Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025

    আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    September 22, 2025

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    September 22, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    আকাশের নিচে মানুষ – প্রফুল্ল রায়

    প্রফুল্ল রায় এক পাতা গল্প368 Mins Read0

    আকাশের নিচে মানুষ – ২৪

     চব্বিশ

    আজ দুপুরে কালোয়া খাওয়ার পর ধর্মারা আবার হাল-বয়েল নিয়ে জমিতে নেমে পড়েছে। ধান রোয়ার আগে পর্যন্ত এখন তাদের একই ধরনের কাজ। অনবরত লাঙলের শীষ চালিয়ে চালিয়ে পাথরের মতো শক্ত জমাট মাটি আবাদের যোগ্য করে তোলা।

    আজ দক্ষিণ দিকের জমি চষেছে ধর্মা। তার ঠিক পরের জমিটা থেকেই মরসুমী ওরাঁও আর মুণ্ডা কিষাণরা লাঙল ঠেলছে। সুবিশাল আকাশের নীচে পুবে-পশ্চিমে উত্তরে-দক্ষিণে যতদূর চোখ যায়, রঘুনাথ সিংয়ের ক্ষেতিগুলোর নানা দিক থেকে নানা গলায় ক্রমাগত আওয়াজ শোনা যায়, ‘উর্‌রা উর্‌রা—চল্ বেটা, চল্।’ ভূমিদাস আর ওরাঁও মুণ্ডারা আলটাকরা এবং জিভ দিয়ে শব্দ করে করে বয়েল চালাচ্ছে।

    কোয়েলের মরা খাতের ওধারে অর্থাৎ উত্তর দিকটাতেও সেই একই ছবি। অন্য দিনের মতো ওখানেও মিশিরলালজীর ক্ষেতিগুলোতে ভট ভট করে ট্রাক্টর চলছে।

    ক’দিন আগে ছেঁড়া ছেঁড়া টুকরা টুকরা পছিমা মেঘ দেখা দিয়েছিল। এখন আকাশে সে সবের চিহ্নমাত্র নেই। মাথার ওপর থেকে জেঠ মাহিনার গনগনে রোদ নেমে আসছে শুধু। আর মাঠের ওপর দিয়ে ঝলকানো লু-বাতাস উল্টোপাল্টা ঘোড়া ছুটিয়ে চলেছে।

    অর্থাৎ হাইওয়ের এধারের এবং ওধারের জমিগুলোতে সেই চৈত্র মাস থেকে বারিষ না পড়া পর্যন্ত রোজ এই একই ছবি দেখা যাচ্ছে। এই স্থির চিত্রের কোন পরিবর্তন নেই।

    রোজকার মতো আজও ধর্মার পিছু পিছু দৌড়চ্ছে কুশী আর সমানে মাটি থেকে কোদা বেছে যাচ্ছে। আচমকা থমকে দাঁড়িয়ে যায় সে। খানিকটা উত্তেজিতভাবেই নীচু গলায় ডাকে, ‘ধম্মা— এ ধম্মা—’

    ধর্মা লাঙলের মাথাটা শক্ত মুঠে চেপে ধরে তেজী পাটনাই বয়েল দুটোকে থামিয়ে ঘাড় ফেরায়। শুধোয়, ‘কা?’

    ‘দেখ দেখ—হুই—’ বলে তাদের পাশের জমিটার দিকে আঙুল বাড়ায় কুশী।

    হাত দিয়ে কপালের ঘাম চেঁছে নিয়ে ধর্মা ডাইনে তাকায়। ফুর পান্ট (ফুল প্যান্ট), দামী জামা, দামী জুতো পরা দুটো লোক পাশের জমির আধবুড়ো কিষাণটার সঙ্গে কথা বলছে। কিষাণটাকে ধর্মা চেনে; চাহাঢ়ের হাটিয়ায় তাকে প্রথম দেখেছে। তারপর এখানে রোজ কত বার দেখছে তার হিসেব নেই। যে সব মরসুমী আদিবাসী কিষাণ এবার রঘুনাথ সিংয়ের ক্ষেতিতে কাজ করতে এসেছে তাদের ভেতর বেশির ভাগই মুণ্ডা। আধবুড়ো লোকটা মুণ্ডা কিষাণদের মাতব্বর।

