Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    শিকার কাহিনি

    উপন্যাস সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এক পাতা গল্প13 Mins Read0

    শিকার কাহিনি

    মেয়েটিকে দেখলেই বোঝা যায়, সে আগে কখনও কলকাতায় আসেনি।

    হাওড়া স্টেশনে সকাল পৌনে দশটায় ভিড়ের মধ্যে সে স্পষ্টতই একা। একটা হলদে ডুরে তাঁতের শাড়ি পরা। কপালে লাল টিপ। সিঁথিতে অনেকখানি সিঁদুর। তার বয়েসে তেইশ চব্বিশের বেশি না। পাতলা দোহারা। একটু বেশি লম্বা বলে হিলহিলে ভাব আছে। তার চোখে প্রতিফলিত হচ্ছে প্রথম দেখা শহরের ছবি!

    অফিস টাইমে সবাই ব্যস্ত। হুড়োহুড়িতে মত্ত। এমনসময় সিঁথিতে অতখানি সিঁদুর দেওয়া কোনও রমণীকে মানায় না। সে জনস্রোতে ধাক্কা খাচ্ছে। কেউ-কেউ ইচ্ছে করে তাঁকে খোঁচা মারছে। সে স্রোতের ফুলের মতো দুলছে এদিক-ওদিক।

    তার হাতে একটা ছোট চটের থলি, অন্য হাতে একটি পোস্ট কার্ড।

    সে একজন মহিলার সামনে দাঁড়িয়ে ব্যাকুলভাবে বলছে, ও দিদি, ও দিদি!

    সবাই কাঁটায়-কাঁটায় সময় ধরে ট্রেনে চাপে। হাওড়ায় নেমেই ছুটে গিয়ে বাসের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হয়। নইলে অফিসে লেট মার্ক পড়ে। এমনকী কারুর একটা বাজে হাতে লেখা পোস্টকার্ড পড়ার সময় আছে?

    তবু কেউ-কেউ দাঁড়ায়। সমস্ত শরীরটা অস্থিরভাবে দুললেও সহানুভূতির সঙ্গে মেয়েটির কথা শুনতে চায়। শুনে, অসহায় ভাব করে।

    পোস্টকার্ডটায় এক-পিঠে একটা ঠিকানা লেখা আছে। তারামা কেমিক্যাল ওয়ার্কস। ৩২, গণেশ সাহা লেন। কলিকাতা।

    এরকম একটা অজ্ঞাত রাস্তা কে চিনবে? পোস্টাল জোন পর্যন্ত লেখা নেই।

    একজন মধ্যবয়স্কা, ফরসা, গালভারি চেহারার মহিলা সমস পোস্টকার্ডটি পড়লেন। তারপর জিগ্যেস করলেন, তুমি একলা এসেছ? কলকাতায় তোমার আর কেউ চেনা নেই?

    মেয়েটি দু-দিকে মাথা নাড়ল।

    মহিলা বললেন, এরকম হুট করে কি কেউ আসে? কলকাতা শহর…বড় কঠিন জায়গা।

    মহিলাটি বেশ জোরে জোরে কথা বলছেন, তাঁর চেহারার একটা আকর্ষণ আছে। তাই তাঁকে ঘিরে ছোটোখাটো একটা ভিড় জমে যায়।

    মহিলাটি অন্যদের দিকে তাকিয়ে বললেন, আপনারা কেউ গণেশ সাহা লেন চেনেন?

    একজন বললে, ভবানীপুরে বোধহয়। আর-একজন বলল, বাগবাজারে। আর-একজন বলল, বড়বাজারে গণেশ দাশ লেন আছে একটা। আর-একজন বলল, কলকাতাতে নয়, তারামা। কেমিক্যাল ওয়ার্কস তো দক্ষিণেশ্বরে।

    মহিলাটি রাগ-রাগ চোখ করে অন্যদের দিকে তাকিয়ে বললেন, কেউ এই মেয়েটিকে পৌঁছে দিতে পারবেন?

    অমনি ভিড় পাতলা হয়ে গেল।

    ফরসা মহিলাটি এই পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের বউটিকে বললেন, আমার হাতে তো একদম সময় নেই ভাই। না হলে আমি একটা কিছু ব্যবস্থা করতাম। তুমি বরং পুলিশের কাছে গিয়ে খোঁজ করো।

    মহিলাটি পোস্টকার্ডটি ফেরত দিয়ে এগিয়ে গেলেন। একটুখানি গিয়ে আবার পেছন ফিরে বললেন, দাঁড়িয়ে রইলে কেন, যাও।

    মেয়েটি তবু মূর্তির মতন দাঁড়িয়ে রইল। পুলিশশব্দটি তাকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। জন্ম থেকেই সে জেনে এসেছে, পুলিশের কাছাকাছি যেতে নেই। প্রজাপতি যেমন চড়াইপাখির কাছে যায় না, চড়াইপাখি তেমন বেড়ালের কাছে যায় না।

    কলকাতার পুলিশ কি আর অন্যরকম হবে?

    একটা ট্রেন পৌঁছে গেছে। পরবর্তী ট্রেন একটু পরে আসবে। মাঝখানের সময়টায় প্লাটফর্ম একটু ফাঁকা হয়।

    তখন পাজামার ওপর নীল শার্ট পরা একটা লোক, চিমসে চেহারা, মুখখানা ছুঁচোলো ধরনের, একটা সিগারেট টানতে-টানতে তার পাশে এসে দাঁড়িয়ে জিগ্যেস করল, তুমি বিষ্ণুপদকে খুঁজতে এসেছ?

    মেয়েটি আবার কেঁপে উঠল। কেউ যেন তার হাতে চাঁদ গুঁজে দিল এইমাত্র। এই লোকটা তার স্বামীকে চেনে।

    লোকটি বলল, তুমি বিষ্ণুদার বউ?

    মেয়েটি এবার জোরে-জোরে মাথা নাড়ল।

    লোকটি আবার বলল, তারা-মা কেমিকেলে বিষ্টু তো আমার সঙ্গেই কাজ করে। বিষ্ণু বলছিল বটে, ছমাস বাড়ি ফেরা হয়নি। আমার বউটা নিশ্চয়ই খুব চিন্তা করছে। বিষ্ট্র গতহপ্তায় তোমাকে একটা চিঠি লিখেছে, তুমি পাওনি?

    মেয়েটি বলল, কই, না তো!

    লোকটি বলল, বিষ্ণু কখনও বাড়ি ভাড়া করতে পারেনি, তাই তোমাকে এখানে আনার ব্যবস্থা করতে পারেনি। আমার সঙ্গেই থাকে। তা বলে তুমি হুট করে চলে এলে? কানের ফুল দুটো কীসের, রূপোর? হাতের লোহাটা সোনা দিয়ে বাঁধানো, না পেতলের? আরে দিদি, এইসব গয়না পরে কোনও মেয়েছেলে একা-একা কলকাতা শহরে আসে? এ কেমন জায়গা তা তো জানোনা! পদে-পদে বিপদ? ভাগ্যিস, আমার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। চলো!

    মেয়েটি অসহায়ভাবে জিগ্যেস করল, কোথায় যাব? আপনি আমাকে আমার স্বামীর কাছে নিয়ে যাবেন?

    লোকটি বলল, হাওড়ায় শালকেতে আমাদের জায়গা। তার পাশেই আমার বাড়িতে বিষ্ণু থাকে। তোমাকে দেখে বিষ্ণু একেবারে অবাক হয়ে যাবে! তুমি এমন ভাবে চলে এসেছ বলে বকুনিও। দেবে তোমাকে। যাক গে, সে তোমরা বুঝবে!

    লোকটির সঙ্গে এবার নিশ্চিন্তে এগোল মেয়েটি। তার স্বামী তাকে বকুনি দেয় তো দিক! সেও কম বকবে না। ছমাস আগে ওই একখানা পোস্টকার্ড এসেছিল তারপর মানুষটার আর কোনও পাত্তা নেই।

    যেতে-যেতে লোকটি বলল, আমার নাম ঘনশ্যাম। বিষ্টু আমার কাছে সব কথা বলে। তোমার জন্য ওর খুব কষ্ট। তোমার নাম কী যেন! বিষ্টু বলেছে, ভুলে যাচ্ছি।

    —সাবিত্রী। সাবিত্রী মাইতি।

    —ও হ্যাঁ, সাবিত্রী। সকালে কিছু খেয়েছ? মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে, খাওয়া হয়নি কিছু। সঙ্গে পয়সাকড়িও কিছু নেই নিশ্চিত। ছি, ছি, এভাবে কলকাতায় এসে পড়লে। আমার সঙ্গে দেখা না হলে কী বিপদেই যে পড়তে! নাও, একটু চা আর বিস্কুট খেয়ে নাও।

    সাবিত্রীর চোখে জল এসে গেল। সারা রাস্তা সে ভয়ে-ভয়ে এসেছে ট্রেনেও দুটো লোক তাকে ভয় দেখাবার চেষ্টা করছিল। তবু সে এসেছে বেপরোয়া হয়ে। এখন একজন মানুষের মুখে এসব। সহৃদয় কথা শুনলে তার কান্না আসবে না?

    চা ও একখানা নোনতা বিস্কুট খেয়ে ওরা বেরিয়ে এল স্টেশন থেকে। ভিড়ের জায়গাগুলো এড়িয়ে, পেছন দিকের ব্রিজের কাছে এসে একটা রিকশা ডাকল ঘনশ্যাম। সাবিত্রীকে আগে তাতে ওঠাল। তারপর সে রিকশায় পা দিতে যাবে, এমনসময় একটা ঘটনা ঘটল।

    একটু দূর থেকে একজন হেঁড়ে গলায় ডাকল, অ্যাই লটকা!

    সেই ডাক শুনে চোখ বড়-বড় হয়ে গেল ঘনশ্যামের। মুখ ঘুরিয়ে আহ্বানকারীকে দেখতে পেয়েই সে এক মুহূর্ত দেরি করল না। পাঁই-পাঁই করে ছুট দিল প্রাণপণে। এঁকেবেঁকে ভিড়ের মধ্যে। মিলিয়ে গেল কোথায়।

    যে ডেকেছিল, তার পরনে একটা কালো রঙের প্যান্ট, ধূসর গেঞ্জি, গলায় একটা রুমাল বাঁধা। এক হাতে লোহার বালা, মাথার চুল তেল চকচকে। বেশ মজবুত শরীর।

    সে কাছে এসে সাবিত্রীকে আপাদমস্তক দেখল, হুঁ! এই মেয়ে, তুমি ওর সঙ্গে কোথায় যাচ্ছিলে?

    সাবিত্রীর বুক ঢিপঢিপ করছে। ওই লোকটা তার স্বামীর বন্ধু, তাকে তার স্বামীর কাছে পৌঁছে দেবে বলেছিল, তবু হঠাৎ পালাল কেন? এবার তার কী হবে?

    সাবিত্রী বলল উনি আমাকে আমার স্বামীর কাছে নিয়ে যাচ্ছিলেন! ঘনশ্যামবাবু কোথায় গেলেন?

    মজবুত চেহারার ছোকরাটি বলল, ঘনশ্যাম? সাত জন্মে ওর নাম ঘনশ্যাম নয়। ওর নাম লটকা।

    ও ব্যাটা তো একটা শেয়াল! প্ল্যাটফর্মে ঘুরঘুর করে! ও তোমাকে কোথাও পৌঁছে দেবে বলেছিল? হা-হা-হা-হা!

    হাসি থামিয়ে সে বলল, ব্যাটাকে ধরতে পারলে মাথা গুঁড়িয়ে দিতুম। আমার টাকা মারার তাল! ওগো মেয়ে, ও তোমাকে খাবার মতলবে ছিল!

    সাবিত্রী বলল, না, না, উনি আমার স্বামীকে চেনেন। নাম বললেন, এক সঙ্গে কাজ করেন!

    –লটকা কাজ করে? ছোঁকছোঁক করা ছাড়া আর কোনও কাজ ও জানে? তোমার হাতে ওটা কী?

    —আমার স্বামীর চিঠি।

    —ওই লটকা ব্যাটা কোনও ফাঁকে উঁকি মেরে চিঠিখানা দেখে নিয়েছে। তাই থেকেই বানিয়েছে যে তোমার স্বামীকে চেনে। ছেঃ! ব্যাটাকে ধরা গেল না। দেখি, ঠিকানাটা দেখি—

    পোস্টকার্ডটা হাতে নিয়ে উলটে-পালটে দেখে সে বলল, তারামা কেমিকেল! গণেশ সাহা লেন। শিবপুরে। আমাদের পাড়াতেই। দ্যাখা যাক, সেখানে তোমার মরদকে পাওয়া যায় কি না। সঙ্গে বসো!

    এক লাফ দিয়ে রিকশায় উঠে বসে রিকশাওয়ালাকে বলল, এই ব্যাটা, জোরে ছুটবি! টিকিস টিকিস করলে লাথি খাবি! রিকশাটা ছুটতে শুরু করতেই মেয়েটি বলল, ভয় নেই। আমি তোমায় ভালো জায়গায় রাখব। সাবিত্রী বলল, আমি আমার স্বামীর কাছে যাব।

    তা তো যাবেই। ওই লোকটার হাতে পড়লে কোনওদিন পৌঁছতে পারতে না; সোজা তোমাকে আসল পাড়ায় নিয়ে গিয়ে তুলত।

    —আমার স্বামীকে আপনি চেনেন?

    —চিনি না। কিন্তু খুঁজে বার করতে কতক্ষণ। ঠিকানা যখন আছে। আজ না হয় কাল পাওয়া যাবে, কাল না হয় পরশু!

    —আমি আজকেই যাব!

    —যাবে, যাবে! ঠিক হয়ে বসো। কান্নাকাটি করো না কোনও লাভ নেই। তুমি সিগ্রেট খাবে?

    —আমি খাই না!

    ব্রিজ পার হওয়ার পরেই বৃষ্টি নামল। রিকশার ছাউনি তুলে দিতে হল। ছোকরাটি তখন তার একটা হাতে সাবিত্রীর কোমর বেষ্টন করল। তারপর বেশ ভাব দিয়ে বলল, গ্রাম থেকে চলে এসেছ, ভালো। গ্রামে কি মানুষ থাকে? যত সব ক্যাংলা পার্টি! আমিও চলে এসেছি।

    —একটু সরে বসুন। গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন?

    —তবে কি তোমার বুকে হাত দেব, সোনা!

    ঠিক এইসময় এমনভাবে একটা জিপ এসে থামল সামনে যে রিকশটা উলটে যেত আর একটু হলে।

    একজন পুলিশ অফিসার ঝট করে জিপ থেকে নেমেই রিভলভার তুলে বললেন, এই ছোটেলাল, নাব নাব। এদিক-ওদিক করলেই কিন্তু খোপরি উড়িয়ে দেব।

    জিপ থেকে আরও একজন কনস্টেবলও নেমেছে। তার হাতে বেঁটে লাঠি।

    ছোটেলাল একবার কোমরের কাছে লুকনো ছুরিতে হাত বুলোল, কিন্তু বার করল না। এই রজত দারোগা কতটা হিংস্র সে ভালো করেই জানে, সত্যি-সত্যি গুলি চালিয়ে দিতে পারে। দু-মাস একে কোনও টাকা দেওয়া হয়নি। রোজগারপাতি যে এখন কম, তা এই দারোগা বুঝবে না।

    দারোগাটির পেটানো চেহারা, চওড়া বুক, সরু মধ্যদেশ। চোখ দুটি অত্যুজ্জ্বল। সে বলল, হারামজাদা, আমার হাত এড়িয়ে পালাবি কদিন? আমি ইচ্ছে করলে ধরতে পারিনি, এমন কালপিট জন্মায়নি আজও! সঙ্গে আবার ভালো চেহারার মেয়ে জুটিয়েছিস! দিন-দুপুরে মেয়ে নিয়ে রিকশায় ঘুরছিস, তোর পাখা গজিয়েছে দেখছি!

    কনস্টেবলটিকে সে বলল, ওর হাত দুটো পিছ মোড়া করে বাঁধো। দেখো, সাবধান, এটা একেবারে নেকড়ের মতন শয়তান। ছুরি থাকে, বার করে নাও আগে।

    ছোটেলাল বলল, বড়বাবু, এই মেয়েছেলেটি ঠিকানা খুঁজে পাচ্ছিল না, তাই ওকে পৌঁছে দিচ্ছিলুম!

    দারোগাটি মাথা ঝাঁকিয়ে-ঝাঁকিয়ে প্রবল জোরে হেসে উঠল।

    তারপর বললে, তুই পৌঁছে দিচ্ছিলি? অ্যাঁ? কেন, তোর বুঝি খিদে নেই?

    ছোটেলাল বললে, বড়বাবু, আপনি তবে ওকে নিন। আমাকে ছেড়ে দিন এবারটির মতন।

    দারোগা গর্জন করে বলে উঠল, চোপ! ওর কথা তোকে চিন্তা করতে হবে না!

    তারপর ছোটেলালের চুলের মুঠি ধরে বলল, ওঠ গাড়িতে! এবার তোর মাথা যদি ভেঙে না দিই তো আমার নাম মাধব সরদার নয়।

    ছোটেলালকে জিপের মধ্যে ঠেলে দিয়ে মুখ ফিরিয়ে বেশ নরম গলায় দারোগাটি সাবিত্রীকে জিগ্যেস করল, তুমি কবে থেকে লাইনে নেমেছ? আগে তো দেখিনি!

    সাবিত্রী সিঁটিয়ে গিয়ে বলল, বাবু, আমি পুরুলিয়া থেকে এসেছি, আমার স্বামীকে খুঁজতে। এই যে আমার স্বামীর চিঠি!

    পোস্টকার্ডটি হাতে নিয়ে দারোগাটি সব পড়ল। তারপর বলল, ঠিক আছে। একটা কিছু ব্যবস্থা হয়ে যাবে। ওঠো, জিপে এসো!

    সামনের সিটে ড্রাইভারের পাশে বসল দারোগা, তার পাশে বসাল সাবিত্রীকে। সাবিত্রী কখনও এরকম গাড়িতে চড়েনি।

    একটু পরে দারোগাটি জিগ্যেস করল, তোমার স্বামী তোমাকে একলা গ্রামে ফেলে কলকাতায় চাকরি করতে এল?

    সাবিত্রী বলল, এখান থেকে কয়েকজন বাবু গিয়েছিল আমাদের গ্রামে। তারা ওকে বলল, কলকাতায় চাকরি দেবে। ভালো মাইনে, কারখানায় কাজ। বাবুরাই তাকে সঙ্গে করে নিয়ে এল।

    —হুঁ, বাবুরা সঙ্গে করে নিয়ে এল। কীরকম বাবু কে জানে। তোমাকে একা রেখে এল?

    —ওখানে আমার এক বুড়ি পিসিমা থাকে। ও বলেছিল, এ-মাসের মধ্যে আমাকে পুরুলিয়া থেকে কলকাতায় নিয়ে আসবে!

    —তারপর আর পাত্তা নেই? এই একটা মাত্র চিঠি লিখেছে।

    —আমি দু-খানা পত্তর পাঠিয়েছি, কোনও উত্তর পাইনি।

    —হুঁ, তাহলে কলকাতায় অন্য কোনও মেয়ের পাল্লায় পড়ে মজেছে। তোমাকে ভুলে গেছে।

    —না গো, বাবু, না-না সে তেমন মানুষই নয়।

    —কে কখন বদলে যায়, তা কি বলা যায়? এ তো আর গ্রাম নয়, শহর বড় মজার জায়গা। তা। তুমি চলে এসে ভালো করেছ। গ্রামে থাকলে তো খেতেই পেতে না। শুধু-শুধু এমন শরীরটানষ্ট করতে।

    –বাবু আমার এখন কী হবে?

    –ব্যবস্থা হয়ে যাবে, ঠিক ব্যবস্থা হয়ে যাবে!

    —থানার কাছে এসে জিপটি থামতেই দারোগাটি কনস্টেবলকে বলল, তুমি ছোটেলালকে গারদে নিয়ে যাও। একটু দলাই-মলাই করো। আমি আসছি। এই মেয়েটাকে কোনও আশ্রম টাশ্রমে পৌঁছে দিতে হবে তো!

    ছোটেলাল জিপ থেকে নামবার পর ঠোঁট বেঁকিয়ে বলল, আশ্রম না ছাই। ওগো মেয়ে, তুমি এবার বাঘের খপ্পরে পড়লে!

    জিপের ড্রাইভার এবং কনস্টেবল দুজনেই গোঁফের ফাঁকে হাসল।

    জিপ ছাড়তেই সাবিত্রী বলল, আমি আশ্রমে যাব না। আমি স্বামীর কাছে যাব।

    দারোগা বলল, যাবে, যাবে, যেখানেই যাও, অত তাড়াহুড়ো কীসের? পুলিশের হাতে পড়েছ। এজাহার দিতে হবে না? ড্রাইভার, আগে গেস্ট হাউজ চলো।

    এই খানার মধ্যে কয়েকটা জুট মিল আছে। তার মধ্যে একটির রয়েছে চমত্তার গেস্ট হাউজ। গঙ্গার ধারে, নিরিবিলি। সবরকম খাদ্য পানীয়ের ব্যবস্থা। দারোগাবাবু সে গেস্ট হাউজ যখন তখন ব্যবহার করতে পারে।

    বাঘের যেমন স্বভাব, দেরি সহ্য হয় না। খিদে পেয়েছে, সামনে খাদ্য তৈরি, সন্ধের অন্ধকার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবে না। তাকে বাধা দেওয়ার কেউ নেই। বাঘকে কে না ভয় পায়।

    জিপটা এসে থামল বাগান বাড়ির পেছন দিকে। সেখানে একটা ছোট দরজা। দারোগাকে দেখে একজন আর্দালি সসম্ভ্রমে দরজা খুলে দিল। সাবিত্রী ভয়ের চোটে নামতে চাইছিল না, তাকে টেনে হিচড়ে আনা হলে ভেতরে।

    কাঠের সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে দারোগা তার ঘাড় কামড়ে ধরে গরগর করতে-করতে বলল, চেঁচাবি না, হারামজাদি, তাহলে এক্ষুনি শেষ করে দেব। চুপচাপ থাক, দু-তিনদিন পর স্বামীর কাছে পৌঁছে যাবি।

    দোতলার বড় ঘরটির দরজা ঠেলে খুলতেই অন্য দৃশ্য!

    লোকে বলে, এক অরণ্যে বাঘ আর সিংহ একসঙ্গে বাস করে না। কিন্তু শহরে ও নিয়ম খাটে না। এখানে বাঘেরও বাবা আছে, বাঘ আর সিংহ দিব্যি সহাবস্থান করতে পারে।

    এই ঘরটার সোফায় গা এলিয়ে বসে আছে সাত খানা জুট মিলের মালিক দুর্জয় সিং। বিশাল চেহারা। চোখ দুটো ভাটার মতন। মাথায় পরচুলা। সে ঘনঘন নিশ্বাস ফেলছে।

    দারোগাকে দেখেই দুর্জয় সিংহুঙ্কার দিয়ে বলে উঠল, এই যে দারোগাবাবু, আপনি আমার দুজন লোককে অ্যারেস্ট করেছেন? আপনাকে প্রতি মাসে মোটা খাওয়াচ্ছি, তাতে হয় না। মন্ত্রীদের দিয়ে টেলিফোন করতে হবে?

    দারোগা খানিকটা কুঁকড়ে গিয়ে বলল, আপনার লোককে ধরেছে? কই, আমি জানি না তো।

    দুর্জয় সিং আবার ধমক দিয়ে বলল, আপনি জানেন না। তাদের এমনি ফটকে পুরল? বাঁকুড়ায় ট্রান্সফার হতে চান, না সাসপেন্ড হতে চান!

    দারোগা বলল, নিশ্চই ভুল করে ধরেছে। আমি দেখেছি। একটু পরেই থানায় গিয়ে দেখছি।

    দুর্জয় সিং বলল, একটু পরে কেন, এক্ষুণি যান? ডিউটি ফেলে রাখবেন না! এখানে এখন কী করতে এসেছেন?

    দারোগা বলল, এই মেয়েটা স্যার, হারিয়ে গেছে। ছোটেলালের খপ্পরে পড়েছিল। এর সঙ্গে ক্রিমিন্যালদের কোনও কানেশান আছে কি না একটু জেরা করে দেখতে হবে। সেইজন্যই নিরিবিলিতে…বেশিক্ষণ লাগবে না, বড়জোর চল্লিশ মিনিট।

    দুর্জয় সিং এই প্রথম সাবিত্রীকে দেখল। উঠে এসে, একবার সামনে, একবার পেছনে, একবার থুতনি তুলে।

    তারপর বলল, বাঃ এ যে একেবারে ফ্রেস মাল দেখছি। কোথায় পেলে?

    —আজই ট্রেন থেকে নেমেছে।

    —বা-বা-বাবা! আজকাল যতই টাকা খরচ করুন, ফ্রেস কিছুতেই পাওয়া যায় না। সবই কোলড স্টোরেজ ডিপ ফ্রিজের মাল। জানেন তো, যতই খুবসুরত হোক, আর এসব পোশাকের বাহার থাকুক, ফ্রেস জিনিসের স্বাদই আলাদা। এখানে একে আপনি জেরা করবেন?

    —হ্যাঁ, স্যার।

    —আপনি থানায় গিয়ে ডিউটি করুন। আমি জেরা করছি। আজ আমার মনমেজাজ ভালো নেই। দেখি, এই ফ্রেস জিনিসটি খেলে আমার তবিয়ৎ ঠিক হয় কি না।

    দারোগাটি দুর্জয় সিং-এর চোখের দিকে তাকাল। নিজের লেজটা আছড়াতে-আছড়াতে প্রতিবাদের ভঙ্গিতে গরগর করতে-করতে বলল, না একে আমিই জেরা করব। বলছি তো বেশিক্ষণ লাগবে না।

    দুর্জয় সিং হেসে বলল, ঠিক আছে, একদিনের জন্য জামিন তো দিতে পারেন? একদিন জামিন রাখতে কত লাগবে বলুন। তারপর কাল আপনি যত ইচ্ছে জেরা করবেন। কত লাগবে, কত?

    পকেট থেকে এক মুঠো একশো টাকার নোট বার করে সে ছুড়ে দিল দারোগার বুকে। নোটগুলো কুড়িয়ে নিয়ে দারোগা একবার তাকাল সাবিত্রীর দিকে, আর-একবার দুর্জয় সিং-এর দিকে। তারপর ঠোঁট চাটতে-চাটতে পিছিয়ে গেল এক-পা এক-পা করে।

    দুর্জয় সিং বলল, দরজাটা ভেজিয়ে দিয়ে যান।

    সিংহ সমাজে একটা নিয়ম আছে। পুরুষ সিংহরা বসে থাকে এক জায়গায়, সিংহিনীরা শিকার করে। সিংহিনী সব জোগাড় করে দেয়, সিংহ দয়া করে খায়। তারপর সিংহিনীই সিংহের গা চেটে পরিষ্কার করে দেয়।

    এখানেও সেরকম একটা কিছু ঘটল।

    একটা এয়ারকন্ডিশানড গাড়ি এসে থামল প্রধান দরজায়। খুব ফরসা, সুলাঙ্গিনী, চোখে কালো। চশমা পরা এক মহিলা সেই গাড়ি থেকে নেমেই ধুপধাপ করে উঠতে লাগল সিঁড়ি দিয়ে। একজন আর্দালি কিছু বলতে এল তাকে, সে এক ঠেলায় সরিয়ে দিল তাকে। তারপর ওপরে এসে ধাক্কা মেরে খুলে ফেলল দরজা।

    দুর্জয় সিং তখন সবেমাত্র সাবিত্রীর আঁচলটা খুলে ফেলেছে, ঘুরে দাঁড়িয়ে গর্জন করে বলল, কে?

    স্থূলাঙ্গিনী মহিলাটি তা গ্রাহ্য না করে সাবিত্রীর দিকে এগিয়ে আসতে-আসতে বলল, এ কে?

    দুর্জয় সিং কোনও উত্তর দিল না।

    মহিলাটি নাক কুঁচকে বলল, ছিঃ, এই তোমার রুচি হয়েছে? অ্যাংলো মেয়ে, বম্বের ফিলম অ্যাকট্রেস, আমেরিকান হিপি, কলেজে পড়া বাঙালি মেয়ে, এসব কোনও কিছুতেই আমি আপত্তি করি না। খাও না, যত ইচ্ছে খাও। তা বলে এই নোংরা, গরিব, গাঁইয়া চাই তোমার? এত কত, কোন রোগ আছে তার ঠিক কী? ছিছিছিছি, তুমি খানদানি মুসলমান, পাহাড়ি মেয়ে, অফিসারের বউ কী চাও বলো? এটাকে দূর করে দাও।

    তারপর পা থেকে চটি খুলে সাবিত্রীকে মারতে-মারতে বলতে লাগল, বেহুদা, রেন্ডি কাঁহিকা! দূর হয়ে যা! মর, তুই মর। তোকে শিয়াল-কুকুর খাক! তুই এসেছিস সিংহের গুহায়।

    মার খেয়ে সাবিত্রী মাটিতে পড়ে যেতেই স্ত্রী লোকটি হাঁক দিল, আর্দালি, এই রেন্ডিটাকে অনেক দূরে মাঠের মধ্যে ছুড়ে ফেলে দিয়ে এসো।

    নদীর ধারে, একটা আবর্জনার স্তূপের ধারে বসে সাবিত্রী এখন অঝোরে কাঁদছে। শুধু কেঁদেই চলেছে। সে এখন কোথায় যাবে, তা জানে না। এরপর কী।

    কোনও কবি হলে এই জায়গায় হয়তো লিখতেন, একসময় সাবিত্রীর প্রতিটি অশ্রুবিন্দুমুক্তো হয়ে ঝরতে লাগল, যাদের হৃদয়ে পরিতাপ থাকে, তারাই শুধু দেখতে পায় সেই মুক্তো, তারা হাত জোড় করে সাবিত্রীর সামনে এসে বসল।

    কোনও পেশাদার প্রগতিশীল হলে বলতেন, সাবিত্রীর চোখের জলের ফোঁটাগুলো আসলে এক একটি অগ্নিস্ফুলিঙ্গ। ক্রমশ সেইসব অগ্নিস্ফুলিঙ্গ থেকে দাউদাউ করে জ্বলে উঠল আগুন, সেই আগুন পুড়িয়ে ছারখার করে দিল দুর্জয় সিংয়ের মতন অত্যাচারীদের।

    কিন্তু সেরকম কিছুই ঘটল না। সাবিত্রী শুধু অসহায় ভাবে কেঁদে চলেছে।

    গল্প লেখকের মুশকিল, এভাবে গল্প শেষ করা যায় না। ধরা যাক, অন্য একজন পুলিশ অফিসার, কিছু-কিছু পুলিশ তো সৎ ও ভদ্র থাকতেই পারে, তাদের একজন সাবিত্রীকে পৌঁছে দিল তার স্বামীর কাছে। তাহলে কিন্তু সেটা গল্প হবে না। কিংবা এক সহৃদয় ভদ্রলোক কিংবা তরুণ আদর্শবাদী সাবিত্রীকে যত্ন করে তুলে দিলে পুরুলিয়ার ট্রেনে। বাস্তবে এরকম ঘটে, কিন্তু ছাপার অক্ষরে পড়লে সবাই বলবে, বাজে গল্প।

    সুতরাং সাবিত্রী ওখানেই বসে থাক, কাঁদুক।

    শুধু অসমাপ্ত গল্পের অস্বস্তিতে আর সাবিত্রীর কান্নার শব্দে লেখকের একটা দিন মন খারাপ অবস্থায় কাটবে।

    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleশাস্তি
    Next Article শিল্পী

    Related Articles

    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    উপন্যাস কল্লোল লাহিড়ী

    ইন্দুবালা ভাতের হোটেল – কল্লোল লাহিড়ী

    May 28, 2025
    উপন্যাস বুদ্ধদেব গুহ

    কোয়েলের কাছে – বুদ্ধদেব গুহ

    May 23, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রবার্টসনের রুবি – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    বোম্বাইয়ের বোম্বেটে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }