি আমাদের একমাত্র কন্যা, আমাদের প্রথম জাতক, অনেকগুলি সন্তান হারিয়ে শেষপর্যন্ত রক্ষা—পাওয়া যমজ সন্তানের প্রথমটি, আমার আলো—মা—আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। হেম বিশ্বাস করছে না—যেহেতু হাতেকলমে সত্যিই আমার কাছে কোনও সংবাদ নেই যে ওই প্লেনেই আলো আসছিল। কিন্তু সাধারণ বুদ্ধি দিয়ে আমি হিসেব করে দেখেছি ওই প্লেনে আলো না থেকেই পারে না। হে ঈশ্বর, আমাকে সইবার শক্তি দাও।

    আশি ছুঁই ছুঁই বয়েস। এখন কি এই মহাশোক আমাদের না দিলেই চলত না তোমার? অতি তুচ্ছ আমি—জীবনে সন্তানদের ঘিরেই আমার যেটুকু আনন্দ যেটুকু সার্থকতা। সারাজীবন সৎপথে থেকেছি—পরিশ্রম করেছি। সন্তানদেরই মুখ চেয়ে। হেমকে এতটুকু আরাম দিতে পারিনি কোনওদিন। সামান্য চাকরি করেছি, সরকারি ইস্কুলের শিক্ষকতা। আজকাল মালটিপারপাস স্কুল হয়েছে—বেতন সেখানে কলেজেরই সমান—আমাদের কালে শিক্ষকদের ভাগ্যে মানসম্ভ্রমটা ছিল, কিন্তু অর্থ ছিল না। হেম চিরদিনই কষ্ট করেছে। পরিশ্রম করেছে, অভিযোগও করেছে, অশান্তিও করেছে। শেষ বয়সে এই যে আরাম, এই যে ভৃত্যভাগ্য, এই যে তিনতলার ঘরে শুয়ে জানলা দিয়ে আকাশ দেখার সুখ, এগুলো আমি এনে দিইনি, দিয়েছে তারই পুত্রকন্যা। আলো আর কালো। আলোকমন্দা নাম আলোর কোনওদিনই পছন্দ হয়নি, সে স্কুল ফাইনালে আলো নামই লিখিয়ে নিয়েছিল। কালোর কিন্তু অকলঙ্ক নামটা খুব পছন্দ। ওই নামে আর তো কেউ নেই। কালো নামটা অবিশ্যি পছন্দ নয়—ভাগ্যিস রংটা ওর অত ফরসা। আলোই আমার শ্যামলা মেয়ে, আর কালো ধবধবে। উলটোপালটা নাম রেখেছিলাম ইচ্ছে করে। ছেলেকে হিন্দু স্কুলেই পড়িয়েছি। নিজের চোখের সামনে। মেয়েকে বেথুনে। যথাসাধ্য যত্ন দু’জনেরই নিয়েছি, যাতে ওরা মানুষ হয়। হেমের সঙ্গে এই নিয়ে সারাজীবন আমার ঝগড়া—হেম বলত ছেলেমেয়ে নিয়ে আমি আদিখ্যেতা করি। কিন্তু ওকে কে বোঝাবে, এটা আধিক্য মোটেই নয়, এটাই মিনিমাম?

    আমরা যেটা পেয়ে বড় হয়েছি সেটা যত্নই নয়, সেটা নেগলেক্ট। চূড়ান্ত নেগলেক্টের মধ্যে বিরাট একান্নবর্তী পরিবারে আমরা পরগাছার মতো বড় হয়েছিলাম। আমি চাইনি আমার সন্তানরা সেভাবে বড় হোক। ওদের জীবন আমি দামি ফুলগাছের মতো পরিচর‍্যা করে পুষ্পিত করতে চেয়েছিলাম। হেম আমাকেও খুব যত্ন করে, ছেলেমেয়েদেরও। কিন্তু আমার ভেতরটাকেও যেমন ও কোনওদিনই দেখতে পায়নি, ছেলেমেয়েদের মনের ভেতরটাও তেমনই ওর চোখে পড়ে না। হেমের দৃষ্টি বড় স্থূল। নইলে খবরটার পরেও ও আমাকে চা, মোহনভোগ এনে দিল? আর কুটনো নিয়ে বসতে পারল? খবরটা হেম বিশ্বাস করছে না, কেন না ওটা ও বিশ্বাস করতে চায় না। কেন না ওই খবর গ্রহণ করবার উপযুক্ত মনের প্রস্তুতি হেমের নেই। বহু কষ্টের পর এতদিনে আমরা সুখের মুখ দেখেছি। টি.ভি, টেলিফোন, ফ্রিজ, নিজস্ব ফ্ল্যাট,—এককালে যা যা কল্পনার বাইরে ছিল—একে একে সর্বস্ব কিনে দিয়েছে আলো—কালোতে মিলে। ছেলেমেয়েই এখন আমাদের পিতা—মাতার মতো পালন করে। আলো, কালো, ফ্রেড আর বউমা। বউমা আমার দ্বিতীয় পুত্রের সমান। আর ফ্রেড? জামাই নয়, সেও আমার ছেলেই। মেয়ে তো আমার রোজগেরে নয়। এতদিন ঘরকন্না করেছে, এখন রিসার্চে ফিরে গেছে। রোজগার করে না—তবুও সে অকাতরে খরচ করে আমাদের জন্যে। কালোর চেয়ে কিছু কম করে না আমাদের জন্যে ফ্রেড। তাই থেকেই বুঝতে পারি আমার আলোমা—কে ফ্রেড কতটা ভালবাসে। তার মা—বাবার সুখ—স্বাচ্ছন্দ্য ফ্রেডকেও আনন্দ দেয়। আলোমা আমাদের সত্যিকারের মা হয়ে গেছে। বুড়োবুড়ি এই ছেলেমেয়েদের জন্যে কত ভাবনা তার। কত ভালবাসা! বাপ—মায়ের পঞ্চাশ বছরের বিয়ের তারিখ উদযাপন করতে বিলেত থেকে কার ছেলে—মেয়ে সপরিবারে দেশে আসে, হাজার হাজার টাকা খরচা করে? জয়—পিউ—মউ—লালী সবারই এখন ফুল টিকিট। অ্যাডাল্ট ওরা আটজন। সবই আলোমায়ের শখ—আলোমায়েরই বন্দোবস্ত। কার্ড ছাপাতে, বাড়ি ভাড়া করতে আর বিজলীগ্রিলকে অর্ডার দিতে সে আগে আগেই আসছে।

    আলোমা আসছিল। আমার কাছে আসা আর তার হল না। উৎসবের স্বপ্ন তার মধ্য—আকাশে মধ্য—আতলান্তিকে আগুন—ছাইয়ে ছড়িয়ে—ছিটিয়ে গেল। ঈশ্বর। ঈশ্বর। আমাকে সইবার শক্তি দাও।

    আলো যখন ছোট ছিল ভয়ানক দুষ্টুমি করত, কালোর ওপর দারুণ অত্যাচার করত। কিন্তু বড় হয়ে ভাইয়ের সঙ্গে গলায় গলায়।—বরং দিব্যি দিদি দিদি ভাব। দুই ভাইবোনে রোজ টেলিফোনে কুশল বিনিময় হয়। দু’জনে দুই দেশে থাকলে কী হবে?

    আমার ভাই—বোনেরা যারা জীবিত, অনেকেই এখনও কলকাতায়। ক’জনেরই বা খবর রাখি? বিজয়ার সময়ে দেখা হয়। এলোমেলোভাবে মস্ত সংসারে মানুষ হলে এই হয়। প্রীতি ভালবাসার চেয়ে বেশি করে শিশুরা শেখে আত্মস্বার্থ সংরক্ষণ। ঘনিষ্ঠতার চেয়ে বেশি করে শেখে শত্রুতা আর আন্তরিকতার চেয়ে কৃত্রিমতা। হিপক্রিসি। শান্তিরক্ষার জন্য তঞ্চকতা স্বস্তির জন্য, মিথ্যাভাষণ, এ সবই বড় পরিবারের শিক্ষা। শরৎবাবুর গল্পের মতো বড়ভাইরা বহুদিনই আর জন্মায় না। আলো—কালো ছোট পরিবারে ছিল বলেই ওদের মধ্যে হৃদয়ের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে বাল্যকালে। সামান্য ইস্কুল মাস্টারের ছেলেমেয়ে ওরা, নিজেদের চেষ্টায় আজ কোথায় পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে পেপার দিচ্ছে আমার কালো। এবং এখন থেকে আলোও। মাইক্রোবায়োলজিতে ভাইরাস নিয়ে আলোর এই রিসার্চটা খুব মূল্য পাচ্ছে পণ্ডিতদের কাছে।

    ফ্রেড গেলবারে বোঝাচিছল আমাকে, এই যে ভাইরাসটা আলো আইডেন্টিফাই করেছে, এটা থেকে চিকিৎসা জগতের অনেক বিস্ময়কর তথ্য পাওয়া যেতে পারে। এত বেশি বয়সে কাজ শুরু করেও এত সূক্ষ্ম এবং উচ্চস্তরের কাজ করা নাকি মোটেই সহজ নয়। ফ্রেডকে মহাগৌরবাম্বিত মনে হল, আলোর সাফল্যে। পাঁচ বছরে ধরে ফের গবেষণাটা শুরু করেছে আলো, মেয়ে হাইস্কুলে উঠে যাবার পর থেকেই। দুটো পেপার বেরিয়ে গেছে। এ বছরেই জমা দিচ্ছে থিসিস। জমা দিচ্ছিল। থিসিস জমা দেওয়া বোধহয় হল না। ডক্টর আলো নিকলসন হওয়া বোধহয় হল না। হেম যাই বলুক, আমার মন বলছে ওই প্লেনেই আলো চলে গেল। আলোমায়ের সঙ্গে আর আমাদের দেখা হবে না। শেষ দেখেছি কবে? এয়ারপোর্টে। আমাদের তুলতে এসেছিল। সারাটা রাস্তা লালীকে বকতে বকতে এল, ইলার ছেলেমেয়ে কী সুন্দর রবীন্দ্রসংগীত গাইতে পারে। বনানী ঘোষ শিখিয়ে যায়, লালী কেন শিখছে না। লালীও তেমনি ”আই হেট রবীন্দ্রসংগীত। ইটস বো—ররিং—” আমি আর হেম উলটে আলোকেই বকতে শুরু করলুম—”কী আশ্চর্য! মেয়েটার ইচ্ছে নেই তুই জবরদস্তি শেখাবি?” মাঝে আলো আবার সংস্কৃত শিখতে শুরু করেছিল জেফ মেসনের কাছে—ফ্রেড আর লালীকেও শেখাবেই—ফ্রেড যদি বা কয়েকদিন ক্লাসে গেল, লালী গেলই না। ”আই ডোন্ট ওয়ান্ট স্যানক্রিট। ফ্রেঞ্চ ইজ কোয়াইট ইনাফফর মি!” রজ লেফেবায়ের কাছে সংস্কৃত শিক্ষা চালিয়েই যাচ্ছে আলো। জেফ টোরোন্টো ছেড়ে যাবার পরেও। অথচ ছেলেবেলায় ওকে এই সংস্কৃত আর এই রবীন্দ্রসংগীত নিয়েই কম ঝুলোঝুলি করেছি আমি? কিছুতেই এই সংস্কৃত নিল না, ডোমেস্টিক সায়েন্স না হাইজিন কী যেন একটা আজেবাজে সাবজেক্ট নিয়ে নিল। মেয়েদের বেলায় তখন এই অপশানটা খোলা ছিল। কালো বাধ্য হয়ে সংস্কৃত পড়েছিল। আর গান? কিছুতেই আলোকে গানের স্কুলে ভর্তি করাই গেল না। ”অতজনের সামনে গান গাওয়া? ওরে বাবা!” জেদি কি আলোই কম? লালী তো জেদি হতে পারেই। এই ফ্রেডের সঙ্গে বিয়েতে আমরা কেউই মত দিইনি। ফ্রেডের বাবা মাও না। তবু বিয়ে করল। ফ্রেডের বয়স মাত্র কুড়ি বছর, নিজের একুশ। কপালগুণে ফ্রেডের মতো ছেলে হাজারে একটাও হয় না সত্যিই, কিন্তু তখন তো আমরা সেটা জানতুম না? নিজের জেদে বিয়ে। নিজের জেদে পড়া ছেড়ে দেওয়া। আবার নিজের জেদে পড়া শুরু।

    আলোই সত্যি সত্যি লিবারেটেড ওম্যান। স্বাধীন মেয়ে। হেমের সব স্বপ্নই সফল হয়েছে। ভালো খাওয়া, ভালো পরা, বিশ্রাম, নিজস্ব ভিটে। এমনকী স্বপ্নাতীত যা, তাও পেয়েছে—বছরে ক’মাস করে নর্থ আমেরিকায় কাটানো! গ্যাসে রান্না, ফ্রিজের জল, দাসদাসীরা হাটবাজার করে দিচ্ছে, বাসনকোসন ধুচ্ছে, কাপড়চোপড় কাচছে। মাঝে মাঝে ফোনে আমেরিকায় কথা বলা। সন্ধ্যায় টি.ভিটা খুলে হেম যখন বসে, পানের ডিবেটি নিয়ে, আমার বড় মায়া হয়। কত অল্পেই ওর মনুষ্য জীবন সার্থক হয়ে গেছে? যদিও লোক আছে, হেম তবু রান্নাটা যে নিজেই করে এখনও এটাই বাঁচোয়া। নইলে হেমের দিনটা বড় শূন্য হয়ে যেত। ও তো বইটই বিশেষ পড়ে না। তবে হ্যাঁ ঠাকুরঘরটি আছে। এদিকে যতই ওর কাজ কমছে, ঠাকুরঘরে ততই ওর কাজ বাড়ছে। আগে নমোনমো করে পুজো সারত। সংসারের শত কাজ পড়ে আছে, সময় কোথায়? এখন সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা, ত্রিসন্ধ্যাই পুজো—আহ্নিক করে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পুজোর ঘরে দোর দিয়ে থাকে। মন্দ নয়। তবু খানিকটা সময় ওর নিজের ভিতরে কাটে। কী বলে হেম ঈশ্বরকে? কী চায়? আমি এখনও তো ঈশ্বরের কাছে কিছুই চাইতে ভরসা পেলুম না। না চাইতেই তিনি এত দিয়েছেন, সুখ এবং দুঃখ। হে ঈশ্বর, ত্রি—সন্ধ্যা আহ্নিক—করা আত্মসমর্পিত ভক্তকে তুমি এ কী আঘাত দিলে? কেন দিলে? হেম তো সন্তান—অন্ত প্রাণ।

    ছেলের চেয়ে মেয়ে ওর একটুও কম আদরের নয় সাধারণত যেটা হয় না। হিন্দু ঘরে ছেলেই সব। ঈশ্বর হেমকে তুমি শক্তি দাও, সামর্থ্য দাও। যেন এই বজ্রপাত সে বহন করতে সক্ষম হয়। হেমও তো গীতা পড়েছে। রোজই পড়ে। ঈশ্বর আমাকেও তুমি শক্তি দাও—আরও কতদিন এই ভাঙা বুক নিয়ে বাঁচিয়ে রাখবে আমাকে? আরও বাঁচা মানেই আরও শোক, আরও দুঃখ।

    যদি আর একটা বছর, একটা মাস কি একটি দিনও আগে আমি মরতে পারতাম! জ্ঞাতসারে তেমন কোনও মহাপাপ করেছি বলে মনে তো পড়ে না যার ফলে আজ আমাদের আজ এত বড় শাস্তি? হ্যাঁ, আমরা একা নই। তিনশো ঊনত্রিশ জন মানুষ চলে গেলে অনেকগুলো পরিবারই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। সকলেই দূর দেশ থেকে স্বদেশে ফিরছিল—সকলের জন্যেই কেউ—না কেউ অপেক্ষা করেছিল।

    আমাদের সর্বনাশের অংশীদার আরও অনেক স্বামী—স্ত্রী অনেক বাবা—মা। ঊনসত্তরটি শিশুও চলে গেছে—জীবনের স্বাদ নেবার আগেই মৃত্যুর স্বাদ যাদের জানা হয়ে গেল। আলো। আমার আলোমা! কখন কী করে মধ্য আকাশে প্রচণ্ড মৃত্যু নেমে এসেছিল, হয়তো কোনওদিনই জানা হবে না। কিন্তু যদি এতে মানুষের হাত থাকে, সাবোটাজের কাজই যদি হয়, তা হলে সেই অপরাধীদের তুমি যেন ছেড়ে দিয়ো না ঈশ্বর। ধরাপড়ুক না—পড়ুক এত বড় মহাপাপের প্রতিফল যেন তারা পায়।

    লালী—ফ্রেড—কালোরাও এতক্ষণে জেনে গেছে। ওরা হয়তো কালই জেনেছে টি.ভিতে। দিল্লিতে? খোকনরা? ওরাও তো টি.ভিতে কালই জেনে থাকতে পারে? কই, ওরা তো আমাকে কিছু জানায়নি? তবে হয়তো আমার ধারণা ভুল। হয়তো এই প্লেনে ছিলই না সে। হয়তো হেমই ঠিক। আঃ। যেন তাই হয়, যেন তাই হয়, যেন আমার কথাটা ভুল হয়, ঈশ্বর হেমের কথাই ঠিক হোক।

    বাসাংসি জীর্ণানি যঁহা বিহায়…

    না, এসব শ্লোকে আজ আর মন মানছে না—

    মন মানছে না—হেম কোথায় গেল?

    ছোট সুখ, ছোট দুঃখ এই নিয়েই তো কেটে গেল আশিটা বছর। বড় সুখেরও মুখ দেখেছি, ছেলের সাফল্যে, মেয়ের সাফলে। আমার মতো সামান্য স্কুল শিক্ষকের জীবনে এর চেয়ে বড় সুখ আর কী বা কল্পনীয়? নাতি—নাতনিদের ভালবাসা পেয়েছি, পুত্রবধূ এবং জামাতার শ্রদ্ধা অনুরক্তি পেয়েছি—যা চেয়েছি তার চেয়ে অনেক বেশিই পেয়েছি। তাই কি এভাবে এত বড় শোকের মূল্যে, হে ঈশ্বর, তুমি তার দাম শুধে নিলে? আমার এই বুড়ো শুকনো প্রাণটা কি তোমার কোনও কাজেই লাগত না? প্রাণচঞ্চল আশায় উজ্জ্বল, ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় সদা—উচ্ছ্বল মেয়েটাকেই তোমার প্রয়োজন ছিল? এত সুখে থেকে বুক ঢিপঢিপ করত আমার। সব সময়েই মনে হত যা পাচ্ছি তা আমার প্রাপ্য নয়। আমার মধ্যে তো বিনয়ের অভাব ছিল না? আমার দর্প হয়নি যে তুমি আমাকে আঘাত দিয়ে দর্প হরণ করবে? নাকি এটা তোমার খেলা—মায়া—বিনাশের খেলা? বয়েস যত হচ্ছে ততই মায়ায় জড়াচ্ছি—আগে ছিল পুত্র—কন্যা—এখন নাতি—নাতনি—জামাই—বউ—মায়ার বন্ধন বেড়েই চলেছে, বেড়েই চলেছে। কোথায় অল্প বয়সে ছিলাম কষ্টসহিষ্ণু, অ—ভোগী, সংযমী, ত্যাগী—অথচ তখনই ভোগের কাল, সংসার ধর্মের সময়—আর এখন, বাণপ্রস্থে যাবার বদলে আপাদমস্তক বিলাসে ডুবে আছি—ভোগবিলাসে ডুবে আছি, দেহের আরামের দিকে এতদিনে নজর পড়েছে। তাই কি তুমি মনে করিয়ে দিলে—দেহ নশ্বর? না জায়তে ম্রিয়তে বা বিপশ্চিৎ…

    আলো মা আমার—ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে—ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে—এই শাস্তি আমারই লোভের শাস্তি। হ্যাঁ, আমারই লোভ। আমার নিজের ক্ষুদ্র গণ্ডীর জীবনে যা পাইনি, নিজের জীবনে যা যা হয়নি, পুত্র—কন্যাদের জীবনের গণ্ডী বাড়িয়ে দিয়ে সেই সুখগুলিই আমি পরোক্ষে ওদের মাধ্যমে উপভোগ করতে চেয়েছিলাম। এ সেই লোভের শাস্তি, সেই পাপের শাস্তি। হেম বড় সাদাসিধে। জীবনে কিছুই চাইবার মতো সাধ্য তার ছিল না, যা পেয়েছে তা মুখ ফুটে চাইবার সাহস তার কখনওই হত না—চাওয়ার অতিরিক্ত পাওয়া যার ভাগ্যে ঘটে, তার তুল্য সুখী কে! হেমই সুখী। আমি যা পেয়েছি তা আমার পরিশ্রমলব্ধ। দীর্ঘমেয়াদী, সযত্ন চেষ্টিত পরিকল্পনার ফসল। একটা এলিমেন্ট অব রিস্ক ছিলই, ছেলে—মেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে গিয়ে বাবা—মাকে ছেঁড়া জুতোর মতো ছুড়ে ফেলেও দিতে পারত। ঈশ্বরকৃপায় সেটা ঘটেনি। তাই তো এই নরম খাটে শুয়ে আছি—জানি না কী দিয়ে আকাশ—এই একই আকাশে কয়েক ঘণ্টা মাত্র আগে একটা প্লেন বিদীর্ণ হয়েছে—অথচ দ্যাখো চেয়ে, কী শান্ত কী নীলিম, কে বলবে কয়েক হাজার মাইল দূরে কী ভীষণ মৃত্যুলীলা ঘটে গেছে এরই বুকে। নির্বিকার আকাশে কোনও দাগই পড়ে না। সমুদ্রেও কোনও রেখা টানা যায় না। অসীম কালের যে হিল্লোলে জোয়ার—ভাঁটায় জীবন দোলে—তারই মধ্যে—তোমার ওই বিশ্বভরা প্রাণের মধ্যে আরও একবিন্দু প্রাণ—আমার আলোকে তোমার এত প্রয়োজন ছিল? কে বলবে, ওই সবুজ নারকোল পাতা দেখে—ওই ছটফটে চড়ুইপাখিটা দেখে—যে জগতে এমন ভয়ংকর চিরবিদায় আছে, গহন কালো মৃত্যুযন্ত্রণা আছে—আলোর মতো জ্যোতিকণাও যেখানে লুপ্ত হয়ে যায়—হে ঈশ্বর আমাকে শক্তি দাও—আমার সমস্ত জীবনের অহংকার চূর্ণ হয়ে যেতে বসেছে—আমি মনে করতাম, আমি বুঝি সুখে—দুঃখে অবিচল, অনুদ্বিগ্ন, বিগতস্পৃহ স্থিতধী পুরুষ হতে পেরেছি—কিন্তু নাঃ, আমার চোখের সামনে সমস্ত অন্ধকার হয়ে আসছে। আলো মা নেই—আলো আর ‘বাবা’ বলে কাছে এসে দাঁড়াবে না—এ আমি সহ্য করতে পারছি না—কোথায় আমার গীতা, আমার কঠোপনিষৎ?

    সন্তোষ মুখুজ্যে, তোমার ধর্ম চুলোয় গেল? দর্শনও চুলোয় গেল? পজিটিভ থিংকিংয়ে বিশ্বাস করতে না? কেন তা হলে—কিন্তু ভয়ংকর মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়ে পজিটিভ থিংকিং—সন্তান শোকের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পজিটিভ থিংকিং—কিন্তু সন্তোষ, তুমি সংখ্যাটা মনে রেখো, ৩২৯, দুর্ভাগা তুমি এমনও! তিনশো ঊনতিরিশজন একই সঙ্গে একই লগ্নে ঊর্ধ্বাকাশে লুপ্ত হয়ে গিয়েছে। তাঁরা কেউ স্বয়ম্ভু নয়—কেউ সংসারত্যাগী ছিল না—প্রত্যেকেরই প্রিয়জন আছে—প্রত্যেকেরই স্বপ্ন ছিল, কারুর স্বামী গেল, কারুর স্ত্রী—কন্যা—পুত্র হয়তো সর্বস্ব গেল, কারুর হয়তো একমাত্র সন্তান গেল—কোনও সংসারের একমাত্র রোজগেরে মানুষটিই চলে গেল—কার যে কত সর্বনাশ হয়ে গেল তুমি তার কী জানো? তোমার তো ছেলে আছে। নাতি—নাতনিও আছে। মৃত্যুর অবশ্যম্ভাবিতা থেকে কে সন্তানকে বাঁচাতে পারে? কে পারে? একদিন—না—একদিন তো তাকে চলে যেতে হতই! হ্যাঁ—তোমাকে দেখতে হত না সেই যাত্রা, এইটুকুই যা! উলটোদিকে ভাবলে দ্যাখো মেয়ে তোমার কতদূর ভাগ্যবতী! জীবনে একটাও শোক তাকে পেতে হল না। পিতা—মাতা, সহোদর ভাই, স্বামী—কন্যা, সবাইকেই বজায় রেখে, হাসতে হাসতে, পরিপূর্ণ জীবনের স্বাদ নিতে নিতে, মৃত্যুর কথা মনের মধ্যে ঠাঁই দেবার আগেই সে চলে গেল। তুমি তো নিজের চোখেই দেখেছ, মরবার আগে জীবের মৃত্যুযন্ত্রণা কী বস্তু! দেহের সে কষ্ট চোখে দেখা যায় না। কি গোরুর ঘোড়ার কি মানুষের। আমার আলোর যাত্রা পুণ্যাত্মার যাওয়া। আর মৃত্যুভাবনা? তার যন্ত্রণা? সে আরও বেশি। আমার বাবার মধ্যে দেখেছি। সেই মৃত্যুভাবনার যন্ত্রণা বোধহয় মৃত্যুযন্ত্রণার চেয়েও বেশি। সেই ভয়, মৃত্যু—ভয় প্রত্যক্ষ করাও এক পরম কষ্ট। বাবার মধ্যে সেই ভীতি প্রত্যক্ষ করেছি বলেই নিজে সতর্ক থাকি, যেন কদাচ মনে মৃত্যুভয়টি না ঢোকে। মৃত্যুভয়েই প্রকৃতপক্ষে মানুষের প্রাণশক্তি বিনষ্ট হয়ে যায়—মানুষ জীবন থাকতেও মৃত্যুর কবলে চলে যায়। জরা এসে একটি একটি করে প্রত্যেকটি ইন্দ্রিয়ের পাপড়ি বুজিয়ে দেয় ধীরে ধীরে—যেমন একটা সময়ে ইন্দ্রিয়গুলি সহসা উন্মোচিত হয়েছিল পরিপূর্ণ বিকশিত হয়ে উঠেছিল, ঝলমল করে উঠেছিল যৌবনের রোদ্দুর তেমনই আসে অবধারিত সন্ধ্যা, রাত্রির দূত হয়ে। আমার চোখ যেমন। হেমের যেমন কান। কানে ভালো শুনছে না হেম আজকাল। বুঝতে পারি, একটু জোরে কথা না বললে সবটা বুঝতে পারে না। আর আমি তো হাতের লেখা পড়তেই পারি না—বড় বড় ছাপার হরফ ছাড়া সবকিছুই আমার দৃষ্টির সামনে ঝাপসা হয়ে গেছে—অথচ কোনও দিন চশমা নিতে হয়নি এত তীক্ষ্ন ছিল চোখের নজর। এখন চোখের আভ্যন্তরীণ যন্ত্রপাতি ভোঁতা হয়ে গেছে। মনের আভ্যন্তরীণ যন্ত্রপাতিও নিশ্চয় ভোঁতা হয়ে যাবে আস্তে আস্তে—হয়তো আজ থেকে দশ বছর বাদে শুনলে এই সংবাদেও আমার হৃদয় মনে আর তেমন কোনও আলোড়ন উঠত না। ইন্দ্রিয়জয়ী নয়, ইন্দ্রিয়বিহীন হয়ে যাচ্ছি যে আস্তে আস্তে! যার রিপু নেই, সে আর রিপুজিৎ হয় কী করে? বার্ধক্য অনেক আগেই আমাদের গ্রাস করত—যদি ছেলেমেয়ের স্নেহের কল্যাণে এই বয়েসে একটা যৌবন—সর্বস্ব অদ্ভুত দেশে যাতায়াত শুরু না হত! এমন অবিশ্বাস্যভাবে পালটে গেল আমাদের জীবনের চরিত্র, জীবনপঞ্জি—সঞ্চিত অভিজ্ঞতার পুঁজি! কোনওদিন কি আমার মা ভেবেছিলেন তাঁর মেজবউ নায়াগ্রা ফলসের ধারে নাতি—নাতনির হাত ধরে বেড়াবে? কত আশ্চর্যই যে রেখেছিলেন জমা করে আমাদের জন্যে বিধাতা। তিনিই দিলেন এই শেষ বিস্ময়। শেষ মার। নাকি এটা মার নয়? নিজের চোখেই দেখে যাচ্ছি আমার মেয়ে পরিপূর্ণ সুখের জীবনে, বিনা যন্ত্রণায়, মৃত্যুভয়টুকুও টের পাবার আগেই মহাকালের পায়ে মিলিয়ে গেল। সকলের ভালবাসা নিয়ে, সকলের কাছে প্রয়োজনীয়তা থাকতে থাকতে এই চলে যাওয়া—এ তো মহামূল্য। আমাদের জীবনে শেষপর্যন্ত কী আছে কে জানে? আরও কতদিন বেঁচেবর্তে থাকতে হবে কে জানে? ততদিন কি ধৈর্য থাকবে ছেলের? ছেলের বউয়ের? আজ যেমনভাবে আছি শেষ দিনেও কি তেমনিভাবে কাটাতে পারব? হাত—পা—ও তো অচল হয়ে আসছে। হেম! হেম!—দিল্লিতে একটা কল বুক করতে হবে। কিন্তু হেম কোথায় গেল? হয়তো হেমই ঠিক—ওর তো মায়ের মন, ওর ইনস্টিংক্ট কি এতই ভুল করছে? আমার স্বভাবটা একটু পেসিমিস্টিক ঠিকই, কিন্তু নারীরা আবার স্বভাবতই অপটিমিস্ট হয়—ওদের তো গর্ভে ধারণ করতে হয় সমগ্র মানুষ জাতটার ভবিষ্যৎ—তাই দিল্লিতে খোকনরা আলোর ফ্লাইট নম্বর জানে—এভাবে অনিশ্চিয়তায় না ভুগে ঠিকঠাক জেনে নেওয়াই ভালো। ন জায়তে ম্রিয়তে বা…নাকি ফ্রেডকেই টেলিফোন করব? কিছু তো একটা করা দরকার—নাকি কালোকেই…? নাঃ এসব আমি নিশ্চয়ই ভুলভাল ভাবছি, কেন না দুর্ঘটনায় আলো থাকলে, কালো নির্ঘাত টেলিফোন করত তার মাকে—খোঁজ নিত আমরা এখন কে কেমন আছি—কেউই যখন ফোন করেনি—ফ্রেড না, খোকনও না, কালোও না—ফ্রেডের অবিশ্যি ফোন করাটা স্বাভাবিক নয়, যদি দুর্ঘটনাটা সত্যি হয়—ও কী! ফোনটা বাজছে না? ও কী? ওই তো! ফোন বাজছে। টেলিফোনের বাজনা শুনেই আমি বুঝতে পারছি ওটা দুঃসংবাদ… ঘোর দুঃসংবাদ আসছে—হেম! হেম!

    1 2 3 4 5 6 7
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleএকটি ইতিবাচক প্রেমকাহিনী – নবনীতা দেবসেন
    Next Article অ্যালবাট্রস – নবনীতা দেবসেন

    Related Articles

    নবনীতা দেবসেন

    মায়া রয়ে গেল – নবনীতা দেবসেন

    September 1, 2025
    নবনীতা দেবসেন

    নবনীতা দেবসেনের গল্প

    September 1, 2025
    নবনীতা দেবসেন

    করুণা তোমার কোন পথ দিয়ে – নবনীতা দেবসেন

    September 1, 2025
    নবনীতা দেবসেন

    হে পূর্ণ, তব চরণের কাছে – নবনীতা দেবসেন

    September 1, 2025
    নবনীতা দেবসেন

    ভ্রমণের নবনীতা – নবনীতা দেবসেন

    September 1, 2025
    নবনীতা দেবসেন

    ভ্রমণ সমগ্র ১ – নবনীতা দেবসেন

    September 1, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    সমগ্র কিশোর সাহিত্য – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    সমগ্র কিশোর সাহিত্য – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    সমগ্র কিশোর সাহিত্য – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025

    ছোটগল্প – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025

    টেনিদা সমগ্র – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.