Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025

    আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    September 22, 2025

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    September 22, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    আকাশের নিচে মানুষ – প্রফুল্ল রায়

    প্রফুল্ল রায় এক পাতা গল্প368 Mins Read0

    আকাশের নিচে মানুষ – ২২

    বাইশ

    তৃপ্ত উজ্জল সুখী মানুষের পৃথিবী থেকে অনেক অনেক দূরে গারুদিয়া তালুকের এই দোসাদটোলা। এখানকার বাসিন্দারা বাপ-নানার করজের দায়ে কত কাল ধরেই তো ক্রীতদাসের জীবন যাপন করে চলেছে। কিন্তু কী তাজ্জবকা বাত, গরীবের চাইতেও গরীব, ভুখার চাইতেও ভুখা, নাঙ্গার চাইতেও নাঙ্গা এই হতচ্ছাড়া জনম-দাসদের মধ্যেও মনুষ্যজাতির অনেক লক্ষণই দেখা যায়। অঢেল প্রাচুর্যে বোঝাই বহুদূরের ঝলমলে জগতের মানুষজনের মতোই এখানকার বাসিন্দাদের মৃত্যু ঘটে, মা-বাপের রক্তস্রোত থেকে সুপ্রাচীন সব আকাঙ্ক্ষা নিজের শরীরের মধ্যে পুরে যে ছৌয়াটি জন্মায় ক্রমে সে যুবক বা যুবতী হয়ে ওঠে। বহুকালের সামাজিক নিয়মেই একদিন তাদের সাদি হয়। শক্তিমান একটি পুরুষ উর্বরা যুবতীর গর্ভে নতুন জন্মের বীজ বুনে দেয়। এইভাবে আবার মানুষ আসে পৃথিবীতে। মানুষ না, আরেকটি জনমদাস। বাপ-নানার মতোই রঘুনাথ সিংহের জমি চষে তাদের খামারের গোলাগুলি মহার্ঘ সোনালী শস্যে বোঝাই করে একদিন দুনিয়া থেকে মুছে যায় কিন্তু তার আগেই নিজের সন্তান অর্থাৎ পরবর্তী প্রজন্মের জনমদাসকে পৃথিবীতে পৌঁছে দেয় সে। এইভাবে রঘুনাথ সিংদের জন্য বেগারখাটা ক্রীতদাসের অভাব কখনও ঘটে না।

    .

    আজ দোসাদটোলার টিউমলের বড় ছেলে শিউমলের সাদির কথা পাকা হবে। তিন ক্রোশ ফারাকে তিলাই গাঁওয়ের গৈবীনাথের ছোটা লড়কী রাধিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হবে আগামী ছট পরবের পর ফসল কাটা মরসুমের ঠিক আগে আগে। সেই উপলক্ষে গৈবীনাথ তার দুই ভাই, এক বেয়াই আর ভাঞ্জাকে নিয়ে দুপুরের ঢের আগেই এসে পড়বে। এই বিয়ের ব্যাপারে টিউমলের সঙ্গে গৈবীনাথদের দু-চার প্রস্থ কাঁচা কথা হয়ে গেছে। গৈবীনাথের মেয়ে রাধিয়া খুবসুরত ডাগর মেয়ে; চোদ্দ বছর উমর। দোসাদদের ঘরে এত বড় এবং এত শ্রীছাঁদওলা মেয়ে চোদ্দ সাল পর্যন্ত পড়ে থাকে না। রাধিয়ার যে এতদিন বিয়ে হয় নি তার একমাত্র কারণ গৈবীনাথ। মেয়ের পণ হিসেবে দেড় শ টাকা দর হেঁকে বসেছিল সে। তার যা মেয়ে তাতে এই দামটা এমন কিছু বেশি না। আশেপাশের বিশ পঞ্চাশটা তালুকে আর কোন দোসাদের ঘরে রাধিয়ার মতো এমন একটা মেয়ে কেউ দেখাক দেখি। সে লাখোমে এক।

    বিয়ের বাজারে রাধিয়ার দেড়শ রুপাইয়া দরটা যতই ন্যায্য হোক, তা দেবার মতো ক্ষমতা বিশ-পঞ্চাশটা মৌজায় কোন দোসাদের নেই।

    মেয়ে দেখে যে এগিয়ে আসে, দর শুনে তখুনি ভেগে পড়ে। পুতাহী আনার জন্য মেয়ে খুঁজতে বেরিয়ে রাধিয়াকে দেখে তাক লেগে যায় টিউমলের। সে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে, এই মেয়েকে যেভাবে পারে ঘরে আনবেই। আনবে তো, কিন্তু রুপাইয়া-পাইসা কঁহা? আগুপিছু না ভেবে ঝোঁকের মাথায় সে দর দেয় পঞ্চাশ টাকা। গৈবীনাথ দেড় শ’তেই অনড় থাকে। অনেক বার গারুদিয়া থেকে তিলাইতে ছোটাছুটি করে পায়ের শিরা ছিঁড়ে ফেলে টিউমল। পণের ব্যাপারটা নিয়ে এক বছর ধরে প্রচুর টানাহ্যাঁচড়া করে শেষ পর্যন্ত গৈবীনাথকে বেশ খানিকটা টলাতে পারে সে। গৈবীনাথ একটু একটু করে দর নামাতে থাকে, টিউমলও অল্প অল্প চড়িয়ে যায় এবং একশ টাকায় একটা রফা হয়। কিন্তু একশ টাকা একজন ভূমিদাসের কাছে কোটি টাকার সমান।

    এই দোসাদটোলায় যার ঘরেই যা হোক না কেন, সবাই সবার সঙ্গে পরামর্শ করে; বিশেষ করে গণেরির সঙ্গে।

    ছেলের বিয়ের ব্যাপারে যেদিন থেকে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে সেদিন থেকেই গণোরিকে সব জানিয়ে গেছে। গৈবীনাথ যেদিন একশ টাকায় রাজী হল সেদিন নাচতে নাচতে দোসাদটোলায় ফিরে টিউমল সারা মুখ জেল্লাদার হাসিতে ভরিয়ে বলতে থাকে, ‘হো গৈল গণেরি ভাইয়া। সদা হো গৈল—’

    গম্ভীর ভাবে মাথা নেড়েছে গণেরি। বলেছে, ‘সওদা তো হো গৈল। লেকেন শ রুপাইয়া কঁহা মিলি?’

    ‘মুনশীজীর কাছ থেকে নিয়ে নেব।’ সরল মুখে উত্তর দিয়েছে টিউমল। দোসাদ জাতির সেরা মেয়েটিকে পুতাহী করে ঘরে তুলবে, সেই খুশিতেই তখন সে ডগমগ।

    কিন্তু গণেরি চমকে উঠেছে, ‘করজ তো নিবি, শোধ করবি কী করে?’

    ‘হো যায়েগা গণেরি ভাইয়া, জরুর হো যায়েগা।’ বিষণ্ণ হেসেছে গণেরি। সে জানে মুনশীজী আজীবচাঁদের কাছ থেকে ধার নেওয়া মানেই বড়ে সরকার রঘুনাথ সিংয়ের ফাঁদে পা ঢোকানো। এই ভাবেই ঝোঁকের মাথায় বিয়ে সাদিতে করজ নিয়ে নিজেদের সর্বনাশ ঘটায় দোসাদরা। ভাবে কোন রকমে টাকা শোধ করে ফেলতে পারবে। কিন্তু সুদের পাহাড় জমে জমে গলায় ফাঁসটা পাকে পাকে আরো কঠিন ভাবে জড়িয়েই যায়। নিজের জীবন তো বটেই, বংশানুক্রমে কারো পক্ষেই এই ফাঁস কেটে বেরুবার রাস্তা নেই।

    টিউমল এক পুরুষের খরিদী কিষাণ। তার সঙ্গে সঙ্গেই এই বংশের দাসত্ব শেষ হয়ে যেত। তার পর থেকে তার বংশের সবারই স্বাধীন মর্যাদাবান মানুষ হবার কথা। কিন্তু সমস্ত জেনেশুনেও নিজের ছেলের গলায় বড়ে সরকারের ফাঁস জড়িয়ে দিচ্ছে সে। গণেরি বলেছে, ‘ফেঁসে যাবি টিউমলিয়া।’

    করজ নিলে ভবিষ্যতে কী ঘটতে পারে সেটা সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে টিউমল বলেছে, ‘আরে নায় নায় গণেরি ভাইয়া। রামজীর কিরপায় কেমন পুতাহী আনছি বল। দেখনেকো আউর দেখলানেকো চীজ।’ দেখবার এবং দেখাবার মতো যে রূপসী মেয়েটিকে ঘরে আনা ঠিক করেছে, তার চিন্তাতেই তখন টিউমল ভরপুর হয়ে আছে।

    কিন্তু জীবনের বিপুল অভিজ্ঞতা গণেরিকে ভবিষ্যতের বহুদূর পর্যন্ত দেখতে সাহায্য করে। এই করজের পরিণতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটা চোখের সামনে দেখতে দেখতে বিমর্ষ গলায় গণেরি বলেছে, ‘এই সাদিয়া ভেঙে দে টিউমল। ছেলেটাকে ফাঁসিয়ে যাস না।’

    টিউমল শিউরে উঠেছে, ‘নায় নায় ভাইয়া, এমন কথা বলো না।’

    ‘আরে মুরুখ, সাদি না হলে মানুষ মরে না।’

    ‘জওয়ানিকা ধরম, সাদি দিতেই হবে ভাইয়া।’ বলে টিউমল দার্শনিকের মতো গভীর কিছু কথা আওড়ায়। জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে, এই তিনটে ব্যাপার ভগোয়ানের নির্দেশে চলছে। এই নিয়ম অমান্য করার ক্ষমতা মানুষের নেই।

    সুতরাং অদৃশ্য ভগোয়ানের আঙুলের সঙ্কেতে গারুদিয়া তালুকের ভূমিদাস টিউমলের ছেলের সঙ্গে তিলাই গাঁওয়ের গৈবীনাথ দোসাদের মেয়ে রাধিয়ার বিয়ে হতে চলেছে। ভগবানের রাজ্যে এ নিয়ম নাকি অব্যর্থ এবং অনিবার্য।

    এখানে কারো ঘরে বিয়ে সাদি হলে সারা দোসাদটোলায় যেন তৌহার লেগে যায়। টিউমল এবং দোসাদটোলার বাকী সবাই সিধা রঘুনাথ সিংয়ের কাছে গিয়ে দরবার করেছিল, আজ টিউমলের বিয়ের বাত পাকা হবে, বড়ে সরকার যেন একটা বেলার জন্য ক্ষেতির কাজ থেকে রেহাই দেন। রঘুনাথ পরম উদারতায় একবেলা না পুরা একটা দিনই মকুব করে দিয়েছেন। দোসাদটোলার প্রতিটি মানুষ এতে বেজায় খুশী এবং অভিভূত। তবে বহুদর্শী গণেরি সব কিছুই একটু টেড়া চোখে দেখে। সে বুঝেছে সামনে চুনাও; এখন ভোটদাতাদের চটানোটা কোন কাজের কথা নয় বরং খুবই ক্ষতিকর।

    আজ ভোরে সূর্য ওঠার ঢের আগে থেকেই দোসাদটোলার নানা বয়সের মেয়েরা থোকায় থোকায় বা আলাদা আলাদা হয়ে টিউমলদের ঘরের সামনে জমায়েত হয়ে সাদির গান শুরু করে দিয়েছে:

    আঙ্গনমে আজ আয়া মোরী সামহাল করকে
    ইহা হ্যায় গরীব আঙ্গন, তুম হো সপুত সাজন
    ধীরেসে অপনে প্যারকো রখনা সামহাল করকে
    দাদা ও তেরে আয়ে আভি বরাতী বনকে
    দাদী যে তেরী আয়ী রেণ্ডিকি ভৈস বন কর
    আঙ্গনমে আজ আয়া……

    একদল দম নেবার জন্য গান থামাতেই আরেক দল আরম্ভ করে দেয়।

    সৌগতকে গালি শুনাও, শুনাও মেরে সখিয়া
    সব বড়ী আতিয়ানকে ভরুয়াকে শিরুহনমে টোপী নেহী হ্যায়
    বহিনিকে চটি লাগাও, লাগাও মেরে সখিয়া
    সব বড়ী আতিয়ানকে ভরুয়াকে ধোতি নহী,
    বাহিনিকে শাড়ী প্যাহনাও
    সব বড়ী আতিয়ানকে ভরুয়াকে গঞ্জি নহী
    উনকি যো বহিনিকে চোলী প্যাহনাও
    সব বড়ী আতিয়ানকে ভরুয়াকে পাওমে জুতী নহী
    ভরুয়াকে বহিনিকে সণ্ডেল প্যাহনাও
    প্যাহনাও মেরে সখিয়া ……

    রোদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে দোসাদটোলার জনকয়েক ফুর্তিবাজ মরদও ঢোলক বার করে গানের সঙ্গে বাজনা জুড়ে দেয়। সত্যি সত্যিই শিউমলের বিয়েকে ঘিরে এখানে পরব শুরু হয়ে গেছে যেন।

    সূরয যত চড়তে থাকে দোসাদটোলার একটা প্রাণীও আর নিজের ঘরে থাকে না; সবাই এসে টিউমলের ঘরের সামনে জমা হয়। সবাই বেজায় খুশী। অস্তুত এই বিয়ে উপলক্ষে তারা যে পুরা একটা রোজ গতরচূরণ ক্ষেতিচষার পরিশ্রম থেকে রেহাই পেয়েছে, সেটা দোসাদদের জীবনে খুব সামান্য ঘটনা নয়।

    বরের বাপ টিউমল আর মা পহেলী আনন্দে আজ যেন হাওয়ায় উড়তে থাকে। ভোরবেলাতেই কুয়োর জলে ‘নাহানা’ সেরে বাদরার ছাই দিয়ে কাচা পরিষ্কার জামা কাপড় পরে একবার এর কাছে যাচ্ছে, একবার ওর কাছে। সবার হাতে হাতে চা, বুনিয়া আর ভাঙ্গা চানা দিতে দিতে খুবই বিনীতভাবে বলছে, ‘লো ভাইয়া, লো। আমার লেড়কার সাদির ব্যাপারে তোমরা যে এসেছে, এ বহোত সৌভাগ—’

    দোসাদটোলার প্রতিটি মানুষ আজন্মের চেনা টিউমলের। তার বয়স পঞ্চাশ বাহান্ন। যারা তার সমবয়সী তাদের সঙ্গে বড় হয়ে উঠেছে সে। যারা ছোট তাদের জন্মাতে দেখেছে। এই দোসাদটোলার আর সব ভূমিদাসের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বড়ে সরকারের জমি চষেছে সে, ফসল কেটেছে। কারণে-অকারণে এদের সঙ্গে ঝগড়া করেছে; আবার বিপদের দিনে বুক দিয়ে পড়েছে। সীমাহীন কষ্ট, দুঃখ, অভাব ভাগাভাগি করে এখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গেই কতকাল ধরে পাশাপাশি এই পৃথিবীতে টিকে আছে টিউমল। দোসাদটোলার প্রতিটি মানুষের হাড় পর্যন্ত তার চেনা। কিন্তু আজকের দিনটা একেবারেই আলাদা।

    আজ এরা সবাই তার মেহমান। দোসাদটোলাবাসী প্রতিটি মানুষের কাছে গিয়ে তো খাতিরদারি দেখাতেই হবে। নইলে মেহমানদারির অপমান।

    টিউমল যেমন দোসাদটোলার পুরুষদের কাছে গিয়ে খাতির-যত্ন করছে তেমনি তার বউ যাচ্ছে মেয়েদের কাছে।

    দূরে ঘরের দাওয়ায় বসে আছে টিউমলের ছেলে শিউমল। ভোরে উঠবার পর তাকেও ‘নাহান’ সেরে নিতে হয়েছে। চানের আগে মাথায় প্রচুর পরিমাণে তেল ঢেলেছে। ফলে চুলগুলো এখনও জবজবে; কানের ধার এবং কপাল বেয়ে চুইয়ে চুইয়ে তেল গড়াচ্ছে। শিউমলের পরনে এখন হলুদে ছোপানো পরিষ্কার ধুতি আর চাহাঢ়ের হাটিয়া থেকে কিনে আনা জালিকাটা আনকোরা সৌখিন গেঞ্জি। গেঞ্জির ওপর রবার স্ট্যাম্পে কোম্পানির মোহর ছাপা রয়েছে। শিউমলের মুখে একটু লাজুক হাসি মাখানো। তা ছাড়া তারই জন্য যে এত আয়োজন আর এত মেহমানের আনাগোনা, সেই কারণে রীতিমত গর্বও।

    শিউমলকে ঘিরে বসে রয়েছে তারই সমবয়সী দোসাদপাড়ার ছেলে-ছোকরারা। বিয়ের ব্যাপারে ইয়ার-বন্ধুরা তাকে ঠাট্টা করছে বা মজাক ওঠাচ্ছে। হেসে হেসে শিউমল তার উপযুক্ত জবাবও দিচ্ছে। এদের মধ্যে ধর্মাকেও দেখা যায়।

    জমায়েতের এক প্রান্তে একটা ঝাঁকড়ামাথা পরাসগাছের তলায় দুই হাঁটুর ফাঁকে থুতনি গুঁজে বসে আছে গণেরি। চারদিকে এত লোকজন, এত গানবাজনা, এত হাসিঠাট্টা, মজাক—সব কিছুর ভেতরে থেকেও সে যেন কিছুর মধ্যেই নেই। সমস্ত কিছু থেকেই সে অনেক ফারাকে। তাকে নিরানন্দ গম্ভীর দেখায়।

    ঘুরতে ঘুরতে একসময় বুনিয়া, চানা ভাজা, চা ইত্যাদি নিয়ে টিউমল গণেরির কাছে হাজির হয়। আপ্যায়নের সুরে বলে, ‘লো গণেরি ভাইয়া, চায় পানি পীও—’

    কালচে ক্বাথের মতো চা রয়েছে কলাই-করা গেলাসে আর বুনিয়া টুনিয়া শালপাতার মোড়কে। হাত বাড়িয়ে গেলাস আর শালপাতার ঠোঙা ধরতে ধরতে গণেরি বলে, ‘এত লোককে চা খাওয়াচ্ছিস, মিঠাইয়া খাওয়াচ্ছিস! পাইসা পেলি কোথায়?’

    টিউমল বিব্রত বোধ করে। গণেরির চোখের দিকে একবারও না তাকিয়ে অস্পষ্ট গলায় বলে, ‘মিলা গৈল ভাইয়া—’

    কীভাবে টিউমল এত খরচ টরচ করছে, বুঝতে অসুবিধা হয় না গণেরির। তীক্ষ্ণ নজরে তাকে দেখতে দেখতে জিজ্ঞেস করে, ‘অঙ্গুঠার ছাপ মেরে মুনশীজীর কাছ থেকে কত রুপাইয়া করজ নিয়েছিস রে?’

    মুখ নামিয়ে খুব আস্তে টিউমল মাথা নাড়ে। বলে, ‘খোড়া কুছ; জ্যাদা নেহী।’

    গণেরিকে বড়ই বিমর্ষ দেখায়। বহুদর্শী আধবুড়ো এই দোসাদ টিউমলদের সংসারের অন্ধকার ভবিষ্যৎ দেখতে দেখতে হতাশ গলায় বলে, ‘বুরবাক কাঁহাকা। ছৌয়ার সাদি তো দিচ্ছিস না, তার মৌত ডেকে আনছিস। বিলকুল খতম হয়ে যাবি তোরা।’

    তৌহারের মতো এই আনন্দের দিনে গণেরির এ জাতীয় কথা খুবই অস্বস্তিকর। সে উত্তর না দিয়ে বলতে থাকে, ‘পী লেও ভাইয়া, চায়পানি ঠাণ্ডী হো যায়গা—’

    টিউমলের কথা কানে ঢোকে না গণেরির। সে রুক্ষ স্বরে শুধোয়, ‘গলায় কত টাকার ফাঁস চড়িয়েছিস আগে বল্‌?

    ‘বললাম তো, জ্যাদা নেহী।’

    ‘জ্যাদা তো নেহী, তবু বাতা কত টাকার করজ নিয়েছিস—’

    নতমুখে টিউমল জানায়, ‘দোশো—’

    ‘করজ নিয়ে মেহমানের খাতিরদারি করছিস! লাখেড়া (লক্ষ্মীছাড়া) ভৈস কাঁহাকা!’ ক্ষেপে গিয়ে গণেরি আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল, এই সময় গোটা দোসাদটোলাটায় সাড়া পড়ে যায়। একসঙ্গে গলা মিলিয়ে অনেকে চেঁচিয়ে ওঠে, ‘আ গিয়া, আ গিয়া—’

    দেখা যায়, ক্ষারে-কাচা সাফসুতরো কাপড়-জামা আর দু কে-জি ওজনের কাঁচা চামড়ার ভারী নাগরা পড়ে টিউমলের ভাবী সমধী-সমধীন (বেয়াই-বেয়ান), তাদের ভাঞ্জা, বোনাই আর ওদের এক বয়স্ক পণ্ডিতজী (খুব সম্ভব পুরুত) কুয়োপাড়ের রাস্তা দিয়ে এগিয়ে আসছে। সমধীন অর্থাৎ বেয়ানের আসার কথা আগে জানায় নি গৈবীনাথ। জানান না দিয়ে তার আসাটা একটা চমকপ্রদ ঘটনা। তা ছাড়া কনের মা হলে কী হবে, বয়সের তুলনায় সমধীনকে যুবতী দেখায়। পতলী ‘কোমরা’, টান টান চটকদার চেহারা, হাত পা এবং মুখের ছিরিছাদ চমৎকার; চোখে বিজরী খেলার মতো চাউনি। হাতে আর দুই ভুরুর মাঝখানে উল্কি। পরনে বাহারে শাড়ি, হাতে রুপোর কাঙনা, কানে ‘করণফুল’, নাকে ঝুটা পাথর বসানো নাকছাবি, পায়ের মাঝখানের আঙুলে রুপোর চুটকি। মাথা থেকে গন্ধতেলের ভূতুরে খুসবু ভেসে আসছে। দোসাদদের ঘরে এমন চেহারা এমন সাজগোজ ক্বচিৎ চোখে পড়ে। পুতহুর জন্য মেয়ে দেখতে গিয়ে মেয়ের মাকে দেখে মজে এসেছে টিউমল। এমন না হলে আর সমধীন! দোসাদদের ঘরের মেয়েমানুষদের এমনিতেই তো কড়াপড়া হাত, তামাক আর খৈনি খেয়ে খেয়ে দাঁতগুলো আতার দানার মতো কালো, চোখেমুখে না ছিরি না ছাদ। হাঁ করলে গলায় যেন দশটা কৌয়া কি কামার পাখি ডেকে ওঠে। আর এই গৈবীনাথের বউ! সে যেন স্বর্গের পরীটি। বিয়ের পর শিউমল ক’দিন সসুরালে যাবে, সেটা সে বুঝবে। তবে সমধীনের টানে টিউমল যে মাঝে মাঝেই তিলাই গায়ে হানা দেবে, সেটা চাঁদ সূরয ওঠার মতো একরকম নিশ্চিত।

    গৈবীনাথদের দেখে বেজায় চঞ্চল হয়ে পড়ে টিউমল। সে বলে, ‘ওরা এসে গেছে, আমি যাই ভাইয়া—’ গণেরির উত্তরের জন্য এক মুহূর্ত না দাঁড়িয়ে সে একরকম দৌড়ই লাগায়।

    সেই ভোর থেকে একটানা ‘সাদির গানা’ গেয়ে আর অনবরত ঢোল পিটিয়ে  গাইয়ে-বাজিয়েরা খানিকটা ঝিমিয়ে পড়েছিল। টিউমলের নতুন কুটুম্বদের দেখে গানবাজনা দশগুণ তুমুল হয়ে ওঠে। এর মধ্যেই টিউমল, তার বউ এবং দোসাদটোলার অন্যান্য মেয়ে পুরুষ মেয়েপুরুষ গৈবীনাথদের যথেষ্ট সমাদর করে ঘরের বারান্দায় নিয়ে বসায়। পণ্ডিতজীর খাতিরদারির জন্য দ্রুত অন্য ব্যবস্থা করা হয়। তার হাত-পা ধোওয়ার জন্য নতুন কুয়ো থেকে টাটকা জল তোলা হয়, বসার জন্য আনা হয় দড়ির চৌপায়া। এ জাতীয় বামহনেরা যারা অচ্ছুৎদের নানা ক্রিয়াকরম সাদি শরার্ধের কাজ করে তারা ব্রাহ্মণকুলে পতিত উচ্চবর্ণের ‘শুধ’ (শুদ্ধ) বামহনের কাছে এদের হুক্কা-পানি বন্ধ।

    যাই হোক, সবাইকে বসাবার পর চা আসে, বুনিয়া আসে। এটা প্রাথমিক আপ্যায়ন। তারপর নানা মজার এবং রসের কথার পর আসল কাজের কথা শুরু হয়। পণ্ডিতজী পাঁজিপুথি দেখে বিয়ের দিন পাকা করে দেয়। ছট পরবের পর প্রথম ‘পুনমকা রাতে’ টিউমলের ছেলের সঙ্গে গৈবীনাথের মেয়ের বিয়ে হবে।

    ভাবী জামাইকে পাঁচটা কাঁচা টাকা আর নতুন কোরা ধুতি দিয়ে আশীর্বাদ করে গৈবীনাথ এবং তার বউ।

    খুশিতে ডগমগ টিউমল চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলে, ‘হো গৈল, রামজীকা কিরপাসে সাদিকা বাত পাক্কা হো গৈল—’

    এ সবের মধ্যে আরো একটা ব্যাপার ঘটতে থাকে। সবাই যখন বিয়ের কথা বা গান বাজনায় ব্যস্ত তখন বার বার কুশী আর ধর্মার চোখাচোখি হয়। কুশীর চোখে বিষণ্ণ করুণ চাউনি। যত বার কুশীর দিকে চোখ যায়, ততবারই ধর্মা দ্যাখে, মেয়েটা তার দিকে তাকিয়ে আছে।

    বিয়ের কথা পাকা হতে হতে বেলা হেলে যায়। সূরয খাড়া মাথার ওপর থেকে পশ্চিমে নামতে শুরু করে। জমায়েত ভেঙে একে একে দোসাদটোলার বাসিন্দারা যে যার ঘরে ফেরে। টিউমলের ঘরে তাদের শুধু চা-পানি খাওয়ার নেমন্তন্ন ছিল। দুপুরের খাওয়া যার যার নিজের ঘরে। তবে নতুন কুটুম্বরা টিউমলদের ওখানেই দুপুরের ‘ভোজন’ সারবে। সে জন্য ভাত, ডাল, সবজি, মাংস, টক দহি, বুনিয়া—রীতিমত একটা ভোজের আয়োজন করেছে টিউমল।

    .

    সবার সঙ্গে সঙ্গে কুশী, ধর্মা এবং তাদের চার মা-বাপও নিজেদের ঘরে ফিরে এসেছিল। এখন কুশীদের ঘরের বারান্দায় কুশীরা আর ধর্মাদের ঘরের বারান্দায় ধর্মারা খেতে বসেছে।

    মোটা দানার লাল লাল ভাত কালচে বিড়ির ডাল দিয়ে মেখে বড় বড় গরাস মুখে পোরে ধর্মা আর তার বাপ। মাঝে মাঝে পেঁয়াজ আর হরা মিরচিতে কামড় দেয়।

    ওদিকে ধর্মার মাও ভাত মেখে নিয়েছিল। খেতে খেতে সমানে বকতে থাকে সে, ‘সবার ছেলেমেয়ের সাদি হয়ে যায়। আমাদের ঘরেই সিরিফ আন্ধেরা।’

    মায়ের গলার সুরেই আন্দাজ পাওয়া যায়, তার কথাবার্তা এবার কোনদিকে বাঁক নেবে। এই দোসাদটোলায় যখনই কোন ছেলেমেয়ের বিয়ে হয় তখনই বুড়ীর গজর গজর শুরু হয়। তার বড় আশা, ছেলের বিয়ে দিয়ে কুশীকে পুতহু করে ঘরে তোলে। মায়ের কথার উত্তর না দিয়ে পাতে ঘাড় গুঁজে দেয় ধর্মা; ঝড়ের বেগে নাকেমুখে ভাতডাল গুঁজতে থাকে। এভাবে খাওয়ার একমাত্র কারণ, তাড়াতাড়ি মায়ের সামনে থেকে সরে পড়া।

    বুড়ী ফের বলে, ‘কা রে, তোর মতলবটা কী?’

    ধর্মা বলে, ‘কীসের মতলব?’

    ‘সাদি উদি করবি না? নাকি বনভৈসার (বুনো মোষ) মতো সারা জীওন ঘুরে বেড়াবি? তোর চেয়ে ছোট ছেলেদের সব সাদি হয়ে গেল!’

    পাশের ঘরের বারান্দায় বসে খেতে খেতে মা আর বেটার সব কথাই শুনতে পাচ্ছিল কুশীর মা। গলা তুলে সে বলে, ‘বেটোয়াকে সমঝা ধর্মাকা মাঈ; সাদিটা এবার চুকিয়ে ফেলুক।’

    ধর্মার মা বলে, ‘তোরাই সমঝা। সাদির কথা বলে বলে আমার মুখে খুন উঠে গেছে।’

    ধর্মা বলে, ‘সাদি করব না বলছি? লেকেন—’

    ‘লেকেন কী?’

    ‘রুপাইয়া পাইসা কঁহা? বিয়ের খরচ খরচা আসবে কোত্থেকে?’

    ‘কেন বগেড়ি মেরে যে পাইসা জমাচ্ছিস তার থেকে সাদির খরচা দিবি।’ পাখি এবং বনের নানারকম জানোয়ার মেরে সেগুলোর নখ-দাঁত-চামড়া টিরকে মারফত সাহেবদের কাছে বেচে ধর্মা আর কুশী যে টাকা জমাচ্ছে, বুড়ী সে খবর রাখে।

    ‘ঐ পাইসা সাদির জন্যে না।’

    ‘তবে?’

    ‘করজ শুধবার জন্যে।’ ধর্মা যা বলতে থাকে তা এইরকম। বড়ে সরকারের পাই পয়সাটি হিসেব করে মিটিয়ে দেবার পর যখন তারা পুরোপুরি স্বাধীন হতে পারবে, ভূমিদাসদের গ্লানিকর কুৎসিত জীবন থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাবে, তখনই বিয়ের কথা ভাববে সে।

    ‘ততদিনে যে মৌতের বয়েস হয়ে যাবে রে ভূচ্চর—’

    ‘হয় হোক।’

    পাশের ঘরের দাওয়া থেকে কুশীর মা চেঁচিয়ে ‘ওঠে, ‘হো রামজী, তোর বেটোয়ার জন্যে আমার বেটীর সাদি রুখে রয়েছে। জানবর লাখেড়া কাঁহিকা—’

    নিজের পেটের ছৌয়াকে যা খুশি বলতে পারে ধর্মার মা। তাকে মারতে পারে, কাটতে পারে কিন্তু পরে কোন অধিকারে গালাগাল দেবে? সে ফোঁস করে ওঠে, ‘কা রে, তুই আমার বেটোয়াকে গালি দিচ্ছিস! বুড়হী গিধ, বুড়হী শাঁখরেল কাঁহিকা। তোর মুহ্‌মে আগ ধরিয়ে দেব—’

    কুশীর মা-ও ছাড়বার পাত্রী নয়। সে-ও কোমর বেঁধে লেগে যায়। লাফ দিয়ে নিচে নেমে প্রবল বেগে হাত-পা নেড়ে ভেংচায়, চেঁচায়, নানারকম অঙ্গভঙ্গি করে। ধর্মার মা-ও বসে থাকে না। হয়ে যায় তুমুল ধুন্ধুমার। চিৎকারে গালাগালিতে দোসাদটোলা থেকে তাবত কাকচিল উধাও হয়ে যায়।

    ‘দেবো না তোর বেটোয়ার সাথ আমার লড়কীর সাদি। বিয়ে দিলে এতদিনে আমার কুশীটার দুটো ছৌয়া হয়ে যেত।’

    ‘তুই দিবি না কী, আমিই তোর লেড়কীকে পুতহু করব না তোদের রিস্তাদারির মুহমে দশ বার থুক, দশ বার লাথ।’

    যখনই এখানে কারো ঘরে বিয়ে সাদি লাগে, কুশীর মা এবং ধর্মার মায়ের মধ্যে একপ্রস্থ লড়াই বেধে যায়। শুধু যাদের নিয়ে এই মহাসমর তারা পাশাপাশি দুই ঘরের দাওয়ায় বসে মুখ টিপে হাসে।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleইতিহাসের গল্প – প্রতুলচন্দ্র গুপ্ত
    Next Article পাগল মামার চার ছেলে – প্রফুল্ল রায়

    Related Articles

    প্রফুল্ল রায়

    আলোর ময়ুর – উপন্যাস – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    কেয়াপাতার নৌকো – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    শতধারায় বয়ে যায় – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    উত্তাল সময়ের ইতিকথা – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    গহনগোপন – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    নিজেই নায়ক – প্রফুল্ল রায়ভ

    September 20, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025
    Our Picks

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025

    আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    September 22, 2025

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    September 22, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }