Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – কিয়েগো হিগাশিনো

    কেইগো হিগাশিনো এক পাতা গল্প340 Mins Read0

    স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – ১৩

    অধ্যায় ১৩

    মাইকে কথাটা শোনার পর চোখ বন্ধ করে ফেলল হিরোমি। কিছুক্ষণ বাদে বিটলসের ‘দ্য লং অ্যান্ড উইন্ডিং রোড’ গানটা বেজে উঠল স্পিকারে। খুব কষ্ট হচ্ছে তার নিজেকে সামলাতে। ইয়োশিতাকা বিটলসের প্রচণ্ড ভ ছিল। ফলে গাড়িতে আর বাসার সিডি প্লেয়ারে এই গানটা বেশ কয়েকবার শুনেছে হিরোমি। ধীর ছন্দের গানটার তালে তালে মাথা দোলাতো ইয়োশিতাকা। সুরের মূর্ছনায় ভেসে যেত যেন। নিশ্চয়ই আয়ানের পরামর্শে গানটা বাজছে। ভাবনাটা মাথায় আসতেই কেন যেন একইসাথে অনুতাপ আর ঈর্ষা চেপে বসলো ওর চিত্তে। তবে এরকম একটা অনুষ্ঠানের জন্যে একদম যথার্থ গানটা।

    বুকের ওপর চেপে বসা পাথরটার ওজন বেড়ে গেছে যেন হঠাৎ। শেষ পর্যন্ত আর চোখের পানিতে বাঁধ দেয়া সম্ভব হলো না। অঝোর ধারায় অশ্রু ঝরতে লাগলো দুই গাল বেয়ে। কিভাবে তাকে ভুলে থাকবে ও? হিরোমি খুব ভালো করেই জানে যে এখানে কান্নাকাটি করাটা একদমই উচিত হচ্ছে না তার। লোকে কি ভাববে? সবার চোখে আমি তো ইয়োশিতাকার স্ত্রীর ছাত্রি। আয়ানেই বা কি ভাববে?

    গানটার সুর মিলিয়ে যাবার পর শুরু হলো পুষ্পস্তবক অর্পন পর্ব। সারিবদ্ধভাবে বেদীর সামনে গিয়ে ফুলের তোড়াগুলো নির্দিষ্ট স্থানে রাখলো অতিথিরা। ধর্ম-কর্মে অবশ্য কখনোই অতটা মনোযোগ ছিল না ইয়োশিতাকার। শেষকৃত্যের আয়োজন করার সিদ্ধান্তটা আয়ানের। চুপচাপ বেদীর একপাশে দাঁড়িয়ে আছে সে।

    একদিন আগে পুলিশের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয় যে মরদেহ হস্তান্তরে আর কোন বাঁধা নেই। সেদিনই একটা ফিউনারেল হোমে নিয়ে আসা হয় ইয়োশিতাকার লাশ। তাতসুহিকো ইকাই অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যাপারে সর্বাত্মকভাবে সাহায্য করেছে আয়ানেকে। আজকের প্রাথমিক অনুষ্ঠানের পর আগামীকাল আরো বড় করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে ফিউনারেল হোমের পক্ষ থেকে।

    একসময় হিরোমির ফুল দেয়ার পালা আসলো। একপাশে দাঁড়িয়ে থাকা ফিউনারেল হোমের কর্মীর হাত থেকে ফুল নিয়ে সেটা বেদিতে শুইয়ে দিল হিরোমি। এরপর সামনে টাঙানো মৃতের ছবির দিকে তাকিয়ে হাতজোড় করে প্রার্থনা করল কিছু সময়। ছবিটায় হাস্যোজ্বল ইয়োশিতাকাকে দেখা যাচ্ছে।

    কষ্ট করে হলেও কান্না চাপলো হিরোমি। হঠাৎই তার পেটে মোচড় দিয়ে উঠল এ সময়। ভীষণ বমি পাচ্ছে। মুখে হাত চেপে দ্রুত সেখান থেকে কেটে পড়ার মুহূর্তে চোখাচোখি হলো আয়ানের সাথে। কোন অনুভূতি খেলা করছে না তার সেলাই শিক্ষকের চেহারায়। তার উদ্দেশ্যে একবার বাউ করে চলে যেতে উদ্যত হলো হিরোমি।

    “ঠিক আছো তুমি? হিরোমি?” নরম কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল আয়ানে।

    “হ্যাঁ,” কোনমতে বলল হিরোমি।

    মাথা নেড়ে আবারো বেদির সামনে জড়ো হওয়া অতিথিদের দিকে মন দিল আয়ানে।

    ঘরটা থেকে বেরিয়ে এলো হিরোমি। এখান থেকে বের না হওয়া পর্যন্ত শান্তি লাগবে না। দরজার উদ্দেশ্যে দ্রুত এগোচ্ছে এমন সময় কেউ একজন হাত রাখলো তার কাঁধে। ইউকিকো ইকাই।

    “হ্যা-হ্যালো…” তোতলাতে শুরু করল হিরোমি।

    “তোমাকে খুব জ্বালাতন করেছে পুলিশের লোকজন, তাই না?” বলল ইউকিকো। “মুখটা একদম শুকিয়ে গেছে।” মহিলার চোখে আসলেও উদ্বেগ খেলা করছে, সেই সাথে খানিকটা কৌতূহল।

    “তাদের সাথে কথা বলা শেষ,” হিরোমি বলল।

    “কি তদন্ত করছে কে জানে, এখনও তো কোন কিছু শুনতে পেলাম না। কোন সন্দেহভাজনকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি।”

    “জানি,” হিরোমি মাথা নাড়লো।

    “তাতসুহিকো বলছিল যে যত তাড়াতাড়ি কেসটা নিষ্পত্তি হবে, কোম্পানির জন্যে তত মঙ্গল। তাছাড়া আয়ানেও বাসায় ফিরতে পারছে না। কি একটা অবস্থা!”

    আবারও মাথা নাড়লো হিরোমি।

    “তোমরা দু’জন এখানে কি করছো?” ওদের উদ্দেশ্যে এগোতে এগোতে জিজ্ঞেস করল তাতসুহিকো ইউকা। “খাবার আর পানীয় সব গেস্ট হলে রাখা আছে।

    “তাই না কি?” বলে হিরোমির দিকে তাকালো ইউকিকো। “চলো তাহলে?”

    “না, আমার ক্ষুধা নেই একদমই। ধন্যবাদ।”

    “আরে এসো! তুমি তো আয়ানের জন্যে অপেক্ষা করবেই। সবাইকে বিদায় জানাতে জানাতে ওর বেশ খানিকটা সময় লেগে যাবে।“

    “না,” এবারে আগের চেয়ে খানিকটা জোর দিয়ে বলল হিরোমি। “আসলে আমি আজ তাড়াতাড়ি ফিরবো।”

    “কিছুক্ষণের জন্যে হলেও এসো। আমাকে সঙ্গ দাও।”

    “এত জোর করছো কেন?” এসময় পাশ থেকে বলল তাতসুহিকো। “ওনার তো অন্য কোন কাজও থাকতে পারে।”

    এমন ভাবে ‘অন্য কোন কাজ’ কথাটা উচ্চারণ করল তাতসুহিকো যে হিরোমির মেরুদণ্ড বেয়ে শীতল একটা স্রোত বয়ে গেল যেন। ঠাণ্ডা দৃষ্টিতে ওর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলো মি. ইকাই।

    “আমি দুঃখিত। পরে নাহয় একসময় কথা বলবো…” বলে আর অপেক্ষা না করে ওখান থেকে বেরিয়ে এলো হিরোমি। আমার আর ইয়োশিতাকার সম্পর্কের ব্যাপারে জানেন তিনি। আয়ানে নিশ্চয়ই কিছু বলেনি। পুলিশের লোকদের কেউ কি জানাতে পারে? মিসেস ইকাইকে অবশ্য বলেননি কিছু। আমার সম্পর্কে তার ধারণাই পাল্টে গেছে।

    অস্থির লাগছে হিরোমির। এখন কি হবে ওর? লোকে তো সত্যটা জানবেই এক সময়। আর একবার সেটা হবার পর আয়ানের সাথেও আর যোগাযোগ করতে পারবে না। মাশিবাদের চেনাজানা সকলের কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে হবে।

    আমাকে হয়তো কখনোই ক্ষমা করবেন না তিনি।

    বেদির পাশে দাঁড়িয়ে ওর দিকে যেভাবে তাকিয়ে ছিল! ফুল দেয়ার সময় ওভাবে মুখে হাত চাপা দেয়াটা উচিত হয়নি। আয়ানে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছে, কেন অমনটা হয়েছিল। সেজন্যেই ঠিক আছে কি না জানতে চেয়েছে।

    যদি এমন হতো, মি. মাশিবার সাথে অল্প ক’দিনের সম্পর্ক ছিল ওর, তাহলে হয়তো আয়ানে ওকে ক্ষমা করলেও করতে পারতো। স্বামীর সাময়িক পদস্খলন বলে নিজেকে সান্ত্বনা দিত হয়তো। কিন্তু হিরোমির পেটে মি. মাশিবার ভালোবাসার ফসল।

    হ্যাঁ, আয়ানে হয়তো সন্দেহ করেছিল ব্যাপারটা। কিন্তু সন্দেহ এক জিনিস এবং স্বামীর প্রেয়সীর মুখ থেকে সত্যটা শোনা সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার বেশ কয়েকদিন হতে চলল ডিটেক্টিভ উতসুমির সামনে প্রেগন্যান্সির ব্যাপারটা স্বীকারের ঘটনার। এরপর থেকে এখন অবধি আয়ানে সে নিয়ে কিছুই বলেনি। আমার সম্পর্কে তার ধারণাও নিশ্চয়ই আরো বদলে গেছে, হিরোমি ভাবলো। কিন্তু ধারণার এই বদলের প্রতিক্রিয়া কি হতে পারে সে সম্পর্কে অনেক ভেবেও কিছু খুঁজে পেলো না হিরোমি।

    সামনের দিনগুলোর কথা ভাবলেই চোখে আঁধার দেখছে? এখন কি করবো আমি?

    বাচ্চা নষ্ট করে ফেললেই ভালো হবে বোধহয়। ওর কি ক্ষমতা আছে একা একটা বাচ্চার লালন পালন করার? তাছাড়া বাচ্চাটার বাবা ইতোমধ্যেই মারা গেছে, অর্থাৎ শুরু থেকে একটা ভাঙা পরিবারের মধ্যে বড় হতে হবে বেচারাকে। কিছুদিনের মধ্যে হয়তো হিরোমির চাকরিটাও চলে যাবে। বাচ্চাটা রাখার সিদ্ধান্ত নিলে আয়ানে কি আর ওকে চাকরিতে বহাল থাকতে দিবে?

    যতই ভাবলো, ততই মনে হতে লাগলো যে ওর হাতে অন্য কোন উপায় নেই। তবুও মন মানতে চায় না। হয়তো ইয়োশিতাকাকে এখনও ভালোবাসে বলেই তার শেষ স্মৃতিচিহ্নটাকে মুছে ফেলার কথা মনে হতেই আঁতকে উঠছে। তাছাড়া একজন মা’র পক্ষে কি কখনো জেনেবুঝে তার সন্তানকে হত্যার কথা চিন্তা করাটা সহজ?

    তবে যে সিদ্ধান্তই নিক, সেটা নিতে হবে দুই সপ্তাহের মধ্যে। এরপর অ্যাবরশনের ক্ষেত্রে দেরি হয়ে যাবে।

    ফিউনারেল হল থেকে বের হয়ে ট্যাক্সি খুঁজছিল, এমন সময় পেছন থেকে কেউ একজন ডেকে উঠল, “মিস ওয়াকাইয়ামা?”

    ভূকুটি করে পেছনে তাকাতেই ডিটেক্টিভ কুসানাগিকে ওর দিকে আসতে দেখলো।

    “আপনাকে খুঁজছিলাম। বাসায় যাচ্ছেন?”

    “হ্যাঁ। খুব ক্লান্ত লাগছে।”

    ডিটেক্টিভ নিশ্চয়ই ওর প্রেগন্যান্সির ব্যাপারটা জানে। ভাবলো একবার বলবে যে এরকম মুহূর্তে বারবার বিরক্ত না করতে। গর্ভবতী অবস্থায় মানসিক চাপের মধ্যে থাকাটা মা এবং বাচ্চা কারো জন্যেই ভালো নয়।

    “আমি জানি আপনি ভীষণ ক্লান্ত। এই অবস্থায় বিরক্ত করার জন্যে দুঃখিত, কিন্তু কিছু কথা ছিল। খুব বেশি সময় লাগবে না।”

    অসন্তোষ লুকানোর কোন চেষ্টা করল না হিরোমি। “এখনই বলতে হবে?”

    “হ্যাঁ, আমি আসলেও দুঃখিত।”

    “আমাকে কি আবার স্টেশনে যেতে হবে?”

    “না, নিরিবিলি কথা বলা যায় এরকম কোথাও হলেই হবে।” এটুকু বলে একটা ট্যাক্সি ডাক দিল কুসানাগি। চালককে হিরোমির বাসার কাছের একটা রেস্তোরাঁর ঠিকানা বলে ভেতরে উঠে বসলো।

    হয়তো আসলেও তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেবে, কিছুটা স্বস্তিবোধ করল হিরোমি।

    রেস্তোরাঁটা প্রায় খালিই বলা চলে। একদম পেছন দিকের একটা টেবিল দখল করল ওরা।

    এখানে চা আর কফি কাউন্টার থেকে নিজে গিয়ে নিয়ে আসতে হয়, তাই দুধ অর্ডার করল হিরোমি। কুসানাগি নিজের জন্যে কফি নিয়ে আসলো।

    “ইদানীং এরকম রেস্তোরাঁগুলোয় ধূমপান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আপনার কোন অসুবিধে হবে না আশা করি,” হেসে বলল ডিটেক্টিভ

    হিরোমি নিশ্চিত, কুসানাগি কথাটা বলেছে এটা বোঝাতে যে, প্রেগন্যান্সির ব্যাপারটা সে জানে। আপাতদৃষ্টিতে খুবই সাধারণ একটা মন্তব্য। কিন্তু ভেতরে ভেতরে অন্তর্দ্বন্ধে ভোগার কারণে এই মন্তব্যটাই খুব রূঢ় ঠেকলো হিরোমির কাছে।

    “কী জানতে চাচ্ছিলেন?” টেবিলের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল সে।

    “আমাদের সময় নষ্ট করা উচিত নয় একদমই। আপনাকে দ্রুত বাসায় ফিরতে হবে,” বলে কিছুটা সামনের দিকে ঝুঁকে এলো কুসানাগি। “ইয়োশিতাকা মাশিবার প্রেমিকাদের সম্পর্কে জানতে চাই আমি।”

    “মানে?” চট করে মুখ তুলে জিজ্ঞেস করল হিরোমি।

    “মানে…অন্য কারো সাথে তার সম্পর্ক ছিল কি না। আপনি বাদে?”

    চেয়ারে সোজা হয়ে বসলো হিরোমি। লোকটা কি পাগল? “এরকম উদ্ভট প্রশ্ন করার কারণ কি?”

    “অন্য কেউ কি ছিল?”

    “আপনারা কি এরকম কিছু জানতে পেরেছেন?” তীক্ষ্ণ কণ্ঠে পাল্টা জিজ্ঞেস করল হিরোমি।

    দূর্বল হেসে হাত নাড়লো কুসানাগি। “না, এরকম কিছু শুনিনি আমরা। শুধু একটা সম্ভাবনার কথা ভাবছিলাম, তাই জিজ্ঞেস করলাম।”

    “এ ব্যাপারে কিছু জানি না। আমার মাথায় এটা ঢুকছে না, অন্য কারো থাকার কথা কেন ভাবছেন আপনি।”

    হাসি মুছে গেল কুসানাগির মুখ থেকে। “আপনি তো জানেন,” বলল সে, “মি. মাশিবাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে। আর যে ব্যক্তি বিষ মিশিয়েছে, মাশিবাদের বাসায় হত্যাকাণ্ডের দিনে নির্বিঘ্নে প্রবেশ করেছে সে। সেই হিসেবে চিন্তা করলে আপনিই প্রধান সন্দেহভাজন।

    “আপনাকে ইতোমধ্যেই কয়েকবার বলেছি। আমি কাজটা-’

    “বুঝলাম,” তার কথা শেষ হবার আগেই বলে উঠল কুসানাগি। “কিন্তু আপনি যদি কাজটা না করে থাকেন, তাহলে কে করল? ঐ বাসায় কার কার যাতায়ত ছিল? মি. মাশিবার অফিসের কর্মচারী এবং অন্যান্য পরিচিত লোকদের সাথেও কথা বলেছি আমরা। তাদের মধ্যে কাউকেই সন্দেহ হয়নি। তাই সেখান থেকেই এই সম্ভাবনাটার কথা ভাবতে বাধ্য হয়েছি যে, দ্বিতীয় কারো সাথে সম্পর্ক থাকতে পারে মি. মাশিবার।”

    এবারে বুঝতে পারলো হিরোমি, তবুও ব্যাপারটা মানতে কষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া ইয়োশিতাকার এরকম কিছু করার কথাও না।

    “ডিটেক্টিভ, আপনি ওকে ভুল বুঝছেন। হয়তো কিছু ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে ও জীবনে, আমার সাথে সম্পর্কও করেছে-আমি বুঝতে পারছি, কেন এই সম্ভাবনাটা মাথায় উঁকি দিয়েছে আপনার। কিন্তু যে যা-ই বলুক ইয়োশিতাকা কোন প্লেবয় নয়। আমার সাথে সম্পর্কটার ছেলেখেলার জন্যে করেনি সে।”

    হিরোমি ভেবেছিল ওর কথা শুনে কুসানাগি হয়তো কিছুটা হলেও দমে যাবে, কিন্তু ডিটেক্টিভের চেহারার অভিব্যক্তির কোন পরিবর্তনই হলো না।

    “তাহলে তার জীবনে অন্য কোন নারীর উপস্থিতির ব্যাপারে কিছু জানেন না আপনি?”

    “না, একদমই না।”

    “কোন প্রাক্তন প্রেমিকা? তাদের ব্যাপারে কিছু জানেন?”

    “প্রাক্তন প্রেমিকা? মানে বিয়ের আগে যাদের সাথে সম্পর্ক ছিল ওর? এটা শুনেছি যে তালিকাটা খুব একটা ছোট নয়, কিন্তু এ ব্যাপারে খুব বেশি কথা হয়নি আমাদের মধ্যে।”

    “কিছুই কি বলেননি? এই যেমন তারা কি কাজ করতো বা কোথায় তাদের সাথে দেখা হয়েছিল?”

    থুতনিতে হাত ঠেকিয়ে ভাবতে লাগলো হিরোমি। আসলে বেশ কয়েকজন প্রাক্তনের ব্যাপারে টুকটাক আলাপ হয়েছিল ওদের মধ্যে। কিন্তু প্রেমিকা হয়ে প্রেমিকের প্রাক্তনদের ব্যাপারে শুনতে কারোই ভালো লাগার কথা নয়। তবে দুই একজনের কথা এখনও মনে আছে।

    “প্রকাশনার সাথে জড়িত এক মহিলার কথা বলেছিল একবার।

    “ প্রকাশনার সাথে জড়িত। যেমন, সম্পাদক?”

    “না, লেখিকা খুব সম্ভবত।“

    “ঔপন্যাসিক?।”

    কাঁধ ঝাঁকালো হিরোমি। “ঠিক বলতে পারবো না। খালি এটুকু বলেছিল যখনই নতুন কোন বই লেখতো সে, ইয়োশিতাকার কাছে মতামত চাইতো। ব্যাপারটা ভালো লাগতো ওর। এটা জিজ্ঞেস করেছিলাম যে কি ধরণের বই লেখেন মহিলা, কিন্তু আর কিছু বলেনি ও। আসলে প্রাক্তনদের ব্যাপারে কথা বলতে ওর নিজেরও ভালো লাগতো না, তাই আমিও আর জোর করিনি।”

    “আর কিছু বলেছিল কখনো?”

    “এটা বলেছিল, কখনো স্ট্রিপার বা পতিতাদের শরণাপন্ন হয়নি। এমনকি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্টিগুলোতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মডেলদের দাওয়াত দেয়ার ব্যাপারটাও পছন্দ করতো না।“

    “কিন্তু নিজের স্ত্রীর সাথে তো এরকম একটা পার্টিতেই দেখা হয়েছিল ওনার।”

    “ওনার স্ত্রী তো কোন মডেল নয়,” মাথা নিচু করে বলল হিরোমি।

    “আপনার কি কখনো মনে হয়েছে, কোন প্রাক্তনের সাথে হয়তো এখনও যোগাযোগ আছে তার?”

    “না মনে হয়,” ডিটেক্টিভের দিকে তাকিয়ে বলল হিরোমি। “আপনাদের ধারণা ওর পুরনো প্রেমিকাদের কেউ কাজটা করেছে?”

    “করতেও পারে, এটা একটা সম্ভাবনা। এজন্যেই আপনাকে বলছি এ সম্পর্কে যা যা জানেন, খুলে বলতে। পুরুষেরা সাধারণত পুরনো সম্পর্কের ব্যাপারে অত রাখঢাক করে না। হয়তো আলাপ করতে করতে সময়ে কিছু একটা বলেছিল তিনি আপনাকে?”

    “সরি,” দুধের কাপটা নিজের দিকে টেনে নিয়ে বলল হিরোমি। “এরকম কিছু মনে পড়ছে না,” একবার চুমুক দিয়েই নাক কুঁচকে ফেলল। চা অর্ডার করলেই ভালো হতো। বার বার ন্যাপকিন দিয়ে ঠোঁট মুছতে হবে এখন।

    এসময় হঠাৎই একটা পুরনো স্মৃতি ভেসে উঠল তার মনের পর্দায়। কুসানাগির চোখ বরাবর তাকালো।

    “কিছু মনে পড়েছে?”

    “ইয়োশিতাকা সবসময় কফি খেতো ঠিকই, কিন্তু চা সম্পর্কেও অনেক কিছু জানতো ও। একবার এই ব্যাপারে প্রশ্ন করেছিলাম। তখন বলে যে, ওর এক প্রাক্তন প্রেমিকা চায়ের পাগল ছিল, সবসময় নিহোনবাশির নির্দিষ্ট একটা দোকান থেকেই চা কিনতো সে।”

    নোটপ্যাড বের করে সেখানে কিছু কথা টুকে নিল কুসানাগি। দোকানটার নাম মনে আছে?”

    “না। ও বোধহয় নাম সম্পর্কে কিছু বলেনি।”

    “হয়তো শুধু চা বিক্রি করে এমন কোন দোকান?”

    “সরি, আর কিছু মনে পড়ছে না।“

    “সমস্যা নেই,” বলে আবারো হাসলো কুসানাগি। “অনেক সাহায্য করেছেন ইতোমধ্যে। মিসেস মাশিবাকেও এ সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলাম, কিন্তু তিনি কিছু জানাতে পারেননি। হয়তো আপনার সাথে কথা বলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন মি. মাশিবা।”

    ডিটেক্টিভের এহেন মন্তব্যে বিরক্ত হলো হিরোমি। লোকটার আক্কেল-জ্ঞান আসলেও কম। হয়তো ওকে সান্ত্বনা দেয়ার লক্ষ্যেই কথাটা বলেছে সে, কিন্তু গর্দভ না হলে কেউ এভাবে কথা বলে না।

    “আমি কি এখন উঠতে পারি?” জিজ্ঞেস করল হিরোমি।

    “নিশ্চয়ই। আপনার সময়ের জন্যে ধন্যবাদ। অন্য কিছু মনে পড়লে দয়া করে আমাকে ফোন করে জানাবেন।”

    “ঠিক আছে,” হিরোমি বলল।

    “আপনাকে বাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিচ্ছি।“

    “সেটার দরকার হবে না। আমি একাই চলে যেতে পারবো।”

    উঠে দাঁড়িয়ে হনহন করে দরজার দিকে হাঁটা দিল হিরোমি, বিলের দিকে ফিরেও তাকালো না।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleদ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো
    Next Article রিং – কোজি সুজুকি

    Related Articles

    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য রেড ফিঙ্গার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য মিরাকলস অব দ্য নামিয়া জেনারেল স্টোর – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    নিউকামার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য নেম অব দ্য গেম ইজ অ্যা কিডন্যাপিং – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.