Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    ঈশ্বরের বাগান – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়

    লেখক এক পাতা গল্প1863 Mins Read0

    ঈশ্বরের বাগান – ৪৩

    ॥ তেতাল্লিশ ॥

    ফতিমা সিঁড়ি ধরে উঠছিল। ক্ষোভে ফুঁসছে। সারা চোখে-মুখে তিক্ততা। যেন কোনো করুণ অপমানে সে ক্ষত-বিক্ষত। জ্বালা ভেতরে। আপনি মানুষ সোনাবাবু! মিছে কথা বলতে মুখে আটকাল না। আমি সেই বালিকা ভেবেছেন! যা বলবেন বিশ্বাস করতে হবে! এতদিন পর কার না ইচ্ছে হয় দেখতে—আমি তো কিছু চাইনি, আপনি কেমন আছেন, কী ভাবে বেঁচে আছেন, বৌদি দেখতে কেমন—আমার কী কোনো সখ থাকতে পারে না! নেমকহারাম! বেইমান। চট করে বলে দিতে পারলেন, যা ভুল হয়ে গেল! বাসায় তো কেউ নেই! তোর বৌদির কোথায় যাবার কথা! মাও যাবে। তালা দিয়ে চলে যাবে। বরং কফি-হাউসে আমাকে নামিয়ে দে।

    বাসাবাড়িতে আপনি আমাকে নিয়ে যেতে পছন্দ করলেন না। খেয়ে ফেলব ভেবেছেন! না, অচ্ছুৎ আমি! বামুনের বাড়িঘরে গেলে আপনার জাত যাবে।

    সিঁড়ি ধরে উঠতে উঠতে অসীম ক্লান্তিতে ডুবে যাচ্ছিল। সাবকে কী বলবে! কী ব্যাপার, ফিরে এলেন! সোনাবাবুকে নিয়ে বের হলেন, দুনিয়ার বিস্ময় করতলগত, এত উৎসাহ নিমেষে এক ফুৎকারে সব নিভে গেল!

    সে ধরা পড়ে যাবে, খুব সতর্ক পায়ে বসার ঘর পার হয়ে ডানদিকের করিডরে ঢুকে গেল। কার সঙ্গে কথা বলছেন সাব! আলতাফ মিঞা মাঝে মাঝে আসেন। দেশের খবর ভাল নয়। আয়ুব শাহীর জমানা খতম। আগরতলা মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে। উত্তাল ছাত্রসমাজ মর্যাদার সঙ্গে ঐতিহাসিক ৭ জুন পালন করেছে। পালা-বদল নিয়ে রোজ তর্ক জমে ওঠে। কিন্তু আলম সাব শুধু শ্রোতা। আলতাফ সাব, ফারুক মিঞা, জনাব আবুল হাসেম সোজাসুজি কথা বললে মাঝে মাঝে কেমন ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন সাব। কারণ ডেপুটি হাইকমিশনে বাঙালী অফিসারদের উপর যে গোয়েন্দাগিরি চলছে সাব তা ভালই জানেন। ফতিমা নিজেও পছন্দ করে না। কী দরকার—ছয় দফা দাবির মাথামুণ্ডু নিয়ে এত তর্কের। পূর্ব পাকিস্তান স্বায়ত্তশাসন চায়। কথাটা মনে হলেই ফতিমার কেন যে বুক ভরে যায়! তার মন ভাল নেই—তর্কে সেও যে যোগ দেয় না, তা নয়—কিন্তু মুশকিল, সে সোজাসুজি কথা বলে ফেললে আলম সাব মুখ গোমড়া করে ফেলেন। একজন জাঁদরেল আমলার বিবি ফতিমা, তখন তার মাথায় থাকে না।

    ফতিমা নিজের ঘরে ঢুকে খাটে বসে পড়ল। দেয়ালে রবীন্দ্রনাথের আঁকা ছবি। টাটার ক্যালেন্ডার থেকে ছবিগুলো সে নিয়েছে। সোনালি ফ্রেমে বাঁধিয়ে নিজের ঘর সাজিয়েছে। বাইরের ঘরে কিংবা বসার ঘরে এগুলো টাঙানো নিরাপদ নয়। এমনকি যা বইপত্র, ‘সূর্যদিগল বাড়ি’ থেকে ‘পথের পাঁচালী’ সব তার এই ঘরে কাচের আলমারিতে সাজানো। সোনাবাবু তার ঘরে ঢুকে কিছুটা যেন বিভ্ৰমেই পড়ে গেছিলেন। এত বই! এত ছবি! কবির আঁকা কালো চুলের মুখ যেন বোরখার অন্তরালে নারীর চিরন্তন মহিমা। সোনাবাবু অবাক হয়ে ছবিটা দেখছিলেন আর তাকে যেন কী প্রশ্ন করতে চাইছেন! এই চোখে বড় সর্বনাশের খেলা—বুঝি এমন মনে হয়েছিল তাঁর। তবু সে জানে মানুষটি ভীরু- সহসা আবিষ্কার করার পরও বিশ্বাস করতে পারেননি, সে ফতিমা, নাকে নথ, তরমুজের জমি, সোনালি বালির নদীর চরের সেই মেয়ে। তিনি অবিশ্বাসের ভঙ্গিতে বলেছিলেন, তুই! তুই ফতিমা না!

    চিনতে একদন্ড সময় লাগেনি। বিশ-বাইশ বছর বাদে দেখা। সে তো ভেবেছিল, সোনাবাবু বিশ্বাসই করবেন না, সোনাবাবু কিছুতেই চিনতে পারবেন না!

    আয়নায় নিজের মুখ দেখল। মুখ ব্যাজার। সে ধরা পড়ে যাবে। তার সামান্য প্রসাধনেও কালি লেগেছে। গোপনে কী সে কাঁদছিল! সোনাবাবুর আচরণে সে ক্ষুব্ধ না হয়ে পারেনি। মাথা চট করে গরম হয়ে যায়। ইস এভাবে গাড়ি থেকে রাস্তায় নামিয়ে সোনাবাবুকে চরম বেইজ্জত করে ফিরেছে। মনে এত তোলপাড়, আলম সাব ঘরে ঢুকে বলতেই পারেন, আরে আপনি কখন ফিরলেন! ভাবির সঙ্গে মুলাকাত হলো? দেখতে কেমন? কি খাওয়াল? চুপচাপ বসে আছেন কেন? কথা বলছেন না। কী হয়েছে?

    মানুষটা তার সামান্য ব্যাজার মুখ দেখলে অস্থির হয়ে পড়েন। মানুষটাকে বিব্রত করতে চায় না। মানুষটা বিব্রতবোধ করলে তার নিজেরই খারাপ লাগে। সে যে যায়নি, ঠিক যায়নি বললে ভুল হবে, মিছা কথা বলে তাকে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেছে সোনাবাবু, এসব বলাও খুব সুখের হবে না। এমনিতেই হিন্দু জাতটার উপর নানা কারণে আলম সাব ক্ষুব্ধ। এত অবহেলা! যেন তারা মানুষ না! হিন্দুদের আচরণে আলম সাব এসব নাকি খুব টের পান। কে সহ্য করে! দেশ ভাগ হবে না তো কী হবে! কে দায়ী! আপনি সোনাবাবু সোনাবাবু করে পাগল, বোঝেন এবারে, কী চিজ সোনাবাবু। আপনি তাঁর বাড়ি গেলে জাত যায়। কলকাতার নামে পাগল হয়ে আছেন!

    আমি পাগল কে বলেছে?

    কে আবার বলবে! কলকাতায় চলেন। সবুর মিঞার তো হাত আছে। অরে কন। তিনি পারেন। কবে থাইকা এক কথা—সোনাবাবুরে দেখতে ইসছা হয়।

    তার কসুর কম না। ফতিমা এটা ভাল বোঝে। বিলাত দেশটা তার ভাল লাগত না। কী শীত! রোদ নাই, হাড়-কাঁপানো ঠান্ডা। এত ঠান্ডা সহ্য হয়! মুখ গোমড়া—ঘরের বাইরে যেতে মাথায় বাজ পড়ত। তুষারপাত, কখনও ঝড়ো হাওয়া, হাত পা যেন তার গরমই হতে চাইত না। কেবল মনে হতো নিজের দেশ, ঘরবাড়ি, রমনার মাঠ, গুলসানবাগের নতুন ঘরবাড়ি সব তাকে টানত। যেন কলকাতায় পোস্টিং নিলে নিজের দেশ বাড়িতেই ফেরা, এমন মনে হতো তার।

    ফতিমা বসে থাকল না। সে চায় না ধরা পড়ে যাক। আলম সাহেবের চোখকে ফাঁকি দেওয়া কঠিন। তবু বিষাদ বড় কঠিন—মুখে চোখে জলের ঝাপটা দিল। তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছল। কাজের লোকটিকে ডেকে বলল, আলো জ্বেলে দে। যেন তার এই ঘরবাড়ি একটু বেশি আজ অন্ধকার হয়ে আছে।

    সে টের পেল, সিঁড়ি ধরে কারা নামছে। বোধহয় মেহমানদের এগিয়ে দিতে যাচ্ছেন। গেটের কাছে ছেড়ে দিয়ে উঠে আসবেন। হয়তো বলেছেন, বিবি সাহেবা বাইরে বের হয়েছেন। না হলে খোঁজাখুজি হতো। কী ব্যাপার আলম সাব, বাড়ি শুনশান! একলা বসে আছেন! সে যে সতর্ক পায়ে বাসায় ঢুকে গেছে আলম সাব জানেন না। জানলে, ডেকে বলতেন কই গেলেন। ওনারা যাচ্ছেন। সেও আলম সাবের সঙ্গে গেট পর্যন্ত যায়। কথা শেষ হয় না। দেশের রাজনৈতিক ডামাডোল নিয়েই বেশি কথা তবে আলম সাব বাইরে বের হলে যতটা পারেন অন্য কথা টেনে আনেন। তখন চাকরি রক্ষার্থে ফতিমাকেও উল্টো কথা বলতে হয়। ইয়াইয়া খানের গর্বে কপট গরিমা থাকে মুখে—বিশ্বস্ত আমলার বিবি—তাকে বেচাল হলে মানাবে কেন।

    আবার সিঁড়িতে কেউ উঠে আসছে। ফতিমা রেলিঙে ঝুঁকে দেখতে পারত—কিংবা ছুটে নেমে যেতে পারত, এটা তার স্বভাব, সিঁড়িতে শব্দ শুনলেই ছুটে যাওয়া, কে এল! আলম সাব ফিরলেও এটা সে করে থাকে। কিন্তু আজ তার কোনো আগ্রহ নেই। সে কী বলবে আলম সাবকে!

    বলবে, সোনাবাবু চান না, তাঁর বাসায় যাই!

    আলম সাব হয়তো বলবেন, জানতাম।

    সে মনে মনে ক্ষেপে গেল, জানতেনই যদি, বারণ করলেন না কেন! আমার মাথার ঠিক নেই বলে, আপনারও মাথা ঠিক থাকবে না। বলতে পারলেন না, আজই তাঁর বাসায় যাবার কী দরকার! সোনাবাবু কী কলকাতার রাস্তাঘাট কম চেনে! তাকে বাসায় দিয়ে আসতে হবে! সঙ্গে না গেলে তিনি রাস্তা হারিয়ে ফেলবেন!

    ফতিমা দরজায় ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়েছিল। এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলেও টের পেতে পারেন কিছু একটা হয়েছে। সে কিছুতেই বুঝতে পারছে না—স্বাভাবিক থাকতে হলে তার এখন কী করণীয়। কী করলে তিনি টের পাবেন না, সোনাবাবুর সঙ্গে তার কোনো মন কষাকষি চলছে। হঠাৎ কী মনে হল কে জানে, সে ছুটে গিয়ে রেকর্ড প্লেয়ারে আব্বাসউদ্দিনের রেকর্ড চালিয়ে দিল। গমগম করছে ঘরটা। খুবই প্রিয় রেকর্ড আলম সাবের। সে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল, আলম সাব দরজায়।

    —কখন এলেন!

    —এই তো।

    —সোনাবাবু কাছেই থাকেন! এত তাড়াতাড়ি ফিরে এলেন!

    —হ্যাঁ। ওই তো আপনার কী বলে, আরে রাস্তাটার নাম মনে করতে পারছি না। রাজবাড়িতে থাকেন।

    —এত তাড়াতাড়ি! এই তো গেলেন!

    —বাড়িতে কেউ নেই। তালা দেওয়া

    —তালা দেওয়া!

    হ্যাঁ, তাই তো দেখলাম। সোনাবাবু বললেন, কোথাও বের হয়েছে বোধহয়। আমি তো এত সকালে বাড়ি ফিরি না। ফিরতে রাত নটা। বোধহয় তোর বৌদি বাপের বাড়ি গেছে।

    —বাপের বাড়ি কোথায়?

    —তা কি আমি জিজ্ঞেস করেছি। নেই যখন, আর কি করা, চলে এলাম। সোনাবাবুকে কফি-হাউসে নামিয়ে দিয়ে চলে এলাম।

    —ওখানে বসলে পারতেন। কতকাল পর দেখা!

    আলম সাব কী তাকে বিদ্রূপ করছেন। সে বুঝতে পারছে না। রেকর্ড প্লেয়ারের ভলিউম কমিয়ে দিয়ে ফের তাকাল। ঘরের ওদিকটায় সেন্টার টেবিল। সাদা সিক্রের কাজ করা ঢাকনা। এলোমেলো হয়ে আছে। সে ঢাকনাটা সামান্য টেনে দিয়ে জানালা খুলে দিল। কেমন দমবন্ধ হয়ে আসছে তার। সে মুখ আড়াল রাখার চেষ্টা করছে।

    সে বলল, ধুস, বসে বসে বকর বকর করা শুধু। চলে এলাম। দেয়ালের দিকে তাকিয়ে কথা বলল, ফতিমা মুখ ফেরাল না।

    –বিবিজানের মন ভাল নেই। কিছু হয়েছে! ফতিমা ভেবে পেল না, এত স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করেও ধরা পড়ে গেল কী করে! তার মুখ কালো হয়ে গেল। সে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে স্বাভাবিক থাকার। পারছে না। চোখ ফেটে জল বের হয়ে আসছে। সে যেন দু’জন মানুষকে অপমান করেছে। একজনকে গাড়ি থেকে জোর করে নামিয়ে দিয়ে। আবার যেন চিৎকার করে উঠবে। নামেন, নামেন কইতাছি! সে কোনোরকমে নিজেকে সামলে নিল।

    নামেন, নামেন কইতাছি। বাড়িতে তালা আপনার! বাড়িতে কেউ নেই। নামবেন, না নামবেন না! লোক ডাকুম।

    লোক ডেকে কী সে বলত, দেখেন, আমার ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করছে। সেটা কী ধর্ষণের শামিল ছিল আসলে কোনো নারী ধর্ষিতা হলেই তো এভাবে উন্মাদের মতো আচরণ করতে পারে। চিৎকার করে বলতে পারে, নামেন কইতাছি। আপনে আমার ইজ্জতে হাত দিলেন!

    আর কেমন ভীরু বালকের মতো সোনবাবু নেমে গেলেন। একটা কথা বললেন না। হতভম্ব। মাথা নিচু করে রাস্তার জনারণ্যে মিশে গেলে সে নিজেকে সামলাতে পারেনি। তার ভেতর থেকে হাহাকার কান্না উঠে আসছিল। সে চোখে মুখে আঁচল চাপিয়ে মাথা এলিয়ে দিয়েছিল সিটে।

    আর এখন সে সাহেবকে আহাম্মক বানানোর চেষ্টা করেও পারল না। অজস্ৰ মিছে কথা বলতে হবে। তারপর সাব কী বলবেন সে জানে। সে কেমন ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। তাড়াতাড়ি বাথরুমের দিকে চলে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।

    সে বলল, আসছি।

    ফতিমা ছুটে গেল বাথরুমের দিকে। সে এভাবে এতটা ভেঙে পড়বে বুঝতে পারেনি। হাহাকার কান্নায় ভেঙে পড়লে আর এক কেলেঙ্কারি। বাথরুম বন্ধ করে সাওয়ার খুলে দিল। জলের এক আশ্চর্য শব্দ তৈরি হচ্ছে। তার হাহাকার কান্না উঠে এলেও আর কেউ টের পাবে না। সে যত খুশি কাঁদতে পারে। কিন্তু অবাক, তার এক বিন্দু চোখের জল পড়ল না। বরং সাওয়ারের ঝমঝম পানির শব্দ, বালতির উপর টুং টাং শব্দ এবং এক বিশ্রুত আকস্মিকতায় সে স্থির হয়ে গেল।

    মনে হলো, সোনাবাবুকে আবিষ্কার করে সে ভুলই করেছে। কেন যে বইটা দেখতে গেল! তার খুব ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু আলম সাব প্রায় জোরজার করেই পাঠিয়েছেন। ব্যস্ত মানুষ, তার পক্ষে অফিস টাইমে বের হওয়ার অসুবিধা আছে। একা একা বাসায় সারাদিন এমনিতেই কাটানো দায়। আলম সাব সময় দিতে পারেন না। না গেলে তিনি ব্যাজার মুখে বলতেন, এমন ভাল বইটা মিস করলেন। আলম সাব বইটা দেখেছেন প্যারিসের কোনো হলে। এখানকার সিনে ক্লাব চলচ্চিত্র উৎসবে বইটা দেখাচ্ছে। চারটে কার্ড পেয়েছিলেন। তিনটে সহকর্মীদের দিয়ে একটা বিবিসাহেবের জন্য রেখেছেন। দুপুরটা ভালভাবে কাটবে—এই সব ভাবনা চিন্তাই আলম সাব, বিবিজান খুশি থাকুক এমন হয়তো চেয়েছিলেন।

    কিংবা কে জানে, অ আজার বালথাজার, বইটার নামও অদ্ভুত। তা ফরাসি নাম। আলম সাব জানতে পারেন। তাঁকে ফিরে এসে বইটা সম্পর্কে কিছু বলেনি। আলম সাবও বলেননি, কী দারুণ ছবি! বলুন! সেই গাধাটা—আচ্ছা গাধাটাকে দিয়ে নাচ দেখাবার কী দরকার ছিল সে বুঝছে না। গাধাটা কি করে বা অঙ্ক কষছিল। তবে সে বুঝেছে বালিকা এবং তার তিন বন্ধু যা কিছু পাপ, গাধাটার কানে কানে বলে দিত। ওরা কোথায় কি উপদ্রব করছে, কিংবা মানুষের তো অনেক গোপন কথা থাকে—যা আল্লা প্রকৃত পক্ষেই ক্ষমা করে দেন। মোল্লারা রক্তচক্ষু—বেশরম বাত। কিংবা বালিকার ধর্ষণের পর সেই উলঙ্গ নতজানু হওয়ার দৃশ্যটিই বা তাকে পীড়নের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে কেন? সোনাবাবুর খেয়াল নাও থাকতে পারে। সত্যি সোনাবাবুর স্ত্রী তালা দিয়ে বাইরে যেতে পারে। কিন্তু বাসায় কী আর কেউ থাকে না! সে এবার নিজের উপরই ক্ষিপ্ত হয়ে গেল। ইস সে যা ভেবেছিলো তা তো নাও হতে পারে। সত্যি সোনাবাবুর বাসা তালা বন্ধ থাকতে পারে!

    সে ভেবেছিল, সোনাবাবু তাকে এড়িয়ে যেতে চান। এত গায়ে পড়া ভাব সোনাবাবুর পছন্দ নাও হতে পারে। সোনাবাবুর পছন্দ হলেও ‘তাঁর স্ত্রী পছন্দ নাও করতে পারেন। কথা নেই, বার্তা নেই মুসলমানের বিবি নিয়ে হাজির। বাসায় ঠাকুর দেবতা থাকতেই পারে। শৈশবে ছুঁয়ে দিয়ে কতবার সে নাজেহাল করেছে বাবুটিকে। বাড়িতে জানাজানি হলে, ইস কি কস, তরে ছুঁইয়া দিছে। ডুব দিয়া আয়। ডুব না দিলে সোনাবাবু ঘরে পর্যন্ত ঢুকতে পারতেন না। বাবুটিকে এই ভয় দেখিয়েই সে কাবু করে রাখত শৈশবে।

    কইয়া দিমু। ফতিমা বলত।

    কি কইবি। সোনাবাবু বলত।

    আপনে আমারে ছুঁইয়া দিছেন।

    বেশ করছি। কইয়া দুইডা ভাত বেশি খাইস।

    ঠিক ত!

    আসলে সেই শৈশবে ছোট্ট বাবুটি ভাবতেই পারত না ফতিমা কোনো কিছু তার বিরুদ্ধে বলতে পারে। বলে দিতে পারে, জানেন বড় মামী, সোনাবাবু না আমারে প্রজাপতি ধইরা দিছেন। আমারে ছুঁইয়া দিছেন। বললেই বাড়িতে অশান্তি। সোনাবাবু কেমন কাঁচুমাচু মুখে বলত, কখন ছুইলাম। মিছা কথা কস!

    শীতের সকালে কিংবা সন্ধায় সেই কাতর মুখ উঁকি দিলে তার এখনও খারাপ লাগে, কখনও সে বটগাছটার নিচে ছাগল দিতে গেলে সোনাবাবু দৌড়ে আসত। আলগা হয়ে বলত, দিবি ছাগলের বাচ্চাটা।

    সোনাবাবু ছাগলের বাচ্চা কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত। কি মজা পেত কে জানে, সাদা ফুটফুটে বাচ্চা, শীতে শরীর ফুলে আছে। চাদরের নিচে লুকিয়ে ছাগলের বাচ্চা নিয়ে কখনও দৌড়ে পালাত। এটা ছিল সোনাবাবুর আবদার। কারণ সে জানে সোনাবাবু দৌড়ালে সেও পেছন নেবে। এবং গোপাটের কিছুটা দূরে গিয়ে কাজ ছিল বাচ্চাটাকে ছেড়ে দেওয়া। ফতিমাও ছুটত। দেখতে পেত, সোনাবাবু বসে আছে, পায়ের কাছে বাচ্চাটা কচি ঘাস খাচ্ছে।

    কবিরাজ বাড়ির মঞ্জুর চোখ টাটাত। সোনাবাবু গোপাটে, সামনে ছাগলের সাদা ফুটফুটে বাচ্চা, ফতিমা সোনাবাবুর পাশে বাচ্চাটার লম্ফঝম্ফ দেখছে। দু’জনে হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ছে। মঞ্জু তাদের পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে দৃশ্যটা দেখলেই ফুঁসে উঠত। সে চুপি চুপি অড়হড়ের জমি পার হয়ে পেছনে এসে হঠাৎ কু করে উঠলে দু’জনেই ঘাবড়ে যেত।

    তুই!

    হ, আমি।

    কবে আইলি?

    মঞ্জু থাকত ঢাকা শহরে। পূজার ছুটি গ্রীষ্মের ছুটিতে বাড়ি আসত। বাবা ধন্বন্তুরি। ঠাকুরদা তার আরও বড় ধন্বন্তরি। লাল রঙের ইটের বাড়ি। নীল রঙের ডাকবাক্স। লাল ঘোড়া আস্তাবলে, ডালিম গাছের ছায়ায় ঘাটলা বাঁধানো পুকুর। ডিসপেনসারি বাড়ির বাইরে। ঘাসের সবুজ মাঠ পার হয়ে লতাগুল্মের জঙ্গল। কবিরাজি ওষুধে লাগে। ডিসপেনসারির ভিতরে বড় বড় কাচের আলমারি। সাদা বিশাল কোমর বুক সমান উঁচু বৈয়ম।

    মঞ্জু কু করলেই, সোনাবাবু ছুটত। দু’জনে যখন গোপাট ধরে ছুটে যেত, ফতিমা ক্ষোভে জ্বলে উঠত। সে সোজা ঠাকুরবাড়ি উঠে নালিশ দিত, ঈশম নানা, আমারে সোনাবাবু ছুঁইয়া দিছে।

    তারপর ফের দৌড়।

    যাও, মঞ্জুর সঙ্গে যাও। শীতের কামড় সহ্য কর। সকালের কনকনে ঠান্ডা জলে সোনাবাবুকে ঈশম নানা স্নান না করিয়ে ছাড়বে না। মোক্ষম দাওয়াই।

    কখনও কখনও বাবুটিকে মিছে কথা বলে কত হেনস্থা করেছে। তাকে দেখলেই সোনাবাবু পালাত।

    সেও ছাড়ার পাত্র নয়। ভয়ে শীতের সকালে সোনাবাবু যব-গমের জমিতে অদৃশ্য হয়ে যেত। কোথায় যে টুপ করে ডুবে গেল! যব-গমের জমি সামনে যতদূর চোখ যায়। সে ডাকছে, সোনাবাবু, বাইর হইয়া আসেন কইতাছি। ভাল হইব না। পালাইয়া যাইবেন কই। আমি আপনারে চিনি না। ডরে কাবু। কানালায় ধরব কইতাছি।

    বাস সোনাবাবু সোজা। যব-গমের জমিতে সোনাবাবু উঠে দাঁড়াতেন। সেও তখন ছুটে যেত। সাওয়ারের পানি ঝরছে। ঝরো ঝরো শব্দ। এই অবগাহন, শৈশবের স্মৃতিতে, কেমন অনেকটা হাল্কা হয়ে গেল ফতিমা। বাবুটিকে নামিয়ে দিয়ে সে যে তাঁকে কম অপমান করেনি—ইস্ খুবই ছেলেমানুষী করে ফেলেছে। এও এক জ্বালা। বিশ-বাইশ বছর বাদে আবিষ্কার। আবির্ভাবও বলা চলে। চোখের সামনে মানুষটাকে দেখে বিহ্বল হয়ে গেছিল। সে দেশে ফিরে দেখেছিল ঠাকুরবাড়ি শুনশান। ঘরবাড়ি মাঠ হয়ে গেছে। জঙ্গল গজিয়েছে সর্বত্র। পরিত্যক্ত আবর্জনার মতো এ-ধার ও-ধার বাঁশ, ভাঙা খুঁটি সব পড়ে আছে।

    কোথায় গিয়ে উঠল! ঘরবাড়ি জমিজমা বেচে দিয়ে ঠাকুরবাড়ির লোকজন শেষে কোথায় গিয়ে উঠল! হিন্দুস্থানে চলে গেছে। সেই বিশাল অর্জুন গাছে অক্ষরগুলি যেন তাকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। জ্যাঠামশাই আমরা হিন্দুস্থানে চলিয়া গিয়াছি। ইতি সোনা। নিখোঁজ জ্যাঠামশাইয়ের জন্য ঠিকানা রেখে গেছে। অক্ষরগুলি পড়তে পারছিল না। চোখ ঝাপসা হয়ে উঠছে। তারপর বিহ্বল—এবং শেষে হাহাকার কান্নায় গাছের গুঁড়িতে লুটিয়ে পড়েছিল। সেই বাবুকে আজ রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে যেন বলতে চেয়েছে, নির্লজ্জ, বেহায়া। এখন মনে হচ্ছে, সে নিজেই নির্লজ্জ বেহায়া। বাবুটি তো আসতে চাননি। সে জোর করে ধরে এনেছে। বাবু তো একবারও বলেননি, আমাকে বাসায় দিয়ে আয়। সেই তো বেহায়ার মতো বলেছে, চলুন। সাহেবকে বলেছে, সোনাবাবুকে দিয়ে আসছি। আপনার আর এখন বের হয়ে কাজ নেই। ভাবির সঙ্গে আলাপ করারও কম ইচ্ছে ছিল না।

    সাহেব তো সোনাবাবুর কত গল্প শুনেছেন। বাবুটি এমনিতে সরল, তবে গোঁয়ার গোবিন্দ। আরও কত সব বিচিত্র উপকথার মতো সব মনে হয়েছে, মনে হয়েছে, তা বাবুটিকে এ জন্মে আর একবার না দেখতে পেলে তাঁর বিবিজান মরেও শান্তি পাবে না। কত সময় সাহেব দেখেছেন, কাচের জানালায় মুখ রেখে দাঁড়িয়ে আছে তাঁর বিবিজান। তুষারপাত হচ্ছে। ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির মতো এক কিংবা পাইনের জঙ্গলে সেই তুষারপাত কোনো যেন সাদা বুড়ো মানুষের ছবি এঁকে দিত।

    ডাকতেন, ফতিমা।

    ফতিমা তাকাত।

    চলুন ব্ল্যাক ফরেস্ট ঘুরে আসি। লেকের ধারে কটেজ। কিছুদিন থাকব ভাবছি।

    ফতিমা বলত, না না। আপনি ব্যস্ত হবেন না।

    সাব তবু যেন জোর পেতেন না। অপরাধীর গলায় বলতেন, চেষ্টা করছি। কলকাতায় পোস্টিং হয়ে যাবে মনে হয়।

    এখন মনে হচ্ছে কেন মরতে কলকাতায় পোস্টিং নিয়ে এল। কেন যে মরতে ছবিটা দেখতে গেল জেমসে।

    অ আজার বালথাজার।

    গাধাটা থাকলে কানে কানে সেও তার পাপের কথা যেন বলতে পারত। এটা তো একজন মুসলমান নারীর পক্ষে গুনাহ। সোনাবাবু তার কে হয়! এত জোর তার কোন হেতুতে। তারপরই মনে হলো, সোনাবাবু একজন সন্তু আউলিয়া হতে পারেন। তাঁর কাছে যাওয়া কোনো গুনাহ নয়। বাড়িটা তো সে চেনে। রাজবাড়ি। নামও লেখা—কুমারদহ রাজবাটী। শহরের যাতয়াতের পথে সে বাড়িটা আগেই দেখেছে। বিশাল লোহার গেট। ভেতরে প্রাসাদের মতো বাড়ি আছে হয়তো। বাইরে থেকে পুরানো কেল্লার মতো মনে হয়। উঁচু পাঁচিল। পাঁচিল টপকে চোখের নজরে কিছু আসে না।

    সোনাবাবু বাড়িটার কথা বলতেই চিনে ফেলেছিল।

    গাড়িতে বসে একবারও বলেনি, এবার কোনদিকে যাব।

    সে ঠিক গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তারপরই কী যে হয়ে গেল। আলম সাব ঠিকই বলেন, মাথায় পোকা আছে।

    সে বাথরুম থেকে বের হয়ে দেখল, আলম সাবের হাতে বাংলা দৈনিক। বিকেলের দিকে কাগজগুলি আসে। রাজনৈতিক হাওয়া চঞ্চল-অস্থির। নির্বাচনের দাবিতে ন্যাপ, আওয়ামি লিগ সবাই আন্দোলনের শামিল হয়েছে। রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার খুন। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে গুলি। পুলিশের গুলিতে মিছিল ছত্রভঙ্গ, লাশগুলি রাস্তায় পড়ে আছে। ধর্মঘট। চট্টগ্রাম বন্দর অচল। রোজই কোন না কোনো অশান্তির খবর থাকে। পুর্ব পাকিস্তান জঙ্গী জমানার অবসান চাইছে। দেশের নেতারা ডাক দিয়েছেন, গণতন্ত্র কায়েম কর, দেশ বাঁচাও।

    ফতিমা একবার চুপি দিয়ে দেখল শুধু। এ সময় তিনি বাড়িতেই থাকেন। কখনও তাকে নিয়ে কেনাকাটায় বের হন। ভাল নাটক থাকলে দেখতে যান। পথের পাঁচালি সে এবার নিয়ে আট বার দেখেছে। বিদেশে দু-বার, এখানে ছ-বার। সে তো নিজেকে কখনও দুর্গা মনে করে। সোনাবাবু কি তার অপু। সোনাবাবু তো তার সমবয়সী। না ছোট। কোনো হিসাব মাথায় আসে না তার। সে যেন পারলে ফাঁক পেলেই সোনাবাবুর মাথা আঁচড়ে সিঁথি কেটে দিতে পারলে বাঁচে। ছবিটা দেখলেই সে ভেতরে ভেতরে অস্থির হয়ে উঠত।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleআওরঙ্গজেব : ব্যক্তি ও কল্পকথা – অড্রি ট্রুসকে
    Next Article মানুষের ঘরবাড়ি – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়

    Related Articles

    তসলিমা নাসরিন

    সেইসব অন্ধকার – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    আমার প্রতিবাদের ভাষা – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    অগ্রন্থিত লেখার সংকলন – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    বন্দিনী – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নির্বাসন – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নেই, কিছু নেই – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Our Picks

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }