Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – কিয়েগো হিগাশিনো

    কেইগো হিগাশিনো এক পাতা গল্প340 Mins Read0

    স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – ১৪

    অধ্যায় ১৪

    কেতলিতে পানি ফুটছে টগবগিয়ে। গোমড়া মুখে ঢাকনাটা তুলে ভেতরের পানিটুকু সিঙ্কে ঢেলে দিল ইউকাওয়া। এরপর চশমা খুলে ভেতরে উঁকি দিল সাবধানে। চশমা খুলেছে যাতে কাচে বাষ্প জমে ঘোলা না হয়ে যায়।

    “কি অবস্থা?” জিজ্ঞেস করল উতসুমি।

    কেতলিটা আবারো বার্নারে চাপিয়ে ধীরে ধীরে মাথা ঝাঁকালো ইউকাওয়া। “কোন অবস্থা নেই। গতবারের মতনই।”

    “জেলাটিনগুলো?”

    “আছে এখনও।”

    একটা ফোল্ডিং চেয়ার টেনে নিয়ে বসে পড়লো পদার্থবিদ। মাথার পেছনে হাত দিয়ে সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো। সাদা রঙের ল্যাব কোটের বদলে একটা ছোট হাতার টিশার্ট পরনে এখন তার। হাতের পেটানো পেশিগুলো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

    উতসুমি আজকে ল্যাবরেটরিতে এসেছে কফির পানিতে বিষ মেশানোর সম্ভাব্য উপায় যাচাই করে দেখতে। জেলাটিনের সাহায্যে বিষ মেশানো হতে পারে এটা আগেই বলেছিল ইউকাওয়া। কিন্তু এখন পর্যন্ত সন্তোষজনক ফলাফল পায়নি। ইউকাওয়ার পদ্ধতি অনুযায়ী বিষ পানিতে মেশার আগে দু’বার স্বাভাবিকভাবে ব্যবহার করা যাবে কেতলিটা। সেজন্যে জেলাটিনের পরতটা একটু পুরু হতে হবে। কার্যত দেখা যাচ্ছে, পরত পুরু করলে জেলাটিন সম্পূর্ণরূপে গলছে না। পুলিশের ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টের তদস্তেও জেলাটিনের কোন অস্তিত্ব মেলেনি।

    “জেলাটিন ব্যবহার করা হয়নি বোধহয়,” এক হাত দিয়ে গাল চুলকে বলল ইউকাওয়া।

    “ফরেনসিকের লোকেরাও একই কথা বলেছে,” উতসুমি বলল। “তাদের মতে, জেলাটিন যদি সম্পূর্ণরূপে গলেও যায়, তবুও অতি ক্ষুদ্র পরিমাণে হলেও হদিস মিলবেই। তাছাড়া কফির গুঁড়োতেও কোন জেলাটিনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে আপনার এই থিওরিটা পছন্দ হয়েছে তাদের। জেলাটিনের মত অন্যান্য পদার্থও ব্যবহার করে দেখেছে।”

    “কাজ হয়েছে?”

    “নাহ, কোনটাতেই কাজ হয়নি।”

    “তাহলে এই উপায় বাদ দিতে হবে আমাদের,” বলে উরুতে চাপড় বসিয়ে উঠে দাঁড়ালো ইউকাওয়া।

    “দারুণ একটা উপায় বাতলেছিলেন,” উতসুমির কণ্ঠে প্রশংসা।

    “যা-ই বলো না কেন, কুসানাগির হাসি কিছুক্ষণের জন্যে হলেও বন্ধ হয়েছিল,” বলে দেয়ালে ঝোলানো ল্যাব কোট গায়ে চাপিয়ে নিল পদার্থবিদ। “এখন কি নিয়ে ব্যস্ত সে?”

    “মি. মাশিবার পুরনো সম্পর্কগুলোর ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছে।”

    “নিজের চিন্তাধারাতেই অটল আছে তাহলে। অবশ্য এটা ছাড়া তদন্তের অন্য কোন সম্ভাব্য পথ খোলাও নেই।”

    “আপনারও কি ধারণা, মি. মাশিবা তার কোন প্রাক্তন প্রেমিকার হাতে খুন হয়েছেন?”

    “প্রেমিকা হোক আর যে-ই হোক, মিস ওয়াকাইয়ামার রবিবার সকালে মাশিবাদের ফ্ল্যাট থেকে বের হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে সে। এরপর সন্তর্পণে ভেতরে ঢুকে কেতলির পানিতে বিষ মিশিয়েছে।”

    “তাহলে আপনি হাল ছেড়ে দিচ্ছেন?”

    “সেটা বলাটা ঠিক হবে না বোধহয়। বরং বলতে পারেন যে একটা একটা করে খুনের সম্ভাব্য পথ বাদ দিচ্ছি। কুসানাগি হয়তো আসলেও মিসেস মাশিবার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে, তার মানে এটা নয় যে, চোখের সামনে থাকা তথ্যগুলো দেখতে পাচ্ছে না। যে পথে হাঁটছে এখন সে, এর পেছনে যথেষ্ট সময় দিয়েছে, বোঝাই যাচ্ছে। যে কোন ভালো তদন্তকারী এই কাজই করতো।” পা ভাঁজ করে চেয়ারে বসলো ইউকাওয়া। “বিষ হিসেবে তো আর্সেনাস এসিড ব্যবহার করে হয়েছে? বিক্রির রেকর্ড দেখে খুনিকে ধরা যায় না?”

    “খোঁজখবর নিচ্ছে আমাদের লোকজন, কিন্তু খুব একটা লাভ হচ্ছে না। কীটনাশক হিসেবে আর্সেনাস এসিডের উৎপাদন এবং বিক্রি পঞ্চাশ বছর আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। তবে এখনও কিছু জায়গায় ব্যবহার হয়।”

    “যেমন?”

    নোটপ্যাড খুলল উতসুমি। “অনেকেই লুকিয়ে পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণের জন্যে এখনও ব্যবহার করে আর্সেনাস এসিডের গুঁড়ো। এরপর কাঠের আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহার করা হয়, যেন পচন না ধরে। দাঁতের চিকিৎসাতে এবং সেমিকন্ডাকটর তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়।”

    “দাঁতের চিকিৎসা! এটা তো জানতাম না।

    “দাঁতের গোড়ায় থাক স্নায়ুগুলো কিছুক্ষণের জন্যে অবশ করার হয় আর্সেনাস এসিড পেস্ট দিয়ে। এই পেস্ট পানিতে গোলানোর পর প্রায় চল্লিশ শতাংশ পরিমাণে অবশেষ থেকে যায়। এই কেসে আর্সেনাস এসিড পেস্ট ব্যবহার করা হয়নি, এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।”

    “তাহলে কিভাবে ব্যবহার করা হয়েছে?”

    “একজন এক্সটার্মিনেটর…মানে, পোকামাকড় দমন করে যে, খুব সহজেই প্রয়োজনীয় পরিমাণে আর্সেনাস এসিড জোগাড় করতে পারবে। উইপোকা দমনের কাজে ব্যবহৃত হয় আর্সেনাস এসিড। কিন্তু সেক্ষেত্রে কেনার সময় আপনার নাম এবং ঠিকানা লিখে রাখা হবে। সেই তালিকাটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছ এখন। অবশ্য বিক্রেতাদের কেবল গত পাঁচ বছরের রেকর্ড রাখতে হয়। খুনি যদি এর আগে বিষটুকু কিনে থাকে তাহলে আমাদের ভাগ্য খারাপ বলতে হবে। আর বেআইনীভাবে কিনলে তো কথাই নেই।”

    “আমার মনে হয় না খুনি এসব ক্ষেত্রে কোন প্রকার ঝুঁকি নেবে। ডিটেক্টিভ কুসানাগিকেই সাহায্য করা উচিত আপনার।”

    “আমার ধারণা খুনি কেতলিতে সরাসরি বিষ মেশায়নি।”

    এরকম মনে হওয়ার কারণ?” এক ভ্রু উঁচিয়ে জিজ্ঞেস করল ইউকাওয়া।

    জবাবে কিছু বলল না উতসুমি।

    “কারণ এভাবে হলে মিসেস মাশিবার পক্ষে কাজটা করা সম্ভব নয়, এজন্যে? তাকে সন্দেহ করে কোন ভুল করছেন না আপনি, কিন্তু এই একটা সম্ভাবনাকেই আঁকড়ে ধরে বসে থাকলে ভুল করবেন।”

    “কোনকিছু আঁকড়ে ধরে বসে নেই আমি। কিন্তু সেদিন মাশিবাদের বাসায় অন্য কারো প্রবেশের কোন আলামতই নেই। ধরলাম ডিটেক্টিভ কুসানাগির ধারণা সত্য। প্রাক্তন প্রেমিকাদের কেউ এসেছিল বাসায়। আপনার কি মনে হয় না, মি. মাশিবা তাকে অন্তত এক কাপ কফি হলেও খাওয়াবে?”

    “সবাই যে কফি বানিয়ে খাওয়াবার প্রস্তাব দেবে, এমনটা নয়। বিশেষ করে যদি আগত ব্যক্তি অনাহূত কেউ হয়ে থাকে।”

    “তাহলে সেই অনাহূত ব্যক্তির পক্ষে কিভাবে কেতলির পানিতে বিষ মেশানো সম্ভব? মি. মাশিবার তো টের পাবার কথা।”

    “যদি তিনি বাথরুমে যান কিছুক্ষণের জন্যে, তখন সুযোগ নেয়া যায়। লম্বা সময়ের জন্যে থাকলে একটা না একটা উপায় পেয়ে যাবার কথা।“

    “পরিকল্পনাটা যুতসই লাগছে না। ধরুন মি. মাশিবা এক মুহূর্তের জন্যেও কোথাও গেল না, তখন?”

    “বিকল্প কিছু ভেবে রেখেছিল হয়তো। কিংবা এটাও হতে পারে যে সুযোগ না মিললে পুরো পরিকল্পনাটাই বাতিল করে দিত খুনি। সেক্ষেত্রে কোন ঝুঁকিই থাকবে না।“

    “প্রফেসর ইউকাওয়া,” পদার্থবিদের চোখের দিকে তাকিয়ে বলল উতসুমি। “আপনি কার পক্ষে?”

    “আমি কিন্তু কারো পক্ষেই নই। সব তথ্য আর আলামত পর্যালোচনা করে সত্যটা পর্যন্ত পৌঁছুতে চাই, ব্যস। আমার নিজের এক্সপেরিমেন্টগুলোও এভাবেই পরিচালনা করি। সত্যি কথা বলতে, আপনার যুক্তিগুলো এ মুহূর্তে যথার্থ মনে হচ্ছে না।”

    ঠোঁট কামড়ে ধরলো উতসুমি। “আমি আসলেও মিসেস মাশিবাকে সন্দেহ করি। তিনি যদি নিজ হাতে কাজটা না-ও করে থাকেন, তবুও কোন না কোনভাবে যুক্ত নিশ্চয়ই। আমাকে গোঁয়ার ঠাউরাতে পারেন, কিন্তু আমি এটা বিশ্বাস করি।”

    “একটু অবাক হলাম,” মৃদু হেসে বলল ইউকাওয়া। “তাকে যেন কেন সন্দেহ করেন আপনি? শ্যাম্পেইনের গ্লাসগুলোর জন্যে? ওগুলো কাপবোর্ডে তুলে রাখা যাওয়া উচিত ছিল তার, তাই তো?

    “আরো কিছু কারণ আছে। খুনের রাতে আমাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে তার ফোনে ভয়েস মেসেজ পাঠানো হয়। যে অফিসার তাকে ফোন দিয়েছিল সেদিন, তার সাথে কথা হয়েছে আমার। মেসেজে বলা হয়েছিল যে তার স্বামীর ব্যাপারে জরুরি খবর আছে, যত দ্রুত সম্ভব যেন যোগাযোগ করেন তিনি। রাত বারোটার দিকে কল ব্যাক করেন মিসেস মাশিবা। তাকে কেসের যাবতীয় তথ্য খুলে বলেন কর্তব্যরত অফিসার। তবে খুনের সম্ভাবনার ব্যাপারটুকু এড়িয়ে যান।

    “আচ্ছা। আর কিছু?”

    “পরদিন সকালে প্রথম ফ্লাইটেই টোকিও ফিরে আসেন মিসেস মাশিবা। ডিটেক্টিভ কুসানাগি এবং আমি তাকে পিকআপ করি এয়ারপোর্ট থেকে। গাড়িতেই হিরোমি ওয়াকাইয়ামাকে ফোন দেন তিনি। বলেন যে ‘তোমার ওপর দিয়ে যে কী গেছে সেটা ভেবেই খারাপ লাগছে আমার’, উতসুমি বলল। “এই ব্যাপারটা অদ্ভুত ঠেকেছে আমার কাছে।“

    “তোমার ওপর দিয়ে যে কী গেছে সেটা ভেবেই খারাপ লাগছে আমার,,” বিড়বিড় করে বলল ইউকাওয়া। হাঁটুর ওপর ধীরে ধীরে আঙুলগুলো ওঠানামা করছে তার। “শুনে তো মনে হচ্ছে ঘটনা শোনার পর গাড়ি থেকেই প্রথমবারের মত মিস ওয়াকাইয়ামার সাথে যোগাযোগ করেন তিনি।”

    “ঠিক এই কথাটাই ভেবেছিলাম আমিও,” একটা হাসি ছড়িয়ে পড়লো উতসুমির চেহারায়। “ হাজার হোক, মিসেস মাশিবা বাসার চাবি হিরোমি ওয়াকাইয়ামার জিম্মাতেই রেখে গিয়েছিলেন। সুতরাং কোন গণ্ডগোল হলে প্রথমেই তাকে ফোন দেয়ার কথা। এটা মাথায় রাখতে হবে যে সম্পর্কটার ব্যাপারে আগে থেকেই সন্দেহ ছিল তার। আবার দেখুন, ইকাইদেরও কিন্তু ফোন করেননি তিনি।“

    “এসব থেকে আপনি কি সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, মিস উতসুমি?”

    “তার আসলে হিরোমি কিংবা ইকাইদের ফোন করার কোন প্রয়োজনই ছিল না। মি. মাশিবা কিভাবে মারা গেছেন তা তিনি আগে থেকেই জানতেন। অযথা ফোন করার কারণ কি?”

    নিচের ঠোঁটে চিমটি কাটলো ইউকাওয়া। “কথাগুলো অন্য কাউকে বলেছেন?”

    “চিফ ইন্সপেক্টর মামিয়াকে বলেছি।“

    “কিন্তু কুসানাগিকে নয়।“

    “ডিটেক্টিভ কুসানাগি বলতেন যে আমি আকাশ কুসুম কল্পনা করছি।”

    উঠে সিঙ্কের দিকে হেঁটে গেল ইউকাওয়া। “এভাবে চিন্তা করলে বিপদে পড়বেন। আমি কখনো ভাবিনি যে এই কথাটা বলবো-কিন্তু ডিটেক্টিভ কুসানাগির দক্ষতা নিয়ে কোনদিনই প্রশ্ন ছিল না আমার। ধরলাম এই কেসের ক্ষেত্রে প্রধান সন্দেহভাজনের প্রতি কিছুটা দূর্বলতা কাজ করছে তার। আপনি আমাকে যে কথাগুলো বললেন, সেগুলোর পাল্টা যুক্তি দেখাতে পারে সে। কিন্তু কখনোই আপনার মতামতকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করবে না। বরং কথাগুলো নিয়ে ভাববে। হয়তো সে যে সিদ্ধান্তে পৌঁছুবে তা আপনার পছন্দ হবে না, কিন্তু আলামতকে পায়ে ঠেলে দেয়ার মত লোক নয় ও।”

    “তার প্রতি আপনার অগাধ বিশ্বাস দেখছি।“

    “এই বিশ্বাসটুকু না থাকলে এতগুলো কেসে তাকে সাহায্য করতাম না কিন্তু,” হেসে বলল ইউকাওয়া। কফি মেকারে কফির গুঁড়ো চাললো সে।

    “আমি যা যা বললাম সেগুলো সম্পর্কে আপনার কি ধারণা?” উতসুমি জিজ্ঞেস করল।

    “আপনার কথায় যুক্তি আছে। স্বামী মারা গেছে শুনলে যে কেউ ফোন দিত পরিচিতজনদের। এক্ষেত্রে মিসেস মাশিবা যে কাজটা করেননি, তা আসলেও অদ্ভুত।”

    “যাক, আপনি অন্তত আমার সাথে একমত প্রকাশ করছেন।“

    “আমি কিন্তু একজন বিজ্ঞানী,” ইউকাওয়া বলল। “যদি পর্যাপ্ত যুক্তি প্রমাণ আমার সামনে উপস্থাপন করতে পারেন তাহলে আপনার থিওরি অবশ্যই মেনে নেব,” বলে কফি মেকারে পানি ঢাললো ইউকাওয়া। “মিনারেল ওয়াটার দিয়ে কফি বানালে কি স্বাদ আসলেও বদলে যায়?”

    “আসলে যারা মিনারেল ওয়াটার ব্যবহার করে তারা স্বাদের তুলনায় স্বাস্থ্য নিয়েই বেশি সচেতন। তবে মিসেস মাশিবা কিন্তু স্বামীর অগোচরে ট্যাপের পানিই ব্যবহার করতেন। আপনাকে বোধহয় আগেও বলেছি, মিস ওয়াকাইয়ামাও রবিবার সকালে কফি বানানোর সময় ট্যাপের পানি ব্যবহার করেছিলেন।”

    “তাহলে একমাত্র ভিক্টিমই নিয়মিত মিনারেল ওয়াটার ব্যবহার করতো।”

    “ সেজন্যেই আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম কোন একটা বোতলের পানিতে বিষ মেশানো হয়েছিল,” উতসুমি বলল।

    “কিন্তু ল্যাব পরীক্ষায় কোন বোতলে বিষের অস্তিত্ব মেলেনি।”

    “অস্তিত্ব মেলেনি, তার অর্থ কিন্তু এটা নয় যে বোতলের পানিতে বিষ মেশানোর সম্ভাবনা শূন্য। অনেকে প্লাস্টিকের বোতল রিসাইকেল করার আগে পানি দিয়ে ধুয়ে নেয়। এটা একটা কারণ হতে পারে বিষের অস্তিত্ব না পাওয়া যাওয়ার।“

    “জ্যুস বা আইস টি’র বোতল ধোয়ার কথা। কিন্তু পানির বোতল?”

    “হয়তো অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল।”

    “হতে পারে। সেক্ষেত্রে বলতে হবে আমাদের খুনির ভাগ্য খুব ভালো। ভিক্টিমই তার হয়ে সব আলামত মুছে দিয়েছে।”

    “এভাবে ভাবলে কিন্তু মিসেস মাশিবাকেই প্রধান সন্দেহভাজন মনে হবে,” উতসুমি বলল। “আশা করি এরকমভাবে চিন্তা করাটা আপনার কাছে যুক্তিহীন মনে হচ্ছে না।”

    শুকনো হাসি ফুটলো ইউকাওয়ার ঠোঁটে। “নাহ। আসল থিওরিটা প্রমাণিত হবার আগে অনেক প্রস্তাবনাই যুক্তিযুক্ত মনে হয় পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে। আচ্ছা একটা কথা বলুন, মিসেস মাশিবাকেই যদি খুনি ধরে নেই আমরা, তাহলে কি তদন্তে কোন লাভ হবে?”

    “মিসেস মাশিবাই আমাদের বলেছেন যে তার স্বামী কেবল বোতলজাত পানিই ব্যবহার করেন। ডিটেক্টিভ কুসানাগির মতে তিনি যদি খুনটা করেই থাকেন, তাহলে এই কথা কেন আমাদের জানাবেন? কিন্তু আমার ধারণা একদম উল্টোটা। মিসেস মাশিবা আগেই ধরে নিয়েছিলেন যে আমরা এক সময় বোতলে বিষের অস্তিত্ব খুঁজে পাবো, তাই সন্দেহ এড়ানোর জন্যে তথ্যটা নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিষের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এই ব্যাপারটাই আমাকে কিছুটা হলেও বিভ্রান্ত করে তুলেছে। তিনি যদি কেতলিতে বিষ মিশিয়ে খুনটা করে থাকেন, তাহলে পুলিশের লোকদের এটা কেন জানালেন যে মি. মাশিবা কেবল বোতলজাত পানি ব্যবহার করেন? বেশ কিছুদিন ভেবেছি আমি। হয়তো খালি বোতলগুলোর কোনটাতে বিষের অস্তিত্ব পাওয়া যেতে পারে ভেবেছিলেন?”

    গম্ভীর ভঙ্গিতে কফিমেকারের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ইউকাওয়া। “আপনার ধারণা তিনি আশা করেননি যে তার স্বামী বোতলগুলো ধুয়ে ফেলবে?” জিজ্ঞেস করল সে।

    “তার জায়গায় আমি থাকলে আশা করতাম না। ধরেই নিতাম ক্রাইম সিনের কোন একটা বোতলে বিষের অস্তিত্ব মিলবে। কিন্তু মি. মাশিবা কফি বানানোর সময় পুরো বোতল পানি ব্যবহার করেছেন, পানি ফোটার সময়টুকুতে বোতলটা ধুয়েও ফেলেছেন। মিসেস মাশিবা যেহেতু এমনটা আশা করেননি, তাই তিনি আগ বাড়িয়ে পুলিশকে তথ্যটা দিয়েছিলেন। এভাবে ভাবলে কিন্তু সব মিলে যায়।”

    মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো ইউকাওয়া। “আসলেও মিলে যায়।”

    “এই থিওরিটায় অনেক সমস্যা আছে জানি, কিন্তু যুক্তিগুলো একদম ফেলনা নয়।”

    “জি। তবে, এই থিওরিটা প্রমাণ করা যাবে কি না সন্দেহ।”

    “এটাই মূল সমস্যা,” হতাশ কণ্ঠে বলল উতসুমি।

    কফিমেকারের সুইচ বন্ধ করে দু’টা কাপে কফি ঢাললো ইউকাওয়া। একটা বাড়িয়ে দিল জুনিয়র ডিটেক্টিভের দিকে।

    “আপনারা কোন ষড়যন্ত্র করছেন না তো?” হঠাৎ বলে উঠল পদার্থবিদ।

    “জি?” অবাক কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল উতসুমি।

    “আপনি আর কুসানাগি। আপনারা দু’জন কৌশলে আমাকে এই কেসের সাথে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছেন না তো?”

    “এরকমটা ভাবার কারণ?”

    “কারণ আপনাদের এই যুক্তির লড়াই কেসটা সম্পর্কে আমার কৌতূহল বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণে। আমি কিন্তু আসলেও কুসানাগিকে বলেছিলাম, আর কোন পুলিশি কেসে সহযোগিতা করবো না। তাছাড়া…” বলে আয়েশ করে কাপে চুমুক দিল ইউকাওয়া। আবারো হাসি ফুটেছে তার মুখে। “কুসানাগি প্রেমে পড়েছে! এই কেসটা যেভাবেই হোক সমাধান করতে হবে।”

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleদ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো
    Next Article রিং – কোজি সুজুকি

    Related Articles

    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য রেড ফিঙ্গার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য মিরাকলস অব দ্য নামিয়া জেনারেল স্টোর – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    নিউকামার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য নেম অব দ্য গেম ইজ অ্যা কিডন্যাপিং – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.