    ফুর প্যান্ট পরা লোকদুটোর মুখও বেশ চেনা। খানিকক্ষণ তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনে পড়ে যায়, রামলছমনদের সঙ্গে চাহাঢ়ের হাটিয়ায় মুরসুমী কিষাণ আনতে গিয়ে এই লোক দুটোকেও দেখেছিল। ওরা গুজ গুজ করে আদিবাসীদের সঙ্গে কী সব কথা বলছিল যেন।

    তারপর ধর্মারা যখন ওরাঁও মুণ্ডাদের নিয়ে হাইওয়ে ধরে গারুদিয়া ফিরে আসছিল তখন লোকদুটো দৌড়ে এসে আদিবাসীরা কোথায় ক্ষেতির কাজে যাচ্ছে, কোথায় থাকবে ইত্যাদি খবর জেনে নিয়েছিল। এরা যে একদিন মরসুমী কিষাণদের খোঁজে এখানে হানা দেবে, তখনই তা টের পাওয়া গেছে।

    মাতব্বর মুণ্ডাটার সঙ্গে লোকদুটো যে সব কথা বলছে তার পুরোট শোনা যাচ্ছে না। টুকরা টুকরা যা কানে আসছে তা থেকে বোঝা যায় তারা আদিবাসীদের রেলের ডিব্বায় চড়িয়ে আগরতলা বা আসাম ইত্যাদি জায়গায় নিয়ে যেতে চায়। সেখানে গেলে সালভর কাম মিলবে, ভরপেট খাওয়া জুটবে, বহোত পাইসা রুপাইয়া মিলবে।

    এ সব ধর্মার অজানা নয়। চাহাঢ়ের হাটিয়ায় এরকম বলেই আড়কাঠি দুটো এরাও মুণ্ডাদের ফুসলাতে চেয়েছিল।

    আধবুড়ো মাতব্বরটা বলে, ‘সোচনা হোগা—’

    আড়কাঠি দুটো একই সঙ্গে গলা মিলিয়ে বলে ওঠে, ‘হাঁ হাঁ, সোচ-বিচার তো জরুর করতে হবে। মগর যা করার তুরন্ত করে ফেলবি। সমঝা?’

    মাতব্বর মাথা নাড়ে।

    আড়কাঠি দুটো ফের বলে, ‘আগরতলা আসামে গেলে তোদের ভালাই হবে। ভুখে কষ্ট পাবি না, অভাব-দুখ থাকবে না—আধা নাঙ্গা আধবুড়ো আদিবাসীটার চোখের সামনে তারা গাঢ় রঙে স্বপ্নের ছবি আঁকতে থাকে।

    মাতব্বর কী বলতে যাচ্ছিল, আচমকা উত্তরের ক্ষেতিগুলোর দিক থেকে গরম বাতাস চিরে চিরে অত্যন্ত পরিচিত একটা কর্কশ গলা ভেসে আসে, ‘চলে বনবাস, রামসীয়া জানকীয়া—’

    অর্থাৎ বগুলা ভকত রামলছমন ক্ষেতির কাজের তদারকিতে বেরিয়েছে। চমকে ঘাড় ফিরিয়ে দ্রুত একবার তাকে দেখে নেয় ধর্মা। তারপর বয়েল দুটোর লেজে মোচড় দিয়ে চেঁচিয়ে ওঠে, ‘ঊররা হট্‌—হট্‌—’ লাঙলের ধারাল শীষ আবার মাটি চিরতে চিরতে এগিয়ে যায়।

    ওদিকে পাশের জমিতে আড়কাঠি দুটোও আর এক মুহূর্ত দাঁড়ায় না।

    রামলছমন যে ক্ষেতিমালিকের আপন। আদমী, চাহাঢ়ের হাটিয়াতেই সেটা তারা টের পেয়ে গিয়েছিল। মালিকের জমিতে এসে তাঁরই কিষাণদের কেউ লোভ দেখিয়ে ফুসলে নিয়ে যেতে চাইছে, এ খবর জানাজানি হয়ে গেলে রক্ষা নেই। মালিকের লোকেরা তাদের ছাল ছাড়িয়ে লাশ মাটিতে পুঁতে দেবে।

    লাঙল ঠেলতে ঠেলতে ধর্মা ভাবে, আসাম বা আগরতল! কোথায়, কতদূরে? উত্তরে তালুক মনপত্থল, পশ্চিমে বিজুরির রেল টিসন, পুবে হাঁথিয়াগঞ্জ, দক্ষিণে নওশেরাগঞ্জ—এই হল তার পরিচিত পৃথিবীর সীমা। এর বাইরে কোথায় কতদূরে আসাম আর কোথায়ই বা আগরতলা, তার জানা নেই। আনপড় ধর্মা তার সবটুকু কল্পনাশক্তি দিয়েও সেই দূরত্বটা মাপতে পারে না।

    .

    সন্ধ্যের আগে আগে সূর্যটা দিগন্তের তলায় যখন নেমে যাচ্ছে সেই সময় ক্ষেতি থেকে হাল-বয়েল তুলে জনমদাসেরা আর ওরাঁও মুণ্ডা কিষাণেরা হাইওয়েতে এসে ওঠে। তারপর লাল ধুলো ওড়াতে ওড়াতে কাতার দিয়ে রঘুনাথ সিংয়ের খামারবাড়ির দিকে এগিয়ে যায়।

    চলতে চলতে আচমকা চোখে পড়ে, হাইওয়ের ধার ঘেঁষে নাবাল পড়তি জমিতে যেখানে আদিবাসীরা কিছুদিন ধরে আস্তানা গেঁড়েছে, সেখানে দুপুরের আড়কাঠিদুটো ঘোরাঘুরি করছে। এই ওরাও মুণ্ডা সাঁওতালেরা এসেছে পুব দিক থেকে। ওদিকে খরায় মাঠঘাট জ্বলে যাওয়ায় খাদ্যের খোঁজে এধারে চলে এসেছে ওরা।

    আড়কাঠি দুটোর কী মতলব? মরসুমী কিষাণদের মতো এই আদিবাসীদেরও ওরা আসাম বা আগরতলা নিয়ে যাবার ধান্দা করছে নাকি?

    আচমকা ধর্মার মনে হয়, ঐ ফুর প্যান্টপরা লোকদুটোকে ধরে আসামে চলে গেলে কেমন হয়? ওরা তো আদিবাসীদের ভরসা দিয়েছেই—ভরপেট খানা মিলবে, রুপাইয়া-পাইসা মিলবে, সালভর কাম মিলবে। ওরাঁও-মুণ্ডাদের যদি নিয়ে যায়, কুশী এবং তাদেরও কি নিয়ে যাবে না? নিশ্চয়ই নেবে। রঘুনাথ সিংয়ের ক্ষেতিতে জনমভর লাঙল ঠেলার হাত থেকে তা হলে রেহাই পাওয়া যাবে। অতদূরের আসাম বা আগরতলায় পহেলবান পাঠিয়ে নিশ্চয়ই বড়ে সরকার তাদের ধরে আনতে পারবেন না। গণেরি চাচার সঙ্গে এই নিয়ে একটু পরামর্শ করে দেখতে হবে।

    উজ্জ্বল স্বাধীন জীবনের কথা ভাবতে ভাবতে একসময় আদিবাসীদের এলাকাটা পেরিয়ে যায় ধর্মারা।

    আরো কিছুক্ষণ পর ওরা যখন হাইওয়ে থেকে নেমে খামারবাড়ির দিকের কাচ্চীতে নামতে যাবে সেই মুহূর্তে দক্ষিণ কোয়েলের মরা খাতটার ওধার থেকে অগুনতি মানুষের চিৎকার ভেসে আসতে থাকে। থমকে দাঁড়িয়ে যায় ধর্মারা। ঘাড় ফেরাতেই নজরে পড়ে, দু-আড়াই শো লোক ধুলো উড়িয়ে তাদের দিকেই দৌড়ে আসছে।

    কাছাকাছি আসতেই বোঝা যায়, ওরা দোসাদটোলার দুবলা কমজোরি বুড়াবুড়ীর দল। অর্থাৎ রঘুনাথ সিং যাদের ক্ষেতির কাজ থেকে বাতিল করে দিয়েছেন সেই সব লোক। তাদের সঙ্গে রয়েছে উত্তর দিক থেকে আসা জনকতক ওরাঁও-মুণ্ডা। রোজ সকালে উঠে এরা খাদ্যের খোঁজে দক্ষিণ কোয়েলের পাড়ে সেই জঙ্গলে চলে যায়।

    লোকগুলো সমানে চেঁচাচ্ছিল। দোসাদটোলার মাতব্বর গণেরি তাদের সামনে এগিয়ে এসে চিৎকার করে বলে, ‘কা হুয়া? কা হুয়া? এত্তে চিল্লাতা কায়?’

    একসঙ্গে সবাই গলার শির ছিঁড়ে চেঁচানোর কারণ জানাতে চায়। ফলে কিছুই বোঝা যায় না।

    এবার ধমক ধামক দিয়ে সবাইকে থামায় গণেরি। বলে, ‘চুপ হো যা। বিলকুল চুপ। সিরিফ একজন বল্‌—’

    বুড়ো বজরঙ্গী বুক চাপড়ে বলে, ‘মর গিয়া রে গণেরি, পুরা মর গিয়া—’

    সঙ্গে সঙ্গে বাকী সবাই ফের ডুকরে ওঠে, ‘মর যায়গা, হামনি-লোগন মর যায়েগা—’ ‌

    হাত তুলে আবার তাদের থামিয়ে গণেরি বলে, ‘একসাথ নায়, একসাথ নায়। সিরিফ এক আদমী—’

    বজরঙ্গী ভয় উত্তেজনা দুশ্চিন্তা ইত্যাদি মিলিয়ে দম আটকানো গলায় এবার যা বলে যায় তা এইরকম। রোজকার মতো আজও তারা কোয়েলের মরা খাতটার ওপর দিয়ে মহুয়ার গোটা আনতে জঙ্গলে গিয়েছিল। গিয়ে একেবারে তাজ্জব বনে যায়।

    কাল সন্ধ্যেবেলায় ওরা যখন জঙ্গল থেকে ফেরে তখনও অগুনতি গাছে মহুয়ার ফল ছিল।

    আজ গিয়ে দ্যাখে, তারা পৌঁছুবার আগেই সেই সব গাছের আধাআধি সাফ করে কারা ফল নিয়ে চলে গেছে।

    মালিক রঘুনাথ সিং ভরসা দেওয়া সত্ত্বেও কিছুদিন ধরেই বজরঙ্গীদের সন্দেহ হচ্ছিল, আগের সন্ধ্যেয় তারা যত ফল দেখে আসে পরের দিন তার চাইতে কম কম লাগে। এ ক’দিন তাদের মনে হয়েছে, হয়ত চোখের ভুল। কিন্তু আজ বজরঙ্গীরা নিশ্চিত, ভোরবেলা তারা জঙ্গলে যাবার আগে কিংবা সন্ধ্যেবেলা ওখান থেকে ফেরার পর রাত্তিরে কেউ না কেউ লুকিয়ে মহুয়ার ফল পেড়ে নিয়ে যায়। এভাবে নিয়ে গেলে গরমের এই সময়টা সবাইকে ভুখা মরে যেতে হবে।

    সব শুনে গণেরি গম্ভীর হয়ে যায়। আস্তে আস্তে বলে, ‘বহেতি চিন্তাকা বাত।’ একটু ভেবে ফের বলে, ‘তোমরা এখানে বসো। আমরা হাল-বয়েল জমা করে আসছি।’

    কাঁচা সড়কের ধারে কাঁকুরে ডাঙায় বজরঙ্গীরা বসে পড়ে।

    কিছুক্ষণ পর খামার থেকে দোসাদটোলার জনমদাসদের নিয়ে ফিরে আসে গণেরি। ওরাঁও-মুণ্ডা কিষাণরা অবশ্য আসে না; খামারের পেছন দিকে নিজেদের আস্তানায় চলে যায়।

    গণেরিকে দেখে ভিড়ের ভেতর থেকে বুড়ো বজরঙ্গী, নাখুর বাপ চৌপটলাল, বুধেরির চাচা জগন—এমনি অনেকে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকে।

    ‘অব কা করে গণেরি?’

    ‘কা হোগা হামনিলোগনকা?’

    ‘বড়ে সরকারকা পাশ যায়েগা—কা?’

    দু হাত নেড়ে সবাইকে থামাতে থামাতে গণেরি বলে, ‘বড়ে সরকারের কাছে এখন যাওয়া ঠিক হবে না।’

    সবাই শুধোয়, ‘কখন যাবি?’

    গণেরি মাথাঠাণ্ডা পাকা লোক। সে যা বলে, তা এইরকম। আগে দেখতে হবে কারা মৌয়ার ফল চুরাচ্ছে। চোরদের ধরে সিধা বড়ে সরকারের মকানে নিয়ে যেতে হবে।

    ‘তা হলে তো পেহ্‌রা (পাহারা) বসাতে হয়।’

    ‘তাই হবে।’

    একটু চুপচাপ। তারপর গণেরিই আবার শুরু করে, ‘আমার কী মনে হয় জানো?’

    সবাই জানতে চায়, ‘কা?’

    ‘সুবে কেউ মৌয়া চুরাতে আসে না।’

    ‘কখন আসে?’

    ‘তোরা জঙ্গল থেকে ফেরার পর। রাতমে—’

    ‘তবু তো রাতভরি পেহ্‌রাদারি করতে হয়।’

    গণেরি বলে, ‘হুঁ। এখন ঘরে চল। আন্ধেরা নামলে তুরন্ত রাতকা খানা ঢুকিয়ে সবাই জঙ্গলে যাব। এক রাত পেরা দিলেই মালুম হয়ে যাবে, কারা চুরাতে আসে—’ ওরাঁও-মুণ্ডাদের বলে, ‘তোরাও যাবি।’

    এই ব্যবস্থাই সবার মনে ধরে। গণেরির পিছু পিছু একদল চলে যায় দোসাদটোলায়; আর ওরাঁও-মুণ্ডারা হাইওয়ের দিকে।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleইতিহাসের গল্প – প্রতুলচন্দ্র গুপ্ত
    Next Article পাগল মামার চার ছেলে – প্রফুল্ল রায়

    Related Articles

    প্রফুল্ল রায়

    আলোর ময়ুর – উপন্যাস – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    কেয়াপাতার নৌকো – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    শতধারায় বয়ে যায় – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    উত্তাল সময়ের ইতিকথা – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    গহনগোপন – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    নিজেই নায়ক – প্রফুল্ল রায়ভ

    September 20, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025
    Our Picks

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025

    আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    September 22, 2025

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    September 22, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }