Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    ঈশ্বরের বাগান – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়

    লেখক এক পাতা গল্প1863 Mins Read0

    ঈশ্বরের বাগান – ৭৯

    ॥ ঊনআশি।।

    মুর্শেদ ফিরে এসে চুপচাপ কিছুক্ষণ বসে থাকল। মঞ্জু তাকে ধমকেছে। মঞ্জু বলেছে, কেয়া ঠিক‍ই বলেছে। কেয়ার কাছে মিঞা তুমি কাবু। সে দেখতে পেল সামনের জানালা খোলা। কিছু রসুনগোটার গ.ছ, ডানদিকে কিছু ড্যাফল গাছ, আরও গভীরে বেতের ঝোপ, শরতের রোদ ঝোপের ফাঁকে-ফোঁকরে বেশ ছোট ছোট সাদা কবুতরের মতো যেন বসে আছে। সে এ-সব দেখলে মঞ্জুর ওপর রাগ অথবা চাপা অভিমান নিয়ে বসে থাকতে পারে না। অথচ আজ সে কেন যে সত্যি সবকিছু অবিশ্বাস করছে। লোকটা কে! সে কেন এখানে এসেছে! মুর্শেদ যতদূর জানে, মঞ্জু তাকে চিঠি দিয়েছে। মঞ্জু কি ভেবেছিল, এই যে আত্মসমর্পণ সব সেনাদের, তা শেষ পর্যন্ত টিকে নাও থাকতে পারে। এখন কি মঞ্জু ভাবছে, সত্যি দেশ স্বাধীন। মুর্শেদ থাকল কি গেল আসে যায় না।

    সে বের হয়ে গেল। দরজা ভাঙ্গা। ধরলে হাতে ময়লা উঠে আসে। ওকে, কেয়া মঞ্জু এ-ঘরটায় লুকিয়ে রেখেছে। পেছনের দিকটা, পেছনের দিকটা বলতে মঞ্জুদের ভেতর বাড়ি থেকে যা চোখে পড়ার কথা, সে সবে একেবারে হাত দেওয়া হয়নি। সামনের দরজা, অর্থাৎ ঝোপজঙ্গলের মুখে যে দরজা-জানালা, সে-সব কেয়া মুছে তকতকে করে রাখে। সে এক জামা-কাপড়ে মঞ্জুরে বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেছে। কেউ দেখতে ওকে পায় নি। এবং ডান দিকে ঘুরে গেলে পুকুর। মাঝে মাঝে খালে নৌকার শব্দ হয়। সে ভাবল, যাই হোক, সে যদি সামান্য পানি ভেঙে ট্যাবার পুকুরপাড়ে উঠে যেতে পারে, তবে পালাতে তার অসুবিধা হবে না।

    আসলে এই মঞ্জুদির এখন মাথা ঠিক নেই। ক্রমে সে এমনিতেই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছিল। মঞ্জু তার জন্য কিছু করছে না। সে মঞ্জুকে বলেছে, তুমি আমাকে নারাণগঞ্জে রেখে এস, সেখান থেকে আমি ঠিক বাংলাদেশের বর্ডার পার হয়ে চলে যাব।

    —যাও না। কে বারণ করেছে। ধরা পড়লে আমি কিছু জানি না।

    —সে তখন আরও ঘাবড়ে যায়। জাতভাইরা পেলে তাকে ঠেঙিয়ে মেরে ফেলতে পারে। সে এটা ভালই জানে।

    —মুর্শেদ তুমি ভীষণ ভীতু মানুষ। এক ধমক লাগালে তুমি বলে দেবে, স্যার, আমি আর্মি থেকে ডেজার্টার। তুমি তোমার কোম্পানির নম্বর, সেকসান, প্লেটুন কত, তোমার নম্বর কত সব বলে দেবে। তখন আবার ক্যাম্পে পাঠালে কে তোমাকে রক্ষা করে। আর তুমি যদি এভাবে চলে যাও, রাতে মেজরকে কে খুন করেছিল কেউ জানবে না মনে করো। তখন তো একটা ভীষণ অসময়, কেউ জানে না কি হবে, কি ভাবে সব যে ধর-পাকড় হচ্ছে, সবাই পালাচ্ছিল ঘাঁটি ছেড়ে, তখন তোমার এমন ঘটনায় আর সাক্ষী থাকছে কে ভাবছ। তুমি কোনও রকমে ইণ্ডিয়ায় সোনাবাবুর সঙ্গে চলে গেলে, সে একটা ব্যবস্থা করতে পারবে।

    আবার আবদার, কৈ চিঠি দিলে সোনাবাবুকে?

    —ওর ঠিকানা যোগাড় করতে পারছি না।

    —সে কোথায় থাকে জান না?

    —না মুর্শেদ। সে তো আমার সঙ্গে বিশ বাইশ বছরের ওপর কোন সম্পর্ক রাখে নি।

    —কেন!

    —কি করে রাখবে, দুটো দেশ, দুটো আলাদা দেশ, মানুষজন সব পালাচ্ছে। কে কার তখন খবর রাখে।

    —তবে কি হবে।

    —আমি যাদের ঠিকানা জানি, তাদের চিঠি লিখেছি, বলেছি, দেখি সোনার ঠিকানা পাই কিনা।

    —পাচ্ছ না কেন?

    —কেউ লিখেছে, ওরা জানে না, ওরা আবার কাউকে লিখেছে, ওরা জানালে, ঠিক তারা আমাকে জানিয়ে দেবে।

    এ-ভাবে সময় যাচ্ছিল, আর মুর্শেদ মনে মনে কেমন অসহিষ্ণু হয়ে উঠছিল। এবং আজ কেন যে মুর্শেদের মনে হল, মঞ্জুদি ভীষণ ক্ষেপে গেছে, ক্ষেপে গেলে মাথা ঠিক থাকে না। মেজরের মুখে সে চোখের ওপরে মঞ্জুদিকে দেখেছিল, মদের গ্লাস ছুঁড়ে দিতে। কেমন পাগলের মতো করতো মঞ্জুদি। এবং এক জ্যোৎস্না রাতে সে দেখেছে মঞ্জুদি একেবারে উলঙ্গ। পাঁচিলের পাশে দাঁড়িয়ে পাগলের মতো মুখে যা আসছে বলে যাচ্ছে। সে ভেতরে ঢুকেছিল, সে পাহারায় থাকত। বয় বাবুর্চিদের কাছাকাছি থাকার নিয়ম নেই। আর্দালিকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। সে ভেতরে ঢুকে দেখেছিল, মঞ্জুদির সব শাড়ি শায়া খুলে মানুষটি দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। মঞ্জুদিকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। নেশার ঘোরে এটা হয়েছে সে বুঝতে পেরেছিল, সে ডেকেছিল মেজর সা, জরুরী ফোন। এবং এ-সব না বললে ঠিক হুঁশ ফেরে না। দরজা খুললে, সে দেখেছিল মেজর স। পাগলা কুকুরের মতো তাকাচ্ছে। মঞ্জুদির শাড়ি শায়া সব ভেজা, কাচের গ্লাস ভেঙে চুরমার। ক্ত পড়ছে গাল থেকে। সে মোটা তোয়ালের গাউন শরীরে জড়িয়ে রেখেছে। প্রায় বেহুঁশ। তখন ভীষণ সময়, কেবল মেশিনগান আর মর্টারের শব্দ। জরুরী ফোনে মেজর সাবের চোখ গোল গোল। কথা আড়ষ্ট। টলতে টলতে বের হতে যাবেন, তখন মুর্শেদ বলেছিল, সাব সব ঠিক হ্যায়। হাম জলদি মোকাবিলা করেঙ্গে। সে আসলে, এসেছিল ঘরে মঞ্জুদির পোশাক নিতে। সে দূর থেকে, অর্থাৎ পাঁচিলের ও-পাশ থেকে মঞ্জুদির হাতে সব ছুঁড়ে দিয়ে বলেছিল, চলিয়ে। জলদি।

    সকালে হুঁশ ফিরলে মানুষটাকে বোঝাই যেত না, রাতে পাগলা কুকুর হয়ে যায়। সকাল আটটার আগে তার ঘুম ভাঙছে না। সামরিক কেতা-কানুন কিছু মানছে না। কেমন নিজেই অধীশ্বর হয়ে গেছে এ-অঞ্চলের। আবার রাত বাড়লে চঞ্চলতা বাড়ে। এখানে, ওখানে শব্দ শোনা যায়। হু কামস্ দেয়ার। কাঁটাতারের বেড়ার ওপাশে জোনাকির আলো পর্যন্ত ভয়াবহ। এ-সময় কেউ কাছে না থাকলে মেজর সাব মেজাজ পান না। তারপর রাত বাড়লেই হুকুম, মুর্শেদকো বোলাও।

    মুর্শেদ এলেই, এক আদেশ।

    মুর্শেদ এ-ভাবে তারপর একটা জিপ নিয়ে যাওয়া আসা করত। মঞ্জু তখন জিপের আওয়াজ পায় কেমন অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। কেয়া রাতে ফিরে আসে তখন। দিনের বেলায় সে বনেজঙ্গলে আশ্রয় নিয়ে থাকে। আসলে লোভ ছিল কেয়ার ওপর। একবার কেয়াকে ওরা তুলেও নিয়ে গিয়েছিল, এবং কি করে যে পরে, একটা সামান্য কুমারী মেয়ের অভ্যাস নেই, অভ্যাস থাকলে সহজে অন্তত মোকাবেলা করা যায়, মঞ্জুর বোধ হয় তাই মনে হয়েছিল, মুর্শেদ এলে বলা, কেয়া পালিয়েছে!—পালিয়েছে! কখন! সেই সকালে! কেয়া, জব্বার চাচা সব।

    —তুমি একা!

    —একা।

    —না নিয়ে যেতে পারলে আমাকে ঠিক গুলি করবে। এখানে এসে ওর লোকজন তোমার বাড়ি পর্যন্ত জ্বালিয়ে দিতে পারে মঞ্জুদি।

    মঞ্জু বলেছিল, চল। শক্ত গলা। যেন মোকাবেলা করতে চায়। এবং সে চুপচাপ ছিল। একটা কথাও না। অবনী দশ মাসের ওপর মারা গেছে। অথচ মঞ্জুদি শরীরে কি করে যে এত উষ্ণতা ধরে রেখেছে কিংবা ঘোর বলা যেতে পারে। এবং ভেতরে উষ্ণতা কিছু জমে যায়। এ-ভাবে মঞ্জুদি ভয় পায় না। কারণ সে জানে এ-ভাবে মঞ্জুদি বোধ হয় অনেকবার পথ হেঁটে দেখেছে, অবনী অথবা মেজর সাব, সবাই কোনও না কোন নিষ্ঠুরতার ভেতর বেঁচে থাকে। মঞ্জুদি কিছুই হয়তো মনে করেনি তখন। মেয়েটা অনভ্যাসে মরে যাবে ভেবে বুঝি মঞ্জুদি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

    কিন্তু মঞ্জু দেখেছে শুধু টরচার। তোমার কি আছে আমি জানি হ্ েবুড়বক। কিন্তু তুমি আমাকে টরচার করছ কেন। মানুষটার উর্দু ভাষা সে একবিন্দু বুঝত না। কারণ মেজর সাবের প্রায়ই ইচ্ছা হত, বনের ভিতর কোনও মেয়েমানুষ নেংটা হয়ে ঘুরে বেড়াক, সে ইজিচেয়ারে বসে তখন মদ্যপান করবে। এবং তখনই বোধ হয় মঞ্জু ক্ষিপ্ত হয়ে উঠত। ফেরার পথে সে যেন পারলে মুর্শেদের গলা কামড়ে ধরতে চায়। আর মঞ্জু হয় তো সুযোগ বুঝে এখন তার বদলা নেবে। সে তাড়াতাড়ি লাফ দিয়ে পানিতে নেমে পড়ল। এখানে কোমর জল। জলাটা পার হয়ে গেলে নরেন দাসের পরিত্যক্ত বাড়ি। ভাঙ্গা চালাঘর, উঁচু ঢিবি, পরে খাল, খালে এখন নানারকম শাপলা ফুল ফুটে আছে।

    সে সামান্য সাঁতার জানে। সে খাল পার হয়ে হাসান পীরের দরগায় উঠে যেতে পারে। ধানখেতের আলে আলে যেতে গেলে ধরাও পড়ে যেতে পারে। তারপর যা কিছু সামনে, সোনালী বালির নদী। সাঁতার জল। সে এতটা সাঁতরে যেতে পারবে না। পাকা সড়কে সে পালাতে পারে। কিন্তু এমন একটা পোশাকে অথবা ওর ধারণা, সে যে পোশাকেই পাকা সড়কে হেঁটে যাক না, এ-অঞ্চলের মানুষেরা তাকে চিনে ফেলবে। এ-ই যে সেই মানুষটা, সেনেদের বাড়ি যে যেত, সময় পেলে টর্চ হাতে যে মানুষ সিভিল ড্রেসে ঘুরে বেড়াত সাইকেলে, সেই মানুষটাকে কে না চেনে! তা ছাড়া সকালের বাস চলে গেছে, বাসে উঠতে গেলে পয়সা লাগে, তার কাছে একটা পয়সাও নেই। সে যে কি করে!

    মুর্শেদ ভাবছিল। তার ছায়া জলে ভাসছে। সে দেখছে, সে ভীষণভাবে একা। ওদিকটায় খাল। খালের এ-ধারে প্রচুর কলাগাছ, এবং পাখির ডাক শোনা বাদে সে এখন আর কিছু করতে পারছে না। যাই করুক, দুম করে কিছু করে ফেলতে পারে না।

    সে কিছুক্ষণ বসে থেকে বুঝতে পারল, ওর বেশ খিদে পেয়েছে। গ্রামে মানুষজন নেই বলে, বাড়িগুলো থেকে মানুষজন চলে গেছে বলে, কাছারি বাড়ি পার হয়ে গেলে ঘোষেদের লিচু বাগান। বাগানে ঝোপজঙ্গল, সে ইচ্ছা করলে কিছুক্ষণ এখানে পালিয়ে বসে থাকতে পারে। এবং রাত হলে পাকা সড়কে হেঁটে যাবে অথবা যদি সিঙিপাড়ায় সে যায়, সেখানে একটা ডিঙ্গি পেয়ে যেতে পারে।

    নানারকমের ভাবনা মাথায়। কেয়ার ভয় দেখানো, মঞ্জুর বিরক্ত মুখ ওকে ভারী সংশয়ে ফেলে দিয়েছে। এটা ওরা করতেই পারে। কারণ সেই ছিল তাদের ধর্ষণের হেতু। কেনই বা ওরা করবে! সে তো ওদের জন্য কিছু করতে পারে নি। ওর হাতে অবনীর মৃত্যু, পরবর্তী ঘটনাগুলোর সাক্ষী সে। নিয়ম মাফিক কাজ চালিয়ে সহসা এমন যে কেন হলো তার। কি দরকার ছিল, মেজর- সাবকে গুলি করার। সে তো অনেক অসহনীয় মৃত্যু দেখেছে, সে তো দেখেছে, কত সুন্দর সুন্দর যুবকদের ধরে আনা হয়েছে, তারপর লাথি মেরে কথা বের করার জন্য সে নানারকম যন্ত্রণার ভেতর ওদের নিয়ে গেছে এবং পরে ওদের মৃত্যু। বিকৃতমুখ ওদের। থেঁতলে থেঁতলে যুবকদের মুখে ন্যাকড়া ঢুকিয়ে দিয়েছে। ওরা যদি এখন বদলা নেয়, যেন কোন দোষের নয়। ওর মনে হল, এটাই স্বাভাবিক। তাকে নিজেই পালাবার একটা পথ খুঁজে নিতে হবে।

    তারপর সে ভাবল, এতদিন আসলে মঞ্জুদি ওকে ধোঁকা দিয়ে রেখেছে। যার জন্য অপেক্ষা করতে বলা, আসলে সে মঞ্জুর নিজের মানুষ। বোধ হয়, শেষ নৃশংস কাজটি মঞ্জুর একার করতে সাহসে কুলায় নি। নিজের মানুষ কাছে না থাকলে সে ঠিক বদলা নিতে সাহস পাবে না। সেই সোনাবাবু এসে গেছে। কাজটি সেরে ফেললেই হল। ঘরে আগুন ধরিয়ে দিলেই হল।

    অথচ একটা ছোট গাছ এখন মাথার ওপর। মঞ্জুদি গাছটা ওকে চিনিয়েছিল। লটকন গাছ। কত ফল। খেতে বেশ মিষ্টি। কিন্তু অবিশ্বাস তার ভেতরে। সে খেতে পর্যন্ত সাহস পাচ্ছে না। বিষাক্ত ফল হতে পারে। সেতো কখনও খেয়ে দেখেনি। যখন গাছটা দেখিয়েছিল, তখন গাছে ফল ছিল না। মঞ্জু কেবল বলেছিল, বর্ষায় ফল হয়। খেতে খুব সুস্বাদু।

    খিদের সময় এ-সব অবিশ্বাস থাকা ঠিক না। সে গাছের ডাল থেকে এক থোকা ফল পেড়ে নেড়ে চেড়ে দেখল। টুক করে একটা কোয়া মুখে ফেলে দিল। না, খেতে সত্যি ভাল। খেতে ভাল পরে অনিষ্টকারী। ভেদবমি হলে সে যাবে কোথায়। কিন্তু খিদের সময় সে-সব মনে থাকে না। ফল খেতে খেতে সে পালাবার কথা ভাবছে। এবং মনে হল রাত না হলে, সে কিছু করতে পারে না। যেদিকে যাবে, সেদিকে যেন তার চেনা মানুষ মিলে যাবে। আরে এ-যে সুবাদার সাব, কখনও সুবাদার সাব ছিল সে, কখনও সে নিজেকে মেজর সাব বলেও পরিচয় দিত। যার কাছে যা দরকার। ওরা ওর ইউনিফরম দেখে চিনতে পারত না। আসলে সে কি!

    এখানে বসে থেকে সে তার মর্জিনার কথা কিন্তু মনে করতে পারল না। নিজের জীবন নিয়ে সে ছিনিমিনি খেলছে। মঞ্জুর যখন সব গিয়েছে, তখন বাকিটুকু রেখে কি লাভ হল। সে এখন মনে করতে পারছে না, আত্মসমর্পণের আগে মেজর সাব কেন যে এত অস্থির হয়ে উঠেছিল। প্রত্যেক রাতে মঞ্জুকে মেজরের ইচ্ছায় পুতুল সেজে থাকতে হয়েছে। যখন যা খুশি। গভীর রাতে সে যখন জিপ চালিয়ে আসত, কখনও মঞ্জুকে মনে হয়নি সে ব্যভিচারে লিপ্ত থেকেছে। বরং সাফ গলা মঞ্জুর। মঞ্জু যেমন বলত, কাল একটু দেরি করে যেতে হবে। সকাল সকাল এলে আমি যেতে পারব না মুর্শেদ।

    —কেন?

    —নীলু না ঘুমালে আমি যেতে পারব না। ওর আজকাল কি যে হয়েছে। রাতে ঘুমাতে চায় না। বোধ হয় টের পেয়েছে মা কোথাও যায়।

    —কিন্তু মেজর সাব….।

    —ওকে বলেছি।

    —ও কি বলেছে?

    —বলেছে। ফেরার সময় তোমাকে বলতে বলেছে।

    —তখন হুঁশ ছিল।

    —ও আজ একেবারেই খায়নি। বোধ হয় কোথাও কিছু হচ্ছে। আমরা তো বুঝতে পারছি না। কেবল শুনছি, খান সেনারা কলকাতায় ঢুকে বোমা ফেলছে। কলকাতা দখল করে নিয়েছে। হাওড়া ব্রীজ উড়িয়ে দিয়েছে। কাল থেকে তো ঢাকা রেডিও পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না।

    —আমারও মনে হয় কিছু হয়েছে। আমরা কিছুই জানতে পারছি না। কি যে হবে!

    মঞ্জুর কথা শুনে মনে হত তখন, কিছু হলে, মেজর সাবের সখের সময় নষ্ট হয়ে যাবে। মেজর সাব পাঞ্জাবী এবং উঁচু লম্বা, তিনি তাঁর মাতৃভাষা পর্যন্ত ভাল করে বলতে পারেন না। ইংরাজী উচ্চারণ ওঁর খুব ভালো। এবং ভালো ক্যাডেট হিসাবে তিনি খুব কম বয়সে উঁচু জায়গায় চলে গেছেন। কিন্তু কি যে হয়ে যায় মানুষের, শেষ দিনগুলোতে মেজর-সাব বেপরোয়া, উচ্ছৃঙ্খল, কোন এক কঠিন দুর্যোগের সামনে প্রাণ হাতে দাঁড়িয়ে থাকলে মানুষের যে শৃঙ্খলার অভাব ঘটে তেমনি মেজর সাব, চিৎকার করতে থাকেন, কিল্ দেম। স্যুট দেম। অল্ কলাবরেটরস্। এবং একদিন সে দেখেছে একজন ভিখারী মানুষকে কারা টানতে টানতে এনে ওর পায়ের কাছে ফেলেছিল। মুর্শেদ ওকে চিনত। সে মুশকিলাসান হাতে নিয়ে কালো জোব্বা গায়ে বাড়ি বাড়ি ঘোরে। গলায় লাল নীল কড়ির, পাথরের মালা। ওকে একজন স্পাই ভেবে, গলায় গুলি ঝুলিয়ে দিল। এমন কি মুর্শেদ বলতে সাহস পায়নি, মানুষটা ভিখারি, সে তাকে চেনে।

    তখন মঞ্জুর এমন কথা শুনে তাকে ব্যভিচারিণী না ভেবে যেন মুর্শেদের উপায় ছিল না। মঞ্জুদিকে এতটুকু অনুতপ্ত মনে হত না। কেবল শেষদিকে যখন মেজর সাব ক্রমে ক্ষেপে যাচ্ছিলেন, কিছুই আর বিশ্বাসের অবশিষ্ট ছিল না এবং এক রাতে যখন, বনের ভেতর হাঁটিয়ে নেবার বাসনা, একেবারে উলঙ্গ মানবীর পাশে সে সুরা হাতে সাকির পায়ে পায়ে নতজানু, তখন মুর্শেদ দেখেছিল, মঞ্জুদি গাছের নিচে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। একেবারে খোলা আকাশের নিচে মঞ্জু বোধ হয় এ-সব সহ্য করতে পারেনি।

    এ-ছাড়াও সে ব্যাভিচারিণী ভেবেছে যখন বার বার অবনী কবিরাজের মুখ মনে হয়েছে। কবিরাজকে কখনও দাদা, কখনও বাবু, কখনও কবিরাজ বলত। মঞ্জু কবিরাজের সুন্দরী বৌ, শুধু সুন্দরী বললে ভুল হবে, মঞ্জু এবং কেয়ার লোভে মুর্শেদ নিজেও যেন এমন একটা সুন্দর বাড়িতে আসত। নীল জানালার ভেতরে মঞ্জুর মুখ ওর কাছে অনেক দূরে মর্জিনার ছবির মতো। সে এসে একবার দেখতে পেলেই খুশি। অথবা কেয়াকে নিয়ে সামান্য হাসি-ঠাট্টা। অবনীকে মেরে ফেলার পর কিছুদিন যেতে না যেতে মঞ্জুকে কেমন স্বাভাবিক দেখাতে থাকল। এত কম সময়ে স্বামীর এমন নৃশংস মৃত্যু কেউ ভুলতে পারে! ভাবতে কেমন কষ্ট হত। অথবা যখন ওকে নিয়ে যাওয়া হত, সেতো আত্মহত্যা করতে পারত। হিন্দু মেয়েদের এমন তো কত ঘটনা ইতিহাসে পাওয়া যায়। মঞ্জু জহর ব্রত করতে পারত। না, তা না, যেন কেয়াকে রক্ষা করার জন্য বনে গমন। ও-সব বুজরুকি। মুর্শেদ ক্ষেপে লাল এখন। সে গাছের নিচে বসে ঘাস ছিঁড়ছে আর মনে মনে মঞ্জুকে ছেনাল ভাবছে। মর্জিনা কখনও সহ্য করত না। সে ঠিক আত্মহত্যা করত। মঞ্জুকে এ-সময় মুর্শেদ ব্যভিচারিণী বাদে আর কিছু ভাবতে পারল না। অনর্থক সে মেজরসাবকে গুলি করে মেরে ফেলল। ধরা পড়বে ভয়ে কপাল দোষে সে আজ আর্মি ডেজার্টার। দুনিয়ার সব মানুষ তার বিরুদ্ধে।

    সে যে এখন কি করে!

    তার তখন মনে হচ্ছে গুলি মেজর সাবকে না করে মঞ্জুকে করা উচিত ছিল। অবনী কবিরাজকে গুলি করার পর, সে দীর্ঘদিন এদিকটায় আসেনি। কেমন সংকোচ। শুধু সংকোচ নয়, ভয়, সে বোধ হয় আর আসতই না, কি করে যে তখন সেই মিলিটারি ক্যাম্পে কেয়ার খবর হয়ে গেছে! কি করে যে খবর চলে গেছে এখানেই আছে মুর্শেদ, ও-পরিবারের সঙ্গে তার মেলামেশা অনেক দিনের। এ অঞ্চলে আর আপনার ভোগে লাগার মতো মেয়ে কোথায়। সব কথাই একটু বাংলা মেশানো ছিল। মুর্শেদ মনে করতে পারে সব। শান্তি কমিটির মানুষেরা তখন নানাভাবে লুটতরাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এবং ওরা ভেট দিতে চায় কেয়াকে। কারণ এ-সব লুট-তরাজ হত্যা নারীধর্ষণ সব কিছুতে মেজর সাব হাতে না থাকলে চলে না। তার এক লাইন লেখাতে খোদার খোদারি চলে যায় যখন তখন সামান্য মেয়ে কেয়া।

    মুর্শেদ হুকুম তামিল করার মানুষ। সে স্যালুট করে দাঁড়ালে, কি বিনীত কথা, যেন মেজর সাব মেয়েমানুষ বলে দুনিয়াতে কিছু আছে জানেন না। কেয়াকে একটু দেখা, গল্প করা, কেয়াকে নিয়ে অবসর সময় সামান্য ঘুরে বেড়ানো, বিবি দেশে চলে গেছে, একা দিন কাটে না, কেয়া থাকলে বিকেলটা এত একঘেয়েমি লাগবে না।

    এবং তারপরই যা হয়ে থাকে, নানাভাবে দুনিয়ার মুল্লুকি চাল চালায় মেজর। দিন যত যায়, তত সে কেমন অমানুষ হয়ে যেতে থাকে। ঘাঁটিতে যত খবর আসতে থাকল, তত এমন একজন ভালমানুষ অমানুষ হয়ে যেতে থাকল। তত মঞ্জুর ওপর অত্যাচার বাড়তে থাকল। মুখে গ্লাস ছুঁড়ে মারল মঞ্জু। বোধ হয় মেজর সাব আর মঞ্জুর শরীরে জোনাকি পোকা জ্বলে ওঠার সময় দিত না। তার আগেই পাখা ওর ছিঁড়ে দিত।

    আর এ-ভাবে, সেটা শেষদিনই হবে, কে যেন এসে মুর্শেদকে খবর দিয়েছিল, মেজর মঞ্জুকে চুল ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

    —কোন্‌ দিকে

    —ওদিকটায়।

    ওদিকটা মানে, ঘাঁটির পেছন দিক। আসলে ঘাঁটিটা ছিল একটা প্রকান্ড আম বাগানের ভেতর। সবটা জুড়ে ঘাঁটি, পেছনটাতে শুধু আমের গাছ, জলপাইর গাছ, নানা রকম লতাপাতা, ঝোপ জঙ্গল, এবং হেঁটে গেলে আবার বেশ নিরিবিলি গাছের ছায়ায় অনেক দূর যাওয়া যায়। মুর্শেদ ছুটে বের হয়ে গেল তাঁবু থেকে।

    ঘাঁটিতে বিকেল থেকেই থমথমে ভাব। কেবল ট্রানসমিটারে কি খবর আসবে সেই আশায় বসে রয়েছে সবাই। জেনারেল নিয়াজি ওদের কাছে বেতার ভাষণ দেবেন, এবং বেতার ভাষণের পরই সে শুনেছিল, ওদিকটায় মঞ্জুকে মেজর সাব টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

    ওদিকটায় কেউ যেতে পারে না। সে আর মেজর সাবের খাস আদালি কেবল যেতে পারে। খাস আর্দালি তয়ে জুবুথবু হয়ে বসে রয়েছে। কিন্তু এই ঘাঁটিতে এমন সুন্দর যুবতী মেয়েকে মেরে ফেলা হবে ভাবা যায় না।

    তারপর বনের ভেতর মুর্শেদ জানে, সে আর মেজর, মঞ্জু একটা ভীতু খরগোসের মতো মাঝখানে ােজর জানে না, ছায়া ছায়া জ্যোৎস্নার পাশাপাশি আর একজন মানুষ হাঁটছে। মঞ্জু পাশে হেঁটে যাচ্ছে, মাঝে মাঝে গাছের কান্ডে বাধা পাচ্ছে। মুর্শেদ ও-পাশে। মঞ্জুর পেছনে মেজর সাব। ওর হাতে ছোট ম্যাচ-বাকসের মতো রিভালবার। ওটা সে লাইটারের মতো আগুন জ্বালাবার ভঙ্গীতে মঞ্জুর সামনে ধরে রেখেছে। আর ইংরেজিতে অজস্র কথা। যেন সে এইমাত্র ট্রানসমিটারে খবর পেয়েছে কিছু। অথবা টেলি-কমিউনিকেশনে সে জেনে ফেলেছে সব। যেমন বীর যোদ্ধা, পরাজয়ের আগে ভালভাবে স্নান করে নেয়, ভাল পোশাক পরে নেয়, তারপর অনুগামীদের কাছে পরাজয়ের সরকারী স্বীকৃতি দেয় তেমনি সে; শুনেই, মঞ্জুকে ফের নিয়ে এসেছে, সামনে বসে গ্লাসের পর গ্লাস ঢেলেছে, কারণ বোঝাই যায় মঞ্জুর শরীরে কোন পোশাক নেই, সব কাজ শেষে, যা সে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবে না, অর্থাৎ সে যেন বলতে চাইছে মঞ্জুকে, দুনিয়াতে অন্য কোন পুরুষ তোমার ফের সতীত্ব নষ্ট করবে, আমি চাই না। পুরুষেরা মেয়েদের সতীত্ব নষ্ট করতে ভালবাসে। আমরা কাল এখান থেকে চলে যাব। আমাদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। ওরা তোমাকে, ডার্লিঙ আমার সঙ্গে যেতে দেবে না। এবং এই বলে যখন হাউমাউ করে কাঁদছিল, যেন কি কষ্ট মেজর সাবের তখন এতটা ভন্ডামী কিছুতেই কেন যে মুর্শেদ সহ্য করতে পারল না। সে একেবারে মুখের গহ্বরে এক বিন্দু শক্ত লোহার যবনিকা পুঁতে দিল। সে আর লম্পট মেজরকে ফিরে যেতে দেয় নি। বলার সুযোগ দেয়নি, মাই ফ্রেন্ডস্ উই আর ডিফিটেড্। তবে সে এখন মনে করতে পারে না, সেটা মুখে গলায় না বুকে। কোথায় সে যবনিকা পুঁতে দিয়েছিল মনে করতে পারে না। তবে এতটুকু তার মনে আছে হাউমাউ করে কাঁদলে মুখের হাঁ মাঝে মাঝে ভীষণ বড় হয়ে যায়, সে তার ঠিক ভেতরে যবনিকা ফেলে দিতে চেয়েছিল।

    আর এখন মনে হচ্ছে, আসলে সে যবনিকা মেজরের না হয়ে মঞ্জুর হওয়া উচিত ছিল। কারণ মঞ্জু জহর ব্রত না করে ওর কাছে খুব ছোট হয়ে গেছে। জীবনের জন্য মঞ্জুর ভীষণ মায়া! জীবন না লোভ, কোনটা, সে ঘাস ছিঁড়তে ছিঁড়তে ঠিক করতে পারছে না।

    আর তখনই মনে হল কেউ ডাকছে। ওর নাম ধরে ডাকছে, যেমন বাপজান ডাকত, তেমনি। সে উঠে দাঁড়াল। না কিছু দেখা যাচ্ছে না। সে ঝোপের ভেতর লুকিয়ে আছে। মাথায় সে শুকনো পাতা ডাল দিয়ে ক্যামফ্লেজ করে বসে আছে। কে এখন টের পাবে, জাঁদরেল সেনাবাহিনীর মানুষ মুর্শেদ এখানে পালিয়ে রয়েছে। রাতে রাতে পালাবার চেষ্টা করবে। কার হিম্মত আছে ওকে ধরে।

    আবার কে যেন ডাকছে। মঞ্জুর গলা, মর্জিনা ডাকলে এমনভাবে ডাকত। সে উঠে দাঁড়াল।

    আর তখনই পেছনে খোঁচা। সে খোঁচা খেয়ে একেবারে হাঁ। কখন এই জঙ্গলের ভেতর কেয়া ঢুকে গেছে, ওর কি সাহস! সে বলল, এই মিয়া কি করছ এখানে?

    মুর্শেদ গম্ভীর গলায় বলল, বসে আছি।

    —আমি ঠিক বলেছি, ও গেলে কাছারি বাড়ির দিকে যাবে।

    —ঠিক বলেছ।

    —ঠিক। মঞ্জুদি আমি সেই কখন থেকে খুঁজছি। বা’জী তোমাকে খুঁজছে। তুমি আস্ত একটা অমানুষ মিঞা।

    মুর্শেদ কোনও কথা বলছে না। ওর এত বড় পরিকল্পনা একরাত্তি একটা মেয়ে ভেস্তে দিল।

    —দেখছি, ঝোপজঙ্গল নড়ছে। কোনো কুকুর বেড়াল কিনা দখি। অঃ আল্লা একেবারে আস্ত মিঞা মানুষ। মঞ্জুদি সেই কখন থেকে না খেয়ে আছে।

    —মঞ্জুকে আমি খেতে বারণ করেছি!

    —তুমি বাড়িতে আছ, অতিথি না খাইয়ে খায় কি করে! তোমার জাতের মতো তো আমরা বেইমান না। অতিথি না খাইয়ে নিজে খেয়ে নেব। তোমাদের ইমান না থাকতে পারে আমাদের আছে।

    মুর্শেদের মুখ গোমড়া। তোমার জাত বলতে কেয়া পাকিস্তানীদের বোঝাচ্ছে। সে বলল, তা ঠিক। চল। আপাতত আমার আর পালানো হল না। যা দেখছি, তোমাদে। মর্জি বিলকুল ঠিক হবে।

    —আমাদের মর্জি মানে!

    মুর্শেদ জবাব দিল না। মঞ্জু দাঁড়িয়ে আছে উঁচু ঢিবিতে। মঞ্জুর দিকে তাকিয়ে মুর্শেদের গলায় কোনও কথা যোগাল না। সত্যি মঞ্জু না খেয়ে আছে। এই বিকেলে ওর চোখ মুখ দেখলে তা বিশ্বাস করতে কোনও কষ্ট হয় না।

    সে কেয়াকে শুধু বলল, চল।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleআওরঙ্গজেব : ব্যক্তি ও কল্পকথা – অড্রি ট্রুসকে
    Next Article মানুষের ঘরবাড়ি – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়

    Related Articles

    তসলিমা নাসরিন

    সেইসব অন্ধকার – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    আমার প্রতিবাদের ভাষা – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    অগ্রন্থিত লেখার সংকলন – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    বন্দিনী – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নির্বাসন – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নেই, কিছু নেই – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Our Picks

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }