Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মাছ

    উপন্যাস ছোটগল্প সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এক পাতা গল্প15 Mins Read0

    মাছ

    রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে সুরমা বারান্দায় এলেন কাক তাড়াতে। দুটো কাক অনেকক্ষণ থেকে বিশ্রী। সুরে ডেকেই চলেছে। সুরমা এর আগে দু-তিনবার এসে তাড়িয়ে দিয়ে গেছেন, তবু ওরা ফিরে আসে। ওদের কি আর কোনও জায়গা নেই? এই বারান্দায় এসেই ডাকতে হবে? ওরা কী চায়? তারের জাল দিয়ে বারান্দাটা ঢেকে দিতে হয়, কিন্তু বাড়িওয়ালা দেবে না, নিজেদের খরচ করতে হবে। প্রস্তাবটা শুনে প্রতুল হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। সুরমার কাকের ডাক সহ্য হয় না, তা বলে কি জালের বাইরে বসে কাক ডাকতে পারে না?

    রান্নাঘরের জানলাটা সবসময় মনে করে বন্ধ করে দিতে হয়। একটা হুলো বেড়াল ঢুকে পড়ে যখন-তখন। হুলো বেড়ালটা মহা চোর, একটু অন্যমনস্ক হলেই মাছ নিয়ে পালাবে। সুরমা রান্নাঘরে থাকলেও সেটা এক-একসময় জানলা দিয়ে বাঘের মতন মুখটা বাড়িয়ে দেয়। চোখ দুটো জ্বলজ্বল করে। মুখে হুসহুস করলেও সে ভয় পায় না। যেন সে বলতে চায়, আমায় কিছু দেবে না কেন? দাও, দাও! ওটাকে তাড়াবার জন্য সুরমা রান্নাঘরে একটা লাঠি রেখেছেন।

    সকাল দশটার পর বাড়ি খালি হয়ে যায়। স্বামী অফিসে, দুই ছেলেমেয়ে স্কুলে। ফ্ল্যাটের দরজাটা বন্ধ করে রাখেন সুরমা। এ-পাড়ায় খুব ভিখিরি আর ফেরিওয়ালাদের উপদ্রব। বছরখানেক আগে চাঁদা চাইবার নাম করে এক দুপুরবেলা তিনটি ছেলে সেনেদের বাড়ির দোতলায় এসে ডাকাতি করে গিয়েছিল। সেইজন্য সুরমা কক্ষনো দরজা খোলেন না। তবু প্রায় সারা দুপুরই সুরমার ওই হুলো বেড়াল আর কাকের ভয়ে কাটে। ওরা যে কখন ঢুকে পড়ে কী খাবে, তার কোনও ঠিক নেই।

    সুরমা খুব কাছে গিয়ে কাক দুটোকে তাড়ালে ওরা উড়ে গিয়ে পাশের বাড়ির ছাদের কার্নিশে বসে। একটু পরেই আবার ফিরে আসে। ওরা কি অন্য কোনও বাড়ি চেনে না। শুধু এ-বাড়ির। জিনিসই চুরি করতে হবে? প্রতুলের ধারণা, কাকদের মধ্যে নাকি আলাদা-আলাদা বাড়ি ভাগ করা আছে। এক কাক অন্য কাকে বাড়িতে ভাগ বসাতে যায় না। হুলো বেড়ালটা অবশ্য সারা পাড়া ঘুরে বেড়ায়, মনে হয় তার খিদের শেষ নেই।

    ফ্ল্যাটের দরজায় খটখট করে শব্দ হতেই সুরমা ভয় পেয়ে একটু কেঁপে উঠলেন। এত জোর শব্দ কোনও ভিখিরি বা ফেরিওয়ালার তো নয়! সুরমার ধারণা, পৃথিবীর সব গুন্ডা-বদমাশরা জেনে গেছে যে দুপুরবেলা তিনি একা থাকেন। কিছুদিন আগেও একটা সর্বক্ষণের কাজের মেয়ে ছিল। একদিন জানা গেল সে চিনি, আটা, তেল চুরি করে। সুরমা শুধু-শুধু তাকে সন্দেহ করেননি, একদিন ধরেও ফেললেন হাতে নাতে। সেই মুহূর্তে তাড়িয়ে দিলেন তাকে। মেয়েটা কান্নাকাটি করে সুরমার পায়ে ধরে ক্ষমা চাইতে গিয়েছিল, তিনি গ্রাহ্য করেননি। একটা চোরকে কখনও বাড়িতে রাখা যায়? দুনিয়াটাই যেন চোর-ডাকাতে ভরে গেছে।

    দরজার কাছে এসে সুরমা একটু কাঁপা গলায় জিগ্যেস করলেন, কে?

    ওধার থেকে একজন ভাঙা-ভাঙা গলায় বললেন, মাসিমা, আমি ঝুনু। একবার দরজা খুলুন।

    ঝুনু নামটি সুরমার মনে কোনও দাগ কাটল না। কে ঝুনু? মাসিমা বলে ডাকল। গলার। আওয়াজটা একটু যেন চেনা-চেনা মনে হচ্ছে। তিনি আবার জিগ্যেস করলেন, কী চাই?

    —মাসিমা, দরজাটা একবারটি খুলুন না!

    -কী দরকার, ওইখানে থেকেই বলো।

    —একটা জিনিস এনেছি আপনার জন্য।

    —কী জিনিস? কে পাঠিয়েছে?

    —নন্তুদা পাঠিয়েছে।

    সুরমার সারা শরীর ঝিমঝিম করে উঠল। নন্তু! এ-বাড়িতে কেউ ও নাম উচ্চারণ করে না। গত এক বছরের মধ্যে নন্তু এদিকে ভুলেও পা বাড়ায়নি। সে কেন জিনিস পাঠাবে? নম্ভর নাম করে যারা আসে, তাদের তো দরজা খোলার কোনও প্রশ্নই নেই। ওরা কতজন এসেছে কে জানে!

    নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে সুরমা বললেন, আমার কোনও জিনিসের দরকার নেই। ফেরত নিয়ে যাও!

    ওপাশ থেকে ভাঙা কণ্ঠস্বরে উত্তর এল, নন্তুদা দিয়ে যেতে বলেছে। আমি এখাইে রেখে যাচ্ছি। নদা আজ একবার আসতে পারে!

    ধপাস করে কী যেন একটা পড়ল মেঝেতে। তারপর সিঁড়ি দিয়ে একজনের নেমে যাওয়ার শব্দ শুনতে পেলেন সুরমা।

    কী রেখে গেল? বোমা, বন্দুক? গয়নার পুঁটলি? এখন কী হবে? সুরমা দরজার কাছে পাথরের মূর্তির মতন দাঁড়িয়ে রইলেন কিছুক্ষণ। নন্তু কি এইভাবে গায়ের ঝাল মেটাতে চায়? দরজার বাইরে যে জিনিসটা পড়ে পইল, পাশের ফ্ল্যাটের কেউ-না-কেউ একটু বাদেই সেটা দেখতে পাবে! জিনিসটা বাইরে পড়ে থাকবে, না ভেতরে নিয়ে আসা উচিত?

    দরজার ছিটকিনি খুলে সামান্য একটু ফাঁক করলেন সুরমা। গলা-ভাঙা ছেলেটা চলে যাওয়ার নাম করে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে নেই তো? কী জিনিস ফেলে গেল তাও দেখা যাচ্ছে না।

    এবার দরজাটা ভালো করে খুলে সুরমা দেখলেন মাটিতে পড়ে আছে একটা বেশ বড় আকারের বোয়াল মাছ। অন্তত আড়াই কেজি ওজন হবেই। মাছটার কানকোয় সুতলি বাঁধা। ছেলেটা হাতে ঝুলিয়ে নিয়ে এসেছিল।

    ভয়াবহ কোনও জিনিস নয়, হঠাৎ নন্তু একটা মাছ পাঠিয়েছে?

    মাছটা সোনালি রঙের, চকচক করছে গা। একেবারে টাটকা। এত বড় মাছ এ-বাড়িতে কোনওদিন কেনা হয় না।

    ওই মাছ ভেতরে আনার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। কিন্তু দরজার বাইরে পড়ে থাকবে? এক্ষুণি ফেলে দেওয়া দরকার। অতবড় মাছটা কোথায় ফেলবেন সুরমা? ছেলেটা বলে গেল নন্তু আজ আসবে। এত সাহস সে কোথায় পেল, নাকি সে আসছে উলটে ভয় দেখাতে!

    মাছটা তাড়াতাড়ি ভেতরে এনে দরজা বন্ধ করে দিলেন সুরমা। এত ভালো, টাটকা একটা মাছ কি ফেলে দেওয়া যায়?

    অন্য কোনও মাছ না পাঠিয়ে নন্তু বোয়াল মাছ পাঠিয়েছে। এত বড় বোয়াল মাছ বাজারে সচরাচর দেখাই যায় না। বোয়াল মাছের চচ্চড়ি প্রতুল খুব ভালোবাসেন। পেটি-গাদা করে কেটে ঝোল নয়, সমস্ত মাছটা সেদ্ধ করে ভেঙে ফেলে, তারপর ঘি গরম মশলা দিয়ে শুকনো-শুকনো করে রান্না। প্রতুল প্রায়ই বলতেন, সেই দেশে থাকতে মায়ের হাতে রান্না যে বোয়াল মাছের। চচ্চড়ি খেয়েছি, সেরকম আর পেলাম না কখনও! তারপর সুরমা প্রতুলের মায়ের কাছ থেকে এই রান্না শিখেছেন। প্রতুল তারিফ করেছেন। বোয়াল মাছের চচ্চড়ি নরও খুব প্রিয় ছিল। কিন্তু। টানাটানির সংসারে আস্ত একটা মাছ কেনা হয় আর কদিন! বছরে বড়জোর একবার কি দু-বার!

    নন্তু খবর পাঠিয়েছে, সে আজ আসবে, তার আগে পাঠিয়ে দিয়েছে এই মাছ। সে সুরমার হাতের রান্না চচ্চড়ি খেতে চায়। কোনও হোটেল রেস্টুরেন্টে তো বোয়াল মাছের চচ্চড়ি পাওয়া যাবে না!

    কেন আসবে নন্তু? এ-বাড়িতে ঢোকা না তার নিষেধ, তা কি সে ভুলে গেল? একটা মাছ পাঠালেই তাকে খাতির করার হবে?

    সুরমার চোখে জল এসে গেল। বাড়িতে আর একটা লোক নেই যে পরামর্শ চাওয়া যায়! স্বামীকে লুকিয়ে কোনও কিছু করতে ভয় পান সুরমা। কঠোর আদর্শের মানুষ প্রতুল, ন্যায়-অন্যায় বোধ অতি প্রবল।

    এখন বাজে মোটে এগারোটা। চারটের আগে ছেলেমেয়েরা কেউ স্কুল-কলেজ থেকে বাড়ি ফিরবে না। কিন্তু তাহলে দুপুরেই খেতে আসবে, সেসময় প্রতুল বাড়িতে থাকবেন না, সে জানে!

    নিজের মায়ের পেটের ভাই একদিন তাঁর হাতের রান্না খেতে চেয়েছে, তাও খাওয়াতে পারবেন নাসুরমা? যতই অন্যায় করুক, তবু মায়ের পেটের ভাই তো!

    একটু ছাই মেখে কুটতে হয় এই মাছ, কিন্তু আজকাল তো রান্নাঘরে ছাই থাকে না। গ্যাসের স্টোভ। সুরমা বড় আঁশবঁটিটা বার করলেন। বাড়িতে গরম মশলা নেই। ঘি আছে একটুখানি। এমন টাটকা মাছের এমনিতেই ভালো স্বাদ হবে।

    জেল থেকে যেদিন ছাড়া পায় নন্তু, সেদিন নিজে তাকে আনতে গিয়েছিলেন প্রতুল। ট্যাক্সি করে এনেছেন। সুরমা রান্না সেরে রেখেছিলেন আগেই। জেলে ভালো করে খেতে পায়নি বলে, বাড়িতে ফেরার একটু পরেই তাকে খেতে বসিয়ে দেওয়া হল। প্রতুল তার সঙ্গে খেতে বসলেন না, পায়চারি করতে লাগলেন বারান্দায়। নন্তুর খাওয়া শেষ হয়ে গেলে প্রতুল তার সামনে একটা একশো টাকার নোট ছুড়ে ফেলে দিয়ে বলেছিলেন, আমার বাড়িতে এই তোমার শেষ খাওয়া, নন্তু। সুটকেস গুছিয়ে নাও, এ-বাড়িতে তোমার আর জায়গা হবে না। তুমি যেখানে ইচ্ছে যাও!

    মাথা নীচু করে নন্তু মিনমিন করে বলেছিল, আমাকে শেষবারের মতন ক্ষমা করুন, জামাইবাবু। একটা লাস্ট চান্স দিন।

    প্রতুল বলেছিলেন, তোমাকে অনেকবার ক্ষমা করেছি। আর কোনও চান্স দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তোমার জন্য আমার মান-সম্মান সব খোয়াব? তোমার সঙ্গে আমাদের আর কোনও সম্পর্ক নেই।

    সুরমা প্রতিবাদ করতে পারেননি। প্রতুলের যুক্তি তিনি আগেই মেনে নিয়েছিলেন। নিজের ভাইয়ের জন্য কি তিনি নিজের ভবিষ্যৎ নষ্ট করবেন?

    এত বড় মাছটা কোটার পর একটা ডেকচি ভরে গেল। এত মাছ, কে খাবে? ভাগ্যিস। ইনস্টলমেন্টে একটা রেফ্রিজারেটার কেনা হয়েছে গত মাসে, তাই কিছুটা রেখে দেওয়া যাবে।

    নন্তু কখন এসে পড়বে কে জানে! সুরমা মাছটা যখন রান্না করছেন, তখন নন্তু এলে খেতে দেবেন। ঠিকই। তবু তাঁকে বলতে হবে, তোর জামাইবাবু এসে পড়ার আগেই তুই চলে যা! আর কখনও এরকম মাছ-টাছ পাঠাবি না।

    চচ্চড়িতে মুড়ো দেওয়া যায় না। যে-কোনও মাছের মুড়ো নন্তুর খুব পছন্দ। মুড়োটা দিয়েও আলাদা একটা ঝোল করতে হবে!

    নন্তু কি ভালো হয়ে গেছে? সে কি সৎপথে রোজগার করে এই মাছটা কিনে পাঠিয়েছে? প্রতুল বলেছিলেন, অন্তত তিন বছর যদি সে সৎ পথে থাকতে পারে, তার প্রমাণ দেয়, তাহলে তাকে আবার এই বাড়িতে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে।

    নন্তুকে দেখার জন্য সুরমার মনটা হঠাৎ আকুলি-বিকুলি করে উঠল!

    সুরমার বিয়ের পাঁচ বছর বাদে তাঁর বাবা আর মা মারা গেলেন ছমাসের মধ্যে। সুরমারা তিন। বোন, একটা মোটে ছোট ভাই ওই নন্তু। তিন বোনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। নন্তকে প্রথমে পাটনায় নিয়ে গেলেন তাঁর দিদি। সুরমার তুলনায় তাঁর দিদির সংসার অনেক সচ্ছল, জামাইবাবু পাটনার নামকরা উকিল। সুরমার ছোট বোনও নন্তুকে নিজের কাছে রাখতে চেয়েছিল দুর্গাপুরে, কিন্তু দিদি জোর করলেন। পাটনাতেই নন্তু প্রথম কুসঙ্গে পড়ে। লেখাপড়া নষ্ট হয়ে গেল। তিন বছর পর দিদি নন্তুকে পাঠিয়ে দিলেন সুরমার কাছে। নন্তর কাণ্ড-কারখানায় জামাইবাবু খুব বিরক্ত, তা। ছাড়া কলকাতায় না থাকলে ও ছেলে একেবারে উচ্ছন্নে যাবে!

    জানলায় ঝপাস করে একটা শব্দ হতেই সুরমা চমকে উঠে দেখতে পেলেন হুলো বেড়ালটাকে। মাছের গন্ধে-গন্ধে ঠিক এসেছে! সুরমা লাঠি তুলে মারতে গেলেন। ওর মুখখানা দেখলেই ভয় করে। এক-একসময় মনে হয় গায়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে!

    বেড়ালটাকে তাড়িয়ে জানলাটা বন্ধ করে দিলেন সুরমা। এত মাছ, ওই বেড়ালটা কখন এসে মুখ দিয়ে ফেলবে তার ঠিক নেই।

    দরজায় কি কোনও শব্দ হল? নন্তু এসে গেল? রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এসে সুরমা শুনতে পেলেন পাশের ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ হচ্ছে।

    নকে এখানকার স্কুলে ক্লাস টেনে ভরতি করা হয়েছিল। পরপর দু-বার সে ফেল করল। প্রতুল নিজে তাকে পড়াতে বসিয়ে চড়-চাপড় মারলেন কয়েকবার। তারপর একদিন বললেন, ওর পড়াশুনোয় মাথায় নেই, ও কোনওদিন পাশ করতে পারবে না। পাটনায় হিন্দি মিডিয়ামে কয়েক বছর পড়িয়ে ওর আরও ক্ষতি করা হয়েছে।

    পড়াশুনোয় সবার মাথা থাকে না, নন্তু অন্য কোনও কাজ শিখতে পারত। প্রতুল বললেন, কিন্তু অন্তত হায়ার সেকেন্ডারি পাশ না করলে আজকাল কোনও লাইনেই যাওয়া যায় না। অফিসে বেয়ারার চাকরিও কেউ দেবে না।

    কী করে যেন ঠিক খারাপ-খারাপ ছেলেদেরই বন্ধু হিসেবে বেছে নিল নন্তু। প্রায়ই তার নামে। গুণ্ডামি মারামারির অভিযোগ আসে। অনেক চেষ্টা করে তার জন্য বেহালায় একটা কারখানায়। অ্যাপ্রেন্টিসের কাজ জুটিয়ে দিলেন প্রতুল। সেখান থেকেও নন্তু একদিন ফিরে এল রক্তাক্ত শরীর নিয়ে। একদল শ্রমিক নাকি তাকে সেই কারখানায় ঢুকতে দিতে চায় না, তাদের নিজেদের লোক আছে, তাই নন্তুকে মেরেছে।

    তারপর থেকে নন্তু প্রায় ছাড়া গরু হয়ে গিয়েছিল। বাড়িতে খায়, সারাদিন বাইরে-বাইরে কাটায়। চেহারাটাও হয়ে উঠল পাড়ার মাস্তানদের মতন।

    সুরমার ছেলে সৈকত নন্তর থেকে সাত বছরের ছোট, সে সেবার স্কুল ফাইনাল দিচ্ছে। শেষ পরীক্ষা দিয়ে ফেরার দিন দুটি অচেনা ছেলে রাস্তায় তাকে ধরে হঠাৎ ঠ্যাঙাল। তারা নাকি বলেছিল, শালা, নন্তু তোর মামা হয়! তাকে পেলে গলা কেটে দিতুম!

    সেইদিনই প্রতুল সুরমাকে বলেছিলেন, তোমার গুণধর ভাইটির জন্য তোমার নিজের ছেলের। সর্বনাশ হবে, তাই কি তুমি চাও? ও ছেলের সংস্পর্শে থাকলেই তোমার ছেলেমেয়ের ক্ষতি হবে!

    এরপর কিছুদিন নন্তু চুপচাপ ছিল। কিন্তু অতবড় ছেলে হয়েও সে কোনও রোজগার করে না, দিদির সংসারে বসে-বসে খায়, এর গ্লানি সে অনুভব করেছিল ঠিকই।

    এক রাত্তিরে সে বাড়ি ফিরল না। সারারাত জেগে কাটিয়েছিলেন সুরমা। একটা বাপ-মা মরা ছেলে, লেখাপড়া হল না বলে কি একেবারে নষ্ট হয়ে যাবে? প্রতুল তাকে শাসন করেন ঠিকই, কিন্তু তার খাওয়া-পরার জন্য কোনও গঞ্জনা দেন না কখনও। লেখাপড়া শেখেনি বলে কোনও ক্রমেই কি সে ভালো পথে কিছু রোজগার করতে পারে না?

    দু-দিন পরে জানা গেল, আরও তিনটি ছেলের সঙ্গে নন্তু পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। বেলগাছিয়ায় রেলের ইয়ার্ডে ওরা চুরি করতে ঢুকেছিল। ওদের মধ্যে একটি ছেলে পেটে গুলি খেয়ে এখন তখন অবস্থা।

    দেড় বছরের জেল হয়েছিল নন্তর। প্রতুল সুরমাকে জিগ্যেস করেছিলেন, এর পরেও তুমি তোমার ভাইকে আশ্রয় দিতে চাও? তোমার ছেলেমেয়েরা রাস্তায় বেরুলে অন্যরা আঙুল দেখিয়ে বলবে, তোর মামা একটা জেল-খাটা চোর!

    দেড়টার মধ্যে রান্না শেষ করে ফেললেন সুরমা। এখন স্নান করতে গেলে তার মধ্যেই যদি নন্তু এসে পড়ে, দরজা খুলবে কে? স্নানের ঘর থেকে সুরমা শুনতেও পাবেন না, নন্তু দরজা ধাক্কিয়ে ফিরে যাবে। থাক, তিনি বরং বিকেলে স্নান করবেন।

    আড়াইটে…পৌনে তিনটে বেজে গেল, তার মধ্যেও নন্তু এল না। আর কখন সে আসবে? কাক দুটো অলুক্ষুণেভাবে ডেকেই চলেছে। এই নিস্তব্ধ দুপুরে শুধু কাকের ডাকের মতন কর্কশ যেন আর কিছু হতে পারে না! সুরমা হুসহুস করতে লাগলেন। কাক দুটো যেন মজা করছে সুরমাকে নিয়ে, একটু উড়ে যায়, আবার ফিরে আসে।

    আর দেরি করা যায় না। সুরমার খিদে পেয়ে গেছে। এতখানি মাছ রান্না করা কি সোজা কথা! সুরমা খেতে বসে গেলেন তিনটের সময়। দুটো ডেকচিতে ভরা মাছ, তবু সুরমা একটু নিলেন না। অন্য কেউ খাবার আগেই তিনি খাবেন, তা কি কখনও হয়!

    নন্তু এল না কেন? বোয়াল মাছের চচ্চড়ি খাওয়ার শখ হয়েছিল তার, কোনও জায়গায় এতবড় একটা টাটকা মাছ দেখে কিনে ফেলেছে ঝোঁকের মাথায়। দিদির কাছে পাঠিয়েছে নিশ্চয়ই সে ভেবেছে, সে খেতে চাইলে দিদি তাকে ফেরাবে না! কোথায় থাকে নন্তু কে জানে! একশো টাকা সম্বল করে সে এ-বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল। পাটনায় দিদির কাছে যায়নি, দুর্গাপুরে রূপার কাছেও যায়নি। এতদিনের মধ্যে আর কোনও খবর পাওয়া যায়নি তার!

    সে কি রাত্তিরে আসতে সাহস করবে, প্রতুলের সামনে?

    চারটের পর স্কুল থেকে ফিরল দুই মেয়ে। ওরা পাশের একটা ক্লাবে খেলতে যায় বিকেলে। স্কুল থেকে ফিরেই ক্লাবে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। রুটি-তরকারি করা আছে ওদের জন্য। এত। মাছ একদিনে খেয়ে শেষ করা যাবে না। সুরমা জিগ্যেস করলেন, রুটি দিয়ে একটু মাছের চচ্চড়ি খাবি? খুব ভালো মাছ।

    দুই মেয়েই আঁতকে উঠে প্রায় একসঙ্গে বলল, বিকেল বেলায় মাছ খাব? তোমার মাথা খারাপ হয়েছে মা!

    মেয়েরা কেউ মাছ তেমন ভালোবাসে না। ওদের পছন্দ শুধু মাংস। মাংস আর কদিন হয়! মাছ দেখলে ওরা ঠোঁট বাঁকায়। কোনটা কী মাছ তাও জানে না। মাছের বদলে ডিমের ঝোল পেলেও ওরা খুশি।

    প্রতুল ফিরলেন সাতটার সময়, ছেলে তার দু-পাঁচ মিনিট আগে। সুরমা ওদের দুজনকে এড়িয়ে এড়িয়ে থাকার চেষ্টা করলেন। তিনি কোনও কথা গোপন রাখতে পারেন না। তাঁর মুখ দেখলেই বোঝা যায়। তিনি ছাদে চলে গেলেন। এই ফ্ল্যাট বাড়ির ছাদটা মস্ত বড়, অনেকখানি ফাঁকা জায়গা। আকাশ আজ মেঘলা। শুক্লপক্ষ বলে চাপা একটা আলো রয়েছে, পাশের নারকোল গাছটায় হাওয়া বইছে ঝিলিমিলি শব্দে।

    সুরমার মনটা খারাপ হয়ে গেল। শুধু নন্তুর জন্য নয়। নন্তু চলে যাওয়ার পর মাঝে-মাঝেই তার জন্য কেঁদেছেন বটে, কিন্তু এতদিনে সেই শোক খানিকটা ফিকে হয়ে গেছে। নন্তুর জন্য চেষ্টা তো কম করা হয়নি। পৃথিবীতে এত চোর-গুন্ডা, তাদের পরিবার থেকেও একজন সেই দলে যোগ দিয়েছে। তার জন্য তো এ-বাড়ির অন্য ছেলেমেয়েদেরও নষ্ট হতে দেওয়া যায় না।

    নন্তু আজ হঠাৎ মাছটা পাঠিয়ে বিপদে ফেলতে গেল কেন? এমনিতে মাছটা ফেলে দিলেও হত, এখন এত কষ্ট করে রান্না করা হল, শুধু নন্তু খেতে চেয়েছিল বলেই, এখন কি ফেলে দেওয়া যায়? প্রতুল ওই মাছ খেতে এত ভালোবাসেন! এখন প্রতুলের কাছে কী মিথ্যে কথা বলবেন তিনি!

    মাঝে-মাঝে এই ফ্ল্যাট বাড়িতে তরকারিওয়ালা, মাছওয়ালা আসে। বেশ বেলা করেই আসে। তখন ওদের কাছ থেকে সুরমা কোনওদিন মাছ কেনেন না। কিন্তু যদি বলা যায়, একটা। মাছওয়ালা এসে এই মাছটা খুব সস্তায় দিতে চাইল, এত ভালো মাছ, তাই কিনে ফেললাম! এটা খুব অবিশ্বাস্য হবে না। বেশি বেলা হয়ে গেলে মাছওয়ালারা অনেক সময় খুব সস্তায় মাছ দিয়ে যায়। এই কথাটা শুনে প্রতুল কী বলবেন তাও সুরমা আন্দাজ করতে পারেন। প্রতুল হেসে বললেন, তুমি সস্তায় মাছ কিনেছ, নিশ্চয়ই পচা মাছ, তোমাকে ঠকিয়েছে! মাছটা পচা কি না তা তো খেয়েই বুঝবেন প্রতুল!

    ছাদের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে ঘুরতে-ঘুরতে সুরমা সেই বাক্যটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলতে লাগলেন বারবার। কোনভাবে বললে পুরোপুরি সত্যি মনে হবে! মাছওয়ালার নাম বিরজু, তার নামটাও জুড়ে দিতে হবে!

    রাত্রে সবাই খেতে বসে একসঙ্গে। সুরমা আগে অন্যদের পরিবেশন করে তারপর বসে পড়েন নিজেও। আজ প্রত্যেকের জন্য আলাদা বাটিতে করে মাছ সাজিয়ে দিলেন।

    সৈকতই প্রথম অবাক হয়ে বলল, এ কী মা, এত মাছ? কে বাজার করল?

    একটুখানি মুখে দিয়ে সে আবার বলল, দারুণ রান্না হয়েছে তো!

    প্রতুলও বিস্মিতভাবে চেয়ে বললেন, এত মাছ কোথায় পেলে!

    —নন্তু পাঠিয়েছে!

    কথাটা বলে ফেলেই সুরমার ইচ্ছে করল নিজের গালে ঠাসঠাস করে চড় মারতে। ছাদে গিয়ে এতক্ষণ ধরে রিহার্সাল দিয়েও ঠিক সময়ে কথাটা মনে এল না? নিজের বোকামিতে নিজের ওপরেই প্রচণ্ড রাগ হয়।

    প্রতুল বাটির দিকে হাত বাড়াতে গিয়েও হাত গুটিয়ে নিয়ে বললেন, নন্তু পাঠিয়েছে মানে? সে হঠাৎ মাছ পাঠাল কেন? নিজে এসেছিল?

    আর মিথ্যে কথা বলার উপায় নেই সুরমার। রক্ত শূন্য মুখে বললেন, একটা ছেলে এসে ওর নাম করে দিয়ে গেল!

    —তুমি অমনি নিয়ে নিলে?

    দরজার সামনে ফেলে রেখে গেল যে।

    —দিদিকে সে চুরির টাকায় মাছ ঘুষ দিতে চেয়েছে? তুমি এই মাছ খেতে চাও তো যত ইচ্ছে খাও, আমি…

    মাছের বাটিটা এত জোরে ঠেলে দিলেন প্রতুল যে আর একটু হলেই পড়ে যাচ্ছিল টেবিল থেকে। সুরমার হাতে লেগেই সেটা আটকে গেল।

    প্রতুল ছেলেমেয়েদের দিকে কড়া চোখে তাকালেন। তারপর আপন মনে বললেন, যার খুশি সে ওই চুরির টাকার মাছ খেতে পারে, আমি বরং সারাজীবন নিরামিষ খেয়ে থাকব, তবু…

    সুরমা চোখের জল ফেলতে চলে গেলেন রান্নাঘরে। এই চোখের জল শুধু নিজের ওপর রাগে। একটা মিথ্যে কথা বলতে পারলেই যদি স্বামী ও সন্তানদের একদিন ভালো করে খাওয়ানো যেত…সেটুকু যোগ্যতাও তার নেই!

    একসময় ছোট মেয়ে এসে পিঠে হাত দিয়ে বলল মা, খেতে যাবে না? এসো, খেয়ে নাও!

    খাওয়ার টেবিল থেকে সবাই উঠে গেছে। প্রতুলের ওরকম কথার পর কেউ আর মাছের বাটি ছোঁয়নি।

    সবকটা বাটির মাছ তিনি আবার ডেকচিতে ঢাললেন ফেললে তো একসঙ্গেই ফেলতে হবে। নিজের হাতে যত্ন করে রান্না জিনিস ফেলে দেওয়া যে কত শক্ত, তা অন্যরা কী করে বুঝবে?

    নন্তু আসবে বলেও এল না কেন? সে তো এমনি এমন মাছ পাঠায়নি, নিজে এসে সেই মাছ খাবে, সে কথাও বলে পাঠিয়েছিল। তাহলে সে মত বদলাল কেন?

    কেন যেন সুরমার ধারণা হচ্ছে, এই মাছ কেনার টাকা কোনও ভালোভাবেই রোজগার করেছে নন্ত। জামাইবাবুকে সে চেনে, না হলে কি সে পাঠাতে সাহস পেত নিজে এসে সে কথা বলতে পারল না?

    আর-একটা নতুন চিন্তা চাপল সুরমার মাথায়। আজ নন্তর কোনও বিপদ হয়নি তো? পুলিশের হাতে ধরা পড়ল আবার? ওদের দু-দলের মধ্যে মারামারিও তো যখন-তখন হয়, দু-একজন মরে যায়। দিদিকে দিয়ে রান্না করিয়েও খেতে এল না সে?

    খুটখাট করে কাজ সারতে অনেকক্ষণ সময় কাটিয়ে দিলেন সুরমা। প্রতুল ঘুমিয়ে পড়েছেন। বিছানায় শুয়েও ঘুম এল না সুরমার, ছটফট করতে লাগলেন। তাঁর এখনও মনে হচ্ছে, নন্তু ঠিক আসবে।

    হঠাৎ কীসের শব্দ হল না? দরজায় কেউ ধাক্কা দিলেন? এত রাত্রে বেল না বাজিয়ে ঠুকঠুক করছে দরজায়!

    সুষমা হুড়মুড় করে উঠে বসলেন। হ্যাঁ একটা শব্দ হচ্ছে ঠিকই। সুরমা প্রায় ছুটেই চলে এলেন বাইরে। প্রতুল যাই বলুন না কেন, নন্তুকে তিনি ফেরাতে পারবেন না আজ।

    না, বাইরের দরজায় কোনও শব্দ নেই। শব্দটা হচ্ছে রান্নাঘরে। জানলাটা ভেজানো ছিল, সেটা ঠেলে-ঠেলে খুলেছে হুলো বেড়ালটা। আকাশে এখন কিছুটা জ্যোৎস্না ফুটেছে, তাতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। সুরমাকে দেখেও বেড়ালটা জানলার শিকে মুখ গলিয়ে দাঁড়িয়ে রইল।

    একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন সুরমা। হুলোটাকে দেখে ভয় পেলেন না, তাড়ালেন না। তিনি বললেন, আয়, খাবি আয়!

    মাছের ডেকচিটা নিয়ে এসে মাটিতে অনেকটা মাছ ঢেলে দিলেন তিনি। হুলোটা নির্ভয়ে এসে তাতে মুখ দিল। যেন এটা তার দাবিই ছিল। খাক, তৃপ্তি করে খাক।

    সুরমা ভাবলেন, খানিকটা রেখে দেবেন কাল সকালের জন্য। কাক দুটোকে দিতে হবে। ওদের দেখলেই লোকে তাড়ায়, ওদেরও প্রত্যেক দিনই খেতে হয় চুরি-চামারি করে। যত্ন করে ডেকে তো কেউ কখনও খাওয়ায় না!

    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleমাংস
    Next Article মাত্র আধখানা শতাব্দী

    Related Articles

    ছোটগল্প বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

    কাদা kada

    August 11, 2025
    উপন্যাস কল্লোল লাহিড়ী

    ইন্দুবালা ভাতের হোটেল – কল্লোল লাহিড়ী

    May 28, 2025
    উপন্যাস বুদ্ধদেব গুহ

    কোয়েলের কাছে – বুদ্ধদেব গুহ

    May 23, 2025
    আশাপূর্ণা দেবী ছোটগল্প

    আসল বেনারসী ল্যাংড়া

    April 5, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রবার্টসনের রুবি – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    বোম্বাইয়ের বোম্বেটে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Our Picks

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }