Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    ধুলোবালির জীবন – প্রচেত গুপ্ত

    প্রচেত গুপ্ত এক পাতা গল্প170 Mins Read0

    ধুলোবালির জীবন – ১

    ১

    সকালের আলো ফুটেছে।

    শ্রীজিতা গায়ের উপর থেকে মেয়ের পা নামিয়ে দিল। কোমরের উপর উঠে যাওয়া ফ্রক ঠিক করল। ঘুমের মধ্যে দুমড়ে থাকা একটা হাত সোজা করে রাখল পাশে। রাতে ঘুমের মধ্যে মাকে জড়িয়ে থাকে তোয়া। কখনও-কখনও গায়ের উপর উঠে আসে।

    শ্রীজিতা বালিশে মাথা রেখেই ঘুমন্ত মেয়ের মুখের দিকে তাকাল। ভোরের আলোয় তোয়াকে দেখাচ্ছে ফুলের মতো। এই জগৎ সংসারের কোনও মালিন্যই তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। শ্রীজিতা বড় করে নিশ্বাস ফেলল। জীবনের ধুলোবালি থেকে দূরে থাকা কোনও কাজের কথা নয়। একটা সময়ের পর তাকে চিনতে হয়। বেঁচে থাকার ধুলোবালি যত তাড়াতাড়ি চিনতে পারবে, ততই মঙ্গল। তত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবে, সব ময়লা ঝেড়ে ফেলা যায় না, ঝেড়ে ফেলার ভান করা যায় মাত্র।

    শ্রীজিতা মেয়ের কপালে চুমু খেল। তোয়া বিরক্ত হয়ে হাত দিয়ে মায়ের মুখ সরিয়ে ফের মাকে জড়িয়ে শুল। কে বলবে, এই ফুটফুটে মেয়েটাকে শ্রীজিতা পৃথিবীতেই আনতে চাইছিল না!

    রাতে শুতে যতই দেরি হোক, ভোরবেলা ঠিক উঠে পড়ে শ্রীজিতা। তোয়াকে ঘুম থেকে তোলে। এই সময় একটু আদর, হালকা ধমক, অল্প জোরজবরদস্তি লাগে। দু’বছর আগে পর্যন্ত এই কাজটা করত বিধান। মেয়েকে রেডি করিয়ে স্কুল দিয়ে আসা ছিল তার ডিউটি। তখন বেহালার ভাড়া বাড়ি। তোয়া চার বছর বয়স পর্যন্ত পাড়ার মন্টেসরিতে পড়েছে। বড় স্কুলে চান্স পেলেও, স্কুলবাসে দেওয়ার মতো টাকা ছিল না। বিধান পাবলিক বাসে মেয়েকে পৌঁছে দিত। উপায় ছিল না। শ্রীজিতা সংসারের টানাটানি সামলাতে ছোটখাটো নানা চাকরি করে শেষ পর্যন্ত একটা প্রাইভেট স্কুলে চাকরি নিয়েছিল। ভাল চাকরির জন্য চেষ্টা করেও কোনও লাভ হচ্ছিল না। অপেক্ষা করার সময় ছিল না হাতে। অগত্যা হাতের কাছে যা পাওয়া গিয়েছিল… বেতন কম, কিন্তু পরিশ্রম খুব। সকাল হতে না হতেই ছুটতে হত। নিজের বা মেয়ের অসুখবিসুখে কামাইয়ের উপায় ছিল না। ছুটি নিলে স্কুলের মালকিনের মুখ হাঁড়ি হয়ে যেত। মহিলার স্বামী প্রোমোটার কাম রাজনৈতিক দালাল। যখন যে পার্টি ক্ষমতায়, তখন তাদের সঙ্গে ওঠাবসা। মোটা চাঁদা দিত। বউকে স্কুল বানিয়ে দিয়েছিল। সেই মহিলা নিজে কখনও স্কুল পাশ করতে পেরেছে কি না সন্দেহ। ঠিকভাবে একটা চিঠি লিখতেও পারত না। কিন্তু শিক্ষক–শিক্ষিকারা কামাই করলেই কথা শোনাত, “না পোষালে চাকরি ছেড়ে দাও বাপু। আমাদের দেশে চাল, ডাল, তেল, নুন, কেরোসিন সবকিছুর অভাব আছে, লেখাপড়া জানা ছেলেমেয়ের কোনও অভাব নেই। ফ্যা-ফ্যা করে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”

    এই অপমান মেনে নিয়েও শ্রীজিতাকে সেখানে যেতে হত। একটাই সুবিধে, স্কুল ছিল বাড়ির কাছে। আর ছেলেমেয়েরা ছিল খুব ভাল। তাদের সঙ্গে সময় কাটালে পরিশ্রম অনেকটা লাঘব হয়ে যেত। ছোট-ছোট ছেলেমেয়েরাও তাকে ভালবাসত। সে পালা চুকেছে। যেভাবে চুকেছে, সেটা গল্পের মতো। নাকি নাটকের মতো? তাই হবে। সামান্য একটা নাটক শ্রীজিতাকে নতুন চাকরিতে নিয়ে গেল। শ্রীজিতার জীবনের মুখটা একেবারে ঘুরে গেল।

    বিধান নেই, এখন শ্রীজিতাই মেয়েকে স্কুলের জন্য রেডি করে। স্কুলের বাস একবারে হাউজ়িং-এর গেট পর্যন্ত আসে। মিনু তোয়াকে সেখানে দিয়ে আসে। ফ্ল্যাট থেকে বেরোনোর সময় মেয়ের গালে ঠোঁট ছোঁয়ায় শ্রীজিতা।

    “আই লভ ইউ সোনা।”

    “লভ ইউ টু মা।”

    “স্কুলে মন দিয়ে লেখাপড়া করবে।”

    “তুমিও অফিসে মন দিয়ে কাজ করবে।”

    মেয়ের কপালে পড়া চুলের কুচি ঠিক করতে-করতে শ্রীজিতা নাক কুঁচকে বলে, “পাকা বুড়ি একটা। ক্লাসে ডায়েরি ঠিক মতো লিখবে। ক’দিন গোলমাল করেছ।‌”

    তোয়া মাথা কাত করে বলে, “আচ্ছা মা।”

    শ্রীজিতা চোখ বড় করে বলে, “টিফিন সবটা খাবে। মিনুদি যেন ফোন করে না বলে, টিফিন ফেরত এসেছে। তা হলে কিন্তু রাগ করব।”

    “ঠিক আছে শুনবে না। আমি মিনুদিকে বারণ করে দেব।”

    শ্রীজিতা চোখ বড় করে বলে, “আবার পাকা কথা?”

    পাশে ব্যাগ কাঁধে দাঁড়িয়ে থাকা মিনু বলে, “ঠিক আছে, এবার চলো। বাস চলে যাবে।”

    ‌মেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর সাধারণত আবার শুয়ে পড়ে শ্রীজিতা। ঘণ্টাখানেক কখনও গভীর, কখনও আবছা ঘুম, কখনও ঘুম নয়, শুধু চোখ বুজে শুয়ে থাকা। সাড়ে সাতটা নাগাদ মিনু চা আর খবরের কাগজ হাতে ডেকে তোলে। বিছানায় বসে বাসি মুখে চা খেতে-খেতে খবরের কাগজ উলটোয় শ্রীজিতা। রাজনীতি, মারামারি বা খেলাধুলোর খবরে তার উৎসাহ নেই। সে চোখ বোলায় ব্যাবসা–বাণিজ্যের পাতায়। বিভিন্ন কোম্পানির লাভ–ক্ষতি, শেয়ার, নতুন প্রোডাক্টের খবর দেখে। অফিসেও তার কম্পিউটারে সর্বক্ষণ বিজ়নেস সাইটগুলো খোলা থাকে। তার চাকরির সঙ্গে এসব ভীষণভাবে জড়িয়ে… ব্যাবসাপাতির খবর না জানলে মার্কেটিং-এর কাজ করা সম্ভব নয়। এই অফিসে সাড়ে তিন বছর হতে চলল। এখনও বেশির ভাগটাই নতুন মনে হয়।

    কাজের লোকেরা এক-এক করে আসতে শুরু করে এই সময়। হাউজ়িং-এর কাজের লোকদের সময় বাঁধা। এক ফ্ল্যাট থেকে অন্য ফ্ল্যাটে ছুটবে। শ্রীজিতার কাছে দু’জন আসে। একজন কাপড় কাচে, ঘর মোছে। অন্যজন রান্না করতে। ক’টা বছর আগেও কাজের লোকের কথা ভাবতে পারত না শ্রীজিতা। কাপড়কাচা–বাসন মাজার জন্য একজনকে রাখতেই দশবার চিন্তা করতে হয়েছে। প্রথমে তা-ও রাখেনি। বিধানের ওইটুকু রোজগারে রাখা সম্ভবও ছিল না। পরে নিজে টিউশন করে, স্কুলের চাকরি জুটিয়ে রেখেছিল। তবে রান্নার অভ্যেস ছাড়তে সময় লেগেছে। কিছুদিন আগেও নিজের হাতে রান্না করেছে শ্রীজিতা। বিয়ের আগে ঘরের কাজ কিছুই করতে হয়নি। রান্নাটাই যা ভালবেসে শিখেছিল। নতুন অফিসে যোগ দিয়েও একই অভ্যেস ছিল। শাহিই তাকে এ বিষয়ে পরামর্শ দেয়, সঙ্গে হালকা বকুনি।

    শাহি তার কলিগ। বয়সে খানিকটা বড়। শুরুতে তার একরকম বস ছিল। হাতে ধরে কাজ শিখিয়েছে। এই মেয়ে এক সময়ে সংসারের নানা ঝামেলা সামলেছে। শাশুড়ির জ্বালাতনের শেষ ছিল না। স্বামী বাচ্চাকে নিয়ে আলাদা হয়ে তবে বেঁচেছে। একদিন লাঞ্চে শ্রীজিতা ওর সঙ্গে স্যান্ডউইচ শেয়ার করেছিল। শাহি কামড় দিয়ে বলেছিল, “ফ্যান্টাস্টিক। কে বানিয়েছে?”

    শ্রীজিতা বলেছিল, “আমি। বাড়িতে রান্না তো আমি করি।”

    শাহি বলেছিল, “কেন, তোমার কুক নেই?”

    শ্রীজিতা বলেছিল, “না। মোট আড়াইজনের রান্না। আড়াইও না, সোয়া দুইও বলতে পারো।”

    শাহি বলেছিল, “ডোন্ট ডু দ্যাট। রান্নার লোক রাখো শ্রীজিতা। যে সময়টা রান্নাঘরে দাও, সেটা তোমার প্রফেশনের জন্য খরচ করো।’

    শ্রীজিতা অবাক হয়ে বলেছিল, “সকাল থেকে ‌অফিসে কাটাব?”

    “তা কেন? বাড়িতে বসে মার্কেটিং নিয়ে পড়াশোনা করো। ম্যাগাজ়িন পড়ো, নেট সার্চ করো। দুনিয়ায় কতভাবে কমোডিটির ব্র্যান্ডিং, বিজ্ঞাপন তৈরি হচ্ছে,‌ সেসব জানতে হবে না? ইউনিক সব আইডিয়া। অফিস ডেস্কে বসে তার সবটুকু তো আমরা জানতেও পারি না। সময়ও থাকে না। ‌কেরিয়ারে উন্নতি করতে গেলে হোমওয়র্ক করতে হয়। শ্রীজিতা, রান্না তো অনেক করলে। এবার নিজেকে সময় দাও।”

    কথাগুলো মাথায় ঢুকে গিয়েছিল শ্রীজিতার। কিছুদিনের মধ্যেই সে রান্নার লোক জোগাড় করে ফেলল। বিধান অবাক হয়েছিল, “তুমি আর রান্না করবে না শ্রীজিতা?”

    শ্রীজিতা বলেছিল, “আমি সারাজীবন হেঁশেলে থাকব, এরকম কোনও চুক্তি কি তোমার সঙ্গে হয়েছিল?”

    বিধান মাথা চুলকে বলেছিল, “বাইরের লোকের রান্না কি তোয়ার খাওয়া ঠিক হবে?”

    শ্রীজিতা তেড়েফুঁড়ে উঠে বলেছিল, “না, হবে না। তুমি বরং রান্না শিখে নাও।” একটু থেমে তারপর বলেছিল, “তোয়াকে অভ্যেস করতে হবে। আমি আমার কাজে আরও বেশি করে মন দেব বিধান। আমি কেরিয়ারে মন দেব। আমার খুব ইচ্ছে, বাইরে কোথাও গিয়ে মার্কেটিং-এর উপর ডিগ্রি নিয়ে আসি। আমাদের অফিসে এই বিষয়ে অনেকের ডিগ্রি আছে। মাঝে-মাঝে নিজেকে ইনফিরিয়র লাগে। রান্নাঘরের উচ্ছে, বেগুনে আমার আর কোনও ইন্টারেস্ট নেই।”

    এখন বাড়িতে লোক কমেছে। বিধান চলে গিয়েছে। সে আছে নিজের মতো। এক বছরের মাসকয়েক বেশি সময় হল, শ্রীজিতা নতুন ফ্ল্যাট কিনে চলে এসেছে। এই ফ্ল্যাটটা চমৎকার। আলো হাওয়া প্রচুর। উপরের দিকে হওয়ায় মশা-টশা কম। দাম বেশি পড়লেও, ইচ্ছে করেই হাউজ়িং-এ কিনেছে। সিকিউরিটিও ভাল। তোয়া, মিনু আর সে, তিনজনই মেয়ে। ফলে সিকিউরিটি দেখতে হয়েছে। ব্যাঙ্ক লোনে কেনা হলেও, ডাউন পেমেন্টের জন্য অফিস সাহায্য করেছে। বাড়িতে লোক কমলেও, কাজের লোক কমায়নি শ্রীজিতা। বরং একটা–দুটো করে গ্যাজেট কিনে ফেলেছে। ওয়াশিং মেশিন, ইনডাকশন, মাইক্রোআভেন।

    চা খাওয়া হলে খাট থেকে নামতে-নামতে সবাইকে কাজ বুঝিয়ে দেয় শ্রীজিতা। ঘরদোর সাফ, কাপড় কাচা থেকে ব্রেকফাস্ট, তোয়ার খাবারের মেনুর কথা বলে দেয় দ্রুত। বাথরুমে ঢুকেও বন্ধ দরজার ওপাশ থেকে কাজের ইনস্ট্রাকশন দিতে থাকে। স্নান সেরে তোয়ালে গাউন চাপিয়ে বেরিয়ে আসে বাথরুম থেকে। সাজগোজে বেশি সময় নেয় শ্রীজিতা। আগে নিত না। কোনওরকমে পরিষ্কার পোশাক পরে, চুলটা আঁচড়ে ছুটত। আগে যেসব জায়গায় কাজ করেছে, সেখানে সাজগোজের প্রয়োজন ছিল না। তার আগে যখন বাপের বাড়িতে থেকেছে, তখন তো আরও প্রয়োজন ছিল না। এখন হয়েছে। অফিস এবং কাজের সঙ্গে নিজেকে মানানসই করতে হয়েছে। এমনিতে যতই সুন্দর হোক না কেন, ক’টা বছরের চাপ, অভাব, টেনশন শরীরে ছাপ ফেলেছিল। সেগুলো ঢাকতে হয়েছে।

    তার উপর বয়স বাড়ছে। চৌঁত্রিশ শেষ হতে চলল। মেয়েদের জন্য এই বয়স একই সঙ্গে ভাল এবং খারাপ। এই সময়ে সৌন্দর্যে এক ধরনের পরিণত ভাব আসে। জীবনের মতো শরীরের অভিজ্ঞতাও মূল্যবান। সেই অভিজ্ঞতা চেহারায় বোঝা যায়। আকর্ষণ তৈরি হয়। এই আকর্ষণ হেলাফেলার নয়। আর খারাপ দিকটা হল, এ এমন একটা সময়, যখন শরীরের আঁটোসাঁটো ভাবটা ক্রমশ আলগা হতে থাকে। বয়সের আঁচড় পড়তে শুরু করে। তার সঙ্গে লড়াই করতে হয়। কাজের জায়গায় ঝলমলে থাকতে হয়। শ্রীজিতার কাজের একটা অংশ হল, ক্লায়েন্টদের সঙ্গে কথা বলা। তাদের কনভিন্স করানো। এই কাজে ভিতরের যোগ্যতার পাশাপাশি বাইরের আকর্ষণ রাখতে পারলে সুবিধে। ব্যাগে সংক্ষিপ্ত মেকআপ কিট রাখে সে। গালের পাফ, ঠোঁটের শেডস, চোখের রং।

    ঠিক সাড়ে ন’টায় অফিসের গাড়ি চলে আসে। পুলকার। আরও লোক থাকে। ফেরার সময়ও তাই। শ্রীজিতা ঠিক করেছে, শিগগিরই গাড়ি কিনে নেবে। পার্টি-টার্টিতে গেলে রাতে ফেরা মুশকিল। লিফ্‌ট নিতে হয়। যদিও রাতে তাকে বাড়িতে নামিয়ে দেওয়ার জন্য অনেকেই উদ্‌গ্রীব হয়ে থাকে। পার্টিতে ঢুকতে না ঢুকতে অফার এসে যায়, “শ্রীজিতা, আজ আমার সঙ্গে ফিরবে।”

    শ্রীজিতা অবাক হওয়ার অভিনয় করে। বলে, “আপনি তো একবারে উলটো দিকে থাকেন স্যার। আমি তো যাব অন্যদিকে।”

    “সে থাকি। কিন্তু আজ না হয়, তোমার বাড়ির দিক দিয়েই ঘুরে যাব। ওইসব রাস্তায় গাড়ি চালাতে ভালই লাগবে।”

    সুন্দরীকে পাশে বসিয়ে গাড়ি চালাতে কোন পুরুষমানুষেরই না ভাল লাগে! তার উপর সেই সুন্দরী যদি এক–দু’পেগ ওয়াইন খেয়ে থাকে, তার পার্টিওয়্যার হয় ‘প্রশ্রয়’ দেওয়ার মতো, তা হলে তো কথাই নেই। অতীতে কখনও এসব নিয়ে মাথা ঘামায়নি শ্রীজিতা। কিন্তু আজ বিশ্বাস করে লেখাপড়া, বুদ্ধি, পরিশ্রমের সঙ্গে রূপ–সৌন্দর্যও এক ধরনের যোগ্যতা। মানু্ষের মুখ যেমন কথা বলে, কথা বলে শরীরও। নারীর তো বটেই। পথ চলতে গেলে শরীরের ভাষাকেও ঠিকমতো রপ্ত করতে হয়। একটা সময় লেখাপড়া, বাবা–মায়ের কর্তৃত্ব, বিয়ের পর সংসারের চাপে নিজের কথা ভাবার কোনও সময়ই ছিল না শ্রীজিতার। বিয়ে করে হল প্রবল অর্থকষ্ট। পাউডার নয়, ভাতের হাঁড়িই ছিল একমাত্র চিন্তা। ফলে নিজের সাজগোজ নিয়ে ভাবা হয়নি। নিজে যে সুন্দরী, তা ভুলেই গিয়েছিল সে। অতিরিক্ত চিন্তা আর পরিশ্রমে চোখমুখে কালি পড়ে গিয়েছিল।

    তবে আজ শরীর নিয়ে মিনমিনে হয়ে থাকার জীবন ছুড়ে ফেলে দিয়েছে শ্রীজিতা। আগে এই শরীর আগলে রাখাটাই ‘ডিউটি’ বলে মনে করতে হত। ‘গা ঢাকা, হাত ঢাকা, পা ঢাকা’ ড্রেস কিনে দিত মা। একটু বড় হয়েও, স্লিভলেস জামা পরলে বাবা মায়ের উপর রাগারাগি করত, “পাড়ার মধ্যে দিয়ে এই পোশাক পরে তোমার মেয়ে যায় কী করে? বগল বের করে হাঁটতে লজ্জা করে না?”

    মা কিছু বলতে গেলে আরও রেগে যেত।

    শ্রীজিতা সাজগোজের শখ মেটাতে পারেনি। শখ করতেই ভুলে গিয়েছিল। এখন বুঝতে শিখেছে, পোশাক তো অতি সামান্য, শরীর নিয়ে বস্তাপচা মূল্যবোধ আসলে এক ধরনের ভ্রান্তি। অক্ষম, অযোগ্য মানুষ এসব নিয়ে বড়াই করে। মিইয়ে যাওয়া পাঁপড়ের মতো অর্থহীন জীবনকে তারা বলে নিষ্কলঙ্ক, পবিত্র। যত দিন যাচ্ছে শ্রীজিতা বুঝতে পারছে, পবিত্র জীবন বলে আসলে কিছু হয় না। জীবনকে ভোগ করাটাও একটা যোগ্যতা। এখন শরীর দিয়ে পুরুষকে মোহাচ্ছন্ন করতে, কাজ আদায় করে নিতে, এমনকী অতৃপ্ত যৌন তেষ্টা মেটাতেও তার মনে কোনও দ্বিধা হয় না। এটাকে সে প্রয়োজন বলে মনে করে। অরণির মতো পুরুষের সঙ্গে সে যখন বিছানায় যায়, তখন অরণি শুধু তার শরীর পায় না, সে-ও অরণির শরীর পায়। সন্তানের জন্ম দিলেও, তার স্বামীর কাছ থেকে যে শরীর সে পায়নি।

    তারপরেও অবশ্য পুরুষমানু্ষের ব্যাপারে সাবধান থাকে শ্রীজিতা। না থেকে উপায় নেই। কেউ-কেউ বড্ড জ্বালায়। একা থাকার সমস্যা। একা মহিলার শরীরকে বেশির ভাগ পুরুষই অভিভাবকহীন ভাবতে ভালবাসে। ভাবে সহজে ‘পাওয়া’ যাবে। এটা কুৎসিত এবং অপমানজনক। সেইসব পুরুষমানুষকে ঠেকাতে হয়। কখনও মিষ্টি হেসে, কখনও কড়া কথা বলে। কখনও আবার ফেসবুক, মোবাইলে ব্লক করে। শ্রীজিতা এখন জানে, স্বার্থ ছাড়া পুরুষমানুষকে ‘অ্যালাও’ করার দিন সে ফেলে এসেছে। সে কাজের স্বার্থই হোক, নিজের শরীরের স্বার্থ। বিধানের সংসার তাকে যথেষ্ট শিক্ষা দিয়েছে। সেই সংসার গড়ার পিছনেও স্বার্থ ছিল। শেষদিকের ঝগড়াগুলোয় বিধান সেকথা বলেওছে। শ্রীজিতা যখন রাগে চিৎকার করত‌, ঠান্ডা গলায় মাঝে-মাঝে জবাব দিয়েছে মানুষটা।

    “তোমাকে বিয়ে করাটাই আমার ভুল হয়ে গিয়েছিল বিধান। আমার রূপ, শিক্ষা, পারিবারিক মান–মর্যাদার ধারেকাছে তুমি আসতে পারো না।”

    “তুমি তো এমনি-এমনি আমাকে বিয়ে করোনি শ্রী।”

    শ্রীজিতা ফুঁসে উঠে বলেছিল, “তার মানে!‌”

    বিধান গলা নামিয়ে বলেছে, “সেদিন বিয়ে করাটা তোমার দরকার ছিল। আমাকে না পেলে হয়তো আর কাউকে করতে।”

    শ্রীজিতা থমকে গিয়েছিল। এভাবে আগে কখনও কথা বলেনি বিধান। সে বলেছিল, “সব সম্পর্ক তৈরির পিছনেই কোনও না-কোনও পরিস্থিতি থাকে। সেটাকে প্রয়োজন বলা যায় না।”

    বিধান অস্ফুটে বলেছিল, “হয়তো তাই।”

    শ্রীজিতা ফের আক্রমণে যেতে চেয়েছিল, “বিয়ে আমি একা করিনি। তুমিও করেছিলে।”

    বিধান গলায় কুণ্ঠা নিয়ে বলেছিল, “সেদিন তোমাকে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিলাম শ্রী। বলেছিলাম, আমার মতো একজন অতি সাধারণের সঙ্গে বাকি জীবনটা কাটাতে পারবে কি না, ভাল করে ভেবে নিয়ো।”

    কথাটা ঠিক। বিয়ের প্রস্তাবে বিধান প্রথমে সায় দেয়নি। একরকম পিছিয়েই গিয়েছিল। শ্রীজিতাই জোর করে। যেদিন রেজিস্ট্রি অফিসে নোটিশ দিতে গিয়েছিল, বিধান শ্রীজিতাকে বলেছিল, “এখনও সময় আছে। তুমি ভাল করে ভেবে নাও। রাগের মাথায় কিছু করে বোসো না।”

    সেদিন ভাবার সময় ছিল না শ্রীজিতার। কিন্তু পরে ঝগড়ার সময় বলেছিল, “মানুষ তো নিজেকে উন্নত করে। অসাধারণ না হতে পারো, আর পাঁচজনের মতো সাধারণ তো হতে পারতে তুমি।”

    বিধান মুখ তুলে অবাক হয়ে বলেছিল, “আমি তো সাধারণই।”

    “চুপ করো। তুমি সাধারণ নও। তুমি বিলো অ্যাভারেজও নও, তুমি‌ একজন অপদার্থ। ব্যক্তিত্ব বলে কিছু নেই। তুমি স্বামী হিসেবেও অযোগ্য, অক্ষম!”

    এই দাম্পত্যের ঝগড়া সবসময়ই একতরফা হয়েছে। একজন চিৎকার করেছে, অন্যজন হয় চুপ করে থেকেছে, নয় উত্তর দিয়েছে নিচু গলায়। অপরাধীর মতো।

    বিধান বলেছিল, “তুমি তো অপদার্থ নও শ্রী। আমাকে বুঝতে এত সময় লাগল? এতগুলো বছর!‌”

    শ্রীজিতা হিসহিসিয়ে বলেছে, “সময় লাগেনি, অপেক্ষা করছিলাম। যদি নিজেকে বদলাও। অনেক সময় দিয়েছি, আর নয়। আমার জীবন আমাকেই তৈরি করতে হবে। নিজের ক্ষমতা, যোগ্যতা আর বেহিসেবি খরচ করব না।”

    সেই ‘তৈরি’র কাজই চলেছে। এখন হাসিটুকুও মেপে খরচ করে শ্রীজিতা। স্বার্থের কারণে কোনও-কোনও ক্ষেত্রে পুরুষমানুষের ‘‌‌জ্বালাতন’ নিজেই আহ্বান করতে হয়।

    নির্ঝর মল্লিককেও করেছিল শ্রীজিতা। ভেবেচিন্তেই করেছিল। নির্ঝর মল্লিক তখন অফিসে ডেপুটি ম্যানেজার। তার প্রথম ‘‌ব্রেক থ্রু’‌ করার সুযোগ করে দিল। নিজের বড় ক্লায়েন্টকে তার হাতে তুলে দেয়। বড় টাকার অর্ডার এনে দিল শ্রীজিতা। কোম্পানি খুব খুশি। এক লাফে অন্যদের চেয়ে অনেকটা উঁচুতে উঠে গেল। সেই নির্ঝর মল্লিকও ‘জ্বালাতন’ করেছে। উসকেছে শ্রীজিতা। তবে কাজ হয়ে যাওয়ার পর। যেদিন অর্ডার ফাইনাল হয়, রাতে নির্ঝর মল্লিকের গাড়িতে বাড়ি ফিরেছিল সে। সামনের সিটে বসেছিল। নির্ঝর মল্লিক গাড়ি চালাতে-চালাতে বাঁ হাত রেখেছিল শ্রীজিতার কোলে। বেল্ট খুলে তার দিকে সরে গিয়েছিল শ্রীজিতা। ময়দানের পাশের চকচকে রাস্তা দিয়ে অকারণে বারকয়েক চক্কর দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়েছিল নির্ঝর। শ্রীজিতা গাঢ় স্বরে বলেছিল, “কী বলে ধন্যবাদ দেব জানি না।”

    নির্ঝর হেসে বলেছিল, “কিচ্ছু বলতে হবে না। আমি তো পার্টির সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়েছি মাত্র। তাকে কনভিন্স করানোর ক্রেডিট তো তোমার শ্রীজিতা।”

    শ্রীজিতা গদগদ গলায় বলেছিল, “তবু, আপনি না থাকলে কাজটা পেতামই না স্যার।”

    “কাজের প্রতি তোমার ডেডিকেশন আমি লক্ষ করেছি ইয়ং লেডি। ভেবেছিলাম, যদি পারি, তোমার জন্য কিছু করব।”

    শ্রীজিতা অস্ফুটে বলেছিল, “ধন্যবাদ স্যার।”

    নির্ঝর মল্লিক বলেছিল, “আমার তো কর্মজীবন শেষ হয়ে গেল। সামনের মাসে রিটায়ারমেন্ট। অনেকটা অভিজ্ঞতা হয়েছে। তোমার স্কিল দেখে এইটুকু অন্তত বলতে পারি, প্রফেশনাল লাইফে তুমি অনেক দূর যাবে।”

    শ্রীজিতা বলেছিল, “স্যার, আপনি এই স্যাক্রিফাইসটুকু না করলে.‌.‌.‌”

    নির্ঝর ঠোঁটের কোণে কামুক হেসে ফিসফিস করে বলেছিল, “এখন আর করব না।”

    বাড়ির গেটের সামনে পৌঁছনোর পর শ্রীজিতাকে কাছে টেনে নিয়েছিল ষাট বছরের নির্ঝর মল্লিক। ঠোঁট চেপে ধরেছিল ঠোঁটে। অনভ্যস্ত, বাজে ধরনের চুমু। আদরের ভানটুকুও নেই, শুধুই কাম। তাও বেশি বয়েসের দাঁতহীন কামড়। শ্রীজিতা বাধা দেয়নি। উলটে আরও একটু সুযোগ দিয়েছিল। তার একটা হাত তুলে নিজের বাঁ দিকের বুকের উপর রেখে… পোশাকের উপর দিয়েই রেখেছিল। এই লোকের বেশি সাহস নেই। ক্ষমতাও নেই। মনে-মনে সে বুঝে নিয়েছিল, নির্ঝর মল্লিকের কাছ থেকে যা সে পেয়েছে, তার বিনিময়ে এ অতি সামান্য। আরও বেশি চাইলে, হয়তো তাতেও রাজি হয়ে যেত। চাকরির গোড়াতে এই সাহায্যটা দরকার ছিল। নির্ঝর মল্লিক কেন দিয়েছিল? সত্যি কি তার কাজের উৎসাহ দেখে? নাকি এই ভোঁতা চুমুটুকু খাওয়ার জন্য? মধ্যবিত্ত মনের মানুষের কাছে এটাই হয়তো অনেক। যাক, যে কারণেই হোক। এরপর শ্রীজিতা নিজেই নির্ঝর মল্লিকের গালে ঠোঁট ঠেকিয়েছিল।

    মিনিট তিন–চারের মামলা ছিল সেটা। খুব বেশি হলে পাঁচ। শ্রীজিতা মুখ সরিয়ে কোলের উপর পড়ে যাওয়া শাড়ির আঁচল কাঁধে তুলেছিল, বাঁ হাতের চেটোয় মুছেছিল ঠোঁট। গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির লোহার গেট খুলতে গিয়ে দেখেছিল ঘুমন্ত তোয়াকে কোলে নিয়ে গ্রিল ঘেরা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে বিধান!

    শ্রীজিতার বুকের ভিতর ধক্‌ করে উঠেছিল। বিধান কি দেখতে পেয়েছে? কাচ তোলা গাড়ির ভিতর থেকে কতটা দেখা যায়?

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleরুপোর খাঁচা – প্রচেত গুপ্ত
    Next Article পঞ্চাশটি গল্প – প্রচেত গুপ্ত

    Related Articles

    প্রচেত গুপ্ত

    দেরি হয়ে গেছে – প্রচেত গুপ্ত

    September 18, 2025
    প্রচেত গুপ্ত

    পঞ্চাশটি গল্প – প্রচেত গুপ্ত

    September 18, 2025
    প্রচেত গুপ্ত

    রুপোর খাঁচা – প্রচেত গুপ্ত

    September 18, 2025
    প্রচেত গুপ্ত

    মাটির দেওয়াল – প্রচেত গুপ্ত

    September 18, 2025
    প্রচেত গুপ্ত

    নুড়ি পাথরের দিনগুলি – প্রচেত গুপ্ত

    September 18, 2025
    প্রচেত গুপ্ত

    নিষাদ – প্রচেত গুপ্ত

    September 18, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Our Picks

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }