Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    শিবরাম চক্রবর্তী হাস্যকৌতুক এক পাতা গল্প8 Mins Read0

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার – শিবরাম চক্রবর্তী

    হর্ষবর্ধনকে আর রোখা গেল না তারপর কিছুতেই। বাঘমারবার জন্য তিনি মরিয়া হয়ে উঠলেন।

    ‘আরেকটু হলেই তো মেরেছিল আমায়।’ তিনি বললেন, ‘ওই হতভাগা বাঘকে আমি সহজে ছাড়ছি না।’

    ‘মারব ওকে। আমাকে মেরেছে আর ওকে আমি রেহাই দেব তুই ভেবেছিস?’

    ‘তোমাকে আর মারল কোথায়? মারতে পারল কই?’

    ‘একটুর জন্যই বেঁচে গেছি না! মারলে তোরা বাঁচাতে পারতিস আমায়?’ গোবর্ধন চুপ করে থাকল, সে কথার কোনো জবাব দিতে পারল না।

    ‘এই গোঁফটাই আমায় বাঁচিয়ে দিয়েছে বলতে কী!’ বলে নিজের গোঁফ দুটো তিনি একটু মুচড়ে নিলেন—‘এই গোঁফের জন্যই বেঁচে গেছি আজ। নইলে ওই লোকটার মতোই হাল হত আমার।…’

    গোবরা সে-কথারও কোনো সদুত্তর দিতে পারে না।

    ‘এই চৌকিদার!’ হঠাৎ তিনি হুঙ্কার দিয়ে উঠলেন—‘একটা বন্দুক যোগাড় করে দিতে পারো আমায়? যত টাকা লাগে দেব।’

    ‘বন্দুক নিয়ে কী করবেন বাবু?’

    ‘বাঘ শিকার করব, আবার কী? বন্দুক নিয়ে কী করে মানুষ?’ বলে আমার প্রতি ফিরলেন: ‘আমার এই বীরত্ব কাহিনিটাও লিখতে হবে আপনাকে। যত সব আজেবাজে গল্প লিখছেন আমাকে নিয়ে। লোকে পড়ে হাসে কেবল। সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করে শুনেছি।’

    ‘তার কী হয়েছে? লিখে দেব আপনার শিকার-কাহিনি। এই বাঘ মারার গল্পটাই লিখে দেব আপনার। কিন্তু তার জন্য বন্দুক ঘাড়ে এত কষ্ট করে প্রাণপণে বাঘ মারতে হবে কেন? বনেবাদাড়েই বা যেতে হবে কেন? বাঘ মারতে এত হাঙ্গামার কী মানে আছে? বন্দুকের কোনো দরকার নেই। সাপ ব্যাং একটা হলেই হল। কলমের কেরামতিতে সাপ ব্যাং দিয়েই বাঘ মারা যায়।’

    ‘মুখেন মারিতং বাঘং?’ গোবরা টিপ্পনী কাটে।

    ‘আপনি টাকার কথা বলছেন বাবু।’ চৌকিদার এতক্ষণ ধরে কী যেন গভীর চিন্তায় নিমগ্ন ছিল, মুখ খুলল এবার—‘তা টাকা দিলে এনে দিতে পারি একটা বন্দুক—দু-দিনের জন্য। আমাদের দারোগা সাহেবের বন্দুকটাই চেয়ে আনতে পারি। বাঘের ভারি উপদ্রব হয়েছে এধারে—মারতে হবে বাঘটাকে—এই বললেই তিনি ওটা ধার দেবেন আমায়। ব্যাভারের পর আবার ফেরত দিয়ে আসব!’

    ‘শুধু বন্দুক নিয়ে কী করব শুনি? ওর সঙ্গে গুলি কার্তুজ টোটা ইত্যাদি এসবও তিনি দেবেন তো? নইলে বন্দুক দিয়ে পিটিয়ে কি বাঘ মারা যায় নাকি? তেমনটা করতে গেলে তার আগেই বাঘ আমায় সাবড়ে দেবে।’

    ‘তা কি হয় কখনো? বন্দুকের সঙ্গে কার্তুজ-টার্তুজ দেবেন বই কী বাবু।’

    ‘তাহলে যাও, নিয়ে এসো গে চটপট। বেশি দেরি কোরো না। বাঘ না মেরে নড়ছি না আমি এখান থেকে। জলগ্রহণ করব না আজ।’

    ‘না না, বন্দুকের সঙ্গে কিছু খাবার-টাবার নিয়ে এসো ভাই।’

    আমি বাতলাই, ‘খালি পেটে কি বাঘ মারা যায়? আর কিছু না হোক, একটু গাঁজা খেতে হবে অন্তত।’

    ‘আনব নাকি গাঁজা?’ সে শুধায়!

    ‘গাঁজা হলে তো বন্দুকের দরকার হয় না। বনেবাদাড়ে ঘুরে মরতে হয় না। বন্দুকের বোঝা বইবার প্রয়োজন করে না। ঘরে বসেই বাঘ মারা যায় বেশ।’ আমি জানাই।

    ‘না না, গাঁজা-ফাঁজা চাই না। বাবু ইয়ার্কি করছে তোমার সঙ্গে। তুমি কিছু রুটি মাখন বিস্কুট চকোলেট—এইসব এনো, পাও যদি।’ গোবরা বলে দেয়।

    বন্দুক এলে হর্ষবর্ধন আমায় শুধাল—‘কি করে বাঘ মারতে হয় আপনি জানেন?’

    ‘বাগে পেলেই মারা যায়। কিন্তু বাগেই পাওয়া যায় না ওদের। বাগে পাবার চেষ্টা করতে গেলে উলটে নাকি বাঘেই পায়।’

    ‘বনের ভিতর সেঁধুতে হবে বাবু।’ চৌকিদার জানায়।

    বনের ভিতরে পা বাড়াতে প্রথমেই যে এগিয়ে এসে আমাদের অভ্যর্থনা করল সে কোনো বাঘ নয়, বাঘের বাচ্চাও না, আস্ত একটা কোলা ব্যাং।

    ব্যাং দেখে হর্ষবর্ধন ভারি খুশি হলেন, বললেন, ‘এটা শুভ লক্ষণ। ব্যাং ভারি পয়া, জানিস গোবরা?’

    ‘মা লক্ষ্মীর বাহন বুঝি?’

    ‘সে তো প্যাঁচা।’ দাদা জানান—‘কে না জানে!’

    ‘তাহলে ব্যাং বুঝি সিদ্ধিদাতা গণেশের, না, না…’ বলে গোবরা শুধরে নেয়—‘সে তো হল গে ইঁদুর।’

    ‘আমি পয়া বলছি কারো বাহন-টাহন বলে নয়। নিজের অভিজ্ঞতায়। আমরা প্রথম যখন কলকাতায় আসি, তোর মনে নেই গোবরা? ধরমতলায় একটা মানিব্যাগ কুড়িয়ে পেয়েছিলাম।’

    ‘মনে আছে। পেয়েই তুমি সেটা পকেটে লুকিয়ে ফেলেছিলে, পাছে কারো নজরে পড়ে। তারপর বাড়ি এসে খুলে দেখতে গিয়ে দেখলে…’

    ‘দেখলাম যে চারটে ঠ্যাং। মানিব্যাগের আবার ঠ্যাং কেন রে? তারপর ভালো করে পরীক্ষা করে দেখি কী, ওমা, ট্রাম গাড়ির চাকার তলায় পড়ে চ্যাপ্টা হয়ে যাওয়া ব্যাং একটা।’

    ‘আর কিছুতেই খোলা গেল না ব্যাগটা।’

    ‘গেল না বটে, কিন্তু তারপর থেকেই আমাদের বরাত খুলে গেল। কাঠের কারবারে ফেঁপে উঠলাম আমরা। আমরা এখানে টাকা উড়িয়ে দিতে এসেছিলাম। কিন্তু টাকা কুড়িয়ে থই পাই না তারপর।’

    ‘ব্যাং তাহলে বিশ্বকর্মার বাহন হবে নির্ঘাত।’ গোবরা ধারণা করে, ‘যত কারবার আর কারখানার কর্তা ওই ঠাকুরটি তো। কী বলেন মশাই আপনি? ব্যাং বিশ্বকর্মার বাহনই তো বটে?’

    ‘ব্যাংটাকে দেখে একটা গল্পের কথা মনে পড়ল।’ আমি বলি—‘জামপিং ফ্রগের গল্প। মার্ক টোয়েনের লেখা ছোটোবেলায় পড়েছিলাম গল্পটা।’

    ‘মার্ক টোয়েন মানে?’ হর্ষবর্ধন জিজ্ঞাসা করেন।

    ‘এক লেখকের নাম। মার্কিন মুলুকের লেখক।’

    ‘আর জামপিং ফ্রগ?’ গোবরার জিজ্ঞাসা।

    ‘জামপিং মানে লাফানো, আর ফ্রগ মানে হচ্ছে ব্যাং। মানে যে ব্যাং কিনা লাফায়।’

    ‘লাফিং ফ্রগ বলুন তাহলে মশাই।’

    ‘তাও বলা যায়। গল্পটা পড়ে আমার হাসি পেয়েছিল তখন। তবে ব্যাঙের পক্ষে ব্যাপারটা তেমন হাসির হয়েছিল কিনা আমি জানি না। গল্পটা শুনুন এবার। মার্ক টোয়েনের সময়ে সেখানে ঘোড়দৌড়ের মতন বাজি ধরে ব্যাঙের দৌড় হত। লাফিয়ে লাফিয়ে যার ব্যাং আর সব ব্যাং-কে টেক্কা দিতে পারত সেই মারত বাজি। সেইজন্যে করত কী, অন্য সব ব্যাং-কে হারাবার মতলবে যাতে তারা তেমন লাফাতে না পারে—লাফিয়ে লাফিয়ে এগিয়ে যেতে হবে তো—সেইজন্য সবার আড়ালে এক একটাকে পাথরকুচি খাইয়ে বেশ ভারী করে দিত কেউ কেউ।’

    ‘খেত ব্যাং সেই পাথরকুচি?’

    ‘অবোধ বালক তো! যাহা পায় তাহাই খায়।’

    ‘আমার বিশ্বাস হয় না।’ হর্ষবর্ধন ঘাড় নাড়েন।

    ‘পরীক্ষা করে দেখলেই হয়।’ গোবরা বলে: ‘এই তো পাওয়া গেছে একটা ব্যাং—এখন বাজিয়ে দেখা যাক না খায় কি না।’

    গোবরা কতকগুলো পাথরকুচি জোগাড় করে এনে গেলাতে বসল ব্যাংটাকে। হাঁ করিয়ে ও মুখের কাছে কুচি ধরে দিতেই, কী আশ্চর্য, তক্ষুনি সে গোপালের ন্যায় সুবোধ বালক হয়ে গেল। একটার পর একটা গিলতে লাগল টুপটাপ করে। অনেকগুলো গিলে ঢাউস হয়ে উঠল ওর পেট।

    তারপর মাথা হেঁট করে চুপচাপ বসে রইল ব্যাংটা। ভারিক্কি দেহ নিয়ে লাফানো দূরে থাক, নড়াচড়ার কোনো শক্তি রইল না তার আর।

    ‘খেলো তো বটে, খাওয়ালিও তো দেখলাম, ব্যাটা এখন হজম করতে পারলে হয়।’ দাদা বললেন।

    ‘খুব হজম হবে। ওর বয়সে কত পাথর হজম করেছি দাদা।’ গোবরা বলে: ‘ভাতের সঙ্গে এতদিন যত কাঁকর গিলেছি, ছোটোখাটো একটা পাহাড়ই চলে গেছে আমাদের গর্ভে। হয়নি হজম?’

    ‘আলবাত হয়েছে।’ আমি বলি: ‘হজম না হলে তো যম এসে জমত।’

    ‘ওই দেখো দাদা!’ আঁতকে চেঁচিয়ে ওঠে গোবরা।

    আমরা দেখি প্রকান্ড একটা সাপ, গোখরোই হবে হয়তো, এঁকেবেঁকে এগিয়ে আসছে আমাদের দিকে।

    চৌকিদার বলে—‘একটুও নড়বেন না বাবুরা। নড়লেই সাপ এসে ছোবলাবে। আপনাদের দিকে নয়, ব্যাংটাকে নিতে আসছে ও।’

    আমরা নিস্পন্দ দাঁড়িয়ে দেখলাম, তাই বটে। আমাদের প্রতি ভ্রূক্ষেপ মাত্র না করে সে ব্যাংটাকে এসে আত্মসাৎ করল।

    সাপটা এগিয়ে এসে ধরল ব্যাংটাকে, তারপর এক ঝটকায় লহমার মধ্যে মুখের ভেতর পুরে ফেলল। তারপর গিলতে লাগল আস্তে আস্তে।

    আমরা দাঁড়িয়ে ওর গলাধঃকরণ লীলা দেখতে লাগলাম। গলা দিয়ে পুরুষ্ট ব্যাংটা তার তলার দিকে চলতে লাগল, খানিকটা গিয়ে থেমে গেল এক জায়গায়, সেইখানেই আটকে রইল, তারপর সাপটা যতই চেষ্টা করুক না, সেটাকে আর নামাতে পারল না। পেটের ভেতর ঢুকে ব্যাংটা তার পিঠের উপর কুঁজের মতো উঁচু হয়ে রইল।

    উটকো ব্যাংটাকে গিলে সাপটা উট হয়ে গেল যেন শেষটায়। তার মুখখানা যেন কেমনতর হয়ে গেল। …তারপর তার আর কোনো উৎসাহ দেখা গেল না।

    ‘ছুঁচো গেলার চেয়েও খারাপ দশা হয়েছে সাপটার, বুঝলে দাদা? সাপের পেটে ব্যাং, আর ব্যাঙের পেটে যত পাথরকুচি। আগে ব্যাং পাথরকুচিগুলো হজম করবে, তারপর সে হজম করবে ব্যাংটাকে। সে বোধহয় আর ওদের এজন্মে নয়।’

    ‘ওদের কে কাকে হজম করে দেখা যাক। আমরাও খেতে বসি এধারে।’

    চৌকিদারের আনা মাখন-রুটি ইত্যাদি খবরকাগজ পেতে খেতে বসে গেলাম। সাপটার অদূরেই বসা গেল। সাপটা মার্বেলের গুলির মতন তালগোল পাকিয়ে পড়ে রইল আমাদের পাশেই।

    এমন সময় জঙ্গলের ওধারে একটা খসখসানি আওয়াজ পাওয়া গেল। ‘বাঘ এসে গেছে বাবু।’ চৌকিদার বলে উঠল। শুনেই না আমরা তাকিয়ে দেখি সত্যিই ঝোপঝাড়ের আড়ালে বাঘটা আমাদের দিকে তাক করে দাঁড়িয়ে।

    ‘রুটি মাখন-টাখন শেষ পর্যন্ত বাঘের পেটেই গেল দেখছি।’ দেখে আমি দুঃখ করলাম।

    ‘কী করে যাবে? আমরা চেটেপুটে খেয়ে ফেলেছি না সব, ওর জন্যে রেখেছি নাকি?’ বলল গোবরা পাঁউরুটির শেষ চিলতেটা মুখের মধ্যে পুরে দিয়ে।

    ‘যেমন করে পাথরকুচিগুলো সাপের পেটে গেছে ঠিক সেই ভাবে।’ আমি বিশদ করি।

    ‘এক গুলিতে সাবাড় করে দিচ্ছি না ব্যাটাকে। দাঁড়ান না।’ বলে হর্ষবর্ধন হাতে কী একটা তুললেন, ‘ওমা! এটা যে সাপটা।’ বলেই কিন্তু আঁতকে উঠলেন—‘বন্দুকটা গেল কোথায়?’

    ‘বন্দুক আমার হাতে বাবু।’ বলল চৌকিদার: ‘আপনি তো আমার হাত থেকে নেননি বন্দুক। তখন থেকেই আমার হাতে আছে।’

    ‘তুমি বন্দুক ছুড়তে জানো?’

    ‘না, বাবু, তবে তার দরকার হবে না। বাঘটা এগিয়ে এলে এই বন্দুকের কুঁদোর ঘায়ে ওর জান খতম করে দেব। আপনারা ঘাবড়াবেন না।’

    হর্ষবর্ধন ততক্ষণে হাতে সাপটাকেই তিন পাক ঘুরিয়ে ছুড়ে দিয়েছেন বাঘটার দিকে।

    সাপটা সবেগে পড়েছে গিয়ে তার উপর। কিন্তু তার আগেই না, কয়েক চক্কর পাক খেয়ে, সাপের পেটের থেকে ছিটকে ব্যাংটা আর ব্যাঙের গর্ভ থেকে যত পাথরকুচি তিরবেগে বেরিয়ে—ছররার মতো বেরিয়ে লেগেছে গিয়ে বাঘটার গায়ে—তার চোখে-মুখে-নাকে।

    হঠাৎ এই বেমক্কা মার খেয়ে বাঘটা ভিরমি খেয়েই যেন অজ্ঞান হয়ে গেল তৎক্ষণাৎ। আর তার নড়াচড়া নেই।

    ‘সর্পাঘাতে মারা গেল নাকি বাঘটা?’ আমরা পায়ে পায়ে হতজ্ঞান বাঘটার দিকে এগোলাম।

    চৌকিদার আর দেরি না করে বন্দুকের কুঁদায় বাঘটার মাথা থেঁতলে দিল। দিয়ে বলল—‘আপনার সাপের মারেই মারা পড়েছে বাঘটা। তাহলেও সাবধানের মার নেই বাবু, তাই বন্দুকটাও মারলাম তার মাথার ওপর।’

    ‘এবার কী করা যাবে?’ আমি শুধাই: ‘কোনো ফোটো তোলার লোক পাওয়া গেলে বাঘটার পিঠে বন্দুক রেখে দাঁড়িয়ে বেশ পোজ করে ফোটো তোলা যেত একখানা।’

    ‘এখানে ফোটোওলা কোথায় বাবু এই জঙ্গলে? বাঘটা নিয়ে গিয়ে আমি ভেট দেব দারোগাবাবুকে। তাহলে আমার ইনামও মিলবে—আবার চৌকিদার থেকে এক চোটে দফাদার হয়ে যাব আমি—এই বাঘ মারার দরুন। বুঝলেন?’

    ‘দাদা করল বাঘের দফারফা আর তুমি হলে গিয়ে দফাদার।’

    গোবরা বলল—‘বারে!’

    ‘সাপ-ব্যাং দিয়েই বাঘ শিকার করলেন আপনি দেখছি!’ আমি বাহবা দিলাম ওর দাদাকে।

    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঅনুরাধা
    Next Article দোকানির বউ
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Our Picks

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }