Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    কিশোর গল্প – বুদ্ধদেব গুহ

    বুদ্ধদেব গুহ এক পাতা গল্প310 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    সেরেঙ্গেটি

    কাল রাতে গোরোং গোরোর গেম ওয়ার্ডেনের শিকার করা ওয়াইল্ড বিস্টের স্টেক খেয়েছিলাম৷ আমাদের দেশের শম্বরের মাংসের মতোই খেতে অনেকটা৷ সকালের আলো ফুটতেই আমার কটেজের কাচের জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখি গোরোং গোরো আগ্নেয়গিরির নিবে-যাওয়া বহু বর্গ মাইল জোড়া গহ্বরের উপর নীল কুয়াশা জমেছে৷ সেই গহ্বরের মধ্যে যে কত জীবজন্তু ও পাখি আছে, তা কী বলব৷

    ড্রাইভার-কাম-গাইড টেডি ঘরে এসে আমাকে তাড়া দিয়ে গেল! তার আগেই চান করে চা খেয়ে তৈরি হয়ে নিয়েছিলাম৷ তারপর আমরা দুজনেই ডাইনিং রুমে গিয়ে ব্রেকফাস্ট খেয়ে গাড়িতে উঠে পড়লাম৷ মেরুন-রঙা ভোকসওয়াগেন ট্রাভলার৷ টেডির নিজের গায়েও মেরুন-রঙা গ্যাবার্ডিনের পোশাক৷ ও চালাচ্ছে৷ পাশে বসে আছি আমি৷ জানালায় কাচ তুলে৷ রীতিমতো ঠান্ডা এখন পূর্ব আফ্রিকায়৷ জুলাই-আগস্ট শীতকাল এখানে৷ তা ছাড়া এ জায়গাটা তো বেশ উঁচুও৷

    পথের পাশে-পাশে মাসাইরা দাঁড়িয়ে আছে হাতে বল্লম নিয়ে, লাল-রঙা পোশাক পরে৷ ডোরাকাটা জংলি জেব্রা ও ওয়াইল্ড বিস্টের দলের সঙ্গে ওদের গরু-মোষ চরছে নরম রোদের ছোঁয়া-লাগা শিশির-ভেজা, ফড়িং-সবুজ-পাহাড়তলিতে৷

    দারুণ লম্বা হয় এই মাসাইরা৷ কানে ইয়াব্বড় বড় ফুটো—তা থেকে নানারকম গয়না ঝুলছে৷ হলুদ-লাল রং দিয়ে গালে-মুখে নানারকম কারিকুরি করেছে৷

    আমি জানালা দিয়ে হাত তুলে বললাম, ‘‘জাম্বো!’’

    ওরা বল্লম তুলে বলল, ‘‘জাম্বো!’’

    জাম্বো একটি সোয়াহিলি কথা৷ জাম্বো মানে কী বলো তো?

    জাম্বো মানে হচ্ছে ‘হ্যালো’৷ অথবা, আজকালকার ‘হাই’!

    এই মাসাইরা এক অদ্ভুত জাত৷ জানো তো, এরা কখনও জল খায় না৷ জলের বদলে জানোয়ারের রক্ত এবং দুধ খায়৷ বল্লম দিয়ে সিংহ শিকার করে এরা৷ খোলা আকাশের নীচে যুবক মাসাইরা সিংহ ও চিতার আস্তানায় ওদের গরু-ছাগল-মোষ চরিয়ে বেড়িয়ে দিন-রাত কাটিয়ে দেয়৷ ওরা চাষ-বাস করে না৷ ওদের ধারণা মাটি খোঁড়াখুঁড়ি করলে প্রকৃতিকে অসম্মান করা হয়৷ প্রকৃতি-মা যা দিয়েছেন তাই নিয়েই ওরা খুশি থাকে৷ এরা এক দারুণ জাত৷ যেমন চেহারায়, তেমনই স্বভাবে৷

    আস্তে-আস্তে গাছ-গাছালি কমে আসতে লাগল৷ আমরা পাহাড়ি এলাকা থেকে সমতলে নেমে আসতে লাগলাম৷ ঘণ্টা দুয়েক গাড়ি চলার পর একটা উঁচু জায়গায় এসে পৌঁছলাম আমরা৷ জায়গাটার নাম নাবি৷ এখানে একটা গেট আছে—তার নাম নাবি গেট৷ এই গেট পেরিয়েই ‘সেরেঙ্গেটি ন্যাশানাল পার্কে’ ঢুকতে হয়৷ জায়গাটা টিলার মতো৷ এখানকার টিলাগুলো আমাদের টিলার মতো নয়৷ মনে হয়, চতুর্দিকের সমতলের মধ্যে কেউ যেন বড়-বড় বিভিন্নাকৃতি কালো পাথর এনে সাজিয়ে টিলাগুলো তৈরি করেছে৷

    ওরা সোয়াহিলিতে বলে কোপি, ইংরেজি বানান ‘KOPJES’৷ নাবি গেটের চারপাশে অনেকগুলো অ্যাকাসিয়া গাছ৷ আমাদের বাবলা এবং কৃষ্ণচূড়া মেলালে যেমন হয়, অনেকটা তেমন৷ ফুল ধরেছে থোকা-থোকা লাল-লাল, ঝোপে-ঝাড়ে৷ একদল নীল-সাদা-বাদামিতে মেশা স্টার্লিং পাখি কিচিরমিচির করে মাথা গরম করে দিচ্ছে৷ এই নির্জন, উদার উন্মুক্ত প্রকৃতিতে ওদের মিষ্টি, চিকন গলার স্বর ছড়িয়ে যাচ্ছে দূর-দূরান্তরে৷

    টেডি থার্মোফ্লাস্ক খুলে আমাকে একটু কফি ঢেলে দিল৷

    আমি বললাম, ‘‘আশান্তে৷’’ মানে ধন্যবাদ৷

    টেডি কাঁধ শ্রাগ করে বলল, ‘‘কারি-বু৷’’ মানে, স্বাগতম৷

    আমি কফি খাওয়ার সময় টেডি গেটের কাজ সারল৷ টাকা দিল, রসিদ নিল, রেজিস্টারে নামধাম লিখল৷ তারপর আমাকে ডাকল নাম সই করার জন্যে৷

    গেটের কর্মচারীটি খুব হাসিখুশি৷ মোটামুটি ইংরেজি বলেন৷ সবচেয়ে বড় কথা আমাকে ওঁদের দেশে সাদরে আপ্যায়ন করলেন৷

    তারপর ভোকসওয়াগেনের এঞ্জিন ঝমঝম করে জেগে উঠল৷ এই গাড়িগুলোর এঞ্জিন পেছন দিকে থাকে, তোমরা অনেকেই জানো৷

    নাবি গেট পেরিয়ে কিছুটা সোজা এসেই পথটা নীচে নেমে গেছে৷

    আমি একটু থামতে বললাম টেডিকে৷

    গাড়িটা থামতেই হঠাৎ সামনে চেয়ে স্তব্ধ হয়ে গেলাম৷ তোমরা যারা সমুদ্র দেখেছ তারা প্রথমবার সমুদ্র দেখে যেমন স্তব্ধ হয়েছিলে, ঠিক তেমনই স্তব্ধ এবং অবাক৷ সামনে একটা প্রকাণ্ড, আদিগন্ত শীতের লালচে-হলুদ ঘাসে ভরা মাঠ৷ প্রকাণ্ড মাঠ বলতে তোমরা বা আমিও এতদিন যা বুঝতাম, তার সঙ্গে এই মাঠের বিস্তৃতির কোনো তুলনাই হয় না৷ শুধু চোখেই নয়, মানুষের কল্পনাও যতদূর যেতে পারে, ততদূর সামনে, ডাইনে, বাঁয়ে সেই লালচে-হলুদ মাঠ গিয়ে মিশেছে নীল আকাশে৷ আকাশটাই মাঠ না মাঠটাই আকাশ বুঝতে ভুল হয়ে যায়৷ স্থলের বিস্তৃতি কথাটা সম্বন্ধে আমার যা ধারণা ছিল এতদিন, মানে যাকে সংজ্ঞা বলা হয়, তা পুরোপুরিই বদলে গেল পূর্ব আফ্রিকার এই সেরেঙ্গেটির দ্বারে দাঁড়িয়ে, আজ রোদ-ঝলমল সকালবেলায় লাল-মখমল মাঠের দিকে চেয়ে৷ এই-ই সাভানা৷ ছোটবেলায় ভূগোলের পাতায় পড়েছিলাম এর বর্ণনা৷ তোমরাও নিশ্চয়ই পড়েছ৷

    টেডি এঞ্জিন আবার স্টার্ট করতেই গাড়িটা নেমে এল সেরেঙ্গেটির ভিতরে৷ সেরেঙ্গেটি আসলে একটা মাসাই শব্দ ‘সিরিঙ্গেট’ থেকে এসেছে৷ সিরিঙ্গেট মানে হচ্ছে বিস্তৃত প্রান্তর৷ ইংরেজি ভাষায় এর উচ্চারণ করতে গিয়ে ইংরেজি-ভাষাভাষী লোকেরা ‘i’গুলোকে বদলে ‘e’ করে দিয়েছিলেন৷ তারপরে সোয়াহিলি ভাষার জবরদস্ত ‘i’ লেগেছে শেষে৷ তাই আজকার SERENGETI৷

    এখন গাড়ি চলেছে ঘাসের সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে৷ আমি জানি, একটু পরে আমার পিছনে নাবি গেটের ঝাঁকড়া-ঝাঁকড়া অ্যাকাসিয়া গাছগুলোকেও আর দেখা যাবে না৷ তখন সমুদ্রেরই মতো মনে হবে চতুর্দিক৷ পথ ভুলে যাবে তুমি৷ মানুষ নেই, বাড়ি নেই, খেত নেই, গাছ নেই, কিছুই নেই—শুধু ঘাস আর রোদ আর আকাশ আর একটা সিঁথির মতো দিগন্তে মেশা কাঁচা পথ৷ আর সেই পথের উপর দিয়ে গড়িয়ে যাওয়া গুবরে পোকার ধুলোর মেঘ উড়ানো একটা মেরুন-রঙা গাড়ি৷ সেই গাড়ির ভিতরে দুজন নীরব মানুষ, যেন ভুল করে কোনো অভিশপ্ত অথবা আশিস-স্নিগ্ধ রাজ্যে এসে পড়েছে৷

    সেরেঙ্গেটির ম্যাপটা খুলে কোলের ওপর রাখলাম৷ এখন আমরা উত্তর-পশ্চিমমুখো চলেছি৷ ঐ দেখা যাচ্ছে ম্যাপে, লেক ভিকটোরিয়ার পাশে মোয়াঞ্জা৷ তোমরা নিশ্চয়ই বিভূতিভূষণের ‘চাঁদের পাহাড়’ পড়েছ৷ না পড়ে থাকলে, নিশ্চয়ই পড়বে৷ চাঁদের পাহাড়ের শংকর এই মোয়াঞ্জা থেকেই চলে গেছিল রুয়েঞ্জোরি পর্বতমালার চাঁদের পাহাড়ে৷ সত্যিই কিন্তু ঐ পর্বতমালায় একটি চুড়ো আছে—যার নাম ‘মাউন্টেন অব দ্য মুন’৷

    ম্যাপটা দেখতে-দেখতে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল আমার৷ এবারে হবে না৷ আরেকবার যখন আসব তখন রুয়েঞ্জোরিতে যাব—তোমাদেরই জন্যে৷ তোমরা যা দেখোনি বা দেখবে না তা তোমাদের হয়ে দেখে আসার জন্যে৷

    টেডি বলল, ‘‘ফিলিং বোরড?’’

    বললাম, ‘‘নট অ্যাট অল৷’’

    ও বলল, ‘‘একটু পরেই জানোয়ারের খেলা দেখবে৷ জানোয়ার দেখে-দেখে তখন ঘেন্না হয়ে যাবে তোমার৷ এখানে এখন সব মিলিয়ে পনেরো লক্ষ জীবজন্তু আছে৷’’

    আমি বললাম, ‘‘আমার মানুষ দেখে-দেখেই ঘেন্না হয়ে গেছে৷ নানারকম চরিত্রের মানুষ৷ তাই জানোয়ার দেখে ঘেন্না হবে বলে মনে হয় না৷’’

    মিনিট পনেরো পরেই ডানদিকে দেখি দুটো উটপাখি সাঁইসাঁই করে দৌড়ে যাচ্ছে৷ কেমন কোমর ঝাঁকিয়ে দৌড়ায় না ওরা৷ যেন মনে হয় ফরাসি মেয়েরা ক্যান-ক্যান নাচ নাচছে৷ শুধু পাগুলো বড় লম্বা আর বিচ্ছিরি দেখতে পাখিগুলোর৷ নইলে ভালো৷ চার-পাঁচটা জিরাফ দেখলাম৷ এবার মাঝে-মাঝেই কয়েকটি করে অ্যাকাসিয়া গাছ দেখা যাচ্ছে৷ অ্যাকাসিয়ার পাতা খাচ্ছে জিরাফগুলো গলা বাড়িয়ে৷

    আমাদের দেখেই দৌড় লাগাল৷ ওদের দৌড়নোর ভঙ্গি দেখে আমার মনে হল, বিধাতা এই জানোয়ার তৈরি করার সময় খুব তাড়াহুড়োতে কাজ সেরেছেন৷ উনি তাড়াতাড়িতে জিরাফের হাঁটু আর গোড়ালির কাছটায় আঠা অথবা বোল্টু আটকাতে নির্ঘাত ভুলে গেছেন৷ এমন বিদঘুটে কায়দার পা দুটো সামনে ফেলে-ফেলে দৌড়ায় জিরাফরা যে, মনে হয় এক্ষুনি বুঝি হুমড়ি খেয়ে দড়াম করে পড়ে যাবে৷

    এরপর জেব্রার দল৷ অনেকরকম জেব্রা হয়৷ তা কি তোমরা জানো? গাড়ি চলছে আর পথের দু’পাশে কতরকম জানোয়ার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে যে, তা কী বলব৷ কোথাও দলে৷ কোথাও দুটো করে৷

    যমসলস গ্যাজেল, গ্রান্টস গ্যাজেল, ইম্পালা, বুমবাক, ওয়াটার বাক, ওয়াইল্ড বিস্ট, ওয়ার্টহগ টোপি, এলান্ড৷ এরা সব হরিণ৷ সবচেয়ে ছোট্ট হরিণ হচ্ছে ডিক-ডিক৷ সুন্দর নাম না?

    একটা ডিক-ডিক দেখেছিলাম যখন সেরোনারা থেকে ডুটু সাফারি লজের দিকে যাচ্ছিলাম, কয়েকদিন পরে৷ এক ঝাঁক অ্যাকাসিয়া আর কাঁটা-ঝোপের পাশে ছোট্ট হরিণটা দাঁড়িয়ে ছিল৷ আমাদের দেশেও এইরকম ছোট হরিণ আছে৷ মাউস-ডিয়ার৷ এখনও উড়িষ্যাতে দেখা যায় কিছু৷ এদের ওড়িয়া নাম হল ‘‘খুরান্টি’’৷

    গাড়ি চলেছে সেরোনারা লজের দিকে৷ তানজানিয়াতে যেটুকু পড়েছে সেরেঙ্গেটির তার এলাকা কত বলো তো? খুব বেশি নয়, মাত্র তেরো হাজার বর্গ-কিলোমিটারের মতো৷ উত্তর-পুবে লোবো-লজ পেরিয়ে গিয়ে এই সেরেঙ্গেটিই আবার কেনিয়াতে চলে গেছে৷

    আমরা মাঝে একটা অ্যাকাসিয়া গাছের ছায়ায় বসে প্যাক-লাঞ্চ খেয়ে নিয়েছি৷ টেডি গাড়ি থেকে নিজে নামবে না, আমাকেও নামতে দেবে না৷ সেৎসি ফ্লাইয়ের অত্যাচার৷ গাড়ির কাচ নামালেই ঢুকে পড়ে৷ এই মাছি কামড়ালে মানুষ শুধুই ঘুমোয়৷ তারপর ঘুমোতে-ঘুমোতে মরে যায়৷ টেডি সিংহের চেয়েও বেশি এই মাছিগুলোকে ভয় পায় দেখলাম৷

    আমার আপত্তি ছিল না৷ মরতে যদি কখনও হয়ই, এই সুন্দর পৃথিবী যদি ছেড়ে চলে যেতেই হয়, তাহলে ঘুমোতে-ঘুমোতে, স্বপ্ন দেখতে-দেখতে মরার মতো আরাম আর কী আছে?

    হঠাৎ টেডি গাড়ি থামিয়ে দিয়ে বলল, ‘‘সিম্বা৷’’ তাকিয়ে দেখি, কয়েকটা কোপি৷ আর পাথরে শুয়ে বসে আরামে শীতের রোদ পোয়াচ্ছে গোটা আটেক সিংহ, সিংহী ও বাচ্চারা৷

    টেডি বলল, ‘‘এই কোপিগুলোর নামই ‘সিম্বা কোপি’৷’’

    সোয়াহিলিতে, ‘সিম্বা’ মানে সিংহ৷ বাচ্চাগুলো লাফালাফি করছে৷ বড়-বড় কান খাড়া করে তাকিয়ে আছে৷ কানের পিছনে রোদ পড়ে কমলালেবুর রঙ ধরেছে৷ সন্ধের মুখে-মুখে সেরোনারা লজের কাছে একদল সিংহ রাস্তা পেরুচ্ছিল দেখলাম৷ একটা বড় সিংহ হুম-হাম করে ডেকে উঠল৷

    আমাদের দেশের বাঘের সঙ্গে এই ন্যাড়াগায়ের দল বেঁধে শিকার করা সিংহদের কোনো তুলনাই করতে পারি না আমি৷ বাঘ-বাঘই৷ বাঘের কোনো বিকল্পই নেই পৃথিবীতে জানোয়ারের জগতে৷

    আমার মনে হয়, সিংহের কেশরগুলো চিৎপুরের নকল দাড়ি-গোঁফের দোকান থেকে কেউ ভাড়া করে এনে আঠা দিয়ে সেঁটে দিয়েছে৷ পশুদের রাজ্যে মানুষের রাজ্যের মতোই অনেক অবিচার ও অন্যায় ঘটেছে৷ নইলে, তোমরাই বলো, আমাদের রাজরাজেশ্বর বাঘ থাকতে আফ্রিকার সিংহ কখনো ‘পশুরাজ’ খেতাব পায়?

    —

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleবনবিবির বনে – বুদ্ধদেব গুহ
    Next Article জংলিমহল – বুদ্ধদেব গুহ

    Related Articles

    বুদ্ধদেব গুহ

    বাবলি – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্ৰ ১ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্র ২ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্র ৩ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্র ৪ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    অবেলায় – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }