Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    বাঙালনামা – তপন রায়চৌধুরী

    August 20, 2025

    রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর জীবনী – তপন বাগচী

    August 20, 2025

    রাজমালা বা ত্রিপুরার ইতিহাস – শ্রী কৈলাসচন্দ্ৰ সিংহ প্রণীত

    August 20, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    জেমস হেডলি চেজ রচনা সমগ্র ১ (অনুবাদ : পৃথ্বীরাজ সেন)

    জেমস হেডলি চেজ এক পাতা গল্প2631 Mins Read0

    ৯-১০. এডরিসের অ্যাপার্টমেন্টে

    ০৯.

    এডরিসের অ্যাপার্টমেন্টে বসে রেডিও খুলে খবর শুনছিল এডরিস আর ফিল। দুজনের মুখই থমথমে। ঘোষক তখন এই বিবৃতি ঘোষণা করছিলেন :

    কোরাল কোভ মার্ডার কেসেনতুন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। পুলিশ ফিল অ্যালগির ওরফে হ্যারী চেম্বার্স-আপাততঃ যার ঠিকানা ছিল: রিজেন্ট হোটেল, প্যারাডাইস সিটি–এই ব্যাক্তিকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস এই মার্ডার কেস সম্পর্কে সে অনেক কিছুই জানে। লোকটির উচ্চতা–ছ ফুট, ওজন ১৯০ পাউন্ড, বলিষ্ঠ কাধ, চুলের রঙ সোনালী, সরু গোঁফ, নীল চোখের তারা আর থুতনীর নীচে বিরাজমান একটি ভাজ। তার শেষ দেখা মেলে, যখন সে লাল ও নীল রঙের টু-টোনবুইক কনভার্টিবল রোডমাস্টার গাড়ি হাঁকিয়ে যাচ্ছিল। গাড়ির লাইসেন্সনাম্বার–এন ওয়াই ৪৫৯৯। এই ব্যক্তির গতিবিধি সম্পর্কে বিন্দুমাত্র খবর কেউ যদি রেখে থাকেন তবে অনুগ্রহ পূর্বক পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স : প্যারাডাইস সিটি ০০১০ এই নাম্বারে অবিলম্বে ফোন করবেন।

    এই সংবাদে এডরিস আর ফিল পাথরের প্রতিমূর্তির মতো আধ-মিনিট ধরে বসে রইল নিজের নিজের আসনে। ফিলেরই প্রথম সম্বিত ফেরে। সে এডরিসের দিকে রক্তবর্ণ চোখে চেয়ে ষাঁড়ের মতন গর্জন করে বলে উঠল,হতভাগা বাঁটকুল! তোর জন্যই আজ আমার এই সমূহ বিপদ। তোকে খুন করে আমার নিস্তার মিলবে হতচ্ছাড়া!

    চেয়ার ছেড়ে ফিল দাঁড়াবার আগেই ভীতত্রস্ত শঙ্কিত এডরিস চকিতে ছুটে গিয়ে নিজের শয়নকক্ষে প্রবেশ করে দরজায় খিল তুলে দিল। ফিল খিস্তির ফোয়ারা ছোটাল, অনেক কসরত, ধাক্কাধাক্কি করল বন্ধ দরজার গায়ে তবু হার মেনে দরজা খুলল না জেদী এডরিস। সে তখন নিরক্ত মুখ নিয়ে বিছানায় বসে থর থর করে কাঁপছে।

    পরিশেষে ঘণ্টাখানেক পর একাধিক হুইস্কি পেটে পড়তেই ফিলের রাগ গলল। সে তখন বন্ধ দরজার সামনে গিয়ে শান্তকণ্ঠে বলছে, অলরাইট, টিকি, এবার বেরিয়ে এসো। আমি তোমার গায়ে হাত তুলব না। প্রমিস।

    কিছুক্ষণ দোটানায় থাকার পর দরজা খুলে ভয়ে ভয়ে বেরিয়ে এল এডরিস। কিন্তু বেরিয়েই আবার ভয়ে কাটা। ফিলের হাতে রিভলবার-এডরিসের দিকে তাক করা।

    ফিল হুকুম করল : বসো একটা চেয়ার টেনে। কথা আছে।

    এডরিস ভালো মানুষের মতন বসে পড়ল। ফিল বলল, শোন টিকি, এখনো বাঁচবার সুযোগ আছে। কোন উপায়ে আমরা যদি পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে এই শহর ছেড়ে বেরিয়ে মিয়ামিতে গিয়ে পৌঁছতে পারি, তবে আমার যে বন্ধু সেখানে আছে তার সাহায্যে জাহাজে চেপে আমরা কিটরায় পালাতে পারব।

    কিন্তু ওর বড় টাকার খাই, তাই এই শহর ছেড়ে যাবার আগে যতটা পরিমাণ সম্ভব হয় টাকার বন্দোবস্ত করে ফেলতে হবে। আমার মতামত যদি নাও তো বলি, গ্যারল্যান্ডের সিন্দুক খালি করেই আমরা দুজনে কেটে পড়ি চল।

    এডরিস অতি কষ্টে ম্লান হাসি এনে বলল, কিন্তু হাঁদারাম। একবার ভেবে দেখছ কি, ব্যাঙ্কে যাবার সব পথই বন্ধ প্রায়? ওরা তোমায়,চিনে ফেলবে না?

    –আমি ব্যাঙ্কে যার কোন দুঃখে? ইরাকে ফোন করে বল, সে যেন ব্যাঙ্কের উল্টোদিকের সেই কাফেতে আধ ঘণ্টার মধ্যে এসে তোমার সঙ্গে একবার দেখা করে। তারপর কীভাবে টাকা আনবে, কেমন করে আনবে–সেটা সম্পূর্ণ ভাবে তার ভাবনাচিন্তার ওপরই ছেড়ে দাও।

    এডরিস কোন রকম প্রতিবাদ জানাতে সাহসিকতার পরিচয় দিতে উদ্যোগীনা হয়ে সে ফিলের আদেশ ও নির্দেশমতো ফোন করল ইরাকে।

    তারপর ফিরে এসে চেয়ারে বসায় ফিল আবার হুকুম করল রিভলবার উঁচিয়ে–ওয়ানসির সিন্দুক এবং আরও ২/১টি সিন্দুক লুট করে যা মাল পাওয়া গেছে, তার ভাগ, আমার অংশের পঁচিশ হাজার ডলারচটপট দিয়ে দাও। আমার কথার অন্যথা হলে গুলিতে পেট ফুটো করে ঝাঁঝরা করে দেব স্মরণে রেখো। নাউ কুইক।অনোন্যাপায় হয়েই বেজার মুখে আলমারি খুলতে লাগল এডরিস। মনে তখন তার দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।

    নিজের টেবিলে বসে থাকাকালীন তন্দ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে ঝিমোচ্ছিলেন বেইগলার। ডেস্কের ওপর টেলিফোনটা ঠিক এই সময়ে সরব হয়ে উঠল। ক্লান্ত আর অলস কণ্ঠে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন রিসিভার তুলে–হ্যালো–

    –হ্যালো, জিম, কী খবর? —

    ফিল অ্যালগিরের ব্যাপারেই কথা হচ্ছিল। লোকটা আমাদেরই ব্যাঙ্কে একটা লকার ভাড়া নিয়ে প্রতিদিনই আসা যাওয়া করছে।

    –তাই নাকি? সজাগ আর সতেজ হয়ে উঠলেন বেইগলার।

    তোমাদের ব্যাঙ্কে সে ভাড়া নিয়েছে। কেন?

    — নামীদামী জুয়াড়ীবলে তার এখন বিভিন্ন মহলে যথেষ্ট হাঁক ডাক। সে ভাড়া নিয়েছে অবশ্য লসন ফরেস্টার-এর ছদ্মনামে। কিন্তু রেডিওতে ওর চেহারার বর্ণনা শোনার পর থেকে আমি নিশ্চিত যে, লসন ফরেস্টারই ফিল অ্যালগির।

    হু,কয়েক সেকেন্ড চিন্তা করে বেইগলার বললেন, ঠিক আছে জিম, আমার দপ্তরে কেউ একজন এলেই আমি তাকে ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দিচ্ছি। মিঃ ডেভনকে বলে ওর লকারে কী আছে তা আমাদের জানা খুবই দরকার। আর ফিল যদি এরমধ্যে এসে উপস্থিত হয়, তবে তাকে আটকাবার ভার তোমার ওপরই দিলাম বন্ধু।

    পূর্ব নির্দেশমতো যথাসময়ে কাফেতে গিয়ে উপস্থিত হল ইরা। এডরিস ওর আসার আগে থাকতেই বসেছিল। ইরা গিয়ে বসল সেই টেবিলে। জিজ্ঞাসা করল : আবার তলব কেন?

    -আজকের খবরের কাগজটা একবার দেখেছ?

    –না। সময় পাইনি চোখ বোলাবার।

    –ফিল ফেঁসে গেছে। পুলিশ ওকে হন্যে হয়ে খুঁজছে। ওর জন্য বিপদ আমারও দোর গোড়ায় এসে হাজির। আমাদের হাতে সময়ের বড় অভাব, বেবী। তাই যা যা বলছি, খুব মন দিয়ে শুনে নাও। গ্যারল্যান্ডের সেফের নকল চাবি দিচ্ছি তোমায়। যেমন করে যেভাবে সম্ভব হয় মালকড়ি সরিয়ে ফেল। ফিল আসতে পারবে না, তাই একাজটা তোমাকেই উদ্ধার করতে হবে।

    -না, না আমার দ্বারা একাজ আর হবে না।

    –মা বললে শুনবো না। একাজ তোমাকেই করতে হবে। ফিল কেন আসতে পারবে না তা এই কাগজেই দেখ।বলে, পকেট থেকে সেদিনকার কাগজখানা বার করে ভাজ খুলে ইরার দিকে সহস্তে বাড়িয়ে ধরল এডরিস। রুদ্ধ নিঃশ্বাসে আপাদমস্তক পড়ে গেল ইরা। সারা দেহ এক অজানা আতঙ্কে থর থরে করে শিউরে উঠল। মুহূর্তের মধ্যে চোখ মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল। সে কোনরকমে এটুকু উচ্চারণ করার সম্বিত ফিরে পেল, শুধু বলল : একি! এ যে দেখছি খুনের ব্যাপার। তবে কি ফিল–

    –হ্যাঁ, ফিলই খুন করেছে তোমার দিদির মেয়ে নোরেনাকে। আমি সেদিন তোমায় মিথ্যে বলেছিলাম যে জলে ডুবেতার মৃত্যু হয়েছে। তাকে এখান থেকে সরে পড়তে হলে টাকার দরকার প্রচুর। এই প্রয়োজন না মিটলে সে তো ডুববেই সেই সঙ্গে আমাদের দুজনের ভরাডুবিও অবশ্যম্ভাবী।

    –অসম্ভব! আমার দ্বারা কোন মতেই সম্ভব নয় গ্যারল্যান্ডের টাকা চুরি করা। তীর ধনুকের মতো বেঁকে দাঁড়াল ইরা। নোরেনার খুনের সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে ফেলছ কেন? আমি একেবারেই অজ্ঞাত নোরেনার খুনের ব্যাপারে।

    –শাট আপ! চাপা গলায় ধমকের সুরে চিৎকার করে উঠল এডরিস, পুলিশ অতসহজে তোমায় ছেড়েও দেবে না আর তোমার কথায় ভুলবার পাত্রও তারা নয়। তুমি সব কিছু না জেনে বুঝে নোরেনা সেজে দিনের পর দিন অভিনয় করে যাচ্ছ, তাই না? তোমার একথা তারা বিশ্বাস করবে? খুনী না হতে পারো তবে খুনীর সহকারিনী হয়েছে তো। আমি আর ফিল অবশ্য গ্যাস চেম্বারে ঢুকব। কিন্তু তোমার মতো একজন সুন্দরীকে দীর্ঘমেয়াদী কারাবাসে থেকে প্রতিনিয়ত জ্বালায় যন্ত্রণায় অত্যাচারে অপমানে জ্বলে পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যেতে হবে, তখন মনে হবে, এই যন্ত্রণার থেকে মরণই বোধহয় অনেক শ্ৰেয় ছিল তাতে শান্তিও কিছুকম ছিলনা।ইরানীরব শ্রোতা।

    এডরিস তার বুদ্ধি বলে ইরাকে এমন ভাবে প্রভাবিত করল যে তার কথা বলাতে ওষুধ ধরেছে। সে তাই জিজ্ঞাসা করল : কী, আমার প্রস্তাবে মত আছে তো? টাকা হাতে আসতে যতক্ষণ দেরী, এসে গেলেই আমরা পালিয়ে বাঁচব এই শহর থেকে। তুমিও স্বাধীন বিহঙ্গ হয়ে উড়তে পারবে। তখন দেখবে মুক্তির আনন্দই আলাদা। আর যদি এ ব্যাপারে তোমার কোন আগ্রহ না থেকে থাকে তবে জেলে পচে মরবে অবধারিত।

    ইরা দম দেওয়া সম্মোহিত পুতুলের মতো ফ্যাসফ্যাসে গলায় বলল, আমি প্রস্তাবে রাজী।

    সাড়ে আটটা থেকে পৌনে দশটা–এই সোয়া এক ঘণ্টা সময় নানা চিন্তা ভাবনার স্রোতে কখন যে বয়ে গেছে তা খেয়াল করার শক্তি ছিল না ইরার।

    ভল্টে পৌঁছে নিজের টেবিলে গিয়ে বসল। নিঝুমহয়ে গুম মেরে কিছুক্ষণ বসে থাকল।তারপর মনকে সংযত আর দৃঢ় ভীতে সবে দাঁড় করিয়েছে এমন সময় একজন গার্ড এসে জানাল : মিঃ ডেভন আপনাকে ডাকছে, মিস।

    -চলো, যাচ্ছি।

    ডেভনের চেম্বারে প্রবেশ করতেই দৃষ্টি একেবারে স্থির হয়ে গেল। কারণ চেম্বারে ডেভন একা ছিলেন না, তার সামনের আসনে আরো একজন অচেনা ব্যক্তি বসে আছে। তাকে না চিনলেও ইরা তার বুদ্ধির দৌড়ে এটুকু বুঝতে পারল ভদ্রলোক পুলিশের একজন। তার সিক্সথ সেন্সই যথেষ্ট প্রখর। ইরা তাই ঘাবড়ে গেল না, সে ঘরে ঢুকে প্রশ্ন করল : আমায় ডেকেছিলে ড্যাডি? :

    -হ্যাঁ, ডার্লিং, এসো। এনার পরিচয় ইনি ডিটেকটিভ টম লেপস্কি। কোন একটাকাজে তোমার কাছ থেকে কিছু সাহায্যের প্রত্যাশায় এখানে এসেছেন।

    লেপস্কি কোমল স্বরে বললেন, বসুন, মিস ডেভন, খুব বেশী সময় আপনার নেব না। মাত্র কয়েকটা প্রশ্ন। আচ্ছা, এই ছবিটার দিকে একবার তাকিয়ে বলুন তো একে আপনি চেনেন কিনা–

    এই বলে পকেট থেকে ফিল অ্যালগিরের ছবি বার করে লেপস্কি দেখালেন ইরাকে এবং গোটা কয়েক প্রশ্নও করলেন। প্রত্যুত্তরেইরা শুধু জানাল :হ্যাঁ লোকটির নাম ফরেস্টার, ফ্লোরিডা ব্যাঙ্কের একজন ক্লায়েন্ট। তবে তার লকারে কি আছে না আছে সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র ধারণাই নেই তার।

    আরও একটা প্রশ্নের উত্তরে ইরা জবাব দিল না, সে মিয়ামির এই ডাক্তার উইডম্যানের নাম কখনো শোনেনি এবং এর পূর্বে তাকে চোখের দেখা দেখেনি পর্যন্ত।

    তার জবাবে লেপস্কির মনে সন্দেহের বীজ আরো ঘনীভূত হলো।

    ডাক্তার উইডম্যান নিজ মুখে এই স্বীকৃতি দিয়েছেন–নোরেনা ডেভনতার দীর্ঘদিনের রুগিনী। নোরেনার বক্তব্য ইতিপূর্বে ডাক্তারের নাম পর্যন্ত শোনেনি। আরও একটা পরীক্ষা করার ব্যাপারে উদ্যোগী হলেন লেপস্কি। তাদের দুজনের মধ্যে যা যা কথাবার্তা হলো, সে সমস্ত একটা কাগজে ছোট ছোট কিন্তু পরিষ্কার হস্তাক্ষরে লিপিবদ্ধ করে ইরাকে সেটা পড়ে দেখে সই করে দিতে অনুরোধও করলেন। ইরা কাগজটা নিয়ে একবার চোখ বুলিয়ে নিল তারপর কোন কথা না বলে নিঃশব্দে সই করে দিল। লেপস্কির মনে তখন সন্দেহের ঝড় তোলপাড় করছে। ডাক্তার উইডম্যানের মতে, নোরেনা ডেভন বিনা চশমাতে একেবারেই অন্ধ।

    কিন্তু এই মেয়েটি তো চশমা ছাড়াই দিব্যি লিখছে আর পড়ে যাচ্ছে। তবে কে? যাইহোক, শুষ্ক হাসি হেসে উঠে পড়লেন লেপস্কি চেয়ার ছেড়ে। তারপর নিজের কাগজপত্র গোছাতে গোছতে বলে উঠলেন, আর একটা শেষ প্রশ্ন মিস ডেভন। আপনি কখনো ইরা মার্শ নামের কোন মেয়ের কথা ইতিপূর্বে শুনেছেন?

    প্রশ্নটা কানে যেতেই শামুকের মতো খোলসে গুটিয়ে গেল ইরা। মুখ-চোখ বিবর্ণ হয়ে গেল। মরিয়ার মতো শুধু বলল, না..না…ও নাম আমি কখনো শুনিনি।

    বিহ্বল আর বিবর্ণ চোখ মুখের এমন দশা দেখে মেল তাড়াতাড়ি ছুটে এলেন মেয়ের কাছে। উদ্বিগ্ন কণ্ঠে শুধোলেন : কী হয়েছে নোরেনা? তুমি কী সুস্থ নও? শরীর কী ভালো নেই?

    -হ্যাঁ, ড্যাডি ভীষণ শরীর খারাপ লাগছে। আমি এখুনি বাড়ি যেতে চাই। খানিকক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে নিলে আশাকরি সুস্থ হয়ে যাব।

    মেল তাকালেন লেপস্কির দিকে। লেপস্কি দুঃখ প্রকাশ করে দুজনের কাছ থেকে বিদায় নিলেন।

    কেউই কিন্তু তার দুচোখ ভরা খুশির দীপ্তি আর উত্তেজনা লক্ষ্য করল না।

    ইরা আসতেই এডরিস ব্যগ্রকণ্ঠে জিজ্ঞাসা করল : এনেছ?

    –তার আগে আমার একটা প্রশ্নের জবাব দাওঃআমার দিদিকেও তোমরাহত্যা করেছ, তাই না?

    এডরিস এই প্রশ্ন ইরার মুখ থেকে শুনতে পারে একথা স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। তাই একটু ঘাবড়ে গেল। অতি দ্রুতলয়ে সেই ভাবসামলে উঠে উত্তর দিল, সে খোঁজে তোমার কী প্রয়োজন? নেশাই তাকে মৃত্যুর পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। আমরা তাকে শুধু সেই নরক যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তি দিয়েছিলাম। সে থাক, সঙ্গে টাকা এনেছ?

    –তার হাত ব্যাগের মধ্যে থেকে সুসাইড নোটটা পাওয়া গিয়েছিল। সেখানেও তোমার কৃতিত্ব ছিল, তুমিই সেটা লিখেছিলে?

    এডরিস একটু অতৃপ্তির সঙ্গে জবাব দিল–হ্যাঁ। তাতে হয়েছেটা কী? তার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে পুলিশ যেসব চিঠিপত্র পেয়েছে, সবই আমার লেখা। শুনে একটু শান্তি পেয়েছ তো? এবার আসল কথা বলোটাকা এনেছ কিনা?

    –তুমি তার মনের মানুষকেও খুন করেছ নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য?

    –না, ও ব্যাপারে সম্পূর্ণ কৃতিত্ব ফিলের। ও আমাদের পথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করল। ওর উপস্থিতিতে আমাদের প্ল্যানে কোনদিন সাফল্যের মুখও দেখতে না। টাকা এনেছ?

    যেজন্য আমার এখানে আগমন, একটা মুখোরাচক সংবাদ তোমার জন্যই সঙ্গে করে নিয়ে এসেছি। ব্যাঙ্কে একজন পুলিশের লোক এসেছিল। আমাকে এই কথা জিজ্ঞাসা করতে, ইরা মার্শ নামের কোন মেয়ের সঙ্গে আমার চেনা-জানা আছে কিনা।

    মুখটা সঙ্গে সঙ্গে ঝুলে পড়ল এডরিসের। কয়েক মিনিট পাথরের মূর্তির মতো নিশ্চল হয়ে বসে থাকার পর হঠাৎ অতিমাত্রায় সে সক্রিয় হয়ে উঠল। দ্রুত কণ্ঠে বলল, কই? টাকাটা দাও আমায়! আমার সঙ্গে চললা, পালাই এ শহর ছেড়ে। এখনও হাতে সময় সুযোগ দুই আছে। এসো টাকাটা দাও।

    টাকা আমি আনিনি, খালি হাতে এসেছি, আনার সুযোগ থাকলেও আনতাম না। আমি যাব না তোমার সঙ্গে। এরপরের সাক্ষাৎনা হয় পুলিশ কোর্টের জন্যই তোলা থাক আমাদের। বাই। এডরিসকে বাক্যস্ফুর্তির কোনরকম সুযোগ না দিয়ে কাফে থেকে নিঃশব্দে বেরিয়ে এল ইরা।

    ভাড়া করা ফোর্ড গাড়িতে বসে গোপনে সবই নজর রেখে চলছিল জেম ফার। সে শুধু অবাক হয়েছিলফিলের পরিবর্তে এডরিসকে কাফেতে আসতে দেখে।কারণ ইরার কথা মতোনকল চাবি দিতে ফিলেরই আসা উচিত। আসলে সেদিনকার খবরের কাগজ পড়া হয়ে ওঠেনি জেম-এর। তাই সে ফিলের সমূহ বিপদের ব্যাপারে একেবারের জন্যও জানার সৌভাগ্য তার হয়নি।

    জেস মনে মনে ভাবল–আসলে ব্যাপারটা একটু তলিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে। কী এমন এর মধ্যে ঘটে গেল যার জন্য অবসন্নের মতো বিধ্বস্ত অবস্থায় ইরাকে বেরিয়ে আসতে হল কাফে থেকে। দ্বিতীয়ত কেনবা এডরিসের এতো ব্যস্ততা?

    মন স্থির করে দুজনের মধ্যে এডরিসের নাগাল পাবার জন্য তাকে অনুসরণ করাই হয় বলে মনের দিক থেকে সে সাড়া পেল।

    লেপস্কির বুঝতে কষ্ট হল না যে নিজের ছকে যে কাজ করতে তিনি অগ্রসর হয়েছেন তা যদি সফলতা পায় তবে তো কোন কথাই নেই।

    আর যদি ব্যর্থতার মুখ দেখেন তবে চীফের হাতে তার নাকালের অন্ত থাকবে না। তিনি নোরেনা ডেভনের বিষয়ে বিষদ ভাবে জানার অভিপ্রায়ে উপস্থিত হয়েছিলেন তার স্কুলের গণ্ডির মধ্যে। যথা সময়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে নিজের পরিচয় পত্র দেখিয়ে, তারপর সম্মুখীন হলেন ডক্টর গ্রাহামের। সোজাসুজিই কাজের কথাই উত্থাপন করলেন।

    –ডঃ গ্রাহাম! আমি আপনার এই স্কুলের এক ছাত্রী–নাম মিস নোরেনা মার্শ ডেভন, তার বিষয়ে কিছু খোঁজ খবর সংগ্রহের জন্যেই আমার এখানে আগমন। আপনার কাছ থেকে ঐকান্তিক সহায়তা পেলে অনুগৃহীত হব আমি।

    –নোরেনা ডেভন? সে বর্তমানে এখানে নেই। মাস দেড়েক আগেই স্কুল ছেড়ে চলে গেছে টার্ম শেষ করে। জানি আপনি শুধু মনে করে বলুন তার চোখে চশমা থাকত কিনা?

    –হ্যাঁ থাকত বৈকি। সে চশমা পরত।

    –চশমা ছাড়া তার পক্ষে কোন কাজ করা এককথায় সত্যিই অসম্ভব ছিল–ঠিক তো?

    -হ্যাঁ। ভীষণ ভাবে চোখ খারাপ ছিল তার। কিন্তু কেন, আপনি এসব জানতে চাইছেন সেটা শুধু বুঝতে পারছি না।

    নোরেনার চশমার ফ্রেমটা কী নীল রঙের প্লাস্টিক দিয়ে তৈরী ছিল?

    ডঃ গ্রাহাম কিছুক্ষণ চিন্তা করে জবাব দিলেন : নীল রঙের ফ্রেম ছিল তা মনে আছে, কিন্তু ফ্রেমটা প্লাস্টিকের তৈরী ছিল কিনা সেটা আমার পক্ষে বলা সম্ভবপর হচ্ছে না, মিঃ অফিসার। এবার ডঃ গ্রাহাম একটু বিরক্তির সঙ্গেই শুধু বললেন, সেই থেকে শুধুনানা রকম প্রশ্ন করে চলেছেন কিন্তু কেন যে করছেন তা তো খুলে বলছে না?

    লেপস্কি গুরুগম্ভীর কণ্ঠে জানালেন:উই হ্যাভ রিজন টু বিলীভ দ্যাট কোরাল-কোভ-এ নিহত অবস্থায় যে আনআইডেন্টিফায়েড মেয়ের মৃতদেহ পাওয়া গেছে, সে নোরেনা ডেভন ছাড়া আর দ্বিতীয় কেউ হতে পারে না।

    ডঃ গ্রাহামের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। লেপস্কি এবার ফিল অ্যালগিরের ফটোগ্রাফ বার করে ডঃ গ্রাহামকে দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ইতিপূর্বে একে কখনো দেখেছেন?

    ডঃ গ্রাহাম কয়েক মিনিট ধরে মন সংযোগ করে ছবিটা দেখে নিয়ে উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, ইনি তো নোরেনার মায়ের অ্যাটর্নি। এঁরই সঙ্গে নোরেনা গিয়েছিল তার মার অ্যাক্সিডেন্টের কথা শুনে।

    –আপনাদের এখানে নোরেনার কোন ছবি পাওয়া যেতে পারে, ডঃ গ্রাহাম?

    পাওয়া যাবে। টার্ম শেষ করে ছাত্রীরা যখন স্কুল ছেড়ে চলে যায়, তাদের একটা গ্রুপ ফটো তুলে রাখা হয়। একটু বসুন, ছবি আমি আনিয়ে দিচ্ছি।

    .

    ১০.

    এডরিস গাড়ি হাঁকাতে হাঁকাতে একটা কথাই তার মনে বারংবার ঘুরপাক খেয়ে আসছিল। যে কথার জন্য সে এতো বিব্রত বোধ করছে তা হল ফিলের সঙ্গে বোঝাপড়া সেরে নেওয়ার সময় এবার এসে গেছে। হতভাগা রিভলবারের ভয় দেখিয়ে তার সব টাকা কড়ি হাতিয়ে নিয়ে বসে আছে আর টাকা ছাড়া শূন্য হাতে গা ঢাকা দেওয়া একেবারেই বৃথা। আজ এ ব্যাপারে তারা একটা শেষ সিদ্ধান্ত নিয়েই ছাড়বে, যা হবে তা দেখা যাবে। কিন্তু সে তো অস্ত্রহীন, একটা অস্ত্র হাতিয়ার রূপে না কাছে থাকলে কোন ভরসায় সে ফিলের মুখোমুখি হবে? সে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে দিল সীকোষ-এর শহরতলীর অভিমুখে।

    সমুদ্রের ধারে, গভীর সমুদ্রের যে জায়গাটিতে ইয়টগুলো নোঙর করে আছে, তাদের মাঝি মাল্লাদের পান-ভোজনের জন্য যে বার রয়েছে, এডরিসের মিনি কুপার তার সামনে গিয়ে থেমে গেল। বার তখন ফাঁকা, লোমশ ভালুকের মতো চেহারা নিয়ে বার-এর মালিক হ্যারী মরিস একাকী বসে একটা রেসিংসীটের নজর রাখছিল। এডরিসকে আসতে দেখে তাকে হাস্য বদনে অভ্যর্থনা জানাল : হাই, টিকি! হঠাৎ কী মনে করে?

    এডরিস বলল, একটা ফালতু ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছি, হ্যারী। পুলিশী ঝামেলা, দয়া করে প্রশ্ন করো না। শুধু বলল, আমায় জাহাজে তুলে যত তাড়াতাড়ি হয় মেক্সিকোয় পাচার করতে পারবে কিনা?

    মরিস বিস্ফারিত নেত্রে এডরিসের মুখ পানে চেয়ে বোঝবার চেষ্টা করল, এডরিস তার সঙ্গে কোন ঠাট্টা-তামাসা করছেনা তো?কিন্তু না, উদ্বিগ্ন চাউনি ভরা থমথমে মুখের ভাব তার ঝামেলায় পড়ারই সাক্ষ্য দিচ্ছে। সে একটু থেমে বলল, পারব নাই বা কেন? তবে এর জন্য কিছু মালকড়ি খসাতে হবে। আজ রাত দশটা নাগাদ একটা জাহাজ ছাড়ছে।

    –কত দিতে হবে?

    তিন হাজার ডলার।

    এডরিস ভেতরে ভেতরে একটু দমে গেল। ওহ! এতো অনেক টাকার ব্যাপার। কিন্তু নিজের প্রাণ বাঁচাতে গেলে টাকার ওপর মায়ামমতা করা চলে না। তাই সে মরিসের প্রস্তাবে রাজী হয়ে গেল। বলল, বেশ তাই-ই দেব। আরো একটা উপকার তোমায় করে দিতে হবে, ভাই।

    –নিশ্চয়ই করব। বলে কী করতে হবে?

    –সাইলেন্সার লাগানো একটা রিভলভার চাই। সেটা হাতে হাতে পেয়ে গেলেই ভালো হয়।

    মরিস তার দিকে স্থির দৃষ্টিতে নিষ্পলক নেত্রে তাকিয়ে থাকার পর শুধু জানতে চাইল।

    নেবার পেছনে কোন কারণ থাকাই স্বাভাবিক, কী জন্য?

    –এ সময় কোন প্রশ্ন নয় হ্যারী। প্লীজ, পারবে তো যোগাড় করে দিতে?

    কাঁধ শ্রাগ করে ভেতরে অদৃশ্য হয়ে গেল হ্যারি। কয়েক মিনিট পরে ফিরে এলো হাতে একটা ব্রাউন পেপারের পার্সেল নিয়ে।–তিনশো ডলার।

    এডরিস পকেট থেকে ওয়ালেট বার করে নিঃশব্দে রিভলবারের মূল্য চুকিয়ে দিয়ে বলে উঠল, আমি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফিরে আসছি। সো লং হ্যারী।

    অ্যাপার্টমেন্টের সামনে এসে গাড়ি থামিয়ে এডরিস নেমে গাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়লে জেম ফারও নেমে পড়ল। দেখল, এলিভেটর ব্যবহার না করে এডরিস সিঁড়ি অতিক্রম করে ওপরে উঠছে। মনে মনে একটু অবাক হলো জেম। নিজের রুমের কাছে পৌঁছে দরজা খুলে সন্তর্পণে ভেতরে ঢুকে এডরিস ডাকল : ফিল! এডরিসের হাতের মুঠোয় ধরা সেদিনের খবরের কাগজ। অন্য হাত পকেটে ঢোকান। সে দেখল, জানালার ধারে দাঁড়িয়ে আছে ফিল। চোখে মুখে দুশ্চিন্তার ছাপাহাতে ধরা তারই রিভলবার। তাকে ঘরে প্রবেশ করতে দেখেই সে রিভলবার উঁচিয়ে জিজ্ঞাসা করল, টাকা এনেছ?।

    –তুমি অযথা এতো মাথা গরম করছ কেন বলো তো?পিস্তলনামাও।বলতে বলতে পকেটে লুকিয়ে রাখা রিভলবারটার সেফটি ক্যাচ সরিয়ে ফেলল এডরিস।

    তোমার প্রতি আমার বিন্দুমাত্র বিশ্বাস নেই। উঁহু, কাছে আসবার চেষ্টা করোনা। টাকা পেয়েছ ইরার কাছ থেকে?

    এডরিস মুখে হাসি ফুটিয়ে জবাব দিল, হ্যাঁ, পেয়ে গেছি। তার আগে এই খবরের কাগজটায় ছাপা তোমার ছবির দর্শন একবার ভালো করে দেখে নাও। পাতা জুড়ে তোমার ফটো। তোমার মুখের কোন দিকই বাদ যায়নি ছবি থেকে।

    বলতে বলতে হাতের কাগজটা ছুঁড়ে দিল ফিলের সামনে। কাগজটা আছড়ে পড়ল ফিলের পদযুগলের কাছে।মুহূর্তের জন্য নত চোখে পায়ের কাছে পড়ে থাকা কাগজে নিজের ফটো দেখছে, সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে এডরিসের ভুল হল না। চকিতে রিভলবার বের করে গুলিবিদ্ধ করল তার শরীরে। পরপর তিনবার। মৃদু আওয়াজও হল : প্লপ-প্লপ-প্লপ।

    মাটিতে পড়ে কয়েক সেকেন্ড ছটফট করতে করতে নিথর নিশ্চল হয়ে গেল ফিলের দেহটা। ক্ষতস্থান থেকে রক্ত ঝরছে, ধীরে ধীরে রক্ত বিত্তীর্ণ হয়ে পড়ছে সারা কার্পেটে।

    রিভলবারটা পকেটে পুরে ফিলের মৃতদেহের খুব নিকটে এসে তীক্ষ্ণদৃষ্টি দিয়ে কয়েক সেকেন্ড দেখে–এডরিস যখন বুঝল সত্যিই সে মৃত তখন তাকে সার্চ করার কাজে নেমে গেল। সার্চ করতে করতে টাকাগুলোর দর্শনও পেয়ে গেল। টাকা পরিমাণেও তো প্রচুর। সব পকেটে নেওয়া সম্ভবপর হবে না বলেই একটা ব্যাগে যা ধরার তা চেপে চুপে ভর্তি করে অবশিষ্ট টাকাগুলো পকেটে পুরে উঠে দাঁড়াল এডরিস। তারপর বিলম্ব না করে বেরিয়ে যাবার জন্য দরজা খুলে চমকে উঠল। ভয়ে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে পিছিয়ে এল দু-পা।

    দরজার মুখেই রিভলবার হাতে জেম-ফার দাঁড়িয়ে।

    –কে তুমি? কী চাও? আতঙ্কিত কণ্ঠে প্রশ্ন করল এডরিস।

    –আমি যে হই না কেন, ভেতরে ঢোক তুমি।কর্কশ কণ্ঠে তাকে আদেশের সুরে ধমক দিল জেম।

    ভয়ে ভয়ে পায়ে পায়ে পিছিয়ে গেল এডরিস। জেম ঘরে ঢুকে দরজাটা বন্ধ করে দিল।ফিলের মৃতদেহ তার দৃষ্টিতেও ধরা পড়ল। মুখের ভাবকঠিন হল। শিরদাঁড়া বেয়ে একটা শিহরণের স্রোত বয়ে গেল। এডরিসকে হাতের ব্যাগটা মাটিতে নামিয়ে রেখে দুহাত তুলে দেওয়াল ঘেঁষে পেছন ফিরে দাঁড়াবার জন্য হুকুম জারি করল জেম।

    জেম-এর কথা ছাড়া আর কোন বাঁচার উপায় দেখলনা এডরিস। তাই কথামতো এডরিস তার আদেশ পালন করে গেল। সে দেয়ালের দিকে মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়ান মাত্রই জেম এক লাফে তার কাছে গিয়ে হাতের পিস্তল দিয়ে সপাটে এডরিসের মস্তকে আঘাত হানল।

    .

    মিঃ টেরেলের অফিসরুমে বসে লেপস্কি তার তদন্ত কাহিনীর সম্পূর্ণ সারাংশ শুনিয়ে যাচ্ছিলেন সামনে উপবিষ্ট চীফকে। কাহিনী শেষ হলে লেপস্কির দেওয়া নোরেনার ছবিখানা দেখতে দেখতে মিঃ টেরেল বিস্মিত কণ্ঠে প্রশ্ন করলেন ডেভন যাকে নিজের মেয়ে ভেবে বসে আছেন, সে মেয়েটা কে?

    –ইরা মার্শ–মুরিয়েল মার্শের সহোদর বোন মিঃ ডেভনের শ্যালিকা, এই তার আসল পরিচয়। জবাবটা বেইগলারই দিলেন চীকে।–কিছুদিন আগে নিউইয়র্ক পুলিশের কাছ থেকে এই রিপোর্ট পেয়েছি যে, ইরা মার্শকে সেখানে শেষ দেখা গেছে গতমাসের ১৬ তারিখে। তারপর সে একেবারে বেপাত্তা। তারা ওর সম্পর্কে কোন কিনারা করতে না পারলেও, আমরা কিন্তু এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ সফল। ইরার সন্ধান মিলেছে নিউইয়র্ক থেকে মিয়ামি আসার প্লেনের প্যাসেঞ্জার লিস্টে। এখান থেকেই ইরার জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হল। ফেলে আসা অতীতকে মুছে ফেলে ইরা হয়ে গেল নোরেনা।

    কিন্তু কেন? কেন ফিল অ্যালগির তাকে নোরেনা সাজতে বাধ্য করল? কীসের জন্য এই ইমপার্সোনেশান? এই ব্যাপারটাই ঠিক বোধগম্য হচ্ছে না। এর পেছনে এমন এক উদ্দেশ্য নিজেকে আড়াল করে রেখেছে যা সাধনের জন্য ফিল নিজেও খুনী সাজতে দ্বিধান্বিত হয়ে পিছু হটেনি।

    -ইরা ওরফে নোরেনাকে ধরলেই এর সঠিক জবাব পাওয়া যাবে।

    –উহ, তাড়াহুড়োকরা চলবেনা। আমি আগে ডেভনের সঙ্গে কথা বলে সব কথা তার কাছে খুলে.বলি, তারপর এ ব্যাপারে ভাবা যাবে। এখন মনে হচ্ছে, ঐ বেঁটে বকেশ্বরটা সব জানে। খুব সম্ভব এসবের পেছনে সেই কলকাঠি নেড়েছে। মুরিয়েল মার্শের ড্রেসিং টেবিলে নোরেনার ফটোর পরিবর্তে ইরার ফটো রেখে দেওয়া–এও নিশ্চয়ই তার কারসাজির অন্য একটা দিক। জো! তাকে যত তাড়াতাড়ি পার গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা কর।

    বেইগলার মাথা হেলিয়ে ঘর থেকে দৃঢ় পদক্ষেপে বেরিয়ে এলেন।

    শোন টম! এখান থেকে মিয়ামি যাবার সমস্ত রাস্তা অবরোধ করার বন্দোবস্ত কর। মিয়ামি এয়ারপোর্টের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখ। এডরিস অথবা ফিল আলগির, দুজনের একজনও যেন প্যারাডাইস সিটি ছেড়ে পালাতে না পারে। আমি চললাম ডেভনের সঙ্গে একবার দেখা করতে।

    উর্ধশ্বাসে পালাচ্ছিল জেম। এডরিসকে কাবু করে সে কতটাকা হাতিয়েছিল তা গোনবার অবসর পায়নি। তবে তার বুদ্ধিতে সে এটুকু বুঝতে পেরেছিল, লুটের মাল তার পক্ষে আশাতীত হবে। এখানে থাকা আর কোনমতেই নিরাপদ নয়। ভয়ঙ্কর সাংঘাতিক মনের মানুষ এই এডরিস। ইরার কথাও স্মরণে এল একবার। তার এই নিরুদ্দেশ যাত্রায় তাকে সঙ্গিনীরূপে পাশে পেলে মন্দ হতো না। কিন্তু এডরিস ধরা পড়লে ইরাও ঐ জালে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য। তাই ইরাকে সঙ্গিনী করলে পুলিশ তাকেও ছেড়ে কথা বলবে না। তার চেয়ে ঈশ্বর যা করেন তা মঙ্গলের জন্যই করেন। পকেটে টাকা থাকলে আবার মেয়ে মানুষের অভাব!

    সামনের গাড়িগুলোর আচমকা গতিবৃদ্ধি ঘটে গেল। তারা শোঁ শোঁ করে বেরিয়ে যেতেই জেমের চোখে পড়ল সামনে ট্রাফিক লাইট। এখনো সবুজ। কিন্তু জেম এতই অভাগা যে সে বেরিয়ে যাবার আগেই বুজ আলো পাল্টে লাল হয়ে গেল। সজোরে ব্রেক কষতে হলো জেমকে। তাকে আচমকা ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে পড়তে দেখে, পেছনের গাড়িটা অনেক চেষ্টা করেও সামাল দিতে না পেরে মাঝ গতিতে এসে ধাক্কা মেরে বসল জেমের ফোর্ডের ঠিক পেছনে। মহাখাপ্পা হয়ে মাথা ঘুরিয়ে জেম দেখল, একজন স্বাস্থ্যবান বয়স্ক ব্যক্তি ড্রাইভারের সীট অলংকৃত করে বসে আছেন। পরক্ষণেই তার কানে এল পুলিশের বাঁশির আওয়াজ।

    ছলাৎ করে বুকের রক্ত চলকে উঠল জেমের। সে তাড়াতাড়ি নিজের প্যান্টের হিপ পকেট থেকে রিভলবারটা বার করে গাড়ির গ্লোভ কম্পার্টমেন্টে লুকোতে গেল কিন্তু তার আগেই কানের কাছে গর্জে উঠল একটা বাজখাই কণ্ঠস্বর : থামো!

    চোখ তুলে তাকাতেই চোখাচোখি হয়ে গেল লালমুখো এক পুলিশের সঙ্গে। সে রিভলবার দেখিয়ে জেমকে বলে উঠল, পিস্তল নামাও! কুইক!

    নিরুপায় হয়ে জেমকে নিজের রিভলবারটা ফেলে দিতে হলো নীচে। দুহাত ওপরেও তুলল। ইতিমধ্যে আর একজন পুলিশ এসে দাঁড়ালে তাকে দেখে প্রথম জন বলে ওঠে, ছোকরার কী সাহস! আমাকে দেখে পিল বার করেছিল।

    তাই নাকি। জেম কিছু বোঝার আগেই তার গালে বিরাশি সিক্কার এক চড় কষিয়ে দিল। দ্বিতীয়জন। স্টিয়ারিংয়ের ওপর মুখ থুবড়ে পড়ল জেম। নাকে আঘাত কিছু কম হল না, ঠোঁট কেটে রক্ত ঝরছে। মাথা তোলার সময় পর্যন্ত তার ভাগ্যে জুটলনা কারণ মাথা উঁচু করার আগেই হাতদুটো বাঁধা পড়ল হাত কড়ায়।

    খানা-তল্লাশী চালাতেই তার পকেট থেকে বেরিয়ে এল মোটা টাকার বান্ডিল। সেই সঙ্গে পাওয়া গেল নোট ভর্তি ব্যাগ।হ্যাগার্ডদের মতো চেহারা…অথচ সঙ্গে একতারা কাড়ি কাড়ি নোটের বান্ডিল আর হাতিয়ার রূপে অটোমেটিক রিভলবার। তাই দুই আর দুই যোগ করে যোগফল চার আনতে খুব বেশী বেগ পেতে হলনা পুলিশকে। তারা ধরেই নিল সে একজন অপরাধী। হয় চুরি না হয় ডাকাতি। চলল সোজা থানায়।

    .

    ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকাল এডরিস। মাথা যন্ত্রণায় ফেটে যাচ্ছে। প্রথমটা স্মরণে আনতে। পারছিল না কেমন করে এমন দশা হয়েছে…শুয়েই বা কেন…।

    আস্তে আস্তে সব কাণ্ড কারখানা চোখের সামনে একে একে জীবন্ত হয়ে উঠল। দুঃখ, হতাশায়, ভয়ে আর সবশেষে যন্ত্রণার তারশে সেঝাঁকিয়ে উঠল। কয়েক মিনিট পরেই সে উঠে বসল। তার চোখ পড়ল মরে পড়ে থাকাফিলের প্রতি। অকস্মাৎ অজানা এক ভয় তার মনকে তোলপাড় করতে লাগল। চোখ ফিরিয়ে সে আস্তে আস্তে গুটি গুটি পা ফেলে এগিয়ে চলল ওয়াইন ক্যাবিনেটের দিকে। কড়া টাইপের ২/১ পেগ হুইস্কি এ সময়ে পেটে পড়লে দেহ মনের দিক থেকে সে একটু সুস্থ হতে পারবে।

    হুইস্কি খাওয়ার পর দেহ মনে বল পেল, আগের অবস্থা কাটিয়ে বর্তমানে অনেকটাই স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে এল এডরিস। স্নান সেরে নিল। তারপর ঘরে এসে নিজের প্রিয় আর্মচেয়ারটিতে বসে নিবিষ্ট মনে ভাবনার জাল বুনতে শুরু করে দিল :

    মেক্সিকোয় পালাবার মতন টাকা বর্তমানে তার নেই। নতুন করে ছক কষে সাফল্য পাবারও কোন সার্থকতা নেই!বৎস টিকি!তুমি এবার বড় ধরণের গাড্ডায় পড়েছ। সহজে যে গাড়া থেকে মুক্তি মিলবে, সে আশা করাও বৃথা। সব-সব প্ল্যান ভেস্তে গেল ঐ কুত্তীর বাচ্চা, অপদার্থ ফিলের জন্য। তোমার চালে কোন ভুল ছিল না। অন্যের দোষে যদি তোমার সাজানো মতলব বানচাল হয়ে যায়, তাতে তোমার কী দোষ থাকতে পারে? ওর যোচ্য শান্তি ওকে দেওয়া হয়েছে। এবার নিজে শাস্তি পারার জন্য প্রস্তুত হও। আর্মচেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়ে আরও বেশ খানিকটা হুইস্কি গলায় ঢালল এডরিস। নেশায় বুঁদ হয়ে গেল। আরও হুইস্কি…আরও…

    বেইগলার আর হেস তার হাতে যখন কড়া পরিয়ে দিলেন তখন সে বদ্ধ মাতাল।

    .

    ইরা পত্র লিখছিল মেলকে

    ডীয়ার মেল,

    মনে বাসনা থাকলেও আমি কখনো আর তোমাকে ড্যাডি বলে ডাকতে পারব না। ডাকার অধিকার আমার ভাগ্যে জুটবে কী? সব কিছু প্রকাশ হওয়ার পর ড্যাডি বলে ডাকা তখন বোধহয় সমীচিন হবে না। তাই নাম ধরেই মেল সম্বোধন করলাম। যাইহোক, এতোদিন ধরে যা করেছি। তারজন্য আমি সত্যিই দুঃখিত, অনুতপ্ত। তোমার সামনাসামনি হওয়ার মুখ আমার নেই। বিদায় জানানোর জন্যই শেষপর্যন্ত এই পত্রের দ্বারস্থ হতে হল।

    তুমি হয়তো আমার কোন কথাই আজ বিশ্বাস করবেনা, আমি জানি। কিন্তু তবুবলছি, তোমার মেয়ে নোরেনারও প্রাণ যে ওরা নিয়েছে–সত্যিই আমি জানতাম না। ওরা আমার মনে এই বিশ্বাসের বীজ বপন করেছিল যে নোরেনার মৃত্যু জলে ডুবে আকস্মিক ভাবেই হয়েছে। মৃত্যুটা ছিল কেবলমাত্র নিছক এক দুর্ঘটনা।

    আমি জানি, তার মৃত্যুর খবর শোনার পরও নোরেনা সাজা আমার উচিত হয়নি। তাই অল্প বয়সেও আমি আমার এই ছোট্ট জীবনে এমন বহু ঘটনার মুখোমুখি হয়েছি, যেগুলো অনুচিত জেনেও করতে বাধ্য হয়েছি। নোরেনা সেজে যে স্নেহ মমতা আমি পেয়েছি তা জীবন-ডোর ভোলার নয়। আমার মতন নষ্ট মেয়ের ভাগ্যে এত সুখ প্রাপ্য ছিল না বলেই এই অল্প দিনের মধ্যে এত তাড়াতাড়ি তা ফুরিয়ে গেল।

    আমি এখন চলেছি নীল সমুদ্রে সাঁতার কাটতে। হাত-পা যতক্ষণ না অবশ হয়ে শক্তিহীন হয়ে পড়ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত অবিরাম ধারায় সাঁতার কেটেই চলব। আশা করি, এভাবে সাঁতার কাটতে কাটতে অবসন্ন দেহে যদি সমুদ্রে তলিয়েও যাই এর থেকে সুখের সংবাদ আর কি হতে পারে! আমার মতন মেয়ের মৃত্যু এভাবে ঘটলে অনেকে অনেক কিছু জটিল ঝামলার হাত থেকে সহজেই মুক্তি পেয়ে যাবে।

    তবে একটাই দুঃখ অন্তরে থেকে যাবে চিরকাল, তা হল আমি মারা গেলে আমার জন্য তোমার মনে বিন্দুমাত্র বেদনার সঞ্চার করবে কিনা। তবে কেন জানিনা, আমার মন বলছে আমার জন্য তুমি হয়ত গোপনে একবার না একবার দীর্ঘশ্বাস ফেলবেই।

    জয় খুব ভালো মেয়ে। ওকে তুমি বিয়ে করতে ভুলো না যেন, একমাত্র তার পক্ষেই সম্ভব তোমার অতীত যন্ত্রণা মুছে দিয়ে তোমাকে সুখী করতে পারা।

    গুডবাই মেল, আমার শেষ এবং একটা অনুরোধ, তুমি অন্ততঃ মনে এই বিশ্বাস রেখো যে, আমি যদি নোরেনার বিষয়ে সামান্যতম আঁচও পেতাম যে, তাকে এ পৃথিবী থেকে চিরকালের জন্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে, তবে একাজ করার জন্য কখনোই আমি রাজী হতাম না।
    –ভালোবাসা নিও
    ইরা।

    পত্রলেখা শেষ হলে, মুড়ে পেপার ওয়েট চাপা দিয়ে টেবিলে রেখে কেবিন থেকে নীরবে বেরিয়ে এলোইরা। মনের মধ্যে চাঞ্চল্যের যে ঢেউই তোলপাড় করুক, বাইরের ভাবভঙ্গীতে তার প্রকাশ ছিল না বিন্দুমাত্র। শেষবারের মতন বহু স্মৃতি বিজড়িত কেবিনটাকে দেখে নিয়ে ধীর পদক্ষেপে এগিয়ে চলল সমুদ্র বক্ষের দিকে। উন্নত উঁচু মস্তক, সংকল্পে স্থির, নির্ভীক দৃষ্টি। সমুদ্রের জলে নেমে সে তার সিদ্ধান্তে অটল থেকে সাঁতার কাটতে শুরু করে দিল। সমুদ্র তীর পেছনে ফেলে বহু দূর এগিয়ে গেল যেখানে শুধু জল আর জল ছাড়া কিছু চোখে পড়ে না। সেই সঙ্গে মিলিয়ে গেল নতুন সেই জীবন, যে জীবন পাওয়ার কথা তার ছিল না, তবু সাময়িক হলেও সে জীবন ধরা দিয়েছিল। সামনে পেছনে যেদিকে তাকাক শুধু জল আর জল। অগাধ, অনন্ত আর অসীম। কিন্তু ইরার চোখে বিন্দুমাত্র জলকণা পর্যন্ত ছিল না।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86 87 88 89 90 91 92 93 94 95 96 97 98 99 100 101 102
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleব্ল্যাক অর্ডার (সিগমা ফোর্স – ৩) – জেমস রোলিন্স
    Next Article জেমস হেডলি চেজ রচনা সমগ্র ২ (অনুবাদ : পৃথ্বীরাজ সেন)

    Related Articles

    জেমস হেডলি চেজ

    জেমস হেডলি চেজ রচনা সমগ্র ২ (অনুবাদ : পৃথ্বীরাজ সেন)

    August 18, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    বাঙালনামা – তপন রায়চৌধুরী

    August 20, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    বাঙালনামা – তপন রায়চৌধুরী

    August 20, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    বাঙালনামা – তপন রায়চৌধুরী

    August 20, 2025

    রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর জীবনী – তপন বাগচী

    August 20, 2025

    রাজমালা বা ত্রিপুরার ইতিহাস – শ্রী কৈলাসচন্দ্ৰ সিংহ প্রণীত

    August 20, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.