Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025

    আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    September 22, 2025

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    September 22, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    কেয়াপাতার নৌকো – প্রফুল্ল রায়

    প্রফুল্ল রায় এক পাতা গল্প1251 Mins Read0

    ১.২৮ কমলাঘাটের বন্দর

    কাল রাত্তিরে কমলাঘাটের বন্দর থেকে বড় বড় দুটো বাক্স বোঝাই জামাকাপড় কিনে এনেছিলেন হেমনাথরা। সুধা-সুনীতি-বি-ঝিনুক-বাড়ির সবার জন্য তো নতুন পোশাক এসেছেই, তা বাদে অসংখ্য শাড়িধুতি, নানা মাপের ফ্রক-ইজের-শার্টও আনা হয়েছে। এত জামা-টামা দিয়ে কী হবে বিনু বুঝতে পারে নি, অবশ্য জিজ্ঞেসও করে নি।

    আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে ঝিনুক আর হেমনাথের সঙ্গে সূর্যস্তব করবার পর স্নেহলতার সঙ্গে দেখা।

    অন্যদিনের মতো এর ভেতরেই চান সেরে ফেলেছেন স্নেহলতা। পরনে পাটভাঙা লালপাড় শাড়ি, গরদের জামা, সিঁথিতে চওড়া করে সিঁদুর টানা। কপালে মস্ত সিঁদুরের টিপ, নির্মল আকাশে সুর্যোদয়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। খোঁপা বাঁধেন নি, দু’একবার চিরুনি টেনে ভিজে চুলগুলো পিঠময় ছড়িয়ে দিয়েছেন, প্রান্তে আলগা করে গিঁট বাঁধা।

    স্নেহলতা গলা তুলে ডাকতে লাগলেন, ঠাকুরঝি-ঠাকুরঝি, গৌরদাসী–উমা–

    শিবানী-উমা-গৌরদাসী, সবাই ছুটে এল। এমন কি সুরমা-অবনীমোহনরাও এসে পড়েছেন। উমা আর গৌরদাসী সেই আশ্রিত বিধবা দুটির নাম।

    স্নেহলতা বললেন,আজ আমার ছুটি।

    শিবানী হাসলেন, বেশ তো।

    রান্নাবান্না-সংসার সব আজ তোমরা চালাবে। রোজ রোজ এই চরকি কলে ঘুরতে পারব না। এক-আধদিন আমারও ছুটিছাটার দরকার, বুঝলে?

    বুঝলাম– শিবানী হাসতে লাগলেন, এই সক্কালবেলা এমন সাজের বাহার, ব্যাপার কী?

    সুধা সুনীতিকে দেখিয়ে স্নেহলতা বললেন,ওরা দিনরাত সাজছে, আমার বুঝি একটু আধটু সাজগোজ করতে ইচ্ছে করে না? সাজলে আমাকে খুব খারাপ দেখায় নাকি?

    সুধা সুনীতি কলকল করে উঠল, আমাদের হিংসে হচ্ছে?

    হচ্ছেই তো।

    শিবানী বললেন, পটের বিবি হয়ে পায়ের ওপর পাটি তুলে তুমি বসে থাকে। আমরা যাই। রান্নাবান্না চড়াতে হবে তো।

    স্নেহলতা দু’ধারে মাথা নাড়লেন, উঁহু–

    কী?

    বসে থাকব না।

    তবে?

    বেরুতে হবে।

    কোথায়?

    স্নেহলতা বললেন, কাল জামা কাপড় কিনে আনা হল না? পুজোপার্বণের দিনে সবাই আশা করে বসে আছে। তাদের হাতে দিয়ে আসতে না পারলে ভাল লাগছে না।

    শিবানী বললেন, এই তোমার ছুটি নেওয়া!

    স্নেহলতা হেসে ফেলেন।

    শিবানী আবার বললেন, রাজদিয়া জুড়ে তোমার রাজ্যপাট আর ছেলেমেয়ে। যাও, সবার মনোবাসনা পূর্ণ করে এস।

    স্নেহলতা হাসতে হসেতে ডাকলেন, যুগল-যুগল–

    প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই যুগল এসে হাজির। কাল রাত্তিরে লারমোরকে পৌঁছে দিয়ে কখন সে ফিরে এসেছে, বিনু জানে না। তার আগেই সে ঘুমিয়ে পড়েছিল।

    স্নেহলতা বললেন, পুবের ঘরে দু’টো কাপড়ের গাঁটরি আছে, সে দু’টো নৌকোয় নিয়ে যা।

    কাপড়ের গাঁটরি মাথায় চাপিয়ে পুকুরঘাটের দিকে চলে গেল যুগল।

    স্নেহলতা এবার বিনুদের দিকে তাকিয়ে বললেন, আমার সঙ্গে তোরা কে কে যাবি?

    বেড়াতে যাবার নামে বিনু ঝিনুক নেচে উঠল, আমি যাব,আমি যাব—

    যাবি—যাবি– স্নেহলতা তাদের শান্ত করে সুধা সুনীতিকে বললেন, তোরা দিদিভাই?

    সুধা সুনীতি জানালো, তারা যাবে না। ছুটির কিছুদিন পরেই পরীক্ষা। রাত্তিরবেলা তো রিহার্সালের জন্য বই ছুঁতেই পারে না। সকালে যদি একটু আধটু না পড়ে, তবে নির্ঘাত ফেল।

    স্নেহলতা এবার সুরমাকে বললেন, তুই চল রমু–

    আমি?

    হ্যাঁ। রাজদিয়ায় আসার পর একদিন মোটে বেরিয়েছিস। সবাই তোকে যেতে বলে। ঘুরেটুরে পাঁচজনের সঙ্গে কথা বললে দেখবি, ভাল লাগবে।

    চল তা হলে।

    বিনু-ঝিনুকসুরমাকে নিয়ে একটু পর পুকুরঘাটে চলে এলেন স্নেহলতা।

    সেদিন সুজনগঞ্জের ঘাট থেকে যে নতুন নৌকোখানা কিনেছিলেন হেমনাথ সেটার গলুইতে উন্মুখ হয়ে বসে ছিল যুগল। স্নেহলতারা উঠতেই নৌকো ছেড়ে দিল। বলল, কই যাইবেন ঠাউরমা?

    স্নেহলতা বললেন, আগে কুমোরপাড়ায় চল–

    পুকুরটার পুব দিকে ধানের খেত, উত্তরে খাল। অবশ্য আলাদা আলাদা করে খাল এবং পুকুরকে চিনবার উপায় নেই। এই আশ্বিনে অথৈ জলে সব সীমারেখা ডুবে গেছে। নৌকো নিয়ে যুগল খালের ভেতর এসে পড়ল।

    খালের গা ঘেঁষে সেই রাস্তাটা, মেরুদন্ডের মতো যেটা রাজদিয়ার মাঝখান দিয়ে গেছে। প্রথম দিন থেকেই এ রাস্তা বিনুর চেনা। ওই পথটা ধরে যেতে যেতে জলের মাঝখানে খন্ড খন্ড দ্বীপের মতো অনেক বসতি তার চোখে পড়েছে।

    একসময় নৌকোটা রাস্তার কাছ থেকে সরে এসে বসতিগুলোর দিকে এগিয়ে গেল।

    চারদিকে সেই পরিচিত দৃশ্য। হেলেঞ্চা লতা, জলঘাস আর ধঞ্চের বন উদ্দাম হয়ে আছে। ফাঁকে ফাঁকে নলখাগড়ার ঘন ঝোঁপ। আজ পাখি চোখে পড়েছে না তেমন। মাঝে-মধ্যে দু’একটা মৌটুসকি কি মাছরাঙা, কদাচিৎ শালিক অথবা চড়ই। তবে পতঙ্গরা আছে, নলখাগড়ার দীর্ঘ সজীব ডাটাগুলোর মাথায় নাচানাচি করে বেড়াচ্ছে।

    রাজদিয়ায় আসার পর কতবার এই ছবি দেখেছে বিনু, তবু তার মুগ্ধতা কাটল না। সে পাখি দেখতে লাগল, ফুল দেখতে লাগল। যে সব আগাছা কোনও দিন কারও প্রায়োজনে লাগবে না,অবাক বিস্ময়ে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকল।

    পাশে বসে স্নেহলতা-সুরমা-ঝিনুক সমানে কথা বলে যাচ্ছে। লতাপাতা-পাখি-পতঙ্গ সব একাকার হয়ে জল-বাংলার মনোরম দৃশ্য বিনুকে এমন বিভোর করে রেখেছে যে সে কিছুই শুনতে পাচ্ছে না। হঠাৎ যুগলের উঁচু গলা কানে এল, বুধাই পালের ঘাটে নাও ভিড়াই ঠাউরমা?

    স্নেহলতা বললেন, ভেড়া—

    বুধাই পাল। নামটা কোথায় শুনেছে, এই মুহূর্তে মনে করতে পারল না বিনু। ঘুরে ফিরে তার কথাই ভাবতে লাগল সে।

    খালের পাড়ে খানিক পর পরই নারকেল গুঁড়ি দিয়ে ঘাটলা পাতা রয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে যুগল একটা ঘাটে নৌকো থামাল।

    স্নেহলতা বললেন, কাপড়ের একটা গাঁটরি নিয়ে আমার সঙ্গে আয় যুগল।

    লগি পুঁতে নৌকো বেঁধে কাপড়ের বোঝা মাথায় নিয়ে পাড়ে নামল যুগল। তারপর নামলেন। স্নেহলতারা।

    খালপাড়ে ঘন গাছপালার ভেতর দিয়ে পথ। পথটার যেখানে শেষ, সেখান থেকেই কুমোরপাড়া শুরু।

    কুমোরপাড়ার বাড়িগুলো গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে আছে। বাড়ি আর কি, জীর্ণ টিনের চাল আর কাঁচার্বাশের বেড়ায়-ছাওয়া এলোমেলো বিক্ষিপ্ত কতকগুলো ঘর। সেগুলোর আবার দরজা জানালার বালাই নেই। জানালা বলতে কটা ফোকর। দরজাগুলোও ফোকরই, তবে তুলনায় জানালার চাইতে বড়। সারা বছর সেগুলোর ভেতর দিয়ে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা অজস্র ধারায় তাদের করুণা এবং অভিশাপ বর্ষণ করে চলেছে।

    কুমোরপাড়ার সর্বাঙ্গে যে নিদারুণ ঈশ্বর আপন শীলমোহর মেরে রেখেছে তার নাম দারিদ্র।

    মানুষ তার গৃহকে সুসজ্জিত করে তুলবার জন্য যুগ যুগ ধরে সাধনা করে চলেছে। তার ফলেই সৃষ্টি হয়েছে নগর-বন্দর এবং রম্য জনপদের। কুমোরপাড়ার বাড়িগুলোর পেছনে তেমন সুচারু সাধনা, তেমন পরিকল্পনার চিহ্নমাত্র নেই। সেই আদিম যুগের মতো যেখানে সেখানে যেমন তেমন করে মাথা গোঁজার জন্য আস্তানা খাড়া করা ছাড়া আর কোনও গভীর উদ্দেশ্যই খুঁজে পাওয়া যাবে না এখানে।

    জায়গাটা যে কুমোরপাড়া, বলে দিতে হয় না। সারা গায়ে সেটা তার বিজ্ঞাপন মেরে রেখেছে। যেদিকেই চোখ ফেরানো যাক, সমাপ্ত-অসমাপ্ত হাঁড়ি কলসি ছড়িয়ে আছে। কোথাও চাক-ঘর, কোথাও ‘পইত্‌না’ আর গাছের গুঁড়ি কেটে বানানো হাঁড়িকড়ার ছাঁচ। কোথাও বা ‘পুইন’ (এর ভেতর মাটির হাঁড়ি টাড়ি পোড়ানো হয়), কোথাও এঁটেল মাটির পাহাড়।

    কুমোরপাড়ায় স্নেহলতারা পা দিতেই সাড়া পড়ে গেল। হাতের কাজ ফেলে বৌ-ঝিরা ছুটে এল, এল পুরুষমানুষেরা, আর এল কালো কলো মাটি-মাখা এক পাল আধোলঙ্গ ছেলেমেয়ে।

    সবার আগে যে রয়েছে, দেখামাত্র তাকে চিনতে পারল বিনু। সেদিন সুজনগঞ্জের হাটেও একে দেখেছিল। লোকটা বুধাই পাল। খানিক আগে নামটার সঙ্গে তাকে কিছুতেই মেলাতে পারছিল না।

    বুধাই পাল চেঁচিয়ে উঠল, মা জননী আইছে, মা জননী আইছে—

    স্নেহলতা বললেন, তোমরা কেমন আছ?

    সকলের প্রতিনিধি হিসেবে বুধাই পাল বলল, আপনে আর হ্যামকত্তা মাথার উপুর থাকতে মোন্দ থাকনের জো আছে?

    স্নেহলতা তাড়াতাড়ি জিভ কেটে বললেন, আমরা ভাল রাখার কে? ক্ষমতা কতটুকু আমাদের? ভাল মন্দ যা রাখবার তা রাখেন ওপরওলা- বলে আকাশের দিকে দেখিয়ে দিলেন–

    কথাখান ঠিকই মা-জননী, তয় উপুরঅলারে তো চৌখে দেখি নাই। দেখছি আপনেগো—

    বাধা দিয়ে স্নেহলতা বললেন, হয়েছে হয়েছে। রাস্তায় দাঁড় না করিয়ে এখন কোথায় নিয়ে বসাবে চল।

    বুধাই পাল ব্যস্ত হয়ে উঠল, আমি কি আহাম্মক! পথেই খাড়া করাইয়া রাখছি। আসেন মা জননী, আসেন–

    স্নেহলতারা চলতে লাগলেন। জনতা হই হই করতে করতে তাদের সঙ্গ নিল।

    বুধাই পাল সোজা নিজের বাড়িতে এনে তুলল স্নেহলতাদের। উঠোনের তিন কোণে তিনটে বাতাবি লেবু গাছ ছাতা ধরে আছে। ফলে জায়গাটা ছায়াচ্ছন্ন, তার তলায় ক’খানা জলচৌকি পেতে দেওয়া হল। স্নেহলতা বসলেন। কুমোরপাড়ার জনতা তাদের ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকল।

    বুধাই পাল বলল, মা-জননী অন্য বচ্ছর মহালয়ার আগেই আসেন। এইবার কিন্তুক দেরি কইরা আইছেন। ইদিকে নয়া জামা কাপড়ের লেইগা পোলাপানগুলা মাথা খাইয়া ফালাইতে আছে। তাগো ডর, এইবার বুঝিন আপনে কুমারপাড়ার কথা ভুইলা গ্যাছেন। আমি যত বুঝাই হেরা শোনে না।

    জনতার মধ্য থেকে সবাই সায় দিয়ে উঠল, হ হ, পোলাপানগুলা বুঝ মানে না।

    স্নেহলতা বললেন, তোমাদের কথা কখনও ভুলতে পারি? এবার এরা এসেছে, তাই আসতে দেরি হয়ে গেল। বলে সুরমাদের দেখিয়ে দিলেন।

    বুধাই এবং ভিড়ের ভেতর থেকে কেউ কেউ বলল, আপনের ভাগনী, না?

    হ্যাঁ।

    শুনছি ওনারা আইছেন। ভাগনী, ভাগনীজামাই, নাতি-নাতনী–

    হ্যাঁ।

    থাকব তো কিছুদিন?

    হ্যাঁ।

    যামু একদিন দেখতে।

    যেও।

    হঠাৎ বুধাই পাল বিনুকে দেখিয়ে বলে উঠল, আমি এনারে চিনি, জামাইবাবুরেও চিনি। হেইদিন হাটে দেখছিলাম, না?

    বিনু মাথা নাড়ল, হ্যাঁ।

    কথা হচ্ছিল পুরুষদের সঙ্গে। সুরমাদের সম্বন্ধে মেয়েমহলেও কৌতূহল অসীম। চাপা গলায় তারা ফিসফিস করছে, কইলকাতার মানুষ ওনারা

    বড় লোক–

    ক্যামন সোন্দর, দেখছ? ইত্যাদি ইত্যাদি—

    তাদের কথা শুনতে শুনতে আমোদ লাগছিল বিনুদের। স্নেহলতা, সুরমা হাসছিলেন। কখনও এক-আধটা রসালো মন্তব্য করছিলেন।

    হঠাৎ ভিড়ের ভেতর থেকে একটি মধ্যবয়সিনী সামনে এগিয়ে এল। এই বয়সেও তার বড় লজ্জা। নাক পর্যন্ত ঘোমটা টানা, জড়সড় পুঁটলির মতো দেখাচ্ছে তাকে।

    স্নেহলতা বললেন, কে? হলধরের বউ না?

    ঘোমটার তলা থেকে মধ্যবয়সিনী বলল, হ।

    কিছু বলবে?

    হ। আমার মাইয়া বিন্দি চাইর বচ্ছর মাঘ-মন্ডলের বরতো (ব্রত) করছে। হগল বচ্ছরই আপনে আইছেন। এইবার তার বরতো সাঙ্গ হইব। আপনেরে আইতে হইব কিলাম।

    হ্যাঁ হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আসব। সেই মাঘ মাসে তো—

    হ। আমি আগে থাকতে কইয়া রাখলাম।

    চারদিকের জনতাকে দেখে নিয়ে স্নেহলতা শুধালেন, বিন্দি কই? তাকে তো দেখছি না।

    মধ্যবয়সিনী বলল, বাড়ি নাই। খালপারে সেচি শাক তুলতে গ্যাছে।

    একটু নীরবতা।

    তারপর স্নেহলতা বললেন, আর বসতে পারব না, অনেক জায়গায় যেতে হবে। তোমাদের জামাকাপড়গুলো নিয়ে যাও। যুগলকে বললেন, কাপড়ের গাঁটরিটা খোল।

    ছেলেমেয়ে বুড়ো বাচ্চা সবাইকে ডেকে নিজের হাতে নতুন জামাকাপড় দিলেন স্নেহলতা।

    ভিড়ের ভেতর থেকে কে একজন বলল পূজার সোময় আপনে আসেন মা। সারা বচ্ছরে এই একবার ইট্ট নয়া সুতা গায়ে ওঠে। কত আশা বুকে লইয়া যে এই দিনটার লেইগা বইসা থাকি।

    এত জামাকাপড় কেন কেনা হয়েছে, এবার বুঝতে পারল বিনু। আরও বুঝল, রাজদিয়ার ঘরে ঘরে স্নেহলতার অসংখ্য সন্তান। প্রতি বছর পুজোর সময় গরিবের চাইতেও গরিব, নগ্ন শীর্ণ মানুষগুলোকে নতুন পোশকে সাজাতে না পারলে তার সুখ নেই।

    স্নেহলতাকে এই মুহূর্তে রাজ্যেশ্বীরর মতো মনে হতে লাগল বিনুর।

    আরও কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলে সবাই উঠল।

    শুধু কুমোরপাড়াই না, কামারপাড়া, যুগীপাড়া, বারুইপাড়া–নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে কাপড়চোপড় বিলোলেন স্নেহলতা। সমস্ত বছর রাজদিয়ার মানুষগুলো তার জন্য উন্মুখ হয়ে ছিল যেন। যেখানেই স্নেহলতা গেছেন, দু’দন্ড বসেছেন, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সকলের সুখ-দুঃখের খবর নিয়েছেন।

    এই রাজদিয়ার সবখানেই স্নেহলতার জন্য হৃদয় পাতা রয়েছে। তার ওপর দিয়ে পা ফেলে ফেলে স্বর্গের দেবীর মতো তিনি সকলের প্রাণের গভীর অন্তঃপুরে চলে যান।

    ঘুরতে ঘুরতে দুপুর হয়ে গেল। নিটোল পেয়ালার মতো শরতের ঝকঝকে নীল আকাশের ঠিক মাঝমধ্যিখানে সূর্যটা কখন এসে দাঁড়িয়েছে, টের পাওয়া যায় নি।

    এইমাত্র স্নেহলতারা বারুইপাড়া থেকে বেরিয়ে নৌকোয় উঠলেন। আকাশের দিকে তাকিয়ে স্নেহলতা বললেন, ইস, অনেক বেলা হয়ে গেল। এখনও নাপিতপাড়া-আচার্যিপাড়া বাকি আছে। এদিকে বিনু ঝিনুকের নিশ্চয়ই খিদে পেয়ে গেছে। আজ থাক, কাল ওদের জামাকাপড় দিয়ে যাব। চল যুগল, বাড়ি যাই–

    নৌকো এগিয়ে চলল। খানিকটা যাবার পর স্নেহলতা হঠাৎ বললেন, এ পাড়ায় এলাম, ভব’টাকে একবার বরং দেখে যাই। সেই যে ঝিনুককে দিয়ে চলে এল, আর যায় নি। এই ঝিনুক, বাবার কাছে যাবি?

    ঝিনুক মাথা নাড়ল, অর্থাৎ যাবে।

    স্নেহলতার যুগলকে বললেন, ভব’দের ঘাটে নৌকো লাগা।

    ভবতোষদের বাড়িতে আগে আর কখনও যায় নি বিনু। ভবতোষ অবশ্য যেতেও বলেন নি। বিনুর ধারণা ছিল, বাড়িটা আদালতপাড়ার কাছাকাছিই হবে। কিন্তু সে তো বড় রাস্তা ধরে হেঁটে আসতে হয়। নৌকোয় করেও খাল দিয়ে যে আসা যায়, বিনু জানত না।

    ঝিনুকদের বাড়ি আসার কথা তেমন করে কখনও মনে হয় নি বিনুর। তাদের কথা গভীরভাবে কোনওদিন ভাবেও নি সে। তেমন করে ভাববার বয়সও নয় তার। ঝিনুকের মা চলে গেছেন, তার বাবার বিষণ্ণ চেহারা, মেয়েকে তিনি অন্যের বাড়ি ফেলে রেখেছেন, এই সবের জন্য দুঃখ হয়েছে। বিনুর, ঝিনুকের জন্য খানিক সহানুভূতি বোধ করেছে সে। এই পর্যন্ত।

    কিন্তু এই মুহূর্তে ঝিনুকদের বাড়ির কাছাকাছি এসে সেখানে যাবার খুব ইচ্ছে হল বিনুর কেন হল সে নিজেই জানে না।

    একটু পর নৌকোটা যেখানে ভিড়ল সেটা কাঠের তক্তা দিয়ে বাঁধানো ঘাটলা। খাল ধরে আসতে আসতে এইরকম ঘাটলা অনেক দেখেছে বিনু। বুঝেছে দু’ধারে যাদের বাড়ি এইরকম ঘাট পেতে খালটাকে তারা ব্যবহার করে।

    নৌকো ভিড়তেই স্নেহলতা বললেন, তোর আর গিয়ে কাজ নেই যুগল। একটু বোস। আমি ওদের নিয়ে ভবতোষের সঙ্গে দেখা করে আসি। যাব আর আসব।

    যুগল বসে থাকল। বিনুদের সঙ্গে নিয়ে স্নেহলতা ওপরে উঠলেন। কয়েক পা যেতেই ছোট্ট একখানা বাড়ি। তার মেঝে পাকা, চারধারে কাঁচা বাঁশের রং-করা বেড়া, মাথায় নকশা-কাটা ঢেউটিনের চাল।

    স্নেহলতা ডাকলেন, ভব—ভব– ডেকে অবশ্য দাঁড়ালেন না, ভেতরে চলে এলেন।

    ভবতোষ বেরিয়ে আসছিলেন। অবাক হয়ে বললেন, আপনি খুড়িমা!

    স্নেহলতা বললেন, হ্যাঁ, আমি।

    আরও কী জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছিলেন ভবতোষ, সুরমাদের দেখতে পেয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন, আসুন–আসুন। ঘরে চলুন—

    বিনু লক্ষ করল, ভবতোষের চোখমুখ মলিন, দীপ্তিহীন। কপালে কালো কালো ছোপ পড়েছে। দাড়ি গোঁফ কতদিন যে কাটা হয় নি, অযত্নে অবহেলায় সেগুলো বেড়েই চলেছে। চেহারাও আগের চাইতে অনেক খারাপ হয়ে গেছে। কৃশ, করুণ এবং অত্যন্ত অসহায় দেখাচ্ছে তাকে। কিছুটা কুঁজোও যেন হয়ে পড়েছেন, সামনের দিকে ঈষৎ ঝুঁকে হাঁটছেন। পরনে খদ্দরের ময়লা পাজামা আর পাঞ্জাবি।

    একটা ঘরে এনে সবাইকে বসালেন ভবতোষ। আসবাব বলতে এখানে একটা খাট, তার ওপর নোংরা ধামসানো বিছানা। একধারে খানকতক চেয়ার, একটা টেবিল। আর চার-পাঁচটা আলমারি বোঝাই বই। বিনু শুনেছে, ভবতোষ এখানকার কলেজে পড়ান।

    স্নেহলতা বললেন, সেই যে মেয়েটাকে দিয়ে এলে, তারপর থেকে আর দেখা নেই। ব্যাপারটা কী?

    মৃদু গলায় ভবতোষ বললেন, দু’একদিনের ভেতর যাব যাব ভাবছিলাম।

    আমরা এদিকে এসেছিলাম। ভাবলাম তোমার সঙ্গে একবার দেখা করে যাই।

    বেশ করেছেন। কিন্তু–

    ভবতোষের মনের কথাটা যেন পড়তে পারলেন স্নেহলতা। বললেন, আমাদের জন্যে ব্যস্ত হতে হবে না। আমরা এক্ষুনি উঠব।

    ভবতোষ বললেন, আপনার জন্যে ভাবছি না। ওঁরা প্রথম দিন এলেন–

    স্নেহলতা ধমক দিয়ে উঠলেন, ওদের জন্যেও ভাবাভাবি করতে হবে না। একটু থেমে আবার, চেহারাখানা তো চমৎকার দাঁড় করিয়ে ফেলেছ!

    ভবতোষ হাসলেন।

    খাওয়া দাওয়া ঠিকমতো হচ্ছে?

    হ্যাঁ।

    দেখে তো মনে হয়, হচ্ছে না। রসিক সাহার বিধবা বউটা কাজ করছে?

    করছিল। দুদিন হল বেতকায় তার এক বোনের বাড়ি গেছে। থাকবে ক’দিন।

    এ দু’দিন রান্নাবান্না করল কে?

    আমিই করেছি।

    স্নেহলতা রেগে উঠলেন, আমরা কি মরে গিয়েছিলাম? আমাদের ওখানে চলে যেতে পার নি?

    ভবতোষ বললেন, ঝিনুককে দিয়ে এসেছি। তার ওপর আরও ঝাট বাড়াতে ইচ্ছে হয় না।

    এবার এক কান্ড করে বসলেন স্নেহলতা। এমনিতে তার স্বভাব খুব মৃদু, কোমল। জোরে কখনও কথা বলেন না, হাসেন না। এই মুহূর্তে আত্মবিস্মৃত হয়ে গেলেন যেন। স্বভাববিরুদ্ধ চিৎকার করে উঠলেন, পারব না, পারব না তোমার মেয়ের দায়িত্ব নিতে। ঝিনুক থাকল, আমরা চলোম।

    অজান্তে কোথায় আঘাত দিয়ে ফেলেছেন, নিমেষে বুঝতে পারলেন ভবতোষ। স্নেহলতার পা ছুঁয়ে বললেন, আমার অন্যায় হয়েছে খুড়িমা। কাল থেকে দু’বেলা আপনার কাছে গিয়ে খেয়ে আসব। আমাকে ক্ষমা করুন।

    সঙ্গে সঙ্গে স্নেহলতার সব রাগ, অভিমান শান্ত হয়ে গেল। স্নেহের সুরে বললেন, যতদিন রসিক সাহার বউ না আসছে আমার ওখানে খাবে।

    আচ্ছা।

    একটু চুপ।

    তারপর স্নেহলতা বললেন, বৌমার কোনও খবরটবর আর পেয়েছ?

    বিষণ্ণ মুখে ভবতোষ বললেন, না।

    আবার কী জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছিলেন ভবতোষ, এই সময় ফিসফিস করে ঝিনুক বিনুকে ডাকল, এই—এই–

    বিনু খুব মনোযোগ দিয়ে ভবতোষের কথা শুনছিল। এবার মুখ ফিরিয়ে বলল, কী বলছ?

    চল, তোমাকে একটা জিনিস দেখাব।

    কী?

    চলই না।

    একরকম জোর করেই বিনুকে বাইরে নিয়ে এল ঝিনুক।

    বিনু বলল, কী দেখাবে, দেখাও—

    আগে আমাদের বাড়িটা দেখাব। তারপর–

    তারপর?

    সেই জিনিসটা।

    এ ঘর, সে ঘর, ফুলফলের ছোট্ট বাগান–সব দেখানো হলে একটা ছোট্ট ঘরে বিনুকে নিয়ে এল ঝিনুক। এখানে হাতল-ভাঙা সাইকেল, ছেঁড়া তোষক, ভাঙা আলুর পুতুল, সংসারের যাবতীয় বাতিল জিনিস স্তূপীকৃত হয়ে আছে। আবর্জনার তলা থেকে ফ্রেমে বাঁধানো একটা ফোটো বার করে আনল ঝিনুক। ফোটোটা এক তরুণীর। বড় বড় চোখের পাতায়, ঠোঁটে হাসির আলো মাখানো। ছোট্ট কপালের ওপর থেকে ঘন চুলের ঘের। গলায় প্রকাণ্ড লকেটওলা সীতাহার। কপালে সিঁদুরের টিপ।

    ঝিনুক বলল, এই ফোটোটা আমি লুকিয়ে রেখেছি। বাবা জানতে পারলে বকবে।

    বিনু শুধলো, কার ফোটো এটা?

    আমার মা’র। ঝিনুক বলতে লাগল, মা’র সব ফোটো বাবা ফেলে দিয়েছে। খালি এটা পারে নি।

    বিনু একদৃষ্টে ফোটোর দিকে তাকিয়ে ছিল, কিছু বলল না।

    ঝিনুক আবার বলল, জানো, আমার মা চলে গেছে। আর কক্ষনো আসবে না।

    সান্ত্বনা দেবার মতো করে বিনু বলল, আসবে, আসবে—

    ঝাঁকড়া মাথা নেড়ে ঝিনুক বলল, না না, কক্ষনো না—

    একসময় স্নেহলতার গলা ভেসে এল, বিনু, ঝিনুক, কোথায় গেলি রে তোরা?

    তাড়াতাড়ি ফোটোটা আবজর্নার তলায় ঢাকা দিয়ে বিনুকে নিয়ে বেরিয়ে এল ঝিনুক। স্নেহলতা ততক্ষণে বাইরে বেরিয়ে এসেছেন। বললেন, চল চল, অনেক বেলা হয়ে গেছে।

    নৌকোয় করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে বার বার ঝিনুকের মা’র কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল বিনুর। জলের দিকে তাকিয়ে, দু’ধারের পরিচিত দৃশ্যগুলির দিকে তাকিয়ে, বার বার অন্যমস্ক হয়ে যাচ্ছিল সে।

    হঠাৎ সুরমার গলা শোনা গেল, ওইটা কিসের চুড়ো মামী?

    দূরমনস্কের মতো একবার ঘাড় ফিরিয়ে দেখল বিনু, খানিকটা দূরে কিসের একটা ধারাল মাথা আকাশকে বিদ্ধ করে আছে।

    স্নেহলতা বললেন, ওটা গির্জা, লালমোহন সাহেব ওখানে থাকে।

    লারমোরের কথা শুনেও খুব আগ্রহ বোধ করল না বিনু। ঝিনুকের মা’র কথাই করুণ গানের কলির মতো ঘুরে ঘুরে তার মনের ভেতর হানা দিতে লাগল।

    অমন সুন্দর স্নেহময় যাঁর চেহারা, তিনি কেমন করে ঝিনুককে ফেলে চলে গেলেন? হঠাৎ বিনুর মনে হল তার মা-ও যদি এরকম তাকে ফেলে চলে যেতেন? পরক্ষণে সে ভাবল, তার মা কখনই এমন নিষ্ঠুর হবেন না।

    ঝিনুকের জন্য এতদিন দুঃখ বোধ করেছে বিনু, আজ অসীম মমতায় তার মন ভরে গেল।

    দূর আকাশের পট থেকে গির্জার চুড়ো ততক্ষণে মুছে গেছে।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleশতধারায় বয়ে যায় – প্রফুল্ল রায়
    Next Article আলোর ময়ুর – উপন্যাস – প্রফুল্ল রায়

    Related Articles

    প্রফুল্ল রায়

    আলোর ময়ুর – উপন্যাস – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    শতধারায় বয়ে যায় – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    উত্তাল সময়ের ইতিকথা – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    গহনগোপন – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    নিজেই নায়ক – প্রফুল্ল রায়ভ

    September 20, 2025
    প্রফুল্ল রায়

    ছোটগল্প – প্রফুল্ল রায়

    September 20, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025
    Our Picks

    দারোগার দপ্তর ৩ – প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়

    September 22, 2025

    আরব জাতির ইতিহাস – ফিলিপ কে. হিট্টি (অনুবাদ : প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ)

    September 22, 2025

    নিউ মুন – স্টেফিন মেয়ার

    September 22, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.