Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    কিশোর গল্প – বুদ্ধদেব গুহ

    বুদ্ধদেব গুহ এক পাতা গল্প310 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    লাওয়ালঙের বাঘ

    লাওয়ালঙের বাঘ

    ‘ঋজুদার সঙ্গে সীমারিয়ার ডাকবাংলোয় আজ রাতের মতো এসে উঠেছি৷ আমরা যাচ্ছিলাম কাড়গুতে, চাতরার রাস্তায়; কিন্তু কলকাতা থেকে একটানা জিপ চালিয়ে এসে গরমে সবাই কাবু হয়ে পড়েছিল বলে রাতের মতো এখানেই থাকা হবে বলে ঠিক করল ঋজুদা৷

    সবাই বলতে, ঋজুদা, অমৃতলাল আর আমি৷

    এখন রাত আটটা হবে৷ শুক্লপক্ষ৷ বাইরে ফুটফুট করছে জ্যোৎস্না৷ চৌকিদার হ্যারিকেন জ্বালাবার তোড়জোড় করছিল, ঋজুদা বলল, ‘তুমি বাবা আমাদের একটু খিচুড়ি আর ডিমভাজা বানিয়ে দাও৷’ অমৃতলালও গিয়ে বাবুর্চিখানায় জুটেছে৷ আলুকা ভাত্তা বড়ো ভালো বানায় অমৃতলাল, ওর নানির কাছ থেকে শিখেছিল৷ আলুসিদ্ধ, তার মধ্যে ঘি, কুচিকুচি কাঁচা পেঁয়াজ আর কাঁচালংকা দিয়ে এমন করে রগড়ে রগড়ে মাখত যে, তার নাম শুনলেই আমার জিভে জল আসত৷

    ঋজুদা ঝাঁকড়া সেগুন গাছের নীচের কুয়োতলায় দাঁড়িয়ে নিজেই লাটাখাম্বাতে জল তুলে ঝপাং ঝপাং করে বালতি বালতি জল ঢেলে চান করছিল৷ চাঁদের আলোর বন্যা-বয়ে-যাওয়া বারান্দায় ইজিচেয়ারে বসেছিলাম আমি একা৷ ঋজুদা বলেছিল, ‘তোর আর রাতে চান করে দরকার নেই৷ কোলকাত্তিয়া বাবু, শেষে সর্দি-ফর্দি লাগিয়ে ঝামেলা বাধাবি৷’

    সামনে লালমাটির পথটা চলে গেছে ডাইনে টুটিলাওয়া-বানদাগ হয়ে হাজারিবাগ শহরে৷ বাঁয়ে কয়েক মাইল এগিয়ে গেলেই বাঘড়া মোড়৷ সেখান থেকে বাঁ-দিকে গেলে পালামৌর চাঁদোয়া-টোড়ি৷ ডান দিকে গেলে চাতরা৷ এই সীমারিয়া থেকেই একটা কাঁচা রাস্তা চলে গেছে চাতরাতে৷ আরও একটা পথ টুটিলাওয়া আর সীমারিয়ার মাঝামাঝি মূল পথ থেকে বেরিয়ে গেছে লাওয়ালং৷

    বাইরে নানারকম রাতচরা পাখি ডাকছে৷ সকলের নাম জানি না আমি৷ ঋজুদা জানে৷ আমি শুধু টী-টী পাখির ডাক চিনি৷ আসবার সময় সন্ধে হওয়ার আগে জঙ্গলের মধ্যে যে জায়গাটায় জিপ খারাপ হয়ে গিয়েছিল ঠিক সেখানে একদল চাতক পাখি ফটিক-জল, ফটিক-জল করে ঘুরে ঘুরে একটা পাতাঝরা, ফুলেভরা শিমুল গাছের উপরে উড়ছিল৷ ওই শিমুল গাছের সঙ্গে ওদের আত্মীয়তাটা কীসের তা বুঝতে পারিনি৷ আত্মীয়তা নিশ্চয়ই কিছু ছিল৷

    এরকম হঠাৎ-থামা, হঠাৎ-থাকা জায়গাগুলোর ভারী একটা আকর্ষণ আছে আমার কাছে৷ এরা যেন পাওয়ার হিসেবের মধ্যে ছিল না, এরা যেন ঝড়ের আমের মতো পড়ে-পাওয়া৷ অথচ কত টুকরো টুকরো ভালোলাগা৷ এই সমস্ত হঠাৎ পাওয়া—ঝিনুকের মধ্যে নিটোল সুন্দর মুক্তোর মতো৷

    একটা হাওয়া ছেড়েছে বনের মধ্যে৷ শুকনো শালপাতা উড়িয়ে নিয়ে, গড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে নালায়-টিলায়; ঝোপে-ঝাড়ে৷ দূরের পাহাড়ে দাবানল লেগেছে৷ আলোর মালা জ্বলছে৷ অনেকক্ষণ চেয়ে থাকলে দেখা যায় পাহাড়ে পাহাড়ে মালাবদল হচ্ছে৷ এমনি করে কি পাহাড়ের বিয়ে হয়? কে জানে?

    হাওয়ায় হাওয়ায়, ঝরে যাওয়া পাতায়, না-ঝরা পাতায় কত কী ফিসফিসানি উঠছে৷ চাঁদের আলোয় আর হাওয়ায় কাঁপা ছায়ায় কত কী নাচ নাচছে এই রাত—সাদা-কালোয়, ছায়া-আলোয়৷ কত কী গান উঠছে৷ গাছেদের তো প্রাণ আছে, ওদের গানও আছে, কিন্তু ওদের ভাষা তো আমরা জানি না—কোনো স্কুলে তো ওদের ভাষা শেখায় না৷ কেন যে শেখায় না! ভারী খারাপ লাগে ভাবলে৷

    ঋজুদা স্নান করছে তো করছেই৷ কতক্ষণ ধরে যে চান করে ঋজুদাটা৷ যখন ঋজুদার স্নান প্রায় শেষ হয়ে এসেছে—বাবুর্চিখানা থেকে অমৃতলালের গুরমুখি গানের নীচু গুনগুনানি ভেসে আসছে খিচুড়ি রান্নার শব্দ ও গন্ধের সঙ্গে, এমন সময় মশাল হাতে একদল লোককে আসতে দেখা গেল টুটিলাওয়ার দিক থেকে৷ লোকগুলো হাজারিবাগি—টাঁড়োয়া-গাড়োয়া ভাষায় উঁচু গলায় কীসব বলতে বলতে আসছিল৷

    চেয়ার ছেড়ে উঠে বারান্দার থামে হেলান দিয়ে, উৎকর্ণ হয়ে ওই দিকে চেয়ে রইলাম৷

    লোকগুলো যখন বাংলোর সামনাসামনি এল, তখন ঋজুদা বারান্দায় এসে ওদের হিন্দিতে শুধোল, ‘কী হয়েছে ভাই?’

    ওরা সমস্বরে বলল, ‘বড়কা বাঘোয়া৷’

    ব্যাপারটা শোনা গেল৷

    বড়ো একটা বাঘ, গোরু-চরাতে-যাওয়া একটা পনেরো-ষোলো বছরের ছেলেকে ঠিক সন্ধের আগে আগে একটা নালার মধ্যে ধরে নিয়ে গেছে৷

    গোরুগুলো ভয়ে দৌড়ে গ্রামে ফিরতেই ওরা ব্যাপার বুঝতে পেরে ছেলেটার খোঁজে যায়৷ গাঁয়ের শিকারি তার গাদাবন্দুক নিয়ে জনাকুড়ি লোক সঙ্গে নিয়ে মশাল জ্বালিয়ে রক্তের দাগ দেখে দেখে নালার কাছে যেতেই বাঘটা বিরাট গর্জন করে তেড়ে আসে নালার ভিতর থেকে৷ তাকে ওই শিকারি গুলি করে৷ গুলি নাকি লাগেও বাঘের গায়ে—কিন্তু বাঘটা ওই শিকারির উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে তার মাথাটা একেবারে তিলের নাড়ুর মতো চিবিয়ে, সকলের সামনে তাকে মেরে ফেলেই সঙ্গে সঙ্গে আবার নালার অন্ধকারে ফিরে যায়৷

    ওরা বলল, ছেলেটাকে তো এতক্ষণে মেরে ফেলেছেই, খেয়েও ফেলেছে হয়তো৷ ওরা কী করবে ভেবে না পেয়ে এখানে ফরেস্টারবাবুকে খবর দিতে এসেছে৷

    ঋজুদা চুপ করে ওদের কথা শুনছিল৷ জনা-কয় লোক বাংলোর সামনে দাঁড়িয়ে ছিল, অন্যরা ফরেস্টারবাবুর বাংলোর দিকে চলে গেল৷

    আমার আর তর সইল না৷ আমি ঋজুদাকে দেখিয়ে ওদের বলে ফেললাম, ‘কোই ডর নেহি—ই বাবু বহত জবরদস্ত শিকারি হ্যায়৷’

    একথা বলতে-না-বলতেই ওদের মধ্যে কিছু লোক ফরেস্ট অফিসে দৌড়ে গেল এবং কিছুক্ষণের মধ্যে ফরেস্টারবাবুকে সঙ্গে করে ফিরে এল সকলে৷ ওঁরা সকলে মিলে ঋজুদাকে বারবার অনুরোধ করলেন৷ ছেলেটা গ্রামের মাহাতোর ভাতিজা৷ মৃতদেহের কিছু অংশ না পেলে দাহ করা যাবে না এবং তাহলে ছেলেটার আত্মা চিরদিন নাকি জঙ্গলে-পাহাড়ে, টাঁড়ে টাঁড়ে ঘুরে বেড়াবে, ভূত হয়ে যাবে৷

    আমি রীতিমতো উত্তেজিত হয়ে পড়লাম৷ ঋজুদার সঙ্গে এ-পর্যন্ত ওড়িশার জঙ্গলে অনেক ঘুরলেও কখনো এমন সদ্য মানুষ-মারা বাঘের সঙ্গে মোলাকাতের অভিজ্ঞতা হয়নি৷

    গোলমালটা হল ঋজুদাকে নিয়েই৷ ঋজুদা বলল, ‘রুদ্র, তুমি যাবে না৷ তুমি আর অমৃতলাল দুজনেই থাকবে এখানে৷’

    অমৃতলাল বলল, ‘নেহি বাবু, ই ঠিক নেই হ্যায়৷ এক্কেলা যানা নেই চাহিয়ে৷ দুসরা বন্দুক রহনা জরুরি হ্যায়৷’

    তখন ঋজুদা অধৈর্য গলায় অমৃতলালকে বলল, ‘কিন্তু রুদ্র যে বড়ো ছেলেমানুষ—ওর কিছু হলে ওর বাবা-মাকে কী বলব আমি?’

    আমি সকলের সামনেই ঋজুদার পা জড়িয়ে ধরে বললাম, ‘ঋজুদা আমাকে নিয়ে চলো, প্লিজ৷ তুমি তো সঙ্গেই থাকবে৷ তোমার যা হবে আমারও তাই হবে৷’

    ঋজুদা কিছুক্ষণ চুপ করে আমার দিকে চেয়ে রইল৷ বলল, ‘তুই ভারী অবাধ্য হয়েছিস৷’ তারপরই বলল, ‘আচ্ছা চল৷’

    জিপে যে ক-জন লোক ধরে, তাদের নিয়ে আমরা বেরিয়ে পড়লাম, লাওয়ালঙের রাস্তায়৷ অমৃতলাল জিপ চালাচ্ছিল তখন৷ ঋজুদা ফোর-ফিফটি-ফোর হানড্রেড দোনলা রাইফেলটা নিয়েছিল৷ আমার হাতে দোনলা বারো বোরের বন্দুক৷ দুটো অ্যালফাম্যাকস এল. জি. আর দুটো লেথাল বল নিয়েছি সঙ্গে৷

    গরমের দিন৷ জঙ্গল একেবারে পাতলা হয়ে গেছে পাতা ঝরে৷ বর্ষার শেষে বড়ো বড়ো গাছের নীচে নীচে যেসব আগাছা, ঝোপঝাড়, লতাপাতা গজিয়ে ওঠে এবং শীতে যেগুলো ঘন হয়ে থাকে—যাদের ঋজুদা বলে ‘আন্ডার গ্রোথ’—সেসব এখন একেবারেই নেই৷ জিপের আলোর দু-পাশে প্রায় একশো আশি ডিগ্রি চোখ চলে এখন৷

    একটা খরগোশ রাস্তা পেরোল ডান দিক থেকে বাঁ-দিকে৷ পর পর দুটো লুমরির জ্বলজ্বলে সবুজ চোখ দেখা গেল৷ একটু পরেই আমরা পথ ছেড়ে একটা ছোটো পায়ে-চলা পথে ঢুকে গ্রামটাতে এসে পৌঁছোলাম৷ জিপের আওয়াজ শুনেই লোকজন ঘরের বাইরে এল৷ জিপটা ওখানেই রেখে দেওয়া হল৷ তারপর গ্রামের যে মাহাতো, তাকে ঋজুদা বলল পথ দেখিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের৷

    যে শিকারিকে বাঘ মেরে ফেলেছে, তাকে খাটিয়ার উপর একটা সাদা চাদর দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল৷ মাটির দেওয়াল আর খাপরার চালের বাড়িগুলো থেকে মেয়ে ও বাচ্চাদের কান্না শোনা যাচ্ছিল৷ ঋজুদা সেই মৃতদেহের কাছে গিয়ে চাদর সরিয়ে লণ্ঠন দিয়ে কী যেন দেখল ভালো করে৷ তারপর ফিরে এসে বলল, ‘চল রুদ্র৷’

    গ্রামের লোকেদের যথাসম্ভব কম কথা বলতে ও আওয়াজ করতে অনুরোধ করে ঋজুদা আর আমি মাহাতোর সঙ্গে এগোলাম৷ উত্তেজনায় আমার গা দিয়ে তখনই দরদর করে ঘাম বেরোচ্ছিল, হাতের তেলো ঘেমে যাচ্ছিল৷ বারবার খাকি বুশ শার্টের গায়ে ঘাম মুছে নিচ্ছিলাম৷

    জঙ্গলে বেশির ভাগই শাল৷ মাঝে মাঝে আসন, কেঁদ, গমহার এসবও আছে৷ আমলকী গাছ আছে অনেক৷ জঙ্গলের মধ্যে মধ্যে এক-এক ফালি চাষের জমি৷ হয়তো শীতে কিতারি, অড়হর, কুলথি বা গেঁহু লাগিয়েছিল৷ এখন কোনো চিহ্ন নেই তার৷ মাটি ফেটে চৌচির হয়ে আছে৷

    আলো না জ্বালিয়ে, আমরা নিঃশব্দে শুকনো পাতা না মাড়িয়ে, পাথর এড়িয়ে হাঁটছি৷ বন্দুকে গুলি ভরে নিয়েছি৷ ঋজুদার কথামতো দু-নলেই এল.জি.পুরে নিয়েছি৷ খুব কাছাকাছি গুলি করতে হলে নাকি এল.জি.ই ভালো৷ ঋজুদাও রাইফেলের দু-ব্যারেলে সফট নোজড বুলেট পুরে নিয়েছে৷ ঋজুদার রাইফেলের সঙ্গে একটা ক্ল্যামপে ছোটো একটা টর্চ লাগানো আছে—ক্ল্যামপের সঙ্গে আটকানো একটা লোহার পাতে নিশানা নেবার সময় বাঁ-হাতের আঙুল ছোঁয়ালেই টর্চটা জ্বলে ওঠে৷ আমার বন্দুকে আলো নেই৷ এমন জ্যোৎস্নারাতে বন্দুক ছুড়তে আলো লাগে না৷ বন্দুক ছোড়া রাইফেল ছোড়ার চেয়ে অনেক সহজ৷

    কিছুদূর গিয়েই আমরা একটা উপত্যকায় এসে পৌঁছোলাম৷ জ্যোৎস্নায় ভেসে যাচ্ছে শান্ত উদোম উপত্যকা৷ দূরে পিউ-কাঁহা, পিউ-কাঁহা করে রাতের বনে শিহর তুলে পাখিটা ডাকছে৷ কী চমৎকার সুন্দর পরিবেশ৷ ভাবাই যায় না যে, এই আলোর মধ্যের ছায়ার আড়ালে মৃত্যু লুকিয়ে আছে…অমন মর্মান্তিক মৃত্যু৷ দু-দু-জন লোক আজ সন্ধে থেকে এখানে মারা গেছে, বলতে গেলে খুন হয়েছে, অথচ পাখিটা কী সুন্দর ডাকছে; হাওয়ায় মহুয়া আর করৌঞ্জ ফুলের গন্ধ ভাসছে কী দারুণ৷

    মাহাতো আঙুল দিয়ে দূরে যে জায়গাটা থেকে বাঘ নালা ছেড়ে উঠে এসে শিকারিকে আক্রমণ করেছিল, সেই জায়গাটা দেখিয়ে দিল৷ ঋজুদা ফিসফিস করে বলল, সামনে যে পিপুল গাছটা আছে, তাতে তুমি চড়ে বসে থাকো৷ আমরা ডান দিকে গিয়ে বাঘের যে জায়গায় থাকার সম্ভাবনা, সে জায়গা থেকে কম করে তিন-শো গজ দূরে নালায় নামব৷’

    তারপর আর কিছু না বলে ঋজুদা এগিয়ে চলল৷ পরক্ষণেই, দাঁড়িয়ে পড়ে, মাহাতোকে বলল, ‘দিনের আলো ফোটার আগেও যদি আমরা না ফিরি, তাহলে অমৃতলালকে ও গাঁয়ের লোকদের নিয়ে আমাদের খুঁজতে এসো৷’

    কথাটা শুনে মাহাতো খুব খুশি হল না, চাঁদের আলোয় তার মুখ দেখেই তা বোঝা গেল৷

    এরপর ঋজুদা আর আমি সেই চন্দ্রালোকিত উপত্যকায় নিঃশব্দে দুটি ছায়ার মতো, দূরের শুয়ে-থাকা ঘন কালো ছায়ার মতো নালাটির দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম৷

    ঋজুদা শুধু একবার ফিসফিস করে বলল, ‘ভয় পেয়ে পিছন থেকে আমাকে গুলি করিস না যেন৷ নালায় নেমে আমার পাশে পাশে হাঁটবি—পিছনে নয়৷ একটুও শব্দ না করে৷ প্রত্যেকটি পা ফেলার আগে কোথায় পা ফেলছিস, তা দেখে ফেলবি—এক পা এগোবার আগে সামনে ও চারপাশে ভালো করে দেখবি৷ কান খাড়া রাখবি৷ নালার মধ্যে চোখের চেয়ে কানের উপরই বেশি নির্ভর করতে হবে৷ নালার মধ্যে হয়তো অন্ধকার থাকবে৷ তোর বন্দুকে আলো থাকলে ভালো হত৷’

    যাই হোক, তখন আর কিছু করার নেই৷ আশা করতে লাগলাম, পাতাঝরা গাছগুলোর ফাঁকফোঁক দিয়ে নালার মধ্যে কিছুটা আলো হয়তো চুঁইয়ে আসবে৷ গুলি থাক আর না-ই থাক, বাঘ যে নালার মধ্যেই থাকবে, এমন কোনো কথা নেই৷ যদি নালার মধ্যে থাকে, তাহলে নালার কোন জায়গায় থাকবে তারও স্থিরতা নেই৷ তা ঋজুদা ভালো করে জানে বলেই এত সাবধান হয়ে নালার প্রায় শেষ প্রান্তের দিকে আমরা এগোচ্ছি৷

    দেখতে দেখতে নালার মুখে চলে এলাম৷ শুকনো বালি, চাঁদের আলোয় ধবধব করছে৷ আমাকে হুঁশিয়ার থাকতে বলে ঋজুদা হাঁটু গেড়ে বসে নালার বালি পরীক্ষা করে দেখল৷ নালা থেকে যে বাঘ বেরিয়ে গেছে তেমন কোনো পায়ের চিহ্ন দেখা গেল না৷ খুব বড়ো একটা বাঘের পায়ের দাগ ছাড়াও শুয়োর, শজারু, কোটরা হরিণ ইত্যাদির অনেক পায়ের দাগ দেখা গেল৷ বাঘ ভিতরে ঢুকেছে, কিন্তু এদিক দিয়ে বেরোয়নি৷

    নালায় পৌঁছোনোর আগে অবধি একটা টী-টী পাখি আমাদের মাথার উপরে ঘুরে ঘুরে উড়ে উড়ে টিটির টি—টি-ট্টী-টি-টি করে ডাকতে ডাকতে সারা বনে আমাদের আগমনবার্তা জানিয়ে দিল৷ আমার মন বলছিল, বাঘ একেবারে খবর পেয়ে তৈরি হয়েই থাকবে৷

    এবারে আমরা নালার মধ্যে ঢুকে পড়েছি৷

    দু-পাশে খাড়া পাড়৷ কোথাও-বা খোয়াই, পিটিসের ঝোপ, আমলকীর পত্রশূন্য ডালে থোকা থোকা আমলকী ধরে আছে৷ নালার মধ্যে মধ্যে একটা জলের ধারা বয়ে এসেছে ওপাশ থেকে৷ কোথাও সে জলে পায়ের পাতা ভেজে—কোথাও-বা তাও নয়—শুধু বালি ভিজে রয়েছে৷

    কোনো সাড়াশব্দ নেই—শুধু একরকম কটকটে ঝিঁঝির একটানা ঝাঁঝাঁ আওয়াজ ছাড়া৷

    একটা বাঁক নিলাম৷ ঋজুদা এক-এক গজ পথ যেতে পাঁচ মিনিট করে সময় নিচ্ছে৷

    যতই এগোতে লাগলাম, ততই জলের ধারাটা গভীর হতে লাগল৷ কোথাও কোথাও হাঁটু সমান জল পাথরের গভীরে জমে আছে৷ তার মধ্যে ব্যাঙাচি, কালো কালো লম্বা গোঁফওয়ালা জলজ পোকা৷ আমাদের পায়ের শব্দের অনুরণনে একটা ছোটো ব্যাং জলছড়া দিয়ে দৌড়ে গেল জলের মধ্যে৷

    যতই এগোচ্ছি, ততই নিস্তব্ধতা বাড়ছে৷ এত জানোয়ারের পায়ের দাগ দেখলাম নালায় ঢোকার সময় বালিতে কিন্তু কারও সঙ্গেই দেখা হল না এ পর্যন্ত৷ কোন মন্ত্রবলে তারা যেন সব উধাও হয়ে গেছে৷

    ঋজুদার কান-চোখ তীক্ষ্ম হয়ে আছে—৷ ঋজুদার হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে বাঘ নালার মধ্যেই আছে৷ বন্দুকটা শুটিং-পজিশনে ধরে, সেফটি-ক্যাচে বুড়ো আঙুল ছুঁইয়েই আছি আমি—যাতে প্রয়োজনে এক মুহূর্তের মধ্যে গুলি করতে পারি৷

    বোধ হয় এক ঘণ্টা হয়ে গেছে আমরা নালাটার মধ্যে ঢুকেছি৷ এতক্ষণে বেশ অনেকখানি ভিতরে ঢুকে থাকব৷ নালার মধ্যেটাকে আলো-ছায়ার কাটাকুটি করা একটা ডোরাকাটা শতরঞ্জ বলে মনে হচ্ছে৷

    হঠাৎ বুকের মধ্যে চমকে দিয়ে কাছ থেকে হুপ হুপ হুপ হুপ করে একসঙ্গে অনেকগুলো হনুমান ডেকে উঠল৷ আমরা যেখানে দাঁড়িয়েছিলাম, সেখান থেকে পঁচিশ গজ দূরের একটা বড়ো গাছের উপরের ডালে ডালে হনুমানদের নড়েচড়ে বসার আওয়াজ, ডালপালার আওয়াজ শোনা গেল৷ সঙ্গে সঙ্গে ঋজুদা আমার গায়ে হাত ছুঁইয়ে আমাকে নালার বাঁ-দিকের পাড়ের দিকে সরে আসতে ইশারা করল৷ আমি সরে আসতেই, আমার সামনে ছায়ার মধ্যে একটা বড়ো পাথরের উপর বসে, দু-হাঁটুর উপরে রাইফেলটা রেখে সামনের দিকে চেয়ে রইল ঋজুদা তীক্ষ্ম চোখে৷ নালাটা সামনে একটা বাঁক নিয়েছে৷

    হনুমানদের হুপহাপ আওয়াজ থেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সামনে থেকে জল পড়ার আওয়াজ স্পষ্ট হল; ঝরনার মতো৷ পাথরের উপর বোধ হয় হাতখানেক উঁচু থেকে জল গড়িয়ে পড়ছে, তারই শব্দ৷ শব্দ শোনা যাচ্ছিল, কিন্তু ঝরনাটা দেখা যাচ্ছিল না৷ ওটা বোধ হয় বাঁকটার ওপাশেই৷ এদিকে জলের স্রোতও বেশ জোর—প্রায় ছয় আঙুল মতো জল একটা হাত-পাঁচেক চওড়া ধারায় বয়ে চলেছে৷

    এখানে ঋজুদা একেবারে স্থাণুর মতো বসে রইল সামনের দিকে চেয়ে৷ কী জানি, ওই হনুমানদের হুপহাপ শব্দের মধ্যে ঋজুদা কী শুনেছিল—কোন ভাষা৷ কিন্তু তার হাবভাব দেখে আমার মনে হল, বাঘটা ওই নালার বাঁকেই যেকোনো মুহূর্তে দেখা দিতে পারে৷

    ওইভাবে কতক্ষণ কেটে গেল মনে নেই৷ আমার মনে হল, কয়েক ঘণ্টা, কিন্তু আসলে হয়তো পাঁচ মিনিটও নয়৷

    এখানে কেন বসে আছে, একথা আমি ঋজুদাকে জিজ্ঞেস করব ভাবছি, এমন সময়, জলের শব্দ ছাপিয়ে হঠাৎ একটা শব্দ কানে এল৷ এক মুহূর্ত কান খাড়া করে শুনেই, ভেজা বালিতে হামাগুড়ি দিয়ে নালার বাঁকের দিকে এগোতে লাগল ঋজুদা৷ শব্দটা আমিও শুনেছিলাম৷ কুকুরে জল খেলে যেমন চাক চাক চাক শব্দ হয় তেমনই শব্দ, কিন্তু অনেক জোর শব্দ৷

    শব্দটা তখনও হচ্ছিল৷ বাঘটা নিশ্চয়ই ঝরনায় জল খাচ্ছিল৷

    বাঁকটা তখনও হাত-দশেক দূরে৷ ঋজুদা জোরে এগিয়ে চলেছে হামাগুড়ি দেওয়ার মতো করে, রাইফেলটাকে হাতের উপর নিয়ে৷ আমার বুকের মধ্যে তখন একটা রেলগাড়ি চলতে শুরু করেছে—এত ধক ধক করছে বুকটা, ঘামে সমস্ত শরীর, মাথার চুল সব ভিজে গেছে৷ আমার তখন খালি মনে হচ্ছিল, ঋজুদা দেখতে পাওয়ার আগে তার জল খাওয়া শেষ করে চলে যাবে না তো বাঘটা?

    হঠাৎ, একেবারেই হঠাৎ, আমার বুকের স্পন্দন থেমে গেল৷

    আমার সামনে ঋজুদা বালিতে শুয়ে পড়েছে—প্রোন-পজিশানে দু-হাতে রাইফেলটা ধরে নিশানা নিচ্ছে৷

    ততক্ষণে আমি ঋজুদার পাশে পৌঁছে গেছি৷ পৌঁছেই যে দৃশ্য দেখলাম তা সারাজীবন চোখে আঁকা থাকবে৷

    ঝরনাটার উপরে ডান দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে বাঘটা জল খাচ্ছে৷ চাঁদের আলোয় তার মাথা, বুক সব দেখা যাচ্ছে, কিন্তু পেছনের দিকটা অন্ধকার৷ তার প্রকাণ্ড মাথাটা জলের উপর একটা বিরাট পাথর বলে মনে হচ্ছে৷ আমিও যেই শুয়ে পড়ে বন্দুকটা কাঁধে তুলতে যাব, ঠিক অমনি সময়ে বুকপকেটে রাখা বুলেটটার সঙ্গে বন্দুকের কুঁদোর ঠোকা লাগতেই খুট করে একটু শব্দ হল৷ তাতেই বাঘ এক ঝটকায় মাথা তুলে এদিকে তাকাল৷ বাঘটা কানে-তালা-লাগানো গর্জনের সঙ্গে সঙ্গে শরীরটাকে গুটিয়ে যেন একটা বলের মতো করে ফেলল, এবং মুহূর্তের মধ্যে সোজা আমাদের দিকে লাফাল৷ লাফাল না বলে উড়ে এল, বলা ভালো৷ আমার কানের পাশে ঋজুদার ফোর-ফিফটি-ফোরহানড্রেড রাইফেলের আওয়াজে মনে হল বাজ পড়ল৷ বাঘের গর্জন, হনুমানদের চ্যাঁচামেচি দাপাদাপি, জঙ্গলের গভীরে অদৃশ্য নানা পাখির চ্যাঁচামেচিতে এবং রাইফেলের গুমগুমানিতে যেন আমি অজ্ঞান হয়ে গেলাম৷ দেখলাম, আলো-ছায়ায় মেশা একটা অন্ধকারের স্তূপ উড়ে আসছে আমাদের দিকে শূন্য থেকে, তার সামনে প্রসারিত করা—নখ সমেত প্রকাণ্ড থাবা দুটো৷ বোধ হয় ঘোরের মধ্যেই আমি একই সঙ্গে দুটো ট্রিগার টেনে দিয়েছিলাম বন্দুকের৷ কিন্তু গুলি লাগল কি না লাগল কিছু বোঝা গেল না—বাঘটা জলের মধ্যে ঝপাং করে পড়ল, প্রায় আমার নাকের সামনে৷ আমার মনে হল, থাবাটা একবার তুলে বাঘটা আমার মাথায় এক থাপ্পড় মারল বুঝি৷ আমি তখনও শুয়েই ছিলাম, দু-হাতে বন্দুকটাকে সামনে ধরে৷

    যেন ঘুমের মধ্যে, স্বপ্নের মধ্যে, যেন অনেক দূর থেকে ঋজুদা আমাকে ডাকল, ‘রুদ্র, এই রুদ্র৷’

    তাকিয়ে দেখলাম, আমার পাশে ঋজুদা বাঘটার ঘাড়ের দিকে রাইফেলের নল ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷

    আমি উঠে দাঁড়াবার সঙ্গে সঙ্গেই বাঘটাও যেন একবার উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করল, সারা শরীর নড়ে উঠল, জল ছপ ছপ করে উঠল, ডন দেবার মতো উঠে দাঁড়াতে গেল বাঘটা৷ ঋজুদা রাইফেলটা কোমরে ধরা অবস্থাতেই বাঁ-ব্যারেল থেকে আবার গুলি করল৷ বাঘটার মাথাটা ঝপাং করে জলে পড়ল৷

    একটাও কথা না বলে ঋজুদা ঝরনার কাছ দিয়ে নালা পেরিয়ে বাইরের উপত্যকায় উঠে এল৷ এসে ফাঁকা জায়গা দেখে একটা বড়ো পাথরের উপরে বসে পকেট থেকে পাইপটা বের করে পাইপটা ধরাল৷ বলল, ‘গাঁয়ের শিকারির নিশানা ফসকেছিল৷ তার গুলি সত্যিই বাঘের পায়ে লেগে থাকলে ব্যাপারটা এত সহজে শেষ হত না৷’ দূরে দেখা গেল—ঝাঁকড়া পিপুল গাছের দিক থেকে একটা লোক আমাদের দিকে জ্যোৎস্নায় ভেসে ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে আসছে৷ মাহাতো৷

    হঠাৎ ঋজুদা যেন কেমন উদাস হয়ে গেল৷

    পিউ-কাঁহা পাখিটা অনেকক্ষণ চুপচাপ থাকার পর আবার ডাকতে লাগল দূর থেকে৷ বাঘ মরে গেছে, এ খবরে আনন্দ কি দুঃখ প্রকাশ করল জানি না, কিন্তু চতুর্দিকের বন-পাহাড়ে আবার নানারকম পশুপাখির ডাক শোনা যেতে লাগল৷

    আমি শুধোলাম, ‘ঋজুদা, ছেলেটা?’

    ঋজুদা পাইপের ধোঁয়া ছেড়ে বলল, ‘কিছু করার নেই৷ ওর বাবা-দাদারা আসবে—যাদের আপনজন, তারাই নিয়ে যাবে৷ কীই-বা করার আছে আমাদের?’

    আমি শুধোলাম, ‘কোথায় আছে?’

    ঋজুদা বলল—এমনভাবে বলল, যেন নিজে দেখেছে৷ ‘ওই ঝরনার ওপাশে, বেশ কিছুটা ওপাশে, নালার মধ্যেই পড়ে আছে৷’

    আমিও পাথরটার উপরে বসে পড়ে খুশি গলায় বললাম, ‘যাক, বাঘটাকে মেরেছ ভালোই হয়েছে৷ বদমাইশ বাঘ৷’

    ঋজুদা শুকনো হাসি হাসল৷

    বলল, ‘আহা কী দারুণ বাঘটা! বেচারা!’

    তারপরই বলল, ‘উপায় ছিল না বলেই হয়তো ও ছেলেটাকে মেরেছিল৷ জন্তুজানোয়ারদের ভালোবাসিস, বুঝলি, রুদ্র৷ মানুষকে মানুষ তো ভালোবাসেই৷ কিন্তু ওদের ভালোবাসতে পারে, ভালোবাসতে জানে, খুবই কম মানুষ৷’

    —

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleবনবিবির বনে – বুদ্ধদেব গুহ
    Next Article জংলিমহল – বুদ্ধদেব গুহ

    Related Articles

    বুদ্ধদেব গুহ

    বাবলি – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্ৰ ১ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্র ২ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্র ৩ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্র ৪ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    অবেলায় – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }