Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – কিয়েগো হিগাশিনো

    কেইগো হিগাশিনো এক পাতা গল্প340 Mins Read0

    স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – ২৪

    অধ্যায় ২৪

    “এবারে হিরোশিমায় থামবো আমরা…”

    ঘোষণাটা শোনার পরপরই এক কানে গুঁজে রাখা এয়ারফোনটা খুলে ফেলল উতসুমি। আইপডের সাথে পেঁচিয়ে চালান করে দিল ট্রাভেল ব্যাগের সামনের পকেটে। গতি কমতে কমতে একসময় থেমে গেল ট্রেনটা।

    প্লাটফর্মে নেমে নোটবুক বের করে জুঞ্জি সুকুইয়ের ঠিকানাটা দেখে নিল একবার। পূর্ব হিরোশিমার তাকাইয়াকো আবাসিক এলাকায় থাকে লেখিকার পরিবার। সবচেয়ে কাছের স্টেশনটার নাম নিশিতাকায়া। আসার আগে সুকুইয়ের মা’কে ফোন দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে। ফোনে কিছুটা বিচলিত মনে হচ্ছিল তার কন্ঠস্বর। স্বাভাবিক, মেয়ের মৃত্যুর এতদিন বাদে সেটা নিয়ে পুলিশ আগ্রহ দেখালে যে কেউ উদ্বিগ্ন হয়ে উঠবে।

    স্টেশনের একটা কিয়স্ক থেকে মিনারেল ওয়াটারের বোতল কিনে লোকাল ট্রেনে উঠে পড়লো উতসুমি। সানিয়ো মেইন লাইন থেকে নয়টা স্টেশন পড়ে নিশিতাকায়া স্টেশন। প্রায় চল্লিশ মিনিটের মত সময় লাগবে পৌঁছতে, তাই আবারো আইপড বের করে কানে এয়ারফোন গুজলো সে। মাসাহারু ফুকুইয়ামার একটা অ্যালবাম শুনছে আজকে। চুমুক দিতে গিয়ে দেখলো মিনারেল ওয়াটারের বোতলটার গায়ে লেখা-সফট ওয়াটার, অর্থাৎ ক্ষারীয় পদার্থের পরিমাণ কম। ইউকাওয়া তাকে বলেছিল এই পানি দিয়ে কোন ধরণের রান্না ভালো হবে, ভুলে গেছে অবশ্য।

    পানির কথা ভাবতে ভাবতে ফিলট্রেশন সিস্টেম নিয়ে ইউকাওয়ার আইডিয়াটার কথা মনে পড়ে গেল তার। কি এমন কৌশল যে জানানো যাবে না কাউকে?

    তবে কৌশল যেটাই হোক, ইউকাওয়ার মতে সেটা কাগজ কলমে সম্ভব হলেও, বাস্তবে প্রয়োগ করা দুরূহ। এক পর্যায়ে প্রফেসর তাকে অবাক করে বলে ওঠে ‘অসম্ভব!”

    তার চেহারা দেখে উতসুমি যতদুর ধারণা করেছে, কৌশলটা বোধহয় আসলেও কঠিন এবং বুদ্ধিদীপ্ত কিছু। তবুও সেটাই অবলম্বন করা হয়েছে।

    কিভাবে বিষ মিশলো কফিতে তা নিয়ে আর কোন তথ্য না দিলেও উতসুমিকে কিছু কাজের নির্দেশ দেয় ইউকাওয়া। প্রথমটা হচ্ছে ফিলট্রেশন সিস্টেমটা পুনরায় টেস্ট করা। খুব সামান্য পরিমাণ বিষের অস্তিত্ব থাকলেও যাতে টেস্টে ধরা পড়ে সেজন্যে গোটা সিস্টেমটাই স্প্রিং এইটে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

    স্প্রিং-এইট থেকে এখনও কোন ফলাফল না আসলেও কিছু ব্যাপার জানতে পেরেছে ওরা। যেমন ফরেনসিক থেকে বলা হয়েছে যে ফিলট্রেশন সিস্টেমটায় কোন ধরণের অসঙ্গতি খুঁজে পাওয়া যায়নি। গত এক বছরের ব্যবহারে যে পরিমাণ ময়লা জমা হওয়ার কথা, সেটুকুই পাওয়া গেছে। মধ্যবর্তী সময়ে কোন ধরণের পরিবর্তনও করা হয়নি ভেতরের কলকব্জায়।

    ফোনে যখন ইউকাওয়াকে কথাগুলো জানায় উতসুমি, জবাবে শুধু “ঠিক আছে, ধন্যবাদ” বলে ফোন কেটে দেয় সে।

    উতসুমি অবশ্য ভেবেছিল এবারে কিছুটা হলেও মুখ খুলবে পদার্থবিদ, কিন্তু বিধি বাম। তবে তাকে সবচেয়ে বেশি খোঁচাচ্ছে অন্য একটা ব্যাপার। কুসানাগিকে ইয়োশিতাকার অতীত সম্পর্কে খোঁজ করতে বলেছে ইউকাওয়া। আর্সেনাস এসিড পানে জুঞ্জি সুকুইয়ের আত্মহত্যার ঘটনাটা মনোযোগ আকর্ষণ করেছে তার।

    যদি ইউকাওয়া আসলেও আয়ানে মাশিবাকে সন্দেহ করে থাকে, তাহলে অতীত সম্পর্কে খোঁজ নিতে বলল কেন? তার স্বামী মারা যাবার আশপাশের সময়গুলোতে যা ঘটেছে তা নিয়ে তদন্ত করলেই তো চলার কথা। যদি এমনটাও হয়ে থাকে যে, এই হত্যাকাণ্ডের বীজ রোপিত হয়েছিল অনেক আগে, তবুও ইউকাওয়ার পুরনো ইতিহাস নিয়ে আগ্রহী হবার কথা না।

    কিছুক্ষণ পর মাসাহারু ফুকুইয়ামার গান শেষ হয়ে অন্য এক শিল্পীর গান শুরু হলো। গানটার নাম মনে করার চেষ্টা করছে সে এমন সময় ঘোষণা এলো যে নিশিতাকায়া স্টেশনে পৌঁছে গেছে ট্রেন।

    সুকুইদের দোতলা বাড়িটায় হেঁটে পৌঁছুতে পাঁচ মিনিট সময় লাগলো উতসুমির। আবাসিক এলাকাটার উল্টো পাশে বিশাল একটা পাহাড় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। গত কয়েক দশকে এখানকার সকল পরিবর্তনের সাক্ষী ওটা। বয়স্ক একজন মহিলার থাকার পক্ষে বাসাটা বেশিই বড়। জুঞ্জি সুকুইয়ের বাবা মারা গেছেন বেশ কিছু সময় আগে এবং বিয়ের পর থেকে

    তার বড় ভাই ডাউনটাউন হিরোশিমায় একটা অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন স্ত্রী সন্তানসহ।

    ইন্টারকম বাটনটায় চাপ দেয়ার কিছুক্ষণ পর পরিচিত একটা কণ্ঠস্বর শুনতে পেলো সে।

    ইয়োকো সুকুইয়ের বয়স ষাটের কিছুটা বেশি। ছিপছিপে গড়ন, চুল ধূসর। উতসুমি একা এসেছে দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল সে। নিশ্চয়ই ভেবেছিল গম্ভীর কোন পুরুষ ডিটেক্টিভ আসবে উতসুমির সাথে।

    বাড়িটাকে বাইরের দিক থেকে দেখে পশ্চিমা ধাঁচের মনে হলেও ভেতরটা জাপানি ঐতিহ্যে তৈরি। মিসেস সুকুই একটা তাতামি ম্যাট রুমে নিয়ে বসালো উতসুমিকে। মাঝখানে নকশা করা কাঠের টেবিল। একপাশে প্ৰাৰ্থনা বেদি।

    “অনেক দূর থেকে এসেছেন। ভীষণ ক্লান্ত বোধ করছেন নিশ্চয়ই, “ ইয়োকো বলল একটা চায়ের কাপে গরম পানি ঢেলে।

    “না, খুব বেশি ক্লান্ত হইনি,” উতসুমি বলল। “আপনাকে এভাবে বিরক্ত করতে আসার জন্যে দুঃখিত। তাও এরকম একটা বিষয়ে।”

    গরম চায়ের কাপ ওর দিকে এগিয়ে দিল মিসেস সুকুই।

    “আপনার মেয়ে যখন আত্মহত্যা করেন, পুলিশের লোকেরা সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে কিছুই জানাতে পারেনি। এখনও কি একই অবস্থা?”

    মলিন একটা হাসি ফুটলো ইয়োকোর ঠোঁটে। “তদন্ত করার মত খুব বেশি কিছু ছিলও না আসলে। টোকিওতে যাদের যাদের চিনতো ও, তারা কেউই কিছু বলতে পারেনি। তবে আমার ধারণা একাকীত্ব সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যা করেছে সে।”

    “একাকীত্ব?”

    “সবসময় আঁকাআকি নিয়ে ব্যস্ত থাকতো আমার মেয়েটা। টোকিওতে পাড়ি জমিয়েছিল এই লাইনে ক্যারিয়ার করবে বলেই। বাচ্চাদের ছবির বই বেরিয়েছে ওরা কয়েকটা জানেন বোধহয়। কিন্তু ছোট থেকেই একদম চুপচাপ ছিল সে, বাসাতেও। ওখানে ওরকম অচেনা একটা শহরে একা একা থাকা! ক্যারিয়ারেরও যে খুব একটা উন্নতি হয়েছিল তা বলা যাবে না। সব কিছু মিলে ভীষণ হতাশায় ভোগা শুরু করে এক সময়। বয়সও কম হয়নি, চৌত্রিশ। ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা এই বয়সেই তো মাথায় চাপে। সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করার মত কেউ যদি থাকতো…”

    তাহলে মিসেস সুকুইও মেয়ের মৃত্যুর ব্যাপারে কিছু জানেন না। “আত্মহত্যার কিছুদিন আগে এখান থেকে ঘুরে গিয়েছিলেন তিনি, তাই না?” উতসুমি জিজ্ঞেস করল।

    “হ্যাঁ, ওকে দেখে মনে হচ্ছিল ইট কাঠের শহরটায় নিজেকে হারিয়ে ফেলেছে যেন। কিন্তু তাই বলে যে এরকম কিছু একটা করে বসবে… ভাবিনি,” কান্না চাপতে কষ্ট হচ্ছে বয়স্ক মহিলার।

    “তখন কি স্বাভাবিকভাবেই আপনার সাথে কথা বলেছিলেন তিনি?”

    “হ্যাঁ, বলেছিল যে ভালোই দিন যাচ্ছে। কিন্তু মা’র কাছে কি আর মিথ্যে বলা যায়?”

    কিছুদিনের মধ্যে আত্মহত্যা করবে এই সিদ্ধান্ত নেয়ার পর কেউ তার মা’র সামনে এসে কিভাবে কথা বলবে তা ভেবে পেল না উতসুমি। সে হলে তো তার চোখের দিকেই তাকাতে পারতো না। “ডিটেক্টিভ?” ইয়োকো মুখ তুলে বলল।

    “এখন হঠাৎ ওর আত্মহত্যা নিয়ে খোঁজ করছেন কেন আপনারা?’

    “ভিন্ন একটা কেসের তদন্ত করতে গিয়ে তার নামটা জানতে পারি আমরা। হয়তো মিস সুকুইয়ের মৃত্যুর সাথে এই কেসটার সম্পর্ক আছে। তবে কিছুই নিশ্চিত নয় এখন পর্যন্ত, আমরা ধাঁধাঁর টুকরোগুলোকে জোড়া দেয়ার চেষ্টা করছি। আরো কিছু জানলে আপনাকে বলতাম নিশ্চয়ই।”

    “ওহ,” দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল ইয়োকো।

    “আমরা আসলে তিনি যে বিষটা ব্যবহার করে আত্মহত্যা করেছিলেন সেটা নিয়ে বেশি আগ্রহী।”

    “বিষ?” সোজা হয়ে বসলো ইয়োকো।

    “হ্যাঁ, আপনার মেয়ে তো বিষপান করে আত্মহত্যা করেছিলেন। মনে আছে বিষের ধরণটা?”

    এক মুহূর্তের জন্যে ইয়োকোকে দেখে মনে হলো যে বুঝে উঠতে পারছে না কি বলবে। আসলেও ভুলে গেছেন না কি?

    “আর্সেনাস এসিড,” উতসুমি সাহায্য করার জন্যে বলল তাকে। “কিছুদিন আগে আমার এক সহকর্মী ফোন করেন এখানে, ডিটেক্টিভ কুসানাগি। তাকে আপনি বলেন যে অতিরিক্ত ঘুমের ঔষধ খাওয়ায় মৃত্যু হয় আপনার মেয়ের। কিন্তু তার কেস ফাইলে বিষের কথা লেখা। আপনি কি ব্যাপারটা জানতেন না?”

    “আসলে…ইয়ে…মানে,” আবারো কথার খেই হারিয়ে ফেলল ইয়োকো। “বিষের নামটা কি আসলেও গুরুত্বপূর্ণ?” কিছুক্ষণ পর দ্বিধান্বিত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল সে। “মানে, আমি যে ঘুমের ঔষধের কথা বলেছিলাম, এতে কি কোন সমস্যা হবে?”

    অদ্ভুত, মনে মনে বলল উতসুমি। “তার মানে আপনি জানতেন, ঘুমের ঔষধের কারণে মৃত্যু হয়নি মিস সুকুইয়ের? তা সত্ত্বেও ওটা বলেছিলেন?”

    “আমি দুঃখিত,” প্রায় ফিসফিসিয়ে বলল ইয়োকো। চেহারায় বেদনার ছাপ স্পষ্ট। “আমি ভেবেছিলাম ওর মৃত্যুর পর এসবে কিছু যায় আসবে না।”

    “আর্সেনাস এসিডের ব্যাপারে না বলতে চাওয়ার কি বিশেষ কোন কারণ আছে?”

    চুপ করে থাকলো ইয়োকো।

    “মিসেস সুকুই?”

    “আমি দুঃখিত,” আবারো বলল ইয়োকো। তাতামিতে দুই হাত রেখে মাথা নিচু করল সে। “সত্যিই দুঃখিত। আসলে কথাটা বলতে কষ্ট হয় আমার…”

    এরকম প্রতিক্রিয়া আশা করেনি উতসুমি। “আপনার ক্ষমা চাওয়ার কিছু নেই। উঠুন, প্লিজ। শুধু এটুকু বলুন যে কেন ঘুমের ঔষধের কথা বলেছিলেন? বিশেষ কোন কারণ আছে কি?”

    ধীরে ধীরে মাথা উঁচু করল ইয়োকো। “আর্সেনিক আমাদের বাসা থেকেই নিয়েছিল ও।

    বিষম খাবার জোগাড় হলো উতসুমির। “কিন্তু কেস ফাইলে তো লেখা আছে যে বিষের উৎস জানা যায়নি।”

    “আমার পক্ষে সত্যটা বলা সম্ভব হয়নি তখন। কর্তব্যরত ডিটেক্টিভকে বলেছিলাম যে আর্সেনিক….মানে আর্সেনাস এসিড কোথায় পেয়েছে ও সে সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। আমাকে যদি পরে আবারো জিজ্ঞেস করতো, তাহলে হয়তো বলতাম…কিন্তু আর কিছু জানতে চাননি। আমি আসলেই দুঃখিত।”

    “তাহলে আর্সেনাস এসিডটুকু আপনাদের এখান থেকেই নিয়ে গিয়েছিল সে?”

    “হ্যাঁ, আমি মোটামুটি নিশ্চিত সে ব্যাপারে। আমার স্বামী ইঁদুর মারার বিষ হিসেবে ব্যবহার করতো ওগুলো। স্টোরেজ শেডে রাখা থাকতো সেজন্যে।”

    “সেখান থেকেই নিয়েছিলেন মিস সুকুই?”

    মাথা নেড়ে সায় জানালো ইয়োকো। “খবরটা শোনার পরপরই আমি স্টোরেজ শেডে গিয়েছিলাম দেখতে। ওখানে যে ব্যাগটায় আর্সেনাস এসিড রাখা থাকতো সেটা খুঁজে পাইনি। তখন বুঝতে পারি, আসলে ওটা নেয়ার জন্যেই বাড়ি ফিরেছিল সে।”

    হঠাৎই উতসুমি বুঝতে পারলো, বিস্ময়ের তাড়নায় নোট নিতেই ভুলে গেছে সে। দ্রুত নোটবুক খুলে লিখতে শুরু করল সে।

    “আমি এটা কিভাবে কাউকে বলবো যে আমার মেয়ে বাসায় এসেছিল আত্মহত্যার সরঞ্জাম জোগাড় করতে, আর আমি কিছুই বুঝতে পারিনি? বাসা থেকে বিষ নিয়ে গিয়েছে সে! জানতাম, মিথ্যে বলাটা ঠিক হচ্ছে না…ক্ষমা করবেন আমাকে। আপনি চাইলে থানায় গিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারি,” বারবার বাউ করতে করতে বলল ইয়োকো।

    “আমি কি স্টোরেজ শেডটা দেখতে পারি?” উতসুমি জিজ্ঞেস করল। “অবশ্যই।”

    উঠে দাঁড়ালো উতসুমি।

    পেছনের উঠোনে এক কোণায় ছিমছাম একটা ছাউনি। খুব একটা বড় নয়। কিছু পুরনো আসবাব আর ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম রাখা। সাথে বেশ কয়েকটা কার্ডবোর্ড বক্স। ভেতরে পা রাখলো উতসুমি। ধূলো আর শেওলার গন্ধ এসে ধাক্কা দিল নাকে। “বিষ কোথায় রাখা ছিল?” জিজ্ঞেস করল সে ইয়োকোর উদ্দেশ্যে।

    “এখানটায়,” একটা খালি ক্যানের দিকে নির্দেশ করে বলল মিসেস সুকুই। “ঐ ক্যানটায় রাখা ছিল ব্যাগটা।“

    “কি পরিমাণ পাউডার নিয়েছিলেন মিস সুকুই?”

    “পুরো ব্যাগটাই। এতটুকু হবে,” হাত দিয়ে দেখালো ইয়োকো। “অনেকটুকু।”

    “হ্যাঁ, ছোট একটা বাটি ভর্তি হয়ে যাবে।”

    “আত্মহত্যার জন্যে তো এত লাগার কথা নয়। আর কেস ফাইলের লেখা অনুযায়ী ঘটনাস্থলে যে প্লাস্টিক ব্যাগ পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে খুব বেশি পরিমাণ আর্সেনাস এসিড ছিল না।”

    “হ্যাঁ, ব্যাপারটা আমার কাছেও অদ্ভুত লেগেছিল। প্রথমদিকে কিছু বলিনি কারণ… ভেবেছিলাম আমাকে দোষারোপ করা হবে আরো সাবধানী না হবার জন্যে। পরে মনে হয়েছে জুঞ্জি বোধহয় বাকিটুকু ফেলে দিয়েছিল।”

    উতসুমির অবশ্য মনে হলো না যে আত্মহত্যা করতে চলেছে এরকম কেউ বাড়তি বিষটুকু নিয়ে কি করবে সেব্যাপারে মাথা ঘামাবে।

    “আপনি কি এই স্টোরেজটা নিয়মিত ব্যবহার করেন?” জিজ্ঞেস করল সে।

    “না, এখানে বলতে গেলে আসিই না। অনেকদিন পর আজ খুললাম।”

    “তালা দেয়া যায় এখানটা?”

    “তালা? হ্যাঁ, চাবিটা অবশ্য খুঁজতে হবে।”

    “তাহলে দয়া করে তালা দিয়ে রাখুন আপাতত। আমাদের ফরেনসিক টিমের লোক আসতে পারে।”

    “এখানে?” অবাক কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল ইয়োকো।

    “হ্যাঁ। আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি যে আপনার কোন প্রকার অসুবিধে হবে না।“

    ভেতরে ভেতরে চাপা উত্তেজনা কাজ করছে উতসুমির। ওরা এখনও জানতে পারেনি যে ইয়োশিতাকা মাশিবার কফিতে যে বিষের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে সেটার উৎস কি। সুকুইদের বাসার আর্সেনাস এসিড এবং মাশিবাদের বাসায় পাওয়া আর্সেনাস এসিড যদি মিলে যায়, তাহলে তদন্তের মোড়ই ঘুরে যাবে।

    আশা করি যাতে সামান্য হলেও আর্সেনাস এসিডের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় স্টোরেজ শেডে। টোকিও ফিরে যত দ্রুত সম্ভব কথা বলতে হবে মামিয়ার সাথে।”

    “আরেকটা কথা,” ইয়োকোর উদ্দেশ্যে বলল সে। “আমি শুনেছি মিস সুকুই একটা চিঠি পাঠিয়েছিলেন আপনাকে?”

    “হ্যাঁ… পাঠিয়েছিল।”

    “ওটা দেখতে পারি আমি?”

    “হ্যাঁ,” কিছুক্ষণ ভাবার পর জবাব দিল ইয়োকো।

    ভেতরে ফিরে উতসুমিকে মেয়ের পুরনো ঘরে নিয়ে গেল ইয়োকো।

    পশ্চিমা কায়দায় সাজানো হয়েছে ঘরটা।

    “ওর সবকিছু যেমন ছিল তেমনই রেখে দিয়েছি আমি। মাঝে মাঝে ভাবি যে অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো বের করে ফেলবো, কিন্তু করা হয়ে ওঠে না।” চিঠি ভর্তি একটা ড্রয়ার খুলল ইয়োকো। ওখানকার সবচেয়ে ওপরের খামটা তুলে নিয়ে বাড়িয়ে দিল উতসুমির দিকে।

    তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে খামটা নিল ডিটেক্টিভ।

    কুসানাগির কাছে যা যা শুনেছিল মোটামুটি সেগুলোই দেখতে পেল চিঠিতে। আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে কিছু বলা নেই। তবে চিঠিটা পড়ে এটা মনে হবে যে বেঁচে থাকার সব উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে সুকুই।

    “আমার সবসময় মনে হয় যে মেয়েটার প্রতি যদি আরেকটু নজর দিতাম,” ধরা গলায় বলল ইয়োকো। “যদি ওর কষ্টটা বুঝতে পারতাম।

    সান্ত্বনাবাক্য হিসেবে বলার মত কিছু খুঁজে না পেয়ে চিঠিটা ড্রয়ারে ফিরিয়ে দিল উতসুমি। এসময় বাকি চিঠিগুলোর ওপর নজর পড়লো তার।

    “এগুলো কি?” জিজ্ঞেস করল।

    “ইমেইল ব্যবহার করি না আমি, তাই নিয়মিত চিঠি লেখতো জুঞ্জি।”

    “আমি যদি এগুলো দেখি, কোন সমস্যা হবে?”

    “নাহ, দেখুন। আমি চা নিয়ে আসছি,” বলে ঘর থেকে বের হয়ে গেল ইয়োকো।

    ডেস্কটার পাশে চেয়ার টেনে বসে একটা একটা করে চিঠিগুলো পড়তে শুরু করল উতসুমি। বেশিরভাগই সুকুইয়ের কাজ নিয়ে লেখা। কখন কোন চরিত্রটা নিয়ে কাজ করছে, কোন গল্পের সাথে মেলাবে… এসব। প্রেমিক বা কোন বন্ধুর ব্যাপারে কিছু লেখা নেই কোথাও।

    হাল ছেড়ে উঠে দাঁড়াবে এমন সময় একটা পোস্টকার্ড চোখে পড়লো উতসুমির। সামনের দিকটায় একটা লাল রঙের দোতলা বাসের ছবি ওটার। পেছনে নীল কালিতে কয়েকটা বাক্য লেখা।

    ছোট ছোট অক্ষরে লেখা কথাগুলো পড়তেই দম আটকে আসার জোগাড় হলো উতসুমির।

    কেমন আছো তুমি? অবশেষে লন্ডন পৌঁছিয়েছি। এখানে একটা জাপানিজ মেয়ে সাথে পরিচয় হয়েছে জানো? হোক্কাইদো থেকে বদলি শিক্ষার্থী হিসেবে পড়তে এসেছে সে। আমাকে কথা দিয়েছে কালকে শহর ঘুরে দেখাবে।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleদ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো
    Next Article রিং – কোজি সুজুকি

    Related Articles

    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য রেড ফিঙ্গার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য মিরাকলস অব দ্য নামিয়া জেনারেল স্টোর – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    নিউকামার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য নেম অব দ্য গেম ইজ অ্যা কিডন্যাপিং – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.