Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    হেক্‌টর-বধ – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    মাইকেল মধুসূদন দত্ত এক পাতা গল্প89 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    হেক্‌টর-বধ – ৫

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ।

    রাজকুলেন্দ্র বৃদ্ধ প্রিয়ামনন্দন অরিন্দম হেক্‌টর এইরূপ স্ববলদলে রণক্ষেত্রে অবস্থিতি করিতে লাগিলেন। গ্রীক্‌শিবিরে এক মহাতঙ্ক উপস্থিত হইল। অনেকানেক বলীগণ সভয়ে পলায়ন-তৎপর হইল। সৈন্যের এরূপ সাহসশূন্যতায় নেতামহোদয়েরা ব্যাকুলচিত্ত হইয়া উঠিলেন। যেমন দুই বিপরীত কোণ হইতে বেগবান্ বায়ু বহিতে আরম্ভ করিলে মকর ও মীনাকর সাগরে জলরাশি অশান্তভাবে স্ফুরিতে থাকে, গ্রীক্‌-সেনাপতিদলের মনও সেইরূপ বিকল ও বিহ্বল হইয়া উঠিল।

    রাজচক্রবর্ত্তী আগেমেম্‌নন্‌ অতীব ব্যথিত হৃদয়ে ইতস্ততঃ পরিভ্রমণ করিতে লাগিলেন। এবং রাজবন্দীবৃন্দকে অতি মৃদুস্বরে নেতৃবৃন্দকে সভামণ্ডপে আহ্বান করিতে আজ্ঞা করিলেন। সভা হইল, রাজচক্রবর্ত্তী জলপূর্ণ প্রস্রবণের ন্যায় অনর্গল অশ্রুবিন্দু নিপাত ও দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ করতঃ কহিলেন, হে বান্ধবদল, হে গ্রীক্‌কুলনাশক, হে অধিপতিগণ! দেখ, নির্দ্দয় দেবকুলপিতা অদ্য আমাকে কি বিপজ্জালে পরিবেষ্টিত করিয়াছেন। যাত্রাকালে তিনি আমাকে যে আশা ভরসা দিয়াছিলেন, তাহা ফলবতী করিতে, বোধ হয়, তিনি নিতান্ত অনিচ্ছুক। হায়! আমরা কেবল বিফলে বহুপ্রাণ হারাইবার জন্য এ কুদেশে কুলগ্নে আসিয়াছিলাম! এক্ষণে চল, আমরা দূর জন্ম-ভূমিতে ফিরিয়া যাই! এ মহানগর ট্রয় পরাভূত করা আমাদের ভাগ্যে নাই। রাজচক্রবর্ত্তীর এই বাক্যে গ্রীক্‌দল স্বশোকে যেন অবাক হইয়া রহিল। কতক্ষণ পরে রণদুর্ম্মদ দ্যোমিদ্‌ উঠিয়া কহিতে লাগিলেন, হে রাজচক্রবর্ত্তী সৈন্যাধ্যক্ষ মহোদয়! আমি যাহা কহিতে বাঞ্ছা করি, সে লাঞ্ছনা উক্তিতে আপনি বিরক্ত হইবেন না। দেবকুলপিতার ভয়ে আমরা সকলেই তোমার অধীন বটি; কিন্তু এরূপ পদপ্রতিষ্ঠিত ব্যক্তির উপযুক্ত পরাক্রম তোমাতে নাই। তুমি এ কি কহিতেছ? বীরযোনি হেলাসের পুত্র গোত্র কি এতাদৃশ বীর্য্যবিহীন, যে তাহারা স্বদেশে ফিরিয়া যাইবে। যদি তোমার এমত ইচ্ছা হয়, তবে তুমি প্রস্থান কর। তোমার ঐ পথ তোমার সম্মুখে প্রতিবন্ধক বিহীন। আর কেহই এরূপ করিতে বাসনা করে না। আর কেহই ত্রাসে পরবশ হইয়া এরূপ বাসনা করে না। রণবিশারদ দ্যোমিদের এ কথায় সকলেই প্রশংসা করিলেন। বিজ্ঞবর নেস্তর কহিলেন, হে দ্যোমিদ্‌! তুমি যথার্থ কহিয়াছ! এ দেশ পরিত্যাগ করা কোন মতেই যুক্তিসিদ্ধ নহে। কিন্তু এস্থলে এ বিষয়ের আন্দোলন করা ও অনুচিত, অতএব হে রাজচক্রবর্ত্তী! তুমি প্রধান প্রধান নেতামহোদয়গণকে আপন শিবিরে আহ্বান কর, এবং তদগ্রে কতিপয় রণকোবিদ্‌ বাহুবলশালী বীরদলকে পরিখার সন্নিকটে এ শিবিরের রক্ষা কার্য্যে প্রেরণ কর। বিজ্ঞবরের এ আজ্ঞা রাজা শিরোধার্য্য করিলেন। রাজশিবিরে প্রথমে লোকনাথ দলের পরিতোষার্থে উপাদেয় ভোজন পান সামগ্রী দাসদলে আনয়ন করাইলেন। ভোজন পানে ক্ষুধা ও তৃষ্ণা নিবারিত হইলে, বৃদ্ধ নেস্তর কহিতে লাগিলেন, হে রাজচক্রবর্ত্তী! আমি যাহা কহিতেছি, আপনি তাহা বিশেষ মনোযোগ করিয়া শ্রবণ করুন। আমার বিবেচনায় বীরকেশরী আকিলীসের সহিত কলহ করা আপনার অতীব অন্যায় হইয়াছে, কেন না, আপনি বিলক্ষণ জানিবেন যে বীরকুলহর্ষ্যক্ষের বাহুবল স্বরূপ আবৃতি ব্যতীত এমন কোন আবরণ নাই, যে তদ্দ্বারা আপনি ঐ ভাস্বর কিরীটী হেক্‌টরের নাশক অস্ত্রাঘাত হইতে এ সৈন্যের রক্ষা করিতে পারেন। বিজ্ঞবরের এই কথায় রাজচক্রবর্ত্তী কহিলেন, হে ভগবন্! হে তাত! আপনি যাহা কহিতেছেন, তাহা যথার্থ। কিন্তু আমি রোষ-পরবশ হইয়া যে দুষ্কর্ম্ম করিয়াছি, এই তাহার সমুচিত দণ্ড বটে! এক্ষণে ভগ্নপ্রীতি শৃঙ্খল পুনর্যুক্ত করিতে আমি সেই অস্পৃষ্টা কুমারী ব্রীষীসা সুন্দরীর সহিত তাহাকে বিবিধ মহার্হ ধন দিতে প্রস্তুত আছি, এমন কি, যদ্যপি ভগবান দেবকুলপিতা আমাদিগকে রণজয়ী করেন, তাহা হইলে আমার রাজপুরে তিনটী পরম সুন্দরী নন্দিনীর মধ্যে যাহাকে ইচ্ছা করেন, তাহার সহিত বিনাপণে উহার পরিণয় ক্রিয়া সমাধা করিব। আর যৌতুক রূপে জনসমাকীর্ণ সপ্তখানি গ্রাম দিব। যে ব্যক্তি সাধনা করিলে বশবর্ত্তী না হয়, সকলেই তাহাকে ঘৃণা করে, এমন কি, কৃতান্ত দেব দেবকুলোদ্ভব হইয়াও এই দোষে নিখিল জগন্মণ্ডলে ঘৃণাস্পদ হইয়াছেন। বীরকেশরীকে কহিও, যে এই সকল দ্রব্যজাত গ্রহণ করিয়া সে আমার পুনরায় আজ্ঞাকারী হউক! আমি এ সৈন্যদলের অধ্যক্ষ এবং বয়সেও তাহার জ্যেষ্ঠ!

     

    আরও দেখুন
    বাংলা গল্প
    বইয়ের
    বইয়ের
    সাহিত্য পর্যালোচনা
    বাংলা সাহিত্য কোর্স
    অনলাইন গ্রন্থাগার
    বাংলা লাইব্রেরী
    বুক শেল্ফ
    Library
    নতুন উপন্যাস

     

    রাজ বাক্যে বিজ্ঞবর নেস্তর মহা সন্তুষ্ট হইয়া কহিলেন, হে রাজকুলপতি! এই তোমার উপযুক্ত কর্ম্ম বটে! অতএব এই নেতৃদলের মধ্য হইতে কতিপয় বিজ্ঞতম জনকে এ সুবার্ত্তা বহনার্থে বীরকেশরীর শিবিরে প্রেরণ কর। আমার বিবেচনায়, দেবপ্রিয় ফেনিক্স, মহেষ্বাস আয়াস, ও অভিজ্ঞ আদিস্যুসের সহিত হদ্যুস্‌ ও উরুবাতীস দূতদ্বয়কে এ কার্য্য সাধনার্থে প্রেরণ করিলে ভাল হয়! কিন্তু যাত্রাগ্রে শান্তিজল ইহাদের উপরি সেচন কর, আর তোমরা সকলে মঙ্গলার্থে মঙ্গলদাতা জ্যুসের সকাশে প্রার্থনা কর।

    পরে পঞ্চজন ধীরে ধীরে উচ্চবীচীময় সাগরতট পথ দিয়া বীরকেশরী আকিলীসের শিবিরাভিমুখে চলিলেন, এবং বসুধাপরিবেষ্টিত জলদলপতিকে মঙ্গলার্থে স্তুতি করিতে লাগিলেন। বীরকেশরীর শিবির সন্নিধানে উপস্থিত হইয়া দেখিলেন যে তিনি এক সুনির্ম্মিত মধুরধ্বনি বীণা সহকারে বীরকুলের কীর্তি সংকীর্তন করিয়া আপন চিত্তবিনোদন করিতেছেন। সখা পাত্রক্লুস্ নীরবে সম্মুখে বসিয়া রহিয়াছেন। সর্ব্বাগ্রে দেবোপম আদিস্যুস্‌ শিবির দ্বারে উপনীত হইলেন। বীরকেশরী পঞ্চজনের সহসা সন্দর্শনে চমৎকৃত হইয়া আসন পরিত্যাগ করতঃ তাহাদিগের হস্ত আপন হস্ত দ্বারা স্পর্শ করিয়া কহিলেন, হে বীরেন্দ্রবর! আসিতে আজ্ঞা হউক! এই কহিয়া বীরকেশরী অতিথিবর্গকে সুন্দরাসনে বসাইলেন। এবং পাত্রক্লুসকে কহিলেন, হে সখে! তুমি উত্তম পাত্র দ্বারা উত্তম সুরা শীঘ্র আনয়ন কর। কেননা, অদ্য আমার এ বাসস্থলে আমার পরমপ্রিয় মহোদয়গণ শুভাগমন করিয়াছেন। বীর অতিথিবর্গের আতিথ্য ক্রিয়া সুচারুরূপে সমাধা হইলে আদিস্যুস্‌ কহিতে লাগিলেন। হে দেবপুষ্ট ধন্বী! আমরা যে কি হেতু তোমার এ শিবিরে আগমন করিয়াছি, তাহার কারণ শ্রবণ কর। আমাদিগের জীবন মরণ অধুনা তোমারি হস্তে। কেন না, এদলের শঙ্কটকারী হেক্‌টর স্ববলে আমাদিগের শিবির সন্নিকটে অবস্থিতি করিতেছে, এবং তাহার এই দৃঢ় প্রতিজ্ঞা যে, আমাদিগের পোতসকল ভস্মসাৎ করিয়া আমাদিগকে যমালয়ে প্রেরণ করিবে। অতএব তুমি মনোনিকৃন্তনকারী রোষ অন্ত করিয়া পুনরায় স্বকুন্তে আমাদিগকে রক্ষা কর।

     

    আরও দেখুন
    সাহিত্য পর্যালোচনা
    বাংলা লাইব্রেরী
    অনলাইন গ্রন্থাগার
    বাংলা বই
    সাহিত্য পত্রিকা
    নতুন উপন্যাস
    বাংলা গানের লিরিক্স বই
    বই পড়ুন
    বাংলা ভাষা
    সেবা প্রকাশনীর বই

     

    রাজচক্রবর্ত্তী অগেমেম্‌নন্‌ তোমার সহিত সন্ধি করিতে অত্যন্ত ব্যগ্র। এবং তোমাকে কৃশোদরী ব্রীষীসার সহিত বহুবিধ ধন দিতে প্রস্তুত। এবং তাহার তিন লাবণ্যবতী দুহিতার মধ্যে, যাহাকে তোমার ইচ্ছা, তাহার সহিত তোমার পরিণয় দিতে সম্মত আছেন, কিন্তু যদ্যপি, হে রিপুসূদন, এ সকল বস্তু গ্রহণে তোমার রুচি না হয়, অথচ রিপুপীড়িত গ্রীক্‌যোধদলের প্রতি তুমি দয়া কর। এবং তাহাদিগের প্রাণদানে তাহাদিগকে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ কর। আর এই সুযোগে নিষ্ঠুর রিপু হেক্‌টরকেও ঘোর রণে বিনষ্ট করিয়া অক্ষয় যশঃ লাভ কর।

    বীরকেশরী আকিলীস্‌ উত্তর করিলেন, হে আদিস্যুস্‌, আমি তোমাদিগের নিকট আমার মনের কথা মুক্তকণ্ঠে ব্যক্ত করিব। সে কপট ব্যক্তি নরকদ্বার তুল্য আমার নিকট ঘৃণিত; যে তাহার মনঃভেদবাক্য রসনাকে কহিতে দেয় না। এরূপ ব্যক্তি নরাধম। রাজচক্রবর্ত্তী আগেমেম্‌ননের সহিত আমার ভগ্নপ্রণয় শৃঙ্খল আর কোন মতেই সুশৃঙ্খল হইতে পারে না।

    দেখ! যেমন বিহঙ্গী পক্ষবিহীন ও আত্মরক্ষাক্ষম শিশু শাবকগুলির পালনার্থে বহুবিধ আয়াস সহ্য করিয়া বহুবিধ খাদ্যদ্রব্য আনয়ন করে, আপন জীবনাশায় জলাঞ্জলি দিয়া তাহাদিগের রক্ষণাবেক্ষণ করে, সেইরূপ আমি এ সেনার হিতার্থে কি না করিয়াছি? কত শত কৃতান্তসদৃশ রিপুকুলান্তক রিপুর সহিত ঘোরতর সমর করিয়াছি; কিন্তু ইহাতে আমার কি ফল লাভ হইয়াছে। তোমরা সকলে স্বস্থানে ফিরিয়া যাও। কল্য আমি সাগর পথে স্বজন্ম ভূমিতে ফিরিয়া যাইব।

     

    আরও দেখুন
    গ্রন্থাগার
    বাংলা রান্নার রেসিপি বই
    বাংলা স্বাস্থ্য টিপস বই
    বাংলা উপন্যাস
    PDF
    বই
    অনলাইন বুক
    বাংলা অনুবাদ সাহিত্য
    বাংলা ফন্ট প্যাকেজ
    বাংলা সাহিত্য ভ্রমণ

     

    বীরকেশরী এই নিষ্ঠুর বাক্যে মুগ্ধচিত্ত হইয়া তাহাকে বিবিধ প্রবোধ বাক্যে সাধিলেন। কিন্তু তাহাদিগের যত্ন অকর্ম্মণ্য ও বিফল হইল। বীরকেশরী আকিলীসের হৃদয়কুণ্ডে প্রচণ্ড রোষাগ্নি পূর্ব্ববৎ জ্বলিত রহিল। দূতমহোদয়েরা বিষণ্ণবদনে রাজশিবিরে প্রত্যাগমন করিলে রাজচক্রবর্ত্তী জিজ্ঞাসা করিলেন, হে প্রশংসাভাজন আদিস্যুস্‌! হে গ্রীক্‌ কুলের গৌরব! কি সংবাদ। তোমরা কি কৃতকার্য্য হইয়াছ। আদিস্যুস্‌ উত্তর করিলেন, মহারাজ! বীরকেশরী আকিলীস্‌ এসেনার হিতার্থে রণ করিতে নিতান্ত অনভিলাসুক। কল্য প্রত্যুষে তিনি সাগরপথে স্বদেশে ফিরিয়া যাইবেন। এ কুসংবাদে রাজচক্রবর্ত্তীকে নিতান্ত কাতর ও উন্মনা দেখিয়া রণদুর্ম্মদ দ্যোমিদ্‌ কহিলেন, মহারাজ, এ দুরন্ত প্রগল্‌ভী মূঢ়ের নিকট আপনার দূত প্রেরণ করা অতীব আশ্চর্য্য হইয়াছে। কেননা আপনার বিনীতভাবে তাহার আত্মশ্লাঘা শত গুণে বৃদ্ধি পাইয়াছে, তাহার যাহা ইচ্ছা সে তাহাই করুক। হয় ত, কালে দেবতা তাহাকে রণোৎসুক করিবেন। এক্ষণে আমাদের সকলের বিশ্রাম লাভ করা আবশ্যক। প্রত্যূষে হৈমবতী ঊষা সন্দর্শন দিলে তুমি আপনি পদাতিক ও বাজীরাজী ও রথগ্রামে পরিবেষ্টিত ইহয়া সমরক্ষেত্রে বীরবীর্য্যে কার্য্য সমাধা কর। দেখ, ভাগ্যদেবী কি করেন। রণবিশারদ দ্যোমিদের এতাদৃশী মন্ত্রণা নেতৃগোত্রে প্রসংশনীয় হইল। পরে সকলে গাত্রোত্থান করতঃ যে যাহার শিবিরে বিরাম লাভার্থে গমন করিলেন।

     

    আরও দেখুন
    বইয়ের
    বাংলা সংস্কৃতি বিষয়ক কর্মশালা
    সেবা প্রকাশনীর বই
    বাংলা ভাষা
    বাংলা ই-বুক রিডার
    বাংলা কবিতা
    বাংলা লাইব্রেরী
    বাংলা ফন্ট প্যাকেজ
    গ্রন্থাগার সেবা
    বাংলা ক্যালিগ্রাফি কোর্স

     

    অন্যান্য নেতৃবৃন্দ স্বস্ব শিবিরে সচ্ছন্দে নিদ্রাদেবীর উৎসঙ্গ প্রদেশে বিরাম লাভ করিতে লাগিলেন। কিন্তু বিরামদায়িনী রাজচক্রবর্ত্তী আগেমেম্‌ননের শিবিরে যেন অভিমানে প্রবেশ করিলেন না, সুতরাং লোকপাল মহোদয় দেবীপ্রসাদে বঞ্চিত হইলেন। যেমন, সুকেশ দেবী হীরীর প্রাণেশ দেবকুলপতি যৎকালে আসার, কি শিলা, কি তুষার বর্ষণেচ্ছুক হন, বাত্যারম্ভে আকাশমণ্ডল এক প্রকার ভৈরব রবে পরিপূর্ণ হয়, অথবা যেমন, কোন দেশে রণরূপ রাক্ষস নরকুলের গ্রাসাভিপ্রায়ে আপন বিকট মুখ ব্যাদান করিবার অগ্রে এক প্রকার ভয়াবহ শব্দ সে দেশে সঞ্চারিত হয়, সেইরূপ রাজ-শয়নাগার মহারাজের হাহাকারপূর্ব্বক আর্ত্তনাদে ও দীর্ঘনিশ্বাসে পূরিয়া উঠিল। যত বার তিনি রণক্ষেত্রবর্ত্তী বিপক্ষ পক্ষের প্রতি দৃষ্টিনিক্ষেপ করিলেন। অগ্নিকুণ্ড মণ্ডলীর একত্র সংগৃহীত অংসুরাশি দর্শনে তাহার দর্শনেন্দ্রিয় অন্ধ হইয়া উঠিল। অনিলানীত মুরলী ও বেণু প্রভৃতি অন্যান্য বিবিধ সঙ্গীত যন্ত্রের সুমধুর বিশুদ্ধ তানলয়ে মিশ্রিত কোলাহল ধ্বনিতে শ্রবণালয় যেন অবরুদ্ধ হইয়া উঠিল। যত বার তিনি স্বসৈন্যের প্রতি দৃষ্টি পরিচালনা করিলেন, তাহাদিগের নিরানন্দ অবস্থায় তিনি আক্ষেপ ও রোষে কেশ ছিঁড়িতে লাগিলেন। কতক্ষণ পরে যে শয্যাক্ষেত্র দুর্ভাবনা রূপ কৃষীবল তীক্ষ্ণ কণ্টকময় করিয়াছিল, সে শয্যা পরিত্যাগ করিয়া মহারাজ গাত্রোত্থান করিলেন।

     

    আরও দেখুন
    গ্রন্থাগার সেবা
    বাংলা ভাষা
    বাংলা সাহিত্য ভ্রমণ
    বাংলা সাহিত্য কোর্স
    বাংলা বই
    অনলাইন গ্রন্থাগার
    উপন্যাস সংগ্রহ
    অনলাইন বুক
    ই-বই ডাউনলোড
    নতুন উপন্যাস

     

    প্রথমে বক্ষদেশ সুবর্ণ কবচে আবৃত করিলেন। পরে পদযুগে সুন্দর পাদুকাদ্বয় বাঁধিলেন। এবং পৃষ্ঠদেশে এক প্রশস্ত পিঙ্গল বর্ণ সিংহ চর্ম্ম ধারণ করিয়া দক্ষিণ হস্তে স্বীয় সুদীর্ঘ শূল লইলেন। স্কন্দপ্রিয় বীরকেশরী মানিল্যুসও স্বশিবিরে সৈন্যের দুর্দ্দশাজনিত ব্যাকুলতায় নিদ্রা পরিহরণ করিয়া শয্যা ত্যাগ করিলেন, এবং রণের বেশ বিন্যাস করিয়া স্বীয় রাজভ্রাতার শিবিরাভিমুখে যাত্রা করিতেছেন, এমত সময়ে পথিমধ্যে রথীদ্বয়ের সমাগমন হইল। কণিষ্ঠ কহিলেন, হে বন্দনীয়! আপনি কি নিমিত্ত এ সময়ে এ পরিচ্ছদে শয্যা পরিত্যাগ করিয়াছেন, আপনার কি এই ইচ্ছা যে রিপুদলে কোন গুপ্ত চরকে গুপ্তভাবে প্রেরণ করেন! এ ঘোর তিমিরময় রজনী যোগে এ অসাধ্য-অভীষ্ট সিদ্ধি করিতে কাহার সাধ্য হইবে।

    রাজচক্রবর্ত্তী উত্তর করিলেন, হে ভ্রাতঃ! আমি সুমন্ত্রণার্থে বিজ্ঞবর তাত নেস্তরের শিবিরে যাত্রা করিতেছি! আমার বিলক্ষণ বোধ হইতেছে যে দেবকুলপতি প্রিয়ামনন্দন অরিন্দম হেক্‌টরের নিতান্ত পক্ষ হইয়াছেন। নতুবা কোন একেশ্বর নরযোনি বলী এরূপ অদ্ভুত কর্ম্ম করিতে পারে। মনে করিয়া দেখ, গত দিবসে এ দুর্দ্দান্ত অশান্ত ব্যক্তি কি না করিয়াছিল। গ্রীক্‌সেনার স্মৃতিপথ হইতে ইহার অদ্বিতীয় পরাক্রমের উত্তাপ কি শীঘ্র দূরীকৃত হইবে। হে দেবপুষ্ট ভ্রাতঃ! রিপুকুলত্রাস আয়াস্‌ ও অন্যান্য সুহৃজ্জনকে গিয়া ডাকিয়া আন। আমি বিজ্ঞবর তাত নেস্তরের সন্নিকটে যাই। মহারাজ এইরূপে প্রিয় ভ্রাতার নিকট বিদায় লইয়া বিজ্ঞবর নেস্তরের শিবিরে প্রবেশপূর্ব্বক দেখিলেন, প্রাচীন রণসিংহ কোমল শয্যাশায়ী হইয়া রহিয়াছেন। একখানি ফলক দুইটা শূল এবং ভাস্বর শিরষ্ক, এই সকল বিচিত্র পরিচ্ছদ নিকটে শোভিতেছে। মহারাজের পদধ্বনিতে নিদ্রা ভঙ্গ হইলে, বৃদ্ধ যোধপতি কহিলেন; তুমি, এ ঘোর অন্ধকার রাত্রিকালে নিদ্রা পরিহার করিয়া, আমার এ শয়ন মন্দিরে সহসা উপস্থিত হইলে কেন। কারণ কহ! নতুবা নীরবে আমার নিকটবর্ত্তী হইলে তোমার আর নিস্তার থাকিবে না, তুমি কি চাহ। দেখ, যদি স্বরসংযোগে তোমাকে চিনিতে পারি। মহারাজ উত্তর করিলেন, হে তাত! হে গ্রীক্‌বংশের অবতংস! আমি সেই হতভাগা আগেমেম্‌নন্‌! যাহাকে দেবরাজ দুস্তর বিপদার্ণবে মগ্ন করিয়াছেন। এ দুরবস্থা হইতে যে আমি কি প্রকারে নিষ্কৃতি পাই, এই সম্পর্কে তোমার পরামর্শাভিলাষে এরূপ স্থানে আসিয়াছি। আমি দুর্ভাবনায় একবারে যেন জীবন্মৃত ও হতজ্ঞান। হে তাত! দেখ, রণদুর্ব্বার হেক্‌টর স্ববলে আমাদের শিবির দ্বারে থানা দিয়া রহিয়াছে। কে জানে, তাহার কৌশলে অদ্য নিশাকালে আমার কি অনিষ্ট ঘটে। বিজ্ঞবর সস্নেহ বচনে কহিলেন বৎস! আগেমেম্‌নন্‌! আমার বিবেচনায় ত্রিদশাধিপতি হেক্‌টরকে এতদূর আমাদের অপকার করিতে দিবেন না। কিন্তু চল, আমরা উভয়ে অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সহিত এ বিষয়ের পরামর্শ করিগে। আমরা যে বিষয়, বিপজ্জালে বেষ্টিত, তাহার কোনই সন্দেহ নাই। এই কহিয়া বৃদ্ধবর আস্তে ব্যস্তে রণশস্ত্র ধারণ করিয়া রাজচক্রবর্ত্তীর সহিত দেবোপম জ্ঞানী আদিস্যুসের শিবিরে গমন করিলেন। আদিস্যুস্‌ অতিশীঘ্র বীরদ্বয়ের আহ্বানে শিবিরের বহির্গত হইলেন। পরে তিন জনে একত্রে রণদুর্ম্মদ দ্যোমিদের শিবির সন্নিকটে দেখিলেন যে, বীরকেশরী রণসজ্জায় নিদ্রা যাইতেছেন। তাহার চতুষ্পার্শ্বে শূলীদলের চ্যুত শূলাগ্র বিদ্যুতের ন্যায় চক্‌মক্‌ করিতেছে! প্রাচীন রণসিংহ পদস্পর্শনে সুপ্ত রথীর নিদ্রাভঙ্গ করিয়া কহিলেন, হে দ্যোমিদ্‌! এ কাল নিশাকালে কি তোমার সাদৃশ বীরপুরুষের এরূপ শয়ন উচিত। রণবিশারদ দ্যোমিদ্‌ চকিত হইয়া গাত্রোত্থান করিয়া কহিলেন, হে বৃদ্ধ! তোমার সদৃশ ক্লান্তি শূন্য জন কি আর আছে! এ সৈন্যে কি কোন যুবক পুরুষ নাই, যে সে তোমাকে বিরাম সাধনে অবকাশ দান করে। এই কহিয়া চারি জন প্রহরীদিগের দিকে চলিলেন। যেমন বন্যপশুময় বনের নিকটে মাংসাহারী পশুগণের দূরস্থিত ঘোর নিনাদ শ্রবণে সতর্ক হইয়া মেষপাল দলেরা স্ব স্ব মেষপালের রক্ষার্থে বিরামদায়িনী নিদ্রায় জলাঞ্জলি দিয়া অস্ত্র হস্তে জাগিয়া থাকে, বীরবরেরা দেখিলেন, যে প্রহরীদল অবিকল সেইরূপ রহিয়াছে। বৃদ্ধবর সন্তোষোক্তি ও সাহসোত্তেজক বচনে কহিলেন, হে বৎসদল! প্রহরী কার্য্য সমাধা করিতে হইলে বীর বীর্য্যশালী জনগণের এই রূপই উচিত। অতএব তোমরাই ধন্য! এই কহিয়া বীরবরেরা পরিখা পার হইয়া এক শবশূন্যস্থলে বসিয়া নিভৃতে নানা উপায় উদ্ভাবন করিতে লাগিলেন।

     

    আরও দেখুন
    সেবা প্রকাশনীর বই
    PDF
    বাংলা উপন্যাস
    বাংলা সাহিত্য ভ্রমণ
    বাংলা শিশু সাহিত্য
    ই-বই ডাউনলোড
    বাংলা গানের লিরিক্স বই
    অনলাইন বই
    বইয়ের
    বাংলা ইসলামিক বই

     

    বিজ্ঞবর নেস্তর কহিলেন, আমাদের মধ্যে এমত সাহসিক ব্যক্তি কে আছে, যে সে গুপ্তচর কার্য্যে কৃতকার্য হইতে পারে। রণবিশারদ দ্যোমিদ্‌ কহিলেন, আমার সাহসপূর্ণ হৃদয় এ কঠিন কর্ম্মে আমাকে উৎসাহ প্রদান করে, তবে যদি আমি কোন একজন সঙ্গী পাই, তাহা হইলে মনোরঙ্গের আর ও বৃদ্ধি হয়। বীরবরের এই কথা শুনিয়া অনেকেই তাঁহার সঙ্গে যাইবার প্রসঙ্গ করিলেন, কিন্তু তিনি কেবল বিবিধ কৌশলী আদিস্যুসকে সহচর করিতে ইচ্ছা প্রকাশ করিলেন। বীরদ্বয় ছদ্মবেশ ধরিলেন। এবং অতি তীক্ষ্ণ অস্ত্র সকল দেহাচ্ছাদন বস্ত্রে গোপনে সঙ্গে লইলেন। উভয়ে যাত্রা করিতেছেন, এমত সময়ে দেবী আথেনী বায়ুপথে একটি বক পক্ষী উড়াইলেন। সুতরাং ঘোর তিমির যোগে বীরযুগল সেই শুভ শকুন দেখিতে পাইলেন না। তথাচ পক্ষ পরিচালনার শব্দে দেবীদত্ত সুলক্ষণ তাহাদিগের বোধগম্য হইল। মহাদেবীর বিবিধ স্তুতি করণান্তে সিংহদ্বয় সে ঘোর অন্ধকারময় রজনীযোগে শবরাশি, ভগ্নঅস্ত্রস্তূপ ও কৃষ্ণবর্ণ শোণিতস্রোতের মধ্য দিয়া নির্ভয় হৃদয়ে রিপুদলাভিমুখে নীরবে চলিলেন।

    কতক্ষণ পরে দেবাকৃতি আদিস্যুস কিঞ্চিৎ অগ্রসর হইয়া সহচরকে অতি মৃদুস্বরে কহিলেন, সখে দ্যোমিদ্‌! বোধ হয়, যেন কোন একজন অরিপক্ষের শিবির দেশ হইতে এ দিকে আসিতেছে। আমি এক আগন্তুক জনের পদধ্বনি শুনিতে পাইতেছি। কিন্তু এ কি কোন গুপ্তচর, না তস্কর মৃতদেহ হইতে বস্ত্রাদি চুরি করণাভিলাষে আসিতেছে, এ নির্ণয় করা দুষ্কর। আইস! আমরা উহাকে আমাদিগের শিবিরাভিমুখে যাইতে দি। পরে পশ্চাদ্ভাগ হইতে উহার পলায়নের পথরুদ্ধ অতি সহজ হইবে। এই কহিয়া বীরদ্বয় মৃতদেহ পুঞ্জমধ্যে ভূতলশায়ী হইলেন। অভাগা আগন্তুক জন অকুতোভয়ে ও দ্রুতগমনে গ্রীক্‌ শিবিরাভিমুখে চলিতে লাগিল। অকস্মাৎ বীরদ্বয় গাত্রোত্থান করিয়া তাহার পশ্চাতে ধাবমান হইলেন। যেমন তীক্ষ্ণদণ্ড শুনকদ্বয় বনপথে আর্ত্তনিনাদী কুরঙ্গ কি শশকের পশ্চাতে ধাবমান হয়, বীরদ্বয় সেইরূপ পলায়নোন্মুখ চরের অভিমুখে ঊর্দ্ধশ্বাসে প্রাণপণে দৌড়িলেন। মহাতঙ্কে অভাগা সহসা গতিহীন হইল। এবং অকাতরে কহিল। “হে বীরদ্বয়! তোমরা আমার প্রাণদণ্ড করি না। আমাকে রণবন্দী করিয়া রাখ, আমার নাম দোলন। আমার পিতা আমাকে মুক্ত করিতে অনেক অর্থ দিবেন, তাহার কোনই সন্দেহ নাই; কেননা, আমি তাহার একমাত্র পুত্র।” প্রিয়ম্বদ আদিস্যুস প্রিয়বচন কহিলেন। “হে দোলন, তোমার ভয় নাই। তোমাকে বধ করিলে আমাদের কি ফল লাভ হইবে। কিন্তু তুমি আমাদের সহিত চাতুরি করিও না, করিলে প্রচুর দণ্ড পাইবে। হেক্‌টর কোথায়? এবং শিবিরের কোন পার্শ্বে সৈন্যদল নিতান্ত ক্লান্ত অবস্থায় নিদ্রার-বশীভূত হইয়া রহিয়াছে?” দোলন রোদন করিতে করিতে কহিল, “হায়! হেক্‌টরই আমার এই বিপদের হেতু! সে আমাকে নানা লোভ দেখাইয়া এই পথের পথিক করিয়াছে। তাহার সহিত নেতৃবৃন্দ দেবযোনি ঈল্যুসের সমাধিমন্দির-সন্নিধানে পরামর্শ করিতেছে। কোন বিচক্ষণ বীর শিবির রক্ষা কর্ম্মে নিযুক্ত নাই। তথাচ স্থানে স্থানে যোধচয় অস্ত্র ধারণ করতঃ অতি সতর্কে আছে, কিন্তু যদি তোমরা শিবিরে প্রবেশ করিতে চাহ, তবে যেদিকে ট্রাকীয়া দেশের নরপতি হ্রীস্যুস্‌ শয়ন করিতেছেন, সেই দিকে যাও। কেননা, নরেন্দ্র কেবল অদ্য সায়ংকালে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছেন, এবং তাহার সঙ্গীবর্গ পথশ্রান্ত হইয়া নিতান্ত অসাবধানে নিদ্রাদেবীর সেবা করিতেছে। রাজেশ্বর হ্রীস্যুসের অশ্বাবলী ত্রিভুবনে অতুল্য, তাহার রথ সুবর্ণরজতে নির্ম্মিত, এবং তাহার হৈমবর্ম্ম এতাদৃশ অনুপম যে তাহা কেবল দেববীর পুরুষেরই উপযুক্ত। হে রিপু-বিমুখকারী বীরদ্বয়! দেখ, আমি তোমাদের সম্মুখে সত্য ব্যতীত মিথ্যা কহি নাই, অতএব তোমরা আমাকে, হয় ত, রণবন্দী করিয়া শিবিরে প্রেরণ কর, নচেৎ এ স্থলে গাঢ় বন্ধনে বন্ধন করিয়া রাখিয়া যাও।” প্রাণ ভয়ে বিকলাত্মা দোলন এইরূপে রিপুদ্বয়ের নিকট কাকুতি মিনতি করিতেছেন, এমত সময়ে নির্দ্দয়হৃদয় দ্যোমিদ্‌ সহসা তাহার গলদেশে প্রচণ্ড খড়্গাঘাত করিলেন। মস্তক ছিন্ন হইয়া ভূতলে পড়িল।

     

    আরও দেখুন
    পিডিএফ
    বাংলা টাইপিং সফটওয়্যার
    নতুন উপন্যাস
    বাংলা গানের লিরিক্স বই
    বাংলা সাহিত্য কোর্স
    বাংলা সংস্কৃতি বিষয়ক কর্মশালা
    ই-বই ডাউনলোড
    বই
    বাংলা শিশু সাহিত্য
    উপন্যাস সংগ্রহ

     

    তৎপরে বীরদ্বয় অতি সাবধানে ট্রাকীয়া দেশস্থ সৈন্যাভিমুখে চলিলেন, এবং সহসা তাহাদিগকে আক্রমণ করিলেন, অনেক বীরপুরুষ শমনাগারে চলিলেন। রাজেশ্বর হ্রীস্যুসও অকালে কালগ্রাসে পড়িলেন, রাজার অণুপমা অশ্বাবলী একত্রে বন্ধন করিয়া বীরদ্বয় শিবিরাভিমুখে অতি দ্রুতবেগে চলিতে লাগিলেন। ট্রয় সৈন্যে সহসা মহা কোলাহলধ্বনি হইয়া উঠিল।

    এ দিকে বীরদ্বয় হ্রীস্যুস্‌ রাজেশের অসদৃশ অশ্বাবলী অপহরণ করিয়া আশুগতিতে স্বদলে রণাভিমুখে চলিলেন। যেস্থলে রাজচক্রবর্ত্তী আগেমেম্‌নন্‌ ও বৃদ্ধ নেস্তরাদি পরিখার সন্নিকটে নিভৃতে বসিয়াছিলেন, সে স্থলে আগন্তুক বীরদ্বয়ের পদধ্বনি শ্রুত হইলে রাজচক্রবর্ত্তী ত্রস্ত ও সোৎকণ্ঠ ভাবে নেস্তরাদি সঙ্গী জনকে কহিলেন, “বোধ হয়, কতিপয় অশ্বারোহী জন পদাতিকদলে অতিদ্রুত গতিতে এ দিকে আসিতেছে। অতএব সকলে সাবধান, একজন কহিলেন, “এ বৈরী নহে, ঐ দেখ বিবিধ কৌশলশালী আদিস্যুস্‌ ও রিপুগর্ব্ব খর্ব্বকারী দ্যোমিদ্‌ কয়েকটী রণতুরঙ্গ সঙ্গে করিয়া আসিতেছে।” রাজা মিত্রদ্বয়কে অমিত্রচ্ছলে দর্শন করিয়া পরমাহ্লাদে কহিলেন, “হে গ্রীক্‌কুল গৌরব রবি আদিস্যুস,” তোমাকে কোন দেব এ দুর্লভ প্রসাদ দান করিয়াছেন, তুমি কি এই অশ্বাবলী অংশুমালীর একচক্র রথ হইতে কৌশল চক্রে অপহরণ করিয়াছ, এরূপ অপরূপ অশ্বাবলী কি আর এ বিশ্বখণ্ডে আছে?

     

    আরও দেখুন
    বাংলা ই-বই
    বিনামূল্যে বই
    বুক শেল্ফ
    বাংলা কমিকস
    Books
    বাংলা গানের লিরিক্স বই
    বইয়ের
    বাংলা বইয়ের সাবস্ক্রিপশন
    বাংলা বিজ্ঞান কল্পকাহিনী
    উপন্যাস সংগ্রহ

     

    মহেষ্বাস্‌ আদিস্যুস্‌ রাজপ্রবীর হ্রীস্যুসের নিধন ও বাজীরাজীর অপহরণ বৃত্তান্ত সংক্ষেপে বর্ণন করিলে সকলে আনন্দ চিত্তে শিবিরে গমন করিলেন, ক্লান্তু বীরযুগল চলোর্ম্মি সাগরে রক্তার্দ্র দেহ অবগাহন করতঃ সুরভি তৈলে সুবাসিত করিলেন। পরে সুখাদ্য দ্রব্যে ক্ষুধা নিবারণ করিয়া প্রথমে মহাদেবী অথেনীর তর্পনার্থে ভূতলে কিঞ্চিৎ সুরা সিঞ্চন করতঃ অবশিষ্ট ভাগ হৃষ্টহৃদয়ে পান করিতে লাগিলেন।

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ সমাপ্ত।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleএকেই কি বলে সভ্যতা? – মাইকেল মধুসূদন দত্ত
    Next Article শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    Related Articles

    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    চতুর্দশপদী কবিতাবলী – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    মেঘনাদবধ কাব্য – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    একেই কি বলে সভ্যতা? – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    পদ্মাবতী নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }