Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    কোজাগর – বুদ্ধদেব গুহ

    বুদ্ধদেব গুহ এক পাতা গল্প561 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    কোজাগর – ২৯

    ২৯

    তিতলি পরশু থেকে কাজে আসেনি। ঋতু পরিবর্তনের সময় এখানে অনেকেরই জ্বর-জ্বারি হচ্ছে। টেটরাও কোনো খবর দিল না দেখে আজ খোঁজ নিতে গেছিলাম ওদের বাড়িতে। তিলদের বাড়ির সামনে দিয়ে অনেকদিন গেছি এ ক’বছরে। কিন্তু কখনওই ভিতরে যাইনি। আজই প্রথম ঢুকলাম। ছোট্ট একফালি উঠোন। জাংলা করা আছে। মৌসুম অনুযায়ী কুমড়ো, লাউ, ঝিঙে, সিম, বরবটি ইত্যাদি লাগিয়ে রাখে ওরা। উঠোনের একেবারে এক কোণায় একটা মস্ত আকাশমণি গাছ। কে লাগিয়েছিল কে জানে? এই গাছগুলোকেই বোধ হয় আফ্রিকান-টিউলিপ বলে। বাড়ির পিছনদিকে বিঘাখানেক জমি। তাও ভাগে চাষ করে। টেটরার নিজের নয়।

    আমার গলার স্বর শুনে টেটরা বেরিয়ে এল।

    বলল, পরর্ণাম বাবু

    বলেই, চৌপাই বের করে বসতে দিল। নিজের মনেই বলল, বড়ী খাটমল। চৌপাইটাতে খুবই ছারপোকা, তাই আমাকে বসতে দিতে লজ্জা করছিল ওর।

    তিতলির কী হয়েছে টেটরা? কাজে আসে নি কেন?

    ও চিন্তান্বিত গলায় বলল, কী যে হয়েছে, তা কী করে বলব বাবু? আমি তো এই বিকেলের বাসেই এলাম। মেয়েটা তিনদিন হল জ্বরে একেবারে বেহুঁশ। আমি গেছিলাম লাতেহার। আমার চাচেরা ভাই মারা গেছে—তার শ্রাদ্ধ। ফিরে এসেই দেখি, এই কাণ্ড।

    জ্বর কত?

    তা দু-কলীর হবে। তিতলির মা একেবারে একা ছিল, ওকে ছেড়ে যেতে পারেনি এক মুহূর্তও, তাইই তোমাকে, কোনো খবরও দিতে পারিনি। আমাদের ডেরাটা তো বস্তি থেকে অনেক দূরে।

    ওষুধ-পত্র খেয়েছে কিছু?

    নাঃ। কাল রাম্‌ধানীরা চাচাকে খবর দেব। ঝাড়-ফুঁক করে দেবে। তাতেও ভালো না হলে, চিপাদোহরে যাব।

    বললাম, তিতলিকে একটু দেখতে পারি?

    কথাটা বলতে আমার এত সংকোচ যে কেন হল, তা নিজেই বুঝতে পারলাম না। কিন্তু বলে ফেলতে পেরে খুবই ভালো লাগল। তিতলি কী-ই-ই না করে আমার জন্যে! আর ওব বেহুঁশ অবস্থাতে ওকে একটু দেখতে যাব না?

    টেটরা প্রথমে খুব অবাক হল। তারপর সামলে নিয়ে বলল, নিশ্চয় নিশ্চয়। কিন্তু বুঝতে অসুবিধা হল না যে, খুবই বিব্রত হল ও! বোধহয় কোথায় বসাবে? ঘরের ভিতর কী করে নিয়ে যাবে? এসব ভেবেই। আমাকে বসতে বলে ভিতরে গেল তিতলির মাকে খবর দিতে। একটু পরে এসে বলল, আসুন বাঁশবাবু, ভিতরে আসুন।

    বাইরে তখনও বেলা ছিল। তবে সন্ধে হতে বেশি দেরিও নেই। কিন্তু ওদের ঘরের মধ্যে গভীর রাতের অন্ধকার। খাপ্পার চাল মাটির দেওয়ালে। কোনোদিকে কোনো জানালা নেই। একটি মাত্র দরজা। গরমের দিনে ওরা উঠোনেই চৌপাই বিছিয়ে শোয়। আর শীতের দিনে দরজা বন্ধ করে, ঘরে কাংড়ী জ্বেলে।

    তিতলিরা গরিব আমি জানতাম। খুবই যে গরিব, তাও জানতাম। কিন্তু এতখানি যে গরিব, কখনও তা বুঝতে পারিনি। নিজে এই চরম দারিদ্র্যময় পরিবেশ থেকেও তিতলি যে কী করে আমাকে এমন ঐশ্বর্যে ভরে রাখে অনুক্ষণ তা মনে হতেই বুকের মধ্যে একটা মোচড় দিয়ে উঠল। আমার ভাঁড়ার ঘর, রান্নাঘর সব কিছুর ভারই ওর ওপর। ঐতো আমার ডেরার কর্ত্রী। আমি তো থাকি লাটসাহেবের মতো, ওরই দৌলতে। সত্যি কথা বলতে কী, ওদের ঘরের মধ্যে এই প্রথমবার ঢুকে আমি যে তিতলির মনিব একথা স্বীকার করতে আমার বড়ই লজ্জা হল। আমি জানতাম যে, কর্মচারী দেখেই মালিককে মানুষ বিচার করে। করা উচিত অন্তত কর্মচারীর স্বাচ্ছল্য, তার সুখ-সুবিধা এসব দেখেই। কিন্তু কথাটা যে, আমার নিজেদের বেলাও এমন লজ্জাকর ভাবে প্রযোজ্য সেটা একবারও মনে হয়নি এই বিকেলের আগে। তিতলির মাথার কাছে একটা কেরোসিনের কুপি জ্বলছিল। চৌপাইতে বাঁ কাত হয়ে শুয়েছিল ও; একটা ছেঁড়া কিন্তু পরিষ্কার শাড়ি পরে। আমার ধারণা ছিল ওকে আমি অনেক শাড়ি দিয়েছি, কারণ ও কাজে আসত সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অক্ষত শাড়ি পরেই। কিন্তু বাড়িতে যে ও এইরকম জামা কাপড় পরে থাকে সে সম্বন্ধে আমার কোনো ধারণাই ছিল না।

    ডাকলাম, তিতলি, আমি এসেছি। তিতলি।

    কোনো সাড়া দিল না।

    এদের কাছে থার্মোমিটর নেই। আমার কাছেও নেই। হয়তো রথীদার কাছে আছে। টেটরার হিসেবে দু-কমলীর অর্থাৎ দু-কম্বলের জ্বর ঠিক কতখানি জ্বর তা অনুমান করা আমার পক্ষে দুঃসাধ্য ছিল। তিতলির কপালে এবং গালে ডান হাতের পাতা ছোঁওয়ালাম। ওর গা জ্বরে একেবারে পুড়ে যাচ্ছে। যে মুহূর্তে হাত ওর কপালে ও গালে লাগল, মন বলল, ওর সবটুকু অসুখ আমি শুষে নিয়ে ওকে নীরোগ করি। ওকে ঐ অবস্থায় দেখে মনটা এতই খারাপ হয়ে গেল যে, তা বলার নয়। তিতলির জ্ঞান থাকলে তিতলি কত খুশি হতো। কিন্তু ও জানলোও না যে, আমি এসেছিলাম, ওর মাথার কাছে বসেছিলাম; ওর কপালে হাত ছুঁইয়েছিলাম। সংসারে বোধ হয় এমনই ঘটে! সবসময়ই। যখনই কোনো সুখবহ ঘটনা ঘটে, ঠিক সেই মুহূর্তটিতেই সুখবোধের ক্ষমতা-রহিত থাকি আমরা। ঘর থেকে বেরিয়ে টেটরাকে কিছু টাকা দিলাম রাখতে। তিতলির পথ্য-টথ্যর জন্যে। আমি নিজেও তো বাঁশবাবুই। নিজেরই বা কী সামর্থ্য। তবু তিতলিদের তুলনাতে আমি অনেকই বড়লোক। তিতলিরাও এদেশের অন্য অনেকানেক লোকের চেয়ে বড়লোক। একথা মনে হতেই দমবন্ধ হতে লাগল। ওকে সঙ্গে আসতে বললাম, ওষুধ দেব বলে। ডেরাতে কোডোপাইরিন, কোসাভিল, সেলিন এসব ওষুধ ছিলই। আজকে আর তিতলির জন্যে কিছুই করার উপায় নেই। কাল একটা ট্রাক ফিরবে মহুয়াডার থেকে। সেই ট্রাক ধরে ডালটনগঞ্জ গিয়ে যদি কোনো গাড়ি বা জিপের বন্দোবস্ত করতে পারি। রোশনলালবাবুকে বলে, তাহলে তিতলিকে সঙ্গে করে নিয়ে ডালটনগঞ্জ সদর হাসপাতালে অথবা ডাঃ ভর্মাকে দেখিয়ে আনা যাবে। দরকার হলে, রক্তটক্ত পরীক্ষা করাতেও হবে! ওর শরীরের যা অবস্থা, তাতে ট্রাকে করে এই পাহাড়ী অসমান পথে ডালটনগঞ্জ নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। সবচেয়ে ভাল হয়, ডাক্তার সাহেবকে এখানে নিয়ে আসতে পারলে।

    টেটরা, তিতলির মাকে বলে, আমার সঙ্গেই বেরোল। হাতে একটা কুপিও নিয়ে এল। ফেরার সময় অন্ধকার হয়ে যাবে বলে টাঙ্গিটাও কাঁধে ফেলে নিল সংস্কারবশে। ডেরাতে ফিরে ওকে ওষুধের রঙ্ চিনিয়ে, ভাল করে বুঝিয়ে, আধ শিশি হরলিকস ছিল ঘরে, সেটাও দিয়ে বললাম, এক্ষুণি ফিরে গিয়ে তিতলিকে সঙ্গে সঙ্গে দিতে। দেখলাম, ভাঁড়ারে মুড়ি ও চিঁড়ে আছে, গুড়ও আছে, সবই তিতলিরই সাজিয়ে রাখা। সেগুলোর প্রায় সবটাই একটা চাদরে বেঁধে টেটরাকে দিলাম। টেটরা মুখে কিছু বলল ‘না, কিন্তু তার দু’চোখে অশেষ কৃতজ্ঞতা দেখলাম। নিজেকে বড় ছোট লাগতে লাগল। ভাবছিলাম, মানুষ মনের ধনে কত বড় হলে অত সামান্য জিনিসের জন্যে এতখানি কৃতজ্ঞ হতে পারে। ততক্ষণে বাইরে অন্ধকার নেমে এসেছে। পেঁচারা হাড়দুম্, দুরগুম্, মার্গুম্ লাম, চিৎকারে বাঁকের মুখের ঝাঁকরা বুড়ো অশ্বত্থের ডালপালা সরগরম করে তুলেছিল। একটা টিটি পাখি ডাকছিল টানা টাঁড়ের দিক থেকে—ঝাঁকি দিয়ে দিয়ে। উত্তেজিত স্বরে। কোনো জানোয়ার দেখেছে বোধ হয়। টেটরা বেরোতে যাবে ঠিক এমন সময় ওদের বাড়ির দিকের জঙ্গল থেকে একটা বার্কিং ডিয়ার ডাকতে লাগলো খুব জোরে জোরে। ভয়-পাওয়া ডাক। ক্রমাগত। বললাম, আমার টর্চটা নিয়ে যাও টেটরা। তোমার ঐ কুপি তো হাওয়া উঠলেই নিভে যাবে। কোটরা হরিণটা কোনো কিছু দেখে ভয় পেয়েছে খুব। টেটরা কান খাড়া করে শুনল একটু চুপচাপ। তারপর স্বগতোক্তির মতো বলল, শোন্‌চিতোয়া। আজ বাস থেকে নেমে বাড়ি ফেরার সময়ই, পথের উপর তার পায়ের দাগ দেখেছি। যে শোনচিতোয়াটা লালুকে নিয়েছিল, সেটাই হবে হয়তো। নাও হতে পারে। কত শোনচিতোয়াই তো আছে এই জঙ্গল-পাহাড়ে। ব্যাটা বোধহয় আবার কারো কুকুর-টুকুর ধরার মতলবে আছে। বললাম, সাবধানে যেও টেটরা। ও হাসল। বলল, আমি তো লালু নই। আসলে, মানুষদের কোনোই ভয় নেই। জানোয়ারেরা জানে যে, সবচেয়ে খতরনাগ্ জানোয়ার হচ্ছে মানুষ। তাই মানুষ দেখলেই পথ ছেড়ে ওরা পালায়। যত বীরত্ব ওদের সব কুকুর-মুকুরের কাছেই।

    যাও যাও আর কথা বলো না। ওষুধটা তাড়াতাড়ি দাও গিয়ে তিতলিকে। টর্চটা আমাকে ফেরত দিয়ে টেটরা বলল, যাই। ওষুধটা পড়লে তারপর। আসলে, আমি যদি লাতেহারে চলে না-যেতাম, তাহলে হয়তো অসুখটা এতখানি বাড়তেও পারত না। যেতে যেতেও দাঁড়িয়ে পড়ে বলল, তিতলিটা বেহুঁশ। কত না খুশি হতো তুমি এসেছিলে জানলে।

    কাল ভোরেই ট্রাক ধরে ডালটনগঞ্জ যাচ্ছি। ডাক্তার নিয়ে আসব, নয়ত সেখান থেকে গাড়ি বা জিপ নিয়ে এসে তিতলিকে নিয়ে যাবার বন্দোবস্ত করব। কোনো চিন্তা কোরো না তুমি

    টেটরা হাত জোড় করে আমাকে নমস্কার করল। বলল, পরর্ণাম বাবু। আপনার মতো মালিক পেয়েছে, তিতলির নসীব ভালো। তারপর টাঙ্গির সঙ্গে চিঁড়ে-মুড়ি -গুড়ের থলে ঝুলিয়ে ও বেরিয়ে পড়ল।

    দুপুরে গাড়ুর রেঞ্জার সাহেবের বাড়িতে জবরদস্ত খাওয়া হয়েছিল, খুব দেরি করে। তাই একেবারেই খিদে ছিল না। চান করে পায়জামা-পাঞ্জাবি পরে লণ্ঠনটা টুলে রেখে, ইজিচেয়ারে গা এলিয়ে একটা বই নিয়ে বারান্দাতে বসলাম। এখনও সন্ধের পর ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব থাকে। এরকমই চলবে, এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত। তারপর ঝুপ করে গরম পড়ে যাবে। বইটাতে বুঁদ হয়ে ছিলাম। কতক্ষণ সময় কেটে গেছে খেয়াল হয়নি। কোনো কোনো দিন এখানে সময় বড় নীরবে চলাফেরা করে। নির্লজ্জ সশব্দ গতি নেই তার আজ রাতে। সে যে খুব দামি, এমন কোনো জাঁকও নেই তার এই ভালুমারে। লণ্ঠনটা দুবার হঠাৎ দপদপ্ করেই নিভে গেল। বিরক্তির সঙ্গে বইটাকে কোলের ওপর রাখলাম। এতক্ষণ আলোর সামনে বসেছিলাম, তাই হঠাৎ অন্ধকার হয়ে যাওয়াতে অন্ধকারটাকে ঘোরতর বলে মনে হল। কৃষ্ণপক্ষ চলছে। কিন্তু এখানে অন্ধকারও। সচল আকাশে তারারা অনেকই আলো ছড়ায় চাঁদ না থাকলে।

    শীতকালের অন্ধকার কিন্তু একেবারে অন্যরকম। জমাট বাঁধা স্তব্ধ; অনড়। চোখের জলে মেশা কাজলের মতো। কিন্তু গরমের রাতে হাওয়া বয় বলে ঘাস-পাতা ডাল-পালা আন্দোলিত হতে থাকে। অন্ধকারে, তাদের অন্ধকারতর ভূতুড়ে ছায়াগুলো নড়াচড়া করতে থাকে ক্রমাগত; তাই তখন মনে হয়, অন্ধকারেরও একটা গতি আছে। গতি না থাকলেও একই জায়গায় দাঁড়িয়ে গ্রীষ্মরাতের হালকা অন্ধকার নড়ে-চড়ে হেলে দুলে দূরের ভারী অন্ধকারকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। এক ইশারায় ডাকে অন্য অন্ধকারকে। কিছুক্ষণ চুপ করে তারাভরা আকাশে চেয়ে বসে রইলাম। কুঁড়েমি লাগছিল তক্ষুণি উঠে লণ্ঠনে তেল ভরতে। তাছাড়া, এসব আমি করি না; পারিও না। তিতলি যে আমার জন্যে কী করে আর করে না, ওর ওপর যে আমি ঠিক কতখানি নির্ভরশীল তা এ ক’দিনেই একেবারে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। চুপচাপ বসেই রইলাম। পিউ-কাঁহা পাখি ডাকছিল ক্রমাগত। আর দূর থেকে তার সাথী সাড়া দিচ্ছিল। পাগলা কোকিলটার একেবারেই সাড়াশব্দ নেই কদিন হল। কে জানে অন্য কোন জঙ্গলের রাতের সহলে গেছে সে।

    বাইরের দিকে চোখ পড়ায় অবাক হয়ে দেখলাম, একটা কুপি হাতে করে কে যেন খুব জোরে দৌড়ে আমার ডেরার দিকেই আসছে। আলেয়া কি এরকমই দেখতে হয়? আমি কখনও দেখি নি। কাড়ুয়া দেখেছে। জঙ্গলের মধ্যে জলা জায়গায়, বর্ষার নদীর পাশে। তাড়াতাড়ি ঘর থেকে টর্চটা এনে, এই অচেনা অনাহূত ভগ্নদূত কোন খবর নিয়ে আসছে, তার প্রতীক্ষায় উৎকণ্ঠিত হয়ে দাঁড়িয়ে উঠলাম। তিতলির কি কিছু হল? তিতলির? এই কথা মনে হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার বুকের মধ্যে যেন বন-পাহাড়ের দামাল শ্রাবণের ঝড় উঠল। ভেজা, জোলো, গভীর রাতের দূরাগত এক্সপ্রেস ট্রেনের শব্দের মতো অস্পষ্ট। কিন্তু অত্যন্ত দ্রুতগতি, ভারী এক গভীর বিষণ্ণতা আচ্ছন্ন করে ফেলল আমাকে। আমি যে তিতলিকে এতখানি ভালোবেসে ফেলেছি, তা আগের মুহূর্তেও জানতাম না, বুঝতে পারিনি। আমার ভাবনার জাল ছিঁড়ে তিতলির মা কুপি হাতে এক সত্যিকারের ঝড়ের মতোই ডেরার মধ্যে এসে যেন আছড়ে পড়ল। এসেই ডুকরে কেঁদে উঠল। টর্চটা ওর মুখে জ্বেলে রেখে শুধু একটি প্রশ্ন করলাম ওকে।

    তিতলি।

    সে আর্তস্বরে বলে উঠল, নেহী, নেহী, উস্‌কো বাপ্।

    সেই মুহূর্তে টেটরার ভালো-মন্দ সম্বন্ধে জানতে আমি বিন্দুমাত্রও উৎসুক ছিলাম না। বুক থেকে যেন একটা পাথর নেমে গেল। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। তিতলি—…তিতলি— তাহলে ভালোই আছে। ভালো আছে তিতলি। আঃ!

    ঘোরটা কাটিয়ে উঠেই বললাম, টেটরার কী হল? এই ত গেল আমার এখান থেকে। টেটরার যাই-ই হোক না কেন, তখনও তা নিয়ে কিন্তু আমার সত্যিই তেমন মাথাব্যথা ছিল না। টেটরার কথা ধীরে সুস্থে জানলেই তখন চলবে। আমার তাড়া নেই কোনো। তিতলির মার যতই তাড়া থাকুক। হাউ-মাউ করে কাঁদতে লাগল সে। ঘর থেকে বর্শাটা তুলে নিয়ে টর্চটা হাতে করে ওর সঙ্গে আমি এগোলাম। মুখে কোনো কথা বলতে পারছিলো না সে। হাউ-মাউ কান্নাটা বন্ধ রেখে এখন একটা বোবা চাপা ঘড়ঘড়ে স্বগতোক্তি করতে লাগল। এদিকে ওদিকে টর্চের আলো ফেলতে ফেলতে যখন আমরা প্রায় দৌড়ে তিতলিদের বাড়ির কাছে পৌঁছলাম, তখন দেখি, ওদের বাড়ির উঠোনের দরজার প্রায় সামনেই আমার দেওয়া মুড়ি-চিঁড়ে-গুড় আর হরলিক্স-এর শিশি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে পথের ধুলোতে। টাঙ্গিটাও। আর পথের লাল নরম ভারী ধুলোর ওপর খুব বড় একটা চিতার থাবার দাগ। ধস্তাধস্তির পরিষ্কার চিহ্ন। টেটরার টায়ার-সোলের ধূলিমলিন চটিটা। পথের পাশের একটা উঁচু পাথরে দাঁড়িয়ে টর্চের আলোটা এদিকে-ওদিকে ফেলতেই হঠাৎ ওদের ডেরারই লাগোয়া ক্ষেতের মধ্যেই একজোড়া লাল চোখ জ্বলে উঠল। টর্চের আলো পড়াতে ছোট বড় মাটির ঢেলা আর পাথরের লম্বা বেঁটে ছায়াগুলো ক্ষেতটাকে রহস্যময় করে তুলল। তখন কোনো ফসল ছিল না ক্ষেতে। রাতের বেলায় ক্ষেতটাকে অনেক বড় বলেও মনে হচ্ছিল।

    বললাম, তুমি দৌড়ে বস্তিতে যাও। লোকজন জড়ো করে আনো। কাড়ুয়াকে খবর দিতে বলো ওদের। শিগগির যাও! আমি এখানে আছি।

    তিতলির মা দৌড়ে চলে গেল।

    বাঁ হাতে টর্চটা শোনচিতোয়াটার চোখে জ্বেলে রেখে, ডান হাতে বর্শাটা বাগিয়ে ধরে আমি উঠোনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়ালাম। উঠোনটা পেরিয়ে আসার সময় লক্ষ করেছিলাম যে, ওদের ঘরের দরজাটা হাট করে খোলা। ঘরের মধ্যে অন্ধকার। সেখানে জ্বরে বেহুঁশ তিতলি পড়ে আছে। ভালো করে আলো ফেলতেই, এবারে টেটরাকে দেখতে পেলাম। ক্ষেতের একেবারে শেষে একটা বাঁশঝাড়ের গোড়াতে টেটরাকে চিত করে ফেলে শোনচিতোয়াটা খাচ্ছে। ধুতিটা আর ছেঁড়া-খোঁড়া শার্টটা ছিন্নভিন্ন হয়ে ক্ষেতে পড়ে আছে। একটা হাত কেউ যেন করাত দিয়ে কেটে পাশে ফেলে রেখেছে। খয়েরি রক্তে লাল হয়ে আছে পুরো জায়গাটা। কাপড় জামাতেও ছোপ্ ছোপ রক্ত। আলোটা শোনচিতোয়াটার চোখের ওপর ফেলে রেখে, বর্শাটা বাগিয়ে ধরে আমি চেঁচালাম। বাংলাতে গালাগালি করতে লাগালাম—যত খারাপ গালাগালি স্কুলের বকা-ছেলেদের কাছ থেকে শিখেছিলাম ছোটবেলায়, সেই সমস্ত গালাগালি তীব্রতম ঘৃণা আর অসহায় ক্ষোভের সঙ্গে আমি শোনচিতোয়াটার দিকে ছুড়ে মারতে লাগলাম বুলেটের মতো। টর্চের আলোতে লাল চোখ দুটো কাঠ-কয়লার আগুনের মতো জ্বলতে লাগল। মাঝে মাঝে সবুজ রঙও ঠিকরে বেরোচ্ছিল তা থেকে হঠাৎ হঠাৎ। চিতাটা এতো লম্বা ও উঁচু যে, বড় বাঘ বলেই মনে হচ্ছিল। কিছুক্ষণ টর্চের আলোর দিকে সে সোজা চেয়ে রইল। তারপর টেটরাকে ওখানে ফেলে রেখে আমার দিকে বড় বড় পা ফেলে এগিয়ে এল কিছুটা। কিন্তু কোনো আওয়াজ করল না। আমার রক্ত হিম হয়ে গেল। তারপরেই কী মনে করে ফিরে গিয়ে টেটরাকে এক ঝাকাতে ঘাড় কামড়ে তুলে নিয়ে বাঁশবনের গভীরে চলে গেল। টেটরার কাটা হাতটা ক্ষেতের মধ্যেই পড়ে রইল।

    কিছুক্ষণ পর লাঠি-বল্লম, টাঙ্গি আর মশাল নিয়ে বস্তির অনেক লোককে দৌড়ে আসতে দেখলাম এদিকে। চেঁচামেচি ছাড়াও নানারকম ধাতব আওয়াজ করতে করতে। কেরোসিনের টিন, আছাড়ি পট্‌কা, কাঁসার থালা, যে যার হাতের কাছে পেয়েছিল, তুলে নিয়ে এসেছিল। কাড়ুয়াও এসেছিল ওদের সঙ্গে। আর ওরা এসে পৌঁছনোর প্রায় সঙ্গে সঙ্গে দুজন ফরেস্ট গার্ডও এসে পৌঁছল। কাড়ুয়ার যে গাদা বন্দুক আছে সেটা বস্তির সকলেই জানত, মায় ফরেস্ট গার্ডরা পর্যন্ত। কিন্তু কাড়ুয়া যে সেটাকে কোথায় লুকিয়ে রাখে সে কথা জানা ছিল না কারোই। সকলেই বলতে লাগল, কাড়ুয়া, এ কাড়ুয়া, বন্দুক লাও তুম্হারা।

    ফরেস্ট গার্ডরা বলল, আমরা এখানে সশরীরে উপস্থিত থাকতে এমন বে-আইন কখনওই হতে দেব না। বন্দুক আনলেই বন্দুক বাজেয়াপ্ত করব। কাড়ুয়াকেও গ্রেপ্তার করব। লাইসেন্স ছাড়া আবার বন্দুক কীসের? ততক্ষণে রথীদাও এসে পৌঁছেছেন নানকু বস্তিতে ছিল না। দিন সাতেক হল ও বেপাত্তা। কাউকে কিছু না বলে সে নিরুদ্দেশ হয়েছে। রথীদা তাঁর রিভলবার নিয়ে এসেছিলেন সঙ্গে করে। ফরেস্ট গার্ডদের আপত্তি সত্ত্বেও তিনি কয়েকবার আকাশের দিকে নল করে গুলি ছুড়লেন। তারপর সকলে মশাল নিয়ে হৈ হৈ করে এগোলাম আমরা বর্শা, টাঙ্গি আর লাঠি নিয়ে যেদিকে টেটরাকে নিয়ে গেছিল শোনচিতোয়াটা, সেইদিকে।

    ফরেস্ট গার্ডরা বলল, স্যাংচুয়ারি এরিয়ার মধ্যে গুলির শব্দ হল, এক্ষুনি জিপ নিয়ে প্রোজেক্টের লোক চলে আসবে। আমাদের চাকরি যাবে। রথীদা বললেন, গেলে যাবে। একটা মানুষের দাম কি তোমাদের চাকরির চেয়ে বেশি নয়? ওদের মধ্যে একজন লম্বা চওড়া দাড়িওয়ালা গার্ড ছিল। নতুন এসেছে নাকি, গাড়োয়া থেকে বদলি হয়ে। সে তর্ক করে বলল জীবন আর আছে কোথায়? টেটরা তো মরে ভূত হয়ে গেছে। এখন আমাদের চাকরি খেয়ে কার কী লাভ?

    রথীদা বললেন, আজ টেটরাকে খেয়েছে, কাল যে অন্য কাউকে খাবে না তার কোনো গ্যারান্টি আছে?

    ওরা বলল, ওসব জানি না। খেলে খাবে। বাঘেদের বিস্তর অসুবিধা হবে এই চিৎকার চেঁচামিচি, গুলির আওয়াজে। একটিও বাঘ যদি কোর্-এরিয়া থেকে বেরিয়ে যায়, তবে দিল্লিতে লোকসভায় কোশ্চেন উঠবে। আইন আমরা থাকতে কখনওই ভাঙতে দেবো না।

    রথীদা রেগে বললেন, তোমরা জাহান্নমে যাও।

    ততক্ষণে রিভলবারের গুলির আওয়াজে, মশালের আলোতে, এতলোকের চিৎকার চেঁচামেচিতে শোনচিতোয়াটা টেটরাকে ফেলে রেখে জঙ্গলের গভীরে সরে গেছে। ধরাধরি করে ওরা সকলে টেটরার মৃতদেহ বয়ে আনল। একজন কাটা হাতটাও তুলে নিয়ে এল! আমি তাকাতে পারছিলাম না ঐ বীভৎস দৃশ্যের দিকে। কাটা হাতটার মুঠি বন্ধ ছিল শক্ত করে। মুঠি খুলতেই দেখা গেল, তার মধ্যে আমার দেওয়া ওষুধগুলো। সকলের অলক্ষে আমি ওষুধগুলো বের করে নিয়ে তিতলির ঘরে গিয়ে ঘরের কোণায় রাখা বালতি থেকে ঘটি করে জল নিয়ে তিতলিকে ওষুধ খাওয়ালাম। বেহুঁশ অবস্থায় ওষুধ খাওয়ানো খুবই মুশকিলের কাজ। কাঁদতে কাঁদতেই ওর মা এসে আমাকে সাহায্য করল। এত লোকের শোরগোল, রিভলবারের আওয়াজ, ওর মায়ের এত কান্নাকাটিতেও তিতলির হুঁশ ফিরল না। আমার ভীষণই ভয় করতে লাগল যে, তিতলি বোধহয় আর বাঁচবে না। মশাল হাতে ওরা সকলে টেটরার ছিন্নভিন্ন আংশিক মৃতদেহ ঘিরে নিজেদের মধ্যে নানা কথা বলতে লাগল। রথীদা বললেন, ডালটনগঞ্জে গিয়ে বড় সায়েবদের বলে এই শোনচিতোয়াকে মারার বন্দোবস্ত করতে হবে। ফরেস্ট গার্ডরা বলল, যতক্ষণ না এ-বাঘ ম্যান-ইটার ডিক্লেয়ারড্ হচ্ছে এবং সেই পারমিট আমাদের না দেখানো হচ্ছে; ততক্ষণ একজনকেও বন্দুক-রাইফেল হাতে এ তল্লাটে ঢুকতে দেখলেই আমরা বেঁধে নিয়ে যাব।

    ঠিক আছে। কাল আমি নিজেই যাব ডালটনগঞ্জ। দেখি, এর কোনো বিহিত হয় কি-না।

    গার্ডরা বলল, জঙ্গলে থাকলে, বছরে-দুবছরে এরকম একটা-আধটা মানুষ জংলি জানোয়ারের হাতে মরেই। একটা মানুষ মারলেই যে শোনচিতোয়াটা ম্যান-ইটার হয়ে গেছে তা বলা যায় না। নিদেনপক্ষে আট-দশটা মানুষ না মারলে ডিপার্ট থেকে ম্যান-ইটার ডিক্লেয়ারই করবে না। তাও করবে কি না সন্দেহ। এই সব জঙ্গলে-পাহাড়ে বাঘ আর অন্য জানোয়াররাই মেহমান। তাদের ভালোটাই আগে দেখতে হবে, মানুষরা ফালতু। মানুষরা এখান থেকে চলে গেলেই পারে। স্যাংচুয়ারি তো জানোয়ারদের জন্যে। মানুষদের জন্যে থোড়াই!

    বস্তির কয়েকজন ছেলে-ছোকরা চটে গেল বেজায় ওদের এই রকম কথাবার্তাতে। কিন্তু জঙ্গলে থেকে ফরেস্ট গার্ডদের সঙ্গে ঝগড়া করার দুঃসাহস এদের মধ্যে কারোরই নেই। নানকু থাকলে কী হত বলা যায় না।

    রথীদা বললেন, তা হলে তোমাদের মধ্যে দু-একজনকে খাক বাঘটা তারপরই না হয় ম্যান-ইটার ডিক্লেয়ার করানো যাবে।

    দাড়িওয়ালা গার্ডটি, এ দুঃসময়ের মধ্যেও হেসে উঠল নির্বিকারে। বলল, আমরা গভরমেন্টের লোক। আমাদের চেনে এরা। আমরাই এদের দেখ-ভাল করি। বাঘেরা মানুষের মতো বস্তমিজ নয় যে, আমাদের খাবে।

    টেটরার মৃত্যু এবং তার পরের ঘটনা পরম্পরার অভাবনীয়তায় স্তম্ভিত হয়ে ছিলাম। মনে হচ্ছিল অনেকদিন এমন স্তম্ভিত হয়েই থাকব।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঋজুদা সমগ্ৰ ৫ – বুদ্ধদেব গুহ
    Next Article লবঙ্গীর জঙ্গলে – বুদ্ধদেব গুহ

    Related Articles

    বুদ্ধদেব গুহ

    বাবলি – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্ৰ ১ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্র ২ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্র ৩ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্র ৪ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    অবেলায় – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }