Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    কোজাগর – বুদ্ধদেব গুহ

    বুদ্ধদেব গুহ এক পাতা গল্প561 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    কোজাগর – ২৮

    ২৮

    বাতাসে একটা রুখু রুখু ভাব। পাতা ঝরতে শুরু করবে কিছুদিন ক’দিন পর। গরিব গুবরো মানুষরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বাঁচবে। শীতে বড় কষ্ট পায়। তবে উড়িষ্যার জঙ্গলের মতো গরিব নয় এরা।

    একবার উড়িষ্যার অংগুল ডিভিশানে মহানদীর পাশের পুরুনাকোটটুম্বকা লবঙ্গী এবং অন্যান্য নানা জঙ্গলে গিয়ে থাকতে হয়েছিল মালিকেরই কাছে। বাঁশের নয় : কাঠের কাজে। ঐ অঞ্চলে যত বড় বড় সেগুন গাছ দেখেছিলাম তেমন বোধহয় আসামের ও ডুয়ার্সের কিছু কিছু জায়গা এবং মধ্যপ্রদেশ ছাড়া দেখা যায় না। আর দেখেছিলাম বাইসন এবং শম্বর। অতবড় বাইসন ও শম্বর আমাদের এইসব এলাকায় দেখাই যায় না। একটা বাইসন দেখেছিলাম, তার গায়ের কালো রঙ বয়সের ভারে পেকে বাদামি হয়ে গেছে! দেখে মনে হয়, কোনো প্রাগৈতিহাসিক জানোয়ার। মন্থর তার পদক্ষেপ, ঘোলাটে তার দৃষ্টি। অরণ্য-পৃথিবীর কোনো ঘটনাই তাকে আর পীড়িত বা আনন্দিত করে না বলে মনে হয়েছিল।

    মানিয়া আমগাছতলায় মাদুর পেতে বসেছিল। মুঞ্জরীকে দেখা যাচ্ছে না। নিশ্চয়ই ঘরের মধ্যে রান্নায় ব্যস্ত। বুলকি আর পরেশনাথ ক্ষেতে কাজ করছে। বসন্তের মিষ্টি রোদে চারদিকের মাঠ, টাঁড়, বন প্রান্তর ভরে গেছে। এদিকে-ওদিকে পাহাড়ে-ঢালে একটি দুটি করে অশোক শিমুল আর পলাশের ডালে ডালে পহেলী ফুল তাদের ফুটি-ফুটি লজ্জায় লাল মুখ বের করেছে সবে। আর মাসখানেকের মধ্যেই চারদিকে লালে লাল হয়ে যাবে। বনবাংলোর হাতার সব ক’টি কৃষ্ণচূড়া আর রাধাচূড়ার ডালে লাল হলুদ বেগুন সামিয়ানা বাঁধবেন প্রকৃতি নিজে হাতে। কোনো কামার্তা অবুঝ যুবতীর শরীর-মনের সব ঝাঁঝ ঠিকরে বেরুবে তখন প্রকৃতির মধ্যে থেকে। তারপর প্রেমের বারি নিয়ে আসবে বর্ষা। বসন্তে ঋতুমতী প্রকৃতি বর্ষার ঔরসে অভিষিক্ত হয়ে সুধন্যা করবে নিজেকে! তখন মাটিতে লাঙল দেবে ওরা। ক্ষেতে লাঙল দেওয়ার মধ্যে বোধহয় এক ধরনের প্রাগৈতিহাসিক যৌনতা আছে, যেমন শেকস্পীয় বলেছিলেন—”Ceaszar ploughed Cleopetra…”। লাঙলটা পৌরুষের প্রতীক, আর মাটি, প্রকৃতি হচ্ছে নারীত্বের প্রতীক। এতসব মানিয়া জানে না। কিন্তু বই-পড়া বিদ্যার চেয়েও অনেক গভীর ও তাৎপর্যময় বিদ্যা আছে মানির মতো একজন সাধারণ অশিক্ষিত বন-পাহাড়ের মানুষের। সহজাত শিক্ষা, যুগযুগান্ত থেকে পূর্ব-পুরুষদের মুখে মুখে ও ব্যবহারে পরিশীলিত হয়ে আসা এক আশ্চর্য দেশজ শিক্ষা। সেটাকে কখনওই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নিজে যতই গরিব হোক না কেন, অতিথি জল চাইলে যে তাকে শুধু জল দেওয়া যায় না, সঙ্গে একটু ভেলি গুড় দিতে হয় এবং তাও না থাকলে নিদেনপক্ষে একটু শুকিয়ে-রাখা আমলকী, এটা পুরোপুরিই ভারতীয় সংস্কৃতি। এ সংস্কৃতি আজ আর শহরে বেঁচে নেই। আসল ভারতবর্ষ এখনও বেঁচে আছে মানি-মুঞ্জরীদের সংস্কারে, ব্যবহারে, নম্র শালীনতায়, আর ভগবৎ-বিশ্বাসে। একজন সাধারণ, অতি-গরিব, তথা-কথিত শিক্ষায় অশিক্ষিত গ্রামীণ ভারতীয়র মতো ভালো ও সৎ মানুষ পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে বোধহয় পাওয়া ভার। শিক্ষা বলতে আমরা যা বুঝে এসেছি এতদিন, তা ইংরিজি শিক্ষা। যে শিক্ষায় ইংরেজরা আমাদের শিক্ষিত করে গেছে এবং যে-শিক্ষার গর্বে আমরা এইসব মানুষদের অশিক্ষিত বলে ঘৃণা করে এসেছি, আসলে সেটা আদপে শিক্ষাই নয় হয়তো। সেদিন রথীদার কাছে একটা বই দেখলাম। লর্ড ওয়াভেল, ভারতের গভর্নর জেনারেল, ইংল্যান্ডের রাজা জর্জ দ্য সিক্সথকে তাঁর ফেয়ারওয়েল লেটারে লিখেছেন : Education is the field where we have done worst in India, I believe, because we have provided education for the mind only and not the character. As a result the average educated Indian has little character and no discipline. They will have to learn both if they are ever to become a nation.

    চরিত্র বা জাতীয় স্বাতন্ত্র্য বলতে যা বোঝায়, তেমন স্বতন্ত্র কিছুই গড়ে ওঠেনি স্বাভাবিক কারণেই। দেশের মানুষের যে রকম চরিত্র থাকলে দেশকে ভিয়েতনাম করে তোলা যায়, অথবা দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে গুঁড়ো হয়ে যাওয়া জার্মানি বা জাপানের মতো নতুন করে গড়ে নেওয়া যায়, আমি সেই চরিত্রর কথা বলছি। যাঁরা এদেশে ইংরিজি শিক্ষা চালু করেছিলেন, তাঁদেরই এক প্রতিভূ দুশো বছর পরে স্বীকার করলেন যে, ইংরিজি শিখিয়েছি বটে, কিন্তু চরিত্রসম্পন্ন মানুষ বলতে যা বোঝায়, তা তৈরি করতে পারিনি আমরা। তারা তো করেননি, হয়তো তাঁদের নিজেদেরই স্বার্থসিদ্ধির জন্যেই। কিন্তু আজ এত বছর দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও প্রকৃত শিক্ষা বলতে যা বোঝায়, সেই শিক্ষায় শিক্ষিত ভারতীয় চরিত্রের মানুষ ক’জনই বা দেখতে পাই আমরা?

    মানি গর্বের চোখে চেয়ে ছিল পরেশনাথের দিকে। তার বংশধর। মুখে আগুন দেওয়ার জন্য। বুড়ো বয়সের প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, লাইফ ইনস্যুরেন্স। এত সব মানি বোঝে না—কিন্তু মানির মনে এই মুহূর্তে যে ভাবনা স্থির হয়ে এই রোদ্দুরের মতোই উষ্ণতায় ভরে দিচ্ছিল তাকে, তা অনেকটা এইরকমই। দেখতে দেখতে তার ব্যাটা জোয়ান হবে। তার কাঁধ থেকে কাজের জোয়াল তুলে নিয়ে তাকে মুক্ত করবে। বউ আনবে ঘরে। ছেলে বউ-এর সেবা খেয়ে, বুড়ো বয়সে রোদে বসে, ছানি-পড়া চোখে, দূরের চিরচেনা পাহাড়-জঙ্গলের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে এক গভীর একান্ত পরিপূর্ণ ভারতীয় সুখে সে একদিন চোখ বুজবে। মৃত্যুও যে কত শান্তির, কত আশ্বাসের, কত স্বাভাবিক, তা এইসব মানুষই জানে। যাদের পৈতৃক সম্পত্তি নেই, কিন্তু দায় আছে, যারা বাবার ব্যাঙ্কের টাকা ও বাবার সম্পত্তির জোরেই বাবাকে ভালোবাসেনি কোনোদিন, নিছক বাবা বলেই বেসেছিল, যারা পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে পারিবারিক সারল্য, নম্রতা ও শ্রমের ক্ষমতা ছাড়া আর কিছুই চায়নি, পায়ও নি, সেই গ্রাম-জঙ্গলের ভারতবাসীরাই একমাত্র তা জানে।

    দূর থেকে মানি আমাকে দেখতে পেয়েই, উঠে বসার চেষ্টা করল, কিন্তু উঠতে পারল না। পারার কথাও নয়। মানি যে বেঁচে গেছে এ যাত্রা, তা ওর অশেষ সৌভাগ্য। দুপুরবেলা চুরি করে কাঠ কাটতে গেছিল ও হুলুক্ পাহাড়ের নীচে। সেখানে বাঘেদের নিরবচ্ছিন্ন মিলন ও প্রজননের সুবিধার জন্যে কারো যাওয়া একেবারেই মানা। ঠিকাদারদের কাজ একটি বিশেষ এলাকাতে পুরোপুরি বন্ধ। সে-কারণে, চুরি করে কাঠ কেটে শুঁড়িপথ দিয়ে বয়ে নিয়ে আসার, এমন ভাল জায়গাও এখন আর নেই। ফরেস্ট গার্ডরাও সেখানে যায় না বিশেষ, এক যারা বাঘেদের হিসাব-নিকাশ রাখে, তারা ছাড়া। তারাও রোজ থোড়াই যায়! পাকদণ্ডী দিয়ে নেমে আসছিল মানিয়া হরজাই কাঠের একটা বড় বোঝা মাথায় করে। হঠাৎ বাঘের গর্জনে থমকে দাঁড়াল ও। বিরক্ত বাঘের গর্জন গভীর বনের মধ্যে নিরস্ত্র অবস্থায় যে মানুষ না শুনেছে তার পক্ষে তার ভয়াবহতা অনুমান করাও অসম্ভব। দিল্লি-মুম্বাই-কলকাতার বিদগ্ধ ওয়াইল্ড- লাইফ-কনসার্ভে-শনের শৌখিন প্রবক্তারা বোধহয় এই মানি বা টেটরা বা অন্যদের কথা একেবারেই ভাবেননি। যেসব মানুষ বাঘেদের সঙ্গেই জন্মায়, বড় হয় এবং মারা যায় তাদের কথা ভাবলে, বাঘ বাড়াতে গিয়ে যে অনেক মানুষের প্রাণ নিধন হচ্ছে আক্ষরিক অর্থে অনাহারে; একথা তাঁরা হয়তো বুঝতে চেষ্টা করতেন। এ এক আশ্চর্য দেশ! বড় বড় শহরের বাসিন্দাদের অ্যানিম্যাল লাভারস্ সোসাইটির সদস্যরা পথের কুকুরের পশ্চাৎদেশে কেউ লাথি মারলে সেই শোকে কেঁদে কঁকিয়ে মরেই যান অথচ সেই তাঁরাই ফুটপাথে মানুষ মরে পড়ে থাকতে দেখলে বিচলিত হন না। রাতের পর রাত ক্রমান্বয়ে, দুটি রুটির জন্যে পাশবিকভাবে অত্যাচারিত হতে হতে বীভৎস রোগগ্রস্ত কুকুরীর চেয়েও জঘন্যতর পরিণতিতে কোনো নারী পৌঁছলেও কারো তাতে কিছুমাত্র আসে যায় না। এসব চোখেও পড়ে না আমাদের। জানোয়ারদের, তা সে গৃহপালিতই হোক, আমি কারো চেয়েই কম ভালোবাসি না, কিন্তু মানুষদেরও যে ভালো না বেসে পারি না। তাই-ই এই বিরাট ক্রিয়াকাণ্ডে যখন এদের কথা একেবারেই ভাবা হয় না তখন এক প্রচণ্ড আক্রোশ হয়। এ রকম ছিলাম না আমি। জঙ্গলে পাহাড়ে যৌবনের প্রায় পুরোটাই কাটিয়ে আমার সম্পূর্ণ অজান্তেই আমি হয়তো বাঘের মতোই রাগী হয়ে উঠেছি আস্তে আস্তে। এই রাগ আমাকে কোথায় ঠেলে নিয়ে যাবে জানি না। উত্তর কলকাতার একটি অন্ধকার ছোট্ট ভাড়াটে ফ্ল্যাটে বৌ-বাচ্চা নিয়ে ইংরিজি বাংলা খবরের কাগজে দেশের অগ্রগতির খবর পড়ে সাদামাটা আত্মতুষ্ট মধ্যবিত্ত জীবন হয়তো সহজেই কাটাতে পারতাম। কিন্তু তা যখন পারিনি, অথবা হয়নি এবং নিজের অজান্তে যখন আমি এই মানি-মুঞ্জরী, বুলকি-পরেশনাথ, টেটরা, তিতলি ও নানকুদেরই একজন হয়ে পড়েছি তখন এদের কথা না ভেবেই বা কী করি? রাগ হলে, এক অন্ধ আক্রোশ বোধ করলে, নিজের মধ্যে এক ভীষণ যন্ত্রণা হয়। যেটা আমার মধ্যবিত্ত নির্বিবাদী মানসিকতার পক্ষে মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। কিন্তু কী করি….

    বাঘের গর্জন শুনে মানি থমকে দাঁড়ানোর পরই ডান চোখের কোণে দেখতে পেল যে, ডানদিকে দুটি ‘ছোট বাঘের বাচ্চা শুকিয়ে-যাওয়া নদীর বুকের গেরুয়া বালিতে গাছের ছায়ায় শুয়ে আছে। বাঘিনী উঠে দাঁড়িয়ে গর্জন করতে করতে তার দিকে দৌড়ে এসেই থেমে গেল। মানিয়া ছোটবেলা থেকেই জঙ্গলে মানুষ। বাঘিনী যে তাকে এক্ষুণি চুমু খেতে চাইছে না, এ কথা সে বুঝতে পারল; কিন্তু বাঘিনী তখনও ভয় দেখাচ্ছিল। যা বাঘিনীর প্রথম হরকৎ, মানিয়া তাতেই প্রয়োজনের চেয়েও অনেক বেশি ভয় পেয়ে কালবিলম্ব না করে কাঠের বোঝার নৈবেদ্য বাঘিনীরই পায়ের কাছাকাছি ধপ্পাস্ করে ফেলে দিয়ে বাঘিনীর দিকে চোখ রেখে আস্তে আস্তে পিছন হটে আসতে লাগল। বাঘিনী তখনও তার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে মাথা নিচু করে ফ্ল্যাগস্ট্যান্ডের মতো লেজটা নাড়াতে নাড়াতে গর্র্—গর্র্ করছিল। মানিয়া যখন বুঝল যে, অলক্লিয়ার, এবার সে বাড়ি বলে দৌড় লাগাতে পারে; ঠিক তখনই পিছন ফেরা অবস্থায়ই সে পড়ে গেল একাট কাঁটা-ঝোপে ভরা নালাতে। নালাটা ফিট-দশেক গভীর ছিল। নীচে জল ছিল সামান্যই; পাথর ও বালির উপরে পড়ল মানিয়া। মানি ওখানে পিছন ফিরে উল্টে পড়তেই সেই ঝোপের ভিতর থেকে একদল তিতির তিতর তিতর্ তিতর্ করতে করতে সাঁই সাঁই করে তিরের বেগে চতুর্দিকে উড়ে গেল। অজ্ঞান হয়ে গেল মানি। তার দুচোখ ভরা দিনের আলো প্রথম লাল হয়ে, তারপর হলুদ হয়ে, অবশেষে নিভে গেল। হঠাৎ বাঘের হাত থেকে বাঁচল ঠিক, কিন্তু মরতেও বসল। মানির কপালদোষে ঠিক সেদিনই দু’জন ফরেস্ট গার্ড বাঘেদের রোল’কল করবার মহৎ উদ্দেশ্যে ঐ জঙ্গলে গিয়ে, দু’বোতল মহুয়া সেবন করে কিছু দূরেই দিব্যি একটি বড় বয়ের গাছের ছায়ার নীচে শুয়ে সুখের দিবানিদ্রা দিচ্ছিল। তারা অতর্কিতে বাঘের গর্জন শুনে ঘুম-ভেঙে লাফিয়ে উঠল। বাঘ যে নিজেই প্রেজেন্ট স্যার করতে আসবে তাদের কাছে, এতটা বোধহয় তারা আশা করেনি। তাড়াতাড়ি কাছাকাছি একটা বড় গাছে চড়ে ব্যাপারটা সরেজমিনে তদন্ত করতে চাইল ওরা এবং নদীর বুকের বাঘিনী ও বাচ্চাদের এবং কাছেই নালার মধ্যে মানিকেও পড়ে থাকতে দেখল। বেলা পড়ে আসছিল। একটু পরে বাঘিনী বাচ্চাদের নিয়ে নদীর গভীরে অন্যদিকে সরে গেল।

    গার্ড দুজন মানির কাছে গিয়ে তাকে তুলল। ততক্ষণে মানির জ্ঞান ফিরে আসছে। চুমু খেতে চাওয়া বাঘিনীর হাত থেকে ছাড়া পেয়ে যে মুখব্যাদন করা খাকি পোশাক পরা একজোড়া গুঁফো বাঘের খপ্পরে পড়বে এমন কথা সে দুঃস্বপ্নেও ভাবেনি। একবার চোখ খুলেই মাঈরে বলে মানি আবার অজ্ঞান হয়ে গেল। গার্ড দু’জন দশটা টাকা চেয়েছিল। কোথায় পাবে সে টাকা মানি? অতএব পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের আইনের প্রতিভূ হিসেবে মহামান্য ফরেস্ট গার্ডরা মানিয়ার বিরুদ্ধে দুটি কেস্ ঠুকে দিল! এক নম্বর কেস্, কোর-এরিয়ার মধ্যে ঢুকে বাঘেদের বেডরুমের প্রাইভেসি ডিস্টার্ব করেছে মানি, এই অপরাধে। দু’নম্বর কেস্, খাস জঙ্গল থেকে সে বিনানুমতিতে কর ফাঁকি দিয়ে এবং আইন অমান্য করে এক বোঝা জ্বালানি কাঠ সংগ্রহের চেষ্টা করেছে। এত বড় চোর এবং আইন ফাঁকি দেওয়া এমন মারাত্মক অপরাধী ও কৃতঘ্ন লোক এই মহান জনগণের গণতন্ত্রে চোখেই পড়ে না সচরাচর!

    মানির কোমরে খুবই চোট লেগেছিল। তার ওপর গার্ড সাহেবরা ভালোমতো উত্তম-মধ্যমও দিয়েছিল। প্রথম ক’দিন শুয়েই ছিল। গাড়ু থেকে ওঝাকে নিয়ে এসেছিল রামধানীয়া চাচা। রোজ সেঁক-তুক্ হচ্ছে। এখন একটু ভালো। জ্বর আসে না এখন। বসে থাকতে পারে, হেলান দিয়ে। ওঝা বলেছে, ওর পশ্চাৎদেশে নাকি বাঘিনীর দৃষ্টি লেগেছে। ওর পশ্চাৎদেশ কখন যে বাঘিনীর নজরে এল, তা নিয়ে আর বেশি ভাবাভাবি করেনি মানিয়া। ওঝা বলেছে, ভালো হয়ে গেলেও একটু কুঁজো হয়ে হাঁটতে হবে মানিকে বেশ কিছুদিন। বুক কোমর টানটান করে হয়তো আর কখনও দাঁড়াতে পারবে না। কবেই বা কার সামনে বুক কোমর টান-টান করে দাঁড়িয়েছিল জন্মের পর থেকে? ভাবে মানি! সারাজীবন তো মাথা ঝুঁকিয়েই কাটিয়ে দিল, সেলাম হুজোর, পরর্ণাম মালিক করে। মানির মতো গরিবরাই জানে মালিকদের এবং সংখ্যা। অন্যে তা কখনও বুঝবে না।

    সেদিন আমি যেতেই, মানি দোষীর মতো মুখ করে বলল, দুধ দিতে তোমার বাড়ি রোজ দেরি হয়ে যাচ্ছে মালিক। কী করব? মুঞ্জরী একা সবদিক সামলাতে পারে না। পরেশনাথটা বড় হয়ে গেলে…..

    বললাম, আর তো অল্প ক’টা দিন। দেখতে দেখতেই বড় হয়ে যাবে।

    গলাটা নামিয়ে বলল, জানো মালিক, একটা ভালো খবর আছে। বুলকিকে দেখে মহুয়াডারের এক দোস্ত পছন্দ করেছে। তার ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেব সামনের শীতে। তারপর গওনা হলে, চলে যাবে শ্বশুরবাড়ি। কথা ক’টি বলতে বলতে স্নেহমাখা চোখে দূর ক্ষেতের মধ্যে কাজ করতে থাকা বুলকির দিকে চেয়ে রইল মানিয়া। বুলকি দু’পা দু’দিকে ছড়িয়ে মাথা ঝুঁকিয়ে জমি নিংড়াচ্ছিল। আগাছা হয়েছে জমিতে অসময়ে। ওর তেল-না-পড়া বাদামি চুলে ফিকে সোনালি রোদ জমে ছিল। নানারকম পাখি ডাকছিল চারদিক থেকে। রোদেরও একটা গা ছম্ছম্ আওয়াজ আছে। হাওয়ার তো আছেই। আর তার সঙ্গে নানান্ পাখির ডাক মিলেমিশে চারধারে এখানে যেন সবসময় একই সঙ্গে বহু-চ্যানেলে বাজনা বাজে। যার যার যে রকম ভালোলাগা, সে তার খুশির চ্যানেলে, সেইসব শুনবে। আর নেবে গন্ধ। এখন সবে সকাল দশটা। প্রকৃতি এখনও চান করে নি। চান করতে যাবার আগে ভাঁড়ার ঘরে, রান্নাঘরে ব্যস্ত থাকা নারীর শরীর যেমন একরকম মিষ্টি ঘাম আর নোন্তা ক্লান্তি গন্ধে ভরে যায়, ঠিক তেমন গন্ধ এখন।

    মুঞ্জরী ঘর থেকে বেরিয়ে আমাকে শুধোল, কী খাবে মালিক?

    এমনই ভাবটা, যেন বললেই ও আমাকে জাফ্রান দেওয়া বিরিয়ানি পোলাউ আর খাসির, চৌরি, চাঁব, পায়া, কাবাব সবই বানিয়ে খাইয়ে দেবে।

    এক্ষুনি নাস্তা করে এলাম। কিছু খাবো না।

    দেখলাম মুঞ্জরীর জামাটা ছিঁড়ে গেছে! শাড়িটাও বহু জায়গাতে ছেঁড়া। বারবার টেনে টুনে নিজের লজ্জা ঢাকছিল। ওর এই শালীনতার প্রাণান্তকর চেষ্টা দেখে নিজেই লজ্জিত হয়ে অন্যদিকে চেয়ে বসে রইলাম।

    হঠাৎ যে এলে মালিক?

    হঠাৎ কী? দুধের দাম দিতে এলাম। মানিটাও পড়ে আছে। দেখতে আসা উচিত ছিল আগেই। খরচাপত্র আছে তোমাদের? তোমরা পঞ্চাশটা টাকা রাখো।

    কেন? কেন? কা হে মালিক?

    মুঞ্জুরী আর মানিয়া সমস্বরেই বলে উঠল।

    তারপর মুণ্ড্রী বলল, দুধের দাম তো মোট দশ টাকা।

    তা হোক। মানির ঝাড়ফুঁকের খরচ আছে, তোমার একটা শাড়ির দরকার। বলেই, জোর করেই টাকাটা দিলাম। শাড়ির কথাটা তুলতেই মুঞ্জুরী শাড়ি সম্বন্ধে আবারও সচেতন হয়ে উঠল। আমার অযাচিত অপ্রত্যাশিত সহমর্মিতায় কিছুটা অভিভূতও হয়ে পড়ল। এসব ওরা তো দেখে নি, দেখে না বেশি। খারাপ দেখে দেখেই জীবন কেটেছে ওদের। কিছু ভালো দেখলে, তাই সন্দেহ হয়, স্বাভাবিক কারণেই ভাবে, মতলবটা কী?

    ওর আরও কিছু বলতে যাওয়ার আগেই বললাম, আরও কারণ আছে। আমি কাল থেকে এখানের বাচ্চাদের জন্যে একটা স্কুল করেছি আমার বাড়িতে। রোজ সকালে আটটার সময় স্কুল বসে—আটটা থেকে দশটা অবধি। হিন্দি, ইংরিজি একটু একটু আর যাতে হাটে গেলে হিসাব রাখতে অসুবিধা না হয়—তেমন মামুলি অঙ্ক।

    মুঞ্জরী বলল, বাঃ বাঃ।

    পরক্ষণেই ওর মুখ অন্ধকার হয়ে এল। বলল, কিন্তু মাইনে কত?

    মাইনে নেই। মাইনে আবার কীসের? আমার সময় আছে, সময় নষ্ট হয়। তাই, ভালো কাজে লাগাব ঠিক করেছি। আমার কী-ই বা বিদ্যা বুদ্ধি, কিন্তু তোমাদের এতেই হয়তো চলে যাবে।

    মানি সোজা হয়ে বসার চেষ্টা করল। ওর চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। বলল, পরেশনাথ তোমার স্কুল থেকে গিয়ে শহরের স্কুলে ভর্তি হতে পারবে? আমাদের জাতের জন্যে রিজার্ভ-সিট আছে তাতে পরীক্ষা দিয়ে পুলিশ সাহেব, ম্যাজিস্টর সাহেব হতে পারবে? নানকু বলছিল যে, পারবে। কী মালিক?

    পারবে না কেন? নিশ্চয়ই পারবে। সারা দেশে কত ভারী ভারী অসর আছেন সব তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিদের। তারা কত সব দায়িত্বপূর্ণ কাজ করছেন কত ডিপার্টে। শুধু পুলিশ সাহেব, ম্যাজিস্টর সাহেব? কী বলছ তুমি? জাত আবার একটা বাধা নাকি? অনেকদিন আমরাই তোমাদের কোনো সুযোগ দিইনি। সুযোগ প্রথম থেকে পেলে কত ভালো হতো। বুঝলে মানি, আসল ভাগ মাত্র দুটো। মানুষ আর অমানুষ। তোমাদের পাগলা সাহেব অবশ্য বলেন আরও অন্য একটা জাত আছে।

    কী জাত? সরল মনে মানি শুধালো।

    পাগলা সাহেবকে জাতের কথা জিজ্ঞেস করলে বলেন যে, উনি বজ্জাত।

    মানি আর মুঞ্জরী হো-হো করে হেসে উঠল।

    বলল, পাগলা সাহেব ভগবান।

    আচ্ছা, পরেশনাথ যে এতদিন পড়াশুনা করল না—অনেকই তো পিছিয়ে পড়েছে, তাই না?

    এমন কিছু না। ওর বয়সই বা কত? সাত-আট হবে।

    কিন্তু ও যখন স্কুলে পড়বে, তখন আমাকে দেখবে কে? আমি তো প্রায় থেমে এসেছি। আমার কাজ কে চালাবে? কী খাবো আমরা? মুঞ্জরীও তো মাঝবয়সি হয়ে গেল।

    তা কষ্ট করলেই না কেষ্ট পাবে। তাই না?

    মানি দু’হাতের পাতা নাড়িয়ে সাধু-সন্তদের মতো বলল, তা তো ঠিকই। কষ্ট না করলে কী করে কী হবে? তারপরই তুলসীদাস আওড়ে বলল,

    সকল পদারথ হ্যায় জগ্‌মাহী
    কর্মহীন নর পাওয়াত্ নাহি।

    বলেই, কেমন উদাস হয়ে গেল। দূরে চেয়ে রইল।

    হঠাৎই মুঞ্জরী চিৎকার করে উঠল; পরেশনাথ আর বুলকি ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে আবারও শর্টকাট করছে। খেতে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ফসল থাকে—তাতে তাদের ভ্রূক্ষেপ নেই। ফসল যাই-ই থাকুক ওরা তার মধ্যে দিয়ে ওদের পায়ে চলা পথ বানিয়ে যাওয়া-আসা করবেই। কখনও কথা শুনবে না। মারধর বকা-ঝকা কিছুতেই কিছু হবার নয়।

    ধমক খেয়েই, কোটরা হরিণের মতো দুজনে দুদিকে লাফিয়ে উঠে ছিটকে গিয়ে ক্ষেতের অন্য পারে পৌঁছে মুহূর্তের মধ্যে বনপথে হারিয়ে গেল।

    মানি বলল, ওরা গেল কোথায়?

    মুঞ্জরী বিরক্ত গলায় বলল, তা ওরাই জানে। দুজনের যে কী ভাব! এমনটি আর দেখা যায় না। এতো কষ্ট ওদের, এতোরকম কষ্ট; কিন্তু দুজনের চিত্তে সুখের অভাব নেই কোনো সময়েই। এখন, মানে মানে বুলকির বিয়েটা…।

    শুনেছেন মালিক?

    হ্যাঁ, মানিয়া বলল।

    বললাম, এবার উঠি। কাল থেকে ওদের তাহলে পাঠিও।

    বুলকির তো বিয়ে হয়েই যাবে। ও মেয়ে। স্কুলে গিয়ে আর কী করবে? তার চেয়ে পরেশনাথকেই পাঠাব। বুলকি না থাকলে আমার কাজকর্মের বড়ই অসুবিধা।

    বেশ। যেমন তোমাদের সুবিধে।

    উঠে পড়ে বললাম মানিয়াকে, তোর কেস্ কী হল রে মানিয়া? ফরেস্ট ডিপার্ট কি সত্যিই কেস্ করল? না কি ফাইন টাইন করে ছেড়ে দেবে?

    ফাইন? না, না, মালিক। ওরা বলছে যে, আমার নির্ঘাৎ জেল হবে। টাইগার পোজেক্‌টোয়ার আইন। যা অন্যায় করেছি, তার কোনো উদ্ধার নেই। এমন খতরনা মামলা নাকি এর আগে হয়নি। আমার মতো অন্যায় নাকি দেশে এর আগে কেউই করে নি। এ দুজন ফরেস্ট গার্ডের পরমোশন হয়ে যাবে আমাকে বামাল ধরার জন্যে। জানি না, কী হবে? এদিকে মাহাতো, ওদিকে এই কেস্, তারপর কোমর সোজা করতে পারি না। হো রাম! রামই জানে, কী হবে।

    বলেই, একটা জোর দীর্ঘশ্বাস ফেলল।

    হাঁটতে হাঁটতে অনেক কথা ভাবছিলাম। দূরে গোদা শেঠের দোকানের মাথায় একটা প্রকাণ্ড বাঁশের ডগায় গাঢ় লাল হনুমান ঝাণ্ডা উড়ছে। এ অঞ্চলে এটাই যেন গভর্নরস্-হাউস অথবা বিধান সভা। শলা-পরামর্শ, মান্যগণ্য মানুষদের যাওয়া-আসা সব। সবচেয়ে উঁচু হয়ে পত্পত্ করে উড়ছে বাতাসে রামভক্ত হনুমানের বিজয়-পতাকা। হা রাম। মানিয়াদের রাম ছাড়া আর কেউই নেই। রাম আর রাম নাম্‌ সত্ হ্যায়।

    ডেরায় ফিরতে ফিরতে ভাবছিলাম কথাটা। মানিয়ার মতো এতবড় চুরি, এতবড় অন্যায় নাকি এ তল্লাটে এর আগে কেউ করেনি। কী তামাশা! পুরো দেশটা কী এক অতল আত্মবিস্মরণের সাংঘাতিক তামাশাতে মেতে রয়েছে। যখন তামাশা শেষ হবে, হাততালি বাজবে পোষা-হাতে চতুর্দিক থেকে তখন দেখা যাবে কাচের স্বর্গ ভেঙে গুঁড়ো হয়ে গেছে। দেনা-পাওনার কিছু নেই আর।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঋজুদা সমগ্ৰ ৫ – বুদ্ধদেব গুহ
    Next Article লবঙ্গীর জঙ্গলে – বুদ্ধদেব গুহ

    Related Articles

    বুদ্ধদেব গুহ

    বাবলি – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্ৰ ১ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্র ২ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্র ৩ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্র ৪ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    অবেলায় – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }